Posts: 110
Threads: 0
Likes Received: 61 in 36 posts
Likes Given: 295
Joined: Nov 2022
Reputation:
10
(08-08-2025, 09:43 PM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ১১
মন্দির থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার আগে,পাড়ার মেয়েদের সাথে নদীর পাড়ে গাছ তলায় বসেছিল কুন্দনন্দিনী। পুরো গ্রামে পুজো পুজো একটা হাওয়া বইছে । গত মাস কয়েক যে উত্তেজনা হীন গ্রামটি সে দেখে এসেছে, এখন আর তেমনটি মনে হচ্ছে না। বাড়িতেও সবার মুখে মুখে মায়ের আগমনের সাথে, সুদূর কলকাতা থেকে যাত্রাপালার আগমন বার্তাও ঘুরে ফিরে বেরাছে। এর মধ্যেই কুন্দনন্দিনী পিতার আর একটি চিঠি পেয়েছে। তবে তাতে তার স্বামীদেবের উল্লেখ নেই। বোধকরি তিনি পৌঁছানোর আগেই এই পত্র প্রেরিত হয়েছিল। নয়তো তার বাবাকে কুন্দনন্দিনী বেশ ভালো করেই চেনে। বাহ্, চমৎকার!
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(10-08-2025, 02:13 AM)tamal Wrote: বাহ্, চমৎকার!
ধন্যবাদ ❤️
•
Posts: 46
Threads: 3
Likes Received: 103 in 36 posts
Likes Given: 47
Joined: May 2024
Reputation:
18
অপেক্ষায় আছি কিন্তু দুইজনের ঝাপটা ঝাপটির.... সেই বহুল প্রতীক্ষিত রতিমিলনের।
Posts: 1
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: Mar 2025
Reputation:
0
সমীরের সাথেই যেন হয়। কিরনের সাথে যেন কিছুই নাহ হয়।
•
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(10-08-2025, 11:55 PM)Rubya Wrote: অপেক্ষায় আছি কিন্তু দুইজনের ঝাপটা ঝাপটির.... সেই বহুল প্রতীক্ষিত রতিমিলনের। ❤️ yr): ❤️
•
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 15 in 13 posts
Likes Given: 72
Joined: Sep 2023
Reputation:
0
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(15-08-2025, 09:09 PM)Dip 99 Wrote: আজকে নতুন পর্ব আসবে তো ?
অবশ্যই ❤️
•
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
15-08-2025, 09:47 PM
(This post was last modified: 15-08-2025, 09:48 PM by বহুরূপী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব ১২
ঘাটে পৌঁছানোর মাটির রাস্তাটি ধারের মেলা গুটিয়েছে সন্ধ্যা নামতেই। দুর্গাপূজা শেষ হয়েছে দিন তিনেক আগে। আজ রাতের যাত্রাপাল্লাই ছিল আয়োজনের সমাপ্তি। জমিদার বাড়ির মাঠে বাঁশের খুঁটির সাথে বাঁধা তেরপল, আর রঙিন কাগজের ঝালরগুলো এখনও বাতাসে হালকা দুলছে। মঞ্চের পাশে খড়ের গাদায় বসে কয়েকজন ছেলেপুলে এখনও “শো’টা দারুণ হল” বলে হেসে গল্প করছে। যাত্রার দল “শ্রীগণেশ অপেরা” এবার মঞ্চস্থ করেছিল বিষহরণ। রামলাল দত্ত, দলের প্রধান নায়ক গলা ভরে সংলাপ বলছিলেন — "হে নাগরাজ, আমি বিষ হরণ করিতে আসিয়াছি!" তখন মাঠের একেবারে পেছন থেকে শোনা যাচ্ছিল ঢাকের শেষ বাজনা, যেন পুজোর গন্ধ আর রঙ্গমঞ্চের রঙ মিশে এক অদ্ভুত মায়া তৈরি করেছে।
সন্ধ্যা পার করে প্রায় রাত এগারোটায়,সেন মশাইয়ের আসর ভাঙলো। পুজোর প্যান্ডেলে এখন আর আলো নেই, কেবল ধূপের শেষ ধোঁয়া ভেসে যাচ্ছে। প্রতিমা আগেই বিসর্জন হয়ে গেছে, শুধু খালি কাঠামোটা পড়ে আছে — তার ওপর শুকনো ফুলের মালা। ঢাকিরা বাড়ি ফিরছে কাঁধে ঢাক তুলে। সমীর এখন বাড়ি ফিরছিল গ্রামের লোকেদের সাথে। মনটি তার খানিক আনমনা। সুপ্রিয়া বাপের বাড়ি থেকে ফিরেছে দু'দিন আগে। তবে শুধু যে সেই ফিরেছে এমনটা বলা ভুল। সমীরের দুইটি ছানাপোনার সাথে আর একটি পেটে নিয়ে ফিরেছে সে। অবশ্য এই সংবাদ শুনে, যথারীতি বাড়ির সকলের বেজায় খুশি। কিন্তু কোন কারণে সুপ্রিয়ার ফিরে আসা কুন্দনন্দিনীর ধাতে সইছে না। কেন সইছে না সে কে জানে? রমনী মন কখন কোন বাঁকে ঘোরাফেরা করে, তা কি আর ডাক্তার সমীরের এত সহজে জানার জো আছে! সে বড় জোর টাইফয়েড কলেরা সারাতে পারে......
– আরে, কি হলো ডাক্তার? এতো ভাবনা কিসের?
প্রশ্নটা করলে সেনগুপ্ত মহাশয়। প্রথমটা কি বলবে ঠিক ভেবে পেল না,তবে খানিক পরেই সমীর একটু হেসে উত্তর দিলে,
– তেমন কিছুই নয় সেন কাকা। আসলে বাড়িতে একটু সমস্যা চলছিল,তাই...
সমীরের কথা মিথ্যা নয় মোটেও। সমস্যাও নিতান্তই ছোট নয় কিন্তু। যে সুপ্রিয়া আর নন্দিনীর মধ্যে গলায় গলায় ভাব ছিল, হঠাৎ তা যেন কেমন থিতিয়ে গিয়েছে। সুপ্রিয়া বাড়ি ফিরতেই স্বভাব মতে কুন্দনন্দিনী দোতলায় উঠে যাবার কথা। কিন্তু নন্দিনী হঠাৎ করেই নিচতলার ঘরটি আঁকড়ে বসেছে। সমীর অবশ্য তাকে একটি বারের জন্যও কিছু বলেনি। তবুও মেয়েটিকে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করতে মনে সায় দেয় না তার। তার তুলনায় বয়সী খাঁটো মেয়ে! যদিওবা হল সে বিয়ে করা বউ। সমীর কিন্তু চায় মেয়েটি স্বাচ্ছন্দে থাকুক নিজের মতো। এখন বাপের সাথে অভিমানে মনের দরজা বন্ধ, অভিমান কাটলে এমনি সব খুলে যাবে না হয়। এমন তো নয় সে জড়াজড়ি করে বিয়েটা করছে সে। দুই পরিবারের সম্মতিতে হয়েছে সবকিছু। সুতরাং একসময় না একসময় তাকে তো মানতেই হবে সবটা। শুধু শুধু ঘাটাঘাটি করে মেয়েটার মনটা কেন নষ্ট করা। যদিও ওই দিনের ঘটনা সমীরের কাছে একটু ঘোলাটে। ঘটনা পূজোর আগের। একদিন ঘুমের ঘোরেই সমীর তার দ্বিতীয় পক্ষ কুন্দনন্দিনীকে একটু কাছে টেনেছিল। যদিও সে বেচারা নিজেও জানে না, সে ঠিক কতটা কি করছে। তথাপি সে এই ব্যাপারে ভীষণ লজ্জিত। তবে সমস্যা এখানেই শেষ হলে ভালোই হতো। কিন্তু ভগবানের বুঝি বা ভিন্ন মত ছিল। কেন না, সেই থেকে সমীরকে নিচতলার ঘর ছাড়তে হলো, ছাড়লো কিন্তু সমীর নিজের ইচ্ছাতে। অবশ্য এতোও সমস্যা কিন্তু শেষ হল না! সমীরের দ্বিতীয় সমস্যা শুরু হলো সুপ্রিয়া আসার পর। সে বেচারি ভাইয়ের চিন্তায় অন্য সব ভুলে ছিল। তারপর আবার বহুদিন পর পরিবারের সান্নিধ্য। তবে ফিরে এসে, সে যখন নিজের পুরাতন গ্রামোফোনটি বাজিয়ে শুনলো, এবং চেঁচামেচি জুড়লো। তখন পরীক্ষা করে দেখা গেল, গ্রামোফোনটি আসলে নতুন!
তা এই অবস্থায় অনেকেই হয়তো ভাববে “ ক্ষতি কিসে? পুরাতন গিয়ে নতুন এলে,এতে তো লাভের পাল্লাই ভারি বেশি!” তাদের জন্যে বলে রাখা ভালো যে— ওটি সুপ্রিয়া দেবীর প্রথম সন্তান প্রাপ্তির উপহার ছিল। সুতরাং এই উপলক্ষে কিরণকে হাতের কাছে না পেয়ে সুপ্রিয়া যদি স্বামীর ওপরে অভিমান ঝারে! তবে তাকে ঠেকায় কার সাধ্যি? তাই বলা চলে দুই পক্ষ থাকা সত্ত্বেও, বেচারা স্বামী দেবের কোন পক্ষের কাছেই যাওয়া উপায় রইলো না!
এখন সমীর বাড়ি ফিরতে ফিরতে তাই ভাবছিল। তার মধ্যে সবাই নৌকায় উঠতেই হালকা ধাক্কায় সমীর যেন চিন্তা দুনিয়া থেকে বাস্তবে ফিরে এলো আবারও। এক কোণে ধুতি-পরা এক বয়স্ক লোক বিড়ির ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলে উঠলেন,
— শুনছি, কোলকাতায় নাকি ইংরেজ বিরোধী বড়ো মিছিল হয়ে গেল?
— ও এখনকার কলেজের ছেলেপিলে মশাই ,রক্ত বেশ গরম। তবে এতো দূর গ্রামে এসে এই সংবাদে আর কী হবে বল?
এক তরুণ, হাতে লণ্ঠন ধরা বসেছিল একপাশে, সে কথা শুনে বলে উঠলো,
— তুমি জানো না কাকা, আজ দুপুরে জয়নগর থানায় নতুন সাহেব এলো। সে নাকি বড়ো কঠিন মেজাজের মানুষ! সেখানকার ভাবসাব বোধহয় ভালো ঠেকছে না...
পাশেই সেন মশাই এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিলেন। এবার তিনি একটু গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন,
— সে সাহেব–টাহেব থাকুক তাঁদের জায়গায়, আগে তো এই নৌকা ওপারে পৌঁছাক! এই একটুতেই তলায় জল জমছে যে রতন?
তার কথা শেষ করার আগেই মাঝি হাল ও কথা একত্রে টেনে বললে,
— চিন্তা কইরেন না কর্তা, এই ভাটায় আমি নৌকা চালাইতেছি বিশ বছর...
তা সেন মশাইয়ের সঙ্গে রতনের টানাটানি খানিক ক্ষণ চললে। যদিও এই নৌকার সকলেই রতন মাঝিকে ভালো মতোই চেনে। তাই সমীরের সেদিকে খেয়াল রইলো না। কাছে কোথায় জেলেদের জাল টানার শব্দ হচ্ছিল। কান খাড়া করতেই ডান পাশে ছোট একটি শাপলা ফুলের ঝাঁকে নৌকার ধাক্কা লাগার মৃদু আওয়াজ হলো। এই নৌকাতে ছই নেই। তাছাড়া অল্প জোছনায় চারপাশ কিছুটা উজ্জ্বল। সমীরের মন আবারো এই সব গ্রাম্য আলোচনা থেকে একটু দূরে সড়ে দাঁড়ালো। আজ রাতে তার এখানে থাকার কথা ছিল না । বটতলায় বিকেলে একলা বসে সমীর নানা কথা ভাবছিল,তার মধ্যে প্রধান ভাবনা অবশ্য তার দুই পক্ষের অভিমানী রমণীদের নিয়ে। তখনি সেন মশাইয়ের নজরে ডাক্তার সমীর পড়লো,তারপর সোজাসুজি যাত্রাপালার আসরে।
বাড়িতে সমীর যখন পৌঁছালো, তখন সুপ্রিয়া খাবার ঢাকা দিয়ে গুম হয়ে বসে আছে। সমীর প্রথমটায় কি বলবে ভেবে না পেয়ে হাতমুখ ধুয়ে দুটো খেতে বসে গেল। যদিও আজ রাতে খাওয়াদাওয়া করার আর কোন ইচ্ছে তার ছিল না, তবুও আর কিইবা করা যায়!
এদিকে যখন এই চলছিল, তখন আমাদের দ্বিতীয় নায়িকা পাশের ঘরের পর্দার আড়ালে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। সে হয়তো গত কদিনের অহেতুক অভিমানের জন্য,স্বামীর কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছিল। কিন্তু প্রথম পক্ষ স্বামীর দখল নেওয়াতে কুন্দনন্দিনী ঠিক সুবিধে করে উঠতে পারেনি।
এদিকে সমীরের খাওয়া শেষে, সুপ্রিয়া স্বামীর সামনে দুই কানে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। অভিমানী রমণী গত দু'দিন স্বামীকে নিজের ঘরে ঢুকতে দেয়নি। ওদিকে পুজোর আগ থেকে কুন্দনন্দিনী নিচতলার দখল নিয়ে বসে আছে। সুতরাং আজ সকালে নিজের ডাক্তারি ঘরে সমীর কাকে যেন বলছিল,
– নারী সংকট মানেই মহা সংকট। তবুও পুরাকালে গোসাঘর বলতে একটা সুন্দর ব্যবস্থা ছিল। দাম্পত্য জীবনে কলহ-বিবাদ বাঁধিয়ে, তখন রমণীগণ সেই ঘরে আশ্রয় নিত শুনেছি। এখন আধুনিকতায় সে উঠে গিয়ে বরং পুরুষ! না না বিশেষ করে বেচারা বিবাহিত পুরুষদের বৈঠক ঘরে থাকতে হচ্ছে......
কথা অবশ্য আরো হয়েছিল। তবে দুই রমণীর আর কিছু শোনার প্রয়োজন ছিল না। বিশেষ করে কমলার সাথে পুজোর জন্যে ফুল তুলতে এসে স্বামী ভক্ত সুপ্রিয়ার একটুতেই চোখে জল এসে গিয়েছিল। সে পারলে তৎক্ষণাৎ স্বামীর কাছে যেত। তবে এতো ভোর সকালে ভেতরে কে এসেছে সুপ্রিয়ার তা জানা ছিল না। এরপর চেষ্টা করেও সারাদিন সে স্বামী দেবকে নাগালে পায়নি। তবে এখন নিরব পরিবেশে সুপ্রিয়াকে একা পেয়ে সমীর নিজেই চেপে ধরলো। তা সে বড় সহজ ধরা নয়! সুপ্রিয়ার হাত দুখানি আস্তে করে নামিয়ে দেহের পেছনে বাঁ হাতে আঁটকে দিলে সে। এরপর ডান হাতে অশ্রু মুছিয়ে, প্রথমই স্পর্শ করলে উচু বুক দুখানি! ক্রন্দনরত রমণীর বুকের আঁচল উঠলো নড়েচড়ে। বলিষ্ঠ হাতের চাপ পরতেই অবশ্য কান্না থেমে গেল। ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে সমীর খানিক্ষণ সুপ্রিয়াকে সামলে নেবার সময় দিলে।
এতে অবশ্য লাভের কিছু হলো না, উল্টে চুম্বনের তীব্রতা ও দেহের উষ্ণতা মিলেমিশে রমণীর বুকের উঠানামা বাড়িয়ে দিল। ভয় ছিল, বলাবাহুল্য একটু বেশিই ছিল। তবে সেটি লুকিয়ে সুপ্রিয়া আপাতত স্বামীর কামনা স্পর্শ চুপচাপ উপভোগ করছিল। আর আঁচল সরিয়ে পেটের ওপরে হাত পরতেই, সুপ্রিয়ার চোখের জলের সাথে মুখে হাসিও ফুটলো। সমীরের কিন্তু এতেই মন ভরার কোন সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু সুপ্রিয়া স্বামীর কানের কাছে মুখ উঠিয়ে মধুরতম স্বরে বললে,
– দোহাই লাগে! আজ নয়....!
কথা মধুর হলেও, সমীরের কানে বিধলো কাঁটার মতোই। তবে হাতের বাঁধন তার হালকা হলো বৈ কি! স্ত্রী কে ছেড়ে খাবার পাত্রগুলি একটু সরিয়ে রাখলো সে।এরপর সুপ্রিয়াকে দোতলায় ঘর অবধি পৌঁছে দিয়ে, তবে সে বাগানের পথ ধরে নিজের ডাক্তারি ঘরে পা রাখলে। এইসব ঘটনা কিন্তু– রাতে নিস্তব্ধতা, জোছনা মাখা ঠান্ডা হাওয়া আর অন্ধকারাচ্ছন্ন দেওয়াল গুলো ছাড়া আর কারো দেখা উচিত ছিল না। কিন্তু এরা ছাড়াও আরেকজন সবাই দেখল। এবং এই সব আজ কুন্দনন্দিনীর মনের গোপন কোথায় যেন বিধলো।এ বেশ নতুন অনুভূতি বটে,তবে ততটাও নয় বোধহয়। অনুভূতিটি সে ইতিমধ্যে অনুভব করেছে। নরম মনে দাঁগ কেটে গিয়েছিল সেই রাতে স্বামীর কামনা স্পর্শ। এরপর সত্য বলতে পুজোর এই দিনগুলো— নন্দিনীর প্রায় কেটেছে ঘুমহীন রাত্রি যাপনে।
যদিও একটু ঘুম হতো,তবে ঘুমের মধ্যেও মাঝে মাঝে কারো একটা উষ্ণ ছোঁয়া; শুধু যেন দেহ নয়! মন কেউ ছুঁয়ে দিয়েছে বারবার। তাই তো আজ স্বামী যখন পাশের ঘরে বাগানের পথ দিয়ে ঢুকলো! তখনি নন্দিনী পর্দা ঠেলে ভেতরে এসে বললে,
– এই ঘরে ঢুকতে তো কেউ বারণ করেনি ডাক্তারবাবু....
না বারণ সত্যই করেনি কেউ। তবে কি না, কেউ ডেকেওত অনে নি তাকে। তা যাই হোক, সমীর কিন্তু এই নিয়ে কথা না বাড়িয়ে মনে মনে স্থির করেছিল সে আজ উপরের ঘরে যাবে – সুপ্রিয়ার কাছেই। কিন্তু এখন দেখা গেল তার পথ আটকে দাড়িয়েছে কুন্দনন্দিনী। মুখে তার প্রচন্ড দৃঢ়তা। অগত্যা সমীর মুখার্জিকে চুপটি করে বসে কুন্দনন্দিনীর অ্যাপোলজি শুনতে হল। আর তাই শুনে সমীরের পা দুখানি যেন ভারি হয়ে গেল। মানে এমন কথা সুপ্রিয়া হলেও মানা যেত! কিন্তু শহুরে মেয়ের কি না ভূতে ভয়! সমীর আগে জানতো এবাড়িতে সবচেয়ে বড় ভুতের ভয় শুধু মাত্র সুপ্রিয়ার। অবশ্য একদিক দিয়ে ধরতে গেলে, কুন্দনন্দিনীও তো সুপ্রিয়ারই শীষ্যা। সুপ্রিয়ার কথা মতো প্রতিদিন স্বামীর জন্য কিছু না কিছু সে রান্না করে– ওই সুপ্রিয়ার কথা মতে উদরের সাথে হৃদয়ের সম্পর্কটা অতি কাছের কি না! তাই ঐদিক দিয়ে মনে ঢোকার পথটা সংক্ষেপে পড়ে আর কি....
– শহরে বড় হয়ে বুঝি এই শেখা হয়েছে?
– শহরে অত ভূতপ্রেতর উৎপাত নেই। কিন্তু এই বাড়িতে.....
কথা শেষ না করে নন্দিনী মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।আসলে যে এই রমণী মনে কি চলছে তা বোঝা দায়। তবে পরিস্থিতির ভাবসাব বুঝতে পেরে সমীর হাত বাড়িয়ে ধরলো নন্দিনীর হাত। একটু কেঁপে উঠলও নন্দিনী কিন্তু সরে গেল না। বরং স্বামী কাছে টানতেই তার শাড়ির আঁচল পিছলে পড়লে খানিকটা। ইচ্ছাকৃত নয় এটা আগে বলে রাখাই ভালো। কারণ ওদিকে রমণী খেয়ালো করলো না। তবে সমীর কিন্তু সুপ্রিয়ার মতোই কুন্দনন্দিনীকেও বসালো তার কোলে। ডান হাতে চিবুক তুলে মুখটি দেখে হয়তো কিছু বোঝার চেষ্টা করলো। তবে স্বামীর কোলে বসে কুন্দনন্দিনী ইতিমধ্যে লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে। এদিকে স্বামীর অবাধ্য বাঁ হাতটি শাড়ির আঁচল গলে পাতলা কোমরে—মানে ঠিক ওই সুগভীর নাভিটা যেখানে আছে আর কি,যেখানে গিয়ে থামলো।
– ইসস্... নিজের কি হাল বানিয়েছো বল তো?
কয়েক দিনের বিনা নিদ্রায় নন্দিনীর সুন্দর মুখখানি একটু যেন শুকিয়ে গিয়েছে, চোখের নিচে হালকা করে পড়েছে কালি। বেচারির ভরা যৌবনে প্রথম স্বামীর স্পর্শ যদি বা হল, তা হল কি না দ্বিতীয় নারীর কথা মনে রেখে? বলি এ দাগ কি সহজে যায় রমণীর মন থেকে? তা গেলে যেতেও পারে হয়তো, কিন্তু আপাতত সে কথা আমাদের না ভাবলেও চলবে। কেন না সুমীর মুখার্জী আপাতত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে দুহাতে জড়িয়ে জানলা দিয়ে আকাশের পানে তাকিয়ে বললে,
– কোন এক কবি বলেছিলেন ,
“জোয়ার ভাটায় রক্ত উঠে নামে ”
“হৃদয়ের মাঝে হৃদয় এসে থামে ”
“পাংশু বিবর্ণ যদি হও রক্ত ক্ষরণে ”
“হৃদয় কে সামলে রেখ হৃদয় গ্রহণে।”
আবৃত্তি শেষ করে সমীর আর নন্দিনীকে ধরে রাখলো না। কুন্দনন্দিনীকে শুতে পাঠিয়ে, সে বসলো তার কাজের টেবিলে কি সব লিখতে। নন্দিনী অবশ্য স্বামীর আদেশে লক্ষ্মী বউয়ের মত পর্দা ঠেলে পাশের ঘরে গিয়ে বিছানায় গায়ে দিয়ে দিলে। আধঘন্টা পরে পাশের ঘরে থেকে পর্দা ঢেলে ঢুকলো সমীর। যদিও মন চাইছিল দোতলায় সুপ্রিয়ার কাছে যেতে। তবে আজ খোকা-খুকি দুজনেই আছে তাদের মায়ের সাথে, এখন ডাকলে বোধহয় অযথাই ওদের ঘুমটি ভাঙবে। তাই সে চিন্তা বাদ দিয়ে সমীর বিছানায় গা এলিয়ে দিল নন্দিনীর গা ঘেঁষে। একটু পরেই নির্দ্বিধায় তাকে কাছেও টানলে। বেচারি নন্দিনীর এমনিতেই ঘুম আসছিল না। এবার স্বামীর বুকের এতটা কাছে এসে, হঠাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে অস্বাভাবিক দ্রুততর হয়ে গেল।
///////////
পরদিন দুপুরের পর মুখার্জি বাড়ি যখন কিছুটা নিস্তব্ধ। সবাই নিজেদের মতো–কেউ বিশ্রামে, ত কেউ বাগানে। সুপ্রিয়া আসার পর থেকেই অন্দরমহল অনেকটা নির্জন হয়ে গিয়েছিল। যদিও এমনটি হবার কথা নয়, কিন্তু বিপত্তি তো আর বলে কয়ে আসে না। তবে আজ হাসি মুখে মেয়েদের তাশ খেলার আসরে সুপ্রিয়া গান করছিল মৃদু স্বরে।
কুন্দনন্দিনী তখন চিলেকোঠা ঘরে উঠেছিল পুরনো কিছু বইপত্র রাখতে। সে আজ সমীরের সাথে নিচ তলায় ডাক্তারি ঘরটি নতুন করে গোছানোর কাজে লেগেছে। তাই যে বইপত্র একদমই অকেজো, সে গুলো নিয়ে সে এখন ঢুকেছিল চিলেকোঠার ঘরে। জায়গাটি খানিক অন্ধকার।
সেখানে বাতাস কম। ভেতরে বহুদিনের জমা ধুলোর গন্ধ। পুরনো কাঠের আলমারির ভেতর থেকে বের হওয়া একটা ঝাঁঝালো ফাঙ্গাসের গন্ধ ছড়িয়ে আছে ঘরের পরিবেশে। হাতের বইগুলো মেঝেতে রেখে নন্দিনী আলমারিটার দিকে তাকালো। আর তখনই হঠাৎ দরজাটা খচাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল। কুন্দনন্দিনী তাকাতে না তাকাতে পেছনে দাঁড়িয়ে কিরণ!
— দরজা... লাগালে কেন?
কুন্দের গলায় একটা অস্থিরতা....ভয়। কিন্তু সেই সঙ্গে মিশে থাকা কৌতূহলও। কিরণের চোখে আজ আর খুনসুটি নেই। বরং দু চোখে আছে কিছু ভীতি। সে চকিতে এগিয়ে এল, দুহাতে চেপে ধরলো কুন্দনন্দিনীর হাত। এবার আতংকে নন্দিনী পিছিয়ে যেতে চাইলো। ভয়ে ভয়ে বললো,
— তুমি পাগল হয়ে গেছো!
কিরণ এবার নিজেও ভীতু কন্ঠে বলে উঠলো,
– বৌরাণি কবে এলো? আমায় আগে বললে না কেন?
একটু অবাক হলো নন্দিনী। ভয়ে কেটে গেল মুহুর্তেই। বিষয়টা বুঝে নিতে সময় বেশি লাগলো না। আসলে সুপ্রিয়ার সাধের গ্রামোফোন রেকর্ডার ত কিরণের হাতেই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। হটাৎ নন্দিনী হেঁসে উঠলো উচ্চস্বরে। তৎক্ষণাৎ দরজা ঠেলে ঢুকলো ইন্দিরা। কিরণ চটপট নন্দিনীকে সামনে এনে সে পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। এই ঘরের দরজা আসলে ভেতর থেকে লাগানো যায় না। কিরণের পক্ষে হয়তো আর কোন যাওয়ার জায়গা ছিল না, তবে ইন্দিরা তাকে দেখেই চিৎকার করে ডাকলো সুপ্রিয়াকে। একটু পরেই সদা হাসিমুখ রমণী তার হাঁটু ছাড়ানো লম্বা কেশরাশি পিঠে ছড়িয়ে উপস্থিত হলো অগ্নিমূর্তি ধারণ করে,পেছনে কমলা ও অন্যান্য রমণীগণ। কিরণের কানে ধরে টানতে টানতে সুপ্রিয়া যখন নিচে নামছিল! তখন আর একবার ওই দৃষ্টিহীন রমণীর চোখের মায়ায় পড়লো নন্দিনী।
কিরণের সাথে বোঝাপড়া করার সময় কুন্দনন্দিনী অবশ্য ভেতর বাড়িতে রইলো না। সমীর নিজের ডাক্তারি ঘর নতুন করে গুছানোর কাজ করছিল, নন্দিনী পানের বাক্স হাতে আবারো সেখানে পৌঁছাল। এরপর স্বামীর সহিত হাতের কাজ গুছিয়ে যখন সে ভেতর উঠনে পা রাখল,তখন গদাধর ও কিরণ মিলে দোতলা থেকে গ্রামোফোন নামিয়ে বাক্সবন্দী করছে। কমলা পান সেজে দিচ্ছে সুপ্রিয়ার হাতে। ইন্দিরা ও কয়েকটি কমবয়সী মেয়ে কিরণের এমন হেনস্থা দেখে বেশ হাসাহাসি করছে,তবে নিঃশব্দে।
কুন্দনন্দিনী পানের বাক্স রেখে হাতের বইটি নিয়ে সিঁড়ি ভেঙে উঠে গেল ছাদে। সমীর তখন নিজের কাজ সেরে ভেতর উঠনে পা রেখেছে সবে। এরপর কি হলো নন্দিনীর আর কিছুই খেয়াল রইলো না,বই পড়তে পড়তে গত রাতের কথা মনে পড়লো তার,
স্বামীর সাথে সম্পর্কটা বোধহয় তার সহজ হয়েই এলো। তাও আবার নিজের অহংকার ভেঙে। অবশ্য সমীর তাকে চুমু খেয়েছে আগেও, কিন্তু গত রাতের মতো অত স্নেহ ভরা ছোঁয়া হয়তো ছিল না তাতে। তাছাড়া ঠোঁট ঠোঁটে লাগিয়ে কোন পুরুষের সাথে চুম্বনের অভিজ্ঞতা কুন্দনন্দিনীর এই প্রথম। চুমু ত নয় যেন কামড়। মানুষটা দেখতে যেমন দানব,গায়ে জোরও তেমনি দানবের মতোই। তার ঠোঁট, ঘাড়ে, কানের গোড়ায় উফফ্... একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে এক রাতেই। তবুও ভাগ্য ভালো বেশি কিছু করেনি! এক সময় সত্যই মনে হচ্ছিল— এখনি বুঝি এক হাতে নন্দিনীর সুন্দর চুল গুলো মুঠো করে ধরবে,তারপর অন্য হাতে খামচে ধরবে স্তন! এরপর টেপন ও চোষন তো স্বামী দেবের অধিকারই বলা চলে। কিন্তু গত রাতে আর একটু সহজ যদি কুন্দনন্দিনী হতো,তবে কি....ভাবনায় ছেদ পড়ল তার। মেয়েদের দল হাসতে হাসতে যেন দৌড়ে উঠছে ছাদে। বই পাশে রেখে কুন্দনন্দিনীকে এখন তাদের কথা শুনতে হবে নিশ্চয়ই।
Posts: 612
Threads: 0
Likes Received: 288 in 274 posts
Likes Given: 538
Joined: Jan 2024
Reputation:
7
•
Posts: 275
Threads: 6
Likes Received: 123 in 98 posts
Likes Given: 7
Joined: Jan 2019
Reputation:
5
•
Posts: 860
Threads: 0
Likes Received: 393 in 326 posts
Likes Given: 1,598
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
•
Posts: 787
Threads: 7
Likes Received: 872 in 481 posts
Likes Given: 4,231
Joined: Nov 2019
Reputation:
92
•
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(17-08-2025, 02:15 AM)ray.rowdy Wrote: ভালো হচ্ছে, চালিয়ে যাও।
(16-08-2025, 03:20 PM)Ari rox Wrote: সুন্দর হচ্ছে
(16-08-2025, 02:47 AM)Black_Rainbow Wrote: দারুন
(16-08-2025, 01:44 AM)Saj890 Wrote: Darun
থ্যাঙ্কস ব্রাদার ❤️
•
Posts: 6
Threads: 0
Likes Received: 3 in 3 posts
Likes Given: 3
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
দারুন হচ্ছে, চালিয়ে যান দাদা।
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(17-08-2025, 09:30 PM)priancazz Wrote: দারুন হচ্ছে, চালিয়ে যান দাদা।
ধন্যবাদ ❤️
•
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 15 in 13 posts
Likes Given: 72
Joined: Sep 2023
Reputation:
0
•
Posts: 6
Threads: 0
Likes Received: 3 in 3 posts
Likes Given: 3
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
নতুন পর্বের অপেক্ষায় আছি কতদিন ধরে। কবে পাবো দাদা? দিন না একটু তাড়াতাড়ি।
•
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(24-08-2025, 11:12 PM)priancazz Wrote: নতুন পর্বের অপেক্ষায় আছি কতদিন ধরে। কবে পাবো দাদা? দিন না একটু তাড়াতাড়ি। (22-08-2025, 11:25 PM)Dip 99 Wrote: Ajke ki update asbe
দুঃখিত ব্রাদার্স! আমার বলা উচিত ছিল।যদিও আমার অন্য থ্রেডে আমি বলেছি কদিন লেখাটা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যাই হোক , হাতের কাজগুলো শেষ করতে পারলে, আগামী শুক্রবারে আপডেট আসবে। ❤️
Posts: 543
Threads: 1
Likes Received: 373 in 307 posts
Likes Given: 382
Joined: Aug 2022
Reputation:
8
update nei onkdin boro mon moton update pacci na. ar lekha of koro na dada ei forum e akhon emne tei vlo temon writer nai , porar moton golpo khub kom, ja ra notun ace vlo korche tarao jodi emon kore chole jai taahole amra thekei ba ki korbo?
•
Posts: 1,058
Threads: 6
Likes Received: 2,553 in 636 posts
Likes Given: 1,323
Joined: Apr 2024
Reputation:
765
(01-09-2025, 09:01 AM)Patrick bateman_69 Wrote: update nei onkdin boro mon moton update pacci na. ar lekha of koro na dada ei forum e akhon emne tei vlo temon writer nai , porar moton golpo khub kom, ja ra notun ace vlo korche tarao jodi emon kore chole jai taahole amra thekei ba ki korbo?
মাঝে মাঝেই বিপত্তি এসে ঘাড়ের ওপর পড়ে! জলদি ফিরবো।❤️
•
|