25-05-2025, 09:39 PM
রতিক্রিয়াটা সম্পূর্ণ দিলে জমে যেত দাদা
Misc. Erotica স্বামী ﴾ পর্ব নং:- ৬ ﴿
|
27-05-2025, 06:45 AM
সাইটে ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছে কেন বুঝছি না!
যাই হোক, অসাধারণ লিখেছেন,পরের পর্বের অপেক্ষায়। Mahreen
28-05-2025, 08:01 AM
28-05-2025, 02:46 PM
(16-05-2025, 03:36 PM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ৪সাধু ও চলিত ভাষার এই মিশ্রণ বড়ই পীড়াদায়ক। পড়তে গিয়ে এত হোঁচট খেতে হয়, পড়ার ইচ্ছাই চলে যায়।
28-05-2025, 03:23 PM
(This post was last modified: 29-05-2025, 06:31 PM by বহুরূপী. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
rubisen Wrote:সাধু ও চলিত ভাষার এই মিশ্রণ বড়ই পীড়াদায়ক। পড়তে গিয়ে এত হোঁচট খেতে হয়, পড়ার ইচ্ছাই চলে যায়।এই পীড়াদায়ক ব্যাপারে জন্যে আমি দুঃখিত আর্যা,তবে আমার এই স্বভাবটা সহজে যাবার নয়,তাই সকল পাঠক পাঠিকা দের বলবো এটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ ❤️ Odrisho balok Wrote:19 yr a biye kora ek sobaggo. ekhon to erokom dekhai jay naআর কিছু বছর পরে ছেলে ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করতে পারবে না বা চাইবে না, অন্তত আমার তো তাই মনে হয়। Mahreen Wrote:সাইটে ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছে কেন বুঝছি না!সার্ভার ডাইন ছিল, সমস্যা ত বোধহয় সবারই হচ্ছে। Mamun@ Wrote:রতিক্রিয়াটা সম্পূর্ণ দিলে জমে যেত দাদাএখনো অনেক পর্ব বাকি,তবে পরবর্তী পর্বে রাখার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ ❤️ Nobody03 Wrote:Update বড় আপডেট দরকার, ভেবে ছিলাম মিলন দৃশ্য টা সম্পূর্ণ দেখতে পাবো হলো না মাঝে অতীত এনে ফেললেন।আপাতত ঈদের আগে কোন আপডেট আসবে বলে মনে হয়না। ![]() bluesky2021 Wrote:একেই বলে বড়দের সাহিত্য।হবে হয়তো, ধন্যবাদ ❤️ Saj890 Wrote:very nice.থ্যাঙ্কস ব্রো❤️
29-05-2025, 06:18 PM
Apnar leka boudimoni golpoti porecilam, osombob rokomer balo legece
Ar ai golpoti o tar betikrom noy.. Apnar leka amar onek onek balo lage Asa kori update taratari diben
30-05-2025, 07:46 AM
02-06-2025, 03:43 AM
আপডেট কবে পাবো? বড় একটা আপডেটের আশা করে আছি কিন্তু!
"The greatest trick the devil ever pulled was convincing the world he didn't exist."
03-06-2025, 02:57 PM
06-06-2025, 12:22 AM
(This post was last modified: 06-06-2025, 01:07 AM by বহুরূপী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব ৬
– গেল কোথায়? কোথায়....এখানেই তো রেখেছিলাম..... রাত্রি কালে সমীর তার ডাক্তারী ঘরে আপন মনে বির বির করতে করতে কি যেন খুঁজছিল। তাকে বই ও কাগজপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখে বোধকরি তা চিঠি জাতীয় কিছু একটা হবে। যদিও চিঠি সে পেল না,তবে চিঠি খুঁজতে খুঁজতে তার চোখ পড়লো,শোবার ঘরে ঢোকার মুখে দেয়ালের একপাশে একটি কৌটো রাখা। তখনি তার মনে পড়লো — এই কৌটো দিয়েই সে চিঠিটা চাঁপা দিয়ে রেখেছিল টেবিলের ওপর। চিঠিটা এসেছে পাঁচ -ছদিন আগে। কিন্তু নানান ব্যস্ততায় চিঠির কথা সে একদম ভুলেই গিয়েছিল। তাছাড়া সুপ্রিয়া এখন নিচতলায় খুব একটা আসতে পারে না। কেন পারে না,তা ভাবলে সমীরের হয় রাগ। তবে সে যাই হোক,আজ একটু সময় পেয়ে শান্ত অবসরে সুপ্রিয়াকে চিঠি পড়ে শোনানোই যায়। তবে চিঠি পাওয়া গেল ত পড়ে শোনাবে। তাছাড়া কৌটোটাই বা ওখানে গেল কেন? সূপ্রিয়া কি ঘর গুছিয়ে আজ? সমীর সাত-পাচ ভাবতে ভাবতে এলো কৌটোটার কাছে। কৌতুহল বশত নিচু হয়ে কৌটো হাতে তুলতেই পাশের ঘরের পর্দা ঠেলে ঘরে ঢুকলো খোকা। আচমকা সমীরের হাতে ধাক্কা লাগলেও খোকা সামলে নিয়ে বাবার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু সমীরের হাত থেকে কৌটাটা মেঝেতে পরে কতগুলো শিশি ভাঙা কাচের টুকরো মেঝেতে ছড়িয়ে গেল। এর পরপরই কিছু ঘটনা ঘটলো অতি দ্রুত বেগে। খোকাকে সামলাতে সমীর নিচু হয়ে মেঝেতে বসে পরেছিল,তবে খোকা তো আগেই সামলে নিয়ে এখন তার পেছনে। এদিকে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে খোকার পিছু পিছু ঢুকলো কুন্দনন্দিনী। হাতে তার দুধের গ্লাস। সে এক রকম ছুটে এসে পা রাখছিল মেঝেতে পরে থাকা কাচের টুকরোর ওপরে। কিন্তু সমীর থাকতে তা হয় কি করে! – আরে দেখে......! না! কথা বাতাসে ভর করে কানের দুয়ারে পৌঁছনোর আগেই কুন্দনন্দিনীর পা পরলো ঘরে। তবে কাঁচে নয়,পা পরলো স্বামীর হাতে! সমীর কথার সাথে সাথে তার বাঁ হাতখানিও চালিয়েছে তৎক্ষণাৎ। তাই কাঁচে নন্দিনীর পা পরার আগেই পা ঠেকলো স্বামীর হাতের তালুতে। এতে অবশ্য কুন্দনন্দিনীর পা বাঁচলেও বেসামাল হয়ে তাল সামলাতে না পেড়ে গ্লাসের বেশি অর্ধেক দুধ পরলো সমীরের মাথায়! কুন্দনন্দিনীও হয়তো পরতো স্বামীর ওপরেই! তবে ততক্ষণে সমীর পতন ঠেকিয়েছে ডান হাতে বারিয়ে নন্দিনীর কোমর আঁকড়ে। বলিষ্ঠ কঠিন হাত সমীরের। সেই হাত এখন নরম কোমড়ের মাংসপেশীতে চেপে বসতেই নন্দিনীর বুক অজানা শিহরণে কেঁপে উঠলো। এই প্রথম কোনো পুরুষের হাত তার কোমরে পরেছে, অনুভুতি টা কেমন যেন। সর্বাঙ্গে কাটা দিয়ে ওঠে। সে স্বামীর হাতের ওপরে পা রেখেই থ মেরে অবাক আয়ত নয়নে স্বামীর পানেই চেয়ে রইল খানিক। ঠিক কি হয়েছে তা সে বুঝে উঠতে পারেনি এখনো। এদিকে সমীর নন্দিনীর পা খানি নিরাপদ জায়গায় নামিয়ে রাখতেই পাশ থেকে খোকা বলে উঠলো, – আমি দুধ খাবো না এখন.... কথাটা বলেই খোকা কুন্দনন্দিনীকে পাশ কাটিয়ে ছুটে বেরিয়ে যেতে চাইছিল। কিন্তু সমীর বাঁ হাতে তাকে আটকে দিয়ে ব্যস্ত হয়ে বললো, – উঁহু্! এভাবে না দেখে কেউ ছোটে? এখুনি একটা রক্তারক্তি কাণ্ড বাঁধাতে। সমীর খোকাকে সরিয়ে আনলো বটে, তবে শুধু যে দুধ খাওয়ার ভয়েই খোকা বেরিয়ে যেতে চাইছে তা নয়। এখন যে কান্ডখানি ঘটলো, তার প্রতিক্রিয়ায় ছোট-মা কী করবে, বোধহয় তার ভয় ছিল— একটু বেশি। তবে নন্দিনীর মুখ এখনও বিস্ময়ে হতবাক। সমীর নন্দিনীর কোমড় ছেড়ে যখন উঠে দাড়ালো, তখন তার চোখের দৃষ্টি স্পষ্ট ভাবে পরলো স্বামীর পানে । দেখা গেল সাদা সাদা দুধ গড়িয়ে পড়ছে সমীরের মুখ বেয়ে। দুধে তার চুল,পিঠ, এমনকি ধুতির খানিকটাও ভিজে গেছে। দৃশ্যটি হাস্যকর বটে। তবে নন্দিনীর কিন্তু হাসি পেল না। কারণ সমীরের বাঁ হাতে— মানে যে হাতটি সে নন্দিনীর পায়ের তলায় পেতে দিয়েছিল, সেই হাতের ওপরে দিকটায় একটি কাচের টুকরো গেঁথে গেছে। – আপনার হাতে....ওকি! এ যে গেঁথে গেছে.... বলতে বলতে নন্দিনী হাতের গ্লাস ফেলে স্বামীর বাঁ হাতখানি টেনে নিল। কুন্দনন্দিনীর নরম হাতের আশ্রয় থেকে মেঝেতে আছাড় খেলেও গ্লাসটি ভাঙলো না মোটেও,তবে হঠাৎ নন্দিনী এমন উৎকন্ঠা সমীরকে অবাক করে দিল। কুন্দনন্দিনীর সাথে তার বিয়ে হয়েছে প্রায় মাস পেরুলো। এর মধ্যে একদিনও নন্দিনী তার সাথে কথা বলেনি ঠিক করে, ভালো ব্যবহার ত দূরের কথা। এতে সমীরের যে রাগ হয়নি তা নয়। তবে রাগটা ঝেরে ফেলে সে পুরো চেষ্টা চালিয়েছে কথা বলার। কিন্তু শেষ মেষ উপায় না দেখে ভেবেছে কুন্দনন্দিনীকে মানিয়ে নিতে খানিক সময় দেবে। তাই সে দোতলায় নিজের ঘর ছেড়ে নিচতলায় থাকছে আপাতত পাকাপাকি ভাবে। – ও কিছু নয়, আমি দেখছি! তুমি পারলে একটু সুপ্রিয়া কে ডেকে দেবে? বলেই সমীর হাতটি টেনে নিল। অবশ্য ততক্ষণে নন্দিনী স্বামীর হাত থেকে কাচের টুকরোটা সাবধানে তুলে নিয়েছে। এখন সমীর টেবিলের দিকে এগিয়ে যেতেই সে আর কোন কথা খুঁজে না পেয়ে বেরিয়ে গেল । গেল সে দোতলায়। সমীর যে সুপ্রিয়াকে কেন ডাকছে তা নন্দিনী বুঝে নিয়ে ছিল সহজেই । তাই সে সুপ্রিয়াকে না ডেকে ঘরে ঢুকে সুপ্রিয়ার আলমারি খুলে একখানা নতুন ধুতি আর গামছা নামিয়ে গেল নিচ তলায় সমীরের ঘরে। সমীর তখন হাতে ব্যান্ডেজ পাকাচ্ছে চেয়ারে বসে। খুব একটা গভীর ক্ষত নয় যদিও,তবে ভোঁতা ধাঁচের ক্ষত। তাই ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধাই ভালো। শুনে নন্দিনী আগে নিচু হয়ে বসে মেঝে থেকে কাচের টুকরো গুলো তুলে আবারও টিনের কৌটায় ভরতে লাগলো । অবশ্য আড়চোখে স্বামীর পানে দৃষ্টিও সে রেখেছিল, তাই ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়ে গেলেই সে বললে, – আপনি স্নান ঘরে যান আমি আসছি! – স্নান ঘর! বলছিল একটু জল দিয়ে ধুয়ে ফেল...... – উঁহু্, তা হচ্ছে না! স্নান ঘরে জল আছে, সেখানে গিয়ে ভালোমত মুছে নেবেন না হয়। – কি দরকার ওসবের? – দরকার আছে, দুধে যা মাখামাখি অবস্থা; দিদির চোখে পরলেই হলো..... সমীর আর কথা বাড়ালো না, হাজার হোক সুপ্রিয়ার মতো এনিও গিন্নী। তা হোক বা ছোট গিন্নী — তাই বলে কথা অগ্রাহ্য করা চলে না। সে সুবোধ বালকের মতো নন্দিনীর কথায় পর্দা ঠেলে বেরিয়ে গেল। এদিকে নন্দিনীরও প্রায় হয়ে এসেছিল। তবে স্বামী বেড়িয়ে যাবার পর নন্দিনী খানিকক্ষণ আনমনা হয়ে কৌটাতে রাখা স্বামীর রক্ত মাখা কাচের টুকরোটার দিকে চেয়ে রইলো। "খুব বেশি গেঁথে নি" এতে বিশ্বাস হলো না তার। কাঁচের টুকরোটা এখনো টকটকে লাল রক্তে মাখামাখি। গতকাল এটা সরিয়ে রাখলে আজ এমনটা হতো না। এই কথাও ভাবলো সে। তবে কাল অমনি হঠাৎ কিরণ এসে দাঁড়ালো...না থাক, সে কথা ভাবলেই নন্দিনীর লজ্জা ও রাগ একত্রে হচ্ছে। নতুন সংসারে পা দেওয়ার পর থেকেই নন্দিনীর মনের ভিতরে একধরনের অজানা অস্বস্তি কাজ করছে। সংসারের টুকিটাকি কাজকর্ম, অতিথি আপ্যায়ন, রীতি-নীতি মেনে চলার মাঝে যে আশঙ্কা দূর করতে সে সুপ্রিয়াকে ঢাল হিসেবে বেছে নিয়েছিল। আজ হঠাৎ সেই আশঙ্কার সত্য'তা নিয়ে তার মনে সংশয় দেখা দিল। ঘটনাটি ছোটই। হয়তো সুপ্রিয়া দেবী তার জাগয়ায় থাকলেও সমীর এইভাবেই হাত পেতে আঘাতটা নিজেই সইত। কিন্তু সুপ্রিয়া আর সে কি এক? কাঁধে ধুতি-গামছা ও হাতে আলো নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নন্দিনী তাই ভাবছিল। স্নান ঘর উঠনে নেমে পুকুরঘাটে যাওয়া পথের সাথে লাগোয়া। অন্যমনস্ক হয়ে নন্দিনী স্নান ঘরের ভেতরে ঢুকে গেল । স্নানঘর এই বাড়ির কেউই স্নান করতে তেমন একটা ব্যবহার করে না। তাই দরজার বাহুল্য স্নানঘর নেই বললেই চলে। তাছাড়া কুন্দনন্দিনীর স্বামী দেব যে সরাসরি স্নান করে বসবে! তা বেচারি নন্দিনী কি করে জানবে? আলো হাতে ভিতরে ঢুকেই নন্দিনীর পা থমকে গেল। ঘরটার মাঝখানে তার স্বামী প্রায় নগ্ন। নন্দিনীর অন্যমনস্কের সুযোগে সমীর স্নান সেরে একটি গামছা– ওটা এই স্নান ঘরেই থাকে। সেটা কোমড়ে পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া শরীরের বাকি অংশ অনাবৃত। এই নতুন দৃশ্য যেন নন্দিনীকে পাথর করে দিয়েছে। সে অবাক হয়ে চেয়ে আছে স্বামীর পানে। তবে মুখপানে নয়, তার চোখ আটকে গেছে নিচের দিকে এক জায়গায়—ডান হাটুর খানিক উপরের দিকটা। যেখানে একটা পুরোনো, কিন্তু বেশ বড় কাটা দাগ হাড়িকেনের উজ্জ্বল আলোয় দৃশ্যমান। দাগটা পুরনো, কিন্তু এতটাই বড় যে সহজেই চোখে পড়ে। উরু ও হাঁটুর মাঝখানে একটা লম্বাটে রেখা, যেখানে ছুরি বা দা'য়ের ধার একসময় নেমে এসেছিল নির্দয় ভাবে। একসময় সেটা ছিল গভীর । এমন এক আঘাত যা কেবল দুর্ঘটনায় নয়—কোনো রকম সংঘর্ষে, হয়তো দা-র কোপে তৈরি হয়েছে। কিসের আঘাত তা নন্দিনী বুঝতে না পারলেও,তার মুখ শুকিয়ে আসে। এই কথা সে জানে— এই বাড়ির সবাই সমীরকে সমিহ করে চলে। তাই বলে এই কদিনে স্বামীর শান্ত মধুর ভাব দেখে সে কখনো ভাবেনি, সমীর কোন অন্ধকার অতীত বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। যা তার দেহের প্রতিটি কোষে লেখা আছে। কে কোপ মেরেছিল তাকে? কেন? কী ছিল সেই অন্ধকার অধ্যায় যার ছায়া আজও তার দেহে ? ধুতির কোণা শক্ত করে ধরে সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে সে, চোখে মিশে যায় বিস্ময়। সাথে ভয় আর আকস্মিক এক কৌতূহল। অবশ্য সমীর কিন্তু নন্দিনীর দৃষ্টি খেয়াল করেনি। সে স্বাভাবিক রসিকতার ভঙ্গিতেই বললো, – দেখার সাধ মিটলে একটি বার গামছা আর ধুতি টা দাও দেখি,আর কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবো বলো? হতচকিত হয়ে নন্দিনীর সম্বিত ফিরল। তবে স্বামীকে ধুতি গামছা দিয়েও কিন্তু সে সরে যেতে পারলো না, আলো হাতে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানেই। /////// সকালে এক পলসা বৃষ্টির পর গরমের দুপুর। উঠনের মাঝখানে খানিক জল জমেছে। আর সেখানেই হঠাৎ একটা পাখি—সাধারণ চেনা পাখি নয়, একটু বুনো প্রকৃতির—ফরফর করে উড়ে এসে বসলো উঠোনের ঠিক মাঝখানে। পাখিটার গায়ের রঙ গাঢ় সবুজ, ডানার নিচে হালকা নীলের ছোঁয়া, চোখে কৌতূহলী চাহনি। যেন কাউকে খুঁজছে সে মাথা ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে ।তারপর হঠাৎ নিজের ঠোঁট দিয়ে উঠন থেকে জল খেল। একটু থেমে আবার ডানা ঝাঁপটা দিল দুবার। যেন চেনা জায়গা নয়, তবু কোথাও থেকে একটা টান টান অনুভব তাকে এখানে এনে ফেলেছে। বলাবাহুল্য সেই টান তৃষ্ণা মেটানো। বাড়ির পেছনের বাঁশ ঝাড়ের পাতাগুলো মৃদুমন্দ দুলছে, বাতাস নেই তেমন, তবুও পাখিটার পালক হালকা কেঁপে উঠলো। সে একটা পা তুলে নিজের ডানায় মুখ ঘষে, তারপর আবার নিচে বসে—গভীর মনোযোগে রোয়াকে বসা রমণী কটার কথায় আড়িপাতে! ভেতর উঠনের মূল দালানে, ঠিক সিঁড়ির কাছটায় দাঁড়িয়ে থাকা পেয়ারা গাছটার ছায়া পরেছে রোয়াকের সিমেন্ট করা মেঝেতে। রান্নাঘরের ভেতর থেকে চুলার ধোঁয়া উঁকি দিয়ে আসছে। বাইরের থেকে কানে ভেসে আসছে কুকুরের ডাক, সেই সাথে আর দূর থেকে কারও গলায় বাউল গান যেন শোনা যায় যেন। সমীর নেই। সে বেরিয়েছে রোগি দেখতে। মুখার্জি বাবুও বেরিয়েছেন কোথায় যেন। আসবেন দূপুরের খাওয়ার সময়। তা এখনো ঘন্টা খানেক পর। নন্দিনী, কমলা, সুপ্রিয়া ও গ্রামের দুটি মেয়ে কি যেন কথা বলছিল। এই সময়েই হাজির হয়েছে কাদম্বিনী—পাড়ার বউবাজারী, গলার চেনা ডাকের জন্য তাকে চিনতে অসুবিধা হয় না কারোরই। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই সে বলে – এই যে বৌদি,নতুন বউ দেখতে এলাম গো। – শুধু বউ দেখলেই কি পেঠের জ্বালা জুড়াবে কদম? – ধূর! কি যে বল না তুমি বউ। শুধু বউ দেখতে নয়,সাথে কাঁচের চুড়ি, আলতা, সিঁদুর, শাড়ি, এক্কেবারে শহরের ধাঁচে এনেছি আজ! বলতে বলতে বিছানা পেতে বসে পড়ে সে রোয়াকে। চাদরের ভাঁজ খুলতেই বেরিয়ে আসে কাঁচের রঙিন চুড়ির রাশি। রোদে চিকচিক করে ওঠে। তার পাশে সাদা পিচবোর্ডে রাখা নানান রঙের আলতা—গোলাপি, গাঢ় লাল, বেগুনি। – বলি ও কদমদি, সেই লালচে কমলাটা দেখাও তো। বলে দিস ত কেমন লাগছে, কমলা? – বেশ মানাবে তোকে,খুবই সুন্দর রং। মেয়ে দুটির মধ্যে গীতা নতুন আগত,সে তাই বলে উঠলো। – তা বেশ লাগছে বটে,কিন্তু দিদি! আপনি কীভাবে বোঝেন.... গীতার কথা শেষ হল না। পাশ থেকে মালতী তাকে ঠেলে ইশারায় থামিয়ে দিল। সুপ্রিয়া হেসে উত্তর করলো, – ও বুঝতে আবার চোখ লাগে নাকি রে! তুই দেখতে যেমন লক্ষ্মী তোকে সবেতেই মানাবে। গীতা ভেবে পেল না সুপ্রিয়াদি তাকে দেখলো কি করে! তবে হঠাৎ লজ্জায় সে কিছু বলতেও পারলো না। অবশ্য কথাটা বলেই একখানা পান মুখে গুঁজে উঠে গেল সুপ্রিয়া। গেল সে রান্নাঘরের দিকে। আর তাই দেখে কমলাও উঠতেই যাচ্ছিল। তখনি নন্দিনী তাকে থামিয়ে দিয়ে এগিয়ে গেল। কথাটা সে গত রাত থেকেই সুপ্রিয়াকে বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু গতকাল সংকোচ কাটিয়ে আর বলার সুযোগ হয়নি। তাই আজ একটু সাহস জুগিয়ে একা পেয়ে কুন্দনন্দিনী বললে, — আচ্ছা দিদি, একটা সত্য কথা বলবে? – পোড়ামুখির কথা শোন! বলি আমি তোকে মিথ্যে বললাম কবে বলতো? – না তা নয়, তবুও তুমি বলো সত্য বলবে? এবার সুপ্রিয়া দাড়িয়ে গেল মাঝ উঠনে। পাখিটা এই দুই রমণীর বাক্যালাপ শুনে উরে গেছে অনেক আগেই। সুপ্রিয়া হাত বাড়িয়ে ধরেছে নন্দিনীর মুখখানি– নন্দিনী তার থেকে কিছু খাটোই। সে কুন্দনন্দিনীর গালে আলতো করে হাত রেখে বললো, – না শরীর তো গরম নয়,তবে এমন...... – ধূর ছাই! সবসময় ফাজলামো ভালো নয় দিদি। সুপ্রিয়া হাসতে লাগলো। নন্দিনী খানিক চুপ থেকে এবার বলেই ফেললো। অবশেষে সবটা বলার পর সে প্রশ্ন ছুঁড়ল একেবারে সুপ্রিয়া মুখমুখি – তোমার ছোটবাবুর ডান পায়ে অত বড় কাঁটা দাগ টা কিসের দিদি? প্রশ্নটা করেই নন্দিনীর চমক লাগলো। কারণ প্রশ্ন শোনা মাত্র মুহুর্ত খানিকের জন্যে সদা হাসময়ী সুপ্রিয়ার হাসি যেন উড়ে গেল। যদিও সামলে নিতে সুপ্রিয়ার সময় লাগলো অল্পই, কিন্তু প্রশ্নের উত্তরও যে পেল না। যায় পেলে তা সামলাতে তাকে লজ্জায় লাল হতে হলো, – ওরে মুখপুড়ি! তলে তলে এতটা? এদিকে আমি আছি বসন্তের অপেক্ষায়, সে এলেই দু'জন কে এক ঘরে ঢুকিয়ে দোর দেবো ভাবছিলুম.. – দিদি! দোহাই লাগে আর বলো না! ওদিকে সবাই হেসে ওঠে। বলাবাহুল্য সুপ্রিয়া ধীরে ধীরে কিছুই বলেনি। যাই হোক সুপ্রিয়া নন্দিনীকে রোয়াকে বসতে বলে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। নন্দিনী বারান্দায় বসতেই গীতা বলে উঠলো, – হয়েছে আমাদের সামনে আবার লাজ্জ কিসের বউ....ওলো কদমদি কত দামে দিচ্ছিস রে এই চুড়ি?" – সস্তা দিচ্ছি আজ, পাঁচটা মোটে দুয়েক আনায়! শহরের কাঁচ, ফাটে না, হাতেও বসে ভালো। – ইসস্,যতসব মিছে কথা.... এরমধ্যেই সুপ্রিয়া এসে গেল। নন্দিনী এক জোড়া সাদা-সবুজ চুড়ি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে বললে – এইটা কেমন লাগছে, সুপ্রিয়াদি? সুপ্রিয়া হাত বাড়িয়ে চুড়ি গুলোতে হাত বুলিয়ে বললে – তোর মতনই—নতুন আর ঢঙের, কিন্তু ভিতরে মিঠে। পর তো দেখি কেমন বাজে তোর হাতে! নন্দিনী একটু কুণ্ঠিত হয়। চুড়ি নেড়েচেড়ে দেখলেও তার কেনার ইচ্ছে নেই। তাছাড়া হাতে টাকাও নেই। তবে নন্দিনী কিছু বলার আগেই সুপ্রিয়া বললে, – টাকা নিয়ে ভাবতে হবে না ওতো, পছন্দ হলে নিয়ে নে। আসলে মুখার্জি বাড়ির সংসার নামক গাড়ির চাকা সমীরের ডাক্তারীর ওপরে নির্ভরশীল ছিল না। সুতরাং সমীর প্রতি মাসে সুপ্রিয়াকে কম করে হলেও সাতটি টাকা করে হাত খরচ দিত। সেই নিয়ম অনুযায়ী এইবার কুন্দনন্দিনীরও কিছু পাওয়া ছিল। সুপ্রিয়া তাই নন্দিনীকে বুঝিয়ে দিতেই সে খানিক সহজ হয়ে হাত বারালো। তবে হাত বাড়ালে কি হয়? চুড়ি পরাতে গিয়ে কাদম্বিনী একটু চাপ দিয়ে ধরতেই—টচ্ করে একটা ফেটে যায়। – ইসস্... হাত কেটে গেল যে! – ও কিছু না, দোষ তোমার না। আমার হাতেই বুঝি বেশি শক্ত… কথা যাই হোক,চুড়ি পরাতে গিয়ে আরো খান কয়েক চুড়ি টপাটপ ভেঙে গেল। অবশেষে সুপ্রিয়া চুড়ি হাতে নিতেই বাড়ি এলো সমীর। সে বোধ হয় মেয়েদের হাসাহাসি ও কথাবার্তা খানিক শুনেছে,তাই বাড়ি ঢুকেই বললে, – আহা... এই হারে চুড়ি ভাঙলে তো ব্যবসা লাটে উঠবে কদম! সমীরের কথা শোনা মাত্র সুপ্রিয়া উঠেগেল। এল সে স্বামীর পাশে ,হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে চুড়ি গুলো ধরিয়ে দিয়ে সে বললে, – কদমের ব্যবসার প্রতি যখন এতো দরদ তখন তুমিই না হয় পরিয়ে দাও! – না, না, আপনি কেন…? – না না করিস না, ও তো তোর স্বামী, অচেনা লোক নয়। বরং দেখি, ভালোবেসে পরাতে পারে কিনা। মেয়েরা মুখে আঁচল চেপে এমনিতেই হাসছিল। নন্দিনী লজ্জা বারাতে আর কিছূ বললো না। স্বামী ধীরে ধীরে তার পাশে নেমে বসতেই কুন্দনন্দিনী একবার চাইলো। তার মুখে একধরনের স্নিগ্ধতা। সে ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে নরম গলায় বলে, – হাতটা দাও দেখি, চিন্তা নেই খুব আস্তে পরাব। ব্যাথা দেব না একদমই নন্দিনী চুপচাপ ডান হাত বাড়িয়ে দেয়। ধীরে ধীরে সে চুড়ি পরায়—কাঁচের ঠান্ডা পরশে নন্দিনী যেন কেঁপে ওঠে। কোনো চুড়ি ভাঙে না। সুপ্রিয়া কান পেতে শোনে। – শুনতে পাচ্ছি—চুড়ির টুংটাং বাজনা বদলে গেছে। প্রেম মিশেছে এবার। – সত্যিই বউদি, চুড়ির আওয়াজে প্রেম ধরা যায় বুঝি? – সব শব্দেই প্রেম থাকে রে—শুধু শোনার কান চাই। সবাই হাসে। কাদম্বিনী এরপর একজোড়া আলতা ও সিঁদুর নন্দিনীর হাতে গুঁজে দিয়ে বলে— – নববউয়ের আজ উপহার রইল আমার তরফ থেকে। টাকাটা পরে দিও, আজ না হয় মাফ। সমীরের হাতে নন্দিনীর বা হাতটি তখনো বন্দি, শেষ কয়েকটি চুড়ি স্বামী পরাছে তার হাতে। ওটা পড়ানো হলেই নন্দিনী চটজলদি উঠে দাঁড়িয়ে দূরে সরে পরলো। সমীরও অবশ্য বসে রাইলো না। সে গেল পুকুর ঘাটে স্নান করতে। ///////// পরবর্তী অংশ খানিক পরেই আসছে
06-06-2025, 12:46 AM
(This post was last modified: 06-06-2025, 01:07 AM by বহুরূপী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অপরাহ্নে রোদ ফিকে হয়ে এসেছে। গাছের ডালে ডালে পাখিরা ডেকে উঠছে কখনো সখনো। কুন্দনন্দিনী বেশ খানিকক্ষণ ধরেই সন্ধান করছিল সুপ্রিয়ার। অবশেষে সংবাদ পাওয়া গেল, তিনি আজ অপ্রত্যাশিত ভাবে ছাদে। তা নন্দিনী আর কি করে–সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় তার কানে এলো সূপ্রিয়ার গলায় গুনগুন গানের আওয়াজ,
প্রিয়,তুমি থাকতে পারো ওই মেঘের ছায়ায়,
তুমি থাকতে পারো এই বাতাসের গায়।
চোখে পড়ে না তবু, হৃদয়ে বাজে—
প্রিয়,তুমি কি শুধুই আমার ধ্যানের মাঝে?
এমন নয় যে কুন্দনন্দিনী গান গাইতে পারে না, তবে সুপ্রিয়ার গানের ভান্ডার সমৃদ্ধ এবং গলাটিও মিষ্টি। কিন্তু কুন্দনন্দিনী এখনো পর্যন্ত এই বাড়িতে গ্রামোফোন দেখেনি। তবে দোতলায় সুপ্রিয়ার ঘরে থাকার দরুন সে জানে গ্রামোফোন এবাড়িতে ছিল কোন এক সময়। যদিও সে জানতে চায়নি সেটার কি হলো— তবে সুপ্রিয়ার ঘরে সে নয়'টা ডাবলডিক্স গ্রামোফোন রেকর্ড দেখেছে। তার স্বামী দেব গান করেও না,শোনেও না। সুতরাং, নিঃসন্দেহে বলা যায় এটি সুপ্রিয়া দেবীর শখ বিশেষ। সে যাই হোক, কুন্দনন্দিনী ছাদে উঠে দেখলে— সুপ্রিয়া তার মেয়েকে কোলে নিয়ে দু'চোখ বুঝে গান গাইছে। মা মেয়ের এইরূপ একান্ত আলাদা করা সময়ে কুন্দনন্দিনীর আর কিছু বলার,বা তাদে মাঝে যাবার কোন ইচ্ছেই হলো না। তথাপি ভাবনার পর মুহূর্তেই সে চুপচাপ সুপ্রিয়ার পাশে এসে বসলো। সেখানে বসেই সে বুঝলো মাতার বুকের উষ্ণ আশ্রয়ে খুকি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ওদিকে গানটি আরো খানিকটা এগোলেও শেষ হয়নি এখনও। শুনতে অবশ্য মন্দ লাগছিল না তার, স্মৃতির পাতায় ঝরে পড়া দিনে,
চোখের জলেতে বেজেছিল যে গান।
বুঝিনি আগে, জানি আজ সে,
প্রিয়,তোমারই নীরব আহ্বান।
চুপচাপ বসে নানান ভাবনার মাঝে সময় পেরিয়ে গেল প্রায় মিনিট খানিক। যদিও কুন্দনন্দিনী ভাবছিল সুপ্রিয়া কিছু বলবে। সাধারণত সেই অনর্গল কথা বলে মেয়েদের আসর জমিয়ে রাখে। তার কথা শুরু কি শেষ করার জন্যে বিশেষ কোন বিষয়বস্তুর প্রয়োজন পরেনা। তবে আজ দুপুরের পর থেকে সুপ্রিয়া যেন কেমন হয়ে যেতে লাগলো। এই কেমন হয়ে যাওয়ার কার্যক্রম চলছিল ধীর গতিতে। এখনও তার মুখে হাসি আছে বটে, তবে সেই হাসি কৃত্রিম। মনের ভাব লুকানোর একটি আড়াল মাত্র। কুন্দনন্দিনী নিশ্চিত সুপ্রিয়া তার উপস্থিতি জানে। তবুও যখন সুপ্রিয়া কিছু বললো না— তখন সেও চুপ করে বসে রইল। নিচতলায় কাকিমার ঘরে কয়েকটি রমণী বসে পানসুপারি সহযোগে তাস খেলতে মত্ত, এই কান্ড নন্দিনী দেখে এসেছে। এমন সময় প্রায় দিন বাকিদের সাথে সুপ্রিয়ার আলোচনা সভা বসে। আজকেও বসার কথা ছিল যদিও। তবে নন্দিনী ভেবে পায় না সুপ্রিয়া নিচে গেল না কেন! অবশ্য কারণ খুঁজে না পেলেও ভাবতেই ভালো লাগছিল তার। যদিও এই ভালো লাগার কিন্তু কোন কারণ নেই। এমন ত নয় যে অকারণে ভালো লাগাটা অন্যায়! সাধারণত মন ভালো থাকলে চারপাশটা দেখতেও বেশ লাগে। যেমন এই মুহূর্তে...ওই মাথার ওপর দিয়ে কত নাম না জানা পাখিরা উড়ে যাচ্ছে দূর দিগন্তে; বাতাসের সাথে গাছেদের কথা হচ্ছে পাতা নড়ার শন শন শব্দে, পশ্চিম আকাশের দূর সীমান্তে কেমন যেন রাঙা। কিরণের বলা কথাগুলো মাথায় কেন যে ঘুরপাক খাচ্ছে সারাক্ষণ। বোধহয় সত্য বা মিথ্যার কোন আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে না তারা, – নন্দিনী! যেও না..... দাঁড়াও....! নন্দিনী দাঁড়িয়ে ছিল,কেন দাঁড়িয়ে ছিল সে ভেবে পায় না এখন। তবে দাঁড়িয়ে ছিল অদূরে পর্দার আড়ালে। – আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই। আমি আপনাকে এড়িয়ে চলি তাকি আপনি বোঝেন না? কিরণ হেসেছিল বৈ কি, সে যে সুপ্রিয়ার হাতে গড়া! রসবোধ তারও কিছু কম নয়, – গ্রামে আসার এই কদিনেই এমন পরিবর্তন! ভাবা যায় না বাবা.... কুন্দনন্দিনী রাগে বেরিয়ে এসেছিল আড়াল থেকে, সত্যিই ওভাবে ছুটে পালানোর স্বভাব তো তার ছিল না কখনো। তবে ভুল যেটা হয়েছে তা আর ঠিক করে কি উপায়ে? সে শুধু অগ্নি বর্ষিত দৃষ্টি একবার কিরণের পানে ফেলে পেছন ফিরেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বার আর পালানোর সুযোগ হয়নি। কিরণ পাশ কাটিয়ে চলে এসেছিল সামনে, – পথ ছাড়ুন, আপনার সাথে কথা বলার কোন ইচ্ছে আমার নেই। – এত রাগ কিসের শুনি? বিনা অপরাধে শাস্তি দিয়েছিলে, তাও এক রাশ লোকের সামনে, আজ তার কৈফিয়ত না দিলে আমি ছাড়বো কেন? জানো ত আমি আইনের ছাত্র.... আলোচনা হয়েছিল অল্পই। কিন্তু কথাগুলো মাথায় গেঁথে গেছে যেন, কোন ভাবেই ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না। নন্দিনীর ভাবনার মাঝেই সুপ্রিয়া উঠে দাঁড়িয়েছে। আজ বড়ই স্নিগ্ধ সে— যেন শান্ত দিঘীর জলে সদ্য ফোটা পদ্ম। দুপুরের খাওয়া আগে সুপ্রিয়া ঘাটে গিয়েছিল স্নান করতে। যখন ফিরেছে,পরনে তার হালকা নীল পাড়ের শাড়ি— যার কিনারায় এখন বাতাস হালকা দোল দিয়ে চলেছে। প্রতিদিনের মতো আজ আর তার শুভ্র দেহ সোনায় মোড়ানো নয়। হাটু ছাড়ানো খোলা কেশরাশি ও অতি সাদামাটা সাজে— সে আজ যেন এক দেবী প্রতিমা। তবে দেবীর কোলে ঘুমন্ত খুকি! খুব সম্ভবত এমন জীবন্ত প্রতীমা পৃথিবীর কোন মূর্তিকর গড়ে না। – দিদি… দুপুরে একটা কথা বলেছিলাম, তুমি উত্তর দাও নি কেন? – সবাইকার অতীত থাকে, অতীত নিয়ে এতো ঘাটাঘাটি ভালো নয়, বউ। আঘাত ও প্রতিঘাত হলো হঠাৎ। নন্দিনী কথাগুলো বলছিল আনমনা হয়ে। প্রবল কৌতুহল থাকলেও দুপুরের পর ও কথা আর মুখে আনার সাহস হয়নি কুন্দনন্দিনীর। কিন্তু আনমনে হঠাৎ এই কথা বলে ফেলে এবার সে মুখ তুলে চাইলো। তবে সুপ্রিয়া সেখানে ছিল না,সে এগিয়ে গেছে সিঁড়ি দিকে। ইচ্ছে থাকলেও তৎক্ষণাৎ সে সুপ্রিয়ার পেছনে যেতে পারলো না। একটা সাধারণ কথায় সুপ্রিয়ার এমন চাপা ব্যবহারে তার ভিতরে তখন অন্য কিছু গজিয়ে উঠছে—একধরনের সন্দেহ। ঠিক শঙ্কা নয় বরং অদ্ভুত এক অনুভূতি… যেন কুয়াশার মধ্যে কিছু একটা আছে,যা হাত বাড়ালেও ধরা যায় না। এরপর রাতটা যেন একটু বেশিই চুপচাপ। তবে চুপ থাকা মানেই কিন্তু শান্তি নয়— এই কথা আজ কুন্দনন্দিনী প্রথমবার সত্যি করে টের পাচ্ছে। সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে সে শুনছে, রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসা সুপ্রিয়ার ধমকের আওয়াজ— – জিনিস পত্র ঠিকমত রাখিস না! রান্না করতে বললে পেঁয়াজ পোড়াচ্ছিস? তোদের দিয়ে দেখছি কিছুই হবে না ,এই অসময়ে জল গরম করতে....... নন্দিনী ছিল দোতলায়। কমলার ডাকে সে নিচে আসছিল। তবে নিচ তলায় আসতেই কমলার ব্যস্ত চিত্ত দেখে সে বারান্দায় একটি থামের পাশে দাঁড়িয়ে গেল। কি হয়েছে তা বোঝা গেল খানিক পরে। সাধারণত রান্না ঘরে সব জিনিসপত্র রাখার একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা আছে। এর বিপরীত ঘটলে সুপ্রিয়ার জন্যে একা হাতে কিছু খুজে পাওয়া বেজায় কঠিন। যদিও সুপ্রিয়া এখন রান্না করছিল না। তবে ঝি করছিল। কেন করছিল আপাতত তা জানা গেল না,তার কারণ সুপ্রিয়াকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পরেছে। তার পায়ে গরম জল এসে পরেছে! পরেছে রান্নাঘরে ঢোকা খানিক পরেই। দোষটা নিঃসন্দেহে নিয়তির। তবে বোধকরি সেই নিয়তির দয়াতেই সুপ্রিয়ার বেশি কিছুই হয়নি। যা হয়েছে,তা নিয়ে বাকিরা ব্যস্ত হলেও সুপ্রিয়া কিন্তু ঝি'কেই ভর্ৎসনা করে যাচ্ছে ক্রমাগত। পায়ের আঙ্গুলে গরম জল পরেছে বলে নয়, সে যেন তার অন্য কোনো রাগ ঝারছে মেয়েটার ওপরে। অবশ্য যার ওপরে ঝারছে সে নিজেই হাসি চেপে সুপ্রিয়ার পায়ে ঠান্ডা জল ঢালছে। খুব সম্ভবত পোড়ামুখি, লক্ষ্মীছাড়া, কিংবা শুটকো মাগি জাতীয় ভর্ৎসনা তার কাছে বড্ড মধুর লাগছিল। যাহোক নন্দিনী কিন্ত গত মাস খানেক এমন খিটখিটে স্বর কখনও শোনেনি সুপ্রিয়ার মুখে। যে দিদি সবার মুখে হাসি ফোটাতো, যার ঠোঁটে ঠোঁটে থাকে বটগাছের ছায়া-মাখানো শান্তি, সেই দিদি আজ একা একা চুপচাপ হয়ে গেছে। প্রথমটায় মেয়েরা তেমন আমল না দিলেও– রাতের খাবার সময় শরীর খারাপ বলে যখন সুপ্রিয়া যখন খেতে বসলো না মেয়েদের সাথে।! বাড়ির মেয়েরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি শুরু করেছে তখন। দু একজন উঠে ডাকতেও গিয়েছিল পাল্লা ক্রমে,তবে বিশেষ লাভের কিছুই হয়নি এতে। ডাক্তার স্বামী অবশ্য এতো কিছুর খবর পায়নি এখনো,কারণ সে এখনও ডাক্তারী বিদ্যে ঝাড়তে নদীর ওপারে। তবে রাত আটটায় বাড়ি এলো কিরণ। স্বভাবতই বাড়ি ঢুকেই বৌরাণী বলে সে চিৎকার জুড়লে। তার ডাকে সুপ্রিয়া নিচে এসে খোকাকে কোলে করে বসলো খানিকক্ষণ। নন্দিনী যদিও তখন নিচতলাতেই ছিল,তবে সে আলোচনায় অংশ নেয় নি। তার কারণ, নন্দিনী তখন শ্বশুরের ঘরে বসে খুকিকে পড়াচ্ছে। গত কদিনে এটা তার শখের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিয়া মেয়েটিও তার মায়ের মতোই ফুটফুটে সুন্দর ও বুদ্ধিমতী। রাত প্রায় সারে নটার সময় সমীর এলো বাড়িতে। বলাবাহুল্য পাড়াগাঁয়ে এই সময় রাত্রি গভীর। তবে নন্দিনী তখনো নিচতলায় সমীরের ঘরে। আজ কোন এক কারণে সে সুপ্রিয়ার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারছে না। তবে সুপ্রিয়াও নিচে নামলো না বলে কমলাকে সরিয়ে নন্দিনী নিজেই স্বামীর জন্যে ভাতের থালা হাতে নিল। অবশ্য রান্না ঘর থেকে বেরুবার আগেই সে পরলো সুপ্রিয়ার মুখো মুখি। আজ আকাশের মেঘেরা বোধহয় ছুটি নিয়েছে। অবশ্য মেঘেদের অনুপস্থিতিতে চাঁদের জ্যোৎস্না পাহাড়া দেবার ভার নিয়েছে। গৃহের উঠোনে সেই আলো পড়ে অনিমিখ ধ্যানের মতো থেমে আছে।কারণ বশত সমীরবাবু আজ রাত্রিবেলায় একটু দেরি করেই আহার শুরু করলেন। যদিও তার আহার কার্যের বিশেষ সময় অসময় নেই।মেজাজ তার বেশ খোশ, মুখে হালকা হাসি, চোখে এক ধরনের পরিতৃপ্ত ক্লান্তি। তাঁকে ঘিরে দুই পক্ষের নীরব সমর। এই দৃশ্য চোখে না পড়ে যায় না—দুই পক্ষ মানে দুই বধূ। একদিকে ছোটবউ নন্দিনী—সে যেন এক কিশলয়রেণু, সদ্য গজানো বাসন্তী আমপাতার মতো নরম, মায়াবী। তবে মুখে হাসি না থাকলেও, হাতে তার তালপাতার পাখা! প্রতি দণ্ডে স্বামীর দিকে চেয়ে, আরামসে হাওয়া দিচ্ছে সে। অন্যদিকে বড়বউ সুপ্রিয়া—শান্ত স্বভাব, চোখে গভীরতা, ঠোঁটে অস্ফুট অনুযোগ। আজ তার মুখে কোনো হাসি নেই। হয়তো আজকের মেনুতে সে হাত রাখেনি, কিংবা কোনো অপ্রকাশিত কারণে বুকের মধ্যে একটা চাপা অভিমান জমে আছে। এক নজর দেখেই সমীরের আর বুঝতে অসুবিধা হলো না। তাই তো সমীরবাবু খেতে খেতে একবার বললে, — আহা, এই মুগডালের খিচুড়িটা কে করলো? যেন ছোটবেলাকার ঠাকুমার রান্না! নন্দিনী চুপচাপ, ওদিকে সুপ্রিয়ার মুখে একটু কিসের যেন ছায়া খেলে গেল। সে কিছু বললে না, শুধু চোখ নামিয়ে হাতখানা কোলে রাখলে। সমীর এটুকু লক্ষ্য করলো এবং বললো, — আমাদের সুপ্রিয়া দেবী আজ এমন চুপচাপ কেন? না কি আমার উপরেই রাগ করে বসে আছেন? সুপ্রিয়া এবার মুখ তুললে, ঠোঁটের কোণে একটুকরো অনিচ্ছুক হাসি, — মরণ...রাগ কেন করবো? তাছাড়া আমি রাগ করলেও তোমার সঙ্গ দিতে লোকের অভাব হবে না! কিন্তু একবার ও কথা বললে আমি উঠে চলে যাবো... স্বামীর সাহসে ভর দিয়ে বুঝি বা কুন্দনন্দিনীরও কিছু বলবার ছিল। তবে সেই সাহসিকতার বাতাসে একটুকরো শূন্যতা নেমে এল, যেন বাঁশবাগানে হঠাৎ হাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তবে ডাক্তার বাবু হেসে উঠলো এবার, সেই হাসির ভিতরে একটা সচেতনতা ছিল— আপনি সম্বোধন করাটা ঠিক হয়নি তার, ওটা সুপ্রিয়ার অপছন্দ। যাহোক, দু'জনের মন বোঝা তো হয়েছে, — তাহলে আজ আমার কাজ হবে তোমাদের দুজনকে একসাথে খুশি রাখা... কী বলো? রাজা যদি প্রজার হৃদয় না বোঝে, তবে সে রাজার কী দরকার? কুন্দনন্দিনী একবার সুপ্রিয়া পানে চাইলো। মুখে হাসির রেখা লেগেছে বটে– সব ভুলে আজ নন্দিনী প্রথম বার স্বামীর কথার তালে তাল মেলালো, — তবে রাজামশাই, শুনেছিলাম দিদির নাকি গান বেশ পছন্দ,তা শোনার ব্যবস্থাই হোক না হয়! সমীর একটু অবাক যে হয়নি তা নয়, কিন্তু সে সব আপাতত সরিয়ে রেখে গলা খাঁকরিয়ে বললে— “প্রেমে যাদের হৃদয় জ্বলে, দুজনের মাঝে ছায়া চলে— তাদের কথা বলব আমি, চাঁদের মতন ধীরে ধীরে...” না, সমীরকে দিয়ে গান হবার নয়। তবে এমন ছন্নছাড়া উল্টো পাল্টা গান শুনে সুপ্রিয়া মস্তক নত করে খানিক হাসলো। ওদিকে স্বামীর বেসুরো কন্ঠ শুনে থেমে গেল নন্দিনীর পাখা চালানো। সুপ্রিয়া এগিয়ে এসে তার গলা জড়িয়ে কানে কানে বললে, — প্রেম খেলা শুরু হবে এখনি, খেলতে না চাইলে পালা এ বেলা! সুপ্রিয়ার কথা শুনে নন্দিনী চাইলো চোখ বড় করে। সুপ্রিয়া স্পষ্টভাষী, এ নিয়ে অভিযোগ করে বিশেষ লাভ নেই। তবে সুপ্রিয়া যেতে বললেও সমীর কিন্তু চেপে ধরলো নন্দিনীর আঁচলখানি, মুচকি হেসে বললে, – একি ছোট বউ, এত জলদি মঞ্চ ছেড়ে নেমে গেলে চলে? – উফ্! এ কেমন পাগলামো.....ওর কাজ আছে.... – যতোই কাজ থাক না কেন, রমণীগনের জন্যে স্বামী প্রধান প্রায়োরিটি, একথা ভুলে গেলে বুঝি? সুপ্রিয়া যতোই উসখুস করুক, সমীর কিন্তু নন্দিনীর আঁচল ছাড়ালো না। এবং এই বিষয়ে আজ নন্দিনীর আয়ত নয়নের কড়া দৃষ্টিকেও হার মানতে হলো। কেন না স্ত্রীর আঁচল টেনে ধরার অধিকার সমীর আজ আদায় না করে ছাড়লো না কিছুতেই। অবশ্য নন্দিনীর বসার ইচ্ছে যে একদমই ছিল না— তেমনটাও নয় কিন্তু। সুতরাং গল্প এগুলো ধীর পদক্ষেপে। কারণ আজ সুপ্রিয়ার গল্পে মনোযোগ ছিল না, এবং গল্পের মাঝে এসে সুপ্রিয়ার ধৈর্য্য ভাঙলো। সে ধীরে ধীরে স্বামীর কাছে আরোও ঘন হয়ে,একসময় মাথা এলিয়ে দিল স্বামীর কাঁধে। লম্বা কেশরাশি তার অনেক আগেই খোঁপার বাঁধন খুলে ছড়িয়ে আছে পিঠে। গা থেকে আলগা শাড়ির আঁচল যেন বলছে—আজ সে আর গৃহিণী নয়, আজ সে কেবল একজন ক্লান্ত ও কামার্ত নারী। এতে অতি শিগগিরই লজ্জায় পড়লো কুন্দনন্দিনী এবং শেষটায় নন্দিনীকে লজ্জা থেকে উদ্ধার করলে খোকা। সে এসে বলতেই তাকে কোলে করে নন্দিনী গেল উঠন পেরিয়ে ইন্দিরার দ্বারে। //////// দরজা বন্ধ হতেই সুপ্রিয়া উপুড় হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। কান পেতে শুনলো সে স্বামীর লঘু পদধ্বনি । ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় দ্বারা সে আভাস পেল সমীর এসে বসেছে বিছানার এক ধারে। চোখে আলো না থাকলেও তনুর ওপরে প্রতিটি স্পর্শ যেন কয়েকগুণ বেশি সংবেদনশীল তার কাছে। ঘাড়ে চুমু খেয়ে সমীর যখন পেছন থেকে এসে চুপিচুপি কানে ফিসফিস করে বলল, — তুমি জানো, রাগলে তোমায় কত সুন্দর দেখায়? একটু ঘন ঘন রাগলেও ত পার কখনো....“প্চ” সমীর চুমু খেল আবারও। সুপ্রিয়া কিছুই বলল না। শুধু হালকা একটা হাসি ঠোঁটে খেলে গেল তার। পরক্ষণেই স্বামীর হাত দুটি আস্তে করে চলে এল তার শরীরের ওপর— স্পষ্টতই স্তনের চেপে বসলো বলিষ্ঠ হাত দুখানি। মৃদু স্বরে "উম্ম্মা..." করে একটু সুখের আওয়াজ বেরুল সুপ্রিয়া মুখ থেকে। এতখন স্বামী দ্বারা অবহেলিত রমণীর দেহের উত্তেজনা এখন প্রবল। তাই শায়িতা এই রমণীর প্রতিক্রিয়াতে সমীর ব্লাউজে ঢাকা স্তনে চাপ বাড়িয়ে দিয় কানে কানে বললো, — এগুলো আমার... একদম আমার..... হঠাৎ তার আঙুল গুলো আরোও শক্ত হয়ে স্তনজোড়া টিপে ধরল — প্রথমে একটু রুক্ষ, অতপর ধীরে ধীরে চাপ হয়ে এলো কোমল। অন্ধ মেয়েটি গা ঝাঁকিয়ে উঠল। কণ্ঠ দিয়ে এক অদ্ভুত শব্দ বেরিয়ে এল — উঁ...... আহহহহ্.....। তা শুনেই যেন উত্তেজনা বাড়লো হঠাৎ! আবারও ক্ষিপ্ত হস্তে সমীর চাপ দিতে লাগলো নরম মাংসপিণ্ডে। সুপ্রিয়া কিছু বলতে পারছিল না আর,শুধু দুই হাতে চাদর মুঠো করে দাঁতে কামড়ে ধরলো বালিশখানি। হঠাৎ হেঁচকা টানে সুপ্রিয়ার দেহ খানি উঠে এলো বিছানা থেকে। মুঠোর মাঝে বিছানার চাদর যেন আপনা আপনিই আড়াল করলো অসহায় নারীর লজ্জা। অবশ্য সে মুহূর্তে মাত্র। কেন না পরক্ষণেই সমীর ছিনিয়ে নিল তা। সুপ্রিয়া স্বামীর পানে চোখ রেখে দাঁতে কামড়ে ধরলো তার অধর পরপর সরে গেল শাড়ি আঁচল ও ও সাদা ব্লাউজ খানি। সমীর এবার তার স্তনের বোঁটায় আঙুল ঘোরাতে লাগল, মাঝে মাঝে চুষে দিতে লাগল ঠোঁটে নিয়ে। রমণী যেন এবার নিজের সত্তা ফিরে পেল, মাথা পেছনে হেলিয়ে ঘন শ্বাস ফেলে বলল, — তুমি জানো না, আমি না দেখতে পেলেও সব টের পাই... সব... সমীরের তখন আলোচনা করার অবসর নেই,তার হাত তখন নামছে নিচে, কোমড়ের মাংসপেশীতে আঙুলের ছাপ যেন সে এঁকে দিতে চাইছে। সুপ্রিয়া আধা বসা, তার পাতলা শাড়ির আঁচল অনেক আগেই নেমে গেছে বুকের ওপর থেকে মেঝেতে। সমীর তার স্তনের এক পাশে চুমু খেয়ে এতখন পরে বললে — আমার ভিতর পর্যন্ত। — হুম.. উত্তর শুনে সুমীর ডান স্তনবৃন্ত মুখে পুরে চুষতে লাগলো। প্রথম কয়েকটা টানে সে বড় আশায় ছিল—না জানি কিসের! তবে কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি না পেয়ে যেন খানিক ক্ষুণ্ন হয়েই চোষন ছেড়ে চাইলো সুপ্রিয়া মুখপানে। মুখের আওয়াজে কোন প্রশ্ন নয়, তবুও কাঁপা গলায় সুপ্রিয়া বলল, – আমি দেখতে পাচ্ছি, তুমি এখন ঠিক কোথায় আছো....কি চাইছো.... কিন্তু.. উত্তর শোনার অপেক্ষায় সমীর থাকবে কেন,সে আবার স্তনের ওপর ঠোঁট চেপে ধরে চুষে দিতে লাগল। পর্দার আড়াল থেকে ঠেলে আসা ঠাণ্ডা বাতাসেও বোঁটা দুটো শক্ত হয়ে উঠছে, আর সুপ্রিয়ার কন্ঠ থেকে চাপা গোঙানির মতো— “আঁ… আহ্…অম্ম্ম্ম্ম্ম...” শব্দ বেরিয়ে মাতিয়ে তুলছে ঘরের পরিবেশ। বেশ খানিকক্ষণ স্তন জোড়া চেপে ও চুষে সমীর হতাশ হয়ে এবার উঠে এল স্ত্রীর কানের কাছে, – এই সবটা তোমার দোষ....এর শাস্তি কি হয় বল? বললে সে সুপ্রিয়ার চিবুক ধর। স্বামীর অভিযোগে লজ্জায় লাল হলো সুপ্রিয়ার গাল। সমীর মুখ নামিয়ে লালচে ঠোঁটে আলতো কামড় বসিয়ে চুষতে লাগলো। খানিক পরেই তা পরিবর্তী হলো গভীর চুম্বনে। খানিক পরেই সে চুমু ভেঙে নেমে গেল নিচে, পেটের উপর চুমু খেতে লাগল আবারও, নাভির চারপাশে ঘোরাতে লাগল জিভ। স্বামীর কান্ডে সুপ্রিয়া এবার হাসতে হাসতে বলল— — এমন করছো যেন আমি কোন রাজকীয় ভোজ্য পদার্থ… অত কামড়ে চুষে কি পাও কি পাও বলতো? সমীর থেমে গেল, ডান হাতের আঙুলগুলো স্ত্রীর মাথার চুলে ডুবিয়ে হঠাৎ শক্ত করে আঁকড়ে ধরে বললে — তুমি ঠিক বলেছো, তবে এই ভোজ্য পদার্থ শুধু আমার জন্য বরাদ্দ। বলে সে আবারও জিভ ছোয়ালো নাভিতে, স্বামীর আলতো চুম্বন আবেশে চোখ বুজে শুয়ে পরলো সুপ্রিয়া। সে জানে স্বামীর চাওয়া ছিল তার বুকের দুধ! তবে খোকা স্তন ছেড়েছে মাস দুই,এই অবস্থায় নিয়মিত চোষন না থাকলে দুধ ত শুকোবেই, এতে সুপ্রিয়ার কি অপরাধ সে খুঁজে পেল না। ওদিকে সমীর এখন স্ত্রীর চুল ও নাভি ছেড়ে চুমু খাচ্ছে পায়ে! চুম্বনে চুম্বনে অস্থির করে তুলেছে সে সুপ্রিয়াকে। উত্তেজনার তারনায় ঘন ঘন দুলছে তার বুক। তবুও দাঁতে হাত কামড়ে ধরে নিজেকে কোনমতে ধরে রেখেছে সে। তবে এবার ধীরে ধীরে সেই চুমু উঠে আসছে ওপরে, সুপ্রিয়া তা অনুভব করল, উষ্ণ অনুভুতিতে দুহাতে আকড়ে ধরলো বিছানার চাদর। অতি অল্পক্ষণেই তার শাড়ি কোমরে উঠে গিয়ে যোনিকেশের আড়াল ভেদকরে স্বামীর জীব স্পর্শ করলো তার লুকানো গুপ্তধন। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় একটু কেঁপে উঠে সরে যেতে চাইলোও তা সম্ভব ছিল না। সমীরের বলিষ্ঠ হাত তার কোমর চেপে ধরেছে। উত্তেজিত সুপ্রিয়ার গোঙানি ও ছটফটানিও তাকে থামাতে অক্ষম। স্বামীর এই কান্ড খানি সুপ্রিয়ার ভারি অপছন্দের, কিন্তু অতি অল্পক্ষণের মধ্যেই কর্তব্য বুঝে নিয়ে সমীর ক্রমাগত জীভ চালিয়ে যাচ্ছে সুপ্রিয়ার গুদে। কামার্ত রমণী এতে অভিমানী হলে খানিকক্ষণ চোষন খাওয়ার পর নিজে আরও মেলে ধরলো, তখন সমীর শক্ত হাতে সুপ্রিয়াকে টেনে নিল আরও কাছে। স্বামীর দুষ্টু জিভখানি ঢুকে গেল গুদের আরও গভীরে!সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ ভাবে দুলে উঠল সুপ্রিয়ার অর্ধনগ্ন দেহখানি। এবার কামার্ত রমণী আর থাকতে না পেরে চিৎকার করে উঠলো – আহ্… হ্যাঁ… ওখানেই… ঠিক ওখানে… ওগো… ভেঙে দাও আমায়… আহহহহ্..... আ...আরো জোরে... উহুহহহ্.... এরপর অল্পক্ষণেই সুপ্রিয়া সর্বাঙ্গ টানটান করে আজ রাত্রিতে তার প্রথম কাম মোচন করে অভিমানে মুখ গুজলো বালিশে। সমীর তখনো আলতোভাবে জিভ বুলিয়ে চলেছে সুপ্রিয়ার গুদে। রাগ মোচন করলেও এখনো তৃপ্তির আবেশে মৃদুমন্দ কাঁপছে সুপ্রিয়া পা দুখানি। সমীর আদরের সহিত স্ত্রীরগুদের পাপড়িতে আঙ্গুল বুলিয়ে বললে, – ইসস্... খুব রাগ হয়েছে বুঝি? দেখি এদিকে তাকাও দেখি লক্ষ্মীটি.... অভিমানী রমণীটি কিন্তু স্বামীর ডাকে সাড়া না দিয়ে খুব বেশি ক্ষণ থাকতে পারলো না। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিতে নিতে সে বালিশ থেখে মুখ ফেরালো স্বামীর পানে,আর ঠিক তখনি "উম্ম্মাচ্" শব্দের সাথে সমীর অলতো করে চুমু খেলো সুপ্রিয়ার গুদে, এবং সেই সাথে আগের মতোই আদর মিশিয়ে বললে, – এই ত লক্ষ্মী মেয়ে “ প্চ" এবারের চুমুতে কেঁপে উঠলো সুপ্রিয়া। সমীর উঠে গেল বিছানায়।স্বামীর উষ্ণ আদরে অভিমানী রমণীর মান ভাঙতে বেশি সময় লাগলো না। তবে সে এবার ব্লাউজটা গা থেকে আলাদা করে স্বামীকে নগ্ন করতে হাত লাগালো। কারণ খেলা তো সবে শুরু হয়েছে মাত্র। আরো লেখার ইচ্ছে ছিল অবশ্য,তবে এখন তা অসম্ভব, ত ঈদের পর দেখা হচ্ছে, ততদিনে গল্প চলবে কি না? জানালে খুশি হবো।
06-06-2025, 01:20 AM
You are actually amazing.....
Eid Mubarak brother........
06-06-2025, 01:20 AM
একটা গল্প খুঁজে চলেছি
এক ছেলে কোনো কারণে বাড়ি ছাড়া হয়। তারপর সে অন্য কোথাও চলে যায়। সেখানে সে দুধ বিক্রির কাজ নেয়। পরবর্তীতে সে সেখানে চোদোনবাজ হয়ে উঠে। গল্পের সন্ধান থাকলে রিপ্লাই দেবেন দয়া করে
06-06-2025, 06:24 AM
এটা একদমই ঠিক নয়, প্রেমলিলা এমন হঠাৎ বন্ধ করলে চলে?
বেশ তো চলছিল!
06-06-2025, 08:54 AM
(06-06-2025, 06:31 AM)Saj890 Wrote: Very good থ্যাঙ্কস ব্রো ❤️
(06-06-2025, 06:24 AM)Sweet angel Wrote: এটা একদমই ঠিক নয়, প্রেমলিলা এমন হঠাৎ বন্ধ করলে চলে?ম্যাডাম,আই এম ব্যস্ত, জলদি আপডেট দেবার চেষ্টা করবো।❤️ (06-06-2025, 01:20 AM)Fokir_sadhU Wrote: একটা গল্প খুঁজে চলেছি (06-06-2025, 01:20 AM)FreeGuy@5757 Wrote: You are actually amazing..... অগ্রীম ঈদ মোবারক ব্রো❤️
07-06-2025, 02:24 AM
ভালো হচ্ছে, চালিয়ে যাও।
07-06-2025, 06:04 AM
OUTSTANDING.
07-06-2025, 11:03 AM
07-06-2025, 02:18 PM
(06-06-2025, 01:20 AM)Fokir_sadhU Wrote: একটা গল্প খুঁজে চলেছি https://xossipy.com/thread-29594.html?hi...C%E0%A6%BF আপনার গল্পের link |
« Next Oldest | Next Newest »
|