Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
দশ হাজার লাইক অতিক্রম করায়
অভিনন্দন জানাই ♥️♥️ clps
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(21-03-2022, 03:14 PM)Baban Wrote:
দশ হাজার লাইক অতিক্রম করায়
অভিনন্দন জানাই ♥️♥️ clps

Namaskar Iex Namaskar thanks
Like Reply
বৈশাখ বলল ইস্
আমি ছিলাম ভাগ্যিস 
              তাই নতুন বছর আসে
 
জষ্ঠী বলল থাম্
লোকে কেমনে খেত আম
              যদি আমি না থাকতাম পাশে ।।
 
আষাঢ় বলল থাক্ 
তোদের বর্ষপূর্তি রাখ্
             আমিই বাঁচাই গরমের শেষে
 
শ্রাবণ বলল ইশশ্
লোকে কোথায় পেত ইলিশ 
            নদীর পাশে না দাঁড়ালে এসে ।।
 
ভাদ্র বলল ইসে
আমি কম যাই বা কিসে
           আমার সাথেই শুরু শরতের যাত্রা
 
আশ্বিন বলে থাম্
তোর গরমে ঝরে ঘাম
          আমিই আনি আগমনীর বার্তা ।।
 
কার্তিক বলে বেটা 
তোদের ঝগড়া এবার মেটা 
          চেয়ে দেখ গাঁয়ে নবান্নের সুর
 
অঘ্রাণ বলে ঠিক 
বলেছিস সঠিক 
          আনন্দের মাঝে ঝগড়া থাকুক দুর ।।
 
পৌষ বলল বেশ 
হোক ঝগড়া ঝাটির শেষ 
          আমি বইয়ে দিলাম শীতল হাওয়ার রেশ
 
মাঘ বলল ওরে 
তুই টেক্কা দিবি মোরে
          আমি না থাকলে লেপের মজা শেষ ।।
 
ফাগুন বলল দেখ্
আমি এনেছি রঙের ব্যাগ 
          রঙিন ফুলে বৃক্ষ উঠবে দুলে
 
চৈত্র বলল আন্
হোক বছরের অবসান 
         নতুনের ভার বৈশাখে দিই তুলে ।।


 --ভারতীয় দাদা--
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
হৃদয়ের দরজা কেউ পারেনি খুলতে !
মুখফুটে কেউ পারেনি ভালিবাসি বলতে !
তবুও মন চেয়েছে বারবার কেউ আসুক একবার 
একাকিত্বের গ্লানি থেকে চেষ্টা করুক  ছিনিয়ে নেবার ......
পাতা ঝরানোর সময়ে এক অদ্ভুত আস্ফালন...
বেঁচে থাকার অলীক অবলম্বন ......।।
জরিয়ে ধরতে চাওয়া শীর্ণকায় দুই বাহু
আগ বাড়িয়ে জড়াতে চায় ... যেন রাহু
কোন সকাল ...... রাতের চেয়েও অন্ধকার
বন্ধনহীন জীবনের রোজ রোজ হাহাকার......
বাঁচিতে চাহিনা আমি এই কুৎসিত ভুবনে
মরন আমার বড়ই আপন ।।জড়াতে চাই তার আলিঙ্গনে !!

-- ভারতীয় দাদা --
Like Reply
বেলাশেষে

 
               একজন স্বামী, একজন স্ত্রী 
         একজন চুরাশিএকজন আশি,
             ওরা কখনও  কাউকে বলেনি
                তোমায় ভালবাসি... 
 
               জীর্ণ শিরাময় দেহ...
                  পরম ভরসায়
              ধরা থাকে দু'জনের হাত
                এখনও বাঁচার আশায় 
 
              যখন ঝড়-বৃষ্টি হয়,
              কোনও গভীর রাতে
            বিদ্যুত ঝলসে ওঠে
                তীব্র বজ্রপাতে...
 
           তখন ঘুমভাঙ্গা রাতে
           শঙ্কিত মনে 
           নিশ্চুপ প্রাণপণ
        আঁকড়ে দু'জনে 
 
         এখনও রান্না করে স্ত্রী
           কাঁপা কাঁপা হাতে,
           যত্নে ভাত বেড়ে দেয়
                  স্বামীটির পাতে 
 
           অশক্ত হাতে ডালের বাটি,
            কখনও চলকে পড়ে,
          কখনও ছড়ায় ভাত
            ...কাঁপে থরথরে 
 
           কাঁপা স্বরে শুধায় স্বামী 
          বুড়ি বউয়ের কাছে,
            'বিয়ের সে দিনের কথা,
                  মনে কি তোমার আছে?
 
          সেদিনও তোমার ঘোমটা সরাতে,
                 কেঁপেছিল দুই হাত
          অনেক কথা হয়নি বলা 
             নিঝুম ছিল সে রাত...'
 
    ---'একটা কথা আবছা হলেও,
           আজও মনে গেঁথে
       রূপোর নূপুর পরিয়েছিলে,
             তুমি নিজের হাতে'
 
          সূর্য ডোবার সময় হল
         চুরাশি আর আশি---
              এখনও বলেনি ওরা,
            --তোমায় ভালবাসি


-- ভারতীয় দাদা --
Like Reply
শুভমস্তু


গোবিন্দভোগ চালটা প্রায় আধঘন্টা আগেই ভিজিয়ে রেখেছিল ঈশানী। এবার গোটা গরম মশলা দিয়ে জল ফোটাচ্ছে। টগবগ করে ফুটলে চালটা দিয়ে দেবে... তারপর নিয়মমাফিক ঘি, ভিজিয়ে রাখা কাজু, কিসমিস...
গ্যাসের দিকে তাকিয়ে চোখে জল এলো ওর।
জলটা যেমন ফুটছে, তেমনি ওর মনটাও তো ফুটছে! অথচ... মুখে বলতে পারছে কই! বরং এই গরমে ঘুপচি রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে বাসন্তী পোলাও বানাচ্ছে! এরপরে কষা মাংসের পালা!
সঞ্জয়ের দুই বন্ধু আজ দুপুরে এখানেই খাবে। অবশ্য, দুপুর না, খেতে খেতে বিকেল গড়িয়ে যাবে নির্ঘাত। ততক্ষণ ওকেও বসে থাকতে হবে! যতই মাতাল হোক, অতিথি তো, আপ্যায়ন করার দায় এবং দায়িত্ব দুইই তো ওরই!
ভাবতে ভাবতে চোখে জল এলো ঈশানীর।
গত পরশু অফিস থেকে ফিরে জুতো ছাড়তে ছাড়তে সঞ্জয় বলেছিল "অরিন্দম আর সুভাষকে দোলের দিন দুপুরে খেতে বলেছি। তুমি মাটনটা বানিয়ো।"
"দোলের দিন? আরতিদি আসবে না সেদিন। আমাকে একা সব কাজ করতে হবে"! বলেছিল ও।
"তাতে কি হয়েছে? দুজন এক্সট্রা খাবে এই যা!"
"শুধু দুপুরেই খাবে তো?"
"সকালে আসবে। একটু বসব আমরা একসাথে। অনেকদিন বসা হয়না। তারপর দুপুরে খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে বাড়ি যাবে।" বলেছিল সঞ্জয়।
'বসা' শুনেই মুখ শুকিয়ে গেছিল ঈশানীর।
দীপাবলীর সময়েও 'বসেছিল' ওরা। বোতল টোতল ভেঙে, বিছানায় মদ ফেলে একাকার কান্ড। সেই ঈশানীকেই সব পরিষ্কার করতে হয়েছিল। আবার দোলেও!
"প্লিজ প্রোগ্রামটা ক্যানসেল করো। আমার খুব আনকমফোর্টেবল লাগে" মরিয়া হয়ে বলেছিল ও।
"আনকমফোর্টেবলের কি আছে? আমরা বেডরুমের দরজা বন্ধ করে বসব। তুমি এখানে থেকো।" মামলা খারিজ করার মতো করে বলেছিল সঞ্জয়।
সেই পরশু মানে দোল আজ! সকাল থেকেই ঈশানী রান্নাঘরে আর সঞ্জয় ওর দুই বন্ধুর সঙ্গে বেডরুমে। এত গরম... কষ্ট হচ্ছে ঈশানীর... ওই একটা ঘরেই তো এসি আছে...। কিন্তু যাবার উপায় নেই।
মাঝেমাঝে খুব একা লাগে ওর।
যতই 'ছেলে -মেয়ে সমান সমান' ভাবুক না কেন, ছোট ছোট কত ঘটনায় বোঝা যায়, এখনও অনেক লড়াই বাকি আছে!
"ঈশানী, একটু ঠান্ডা জল দিয়ে যাবে?" চেঁচিয়ে বলল সঞ্জয়।
ইচ্ছে করেই সাড়া দিল না ও।
"কি হল? ঠান্ডা জল দিতে বললাম যে?" সাড়া না পেয়ে নিজেই উঠে এসেছে সঞ্জয়।
"কিভাবে যাব? আমি তো রান্না করছি।"
"তো?"
"আর আমি নাইটি পরে আছি... এভাবে... ওই ঘরে যেতে লজ্জা লাগে।"
"লজ্জার কি আছে? ওরা সবাই আমার নিজের লোক। তোমাকে কত ভালবাসে! বৌদি বৌদি করে সারাক্ষণ। তাছাড়া..."
"তাছাড়া কি?"
"লজ্জার আছে টা কি? ওই তো আলুর বস্তার মতো ফিগার তোমার। ওরা কেউ ফিরেও তাকাবে না।" একরাশ বিষ উগরে দিয়ে চলে গেল সঞ্জয়।
স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল ঈশানী!
হ্যাঁ, থাইরয়েড, পি সি ও ডি র কল্যাণে মোটা হয়ে গেছে অনেকটাই। তাবলে এমনি ভাবে বলবে ওকে সঞ্জয়?
ছিঃ!
মাংসটা কষাতে কষাতে কদিন আগের কথা ভাবছিল। ইউটিউবে একটা ভিডিওতে একজন বলছিলেন "লাভ ইয়োরসেলফ দ্যা ওয়ে ইউ আর! নিজেকে তুমি যেমন, সেইভাবে ভালোবাসো।" সেটাই নাকি প্রকৃত নারীবাদ। আর আজ ওকে ওর সবচেয়ে কাছের মানুষটা এইভাবে বলল?
রান্না শেষ করে যখন বাইরে এলো ঈশানী, তখন প্রায় দেড়টা বাজে। সকালে উঠে বাসিকাজ সেরে স্নান করেছিল। কিন্তু এখন শরীর অস্থির লাগছে খুব। আবার স্নান করতে হবে।
স্নান সেরে বেরিয়ে একটা নতুন কুর্তি পরল ও। ওর ছোটবেলার পাড়ায় খুব বড় করে পুজো হত এইদিনে। মঠ-ফুটকড়াই প্রসাদ হত। আর ঠাম্মার সাথে কীর্তন শুনতে যেত ও। কীর্তনের পরে আবীর খেলা... মিষ্টিমুখ... ভোগপ্রসাদ নিয়ে বাড়ি ফেরা...এভাবেই দিন কাটত।
আর এখন!
চুল আঁচড়ে একবার দরজা ধাক্কা দিল ঘরের।
"হ্যাঁ..." অরিন্দমের গলা। দরজার বাইরে থেকেই মদ আর সিগারেটের একটা বোঁটকা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
"তোমরা কখন খাবে? দুটো বেজে গেছে।"
"বৌ...স্যরি... বৌদি, আমরা আরেকটু পরে খাব। এখন না।" জড়িয়ে যাওয়া গলায় উত্তর শুনে ফিরে আসে ঈশানী।
তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। অতিথিদের জন্য রাখা প্লেট আর বাটিতে নিজের খাবারটা তুলে নেয়। আর দেরি করবে না ও। পেট চুঁইচুঁই করছে।
"বরফ আছে ফ্রিজে?" বলতে বলতে বেরোয় সঞ্জয়। একটু টলতে টলতে। তারপরেই অবাক হয়ে বলে "একি, তুমি বসে গেলে?"
"কেন? আমার খিদে পেতে পারে না? তোমরা নাহয় চিপস, এটাসেটা খাচ্ছ, আমি তো সেই ব্রেকফাস্ট করেছি। আর, তুমিও এবার ঘর পরিষ্কার করে রুম ফ্রেশনার দাও। তারপর এখানে এসে বসো। খাবার রাখা থাকবে, বেড়ে খেয়ে নিও। সারা সপ্তাহ পরিশ্রম, আজ সকাল থেকে এত খাটনি... আমাকে এবার একটু শুতে দাও..." এতক্ষণের রিহার্সাল দেওয়া কথাগুলো বলে দেয় ঈশানী।
জীবনে এই প্রথম!
মিনিট পনেরো পরে চাদর পালটে বিছানায় শুতে যাবার আগে আয়নায় নিজের দিকে একবার তাকাল ঈশানী।
শুনেছিল, মৃধাসুর বা ম্রেধাসুরকে বধ করে শ্রীকৃষ্ণ ব্রজে ফেরার পরে তাঁকে দোলায় বরণ করে নেন ব্রজবাসীরা। সেই গোপ-গোপিনীদের রং থেকেই দোলযাত্রার সূচনা। ম্যাড়াপোড়ার, যার অপভ্রংশ ন্যাড়াপোড়া, তার সূচনা।
পায়ে পায়ে আয়নায় কাছে রাখা কুমকুমের শিশিটা হাতে তুলে নেয় ঈশানী।
সঞ্জয়ের এই এতদিনের "তুমি মেয়ে, সব কাজ তো তোমাকেই করতে হবে, সব কথা মানতে হবে" শুনে শুনে ক্লান্ত হয়ে গেছিল ও।
আজকের প্রতিবাদ - অসুর বধের চেয়ে কি কম কিছু?
একটু হাসে ঈশানী। তারপর আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে বলে "শুভ দোলযাত্রা ঈশু! এবার জীবনেও রং আসুক...আসুক...আসুক..."
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
# পাগলামি


স্ত্রী কুমুদিনী মারা যাওয়ার পর থেকেই  অনাথবাবু কেমন যেন গুম মেরে গেছেন পঁয়তাল্লিশ বছরের দাম্পত্য জীবন কুমুদিনীদেবী ভীষণই নরম আর চাপা স্বভাবের ছিলেন নিজের প্রয়োজনের কথা কোনদিনও মুখ ফুটে বলেননি গলা উঁচু করে কথা বলা, বরের সাথে ঝগড়া করে রাগের মাথায় বাপের বাড়ি চলে যাওয়া---এসব কোনকিছুই কুমুদিনীদেবীর ব্যাকরণে ছিল না তবে অনাথবাবু কোনদিন স্ত্রীকে অবহেলা করেননি সাধ্যমতো সব প্রয়োজন মিটিয়েছেন তিনি স্ত্রীবিয়োগের পর থেকেই অনাথবাবুর মনে হয়েছে, কুমুদিনীকে তিনি প্রতারণা করেছেন ছেলেমেয়ে মানুষ করতে গিয়ে স্ত্রীকে দিয়ে অনেক কিছু ত্যাগ করিয়ে নিয়েছেন কুমুদিনীর জীবনে আরো অনেক কিছু প্রাপ্য ছিল
  দিন যত গড়াল অনাথবাবু মানসিক দিক থেকে তত ভেঙে পড়তে শুরু করলেন দেখতে দেখতে কয়েক মাসের মধ্যে তিনি মানসিক রোগীতে পরিণত হলেন তিন ছেলে আর এক মেয়ে অনাথবাবুর প্রতি মাসে পালা করে ছেলেরা বাবাকে নিজের কাছে রাখে পাছে রোগের খরচ তাকেই বহন করতে হয়, এই ভেবে কোন ছেলেই মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে নারাজ অবশেষে বড়ছেলে মৃনাল একদিন বাবাকে এক সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে নিয়ে গেল
   ডাক্তার দেখানো হলো ওষুধ দিলেন কিন্তু কাজ হল না ঠিকঠাক অনাথবাবু এতদিন বেশিরভাগ সময় চুপচাপই থাকতেন, ইদানিং বকাবকি শুরু করলেন অর্থহীন প্রলাপ শুনতে শুনতে ছেলে এবং ছেলের বউরা রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠল অবশেষে তিন ছেলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনাথবাবুকে মেন্টাল অ্যাসাইলামে রেখে আসা হল তিন ভাই মিলে খরচাপাতি ভাগাভাগি করে নিল অনাথবাবু আপত্তি করেছিলেন তাঁর আপত্তি ধোপে টেকেনি আসলে অচল মুদ্রার মতো অচল মানুষও একদিন অর্থহীন হয়ে পড়ে
*
সুবীরবাবুর সাথে বেশ সখ্যতা গড়ে উঠল অনাথবাবুর পাঁচবছর  ধরে তিনি এই অ্যাসাইলামে আছেন বেশিরভাগ সময়ই তিনি সুস্থ স্বাভাবিক থাকেন তবে মাঝে মাঝে আচমকা ভীষণ রকমের পাগলামি শুরু করেন স্বাভাবিক অবস্থায় খুব কম কথা বলেন দুই বৃদ্ধের জীবনের গল্প মোটামুটি এক অনাথবাবু ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন কথার ছলে  একদিন অনাথবাবু বললেন, আপনাকে দেখে আমার খুব খারাপ লাগে এতদিন ধরে আপনার চিকিৎসা চলছে অথচ এখনও সুস্থ স্বাভাবিক হতে পারলেন না
সুবীরবাবু হাসলেন এরপর বললেন, সুস্থ হয়ে কী লাভ! বেশ তো আছি
---এরকম কেন বলছেন?
---আচ্ছা অনাথবাবু আপনার তো কাল ছুটি, তাই না?
---হ্যাঁ, বড় ছেলে মৃনাল কাল আসবে
সুবীরবাবু একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, জানেন অনাথবাবু বছর খানেক আগে আমিও সুস্থ হয়েছিলাম বাড়িতে খবরও দেওয়া হয়েছিল কিন্তু....
কিন্তু কী? অনাথবাবু ব্যাকুল হয়ে জানতে চাইলেন ---কেউ নিতে আসেনি পুরোনো, ক্ষয়ে যাওয়া, অসমর্থ, বৃদ্ধ বাবাকে তারা তাদের প্রগতিশীল জীবনে আর ফিরিয়ে নিতে চায়নি অগত্যা...
---অগত্যা কী সুবীরবাবু?
---পাগলামির অভিনয় শুরু করলাম ভাবলাম, বাকি জীবনটা পাগলামি করে কাটিয়ে দিতে পারলে অন্ততপক্ষে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই তো পাওয়া যাবে
সুবীরবাবুর জীবনের করুন গল্প শুনে অনাথবাবুর দু'চোখ ঝাপসা হয়ে এলো
সুবীরবাবু অনাথবাবুর দুহাত ধরে অনুরোধ করলেন, কথা কাউকে বলবেন না প্লিজ 
অনাথবাবু আশ্বস্ত করে বললেন, আমার যদি সামর্থ্য থাকত আপনাকে আমি আমার সাথে নিয়ে যেতাম কিন্তু আমিও তো ছেলেদের উপর নির্ভরশীল উপার্জনের সব টাকা সংসারের খরচ টানতে টানতে আর ছেলেমেয়েদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতেই শেষ হয়ে গেল নিজের জন্য কিছুই জমিয়ে রাখতে পারলাম না 
*
সুবীরবাবু এখন আগের মতোই একা বেশিরভাগ সময়ই চুপচাপ থাকেন আর মাঝে পাগলামির অভিনয় করেন মাস ছয়েক পর একদিন হঠাৎ তিনি দেখলেন এক  উন্মাদ পাগলকে দড়ি দিয়ে বেঁধে অ্যাসাইলামে আনা হচ্ছে নতুন কিছু নয় এরকম দৃশ্য তিনি পাঁচ-'বছরে অনেক দেখেছেন সুবীরবাবু প্রথমে আমল দিলেন না তারপর কি মনে করে উঠে গেলেন সেই পাগলকে দেখতে ফতুয়া পরা, গোঁফ দাড়ি না কমানো সেই বৃদ্ধকে দেখেই সঙ্গে সঙ্গে চিনে ফেললেন সুবীরবাবু বিড়বিড় করে বলে উঠেলন, অনাথবাবু!
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন তিনি খুব ভাল করে লক্ষ্য করলেন অনাথবাবুকে তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারলেন, অনাথবাবুর চোখদুটো যেন কাউকে খুঁজছে সুবীরবাবু আড়াল হয়ে পড়লেন
তিনদিন পর অনাথবাবু একটু শান্ত হলে ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে সুবীরবাবু দেখা করতে গেলেন তাঁর সঙ্গে
  সুবীরবাবু অনাথবাবুর পাশে এসে বসলেন অনাথবাবু দুদিন ধরে যেন তাঁকেই খুঁজছিলেন চোখে মুখে আনন্দের রেখা ফুটে উঠল
সুবীরবাবু অনাথবাবুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, পাঁচ বছর ধরে পাগলামির অভিনয় করে চলেছি কোনটা সত্যিকারের পাগলামি আর কোনটা পাগল হওয়ার অভিনয়, সেটা খুব ভাল করেই বুঝি ছেলেদের সংসারে জায়গা হল না বুঝি?
    কোন কথা বললেন না অনাথবাবু শুধু
অনাথবাবুর মরীচিকাময় জীবনে কোথা থেকে চেরাপুঞ্জির দু'খন্ড মেঘ এসে জমল দুই চোখে 
দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা মেশানো অশ্রু ঝরে পড়ল কয়েক ফোঁটা 
করতল দিয়ে দু'চোখ মুছতে মুছতে অনাথবাবু বললেন, অচল নোট একবার পকেট থেকে বেরিয়ে গেলে কেউ কি আর ফেরত নিতে চায়? মিথ্যেই  নিজেকে এতকাল শেকড় ভেবে এলাম বীজ ভেবে এলাম 
  দুই বৃদ্ধ পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন বাইরের ব্যস্ত, প্রগতিশীল সমাজ কিচ্ছুটি টের পেল না শুধু এই গোপন, বেদনাদায়ক, ঘটনার নীরব সাক্ষি হয়ে থাকল অ্যাসাইলামের পলেস্তরা খসে পড়া, নোনাধরা, স্যাঁতসেঁতে  ঘুপচি ঘরের চার দেয়াল

                            ©সন্তু সাহা

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
যখন কেউ আমাকে পাগল বলে ......।

 
আমি পাগল ! হয়তো ছাগল !
কেউ আমাকে চায়না !
ভালোবাসা ?  সব অভিনয় !
তাইতো কাউকে পাইনা !
 
চোখের জল মোছাতে
আমার হাতের তালুই সব !!
কেউ কোনোদিন জানতে চায়নি

কেন গোপন আমার মনের কলরব?
 
প্রেমহীন এই জীবনে
বুঝেছি একটাই কথা সার !
যার পকেটে আছে টাকা
সব সুখ যে তার !
 
মাতাল আমি ! পাগল আমি !
কারন আমার নেই তো কিছুই !
ভালোবাসা দিয়ে বাঁধতে চেয়ে
হারিয়েছি সব  কিছু !
 
  
 
 
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(26-03-2022, 09:08 PM)indian_dada Wrote: যখন কেউ আমাকে পাগল বলে ......।

 
আমি পাগল ! হয়তো ছাগল !
কেউ আমাকে চায়না !
ভালোবাসা ?  সব অভিনয় !
তাইতো কাউকে পাইনা !
 
চোখের জল মোছাতে
আমার হাতের তালুই সব !!
কেউ কোনোদিন জানতে চায়নি

কেন গোপন আমার মনের কলরব?
 
প্রেমহীন এই জীবনে
বুঝেছি একটাই কথা সার !
যার পকেটে আছে টাকা
সব সুখ যে তার !
 
মাতাল আমি ! পাগল আমি !
কারন আমার নেই তো কিছুই !
ভালোবাসা দিয়ে বাঁধতে চেয়ে
হারিয়েছি সব  কিছু !
 
  
 
 
 

দাদা , সত্যি তুমি একটা জিনিয়াস ..... Namaskar
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(27-03-2022, 12:09 PM)ddey333 Wrote:
দাদা , সত্যি তুমি একটা জিনিয়াস ..... Namaskar

জানি আমি ! বোকাচোদাদের আজকাল জিনিয়াস বলে ! অত ভদ্র ভাবে না বলে পরিস্কার সোজা কথায় বোকাচোদা বলেদিলেই ঝামেলা মিটে যাবে ! 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(27-03-2022, 08:53 PM)indian_dada Wrote: জানি আমি ! বোকাচোদাদের আজকাল জিনিয়াস বলে ! অত ভদ্র ভাবে না বলে পরিস্কার সোজা কথায় বোকাচোদা বলেদিলেই ঝামেলা মিটে যাবে ! 

কোনোদিনও শুধরাবে না তোমার মতো বোকাচোদা গুলো 



Sad
Like Reply
পোস্ট টা পড়ে, শুধু like দিয়ে চলে গেলে হবে না....একটু কিছু হলেও মতামত লিখে জানাতে হবে....

এটুকু আমার একান্ত অনুরোধ....
~~~~~~~~~~~~~~|||||~~~~~~~~~~~~~
 
SMS1 – সুপ্রভাত
SMS2 – সেম টু ইউ,বাট সরি,আপনার নাম্বারটা সেভ করা নেই বলে চিনতে পারলাম না কাইন্ডলি যদি আপনার নাম টা মেসেজ করেন
SMS1 – সে কী, আমাকে চিনতে পারলেন না! আমি কিন্তু আপনাকে খুব ভাল করে চিনি
SMS2 – সরি পারলাম না কে আপনি?
SMS1 – গেস করুন আপনিও আমাকে খুব ভাল করেই চেনেন
SMS2 – না চিনি না আপনি বোধ হয় রং নাম্বারে উইশটা সেন্ড করেছেন
SMS1 – না আমি রাইট নাম্বারেই সেন্ড করেছি আপনার নাম মল্লিকা রায় ডাক নাম টুটুতাই তো?
SMS2 – রাইট গিভ মোর ইনফো আর ইউ ম্যান অর উওম্যান?
SMS1 – ম্যান আরোও তথ্য দিচ্ছি, আপনার বাবা বাংলার প্রফেসর মা ব্যাঙ্কে চাকরি করেন
SMS2 –ইয়া বাট স্টিল আই কুডনট রেকগনাইজ ইউ প্লিজজ...
SMS1 –ঠিক আছে আমি আপনাকে আরোও অপশন দিচ্ছি.........আপনার নাম্বার থেকে কল আসছিল, আমি কলটা কেটে দিলাম সরি আমার গলা না শুনে আমাকে চিনতে হবে
SMS2 –সরি, এবার কিন্তু আমি একটু বোর হচ্ছি
SMS1 –কেন হচ্ছেন? ধরে নিন না এটাও একটা গেমযেভাবে আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটারে বোরিং গেম গুলো খেলেন বা বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাটিং করেন
SMS2 –বাট এরা আমার চেনা
SMS1 –বললাম যে আমিও আপনার খুব চেনা শুধু অপশন থেকে ধরতে হবে গেম
SMS2 –ওয়েল, দেন গিভ মি মোর অপশন
SMS1 – আপনার বয়স এখন একুশ বছর তিন মাস সাত দিন চার ঘন্টা সতেরো মিনিট
SMS2 – মাই গুডনেস! আপনি এইটাও জানেন!
SMS1 – অপশন টু, আপনার ডান দিকের কানের নিচে একটা পুরনো কাটা দাগ আছে ছোটবেলায় বিড়ালে আঁচড়ে দিয়েছিল আপনার ফেবারিট কালার পিঙ্ক টপ আর জিন্স পরতে ভালবাসেন মাটন খান না পিৎজার ভীষন ভক্ত আরোও অপশন দেব কি?
SMS2 –আয়্যাম রিয়্যালি ভেরিমাচ অ্যাস্টাউন্ড আপনি এতকিছু জানলেন কী করে?
SMS1 –বললাম যে আমি আপনার খুবই চেনা
SMS2 –মেসেজ টাইপ করতে আমার আঙুল ব্যাথা করছে আয়্যাম গেটিং টায়ার্ড সো প্লিজ় রিসিভ মাই কল অর ফিনিস দ্য গেম
SMS1 –ঠিক আছে,তাহলে ছেড়েই দিচ্ছি কিন্তু এতো সহজে গেম টা ছেড়ে দিলেন!আপনি না কলেজে ভাল স্টুডেন্ট সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছে
SMS2 –আপনি এইটাও জানেন! কে আমি আবার চান্স নিচ্ছি আপনার অ্যাড্রেসটা বলুন
SMS1 –আপনার বাড়ির কাছাকাছি
SMS2 –কত কাছাকাছি?
SMS1 –খুব আমার ঘর থেকে আপনার বেডরুম দেখা যায় কালার পিঙ্ক
SMS2 –হোয়াট, আপনি আমার বেডরুম ওয়াচ করেন?
SMS1 –দরকার পড়ে না আমি ইচ্ছে হলেই যখন খুশী যেতে পারি আপনার ঘরে
SMS2 –প্লিজ লিমিট এবার কিন্তু একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে
SMS1 –একটুও বাড়াবাড়ি হচ্ছে না বিশ্বাস করুন
SMS2 –আপনি আপনার পোস্টাল অ্যাড্রেসটা মেসেজ করুন
SMS1 –১৩৪/ বি.সি সরণী, কলকাতা১১৮
SMS2 –আর ইউ জোকিং? এটা আমার ফ্ল্যাটের অ্যাড্রেস
SMS1 – আমারও
SMS2 –কোন ফ্লোর বলবেন প্লিজ?
SMS1 –ফোর্থফ্লোর,ফ্ল্যাট নং .জি
SMS2 –ইয়ার্কি হচ্ছে? এইটা তো আমাদের ফ্ল্যাট নাম্বার
SMS1 –আমারও
SMS2 –বুঝেছি আপনি আমার টাইম ওয়েস্ট করছেন আয়্যাম লিভিং
SMS1 –প্লিজ ছাড়বেন না আপনার বেডরুমের পাশে যে ভদ্রলোক থাকেন, তার কি আজ জন্মদিন? আজ তো ২১শে ফেব্রুয়ারি
SMS2 –ওহ নো আই গট ইট! বাবা তুমি! ভেরি ব্যাড আমাকে এইভাবে কনফিউজড কর! তুমি অন্য নাম্বার থেকে মেসেজ পাঠাচ্ছ, কী 
করে চিনব বল?
SMS1 –ঠিকই তোআমরা সবাই এখন একেকজন নাম্বার মেশিনে সেভ করা থাকলে চিনতে পারি, আর সেভ না থাকলে হাজার রেফারেন্সেও চিনতে পারি না কী করে চিনব বল? হাতে লেখা চিঠিতে নিচে নাম লেখা না থাকলেও হাতের লেখা দেখে ঠিক নিজের মানুষ চিনে নিত এইটা কার চিঠি মনের ভেতর সেভ করা থাকতো যেকিন্তু মেশিন পত্তরে যে সবার হাতের লেখাই একইরকম
SMS2 –সরি বাবা এনিওয়ে হ্যাপীবার্থডে কী গিফট নেবে বল?
SMS1 –আমি যা চাইব দিবি?
SMS2 –প্রমিস
SMS1 –আজ সারাদিন কম্পিউটারে চ্যাটিং আর মোবাইলে এস এম এস বন্ধ রেখে আমাকে হাতে বাংলায় একটা সুন্দর চিঠি লিখবি কাগজে...
 
Collected

[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
এক হাজার রেপুটেশন অতিক্রম করার অভিনন্দন জানাই clps
তুমি চাও বা না চাও.... তোমার মাধ্যমে যে পাঠকেরা এই গল্প গুলো পাচ্ছে তাদের ভালোবাসার এই বহিঃপ্রকাশ তো তারা করবেই ♥️

শেষ গল্পটা সত্যিই দারুন। অজানা মায়াবী জগতে এতটাই ডুবে যাচ্ছি যে সত্যিকারের জগতের মানুষগুলো কখন যে কাছে থেকেও দূরে সরে যাচ্ছে বুঝতেই পারছিনা কিংবা হয়তো বুঝতে চাইছিনা.... ভার্চুয়াল জগতের এই মায়া কি সাংঘাতিক!!
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(29-03-2022, 11:46 AM)Baban Wrote:
এক হাজার রেপুটেশন অতিক্রম করার অভিনন্দন জানাই clps
তুমি চাও বা না চাও.... তোমার মাধ্যমে যে পাঠকেরা এই গল্প গুলো পাচ্ছে তাদের ভালোবাসার এই বহিঃপ্রকাশ তো তারা করবেই ♥️

শেষ গল্পটা সত্যিই দারুন। অজানা মায়াবী জগতে এতটাই ডুবে যাচ্ছি যে সত্যিকারের জগতের মানুষগুলো কখন যে কাছে থেকেও দূরে সরে যাচ্ছে বুঝতেই পারছিনা কিংবা হয়তো বুঝতে চাইছিনা.... ভার্চুয়াল জগতের এই মায়া কি সাংঘাতিক!!

Namaskar Heart Smile thanks
Like Reply
বাসন্তীকা


সাত সকালে খবরের কাগজটা দেখেই চমকে উঠেছিলেন আরতি।
নন্দনে ফিল্ম ফেস্টিভাল চলছে, আর সেখানে কিনা ওনার আর বিমলবাবুর প্রিয় সিনেমাটি 'রেট্রো' বিভাগে দেখানো হচ্ছে!
আজকাল তো আর এসব ছবি দেখাই হয় না!
সারা জীবন থোড়-বড়ি-খাড়া করেই কেটে গেল, এখনও তাই হচ্ছে। যতদিন 'উনি' ছিলেন, কলেজ সামলে, সংসার সামলে, ছেলে সামলে নিজের জন্য সময় হতো না। আর এখন তো নাতিবাবুকে সামলানোর বাড়তি দায়িত্ব।
তবে, এই দুদিন বাড়িতে কেউ নেই। পাপুন বৌমা আর ছেলেকে নিয়ে দোলের ছুটির তিনদিনের উইকেন্ড কাটাতে গেছে শান্তিনিকেতন। আর তাই, বাড়িটা বড্ড ফাঁকা লাগছে। অন্যদিন ছোট্ট রিয়ান ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। সত্যি বলতে কি, মাঝেমাঝে বিরক্তও লাগে... তাও বড় প্রিয় নাতিবাবু ওঁর। আর এই দুটো দিন এই দুই কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটবাড়িটাও বড্ড বেশি বড় লাগছে। বড্ড বেশি গোছানো লাগছে।
ভাবতে ভাবতেই নিউজপেপারটা খুলে বসলেন আরতি। আজ কাগজ আসেনি, তাই গতকালের বিশেষ ক্রোড়পত্রটাই পড়বেন আবার। আর সেখানেই একটা সুন্দর ছবি চোখে পড়ল।
সবুজ ময়দানের পটভূমিকায় লাল পলাশ!
ক্যাপশানে লেখা, 'বাসন্তীকা'।
একটু আনমনা হলেন আরতি।
ওঁকে ওঁর বাবা 'বাসন্তী' বলেই ডাকতেন। বসন্তকালে জন্মদিন বলে।
তবে, সে আর কে মনে রেখেছে!
এখন বেশ সুন্দর জন্মদিন পালন হয়, ওঁদের সময় এসব 'আদিখ্যেতা' বলা হতো! তাই সেভাবে স্পেশাল কিছু হয়নি কখনও। এখন বর নেই। ছেলে হয়ত জানেও না মায়ের জন্মদিন কবে! নাহলে হয়ত এবার শান্তিনিকেতন নিয়েই যেত...
ভাবতে ভাবতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল ওঁর।
ওঁদের বাড়িতে মেয়েদের জন্মদিন পালন করা হতো না কোনো এক অজ্ঞাত কারণে। তবে মা পাঁচরকম ভাজা, পায়েস বানাতেন। একুশে বিয়ে হল। কখনও লজ্জায় বলতেই পারলেন না কবে জন্মদিন। আর কেউ জিজ্ঞেস ও করেনি কখনও। যেন ওঁর জন্মই হয়নি! কলেজে টিচার্স ডে পালন হয়েছে, ফাংশান হয়েছে, কিন্তু জন্মদিন নয়। তাই সবমিলিয়ে আধার কার্ড আর ভোটার কার্ডের রেকর্ডের বাইরে 'কুড়ি মার্চ ' কিছুই নয়!
আরতি বসাক, 'হেমকান্ত স্মৃতি বিদ্যালয়ের' ইতিহাস শিক্ষিকা - একটা গোটা জন্ম জন্মদিন ছাড়াই কাটিয়ে দিলেন!
কিন্তু কেন!
সব দায়িত্ব তো পালন করেছেন ঠিকমতো। কোনো কার্পণ্য করেননি তাতে!
শুধু নিজের প্রতি ছাড়া!
ভাবনার মধ্যেই কলিংবেল বাজল।
সবিতা রান্না করতে এসেছে। এই বাড়ি ছাড়াও আরও দুটো বাড়িতে রান্নার কাজ করে ও। তাই বেজায় ব্যস্ত থাকে। তারমধ্যেই মুখ চলতে থাকে সমানে। এটা-সেটা গল্প করে।
"মাসিমা, আর তো কেউ নেই, আজ কি রান্না করব? হাল্কা-ফুল্কা কিছু করি?" যথারীতি তাড়া লাগিয়ে বলল সবিতা।
একটু থমকালেন আরতি। তারপর বললেন "সবিতা, আমাকে পাঁচরকমের ভাজা আর একটু ডাল বানিয়ে দেবে? আর খুব অসুবিধা না হলে একটু পায়েস? খুব ইচ্ছে করছে আজ..." বলেই লজ্জা লাগছে বড্ড। কিছু যদি মনে করে মেয়েটা!
"মাসিমা... আজ আপনার... জন্মদিন?"
"ওই আর কি! তবে তোমার অসুবিধা হলে..."
"মাসিমা, আপনি স্নান করে একটা নতুন শাড়ি পরুন দেখি। আর আমাকে কিছু টাকা দিন। এই ফ্ল্যাটের নিচেই তো একটা কেকের দোকান, একটা কেক নিয়ে আসি। আজ আমরাই পাট্টি করব।"
"ধ্যাত, পাগল মেয়ে!"
"হ্যাঁ, পাগলই তো! দেখুন না, কেমন পাগলামি করি আমি! আপনার জন্মদিন বলে কথা!"
কলকল করছিল সবিতা।
ভরে যাচ্ছিলেন আরতি।
এই যে ভালবাসা, এটাই তো প্রাপ্তি... আজীবনের সম্পদ!
সামনে দাঁড়ানো লাল শাড়ির সবিতা যেন তখন আস্ত পলাশ গাছ!
তাহলে তো আজ সেই ছবিটাও দেখা যায়... আর যদি রাত্রে বাইরে খেয়ে ফেরা যায়...
'কিন্তু কিন্তু' করে সবিতাকে বলতেই ও একপায়ে রাজি...
একটু পরে রিক্সায় উঠছিলেন সাদা শাড়ি আর লাল শাড়ি পরা দুজন অসমবয়সী মানুষ...আর দেখে মনে হচ্ছিল শহরে সত্যিই 'বসন্ত এসে গেছে!'
Like Reply
মাঝে মাঝে মনে হয়,

তুমি খুব ভাল প্রেমিক হতে পারতে..
হাতে হাত রাখতে পারতে...
সাদা-কালোকে রঙিন করতে পারতে...
গুমোট দিনে বাতাস হতে পারতে...
বর্ষাকালের ছাতা হতে পারতে...
মনটাকে মেলতে পারতে...
আমাকে ভালবাসতে পারতে...
আমকেও ভালবাসতে পারতে...
তুমি তো প্রেমিক হতে পারতে!
Like Reply
বাতানুকূল যন্ত্র

---------------------------------
- শোন , আর তো পারা যাচ্ছে না এবার একটা এসি না কিনলে গরমে এই ঘুপচি ফ্ল্যাটে আমি থাকব না বলে দিলাম     
গিন্নী এক মগ চা মাথার কাছের টেবিলে রেখে প্রথম অস্ত্র নিক্ষেপ করল সারা রাত গরমে হাঁসফাঁস করে ভোরের দিকে একটু ঘুমের আমেজ আসে গিন্নীর কথায় আমেজের বারোটা বেজে গেল এখুনি নিজেকে বাঁচাতে হবে বললাম
- এসি পোষার খরচ জানো ?
- তোমার মত হাড়কিপটের কাছে খরচ টা বেশি বলেই মনে হবে কিন্তু আমরা আর থাকতে পারছি না পাড়ায় সব বাড়িতে এসি আছে কেবল তুমি ব্যতিক্রম যত খরচই হোক এবার এসি লাগাতেই হবে বলে দিলাম  
আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে দুম দুম করে পা ফেলে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল বুঝলাম যুদ্ধ শুরুর আগেই পরাজিত হয়ে বসে আছি   
 সবে ঘুম থেকে উঠেছি সকালে এই এক মগ চা আর কাগজের হেডলাইনে রাজনীতির খবর পেটে গেলে তবেই পাকস্থলী ঠিকঠাক কাজ করে না হলে সারাদিনের অস্বস্তি হবে হবে অথচ হচ্ছে না সে এক বিচ্ছিরি ব্যাপার আজ বোধহয় আর হল না
জোগীরাজ থেকে গুরুজনসবাই বলেন এই ব্রাহ্ম মুহূর্ত দিনের সবচেয়ে দামী সময়   এই সময়ে একটু যোগাসন , নিদেনপক্ষে প্রাণায়াম বা ভাল মন্ত্র কিছুক্ষণ শুনলে চিত্ত শান্ত হয় বাজারে মাছ ওয়ালা বেশি দাম চাইলে রাগের বদলে ক্ষমার প্রবণতা বেশি করে প্রকাশ পায় নিজের অক্ষমতা কেযা ছেড়ে দিলামজাতীয় স্তোকবাক্যে ভুলিয়ে রাখা যায় কিন্তু আমার মত  ছাপোষা মধ্যবিত্তের সে সুযোগ নেই   
সকালে উঠে গান চালানো শুরু করেছিলাম দ্বিতীয় দিন চোখ বুজে লো ভল্যুমে ভজন শুনছিপ্রভু জী তুম চন্দন হাম.......” ফট করে শব্দ বন্ধ হয়ে গেল
- কি শুরু করলে বল তো ? পাশের বাড়ির মেয়েটার  মাধ্যমিক , সে খেয়াল আছে
যা ব্বাবা ! তেমন জোরে তো শুনছিলাম না ? আসলে ওর যা পছন্দ নয় তা বাড়িতে চলবে না কম্যুনিস্ট বাড়ির মেয়ে ইন্টার ন্যাশনাল বাজালে হয়ত আপত্তি করত না  
গরম আমারও পছন্দের কাল নয় বিশেষত: ঘাম আর ঘামাচির জ্বালায় আমি অস্থির হয়ে উঠি কিন্তু তাই বলে এসি ? আগেও নিয়ে আমাদের মধ্যে রসালাপ হয়েছে একবার তো সুর চড়ে যাওয়ায় পাড়ার অমল কাকু জানলা দিয়ে ডেকেই ফেলেছিলেন 
- কি বৌমা ? কি নিয়ে হচ্ছে ? মিষ্টি হেসে আমার বৌয়ের উত্তর 
- দেখুন না কাকাবাবু , আমাদের বাড়িতে এসি নেই বলে জামাইষষ্ঠীতে যাবে না বলছে  
মেয়েরা যে কখন কাকে কেস খাইয়ে দেয় তার ঠিক নেই কাকা আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন
- সব কি শুনছি হে ? তোমার কাছ থেকে এমন কথা আশা করি নি
কান এঁটো করা হাসি হেসে সেবার রেহাই পেয়েছিলাম কিন্তু গিন্নীর হাত থেকে এত সহজে আমার নিষ্কৃতি নেই পরের দিন কলেজ থেকে ফিরে  কোলে একটা কাগজ মোড়া বস্তু ফেলে দিল 
- নাও মুরোদ যখন নেই তখন এটা দিয়ে কাজ চালাও কাগজের মোড়ক খুলে দেখি অ্যালুমিনিয়ামের হ্যান্ডেল দেওয়া একটা প্লাস্টিকের হাত শুধু একবার বলেছিলাম 
- গো , পিঠে একটু পাউডার লাগিয়ে দেবে
তার প্রত্যুত্তরে এটা ! রাগের চোটে জিনিসটা নিয়ে পিঠে একটু জোরে ঘসতেই ছাল চামড়া উঠে গেল প্লাস্টিকের আঙুলে প্রেম নেই কি করে বুঝব ? তবে আমিও কম যাই না পরের দিনই মেঝেতে ঘসে ঘসে আঙুলগুলোকে ভোঁতা করে নিলাম এখন অনেকটা বৌয়ের হাতের এফেক্ট আসে  
যাক  এসব পারিবারিক দুঃখের কথা গিন্নীর মাথায় যখন ঢুকেছে তখন এসি কিনতেই হবে এখন চৈত্র সেল চলছে খবরের কাগজে প্রথম সোয়া দু পাতা জুড়ে শুধুই বিজ্ঞাপন কোন কাগজ বোঝাই যায় না একটা লম্বা পৌনে এক পাতা দিয়ে শুরু   এই কায়দাটা নতুন প্রথম যেদিন দিয়েছিল সেদিন ভেবেছিলাম কি রে বাবা ! ছেঁড়া কাগজ দিয়ে গেল ? তারপর বুঝলাম ওটাই কায়দা যারা খবর পড়তে ভালবাসেন  তারা জানেন লম্বা কাগজের ফালিটাকে ম্যানেজ করা কত কঠিন   
বিজ্ঞাপনে নানা রকম এসি দেওয়া আছে আমার মত আকাটের পক্ষে কোন টা ভাল বোঝা নিতান্তই অসম্ভব পাঁচজন কে জিজ্ঞাসা করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল বলে এটা ভাল তো বলে ধুর ! কারো কথা শুনিস না , ওটাই সবথেকে ভাল আজকাল টিভি দেখে হাফ বুদ্ধিজীবী হয়ে উঠেছি ঠিক করলাম যেটা সবথেকে দামি সেটাই কিনব মাসিক কিস্তির সুবিধে আছে , কোন চিন্তা নেই এই একটা ব্যাপার  মধ্যবিত্তকে বাঁচিয়ে রেখেছে আজ যদি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে বাকি ফেরৎ দিতে বলে তা হলে অধিকাংশ বাঙালির ফ্ল্যাট টিভি ফ্রিজ এসি সব চলে যাবে  
কিন্তু এসি কিনতে হলে আগে বাড়ির মিটারের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ইলেকট্রিক অফিসে আবেদন করতে হবে অন লাইনে আবেদনের সুবিধে আছে কিন্তু অসুবিধেটা আমার কম্পিউটার মুখে নিয়ে জন্মাই নি ছেলে মেয়ে অবশ্য অভ্যস্ত কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ থামিয়ে বাবাকে সাহায্য করবে তেমন ফুরসৎ কই ? অগত্যা পাড়ার ইলেক্ট্রিশিয়ান গদাই কে ধরলাম  
- তোমার লোড কত
প্রথম প্রশ্নেই মেজাজ খিচড়ে গেল আমার লোড সম্পর্কে তোর ধারণা কি রে ছোকরা ?     ছেলের সেমিস্টারের খরচ , গলদঘর্ম হয়ে অফিস থেকে ফিরে মেয়েকে টিউশনে নিয়ে যাওয়া , মার জন্য বাজার থেকে ফুল ছাড়া শুধু বেলপাতা নিয়ে আসা , সারা অঞ্চল খুঁজে তোর বৌদির কেক বানানোর জন্য স্ট্রবেরি সেন্ট কেনা , অফিসে প্রতিনিয়ত ইউনিয়ন কি প্যাঁচে ফেলবে সে চিন্তায় কাঁটা হয়ে থাকা  - আমার লোড স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা নিতে পারবেন কি না বলা শক্ত  
- ইলেকট্রিকের বিল টা দিও ওটাতে লোড লেখা আছে তার সঙ্গে ভোটার কার্ড এর এক কপি জেরক্স আর তোমার একটা পাসপোর্ট সাইজের ফটো
নাও , হয়ে গেল ! ফটো তোলাতে হবে বিকেলে সুমিতের দোকানে গিয়ে বললাম
- একটা ফটো তুলে দে  
- কি হল আবার ? কোথায় দরখাস্ত করছ
এই ফটোওয়ালাদের সব খবর জানতেই হবে একে তো এসির খরচ এবং মাসে মাসে কত বিল আসবে তাই ভেবে আধমরা হয়ে আছি , তার মধ্যে এই কৌতূহল মেজাজ বিগড়ে গেল হেসে বললাম 
- চাকরির চেষ্টা করছি ,   বিয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দেব ,    হারিয়ে গেলে তোর বৌদি কাগজে হারানো প্রাপ্তিতে দেবে       – এর কোনটাই বিশ্বাস না হলে ধরে নে মারা গেলে বছরে একবার এই ফটো ছাপিয়ে নিচে লেখা হবে  “তোমার মৃত্যুতে আমরা কষ্টে আছি বাড়ির আজেবাজে কাজগুলো করার লোক পাওয়া যাচ্ছে না
- তুমি একেবারে যা তা ! দাঁড়াও বৌদিকে বলে দেব  
- যা যা! বল গে যা আমি তোর বৌদিকে ভয় পাই নাকি ? মুখে বললেও মনে ভয় রয়ে গেল এসব ইয়ার্কি একদম পছন্দ করে না  
সপ্তাহ খানেক পরে একদিন দুপুরবেলা ইলেকট্রিক অফিস থেকে জনা চারেক লোক এসে উপস্থিত গদাই আগে থেকে বলে রাখায় অফিস যাই নি নতুন মিটার লাগাতে লাগাতে একজন বলল
- আপনার ওয়্যারিং এর অবস্থা তো খুব খারাপ এসির জন্য আলাদা করে তার টানতে হবে না হলে আগুন লেগে যেতে  পারে জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করছিল কোথায় ? এসি তে না বাড়িতে ? কিন্তু পাশেই গিন্নী দাঁড়িয়ে আছে স্মার্টলি বলল
- আপনারা আপগ্রেড করে দিয়ে যান বাকি টা গদাই করে দেবে
- উঁ ! গদাই করে দেবে ! আর টাকাটা কে দেবে ? আমি মনে মনে বলি এক এসি আমার সংসার খরচের ডিঙির তলা ফুটো করে দিয়ে চলে গেল
এরপর এসি কেনার পালা ক্লাস ফাইভের জ্ঞান নিয়ে গেছি উচ্চমাধ্যমিকের এনট্রান্স দিতে প্রথম প্রশ্নেই সব গুলিয়ে গেল
- দাদা টন
- ঠিক বলতে পারব না , তবে এমন একটা দেবেন যেন একজনই খুলে নামাতে পারে আমি ভবিষ্যতের খরচের কথা ভেবেই বলি বৌ কনুইয়ে একটা রাম চিমটি কাটল, তারপর সেলস ম্যান ছেলেটাকে মিষ্টি করে বলল
- ভাই , বারো বাই চোদ্দ ঘরে কত লাগবে ? সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র ছেলেটা আমাকে পাত্তা না দিয়ে বৌদিকে নিয়ে পড়ল  
- দেড় টন হলেই হয়ে যাবে কপার না অ্যালুমিনিয়াম ? আমি ফেকলু পার্টির মত দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকি কপার সস্তা না অ্যালুমিনিয়াম ভাগ্যিস ছেলে মেয়ে সঙ্গে আসে নি ! বাবার বোকামি তে ওরা প্রেস্টিজে পড়ে যেত অবশেষে ম্যানেজার গোছের এক ভদ্রলোক আমার অবস্থা দেখে এগিয়ে এসে জলের মত এসির ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলেন আমিও সাদা কাগজের মত সব বুঝে গেলাম  
এক শুভ দিনে ছোট হাতিতে করে এসি এলো তার দিন তিনেক পর কোম্পানি থেকে লোক এসে ফিট করে দিয়ে গেল আমি গামছা পরে ইয়াব্বড় থার্মোকোল আর প্যাকিং বাক্সটা লফটে ঢোকালাম ওটা নাকি মেয়ের প্রজেক্টের কাজে লাগবে
এখন আমার রাতের ঘুম গেছে ওরা নিশিন্তে ঘুমোয় আর আমি এসি বন্ধ করব বলে জেগে বসে থাকি রিমোট দিয়ে টাইমার লাগিয়ে নাকি বন্ধ করা যায় কিন্তু ঘুম চোখে কি টিপতে কি টিপব তার ঠিক নেই তাই সব গণ্ডগোলে না গিয়ে পাতি বাংলা পদ্ধতিতে ঘড়ি ধরে মাঝরাতে রোজ সুইচ অফ করে ফ্যান চালিয়ে দিই আপনারা হয়ত ভাবছেন রাত জেগে জেগে আমার হার্টের অসুখ হবে না , সে চিন্তা নেই কত টাকা সাশ্রয় করতে পারলাম ভেবে আমি রাত জাগার সার্থকতা খুঁজে পাই তবে কোনদিন যদি নিজে ঘুমিয়ে পড়িএই টেনশনে সুগারটা সামান্য বেড়েছে

Like Reply
পরকীয়া


ঘরের দরজাটা খুলে ত্রকটু দাড়ালো সঞ্জনা. জিৎর ফোনে ইউটিউব চলছে. ভিডিওর চরিত্র তার বৌর অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছে আর জিৎ যেভাবে হাসছে সেটাকে অট্টহাসি বলাই ভালো. আমি এসেছি, জিৎ শুনেও উত্তর দিলো না. সঞ্জনা জানে, জিৎ এখন প্যার কা পঞ্চনামার মনোলোগ চালাবে, ওকে উপলব্ধি করাবে শুধু জিৎ একা নয়, সারা পৃথীবীই মেয়েদের দ্বারা অত্যাচারিত. এইজন্যই আর্যকে এত ভালোলাগে ওর. মেয়েদের এত সম্মান করে ছেলেটা, তাই এই পরকীয়াটা চালাতে কোন অপরাধবোধ নেই ওর.
জিৎ যে প্রচন্ড স্বার্থপর তা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই সঞ্জানার. কিন্তু সেটা কাউকে বোঝানো সম্ভব না. সকাল থেকেই প্রচন্ড ব্যস্ত থাকে জিৎ কারুর বাড়ীতে প্লাম্বর এনে দেওয়া কাউকে হসপিটালে ভর্তি করা সজ্ঞানার দিকে তাকানোর কোনো সময় নেই জিৎর. সঞ্জনার বন্ধুরা যখন ফ্যামিলি ডিনার বা সিনেমা দেখার ফেসবুক ষ্ট্যাটাস দেয় জিৎ তখন ব্যস্ত পাড়ার ফুটবল টর্নামেন্টের জন্য কিন্ত কাকে বলবে এসব কথা সবার মুখে একটাই কথা জিৎর মত মানুষ হয় না. আর্যই একমাত্র ব্যতিক্রম যে বলে জিৎদা সত্যি কেমন একটা নইলে তোমার মত একটা মেয়েকে এপ্রিশিয়েট করে না
আর্যর সাথে এই সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল নববর্ষর দিন. যখন জিৎ ওর দুদিন আগে বানানো সিনেমার প্ল্যান বাতিল করে বলেছিল আজ মৌমিতার ড্রাইভার আসেনি ওর ছেলেকে ক্যারাটে ক্লাসে দিতে যেতে হবে নিজের বৌর চেয়ে কি মৌমিতার ড্রাইভারগিরি করা বেশি জরুরি প্রায় কেঁদেই ফেলেছিল সেটা নয়, কিন্তু ওই ন্যাকা সিনেমার চেয়ে একটা বাচ্চার ক্যারাটে শেখা বেশী দরকার. যুক্তি দিয়েছিল জিৎ সিনেমাটা দেখেছিল আর্যর সঙ্গে কলেজের দিনের মত জিৎর সাথে খুনসুটি করবে বলে যে কর্নার সিটটা বুক করেছিল ওটাতেই বসেছিল আর হলের অন্ধকারে আর্য যখন ওর ঠোটে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করেছিল তখন অপ্রস্তুত আর কিংকর্তব্যবিমুধ্য হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সঙ্গে একটা অদ্ভুত ভালোলাগাও ছিলো
রবিবার সকাল, সঞ্জানা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে আজ সারাদিন আর্যর সাথে কাটাবেসকাল সকাল এতো মাঞ্জা মেরে চললে কোথায়? জিজ্ঞেস করলো জিৎশপিং তুমি যাবে“ “আরে না না আজকে তো এল ক্যাসিকো“ “ সে তো জানি তুমি নড়বে না তোমার ওই বালের ক্যাসিকো খেলা ছেড়েমনে মনে খুশি হলেও দেখালো না সঞ্জনা “Not বালের ক্যাসিকোits এল ক্যাসিকো No B A L its only L|” সঞ্জনা বুঝলো ঢিলটা একদম ভিমরুলের চাকেই লেগেছেসে যেই L হোক তুমি তো আসছো না “ “না গো সপ্তাহের একমাত্র রবিবারে বলদের মত শপিং ব্যাগ নিয়ে বৌর পেছনে ঘুরতে একদম ইচ্ছে নেই আর তোমার তো মলত্যাগ করতেই দিন শেষ“ “মলত্যাগ!!!!!!!! You mean sheet.” “I mean শপিং মল ত্যাগ|” “এত অসুবিধে তো বিয়ে করলে কেন কলেজে তো একদম পায়ের তলায় বুক পেতে দিতেসঞ্জনার গলায় এবার পরিহাসতখন তো স্পিন বল করতে, আরামসে খেলতামএখন তো বাউন্সার ছাড়া কথা বোলো না একদম . ছিল bed of roses হলো game of thrones|” “ সবসময় তো নিজের এই PJ গুলোকে নিয়েই থাকো কখনো বোঝার চেষ্টা করেছো আমাকেসঞ্জনার মনে হলো এবার রেগে যাচ্ছেতোমাকে বোঝা তারচেয়ে তো chris nolans movie দেখা বেটারপায়ে পা দিয়েই ঝগড়া করে জিৎচললাম আমিআর সময় নষ্ট করে লাভ নেই ভাগ্যিস প্ল্যান করেছিল নইলে জিৎর সাথে আরেকটা রবিবার অসহ্য
"রাতে এক ছেমরি সকালে আরেক ছেমরি, পোলাডা জাত হারামি|" সঞ্জনাকে দেখে মনে মনে বিড়বিড় করে আর্যর ফ্ল্যাটের লিফটম্যান
আর্যর ফ্ল্যাটে আজ একটু অন্যরকম লাগছে ওর অন্যদিন এলেই ব্যাস্ত হয়ে পড়ে ছেলেটা সরবত করে, এসির টেম্পারেচার কমিয়ে দেয় আর আজ ল্যাপটপ নিয়েই বসে আছে কিছু নিয়ে রাগ করলো কি ছেলেটা হঠাৎ করে সঞ্জানার চোখ পড়লো আলমরির দিকে প্রচন্ড অগোছালো থাকে ছেলেটা আলমারিটা গুছিয়ে দিলে হয় আর্যর আরে কি করছো চিৎকারটা কানে না তুলে আলমারি খুলে ফেললো কিন্তু, আলমারির মধ্যে এত মেয়েদের পোশাক কেন! যেন কোনো মেয়ে এসে থাকে এখানেএসব কি?” চেঁচিয়ে উঠলো আমি তোমাকে বলতাম আজকেই আমার gf decided to move in here. আমাদের এবার এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা উচিতআর্যর গলা একদম নির্লিপ্তবেরিয়ে আসি মানে, আমি তোমাকে ভালোবাসি আর্য” “ভালোবাসা আর তুমি আজ জিৎকে ছেড়ে আমাকে, কাল আবার অন্য কাউকেআর্যর গলায় এবার তাচ্ছিল্য
মিনিট দশেক পরের কথা৷ লিফটম্যান দেখলো একটু আগে ওপরে যাওয়া ঝিনচ্যাক ম্যাডাম দুচোখ দিয়ে নায়াগ্রা জলপ্রতাপ ফেলতে ফেলতে নিচে নেমে গেল এবং লিফটের লবিতে দাড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে প্রচন্ড আশ্চর্য হয়ে বলল, “জিৎ তুমি এখানে!” “বাড়ী চলো সঞ্জু, আমি তোমাকে নিতে এসেছিকথা না বাড়িয়ে গাড়ীর দিকে হাঁটা লাগায় জিৎ বড়লোকের এই এক মজা, কে যে কার কি বোঝা যায় না, মনে মনে হাসে লিফটম্যান
গাড়ি চালাতে চালাতে পাশের সিটের দিকে তাকালো জিৎ সঞ্জনার চোখে এখনো জল চিকচিক করছেচা খাবে, গাড়ি থামাবো?” “তুমি কি আগে থেকেই জানতে?” প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে সঞ্জনাবেশ কয়েকমাস হলো, সবসময় ঘুমের মধ্যে লাভ ইউ আর্য বলোসঞ্জনার মনে হলো মাটিতে মিশে যায় আর হঠাৎ করেই ওর মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে সেই মোস্ট বিরক্তিকর কথাটাসত্যি জিৎ, তোমার মত মানুষ হয় না
স্টিয়ারিংয়ের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসে জিৎ মৌমিতার ছেলের ক্যারাটে টিচার তানিয়া আর আর্য যে এক আবাসনে থাকে সেটা জানত না আর নিজের পরকীয়া চালাতে এসে যে বউর পরকীয়া ধরতে হবে, সেটাও ভাবেনি ভালই করেছে সঞ্জনা এই পরকীয়াটা করে শুধু সঞ্জনার চোখে মহাপুরুষ হওয়াই নয়, নিজের পরকীয়া নিয়ে যে অপরাধবোধ ছিল নিজের মনে, আজ সেটা থেকেও মুক্তি পেল
 
সংগৃহীত
Like Reply
(29-03-2022, 09:23 AM)ddey333 Wrote: পোস্ট টা পড়ে, শুধু like দিয়ে চলে গেলে হবে না....একটু কিছু হলেও মতামত লিখে জানাতে হবে....

এটুকু আমার একান্ত অনুরোধ....
~~~~~~~~~~~~~~|||||~~~~~~~~~~~~~
 
SMS1 – সুপ্রভাত
SMS2 – সেম টু ইউ,বাট সরি,আপনার নাম্বারটা সেভ করা নেই বলে চিনতে পারলাম না কাইন্ডলি যদি আপনার নাম টা মেসেজ করেন
বেশ ভালো লাগলো পড়ে । মনটা হালকা হলো  Heart
❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
ফুল !



মা বললো, ফুল তো আমি করতাম। একবার সারাদিন লুকিয়ে ছিলাম খাটের তলায়। মা বাবা কাকারা খুঁজে খুঁজে হয়রান। সন্ধ্যেতে মাকড়সার জাল মেখে বেরোলাম।
     বাবা বললো, এ আর এমন কী! আমি তো একবার  কুয়োতে একটা বড়ো পাথর ফেলে "বাঁচাও" বলে বাথরুমের পেছনে লুকিয়ে পড়লাম। পাড়ার লোক পর্যন্ত জড়ো হলো। পুকুরে লোক নামলো। তারপর বেরিয়ে এলাম।  

  বিকেলে টিউশন যাচ্ছি। সঙ্গে বাবা। বাবা আগে। আমি পেছনে। অন্য গলিতে ঢুকলাম। বাবা দেখেনি। পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাঁটছি জোর কদমে। পেছনে তাকালাম। বাবা নেই। আরও পনেরো মিনিট কাটলো।
অচেনা কাকু
--কোথায় যাচ্ছ মামনি?
--হারাতে।
-- হারা বলে এখানে কোনো যায়না নেই।
বাড়ি কোথায়?
--বাড়িতে।
-- বাবার নাম?
--বাবা।
      দেখতে দেখতে আরও লোক জড়ো হলো। হৈ চৈ ব্যাপার। আমি গলা ফাটিয়ে বললাম  
--আমার মা বাবা আজ সবাইকে ফুল বানাতো। তাই আমিও এপ্রিল ফুল করছি। সত্যি সত্যি হারাই নি।

কেউ বললো পুলিশ ডাকো, কেউ বললো অ্যাম্বুলেন্স। নেতা এলো মন্ত্রী এলো, টিভির সাংবাদিক এলো। এখন ছবি তোলা হচ্ছে আমার। টিভিতেও দেখা যাচ্ছে।
     তিন ঘন্টা পর গাড়ি চেপে বাড়ি ফিরলাম। দরজায় তালা। পাশের বাড়ির কাকিমা বললো, তোকে খুঁজতে তোর মা বাবা বেরিয়েছে। এখন আমাদের বাড়ি থাক। গেছিলিস কোথায়?
বললাম, তোমরা টিভি দেখোনি নাকি? ওখানেই তো ছিলাম।  
       কাকিমা খুশি হলো। খেয়ে দেয়ে ঘুম দিলাম। কিছুক্ষন পর কাঁদতে কাঁদতে মা ছুটে এলো
--আহারে সোনা মেয়ে আমার। কোথায় চলে গেছিলিস?
--আমি তো এপ্রিল ফুল করলাম মা।
বাবা এসে পিঠ চাপড়ে  বললো
-- সাবাশ! এই না হলো আমার মেয়ে।

           ঠিক তারপর কান ধরে হ্যাঁচকা টান...
--আই বই খুলে বসে বসে ঘুমোচ্ছিস?
 দেখি, মা নয় বাবা নয় কাকিমা নয়। টিউশনের স্যার। বুদ্ধি করে বললাম, আমি সত্যি ঘুমোইনি। এপ্রিল ফুল করছিলাম।
স্যার কানটা আবার টেনে বললেন, মে মাসে তুই আমার সাথে এপ্রিল ফুল করছিস? ইয়ার্কি হচ্ছে?

   গোমড়া মুখে  বাড়ি ফিরতে মা বললো, ডান কানটা লাল কেন তোর? কানটা টনটন করে উঠলো।
বললাম, ও কিছু না মা। আজ কতো তারিখ?
      মা হাসলো। বললো, এই তো সকালেই কতো গল্প করলাম আজকের দিন নিয়ে। ফার্স্ট এপ্রিল। ভুলে গেলি? তবে ওগুলো কিন্তু সত্যি বলে ভাবিসনা আবার। বোকা বানাচ্ছিলাম। তোর বাবাও...

এবার দুটো কানই কেমন টনটন করে উঠলো। কিন্তু বাঁ কানে তো কিছু হয়নি! আর বিশ্বাস নেই কাউকে। নিশ্চই কান ব্যাটাও...[Image: 1f644.png]
[Image: 270d.png]সোমাশ্রী পাল চন্দ
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 22 Guest(s)