Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.19 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica স্বামী ﴾ পর্ব নং:- ১৪ ﴿
Very good
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(27-06-2025, 08:57 PM)Saj890 Wrote: Very good

Thanks brother ❤️

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply
বাহ্  clps
yourock

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম   happy

আরো কোনো গল্পের পর্ব  দিয়েছেন নাকি দেখে আসি horseride
[+] 1 user Likes রাত জাগা পাখি's post
Like Reply
joto pori toto valo lage, new update pora suru korle mone hoy ei update ta jeno aktu boro hoy but unfortunately boro update ebar o pelam na

next update kobe pabo?
"The greatest trick the devil ever pulled was convincing the world he didn't exist."

KaderSaimon Fan Club Link: http://tiny.cc/FanClubLink
[+] 1 user Likes Patrick bateman_69's post
Like Reply
পর্ব ৮

মাটির ঘরের খোলা দরজাটা দিয়ে ঘরের হালকা আলো পড়ছে রোয়াকে। বাইরে একটানা ঝিঁঝিঁ ডাকে, মাঝে মাঝে মাটির বাড়ির দাওয়ায় ভিজে কাঠের খচখচে শব্দ—হয়তো ইঁদুর ছুটছে। ভেতরে কুপি-জ্বলা অন্ধকার। ঘরের হলুদ আলোয় সুপ্রিয়ার ভাইয়ের কপাল চকচক করে। শরীরটা পাতলা হয়ে গেছে। চোখ দুটো বসে গিয়েছে, পাঁজর বেরিয়ে এসেছে, ঠোঁট ও কেমন ফাটাফাটা। শ্বাস হাঁপাচ্ছে না, কিন্তু কষ্ট হচ্ছে বোঝা যায়। মাঝে মাঝে থুথু ফেলতে চাইছে কিন্তু শক্তি পাচ্ছে না।

ডাক্তার সমীর কাঁধে গামছা ফেলে, স্টেথো কানে দিয়ে, মনোযোগী হয়ে বুকের আওয়াজ শুনছে। পাশের টেবিলে  কাঁচের বোতলে ওষুধ, কাপড়ে মোড়া থার্মোমিটার, একটা ছোট সিরিঞ্জ ও তার ডাক্তারী ব্যাগটা  রাখা। তার ঠোঁট চেপে আছে, চোখ কুঁচকেছে বেশ। রোগীর নাড়ি দেখার পর আবার চোখ তুলে একটু চুপ করে থাকে সে বললে,

—  একটু গরম জল আনো, 

সমীর চাপা গলায় বলল। সুপ্রিয়া অপর পাশ থেকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। নন্দিনী বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল। রান্না ঘরে ঢুকে  জলের বাটি হাতে এগিয়ে এসে সুপ্রিয়ার হাতে ধরিয়ে দিল। সুপ্রিয়া ঘরে ঢুকলো আবার। পেছন পেছন কুন্দনন্দিনী এসে দাঁড়ালো দুয়ার সম্মুখে।

সমীর ধীরে ধীরে কপালে জলচাপা দিলে। গলার কাছটায় কাপড় তুলে খেয়াল করলে—ঘর্মাক্ত নয়, বরং অদ্ভুত শীতল একটা ঘাম।  জ্বরটা কমে আসছে ক্রমশ, এখন চলছে গভীর দুর্বলতার লড়াই। এই সময়ই বিপদ, যদি হৃদযন্ত্র ভেঙে পড়ে। রোগী কেঁপে উঠল হঠাৎ, চোখে তাকালো কিন্তু যেন চিনতে পারছে না।

– পানি চাই?

 সমীর জিজ্ঞাসা করল। যুবক অল্প মাথা নাড়ল। তার ঠোঁটে জল ছুঁইয়ে সমীর বললে, 

– ধীরে… একেবারে ধীরে…

খাটের পাশে মেঝেতে বসে থাকা সরোজবালা চোখ নামিয়ে রেখেছে। ওর চোখে অশ্রু। সে জানে, এইরকম রাতে পুরুষ ডাক্তাররাও ঈশ্বরের মুখের পানে চেয়ে থাকেন—জ্ঞান, বিদ্যা, সাহস সবই একসময় দুর্বল হয়ে পড়ে। পাঁজরের খাটখাট শব্দ, গামছায় বাঁধা কর্পূরের শিশি, বারবার জল ফুটিয়ে উষ্ণতার পরীক্ষা—এইসব চলছে রাত জেগে। ঘুম নেই এই বাড়ির কারোরই। বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়েছে, বাড়ির উঠানে পেয়ারা গাছের পাতায়  টুপটাপ করে জল পড়ার শব্দ। কিন্তু ঘরের ভিতর শুধুই নিঃশব্দতা আর দুশ্চিন্তার ভার।

হরিপদ দত্ত মেয়ে জামাইকে দেখে মনোবল ফিরে পেয়েছেন। সমীরের ওপরে খানিক রাগ থাকলেও মেয়ের মুখে সবটাই শুনেছেন তিনি। তবে মেয়ে জামাইয়ের সাথে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা বিশেষ হয়নি। বেশ মেয়ের মতোই হরিপদ দত্তের স্ত্রী কুন্দনন্দিনীকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন। এখন মেয়েটা সবার সাথে রাত জাগছে। 

নন্দিনী শুরু থেকেই দেখছে সবটা। প্রথমটায় অস্থির অস্থির করলেও, এখন শান্ত হয়ে শুয়ে আছে সুপ্রিয়ার কাকাতো ভাই সুশীল। দু'চোখ এর জ্বরের তীব্রতা কমে আসছে ধীরে ধীরে। তবে তার স্বামীর বিশ্রাম নেই‌, সেই এসে থেকে এখন পর্যন্ত  একটি বারের জন্যও ওঠেনি। তার পাশেই মেঝেতে বসে আছে সুশীলের স্ত্রী সরোজবালা—মাথায় আঁচল টেনে কান্না গিলে ফেলে সে হঠাৎ  হঠাৎ বলছে,

— দাদা..উনি বাঁচাবেন তো?

সমীর মেয়েটার দিকে তাকায় না। শ্যালকের এই অবস্থা দেখে সে ভয়ানক বিরক্ত ও চিন্তিত। যদিও সব শুনে সে আঁচ করেছিল এখানকার অবস্থা। তাই তো রাত হলেও চলে আসতে মানা করে নি একবারও। কিন্তু এখানে এসে সে বুঝতে পারে তার দ্বিতীয় বিবাহ তাকে এখানে আগেভাগে না ডাকার প্রধান কারণ। এখন কথাটি মনে আসতেই সমীর ভাবনা বন্ধ করলো, খানিক পরে শান্ত গলায় বললে,

— দেখ সরোজ, তোমায় বলেছি না, ভয় পাবে না। এখনও সময় আছে। আমি তো দেখছি নাকি.....

একটা শ্বাস ফেলে স্বামীর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সুপ্রিয়া চুপচাপ চোখ বুঝে তার ভগবান নাম জপে। স্বামীটি তার ভুত-ভগবান কিছুই তেমন মানে না। কিন্তু সুপ্রিয়ার ঠাকুর ভক্তি যেমন, ভুতের ভয়ও তেমনি। তবুও স্বামীর কথা গুলো শুনে, ঠিক এমন সময়েই সে যেন আবার একটু নতুন করে ভালোবেসে ফেলে—যে পুরুষটি ক্লান্ত, রাত্রির শেষ প্রহরে দাঁড়িয়ে, কারও ছেলেকে মৃত্যুর মুখ থেকে টেনে আনছে। তার কথা ভেবে স্বামী গর্বে বুকটা যেন ভরে ওঠে তার। 

সুশীল এ বাড়িতে আছে সুপ্রিয়ার বিয়ের পর থেকে। মা-বাপ মরা ছেলেটা দিদিকে ভক্তি করে খুব। সুপ্রিয়াও তাকে দেখে স্নেহের চোখে। কেন না স্নিগ্ধ স্নেহের অনুভব এই রমণীর চরণ তেলে- তাই যেখানে সে উপস্থিত যেখানে স্নেহের স্পর্শে খামতি থাকে না। সে আর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসে। বাপের কোলে থেকে ছেলেকে বুকে করে পাশের ঘরে যায় শোয়াইতে।

কুন্দনন্দিনী  খানিক আগেই দুয়ার আগলে দাঁড়িয়ে ছিল। আর কেউ কে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া মানা আছে সুপ্রিয়ার । সে এতখন সবটা দেখেছে— মানুষের অল্প অভিমান কত বড়  বিপদ ডেকে আনতে পারে। সমীর মুখার্জি কিছু না জানিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করছে,আর তার  অভিমানে মারতে বসেছে সুশীল। অতিরিক্ত দিদি ভক্তি ও রাগের বশে ডাক্তার জামাই বাবুকে ডাকার ইচ্ছে পোষণ করে নি সে, কিন্তু অবস্থা এতটা খারাপ হবে বোধহয় সে নিজেও ভেবে দেখেনি।

তা সে যাইহোক,আর ঘণ্টাখানেক পর, জ্বর আরো কিছুটা নেমে আসে। ঘাম ভাঙে সুশীলের। সমীর তার নাড়ি দেখে বড় স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,

— আর ভয় নেই সরোজ,বোধ হয় এই যাত্রায় টেনে তুলতে পারবো।

এই প্রথম কুন্দনন্দিনী স্বামীর দিকে তাকিয়ে খুশি হলো,কেন হলো তা কে জানে। তবে তার মনে পরে গেল নৌকায় যাত্রার কথাটা। নদীতে তখন কি প্রবল টান— হঠাৎ ওমনি নৌকা দুলে না উঠলে কুন্দনন্দিনী কি কখনো স্বামীর হাত জড়িয়ে ধরতো? কিন্তু সমীর তখন মজা করার ছলেই বলেছিল,

– আরে আরে কর কি! শেষটায় কোলে উঠবে নাকি? 

 যদিও নৌকাটা একবার দুলে উঠেই থেমে গিয়েছিল,তবে নন্দিনী আর স্বামী কাছে থেকে দূরে সরে যেতে পারেনি। সমীর তার শক্ত হাতে তুলি নিয়েছিল  তার হাতখানা। কুন্দনন্দিনী স্বামীর এই অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারেনি, বরং নিজের অজান্তেই আরো ঘন হয়ে ঠেসে বসেছিল স্বামীর গা ঘেঁষে। সমীর বুঝেছিল ব্যপারটা,তাই বোধহয় মজা করা রেখে শান্ত স্বরেই বলেছিল,

– ভয় নেই,এই নৌকা উল্টবে না....

এইকথায় নন্দিনীর কতটুকু আস্থা রেখেছিল তা যদিও জানা যায় নি। তবে যাত্রার সময়টা তা মোটেও ভালো কাটেনি। নৌকায় উঠে বাইরে দেখলেও, কিছু সময় পর মনে হয়েছে— পর্দার আড়াল থেকে বাইরের জগৎটা যেন অপার্থিব কোন এক স্থান। সুপ্রিয়া ঠেসে ঠেসে তার মগজে ভুতুড়ে কাহিনীর ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে ঐই কয়দিনে। এখন সে করে কি? তাই তার ভারাক্রান্ত মনটি খানিকের জন্যে কোন  মজবুত আশ্রয় হিসেবে স্বামীকেই বেছে নিয়েছিল। ‌এখন অবশ্য সে কথা ভাবলে কিছু লজ্জা লজ্জাই করছে,তবে এই লজ্জা সামিল দেওয়া চলে।


ওদিকে নন্দিনী যখন ভাবনায় ব্যস্ত,তখন ক্লান্ত সমীর একবার হাই তুললে। যদিও সে মুখে বলে নি কিছুই,তবে সুপ্রিয়া বোঝে। গতকাল  সারারাত না ঘুমিয়ে তাকে যে ভাবে জ্বালিয়ে মেরেছে। সুপ্রিয়া রাতের কথা ভাবে। ভাই খানিক সুস্থ শুনে তার মুখেও হাসি ফুটেছে। তাই এবার সে এগিয়ে এসে বললো,


— তুমি এবার একটু বিশ্রাম নাও গে। আমি আছি। সরোজ আছে। এখন এইখানে থাকলেও  তো কিছুই করার নেই।

সমীর চুপচাপ উঠে দাঁড়ায়। বাইরের বারান্দায় সুপ্রিয়ার মা-বাবা বসে । চিন্তায় তাদের মুখখানা কেমন হয়ে গিয়েছে। নিজের ছেলে তো নেই,তাই ভাই মরার পর থেকে ভাইয়ের ছেলেটাকেই আপন করে নিয়েছেন হরিপদ। তা সে ভাইয়ের সাথে বনিবনা তার ছিল না বললেই চলে, তবে সুশীলের ক্ষেত্রে সম্পর্কটা বড় আপন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
ওদিকে সরোজবালার ঘুমন্ত চার মাসের মেয়েটা হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে উঠে গিয়েছে। মেয়েটা কাঁদছে। ঘরের বাইরে এসে হালকা বাতাসে দাঁড়িয়ে চোখ বুঝলে সমীর। এক মুহূর্ত যেন বুকে একটা অদ্ভুত খালি শূন্যতা বাজে— গতকাল সকালের মন খারাপ ভাবটা তার  এখনো কাটেনি।  


নিশীথ পেরিয়ে ভোরের আবছা আলো ফোটার ঠিক আগে— গ্রামীণ পরিবেশে এক নিঃশব্দ, কোমল মুহূর্তে—কটি মাটির ঘর যেন নিঃশ্বাস ফেলে উঠে বসেছে। চারদিক ঘন নীরবতা, কেবল দূরের ঝোপ থেকে মাঝেমধ্যে শোনা যায় রাতচরা পাখির হঠাৎ ডানা ঝাপটানো। মাটির দেয়ালগুলি কালচে ধূসর, তবু যেন রাতভর ঘুমিয়ে উঠে একটু জ্যোৎস্না জমে আছে তাদের গায়ে। ঘরের মাথায়  বাঁশঝারের উপর নরম অন্ধকার ছড়িয়ে রেখেছে, আর ঘরের কোণে কোণে কুয়াশার মত জমে আছে ভোরের প্রথম নিঃশ্বাস।


এক সময় হরিপদ দত্তের অবস্থা খারাপ থাকলেও,এখন আর সেই দিন নেই। ইচ্ছে করলে মাটির ঘর ভেঙে পাকা দালান তিনি কষ্টেসৃষ্টে দাঁড় করাতেই পারেন। তবে  সে ইচ্ছে টা তার কখনোই হয়নি। উন্নতির মোহে পরে নিজেকে তিনি ভুলতে নারাজ। তবে সমীরের এইসবে কিছুই যাই আসে না। বিশেষ করে এই বাড়ির সবগুলো ঘর মাটির হলেও খুব ঝকঝকে। ঘরের মেঝে গোবর-জল মাখানো, নরম আর পরিষ্কার, যেন কোনও গৃহিণীর নিঃশব্দ যত্নের প্রমাণ। 


– স্বামীটি ত আমারই, তোর কাছে এক রাতের জন্যে গচ্ছিত রাখলাম শুধু, রাগ করছিস না ভাই.....

তাদের ঘরে প্রবেশ করিয়ে দু কথা বলেই সুপ্রিয়া ভাইয়ের ঘরে চলে যেতে থাকে। নন্দিনীর তাকে ডাকবে কি, বিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। সমীর পেছন ফিরে দেখলো কুন্দনন্দিনী দাঁড়িয়ে আছে ঠিক তার পেছনে। দরজার একপাশে।

ঘরের মৃদু কুপি-আলো পড়ছে কুন্দনন্দিনীর গায়ে। সে এক পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে—চুপচাপ, অথচ সমগ্র ঘরের ছায়াপাতের কেন্দ্র যেন সে-ই। কোমরের কাছে আঁচলটা আলগা, তাতে আলোর রেখা পড়ে ধূসর কুণ্ডলীর মতো বেঁকে যাচ্ছে। তার গায়ে গাঢ় নীল শাড়ি, সস্তা কিন্তু পরিষ্কার; সেই কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে আলো থমকে আছে—মুগ্ধ দৃষ্টির মতো।

সমীরের কাছে কুন্দনন্দিনী এই রূপান্তর কেমন অবাক করা লাগে। মনে পরে কলকাতার একটি বড় পাকা বাড়ির ছাদে বসা মেয়েটিকে,তখন সে হয়তো একগাদা বান্ধবী নিয়ে একপাশে বসে আড্ডা দিতে ব্যস্ত। সমীর বাইরের থেকে ফিরে এসে এক নজর দেখেছিল তখন। যদিও বাবার বন্ধুর মেয়ে,তবে এর আগে সে কখনো দেখেনি তাকে। তখনকার দৃষ্টিতে এই মেয়েটি অজানা দূর দেশের বাসিন্দার মতোই। কিন্তু গেল  সকালেই ওই নারীটিকে সে কামনার চোখে দেখেছে। সেটা সমীর কখনো ভাবতেই পারিনি তা ঘটে গেল কি উপায়ে ,তা কে বলবে?


 এখন নন্দিনীর মাথায় ঘোমটা, কিন্তু মুখ পুরো ঢাকা নয়। সুপ্রিয়ার কাছে থেকে নানান উপদেশ ও কাজকর্মে দীক্ষা পেলেও,তা সে এখনো সেগুলি কাজে প্রকাশ করতে শেখে নি। সুপ্রিয়া চলে গেলেও  সে চুপচাপ  ঠোঁটে ঠোঁট চেপে দাড়িয়ে আছে সেখানেই।

তাই দেখে সমীর একবার কুন্দ বলে ডাকলো তাকে । ডাক শুনে সে চাইলো বটে, কিন্তু আধখোলা তার চোখের দৃষ্টি—তীব্র, স্থির। তবে দৃষ্টি  তীব্র হলেও চাহনিতে আগুন নেই। কপালের মাঝখানে এক বিন্দু সিঁদুর—রক্তজবার মতো রঙ, আলোর ছোঁয়ায় একবার জ্বলছে, একবার ফিকে হয়ে যাচ্ছে। তার গলার কাছে শাড়ির ভাঁজ সরে গিয়ে হালকা কণ্ঠসন্ধির রেখা ফুটে উঠেছে। নীচু আলোর ঝাপসা ছায়ায় সেই অংশটা যেন ঠাণ্ডা বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠছে। 

কিছু কি বলবে? বোধহয় না। সমীর নিজেও প্রথমটা বলার মতো কিছু খুঁজে পেল না। এই দুটি চোখের দৃষ্টি কি তার কথা ছিনিয়ে নিচ্ছে? কিন্তু ওদিকে থেকে দৃষ্টি নামালেই যে আর এক বিপদ! নিচে শাড়ির আঁচলে স্তনের বক্রতা লুকানো, কিন্তু ঢেকে রাখা সেই আড়ালটুকু আরও দৃশ্যমান—আলো ও অন্ধকারের ভেদরেখায় সে যেন নিজেকে লুকিয়ে রেখে আরও স্পষ্ট হয়েছে।

সমীর এবার নিজের ওপরে বিরক্ত হয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল। যদিও আজকের  দৃষ্টিতে কিন্তু গতকালের কাম ভাবটি ছিল না। তবুও আলো আঁধারের মায়াতে রমণী  আকর্ষণ বরই তীব্র।

— একটু ঘুমিয়ে নাও, আরও অপেক্ষা করলে দেখতে দেখতে সুর্যদেব পাঠে বসবেন।

কুন্দনন্দিনী চটকা ভেঙ্গে কেঁপে উঠলো যেন। এতখন না জানি কি ভাবনায় ছিল সে। সমীর তার  হাত খানি ধরে মৃদু টানে নিয়ে এসেছে ঘরে। কুন্দনন্দিনী মুহূর্তে খানিকের জন্যে সুপ্রিয়ার কথা গুলো ভুলে বলে উঠলো,

— আপনি অ-আপনি এখানে....

কুন্দনন্দিনী মুখের কথা শেষ করতে পারলো না। সমীর হাত ছাড়িয়ে বিছানায় বসে ক্লান্ত গলায় বললে,

— হুম. আমি এখানেই থাকব। আজকের রাত কেটে যাক কুন্দ, বড় দূর্বল লাগছে।

বড় ভুল কথা নয়, রাত জেগে নন্দিনী নিজেই বুঝেছে ব্যপারটা। তাছাড়া  সুপ্রিয়ার কথাও মনে পরলো তৎক্ষণাৎ। সে আর কিছু বললো না। দুয়ারে আগলে দিয়ে খাটে দু'জন পাশাপাশি শুল, মাঝখানে বেশ খানিকটা দূরত্ব হলেও এতটা কাছাকাছি এই দুজনা আর কখনো শুয়েছে কি?

 কুন্দনন্দিনী মুখ ঘুরিয়ে আছে। সমীর জানে, ওই শরীরের পাশে থাকাটা তার নিজের ইচ্ছের বাইরে। কুন্দনন্দিনীর পক্ষে কবে এই সম্পর্ক মেনে নেওয়া সম্ভব হবে তা সে জানে না। অবশ্য জানার আগ্রহও তার বিশেষ নেই। তবে মেয়েটির সাথে তার বাবার সম্পর্ক সহজ করতে হবে অতি শীঘ্রই। ব্যানার্জি বাবুর শরীর ভালো নয়। বিশেষ কেরে এক মাত্র সন্তানের এমন অবহেলে বরই পিড়াদায়ক। গত মাস দুয়েক কলকাতার  আটটি চিঠির কোন উত্তর করেনি কুন্দনন্দিনী,পড়ে দেখেছে কি না তাও সন্দেহ। তবে ভাগ্য কর্মে সমীর নিজের পত্র লিখে ছিল একটি। 

কুন্দনন্দিনী তাকে মন থেকে না মেনে নিলেও সে জানে—বিবাহের রীতিতে সে এই রমণী স্বামী। গতকাল সকালে কুন্দনন্দিনী যে রূপ সে দেখেছে, তাতে কামদন্ডে উত্তেজনা অস্বাভাবিক নয়। তবুও সমীর নিজের মনকে ধমকে দামকে সে শান্ত রইলো। মনে মনে ভাবলো চিঠির ব্যাপারে আলোচনা টা অতি শিগগিরই করতে হবে তাকে, এতো দেরি করা উচিৎ হচ্ছে না।

////////

মাসখানেক ধরে শরীর ভাঙছিল সুশীলের—শুরুর দিকে হালকা জ্বর, তারপরে ক্ষুধামন্দা, নিদ্রাহীনতা, রাতের বেলায় ঘেমে ওঠা আর দিনে দুর্বলতা। প্রথমে গ্রাম্য কবিরাজ বলেছিল শরীর ‘ঠাণ্ডা’ হয়ে গেছে। সরোজ তার নববধূ, বিয়ে হয়েছে বছর দুয়েক। কবিরাজের আদেশে পাতার রস আর গরম চা-জল খাইয়ে গেছে দিনে রাতে। তাতে শরীর সাময়িক স্বস্তি পেলেও রোগ মূলত গভীরে গিয়ে বসে গেছে। তারপর সমীর এলো সেদিন। রাতের বেলা উঠনে পা দিয়েই সমীর যখন তার শ্যালকের ঘরে ঢুকলো, তখন তার চোখে মুখে এক রাশ রাগ আর বিরক্তি। 


এরপর একে একে চোখের কনজাংটিভা পরীক্ষা করল, জিভের ওপর পাতলা সাদা আবরণ মনদিয়ে দেখলো আর বুকে স্টেথোস্কোপ রাখল, তখন সে বুঝতে পারল তার আশঙ্কায় ঠিক—এই ছেলেটা টাইফয়েডে ভুগছে। তবে আশার কথা—মাস খানেক পেরিয়ে গেলেও রোগ এখনো নিয়ন্ত্রণ এর মধ্যে আছে, জটিলতা এখনো সৃষ্টি হয়নি, অন্ত্রে রক্তপাত বা পারফোরেশন হয়নি, যদিও শরীরের অবস্থা ভীষণ দুর্বল। 

সেই অনুযায়ী চিকিৎসা হলো শুরু,সে আগেই তৈরি হয়ে এসেছিল।কেন না সমীর সবটা আগেই অনুমান করে,তবে ভয় ছিল তার ভিন্ন। গায়ের লোক তাকে দেখে অন্য চোখে,অনেকে ভাবে সমীর মুখার্জি যে বাড়িতে পা রাখে,সেখানে মরা দিব্যি গা ঝাড়া দিয়ে খাড়া হয়ে ওঠে। 

এই আশ্চর্য ক্ষমতার কথা কতটুকু সত্য সমীর আজ পর্যন্ত নিজে জানে না।তবে আশপাশের দশটা গ্রামের লোক তাকে মানে খুব। তাই সন্দেহ হয় শশুর মশাই ওই ভেবে বসে শেষ সময় জামাইকে ডেকে পাঠিয়েছে। তাই বিরক্তির শেষ ছিল না তার। কিন্তু সমীর সে রাতেই অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করে এবং প্রথম রাতেই তার ফল মেলে হাতে হাতে। এরপর দিন কয়েক তার  চিকিৎসা ও সুপ্রিয়ার ঠাকুর কৃষ্ণের কৃপায়– সুশীল বেশ সুস্থ হতেই রাধাপুরে ছোট খাট একটা গুঞ্জন উঠলো। এবং এই ধাক্কায় সমীরের রোগি জুটে গেল আরো খান কয়েক। তবে সে আগে শশুর বাড়িতে স্বাস্থ্য নীতি প্রতিষ্ঠা করে তবে বাইরের রোগীদের বন্দোবস্ত করলে।

এছাড়া সমীর ও কুন্দনন্দিনী এই কদিন রইলো এক ঘরে। সম্পর্ক  সহজ না হলেও  দূরত্ব কমে এলো বেশ খানিকটা। সমীর সময় করে পুকুর পাড়ে একদিন নন্দিনীকে কলকাতার সংবাদ দিল।  বাড়ির প্রতি অভিমান থাকলেও কুন্দনন্দিনী দুই চোখে অশ্রু জল ছলছল করে উঠলো। সেদিন রাতে হারিকেনের আলোতে সে বসলো বাবার জন্যে পত্র লিখতে।

সুপ্রিয়া রাত কাটলো ভাইয়ের সেবা ও সরোজকে সাহস দিয়ে। এদিকে দিন দুই পেরুতেই বলরাম মুখার্জি সুপ্রিয়ার মেয়েকে নিয়ে এখানে হাজির হলেন। খোকা আর খুকিকে একত্রে পেয়ে হরিপদ দত্তের স্ত্রী মেয়ের সতিনের কথা একরকম ভুলেই গেলেন। তবে সমীরের মন খচখচ করতে লাগলো। এই গায়ের লোক স্বাস্থ্য নীতির ধীর ধারে না। এই অবস্থায় ছেলে মেয়ে দুটিকে এখানে আনা তার ভালো লাগলো না।

এর দিন দুই পর বৃষ্টি হীন এক সকালের রোদ তখন উঠোনে নেমে এসেছে। সরোজ মাটির হাঁড়িতে আলু কাটতে কাটতে গল্প করছিল,

– জানো তো নন্দিনীদি! আমার দিদির কৃষ্ণভক্তি কিন্তু কোন খেলা নয়। এই বাড়িতে এসে আমি শুনেছি অনেককে বলতে— তখন দিদির মাত্র ছ'বছরের মেয়ে। লোকে যতোই বলুক তোমার ডাক্তার বরেরকেরামতি, কিন্তু আমি জানি দিদির ঠাকুর ভক্তি এই যাত্রায় আমার মাথার সিঁদুরের মান রাখলো। 

রান্নাঘরের ভেতর বসে দু রমণীর মধ্যে কথা হচ্ছিল। প্রাথমিক কথা অনেক আগেই হয়ে গিয়েছে।তাই আজ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল কলকাতা। অবশ্য সুদূর কলকাতা থেকে কথার বাঁক ঘুরে, এই  রাধাপুরে বাসরত ভূত ও  ভগবানদের সম্পর্কে ভালো মন্দ বিচার যে কখনো শুরু হলো, তা অবশ্য বোঝা গেল না। তবে কুন্দনন্দিনী উৎসুক চোখে চেয়ে রইল বিস্তারিত জানতে।তার কৌতুহল  সব বিষয়েই প্রভল। তাই দেখে সরোজ একটু চুপ করে পরে বলতে শুরু করল।

--~~~~~~~~~–

গাঁয়ে কোন কৃষ্ণ মন্দির তখন ছিল না। রাধাপুরে একমাত্র বড় সুদখোর গাঙ্গুলী পরিবারের বড়কর্তা নিজ বাড়িতে কৃষ্ণ মন্দির গড়ান। গাঙ্গুলী পরিবারের বড়কর্তার স্বপ্ন পাওয়া সোনার কৃষ্ণ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত হয় গাঙ্গুলী বাড়ির পাশের জমিতে। বছর পর হতে না হতেই ডাকাত পরলো। এক রাতে গাঙ্গুলী পরিবারের বধূদের গহনা আর সোনার কৃষ্ণ ঠাকুর হাওয়া। 

সেদিন বড়কর্তা বাড়ি ছিলেন না। কিন্তু পরদিন সকাল সকাল সংবাদ পেয়ে বাড়ি ফিরে লোক লস্কর নিয়ে  সে এক কান্ড বটে। তবে কি ডাকাত ,আর কি গহনা, কিছুই আর পাওয়া গেল না। তখন গাঙ্গুলী মশাই শপথ করলেন, যতদিন না আবারও সোনার কৃষ্ণ মুর্তি প্রতিষ্ঠা না হয়,ততদিন এমনি পুজো হবে। হলেও তাই। ওদিকে  ডাকাতিতে  গাঙ্গুলী পরিবারের বড় রকম লোকসানে হয়ে গিয়েছিল,তা বছর পাঁচেক পর অবশ্য তারা সামলে ওঠে সবটাই।। তখন গায়ে হঠাৎ  কথা ওঠে কৃষ্ণ মন্দিরে আবারো সোনার কৃষ্ণ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত হবেন। 

সুপ্রিয়া তখন বেশ বড়টি হয়েছে। হাঁটু অবধি খাটো শাড়ি পরে সে পাড়া বেরায়। অন্ধ বলে কেউ তাকে আটকে রাখতে পারতো না ঘরে। গাঁয়ের দত্ত পরিবার তখন অভাবের চূড়ান্তে। কাপড়ের ব্যবসা প্রায় উঠে যায় যায় করছে। এমন আর্থিক চিন্তায় বাকি সব চিন্তা মাথায় থাকে না। অবশ্য ছোট্ট সুপ্রিয়ার জন্যে বিশেষ চিন্তা করার কোন কারণও তখন ছিল না। দুধে আলতা দেখতে মেয়েটিকে গাঁয়ের সবাই বেশ পছন্দ করতো। সুপ্রিয়াও বাড়ি বাড়ি ফিরে সকলের সাথে কথা বলতো ও টুকিটাকি কাজকর্ম করে দিত। অন্ধ বলে তার মনে দুঃখ ছিল কি না তা বোঝা যেত না। তবে দুঃখ মেয়েটার ছিল গাঙ্গুলী পরিবারের মন্দির নিয়ে।

একে তো আর্থিক দুরবস্থা তার ওপরে জাতের বালাই। গাঙ্গুলীদের নিজস্ব মন্দিরে ছোট জাতের লোকের পুজোর অধিকার নেই বললেই চলে। কিন্তু মন্দিরে সোনার কৃষ্ণ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত হবে শুনে ছোট্ট সুপ্রিয়ার মনেও দোলা দিয়েছিল। মন্দিরে ঢুকতে না পারলেও বাইরের সিঁড়িতে প্রায় সময় তাকে দেখা যেত। গাঁয়ের লোকে আদর করে বলতো কৃষ্ণ প্রিয়া। কিন্তু গাঙ্গুলী পরিবারের বধূদের কথা ছিল ভিন্ন। তারা বলতো,

"এইটা আমাদের কুলদেবতা, বাইরের লোক আসবে না। "
কেউ বলতো আরো কড়া স্বরে“ আজকাল তো জাতকুলের বালাই নেই, কিন্তু আমরা সে পথে হাঁটি না— পূজোর জায়গায় সবাই উঠতে পারে না। ও মেয়ে ছোঁয়াছুঁয়ি দিলে ঠাকুর অপবিত্র হবে। তারা বৈশ্য-কায়স্থ ঘরের মেয়ে। জাতের ঠিক নাই।"


 ছোট্ট মেয়েটি কিন্তু তার হাঁটু ছোঁয়া কোঁকড়ানো কেশ রাশি ও দুটি চোখের অন্ধ নিঝুম দৃষ্টি নিয়ে সিঁড়িতে বসে রইলো চুপচাপ। বসতো সে প্রায় দিন, চুপিচুপি পুরোহিতের হাতে তুলে দিতে পুজোর ফুল। তবে সেদিন গাঙ্গুলী বাড়ির বড় বউ মন্দিরে আসে খুব ভোরে। আজ সেই ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত হবার দিন। তাই সুপ্রিয়া সেদিন গাঁয়ের এক মেয়েকে সঙ্গী করে ঠাকুরের চরণে অর্পণ করতে এক ঢালা পদ্ম এনেছিল তুলে। দৃষ্টি না থাকায় এই কাজ তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না বললেই চলে। তবে দূভাগ্য কর্মে তার সঙ্গী ছিল মুস'ল'মান ঘরের মেয়ে। তার উপরে বরাত এমনই খারাপ যে সেদিন গাঙ্গুলী বাড়ির বড় বধূ বিশেষ কারণ বশত অতি ভোর সকালে এলেন পূজো দিতে। অন্ধ অবুঝ ভক্তের জানা ছিল না মানুষের বুদ্ধি বিবেচনায় জাত ধর্ম হিসেব করে ঠাকুর পুজো নিয়ে থাকেন, কিন্তু গাঙ্গুলী বধূর বোধকরি তা ভালোই জানা ছিল। তাই তিনি সুপ্রিয়ার এমন তর কান্ড দেখে রোশ সামলাতে পারলেন না। সেদিনই ছোট্ট মেয়েটিকে গালে চড় মেরে কড়া স্বরে  গালমন্দ  পাঠ করে ফুলগুলো ছুড়ে ফেললেন মাটিতে।


কথা ছিল সেদিন সন্ধ্যায় পুজো করে ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত হবে,খালি মন্দিরে আবার ভগবানের পা পরবে। কিন্তু বিকেল গড়াতেই আকাশ কালো হয়ে এলো। ঝড় যদিও এলো না ,তবে ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত করায় গেল না।

এদিকে সেইদিন ভোর থেকে সুপ্রিয়াও বাড়ি ফেরেনি‌। দত্ত গিন্নী পাড়ার বাড়ি বাড়ি মেয়েকে খুঁজে শেষে বাড়ি ফিরে কান্না জুড়লেন। তখন দত্ত বাড়িতে পুরুষ বলতে নেই কেউ। হাট বারে পাড়া প্রায় খালি। হরিপদের ছোটভাই দাদার সাথে বিবাদ বাঁধিয়ে কোথায় গেছে - তা তখন প্রায় বছর সাত। অবশেষে বিকেলে বৃষ্টি মাথায় যখন কয়েকজন বেরুলো সুপ্রিয়াকে  খুঁজতে,তখন খবর এলো, নদীর তীরের জঙ্গল ভাঙা  মন্দিরে তাকে পাওয়া গিয়েছে। সাথে পাওয়া গিয়েছে গাঙ্গুলী পরিবারের বধূদের গহনা ও হারানো কৃষ্ণ ঠাকুর।

~~~~~~~~~~

খানিক পরে বাকি টুকু দিচ্ছি
[+] 7 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
রান্নাঘরের দুয়ারে বসে কুন্দনন্দিনী আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে সেদ্ধ আলুর খোসা তুলছিল। ভেতরে খুনতি নাড়তে নাড়তে গল্প বলছিল সরোজবালা। খানিক দূরে উঠোনের কিনারে কাঠ কাটার "খটাস" "খটাস" শব্দ উঠছিল। সে থেমে থেমে তাকাচ্ছিল বাইরে।


সমীরের পরনের ধুতি হাঁটুর ওপরে তুলে বাঁধা, গায়ে সাদা গামছা ফেলে, কুঠার হাতে এক এক করে খড়ির গুঁড়ি চেরা ধরছে। তার লম্বা সবল দেহটা থাকলেও কুন্দনন্দিনী কখনো তাকে বাড়ির কাজ করতে দেখে নি—এক বাগান ছাড়া। তবে এখন প্রতিটি কুঠারের কোপে যে কতটা  দৃঢ়তা আছে , তা কাঠ চেরা খরখরে আওয়াজে বেশ বোঝা যায়। এই দৃশ্যটা দেখে সমীরের হাঁটুতে ওই কাঁটা রাগটা আর অদ্ভুত লাগে না কুন্দনন্দিনী। সে বেশ বুঝতে পারে শান্ত এই পুরুষ প্রয়োজন পড়লে প্রলয়ের হুংকার দিতে দুবার ভেবে দেখবে না। তৎক্ষণাৎ একটি কথা মনে পরে কুন্দনন্দিনীর! সরোজবালাকে ডেকে সে দেখায়। প্রথমটা সরোজবালা লজ্জায়  গাল লাল করলেও,পরে নন্দিনীর কথায় খেয়াল করে কাঁটা দাগটা,

– ও তো জানি নে দিদি,তবে মায়ের কাছে শুনেছিলাম সে গাঁয়ের জমিদার ছেলের সাথে সুপ্রিয়াদিকে নিয়ে কি গোল বাঁধে। এর পর থেকেই তো দিদি বাড়ির বাইরে বেরোয় না। কি আর করা বলো, মেয়েদের রূপ থাকলেও জ্বালা, না থাকলেও জ্বালা.......

এই ব্যাপারে বেশি জানা নেই বলে কথা অন্যদিকে গড়ায়।  ওদিকে সমীর কাঠ চেরা শেষে কাঁধের গামছায় ঘাম মুছে রোয়াকে বসে জল চাইলো। সুপ্রিয়া তখন গোয়াল ঘরে ব্যস্ত থাকায় কুন্দনন্দিনীই উঠে গেল জল দিতে। মাটির কলস থেকে জল ঢেলে গ্লাসটা ধরে কুন্দনন্দিনী রোয়াকে এসে দাঁড়ালো। কাছ থেকে স্বামীর মুখটা দেখলো ঘামে ভিজে চকচক করছে, কপালের কাছের চুলগুলো কাঁপছে বাতাসে, ধুতি কোমরের কাছ থেকে কিছুটা সরে গেছে—গায়ে জড়িয়ে থাকা গামছার ফাঁক দিয়ে তার তীক্ষ্ণ বুকের রেখা এবং পরিশ্রমে স্ফীত পেশি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। জল পান শেষে কুন্দনন্দিনী বললে,

– বাবার কোন চিঠি এসেছে?

সমীর কিছু বলার আগেই সুপ্রিয়া উপস্থিত হলো যেখানে। বারান্দায় বাঁশে খুঁটিতে হেলান দিয়ে সে বললে,

– মহারানীর রাগ পড়েছে তবে। কেন রে, গেল হাট বারেও তো পত্র এলো,তখন খবর নিলিনে কেন? এখন ও চিঠি যেতেই হপ্তা পেরুবে।

সমীর উঠে দাঁড়িয়ে  অভ্যাসের বশেই সুপ্রিয়ার হাতে গামছা ও জলের গ্লাস তুলে দিতে যাচ্ছিল। অবশ্য পরক্ষনেই একটু অপ্রস্তুত হল নন্দিনীর হাত বাড়ানো দেখে। তবে ততক্ষণে সুপ্রিয়ার হাতে গামছাটা পৌঁছে গেছে এবং জলের গ্লাসটি তার আঙুলে স্পর্শ করতেই সে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কুন্দনন্দিনীও তার হাত গুটিয়ে নিয়েছে বটে । সমীর তার অপ্রস্তুত ভাবটা কাটিয়ে উঠতে  বললে,

– ডাকঘর রাধাপুরে নেই,তবে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে দিয়েছি,একদিন দেরি হয়েছে বটে.....

নন্দিনী কিছুই বললো না। সমীর চলে গেলে। রান্নাঘরে ফিরবে  কি না তাই যখন নন্দিনীর ভাবনা,তখন আড়চোখে দেখলে,সুপ্রিয়া সেখানেই দাঁড়িয়ে স্বামীর ঘামে ভেজা গামছাটি তুলে ধরেছে নাকের খুব কাছে। পরক্ষনেই নন্দিনীকে অবাক করে সুপ্রিয়া নাক ডুবিয়ে দিল তাতে, লম্বা নিঃশ্বাস নিল কবার চোখ চোখ বুজে। 

সুপ্রিয়ার উজ্জ্বল হাসিমাখা মুখে দেখে নন্দিনী ভেবে পেল না কি এমন আহামরি আছে ওতে! ঘামের দুর্গন্ধ থেকে খোলা বাতাসের ঘ্রাণ টি মন্দ কিসে? বিকেল না, দুপুর না—এমন এক সময় যখন মেঘ আর রোদ দু'জনেই আশেপাশে ঘোরে, যেন একে অপরকে বিদায় জানাতে এসে পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গেছে। বর্ষা যেন ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছে গাছপালার ডালে—সবুজ পাতা মুছে নিচ্ছে শেষ বৃষ্টির ছাঁট। রান্নাঘরের জানালা দিয়ে দূরে মাঠ দেখা যায়—ধান কাটা শুরু হয়নি, তবু বাতাসে কাঁচা শস্যের গন্ধ ওর থেকে ত ঢের ভালো!

তবুও নন্দিনী কিছুই তার কৌতুহল দূর করতে পারে না। দুপুরে নিজের ঘরে স্বামীর ব্যবহৃত গামছাটি হাতে তুলে নাকের কাছে ধরে সে। ইদানিং সুপ্রিয়া কে অনুকরণ করার একটা প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে তার মধ্যে। কিন্তু আজ এটি করতে গিয়ে তাকে লজ্জায় পড়তে হলো। সমীর ঘরে ঢুকতেই এই দৃশ্যটা পড়লো তার চোখের সামনে। যদিও বুঝতে পেরে নিজের পেছনে ওঠা লুকানো ছাড়া নন্দিনীর আর কিছুই করার ছিল না।তবে সমীর কিন্তু ঘটনাটি  দেখলোও তেমন আমল না দিয়ে, কুন্দনন্দিনীকে বলল,

– শোন, আমি একটু বেরুচ্ছি। আসতে দেরি হলে সুপ্রিয়াকে  সামলে নিও লক্ষ্মীটি!
 
লজ্জা কুন্দনন্দিনী আগেই পেয়ে বসে আছে, সুতরাং এই আদরের ডাকে নতুন করে লজ্জা না পেলেও উত্তরে সে কি বলবে কিছুতেই ভেবে পেল না। 

তবে কিছু না বললেও সুপ্রিয়াকে সে সামলে নিল ঠিকই। বিকেল সরোজবালা ও  সুপ্রিয়াকে সাথে নিয়ে নদী পারে ভাঙ্গা মন্দির দেখতে গিয়ে দেখলো,মন্দিরটি মোটেও ভাঙ্গা নয় বরং সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। অবশেষে সুপ্রিয়াকে সবটা বলতেই সুপ্রিয়া হাসতে হাসতে বললেন,

– পাগল একটা, ওসব তুও বিশ্বাস করেছিস নাকি? আসলে বৃষ্টির মধ্যে হয়তো মাথা বাঁচাতে এসেছিলাম এখানে,লোকে ভেবে নিয়েছে কি না কি ঘটে গেল।  তবে বাবা বলে এর পর নাকি গাঙ্গুলী মশাই এখানেই নতুন মন্দির গড়ে। তার এই সুমতি কেন হলো তাতো আমি জানি নে ভাই,তবে পুরো গাঁয়ের লোকে এখন পুজো দেয় এখানে,এই সুগেই আমি সুখি।

সুপ্রিয়ার কথায় সরোজবালা অবিশ্বাসের স্বরে বলল,

– আর ডাকাতির ব্যাপারটি বুঝি গাঁজাখুরি?

– না তা হবে কেন, ডাকাতরা সব এখানে আস্তানা গেড়েছিল। এখন কি দেখছিস, তখন এই জায়গা রীতিমতো জঙ্গলা। ডাকাতের আস্তানা হিসেবে মন্দ ছিল না। পরে অবশ্য শুনা যায়,কোন সাহেবের বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে সবাই ধরা পরে এক যোগে,দু একজন নাকি পালিয়েও ছিল। পর তাদের কি হয় তা কে জানে! তবে ভাগ্য কর্মে ঠাকুর নিজেই উদ্ধার করলে সব।

নন্দিনী বিশ্বাস করলেও সরোজবালা বিশ্বাস করলো কি না সন্দেহ। তবে এই বিষয়ে সে আর কথা না বাড়িয়ে বাকিদের সাথে পুজোর কথায় মনোযোগী হয়ে উঠলো। ভাদ্র প্রায় শেষের দিকে, আর ত মাত্র দিন পনেরো পরে মহালয়া। মায়ের আগমন বিশেষ দূরে নেই এখন। কুন্দনন্দিনী ভাবলো কথাটা। মনে পড়লো বন্ধু বান্ধবী দের সাথে পূজোতে কাটানো অতীতের দিন গুলো।

///////

গাঙ্গুলী বাড়ির পাশে ঘুরে ফিরে সন্ধ্যার আগেই তাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আকাশে মেঘের দল ঘন হয়ে আসছে দেখে সুপ্রিয়ার আর দেরি করার ইচ্ছে  হলো না। চটজলদি বাড়ি ফিরতেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। সরোজ তখন পাশের মাঠে থেকে তার গাইটিকে নিয়ে এসে গোয়ালে বাঁধতে বাঁধতে বলল,

—নন্দিনীদি! পেছনের পুকুর পাড়ে ধুতি-চাদরগুলো আছে ভাই, ভিজে গেলে আর শুকোবে না আজ!

কুন্দনন্দিনী তখন বারান্দায়। এক লাফে ছুটে গেল পেছনের দিকটায়, সেখানে লটকে থাকা দুটো ধুতি আর কয়েকটি শাড়ি- গামছা খুলে নিতে নিতে সে দেখল—পেছনের পুকুর  ঘাটে কেউ যেন দাঁড়িয়ে আছে। আলো কম, বৃষ্টির তীব্রতা ছড়িয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে,ঝম ঝম শব্দ চারদিক চেপে রেখেছে। কুন্দনন্দিনী ভেবেছিল কেউ কাপড় নিতে এসেছে, হয়তো বৃষ্টি জোরে এল বলে সরোজবালা!  কিন্তু কৌতুহল বসে নিজে ভিজে গেলেও সে একটু এগিয়ে গিয়ে বুঝল—সমীর! স্নানের শেষ মুহূর্তে, সম্ভবত ধুতি পাল্টাতে গেছিল । কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির তীব্রতা দেখে চমকে এই দূর্ঘটনা!  তবে সে বেচারা এই সময়ে কাউকেই এখানে আশা করে নি। সে তারাহুরায় গামছা রেখে ধুতি পারছিল। সারা দেহ থেকে পানি ঝরছে—আর এক মুহূর্ত, মাত্র এক মুহূর্তে ।তখনি ধুতির নিচে থেকে তার লিঙ্গটি সম্পূর্ণ অনাবৃত হয়ে কুন্দনন্দিনীর চোখে পড়ে গেল। তবে সমীর কিন্তু নন্দিনী কে দেখতে পেল না। 

এদিকে ওই একঝলকে কুন্দনন্দিনী পেছনে সরে পালিয়ে এলেও, সেই দৃশ্য তার ভেতরে সেঁধিয়ে গেল। ধোঁয়াটে আলোর মধ্যে, পরিশ্রমে ক্লান্ত পুরুষদেহ, কাঁপতে থাকা এক মুহূর্তের সরল নগ্নতা—
কুন্দনন্দিনীর সমস্ত শরীর কেমন চুপসে এল। মুখ শুকিয়ে গেল, চোখ স্থির হয়ে রইল বৃষ্টি ভেজা উঠানের পানে। মনের ভাবনা তাকে সে দেখে ফেলেনি তো? কিন্তু সে তো ব্যস্ত ছিল জলদি কাপড় পড়ে  উঠে আসতে! তবুও তার মনে হচ্ছিল গোটা আকাশ তার দিকে তাকিয়ে আছে।

গলায় একটা ঢোঁক গিলে সে দৌড়ে ঘরে ঢুকে পড়ল। আধভেজা শাড়িতে কাপড় গুলো কোলে রেখেই ভিতরের ঘরে গিয়ে বসল খাটে—বৃষ্টি পড়ছে, কুপি জ্বলছে, কিন্তু কুন্দনন্দিনীর মনে কেবল ঘুরে ফিরে আসছে সেই মুহূর্তের ছবি।  হাত দিয়ে নিজের বুক ছুঁয়ে দেখল সে —হৃদস্পনদন অস্বাভাবিক।


(আমিও স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। বিশেষ করে কারো কোন মেসেজের উত্তর দিতে ইচ্ছে করছে না আপাতত ( আমি দুঃখিত) 


INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply
অসাধারণ
[+] 1 user Likes Ari rox's post
Like Reply
(05-07-2025, 10:22 PM)Ari rox Wrote: অসাধারণ

ধন্যবাদ ❤️ 

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply
বড় আপডেট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর হয়েছে❤️
[+] 1 user Likes Dip 99's post
Like Reply
Mind-boggling
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
(08-07-2025, 02:43 AM)Saj890 Wrote: Mind-boggling
(07-07-2025, 03:38 PM)Dip 99 Wrote: বড় আপডেট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর হয়েছে❤️

থ্যাংক ইউ বোথ, ব্রো❤️

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply
পর্ব ৯


বাহিরে ঝিকিমিকি চাঁদের জোছনা। তবে রাত খুব বেশি নয়। টেবিলে রাখা হারিকেনের উজ্জ্বল আলোতে সমীর বসে ছিল অল্পবিস্তর লেখালেখি করতে। রাতের খাওয়া হয়ে গিয়েছে খানিক আগেই। কুন্দনন্দিনী পেছনে বিছানায় পা দুলিয়ে বসে চুলে চিরুনি চালাচ্ছে। 


 এইসবের মধ্যেই বাইরে বারান্দায় দু'তিনটি মেয়ে-বৌদের কথা শোনা যাচ্ছে। এদের বাড়ি তেমন দূরে নয়। বেশি হলে রাস্তার এপার ওপার। তবে এমন সময়ে সাধারণত এদের এখানে থাকার কথা নয়। 

তবে এনারা কেন এখানে সে আমাদের না জানলেও চলবে। তবে যা জানা উচিৎ সেটা হলো— এমন জোছনা ভরা রাতেও মেঘেদের উৎপাত। আজ চাঁদের আলো যেন এক ধীর লাবণ্যে পৃথিবীর শরীরে ধরা দিয়েছে। আকাশের ওপরে কুয়াশার মতো এক নরম মেঘের চাদর ভেসে বেড়াচ্ছে—আলো ও অন্ধকারের খেলায় চাঁদের মুখে খেয়ালখুশির পর্দা টানছে দুষ্টু মেঘের দল।

কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে সেই জ্যোৎস্না ঝরে পড়ে গাছের পাতায় পাতায়, যেন কোনো ক্লান্ত প্রতীক্ষার ওপর দেবীর করুণা। আবার মুহূর্তেই, এক ঢেউ মেঘ এসে ঢেকে দেয় সেই মুখ—তখন চারদিক যেন নিঃশব্দ হয়ে পড়ে, গোপন কোনো আক্ষেপে। চাঁদের মুখ দেখা যায় না ঠিক, অথচ তার উপস্থিতি টের পাওয়া যায় বাতাসের হিমশীতল ছোঁয়ায়, ফুলের গন্ধে, জলের রূপকথায়। সে যেন লুকিয়ে থেকেও বলে যাচ্ছে,আমি আছি—এই অনুপস্থিতিতেই।

এমনি একটি মেঘের আগমণে চাঁদের আলো নিভে আসছিল। জানালার পাশে বসে লিখতে লিখতে সমীরের কানে দুএকটা ভাঙা ভাঙা কথা আসছিল। পাড়ার মেয়েরা হয়তো কোন কারণ বশত  সুপ্রিয়াকে আজ চেপে ধরেছে। সেই সাথে সরোজবালার কন্ঠও শোনা যাচ্ছে। স্বামীকে সুস্থ দেখে ইদানিং তার মনে যেন বসন্ত বাতাস বইছে। 

সবার মাঝে, এক পাশে বসে আছে সুপ্রিয়া। সোনার কাঁটায় খোপা আটকে নীল রঙে মোড়া তার শরীর। অন্ধ চোখে গভীর স্থিরতা। তবে তার গলা খুলেছে, আর সেই সুমধুর কণ্ঠ থেকে ভেসে আসছে “মনমোহন কানহা, বিনতি করু দিন রেন...”

খোলা জানালা দিয়ে বাইরের ঠান্ডা হাওয়া বয়ে আসছিল। সেই বাতাসে ভর দিয়ে সুপ্রিয়ার নরম কোমল কন্ঠস্বরে “মনমোহন কানহা, বিনতি করু দিন রেন...” লাইনটি শোনা যেতেই  মুগ্ধ শ্রোতার মতো সমীর কলম ফেলে সোজা হয়ে বসলো। কুন্দনন্দিনী বেরিয়ে গেল দুয়ার সম্মুখে । সরল রমণী সরোজবালার চোখের কোণ থেকে অশ্রু ঝরছে।  তবে সংগীত চর্চা কিন্তু বেশিক্ষণ চললো না। বছর আটেকের একটি ছেলে ছুটে এসে কি সংবাদ দিতেই মেয়েদের আসর ভেঙে গেল। তখন সুপ্রিয়া তার মেয়েটিকে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকলো। খানিক পরেই নন্দিনীর ডাক পড়লো সেখানে।
 
তারা রাধাপুর এসেছে দিন ছয় হলো। তবে সুপ্রিয়া প্রায় ১৩ মাস পর বাপেরবাড়ি এলো। এদিকে সামনে পূজো ও ভাইকে সে এখনি ছেড়ে যেতে রাজী নয় সে। কিন্তু সমীরের ত আর থাকা চলে না। নিজের গ্রামে তার রোগিদের অবস্থা নিয়ে সে ইতিমধ্যেই চিন্তিত।তার ওপড়ে মুখার্জি বাবুও এখানে এসে হাজির। সুতরাং আজ সকালেই সমীর সুপ্রিয়াকে বলে কয়ে, বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র হাতিয়ে নিয়েছে। তবে সুপ্রিয়া কি আর স্বামীকে এমনি ছাড়ে! তাই এখন নন্দিনীকে ডেকে  সে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে শাড়ির আঁচলটা টেনে চাবির গোছাটা বেঁধে দিলে। নন্দিনী এতখন ঠিক থাকলেও এবার সুপ্রিয়ার দুহাত ধরে ছি ছি করে উঠলো

– ওটি করো না দিদি,আমি এই সবের কিছুই বুঝবো না। তাছাড়া তিনি আমার রান্না খেতেও পারবেন না।

 সত্য বলতে সুপ্রিয়া ও কমলা মিলে নন্দিনীকে যা রান্না শিখিয়েছে; রান্না নষ্ট হবার ভয়ে কুন্দনন্দিনী কখনোই তা রেঁধে পরীক্ষা করে দেখেনি। এছাড়া এই কমাসে সে বেশ বুঝেছে সুপ্রিয়া সেভাবে সংসার চালায়  তার পক্ষে সেটি হবে অসম্ভব। 

এমন নয় যে সে নিজেকে ওই জায়গায় কল্পনা করে দেখেনি। তবে যতবারই সে নিজেকে সুপ্রিয়ার জায়গায় কল্পনা করেছে। সে এই সংসার সমুদ্রে থই খুঁজে পায়নি। 

কিন্তু এতো গেল কুন্দনন্দিনী মনের কথা। তা সে কথা সুপ্রিয়া মানবে কেন? সুতরাং সেদিন রাতে কুন্দনন্দিনী আঁচলে চাবি বেধে স্বামীর কাছে এল। সমীর তখন ঘুমানোর তোরজোর করতে ব্যস্ত। এমন সময় ধীর পদক্ষেপে ঘরে ঢুকে, স্বামীর খুব কাছে বসে, কুন্দনন্দিনী আজ প্রথম স্বামীর হাতটি ধরে দিদি সুপ্রিয়ার নামে নালিশ ছুড়লো!

সব শুনে সমীরের হাসি পেলেও সে নিজেকে সামলে ডাকলো সুপ্রিয়াকে। তবে তখনি সুপ্রিয়ার আসা হলো না,ছেলেমেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে তবে সে স্বামীর ডাকে সারা দিল।  ঘরে ঢুকে সে  দাড়ালো দরজার চৌকাঠে হেলান দিয়ে,সমীরের গম্ভীর কথাবার্তা ও দু একটা ধমক শুন সুপ্রিয়া বললে,

– দেখ কান্ড! কোন মুখে আমার নামে নালিশ করিস তুই বল দেখি? 

– আহা!....আবার ওকে ধমকানো হচ্ছে কেন....

– কেন ,আমার বুঝি সাদ আহ্লাদ থাকতে নেই? এইতো মাত্র কটা দিন,ও একটু সামলাতে পারবে না কেন? বলি, ও বাড়িতে লোকের তো অভাব নেই......

সমীর বুঝলো ঘটনাটি মোঠেও মজার নয়, রীতিমতো গুরুতর।তাই সে এবার সুপ্রিয়াকে ঘরে টেনে, দরজা ঠেলে দিয়ে দূজনকে একত্রে বসালো খাটে। সে নিজে বসলো হাঁটু গেড়ে দুই বধূর সামনে। আলতো করে দুটি হাত রাখলো দুজনার কোলে। স্বামী স্পর্শে মৃদু কেঁপে উঠলো নন্দিনী। নিজের অজান্তেই সেই দিনে নৌকা যাত্রার যে ভাবে সে চেপে ধরে আর ছাড়িয়ে নিতে পারে নি,তেমনি আজও পারলো না। তবে সমীরের সেদিকে নজর নেই। সে বরং স্নেহ মাখা স্বরে দুজনার উদ্দেশ্যে বললে,

– দু'জন মিলে এমনি গোল বাধালে আমার কি হবে বলো তো? গ্রামে কত রোগী রেখে আজ ছদিন পড়ে আছি এখানে। ওদিকে দিন কয়েকের মধ্যে আমায় কলকাতায়ও যেতে হবে। এখন দুজনে এমনটি করলে বরং দুজনেই থেকে যাও,আমার কোন অসুবিধা নে....

সমীর কথা শেষ করতে পারলো না,তার আগেই সুপ্রিয়া যেন রে রে করে উঠলো,

– আচ্ছা, ওকে জিজ্ঞেস কর দেখি! আজীবন কি এমনি চলবে, পালিয়ে পালিয়ে আর কদিন বল? আজ হোক কি কাল,নিজের স্বামী সংসার সামলাতে হবে না বুঝি?

নন্দিনীর মনে কথাটা হয়তো লাগলো কাঁটার মতোই। সত্যিই, একবার যখন সিঁথিতে সিঁদুর পড়েছে, এখন তাকে অস্বীকার করে কি উপায়ে? তবুও মনটা ঠিক মানতে চায় না যে। প্রথমটা খারাপ লাগলেও এখন কিছুটা সে মানিয়ে নিয়েছে সমীরের পরিবারের সাথে। আসলে বড় পরিবারে থাকলেও কুন্দনন্দিনী কখনোই আত্মীয়-স্বজন কাছে থেকে তেমন আদর স্নেহ পায়নি, যেমনটি স্বামী সংসারে এসে পেয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা? না, সেটা মোটের ওপড়ে তার একদমই গিয়েছে। তাছাড়া থাকলেই বা কি! এই গন্ডগাঁয়ে কি হবে স্বাধীনতা পেয়ে?

অনেক কথা কাটাকাটি হবার পর কুন্দনন্দিনী রাজি হলো সমীরের সাথে যেতে। শেষটায় সুপ্রিয়া ত হাপ ছেড়ে বলেই বসলো,

– উফফ,বাপ রে বাপ,এমন মেয়ে ছেলে আমি আগে দেখিনি। পারিসও তুই কুন্দ! অন্য কেউ হলে আমায় বলতে হতো না,  নিজ থেকেই চাবিতে নজর দিতো‌.....

যাহোক,পরদিন ভোর ভোর সুপ্রিয়া ও সরোজবালা মিলে গেল মন্দিরে। যখন ফিরলো তখন নন্দিনী সবে উঠে গেছে স্নান করতে। তার ঘরটি পড়ে পুকুর ঘাঠে যাওয়ার পথে,বাড়ির পেছন দিকটাতে। সে যখন ফিরলো তখন তার ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।  অল্পক্ষণ অপেক্ষা করে সে মৃদু স্বরে ডাকলো। কেউ শুনেছে বলে মনে হলো না। তবে অদ্ভুত গো গো আওয়াজ আসতে লাগলো ভেতর থেকে। আওয়াজটা মৃদু হলেও স্পষ্ট,কানের ভুল বলে মনে করার কোন কারণ নেই। 

সময় এখনো ভোর সকাল। সরোজ ঝাটা হাতে উঠন ঝাঁট দিচ্ছে, ওদিকে তার শাশুড়ি  ঢুকেছেন গোয়ালঘরে। বাড়ির বাকিরা এখনোও গভীর ঘুমে। এই অবস্থায় কুন্দনন্দিনী ঠিক কি করবে প্রথমটায় ভেবে পেল না। খানিক পরেই কিন্তু কৌতুহলী কুন্দনন্দিনী আবার পুকুর পাড়ের পথ ধরে চলে এলো বাড়ির পেছনটায়। বাড়ির পেছনে ছোটখাটো কিছু ঝোপঝাড় ও মাটিতে ঘাসের চাদর ছাড়া বড় কোন গাছ নেই ঘরের পাশে। নন্দিনী ধীরে ধীরে জানালার পাশে এসে দাড়াতেই,ঘরের ভেতরের গোঙানি যেন আরও স্পষ্ট হয়ে কানে লাগলো। অবশ্য এর কারণ জানালাটি আধখোলা ও বিছানা থেকে জানালার দূরত্ব অল্প।

 জানালার কাঠের ফাঁক দুটো থেকে সরু এক রেখা আলো পড়েছে বাইরে। সে চোখ রাখল। জ্বলন্ত  হারিকেনটি জানালার পাশে টেবিলের এক কোনে রাখা,আর তার আলোতেই ঘরটি বেশ উজ্জ্বল হয়ে আছে। বলতে বাধা নেই নিজের ঘরে উঁকি মারতেও কুন্দনন্দিনীর বুক ধুকপুক করছে। ভেতরে আধো-আলোয়, খাটের কিনারে বসে আছে সমীর—পিঠ সোজা, সর্বাঙ্গ অনাবৃত। তার দুই হাতে কারো মাথা—সুপ্রিয়ার। 

নন্দিনী অবাক নয়নে দেখলে,সুপ্রিয়া হাঁটু মুড়ে বসে আছে স্বামীর সামনেই। তার মুখ নত, মুখটা সমীরের ঊরুর কাছে... এত কাছে, যেন একেবারে লেপ্টে আছে।

সমীরের চোখ বন্ধ, মুখ পেছনে হেলানো, এক হাত দিয়ে আস্তে আস্তে সুপ্রিয়ার মাথায় আঙুল চালাচ্ছে। আরেক হাতে সে খাটের চৌকাঠ আঁকড়ে ধরেছে। কোনো কথা নেই, কেবল একপ্রকার চাপা গোঙানিভেসে আসছে হাওয়ায়। কুন্দনন্দিনী আর কিছু দেখতে চায়নি। তবু চোখ ফিরল না। সেই চঞ্চল, তৃষ্ণার্ত স্পর্শের অর্ধেক দৃশ্য তার শরীরকে আগুন ধরিয়ে দিল—শরীর তার নয়, যেন অন্য কারো। কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তবে তখনি সমীর চোখ খুলে চাইলো –নন্দিনীর মাথা ঘুরে গেল। হঠাৎ এক ঝাপটায় সে পেছনে ঘুরে দাঁড়াল। বুকটা ধকধক করছে। পায়ের নিচে যেন মাটি নেই।


কাঠের জানালার পাল্লার ফাঁকটা সরু। বাইরের থেকে ভেতরটা দেখা গেলেও ভেতর থেকে সমীর কিন্তু কিছুই লক্ষ্য করে নি। ঘরের ভেতরটায়  হারিকেনের আলোয় যেন দুধের মতো নরম জ্যোৎস্না ভেসে আছে। সমীর খাটের কিনারে প্রায় আধশোয়া। সে নগ্ন, চোখ আধো-বন্ধ। সুপ্রিয়া একরকম গুটিয়ে বসে আছে স্বামীর পায়ের কাছে, হাঁটু গেড়ে। পরণে তার শুধু মাত্র একখানা লাল শাড়ি। কিন্তু তার আঁচলটা এখন পুরো খুলে একপাশে পড়ে আছে কোমরের নিচে। সুপ্রিয়ার পিঠটা উন্মুক্ত—গোলাপি ঘামে চিকচিক করছে—মাথা একেবারে নিচু, তার মুখটা সমীরের দু-পায়ের মাঝামাঝি লুকানো, দুহাতে সে স্বামীর উরু আঁকড়ে ধরে আছে। মাথাটা সুচারু ভঙ্গিমায় সেখানে নামছে- উঠছে।

সমীরের এক হাত সুপ্রিয়ার আঁকড়ে আছে এখন। হঠাৎই সে চেপে ধরেছে স্ত্রীর মাথাটি—তবে নিষ্ঠুর নয়, বরং যেন নির্দেশ দিচ্ছে, কখনো আদর করছে আঙ্গুল বুলিয়ে। তীব্র চাপ যদিও দিচ্ছে না,তবে ছেড়েও দিচ্ছে না। অন্য হাতে খাটের মাথা ধরে রেখেছে—তার আঙুলগুলো সাদা হয়ে গেছে চাপের জোরে। সমীর ঠোঁট কাঁপে মাঝে মাঝে, নীচু গলায় দম নিয়ে যেন মুখ ফসকে বেরিয়ে আসছে—

 – আহ্... সুপ্রি... এতখানি ভালোবাসো আমায়?

কথা কানে গেলেও তাতে সুপ্রিয়া মাথা তোলে না, উত্তরও দেয় না। সে যেন নিজের পুরো অস্তিত্ব, পুরো আত্মা  আপাতত স্বামীর লিঙ্গ চোষণ ও চুম্বনে ধরে দিয়েছে। অতি যত্নের সাথে অনেকটা সময় নিয়ে ধীরে গতিতে, স্বামীর কাম দন্ড চোষণ ও চুম্বনে সুপ্রিয়া সেটিকে লালায় ভিজিয়ে চকচকে করে তুলেছে। 


এই প্রবল উত্তেজনায় সমীরের শরীর যেন ঝড়ের মতো কাঁপছে—ভিতর থেকে উঠে আসা এক চাপা জোয়ারের মতো। আর সুপ্রিয়া, তার অন্ধত্বের চোখে যেন আগুনের ছায়া। সে তার উষ্ণ মুখের ভেতর থেকে বের করে এনেছে সেটি। ডান হাতের দুটো আঙুলে স্বামীর বৃহৎ লিঙ্গটার লালচে মুন্ডিটা চেপে ধরেছে সে। আর জিভ দিয়ে করছে অনুভব। মোটা, শিরায় ভরা, অস্বাভাবিকভাবে দৃঢ় — এই লিঙ্গ যেন শুধু রক্ত-মাংসের অঙ্গ নয়, এক পুরুষের নির্জন অহংকার, এক নারীর দখলের অধিকার।

তার জিভ ছুঁয়ে যায় লালচে মুণ্ড, আর ঠোঁটের কোণে ফুটে ওঠে এক প্রশান্ত, বিজয়িনী হাসি। নিজের লালারস মিশ্রিত কামদন্ডে সুপ্রিয়া ঘর্ষণ করে তার গালদুটি। পরম আদরে শেষবারের মতো সে এক আলতো চুমু রাখে লিঙ্গমুণ্ডে — যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কোনও প্রার্থনার মুদ্রা — তারপর ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়।

পরক্ষনেই সমীর তার কোমরটা আঁকড়ে ঘুরিয়ে দেয় তাকে, পেছনে ঘুরিয়ে শাড়ি কোমরের ওপড়ে তুলে সোজা টেনে বসায় তার কোলে, সুপ্রিয়া প্রতিবাদ করে না,শুধু দাঁতে কামড়ে ধর নিজের অধর। সমীর নিজ হাতে স্ত্রীর গুদে তার বৃহৎ কামদন্ডটি  বসিয়ে যোনির পাপড়ি তে তা ঘষে খানিকক্ষণ। সুপ্রিয়া দুহাতে স্বামীর গলা জড়িয়ে কাঁধে এলিয়ে দেয় মাথা। স্বামীর সুবিধার্থে তার সুগঠিত নিতম্বটি উঁচু করে তুলে ধরে সে। সমীরের ঘন ঘন ঘর্ষণের ফলে লিঙ্গ মুন্ডিটা যোনির পাপড়ি ঠেলে এপাশ ওপাশ করে আনাগোনা ।

স্বামীর এমন কান্ডে ধৈর্য্য হারিয়ে সুপ্রিয়া একবার কামনা বশে নিচে ঠেলে দেয় তার নিতম্ব। এক মুহুর্ত সময় সুপ্রিয়া অনুভব করে তার উষ্ণ গহ্বরে কামদন্ডের মুন্ডিটা। পরক্ষনেই সমীর টেনে বের করে নেয় তা, সুপ্রিয়া ঠোঁট কামড়ে গুমের ওঠে। মুখ ফিরিয়ে তাকায় সে স্বামীর দিকে,তবো চোখ দুটি এখন বন্ধ। তবে স্বামীর দৃঢ় পুরুষাঙ্গ গুদে ছোঁয়াতেই এক মুহুর্তে তার অন্ধত্বের অপার্থিব দৃষ্টি ফেলে সে স্বামীর আঁখি পানে।

আর তখনই সে অনুবভ করে স্তনবৃন্তের আলতো মোচড়! আহ্.... শব্দে মৃদু শীৎকার করে ওঠে সুপ্রিয়া, পরক্ষনেই তার উষ্ণ গুদে কোমলতায় প্রবেশ করে সমীরের কামদন্ড। এবার চিৎকার নয়, সুপ্রিয়া ডান হাতে চেপেধরে নিজের মুখখানা। সমীর দু'হাতের থাবাতে আঁকড়ে ধরে সুপ্রিয়ার উন্মুক্ত দুধ জোড়া‌। এদিকে সুপ্রিয়া অন্য হাতে আঁকড়ে ধরে স্বামীর উরুর মাংস, আঙুলের নখগুলো যেন গেঁথে বসতে চাই সেখানে,একহাতে ভর দিয়ে লঘুগতিতে চলে রমণক্রিয়া।

কুন্দনন্দিনী কিন্তু এই সবের কিছুই দেখেনি। বরং এইসবের আগে যা সে দেখেছে তার উত্তেজনা সামলাতেই সে দেওয়ালের সাথে সেঁটে গিয়েছিল। এমন সময় ঘরের ভেতর থেকে সুপ্রিয়ার নিচু গলার আওয়াজ পেল সে,

– আমি তোমার বৌ... তোমার বিছানার দাসী... যেভাবে খুশি নিও আমায়... শুধু ছেড়ে দিও না...


তার মুখ, হাত-পা সব জমে আসে। তার স্বভাব সিদ্ধ কৌতুহল আর একবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। নিজেকে ফিরিয়ে নিতে চায়—তবু পারে না। আবারো আমাদের এই কৌতুহলী নায়িকা চোখরাখে জানালার ফাঁকে। পরক্ষণেই তার চোখে ভাসে এক অবর্ণনীয় দৃশ্য—যেখানে প্রেম, চেতনা, কামনা আর সঁপে দেওয়ার এমন একত্রীকরণ সে কল্পনাও করতে পারেনি। তার বুকের ভিতরে কী যেন ধকধক করতে থাকে। ঘরের ভেতরে উষ্ণতা যেন বাড়ছে। সুপ্রিয়া এবার দু'হাতে চেপেধরেছে স্বামীর দুই ঊরু‌। দাঁতে ঠোঁট কামড়ে রমণক্রিয়ার আপন গতিতে চলছে তার ওঠাবসা।

 সমীর অবশ্য থেমে নেই। সে দুই হাতের বিশাল থাবাতে সুপ্রিয়ার দুধ জোড়া  বন্দী করে মর্দন করতে শুরু করেছে জোরে জোরে।সেই সাথে চলছে ঘাড়ের কাছটায় চুম্বন ও লেহন। রতিক্রিয়ার গতি সম্পূর্ণ সুপ্রিয়ার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু কামার্ত রমণীর এখন পাগল পাগল ভাব। বেচারির সোনার কাঁটা খসে গিয়ে হাঁটু ছাড়ানো কেশরাশি হয়েছে উন্মুক্ত । তবে এখনও যেগুলো খানিক ভেজা বলে এলোমেলো হয়ে যায়নি, ছড়িয়ে পরেছে তার বা কাঁধে।

 এই রূপ কতখন চলছিল কুন্দনন্দিনীর কি আর সে খেয়াল আছে! তবে সমীরের বোধহয় রতিক্রিয়ার গতি পছন্দ হচ্ছিল না। আর তাই তো খানিক পরেই সে নিজেই একহাতে সুপ্রিয়ার মুখ ও অন্য হাতে কোমর পেঁচিয়ে পেছনে গা এলিয়ে দেয়। স্বামীর সাথে সুপ্রিয়াও শুয়ে পরে চিৎ হয়ে স্বামীর দেহের ওপরে। তারপর গুদে তার চলতে শুরু করে দ্রুতবেগের চোদন।

রমণ বেগে দুলতে শুরু করে সুপ্রিয়ার অবাধ বড় বড় স্তন দুখানা। আর ঠিক এমন সময় পায়ের শব্দ! নন্দিনীর চমক ভাঙে যেন। লজ্জায় লাল হয় তার ফর্সা মুখখানা। চটজলদি সরে এলেও সে পড়ে সুপ্রিয়ার মায়ের সামনে। তবে ভাগ্য ভালো তিনি কিছুই বোঝেনি।

/////////

সেদিন যাবার আগে নন্দিনী সরোজবালার উপহার দেওয়া একটি শাড়ি গায়ে জড়ালো। নীল রং। পাড়টা সুরু সোনিলী , আঁচলটা যেন ফুলের বাগান। দেখতে বেশ,তবে দামটাও কম নয়– ২৫ টাকায়  চার পাঁচটে ভালো শাড়ি অমনি আসে। সেগুলো বাদ দিয়ে এটাই কেন দিতে হবে নন্দিনী তা ভেবে পায় না। তাও সুপ্রিয়াকে দিলেও বোঝা যেত। সে সারাক্ষণ নিজেকে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু নন্দিনী ত তা পছন্দ করে না। 

তার সাজসজ্জা অতি সাধারণ শাড়িতেই সীমাবদ্ধ। গহনার মধ্যে  গলায়  একটা সুরু সোনার চেইন,আর হাতে লোহা ও শাখাপলার সাথে কতগুলো কাচের চুড়ি। এই তো তার সাজ। অবশ্য ইদানিং বেশির  মধ্যে যোগ হয়েছে দুটি নূপুর। তার বাইরে কুন্দনন্দিনী কিন্তু আর তেমন কিছুই পরতে চায় না, এমনকি তার কোমর অবধি চুলগূলো খোঁপা করে সোনার কাঁটা গুঁজে দিতে চাইলেও সে রাগ করে। অত সাজসজ্জা তার ভালো লাগে না। এর পরেও সরোজকে খুশি করতে নন্দিনী শাড়িখানা পরলো।


রাস্তায় বেরিয়ে গাড়ি না পেয়ে তালপুকুরের পথ ধরে সমীরের পেছন পেছন নন্দিনীও হেঁটে চললো। বাড়ি থেকে বেরুবার আগে সুপ্রিয়ার মেয়ে চারুলতা ছোটমায়ের হাত ধরে বসেছিল আর দু'টো দিন থেকে যেতে। ইদানিং ছোটমা হিসেবে নন্দিনীর সাথে চারুলতার  সম্পর্ক এগিয়েছে ভালোই। কুন্দনন্দিনীর নিজেরও ইচ্ছে ছিল মেয়েটি কে নিয়ে আসে। তবে সুপ্রিয়ার বাবা মা আনতে দেন নি। অবশ্য এর জন্যে তাদের দোষ দেওয়াও চলে না...

– হরি কাকার নৌকা দেখি ওঠা! আর ঘাটে গিয়ে কাজ নেই জামাইবাবু, শুধু শুধু সময় নষ্ট।

কথাটা বলে সুশীল চাইলো সমীরের পানে। সুস্থ হয়ে ওঠা সুশীল চলছিল ওদের সামনে, যদিও সমীর ওকে এতটা পথে আসতে মানা করেছিল,তবে কে শোনে কার কথা! 

– যা ভালো বোধ হয় করো। এমনিতেও তোমার এই দিদিটি শহুরে মেয়ে,ওকে নিয়ে চিন্তা নেই .....

সমীরের সম্মতি পেয়ে সুশীল জোর পায়ে এগিয়ে গিয়ে, গলা ছেড়ে ডাকতে লাগলো। খানিক পরে ওই নৌকাতেই তাঁদের উঠিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়ে সে রওনা দিল বাড়ির পথে। এদিকে ছইহীন নৌকাটি নদীর স্রোতের সাথে ধীরে ধীরে এগোতে লাগলো মধুপুরের দিকে। নৌকার দু’পাড়ে প্রকৃতির গোপনীয়তা একে একে ফুটে উঠতে লাগলো চারপাশে। দূরের ঘন সবুজ কাশবনের পাতারা হাওয়ায় নরম কোমল হাসি ছড়াচ্ছে আপন মনে। তার পাশেই  ঝোপঝাড়ে ছোট ছোট পাখিরা  এদিক ওদিক করে খেলছে নীরবে। অন্যপাশে ধানক্ষেতের মাঝখানে খেজুর গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে গ্রাম্য মানুষগুলোর ছোট্ট ছোট্ট ঘরদোর। নদীর পাড় ঘেঁষে অল্প বয়সের একটি কিশোর দুটি গরু নিয়ে যাচ্ছে কোথাও,বোধহয় মাঠে। একটু দূরেই হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে জাল ফেলে একজন ধরছে মাছ। তার ওপড়েই পাড়ের একপাশে গোল হয়ে বসে আছে কয়েকটি ছেলেমেয়ে। 

নন্দিনীর গত রাতের ভয়টি এখন বোধহয় আর নেই। সে এখন মাথার আঁচল কাঁধে ফেলে দেখছে চারপাশ। মাঝ নদীতে পাল তোলা নৌকা চলছে দুটি। তাদের নৌকা চলছে পাড় থেকে খানিকটা দূরে। সমীর একটা সিগারেট ধরিয়ে কি সব চিন্তা ভাবনা করতে করতে টানছিল। হঠাৎ সেদিকে নজর পড়তে স্বামীর হাতে সেদিনের কাটা দাগটি নন্দিনীর চোখে পড়লো। 

ওই সেদিন কুন্দনন্দিনীর পদতলে সমীর নিজের হাত পেতে দিয়েছিল—কাচের টুকরোটা তার পায়ে লাগলে কি হতো? ভাবতেই বড় খারাপ লাগলো তার। সমীরের হাতে ওটা অল্পেই গেঁথেছিল,তবে নন্দিনী  অমনি করে পা রাখলে আর দেখতে হতো না। অথচ সেটার জন্যে সমীর তাকে একটু কথা শুনিয়েছে মাত্র। কিন্তু সে তো কিছুই বলেনি। অন্তত পক্ষে ধন্যবাদ জানানো উচিত না ছিল কি?

– আমি পারব না!

ধরা গলায় বললো কুন্দনন্দিনী। সমীর চমকে গিয়ে মুখ ফেরাতেই সে আরো বললে

– আমি তো জানিও না কিছুই… কোথায় কি থাকে… সুপ্রিয়া দিদি…

 তার কণ্ঠ থেমে গেল। সমীর পুরো ব্যপারটা বুঝে নিয়ে একটু হেসে বললো,

– এতো ভাবছো কেন? বাড়িতে কমলা আছে, ইন্দিরা আছে, তাছাড়া তুমি কি ভাবো বাকি সবাই মিলে সুপ্রিয়ার সহিত জোট পাকিয়ে তোমায় খাটাবে? আর যদি তা হয়,তবে চিন্তা নেই - তোমার নরম হাতে গরম গরম বিষ পরিবেশন করলেও আমি নিন্দে করবো না....

কথা গুলো সত্যি হলেও নন্দিনীর খারাপ লাগলো। কেন না সমীর বুঝছে না ব্যপারটা। সাধারণত পুরুষ মানুষের তা বোঝার কথাও নয়। তবে কুন্দনন্দিনী ভালো করেই জানে সুপ্রিয়ার মতো সংসার সামলানো তার কর্ম নয়। শুধু শুধু বাড়ির একগাদা লোকের সামনে আনাড়ি গৃহকর্ম করতে তার বেজায়া গায়ে লাগবে।

/////

Like Reply
তারা যখন বাড়িতে পৌছালো তখন রোদ্রতপ্ত দুপুর। বোধকরি গগন ও রবির বিরাগ ভেঙ্গে সন্ধী হয়েছে আজ। গাঢ় নীল আকাশে ক'ফালি সাদা মেঘ উড়ে চলেছে। কুন্দনন্দিনীর কাছে বর্ষা অতি প্রিয়, কিন্তু এবারের আষাঢ়-শ্রাবণ শুরু থেকে শেষ তার গেল শুধু মনের টানাপোড়েনে। 

নিচতলার ব্যস্ততা মিটিয়ে খানিক পরেই কুন্দনন্দিনী উঠে এল সুপ্রিয়ার ঘরে। বাইরের দিকের জানালাটি খোলা— তার পাশেই সুপ্রিয়ার খাঁচায় বন্দী ময়না। তাকে দেখই পাখিটি হঠাৎ করে মাথা কাত করে বললে—

— সুপ্রিয়া! সুপ্রিয়া!

কুন্দনন্দিনী এগিয়ে এলো খাঁচার পাশে। দেখল খাঁচার ভেতর জলের পাত্র গেছে উল্টে। জল অবশ্য টেবিলে রাখা গ্লাসে ছিল। সে খাঁচা খুলে জলের পাত্রে জল ভরলো, তারপর খাঁচা বন্ধ করে খাটে বসে পাখির দিকে তাকিয়ে রইলো খানিকক্ষণ। সে কিছু বললো না, তবে পাখিটি আবার বলল, একটু বেশি টান দিয়ে, যেন কারো অভ্যস্ত সুরে,

—"সু-প্রি-য়া!"

তারপর নিস্তব্ধতা। যদিও নিচ তলায় কার বাচ্চার যেন কান্নার রোল তুলেছে। আর তাতেই নন্দিনী উঠে দাঁড়িয়ে ভাবলো শাড়ি পাল্টে নিচে নামে। কিন্তু তখনি তার চোখ পরে নীল পর্দায় ঢাকা দেওয়া গ্রামোফোনটিতে। তখন কি ভেবে সে পর্দাটা সরিয়ে দেখতে গেল।

কুন্দনন্দিনী জানে এই যন্ত্রটি সকলেই 'পুরোনো' বলেছে। কিন্তু কাছে গিয়ে হাতে ছুঁয়েই তার মনে হলো কিছু একটা ঠিকঠাক মেলে না। রঙের চকচকে ভাব, পিতলের মুখে কোনো কালচে দাগ নেই, চাকতিটাও অদ্ভুতভাবে নতুন নতুন গন্ধ ছড়াচ্ছে। যদিও সে জানে না এটা কবে কেনা হয়েছিল,তবু এটার হাল দেখে নতুন ছাড়া পুরনো মনে হয় না মোটেও।


তবে সেই সব ভেবে তার কাজ কি আর। সে বরং আলমারি থেকে একটি নতুন রেকর্ড বের করে বসায় তাতে—হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে চালু করে। তারপর সূচটি ডিস্কের ওপরে বসাতেই এক মুহূর্ত থেমে থেকে,একটু পরেই কিন্তু ধাতব ঘর্ষণের শব্দ পেরিয়ে গানের সুর ভেসে উঠলো ঘরের বাতাসে:

"আমায় না দেখিতে যদি পারো
তবু চোখ রাখিও চোখের মতো।"

পাখিটা আবারো ডাকছে,তবে কুন্দনন্দিনী এবার গানে মন লাগিয়েছে। অবশ্য এই মনোযোগ তার বেশিক্ষণ রইলো না। কারণ কিরণ তখন "বৌরাণী"...."বৌরাণী".... বলে গলা ছেড়ে এসে পৌঁছেছে তার ঘরের দুয়ার সম্মুখে।


– আর নন্দি...বৌদি তুমি!.... বৌরাণী আসে নি?

প্রশ্নটার উত্তর দেবার আগেই ইন্দিরা এসে দাঁড়ালো কিরণের পেছন। সে হাঁপাচ্ছে। তবে একটু সামলে নিয়েই কিরণের কানে ধরে টেনে বললে,

– ভারি ছেলে ত তুমি! যখন তখন এমনি ছুটে মেয়েদের ঘরে ঢুকতে হয় বুঝি....

কিরণ ইন্দিরার কথার তোয়াক্কাও করলে না। সে বরং তার কান ছাড়িরে ইন্দিরার চুলের মুঠি ধরে টেনে বললে,

– ফের যদি কখনো কান ধরেছিস আমার ,তবে তোই এই চুল আমি কেটে আমার ঘরে সাজিয়ে রাখবো বললাম।

এমন কান্ড দেখে নন্দিনী এগিয়ে এসে দুজনকে ছাড়িয়ে বললে,

– কি হচ্ছে এইসব,ছাড় দেখি.. ছাড়ো....

কিরণ ছাড়লো বটে,তবে জিজ্ঞাসা পুর্ণ মুখ নিয়ে তাকিয়ে রইল কুন্দনন্দিনী পানে। নন্দিনীও বুঝতে পেরে বললে,

– দিদি আসেনি।

ইন্দিরা ছাড়া পেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল নন্দিনীর পেছনে। এবার নন্দিনীর কথা শুনে সে বলে উঠলো,

– কি? এখন হলো তো.... সেই তখন থেকে বলছি বড় বৌদি আসেনি, তবুও সেই এক গো ধরে বসে আছে... এদিকে আমার চুলগুলো টে....

বলতে বলতে ইন্দিরা তার চুলে আঙুল চালাতে লাগলো। কিরণ চুপ মেরে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তার চোখেমুখে চিন্তার ছাপ। তাই দেখে নন্দিনী হয়তো কিছু বলতো,তবে তার আগেই কিরণ বলে উঠলো,

– দাদা কোথায় রে ইন্দু?

প্রশ্ন শুনলেও এবার ইন্দিরা কিছুই না বলে নিচতলার পথ ধরলো। পেছনে ছুটে গেল কিরণ তাকে ডাকতে ডাকতে। এদিকে বেচারি কুন্দনন্দিনী কিছুই বুঝতে না পেরে আমাদের মতো হতবাক হয়ে চেয়ে রইলো সিঁড়ির দিকে।

/////////////

নন্দিনী জানতো রাতে কি হতে চলেছে। নতুন বধূকে দোতলায় একলা রেখে ডাক্তার বাবু দুদিন যাবত নিচতলায় থাকছে,এটি বাড়িরে লোকের  চোখে লাগবে বৈ কি। তবুও এতদিন সুপ্রিয়া ছিল বলেই কেউ প্রশ্ন তোলে নি। কিন্তু পরিস্থিতির এখন অনুকূল। 

তবে এই ব্যাপারে আলোচনা সমালোচনায় ডাক্তার বাবুটির কিন্তু হচ্ছে না কিছুই। যা লাভ ক্ষতির হিসেব তার সবটুকুর মূল্যেই যেন কুন্দনন্দিনী। তাই বাড়ির লোকের আলোচনায় আপাতত নন্দিনী।

 অবশ্য এটিই স্বাভাবিক, পুরুষের দোষগুণ সাধারণত বিচারের বাইরে কি না- তবে সত্য বলতে নন্দিনীর মনের খানিক পরিবর্তন ঘটেছে। বোধকরি স্বামীর প্রতি খানিক বিশ্বাসের সঞ্চারও হয়েছে সেখানে। মোট কথা সমীরের সহিত এক ঘরে থাকতে তার কোন আপত্তি নেই আর। তবে তার আপত্তি নেই বলেই তো সমীর সুরসুর করে দোতলায় উঠে আসবে না। কুন্দনন্দিনী নিজেও জানে প্রথম দিনকয়েক স্বামীর প্রতি তার বিরূপ আচরণের কথা..... 

– এতো কি ভাবতে বসলে এখন? ওদিকে দাদা যে বেরিয়ে গেল বলে!

কমলার কথায় চমকে ওঠে নন্দিনী। রান্নাঘরে আজ যদিও তার প্রথম আগমন নয়,তবে রান্নাটি প্রথম! অথচ যার জন্যে রান্না সেই নাকি না খেয়ে বেরুবার মতলব করছে!

– আমি যাই, তুমি একটু দেখো এদিকটা।

বলেই নন্দিনী এগুলো স্বামীর ঘরের দিকে, এবং এসেই দেখলো তার স্বামী দেব সত্যিই বেরুবার জন্যে প্রস্তুত। নন্দিনীর কণ্ঠ শুকনো, কিন্তু তাতে একধরনের শান্ত অভিমান মিশিয়ে বললে,

– আমি জানতাম না আপনি এত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাবেন… 

সমীর একটু চমকে তাকায়। পেছন ফিরে দেখে নন্দিনী সেদিন কার মতোই গায়ে শাড়ি জড়িয়েছে ব্লাউজ ছাড়া। তবে আজ নন্দিনী নিজেও সচেতন এবং সমীরও দৃষ্টিতে লাগাম পড়িয়েছে।

– একটু বসুন,খেয়ে তবে বেরুবেন....

নন্দিনীর কথা শেষ হয় না,তার আগেই সমীর ব্যস্ত হয়ে বলে,

_ এখন থাক,আসলে একটু দূরেই যেতে হবে। তাছাড়া বাবা বাড়িতে নেই বলে আমার ঝামেলা এমনিতেই বেরেছে,তার ওপড়ে এতো দেরি.... মানে....

 সমীর আর কিছু বলার আগেই কুন্দনন্দিনী এগিয়ে এসে তার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে,অতপর মাথা নিচু করে বলে,

– এতো জলদি বেরুবেন জানলে রান্না টা আমি করতাম না। এখন আপনি না খেলেই বা কে খাবে?

সমীর এক মুহূর্ত স্তব্ধ থাকে। কথাটি তার ঠিক বিশ্বাস হয় না। তবে পরক্ষনেই কুন্দনন্দিনীর শেষ কথা গুলো মনে করে সে ঠোঁটে হাসি এনে বললে,

– তা খেতে তো পারি, যদি না বিষ মেশানো থাকে।

এইবার নন্দিনী হাতের ব্যাগটা টেবিলে রেখে ঘাড় ফিরিয়ে বললে,

– আপনার মতো ডাক্তার বিষ চিনতে পারবেন না, আমি এতটা কাঁচা নই। তবে এখন আপনার খাওয়া না হলে, আমায় বুঝবো হবে, বিষের চেয়েও খারাপ কিছু হয়েছে আমার হাতের রাঁধায়।

নন্দিনী বেরিয়ে গেল। এবং সমীর বুঝলো নিজের রান্নায় কুন্দনন্দিনীর বিশেষ ভরশা নেই বলেই এই আমন্ত্রণ।সমীর একটু হাসে। তবে কপালে দুঃখ আছে সে তা ভেবেই নিয়েছে, কেন না  বোন সিন্দুর প্রথম রান্না তার বেশ মনে আছে, এবার নন্দিনীর রান্না তেমন না হলেই রক্ষে।।

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

[+] 6 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
অসাধারণ দাদা
[+] 1 user Likes Ari rox's post
Like Reply
yourock আমি নন্দিনীর চোদনের অপেক্ষায় আছি।
[+] 1 user Likes Mamun@'s post
Like Reply
বাহ্ অসাধারণ লেখা clps
Like Reply
সবাইকে ধন্যবাদ ❤️

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply
Darun keep it up
[+] 1 user Likes Walter_white's post
Like Reply
আপনার গল্প টা পড়তে  বেশ লাগছে পরবর্তী অধ্যায় টা তাড়াতাড়ি লিখে ফেলুন না। রোমান্টিক লেখা আমার খুব পছন্দ।  
[+] 1 user Likes Rubya's post
Like Reply
(15-07-2025, 12:55 AM)Rubya Wrote: আপনার গল্প টা পড়তে  বেশ লাগছে পরবর্তী অধ্যায় টা তাড়াতাড়ি লিখে ফেলুন না। রোমান্টিক লেখা আমার খুব পছন্দ।  


সম্পূর্ণ গল্পটি রোমান্টিক নয়। আর তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়ে উঠবে না,তবে শুক্রবার আপডেট আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।❤️

(14-07-2025, 06:21 AM)Walter_white Wrote: Darun keep it up

ধন্যবাদ ❤️ 

INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)