Posts: 751
Threads: 6
Likes Received: 1,601 in 808 posts
Likes Given: 2,170
Joined: Jan 2019
Reputation:
194
আশিশরে আশিশ,
এই বারে তুই ভালোই ফেসেছিস!
Posts: 1,218
Threads: 24
Likes Received: 10,209 in 1,175 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,769
08-11-2021, 11:02 AM
(This post was last modified: 03-02-2022, 02:19 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
।।৬১।।
মনসিজ ডায়েরী নিয়ে বসেছে।মিথ্যে বললে আত্মপ্রত্যয় নষ্ট হয়।কথাটা বেশ বেলির ব্যবহার বাচ্চাদের মত হলেও কথাগুলো গুরুগম্ভীর।সাইকোলজি অনার্স নিয়ে পড়ছে।একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে মেয়েরা অনেক দূর দেখতে পায়।মাস্তান অর্থ মাতোয়ারা।আমি জানতাম না।আমি নাকি ওর প্রেমে মাতোয়ারা।বেলি যখন শাসন করে আমার ভাল লাগে আর তখনই মন খারাপ হয়ে যায়।সামনেই পরীক্ষা সে আর কটা দিন, পরীক্ষা শেষ হলেই তালপুকুরে চলে যাবে।আর কেউ তাকে ধমকাবে না শাসন করবে না ভেবে খুব খারাপ লাগছে।
হিমানীদেবী চা নিয়ে ঢুকে কাপ নামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,কোথায় গেছিলি?
ডায়েরী রেখে বলল,বেলি ডেকেছিল।
বেলির কথা শুনলে মা কিছু বলবে জানে।হিমানী দেবী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,মেয়েটা অনেকদিন আসেনা।
--সামনে ওর পরীক্ষা।জানো মা ওর মাসীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।
--তুই ওর মাসীর বাড়ি গেছিলি?
--ও নিয়ে গেল।ভদ্রমহিলার ব্যবহার বেশ ভাল।
বেলি কোন মতলবে নিয়ে গেছিল অনুমান করার চেষ্টা করেন হিমানীদেবী।চৌধুরীবাবু কিছুতেই মেনে নেবে বলে মনে হয় না।আশা-আশঙ্কায় দুলতে থাকে মন।ঠাকুর-পো বলেছিল ওর বাবার অফিসে ঢুকিয়ে দেবে বেলির কথায় সায় দিয়ে তিনি কি ভুল করলেন।
ভীড়ের মধ্যে চঞ্চলতা দেখা যায়।অবনীশ মুখুজ্জে আশিসের বাবা আসছেন।বয়স্ক বলাই মিত্তির একটু সরে দাড়ালেন। অবনীশবাবু কথাটা আসার পথে শুনেছেন।কৃষ্ণাকে একবার আড়চোখে দেখে গটগট করে ভীড় ঠেলে বাড়ীর ভিতরে ঢুকে গেলেন।সবাই কিছু আশা করেছিল হতাশ হয়ে পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে।
বাড়ীর ভিতর ঢূকেই গর্জে উঠলেন,কোথায় গেল হারামজাদা।
আশিসের মা বিনতা ছুটে এসে ফিস ফিস করে বললেন,কি হচ্ছে কি ছেলেটাকে আজ মেরেই ফেলতো।
--অমন ছেলের মরাই ভাল।
ফুপিয়ে কেদে ফেলে বিনতা মুখুজ্জে।
--তোমার জন্য এই তোমার জন্য আজ এই অবস্থা হয়েছে।
--আহা ছেলে মানুষ একটা ভুল করে ফেলেছে,ওরা মেরে কি করেছে দেখেছো?
--হায় ভগবান শেষে এই দিন দেখতে হবে।লেখাপড়া করল না--কোনো একটা কাজ যদি--
--চেষ্টা করেনি তাতো নয়।ইচ্ছে করে কেউ ফেল করে?তোমায় কতবার বলেছি একটা ভাল মাস্টার রেখে দাও--।
--মাস্টার কি গিলিয়ে দেবে? দ্বিজেনবাবুর ছেলে দিলীপ পাস করে কি সুন্দর লেখাপড়া করছে।বংশের মুখে কালি লেপে দিল।
--কালি পরে তুলো। শোনো মাথা গরম কোরনা।ওরা তোমার ছেলেকে খুন করবে বলে মুখিয়ে আছে।তুমি বাপ হয়ে দেখবে নাতো কি পাড়া পড়শী দেখবে?এই সুলেখা বাপিকে চা দে।যাও হাত-মুখ ধুয়ে এসো।
--তোমার ছেলে কোথায়?
--ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছি,চিলে কোঠায় বসে আছে।
বিনতা নিজের মনে গজ গজ করতে থাকেন,কাল হয়েছে ঐ হাসপাতালের চাকরি। ওইতো ছাতার চাকরি,ঐখানে না গেলে কি রাক্ষুসীটা ওর মাথা এমন চিবিয়ে খেতে পারতো।সামনে মেলে দিলে কোন মানুষের মাথার ঠিক থাকে।
খেতে বসে হিমানীদেবী জিজ্ঞেস করলেন,বেলির মাসী কিছু বলেনি?
--জিজ্ঞেস করলেন দেশ কোথায় বাবা কি করেন নিজেদের বাড়ী কিনা--এই সব।
হিমানীদেবী বুঝলেন তার অনুমান ঠিক।বলার মত তো কিছু নেই,জানি না অদৃষ্টে কি আছে।
--হ্যারে মনু পাড়ায় কিছু হয়েছে লোকজন ছোটাছুটি করছিল?
না বললেও মা পরে সব জানতে পারবে ভেবে মনসিজ সংক্ষেপে মাকে যতটা বলা যায় বলল।
--এ আবার কেমন আব্দার?এভাবে বিয়ে হয় নাকি?
মা সব জানে না,মনসিজও কথা বাড়ায় না।খেয়েদেয়ে উঠে পড়ল।
মনসিজ জিকে নিয়ে বসল,বেলি আজ যেটা দিয়েছে।নিঝুম রাত স্তব্ধ চরাচর।মনসিজ গভীরভাবে ডুবে যায়।
মজা দেখার মানুষরা একে একে বাড়ি ফিরে গেছে।এখন আর কেউ নেই,কৃষ্ণা দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে।মাঝে মাঝে চাপড় দিয়ে মশা মারছে।এক সময় বোচকার উপর ঢলে পড়ল।
রাত শেষ হতে চলল বই গুছিয়ে শুয়ে পড়ল মনসিজ। মনে পড়ে আশিসদার বাড়ীর কথা।কি করছে এখন মেয়েটা।ওখানেই বসে আছে নাকি বাসায় ফিরে গেছে। অবনীশবাবু অফিস থেকে ফিরে সব শুনে কি করলেন?কাল সকালে জানা যাবে।মেয়েটার জন্য কষ্ট হয়।
রাস্তায় কুকুরদের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যায়, কৃষ্ণা চোখ মেলে কোথায় আছে বোঝার চেষ্টা করে।সম্বিত ফিরতে লজ্জিত হয়,ইস ঘুমিয়ে পড়েছিল।কুত্তা গুলো ডাকে কেন?চারপাশ চেয়ে দেখল কেউ কোথাও নেই।কৃষ্ণা দেখেছে তার শ্বশুরমশায় অফিস থেকে ফিরে আর বাড়ীর বাইরে আসেনি নি। বেচারি সিস তার জন্য খালি খালি মার খেলো।এখন কেমন আছে কে জানে। পেটের মধ্যে মোচড় অনুভব করে্তে পাশে নর্দমায় গিয়ে কাজ সেরে বোতলের জল দিয়ে শৌচ করে আবার নিজের জায়গায় এসে বসল।
ঠেলাঠেলিতে চোখ মেলে মনসিজ দেখল চায়ের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মা।চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চুমুক দিল।হিমানীদেবী ছেলের মাথার চুলে আঙুল বুলিয়ে দেন।আশিসদা কি করেছে মা জানে না।
মনসিজের ইচ্ছে হল একবার আশিসদার বাড়ি যাবে।মেয়েটার কোনো ফয়শলা হয়েছে কিনা, কি করছে মেয়েটা, বাড়ী চলে যায় নিতো?
স্নান করে জামা গায়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল।কিছুটা এগোতেই নির্মলের সঙ্গে দেখা জিজ্ঞেস করল,কোথায় যাচ্ছিস?
মনসিজ হেসে বলল,আশিসদার ওখানে।
--চল আমিও যাচ্ছি।আজকের কাগজ দেখেছিস?
--না কেন,কোনো বিশেষ খবর আছে নাকি?
--কৃষ্ণার ছবি দিয়ে খবর বেরিয়েছে।আশিসদা এটা কি করল বলতো?রীমা তো খুব রেগে গেছে বলছিল এই তোমার বন্ধু?
ওরা ঘটনাস্থলে পৌছে দেখল যথারীতি ভীড় জমে গেছে।ওদের দেখে বঙ্কিম এগিয়ে এল।ভীড়ের মধ্যে কৃষ্ণা উপুড় হয়ে কাদছে।বঙ্কিম বলল,আশিসদা ভেগেছে।
ভীড় ঠেলে মনসিজ দেখল,হাতে মুখ ঢেকে অঝোরে কাদছে বলাই মিত্তির কৃষ্ণার পিঠে হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন,কেদে কি করবে তুমি মা থানায় গিয়ে ডায়েরী করো।
বাড়ীর ভিতর থেকে অবনীশবাবু বেরিয়ে আসতে বোঝা গেল মুখজ্জেবাড়ীর দরজা-জানলা বন্ধ থাকলেও বাইরে কি ঘটছে সেদিকে কড়া নজর।অবনীশবাবু বললেন,বাঃ বলাইদা বেশ বললেন?এই না হলে প্রতিবেশি?
--আপনার মেয়ে হলে কি করতেন?
--এমন মেয়ে হলে গলা টিপে মারতাম,বিয়ে হল না তার আগেই--ছিঃ-ছিঃ-ছিঃ।
--ওকে দুষছেন কেন?ওকি একা-একা করেছে?নিজের ছেলের কথা তো বলছেন না?
--তাকে পেলে তো বলবো?
--আরে আপনারা কি আরম্ভ করলেন।
ভীড়ের মধ্যে থেকে কে ফুট কাটলো,রাতের অন্ধকারে ছেলেকে পাচার করে এখন তাকে পেলে তো মারানো হচ্ছে।
জনতা উত্তেজিত হচ্ছে দেখে অবনীশবাবু দ্রুত বাড়ীর মধ্যে সেধিয়ে গেলেন।
নির্মল বলল,আশিসদা এটা ঠিক করেনি।বিয়ে করবি না যখন ঐসব করা কেন?
--আশিসদা নেই কে বলল?
--বাড়ীর থেকেই বলেছে।
নির্মল বলল,ভিতরে লুকিয়ে রেখে গুল মারছে নাতো?
--সবাই বাড়ীর ভিতর গিয়ে খুজে এসেছে কোথাও নেই।
--তাহলে সত্যি পালিয়েছে।
বঙ্কিম বলল,আমার মনে হয় কোনো আত্মীয়ের বাড়ী শেল্টার নিয়েছে।
পুলিশ ভ্যান আসতে দেখে সবাই তটস্থ হয়।পুলিশ কেন?তাহলে অবনীশবাবুর কাজ এরকম ফিস ফাস কথা চলতে থাকে।পুলিশ ভ্যান থেকে একজন অফিসার নেমে বলল,বাড়ীর সামনে অযথা ভীড় করবেন না যান যান।
বলাই মিত্তির এগিয়ে গিয়ে বললেন,স্যার এই মেয়েটী একটা ডায়েরী করতে চায়।
--থানায় আসুন,আমি কি কাগজ পত্তর নিয়ে ঘুরে বেড়াই?
--আপনার ভ্যানে উঠবো?
অফিসার একবার আপাদ মস্তক দেখে বললেন,আপনি কে?
--আমি এই পাড়াতেই থাকি,আমার নাম বলাই মিত্র।অবসর প্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার--
--ঠিক আছে ঠিক আছে উঠুন।
বলাই মিত্তির কৃষ্ণাকে নিয়ে ভ্যানে উঠে বসলেন।এক রাশ ধোয়া ছেড়ে ভ্যান চলে গেল।
মনসিজ জিজ্ঞেস করল,ঐ ভদ্রলোক কে রে?
--কানুদার জ্যাঠা।খুব ভাল লোক।বঙ্কিম বলল।
এত ভীড়ের মধ্যে এরকম এক-আধজন আছে বলেই সমাজটা টিকে আছে।মনসিজ আশিসদার বাড়ীর দিকে তাকিয়ে দেখল উপর নীচ সব জানলা বন্ধ।এইভাবে পালিয়ে পার পাওয়া যাবে?মেয়েটি ঐ অবস্থায় কি করবে এখন?প্রশ্নগুলো মাথায় নিয়ে বাড়ীর দিকে পা বাড়ায়।
The following 18 users Like kumdev's post:18 users Like kumdev's post
• a-man, Badmas boy, bad_boy, Biddut Roy, Bondhon Dhali, buddy12, ddey333, Lajuklata, Pocha, ppbhattadt, raikamol, raja05, Rudroneel, S.K.P, Tiger, tuhin009, Voboghure, মাগিখোর
Posts: 18,202
Threads: 471
Likes Received: 65,645 in 27,694 posts
Likes Given: 23,815
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,266
বেলি যেন তালপুকুর ফেরত না যায় ...
বেথুন কলেজ থেকেই মাস্টার্স নিয়ে আরো পড়াশোনা করলে কি ক্ষতি ??
•
Posts: 1,227
Threads: 0
Likes Received: 976 in 706 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
•
Posts: 17
Threads: 1
Likes Received: 22 in 4 posts
Likes Given: 0
Joined: Oct 2021
Reputation:
2
(01-08-2021, 09:03 PM)kumdev Wrote: ![[Image: 1608117170_5fd9ebb20ad0d_1.jpg]](https://ci6.googleusercontent.com/proxy/BDRLu9yAsqIOLb5ZotYFaZKWVPSpNtX-A4TlNQDfHZ2ToIv5REzVCwVef4VYmdJhYopFCPXNQ4Q9-pjcFoL3cOSO7QeMf6AtckEpBQWl86P7TnNHmoXXbnWZ_uQrBioSLCE=s0-d-e1-ft#https://assets.telegraphindia.com/abp/2015/12/21/1608117170_5fd9ebb20ad0d_1.jpg)
ছাইচাপা আগুন
কামদেব
মাকালীর দিব্যি দিয়ে বলেছি এ্যালোপ্যাথি কবিরাজি ওষুধ কিম্বা তেল মলম মালিশ কোনো কিছু নয়-- বন্ধুরা সঙ্গে সঙ্গে বলবে বুইচি বুইচি জন্ম থেকেই এরকম।আমি জানি ওরা কেউ আমার কথা বিশ্বাস করেনা।আসল কথাটাই আপনাদের বলা হয়নি।একদিন খেলার মাঠ থেকে ফিরছি,আশিস একটা পাচিলের ধারে নর্দমায় হিসি করতে দাঁড়িয়ে গেল।যা হয় একজনকে দেখলে সবারই হিসি পেয়ে যায়।একে একে সবাই দাঁড়িয়ে পড়ি।হিসি প্রায় শেষ ধোন ধরে ঝাকুনি দিয়ে প্যাণ্টে ঢোকাতে যাব অমনি বঙ্কা ভুত দেখার মত চমকে উঠে বলল,দ্যাখ দ্যাখ শালার গজালখানা।
সেদিন থেকে প্রশ্ন কি করে করলি রে?মালিশ টালিশ করিস নাকি?যত বলি কোনো ওষুধ নয় জন্ম থেকেই--।কে শোনে কার কথা,আড়ালে আবডালে আমাকে বলে গজু।গজাল থেকে গজু।আমার আসল নাম মনোসিজ মজুমদার।কলকাতার সীমানায় সিথি অঞ্চলে এক পাড়ায় বছর দুয়েক হয়ে গেল।আগে থাকতাম চাকদায় ভাড়াবাড়ীতে,এখানে ফ্লাট কিনে এসেছি।নতুন এসেছি কারো সঙ্গে আলাপ নেই।কলেজে যাই আসি।আশিসদারা রকে বসে আড্ডা দিত যাতায়াতের পথে দেখতাম।রক পেরোতে গেলেই কানে আসতো,"উত্তম কুমার।"ঘুরে দাড়াতেই ওরা মুখ ফিরিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপে মশগুল হয়ে যেতো।দেখতে আমি সুদর্শন মাথায় একরাশ চুল সে জন্য সম্ভবত "উত্তম কুমার" বলে টিটকারি দিত।বেশ কয়েকদিন চলছিল এরকম।ভাবছি কিছু একটা করা দরকার।একদিন কলেজ থেকে ফিরছি পথে বঙ্কার সঙ্গে দেখা।আমাকে দেখে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিল।আমি ডাকলাম,এই ভাই শোনো।
অবাক হবার ভান করে বঙ্কা বলল,আমাকে বলছেন?
--উত্তম কুমার কে?
--আমি কিছু বলিনি।আমাকে কেন বলছেন--।
--শোনো আমার নাম মনোসিজ।আপনার বন্ধুদের বলে দেবেন যদি এক বাপের ব্যাটা হয় যেন আমার নাম ধরে বলে?
তারপর দিন দুই কেটে গেছে একদিন রকের কাছে আসতেই ওরা আমাকে ঘিরে ধরল।
--আপনি আমাদের বাপ তুলেছেন কেন?আশিসদা জিজ্ঞেস করল।
--আমি কারো বাপ তুলিনি।বলেছি কেউ যদি এক বাপের ব্যাটা হয় আমাকে কিছু বললে যেন আমার নাম ধরে বলে।
--আপনাকে বলে কেন মনে হল?দিলীপ বলল।
দিলীপ নিজেকে একটু হিরো ভাবে।আমি বললাম,দ্যাখো ভাই আমিও ধান ছাড়িয়ে চাল দিয়ে ভাত খাই।বেশি বোঝাতে এসোনা।
--কেন কি করবেন?দিলীপ রুখে দাড়ালো।
--নাম ধরে বলো দ্যাখো কি করি।পাল্টা জবাব দিলাম।
মারামারি লাগে আরকি আশিসদা বলল,এই দিলীপ কি হচ্ছে কি?কিছু মনে করবেন না ভাই।কলেজ থেকে ফিরছেন?
--হ্যা কলেজ থেকে ফিরছি।
--কলেজ আর বাড়ী?মাঝে মাঝে আমাদের ঠেকে আসতে পারেন তো?
এভাবেই আমার এ পাড়ায় মেশা।আমিও রকের আড্ডার শরিক হয়ে গেলাম।ওদের মাধ্যমে পাড়ার অনেকের সঙ্গে আলাপ হল।তাতাইদা রবিদা এরা আমাদের সিনিয়ার।পাড়ার সবাই সবাইকে চেনে।তাতাইদার বউ ইলিনা বৌদি খুব মাই ডিয়ার। কম্পিউটার ইঞ্জিনীয়ার, অদ্ভুতভাবে আলাপ হয়েছিল।সকালে কলেজ যাই বিকেলে রকে আড্ডা কাটছিল বেশ।একদিন জোর বিতর্ক শুরু হল ফিল্ম নিয়ে।নবাগত জিৎ আর প্রসেনজিৎকে নিয়ে আলোচনা--কে বড় অভিনেতা। আমি চুপচাপ শুনছি।তর্কের কোনো মাথা মুণ্ডূ নেই।রাস্তা দিয়ে লোকজন রকের দিকে তাকাতে তাকাতে যাচ্ছে।এমন সময় বঙ্কা বলল,শুভ তোর মাল আসছে।
একটু দূর থেকে একটি মেয়ে সালোয়ার কামিজ পরণে উদাসভাবে হাটতে হাটতে আসছে।শুভ বলল,ভদ্রভাবে কথা বলতে জানিস না?
--তবে কি লাভার বলবো?
--কেন তুই ওর নাম জানিস না?
--স্যরি বাবা ভুল হয়ে গেছে।তুই যা এসে গেছে।
মেয়েটি ততক্ষনে রক পেরিয়ে গেছে।শুভ দ্রুত দূরত্ব বাচিয়ে মেয়েটির পিছু নেয়।পরে জানলাম পাড়ার বাইরে গিয়ে ওরা মিলিত হবে।
--বঙ্কা তুই একদিন ঝাড় খেয়ে যাবি।আশিস বকাবকি করল বঙ্কাকে।তুই শিউলিকে চিনিস না?
--বললাম তো ভুল হয়ে গেছে।
--ভুল হয়ে গেছে বললে হবে?আমি হলে এতক্ষনে ক্যালাকেলি শুরু হয়ে যেতো।চাদু বলল।
এদের প্রায় সবারই প্রেমিকা আছে।যার নেই সেও একটা মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে।আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে বঙ্কা বলল,কিরে মনা তোর প্রেমিকা নেই?
লাজুক মুখে হাসলাম।বঙ্কা বলল,এমন মাগী পটানো চেহারা এখনো জোটাতে পারলি না?
-- দেখলে আশিসদা মুখের ভাষা শুনলে?মাগী পটানো কিরে?শঙ্কর বলল।
--এই জন্য তো ওর কপালে কেউ জোটেনি।আশিসদা বিজ্ঞের মত বলে।
--ইচ্ছে করলেই তুড়ি দিয়ে বঙ্কিম সাহার যে কোনো সময় প্রেমিকা জোটাতে সময় লাগবে না।
সবাই হো-হো করে হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।আমিও হাসি চাপতে পারিনা।
আমার চেহারা কেমন জানিনা তবে প্রেম আমার কপালে নেই।মেয়েদের সামনে কেমন আড়ষ্ট হয়ে যাই,ঘামতে থাকি।কোনো মেয়ে যদি লাজলজ্জার মাথা খেয়ে জোর জবরদস্তি আমার সঙ্গে প্রেম করে তাহলে অবশ্য আলাদা।কখন কি বলা উচিত বুঝতে পারলেও মুখ ফুটে সময় কালে বলতে পারিনা।চাকদহের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল।
বাবা ভোরবেলা লরিতে মাল পত্তর নিয়ে চলে গেছে।খেয়ে দেয়ে মাকে নিয়ে বেরোচ্ছি,আমরা ট্রেনে যাব।বাবা দমদম স্টেশনে অপেক্ষা করবে।রিক্সায় যেতে যেতে দেখলাম দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে করুণ চোখে আমাকে দেখছে বেলি।জানিনা একে প্রেম বলে কিনা।পুরানো পাড়া ছেড়ে চলে যাচ্ছি আমার মনের অবস্থাও ভাল নয়।জ্ঞান হবার পর থেকে যে পরিবেশে বড় হয়েছি রাতারাতি তা ছেড়ে চলে যে কি কষ্টের বলে বোঝাতে পারবো না। আমার জন্য পাড়া ছাড়তে হল, সঙ্গেদোষে আমি খারাপ হয়ে যাচ্ছি। কেলো বিশেরাও দূর থেকে অসহায় দৃষ্টি মেলে লক্ষ্য করছিল দেখেছি।মনে মনে বলি বিদায় তালপুকুর।
বিশেদের সঙ্গে মিশলেও ওদের মত আমার কোনো নেশা নেই।আমি লেখাপড়া করি ভদ্রলোকের ছেলে সেজন্য কেলোরা আমাকে গুরু বলে সম্বোধন করে সমীহের চোখে দেখে।বিজন চৌধুরী অঞ্চলের খ্যাতনামা এ্যাডভোকেট।প্রচুর আয় শুনেছি জজ হবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন আয় কমে যাবার জন্য।ওর দুই ছেলে মেয়ে বড় প্রদোষদা ডাক্তারী পড়ে ছোট বেলি কলেজে ওর নাম প্রজ্ঞা।
অভিধানে দেখেছি "প্রজ্ঞা" শব্দের অর্থ জ্ঞানী।কথাবার্তায় বেলি অন্য রকম।একদিন একটা মজার ঘটনার কথা বলি।বেলি কলেজ থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ফিরছে।রাস্তার কটা চ্যাংড়া ছেলে পিছন থেকে বলছে,বেলি আয় একদান খেলি।পড়বি তো পড় একেবারে আমার সামনে।ছেলেটা কলার চেপে বললাম,আমার সঙ্গে একদান খ্যাল।
আকস্মিক আক্রমণে ছেলেটী হতচকিত,হাত জোড় করে বলল,ভুল হয়ে গেছে আর বলব না।
দূর থেকে বেলি আর ওর বন্ধুরা পিছন ফিরে দেখছে।নিজেকে বেশ হিরো-হিরো মনে হল।ছেলেটা বেশ ভয় পেয়ে গেছে।এই ঘটনার কয়েকদিন পর আমরা বটতলায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছি।বিশে বলল,গুরু মনে হয় তোমাকে ডাকছে।
পিছন ফিরে দেখে রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে বেলি।চোখাচুখি হতেই হাত নেড়ে ইশারা করে ডাকে।বুকের মধ্যে ধড়াস করে ওঠে আবার কি হল?আমি আসছি বলে রাস্তা পার হয়ে ওর কাছে যেতে বলল,ওদিকে চল কথা আছে।
বেলি হাটতে থাকে।আমি বিশেদের দিকে তাকিয়ে ওর পিছু পিছু হাটতে থাকি।পুচকে মেয়ে একটা গার্ডিয়ান সুলভ ভাব।একটা ফাকা জায়গায় গিয়ে বলল,বড় মস্তান হয়ে গেছিস?
--মস্তানীর কি করলাম?
--ঐ ছেলেগুলো আমাকে টণ্ট করেছে তাতে তোর এত জ্বালা কেন?
মনে পড়ল কদিন আগের কথা।যেচে কারও ভাল করা ঠিক নয়।
--কি রে আমি তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করছি।
--শুনছি তো।
--অন্যদিকে তাকিয়ে আছিস কেন?
--অন্যদিকে তাকালেও তোমাকে দেখতে পাচ্ছি।
বেলির মুখে হাসি ফোটে সাহস করে বললাম,ওরা অসভ্যতা করছিল তাই।
--কেলো বিশে এরা খুব সভ্য?
--ওদের কথা কেন আসছে?
--আমার দিকে তাকিয়ে কথা বল।জানিস তোর জন্য বন্ধুরা আমাকে ক্ষ্যাপাচ্ছিল।
--যা বাব্বা এতে ক্ষ্যাপাবার কি হল?
--তুই কি আমার লাভার?
আমার কান লাল হয়ে যায়,কিসের মধ্যে কি?
--ওদের সঙ্গ ত্যাগ না করলে প্রজ্ঞা চৌধুরীর কথা স্বপ্নেও ভাববি না।
--তোমার কথা শেষ হয়েছে?
--খুব তাড়া দেখছি,যা ভাগ।
দু-পা যেতেই পিছন থেকে ডাকে,এ্যাই শোন।
পিছন ফিরতে বলল,তোকে যা বললাম ওদের কিচ্ছু বলবি না।
উফস ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো।আডায় ফিরতে ওরা জিজ্ঞেস করল,কি বলছিল গুরু?
--ফালতু।
--গুরু উকিলবাবুর মেয়ের নজর তোমার উপর।বিশে চোখ মটকে বলল।
--কেন আমি কি করেছি?
--তুমি না গুরু--।
কেলোদের কোনো কথা বললাম না।জানতে পারলে আবার ধরবে।বিশের কথায় গুরুত্ব দিলাম না।কোথায় বিজন চৌধুরী আর কোথায় আমি?
তাল্পুকুরের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে, কেলো বিশে প্রজ্ঞা সব ছেড়ে ছুড়ে চলে এসেছি।প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হলেও নতুন বন্ধু বান্ধব নতুন পরিবেশের আড়ালে সব চাপা পড়ে গেছে।গাছের ডাল ছেটে দিলে আবার নতুন পাতায় ভরে যায় গাছের ডাল।
বাইরে থেকে খাবার এনেছে ইলিনা তাই রান্না ঘরে ঢোকেনি।তাতাই এলে মাইক্রোভেনে গরম করে নেবে।সোফায় হেলান দিয়ে একটা সিগারেট ধরালো।ব্যাঙ্ক থেকে সোজা বাড়ী আসবে না আড্ডা মেরে রাত করে ফেরার অভ্যেস।তাতাইয়ের ব্যাঙ্কে ইলিনার এ্যাকাউণ্ট ছিল সেই সূত্রে তাতাইয়ের সঙ্গে আলাপ।একটা ব্যাপারে তাতাই খুব সাহায্য করেছিল।আলাপ থেকে ঘনিষ্ঠতা।কিছুটা ইলিনার আগ্রহে ওদের বিয়ে হয়।তখন কি জানতো তাতাইয়ের ঐটা কতটুকু।অল্পেতে হাপিয়ে যায় তিন-চার মিনিটের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে যায়। মুখে না বললেও ইলিনা বোঝে তাতাইয়ের মনে আক্ষেপ।পাচ বছর বিয়ে হয়েছে প্রায় প্রতিদিনই মিলিত হয় কিন্তু সন্তান না এলে কি করবে।ডাক্তার দেখাবার কথা বললেও এড়িয়ে যায়।চোদার সময় বলেছে কি ব্যাঙের মুতের দু-এক ফোটা পড়ে।সেজন্যই হয়তো ভাবে তারই দিকে খামতি। আসবার পথে গাড়ী থেকে দেখেছে রকে জমজমাটি আড্ডা।ওরা এলে বেশ সময় কেটে যায়।আশিস যা করেছে ইলিনার সেটা অস্বাভাবিক মনে হয়না।নিরাপদ পরিবেশ ওকে প্ররোচিত করেছে। সিগারেটের টুকরোটা জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে বিছানায় চিত হয়ে মোবাইলে teen mature sex লিখে সার্চ করতেই বেরিয়ে এল।
ছেলেটির ডিক দেখে ইলিনার চোখ চকচক করে ওঠে।মহিলার সোনায় মুখ রেখে চুষছে।গুদের মধ্যে শুরশুর করে ওঠে।তাতাইয়ের লিঙ্গ ইঞ্চি চারেক হবে।মহিলা দু-পা মেলে দিয়ে ছটফট করতে থাকে। ছেলেগুলোর লিঙ্গ দেখে অবাক হয়।সবারই বেশ বড়।রাত বাড়তে থাকে।বাইরে মনে হল কলিং বেল বাজল।ইলিনা ঘড়ি দেখল দশটার ঘর পেরিয়ে গেছে ঘড়ির কাটা।তাতাই ফিরল মনে হয়।তাতাইকে পর্ণ দেখার ব্যাপারটা গোপন করে গেছে।মোবাইল অফ করে উঠে দরজা খুলতে গেল।
lekha r modye chobi ki kore dhokate hy jante chai
•
Posts: 1,599
Threads: 1
Likes Received: 1,567 in 988 posts
Likes Given: 5,357
Joined: Jan 2019
Reputation:
201
কেন জানি না, আশিসের জন্য আমার সেরকম
কোনো কষ্ট হচ্ছে না। সে যা করেছে তার দায়িত্ব তো তারই
নেওয়া উচিত।
হিমানী দেবীর মায়ের মন, মনের ব্যাপারে সব সময়েই
আশঙ্কাগ্রস্ত। বেলির বাবা কি রাজি হবেন ?
রেপু দিলাম। সাথে আছি দাদা।
•
Posts: 666
Threads: 0
Likes Received: 733 in 436 posts
Likes Given: 1,167
Joined: Mar 2021
Reputation:
65
কামদেব দা এই আপডেট টা খুব বাস্তব সম্মত লিখেছেন। আশিসের মতো অনেক মানুষ আছে যারা মজা করে কেটে পড়ে। এদের রামক্যালানি দেওয়া দরকার।
PROUD TO BE KAAFIR
Posts: 10
Threads: 0
Likes Received: 13 in 10 posts
Likes Given: 0
Joined: Nov 2021
Reputation:
1
ভালোর কথা বলো,
মনকে নিয়ে চলো ।
Posts: 163
Threads: 0
Likes Received: 190 in 128 posts
Likes Given: 10
Joined: Sep 2021
Reputation:
5
এইতো দারুণ চলছে,
কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে ।
তোমারেই চেয়েছি,
শতরূপে শতবার ,
নিয়মে অনিয়মে ।
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,594 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
সত্যি এতো লেখকের ভিড়ের মধ্যো কামদেব এর মতো এক-আধজন লেখক আছে বলেই ফোরমটা টিকে আছে।,,,, প্রমাণ ও ভালোবাসা রইলো ।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 780
Threads: 0
Likes Received: 1,594 in 922 posts
Likes Given: 1,444
Joined: Jan 2021
Reputation:
188
আশিসের কি হবে না হবে সেটা ব্যাপার না হলেও মনের কি হবে সেটাই আসল ব্যাপার। বেলি কি পারবে তার বাবার সম্মুখে ভালোবাসার আবদার নিয়ে দাঁড়াতে?
Posts: 61
Threads: 0
Likes Received: 203 in 85 posts
Likes Given: 486
Joined: Jul 2021
Reputation:
41
কৃষ্ণা ধর্ণা দিয়ে কি পেতে চায়। বিয়ের সার্টিফিকেট? তারপর কিন্তু সারা জীবনের জন্যে হতাশা অপেক্ষা করে আছে।
Posts: 1,599
Threads: 1
Likes Received: 1,567 in 988 posts
Likes Given: 5,357
Joined: Jan 2019
Reputation:
201
(08-11-2021, 06:50 PM)Tilottama Wrote: কৃষ্ণা ধর্ণা দিয়ে কি পেতে চায়। বিয়ের সার্টিফিকেট? তারপর কিন্তু সারা জীবনের জন্যে হতাশা অপেক্ষা করে আছে।
কৃৃৃষ্ণার একজন ন্যালাখ্যাপা বর (শিখন্ডি) দরকার ।
সেই পোস্টের জন্য আশিস যোগ্য ছেলে ।
Posts: 6
Threads: 0
Likes Received: 1 in 1 posts
Likes Given: 78
Joined: May 2020
Reputation:
0
(08-11-2021, 11:02 AM)kumdev da nice update sathe achi, chaliyeJan. Wrote: ।।৬১।।
মনসিজ ডায়েরী নিয়ে বসেছে।মিথ্যে বললে আত্মপ্রত্যয় নষ্ট হয়।কথাটা বেশ বেলির ব্যবহার বাচ্চাদের মত হলেও কথাগুলো গুরুগম্ভীর।সাইকোলজি অনার্স নিয়ে পড়ছে।একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে মেয়েরা অনেক দূর দেখতে পায়।মাস্তান অর্থ মাতোয়ারা।আমি জানতাম না।আমি নাকি ওর প্রেমে মাতোয়ারা।বেলি যখন শাসন করে আমার ভাল লাগে আর তখনই মন খারাপ হয়ে যায়।সামনেই পরীক্ষা সে আর কটা দিন, পরীক্ষা শেষ হলেই তালপুকুরে চলে যাবে।আর কেউ তাকে ধমকাবে না শাসন করবে না ভেবে খুব খারাপ লাগছে।
হিমানীদেবী চা নিয়ে ঢুকে কাপ নামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,কোথায় গেছিলি?
ডায়েরী রেখে বলল,বেলি ডেকেছিল।
বেলির কথা শুনলে মা কিছু বলবে জানে।হিমানী দেবী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,মেয়েটা অনেকদিন আসেনা।
--সামনে ওর পরীক্ষা।জানো মা ওর মাসীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।
--তুই ওর মাসীর বাড়ি গেছিলি?
--ও নিয়ে গেল।ভদ্রমহিলার ব্যবহার বেশ ভাল।
বেলি কোন মতলবে নিয়ে গেছিল অনুমান করার চেষ্টা করেন হিমানীদেবী।চৌধুরীবাবু কিছুতেই মেনে নেবে বলে মনে হয় না।আশা-আশঙ্কায় দুলতে থাকে মন।ঠাকুর-পো বলেছিল ওর বাবার অফিসে ঢুকিয়ে দেবে বেলির কথায় সায় দিয়ে তিনি কি ভুল করলেন।
ভীড়ের মধ্যে চঞ্চলতা দেখা যায়।অবনীশ মুখুজ্জে আশিসের বাবা আসছেন।বয়স্ক বলাই মিত্তির একটু সরে দাড়ালেন। অবনীশবাবু কথাটা আসার পথে শুনেছেন।কৃষ্ণাকে একবার আড়চোখে দেখে গটগট করে ভীড় ঠেলে বাড়ীর ভিতরে ঢুকে গেলেন।সবাই কিছু আশা করেছিল হতাশ হয়ে পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে।
বাড়ীর ভিতর ঢূকেই গর্জে উঠলেন,কোথায় গেল হারামজাদা।
আশিসের মা বিনতা ছুটে এসে ফিস ফিস করে বললেন,কি হচ্ছে কি ছেলেটাকে আজ মেরেই ফেলতো।
--অমন ছেলের মরাই ভাল।
ফুপিয়ে কেদে ফেলে বিনতা মুখুজ্জে।
--তোমার জন্য এই তোমার জন্য আজ এই অবস্থা হয়েছে।
--আহা ছেলে মানুষ একটা ভুল করে ফেলেছে,ওরা মেরে কি করেছে দেখেছো?
--হায় ভগবান শেষে এই দিন দেখতে হবে।লেখাপড়া করল না--কোনো একটা কাজ যদি--
--চেষ্টা করেনি তাতো নয়।ইচ্ছে করে কেউ ফেল করে?তোমায় কতবার বলেছি একটা ভাল মাস্টার রেখে দাও--।
--মাস্টার কি গিলিয়ে দেবে? দ্বিজেনবাবুর ছেলে দিলীপ পাস করে কি সুন্দর লেখাপড়া করছে।বংশের মুখে কালি লেপে দিল।
--কালি পরে তুলো। শোনো মাথা গরম কোরনা।ওরা তোমার ছেলেকে খুন করবে বলে মুখিয়ে আছে।তুমি বাপ হয়ে দেখবে নাতো কি পাড়া পড়শী দেখবে?এই সুলেখা বাপিকে চা দে।যাও হাত-মুখ ধুয়ে এসো।
--তোমার ছেলে কোথায়?
--ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছি,চিলে কোঠায় বসে আছে।
বিনতা নিজের মনে গজ গজ করতে থাকেন,কাল হয়েছে ঐ হাসপাতালের চাকরি। ওইতো ছাতার চাকরি,ঐখানে না গেলে কি রাক্ষুসীটা ওর মাথা এমন চিবিয়ে খেতে পারতো।সামনে মেলে দিলে কোন মানুষের মাথার ঠিক থাকে।
খেতে বসে হিমানীদেবী জিজ্ঞেস করলেন,বেলির মাসী কিছু বলেনি?
--জিজ্ঞেস করলেন দেশ কোথায় বাবা কি করেন নিজেদের বাড়ী কিনা--এই সব।
হিমানীদেবী বুঝলেন তার অনুমান ঠিক।বলার মত তো কিছু নেই,জানি না অদৃষ্টে কি আছে।
--হ্যারে মনু পাড়ায় কিছু হয়েছে লোকজন ছোটাছুটি করছিল?
না বললেও মা পরে সব জানতে পারবে ভেবে মনসিজ সংক্ষেপে মাকে যতটা বলা যায় বলল।
--এ আবার কেমন আব্দার?এভাবে বিয়ে হয় নাকি?
মা সব জানে না,মনসিজও কথা বাড়ায় না।খেয়েদেয়ে উঠে পড়ল।
মনসিজ জিকে নিয়ে বসল,বেলি আজ যেটা দিয়েছে।নিঝুম রাত স্তব্ধ চরাচর।মনসিজ গভীরভাবে ডুবে যায়।
মজা দেখার মানুষরা একে একে বাড়ি ফিরে গেছে।এখন আর কেউ নেই,কৃষ্ণা দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে।মাঝে মাঝে চাপড় দিয়ে মশা মারছে।এক সময় বোচকার উপর ঢলে পড়ল।
রাত শেষ হতে চলল বই গুছিয়ে শুয়ে পড়ল মনসিজ। মনে পড়ে আশিসদার বাড়ীর কথা।কি করছে এখন মেয়েটা।ওখানেই বসে আছে নাকি বাসায় ফিরে গেছে। অবনীশবাবু অফিস থেকে ফিরে সব শুনে কি করলেন?কাল সকালে জানা যাবে।মেয়েটার জন্য কষ্ট হয়।
রাস্তায় কুকুরদের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যায়, কৃষ্ণা চোখ মেলে কোথায় আছে বোঝার চেষ্টা করে।সম্বিত ফিরতে লজ্জিত হয়,ইস ঘুমিয়ে পড়েছিল।কুত্তা গুলো ডাকে কেন?চারপাশ চেয়ে দেখল কেউ কোথাও নেই।কৃষ্ণা দেখেছে তার শ্বশুরমশায় অফিস থেকে ফিরে আর বাড়ীর বাইরে আসেনি নি। বেচারি সিস তার জন্য খালি খালি মার খেলো।এখন কেমন আছে কে জানে। পেটের মধ্যে মোচড় অনুভব করে্তে পাশে নর্দমায় গিয়ে কাজ সেরে বোতলের জল দিয়ে শৌচ করে আবার নিজের জায়গায় এসে বসল।
ঠেলাঠেলিতে চোখ মেলে মনসিজ দেখল চায়ের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মা।চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চুমুক দিল।হিমানীদেবী ছেলের মাথার চুলে আঙুল বুলিয়ে দেন।আশিসদা কি করেছে মা জানে না।
মনসিজের ইচ্ছে হল একবার আশিসদার বাড়ি যাবে।মেয়েটার কোনো ফয়শলা হয়েছে কিনা, কি করছে মেয়েটা, বাড়ী চলে যায় নিতো?
স্নান করে জামা গায়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল।কিছুটা এগোতেই নির্মলের সঙ্গে দেখা জিজ্ঞেস করল,কোথায় যাচ্ছিস?
মনসিজ হেসে বলল,আশিসদার ওখানে।
--চল আমিও যাচ্ছি।আজকের কাগজ দেখেছিস?
--না কেন,কোনো বিশেষ খবর আছে নাকি?
--কৃষ্ণার ছবি দিয়ে খবর বেরিয়েছে।আশিসদা এটা কি করল বলতো?যুই তো খুব রেগে গেছে বলছিল এই তোমার বন্ধু?
ওরা ঘটনাস্থলে পৌছে দেখল যথারীতি ভীড় জমে গেছে।ওদের দেখে বঙ্কিম এগিয়ে এল।ভীড়ের মধ্যে কৃষ্ণা উপুড় হয়ে কাদছে।বঙ্কিম বলল,আশিসদা ভেগেছে।
ভীড় ঠেলে মনসিজ দেখল,হাতে মুখ ঢেকে অঝোরে কাদছে বলাই মিত্তির কৃষ্ণার পিঠে হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন,কেদে কি করবে তুমি মা থানায় গিয়ে ডায়েরী করো।
বাড়ীর ভিতর থেকে অবনীশবাবু বেরিয়ে আসতে বোঝা গেল মুখজ্জেবাড়ীর দরজা-জানলা বন্ধ থাকলেও বাইরে কি ঘটছে সেদিকে কড়া নজর।অবনীশবাবু বললেন,বাঃ বলাইদা বেশ বললেন?এই না হলে প্রতিবেশি?
--আপনার মেয়ে হলে কি করতেন?
--এমন মেয়ে হলে গলা টিপে মারতাম,বিয়ে হল না তার আগেই--ছিঃ-ছিঃ-ছিঃ।
--ওকে দুষছেন কেন?ওকি একা-একা করেছে?নিজের ছেলের কথা তো বলছেন না?
--তাকে পেলে তো বলবো?
--আরে আপনারা কি আরম্ভ করলেন।
ভীড়ের মধ্যে থেকে কে ফুট কাটলো,রাতের অন্ধকারে ছেলেকে পাচার করে এখন তাকে পেলে তো মারানো হচ্ছে।
জনতা উত্তেজিত হচ্ছে দেখে অবনীশবাবু দ্রুত বাড়ীর মধ্যে সেধিয়ে গেলেন।
নির্মল বলল,আশিসদা এটা ঠিক করেনি।বিয়ে করবি না যখন ঐসব করা কেন?
--আশিসদা নেই কে বলল?
--বাড়ীর থেকেই বলেছে।
নির্মল বলল,ভিতরে লুকিয়ে রেখে গুল মারছে নাতো?
--সবাই বাড়ীর ভিতর গিয়ে খুজে এসেছে কোথাও নেই।
--তাহলে সত্যি পালিয়েছে।
বঙ্কিম বলল,আমার মনে হয় কোনো আত্মীয়ের বাড়ী শেল্টার নিয়েছে।
পুলিশ ভ্যান আসতে দেখে সবাই তটস্থ হয়।পুলিশ কেন?তাহলে অবনীশবাবুর কাজ এরকম ফিস ফাস কথা চলতে থাকে।পুলিশ ভ্যান থেকে একজন অফিসার নেমে বলল,বাড়ীর সামনে অযথা ভীড় করবেন না যান যান।
বলাই মিত্তির এগিয়ে গিয়ে বললেন,স্যার এই মেয়েটী একটা ডায়েরী করতে চায়।
--থানায় আসুন,আমি কি কাগজ পত্তর নিয়ে ঘুরে বেড়াই?
--আপনার ভ্যানে উঠবো?
অফিসার একবার আপাদ মস্তক দেখে বললেন,আপনি কে?
--আমি এই পাড়াতেই থাকি,আমার নাম বলাই মিত্র।অবসর প্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার--
--ঠিক আছে ঠিক আছে উঠুন।
বলাই মিত্তির কৃষ্ণাকে নিয়ে ভ্যানে উঠে বসলেন।এক রাশ ধোয়া ছেড়ে ভ্যান চলে গেল।
মনসিজ জিজ্ঞেস করল,ঐ ভদ্রলোক কে রে?
--কানুদার জ্যাঠা।খুব ভাল লোক।বঙ্কিম বলল।
এত ভীড়ের মধ্যে এরকম এক-আধজন আছে বলেই সমাজটা টিকে আছে।মনসিজ আশিসদার বাড়ীর দিকে তাকিয়ে দেখল উপর নীচ সব জানলা বন্ধ।এইভাবে পালিয়ে পার পাওয়া যাবে?মেয়েটি ঐ অবস্থায় কি করবে এখন?প্রশ্নগুলো মাথায় নিয়ে বাড়ীর দিকে পা বাড়ায়।
•
Posts: 18,202
Threads: 471
Likes Received: 65,645 in 27,694 posts
Likes Given: 23,815
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,266
(08-11-2021, 07:12 PM)buddy12 Wrote: কৃৃৃষ্ণার একজন ন্যালাখ্যাপা বর (শিখন্ডি) দরকার ।
সেই পোস্টের জন্য আশিস যোগ্য ছেলে ।
Posts: 110
Threads: 0
Likes Received: 75 in 61 posts
Likes Given: 1
Joined: Jan 2019
Reputation:
1
এরা কারা যারা পুরা পোস্ট কোট করে।।। বিরক্তিকর।।।
Posts: 751
Threads: 6
Likes Received: 1,601 in 808 posts
Likes Given: 2,170
Joined: Jan 2019
Reputation:
194
কামদেব দা আপনার কি আশিস নামের কোন লোকের সাথে দা-কুমড়া সম্পর্ক ছিল?
আশিস চরিত্র টাকে আপনি এমন ভাবে তৈরি করেন যেন আপনার চিরকালের শত্রু।
পরভৃত গল্প আর এই গল্পতেও আশিসের প্রতি আপনি অবিচার করছেন।
Posts: 1,599
Threads: 1
Likes Received: 1,567 in 988 posts
Likes Given: 5,357
Joined: Jan 2019
Reputation:
201
09-11-2021, 05:12 AM
(This post was last modified: 28-03-2022, 02:25 PM by buddy12. Edited 11 times in total. Edited 11 times in total.)
(09-11-2021, 03:57 AM)Biddut Roy Wrote: কামদেব দা আপনার কি আশিস নামের কোন লোকের সাথে দা-কুমড়া সম্পর্ক ছিল?
আশিস চরিত্র টাকে আপনি এমন ভাবে তৈরি করেন যেন আপনার চিরকালের শত্রু।
পরভৃত গল্প আর এই গল্পতেও আশিসের প্রতি আপনি অবিচার করছ
•
Posts: 18,202
Threads: 471
Likes Received: 65,645 in 27,694 posts
Likes Given: 23,815
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,266
(09-11-2021, 03:57 AM)Biddut Roy Wrote: কামদেব দা আপনার কি আশিস নামের কোন লোকের সাথে দা-কুমড়া সম্পর্ক ছিল?
আশিস চরিত্র টাকে আপনি এমন ভাবে তৈরি করেন যেন আপনার চিরকালের শত্রু।
পরভৃত গল্প আর এই গল্পতেও আশিসের প্রতি আপনি অবিচার করছেন।
Posts: 30
Threads: 0
Likes Received: 22 in 16 posts
Likes Given: 9
Joined: Sep 2021
Reputation:
1
লেখক তার কল্পনা তে রাজা
সেখানে তার ইচ্ছা বড় কথা নামে নয়
|