Posts: 2,276
Threads: 8
Likes Received: 2,993 in 1,524 posts
Likes Given: 2,315
Joined: Mar 2019
Reputation:
537
(19-08-2022, 02:22 PM)Bumba_1 Wrote: আমার একজন খুব কাছের বন্ধু আজ চলে গেলেন। মানসিক পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। তাই আজ রাতে আপডেট আসবে না .. তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। [image]
'' হারায় যা তা' হারায় শুধু চোখে / অন্ধকারের পেরিয়ে দুয়ার যায় চলে আলোকে ।'' - নিজেকেই উঠে দাঁড়াতে হয় । শুভম্ ।
Posts: 1,172
Threads: 3
Likes Received: 1,396 in 934 posts
Likes Given: 3,658
Joined: Apr 2022
Reputation:
150
(19-08-2022, 02:22 PM)Bumba_1 Wrote: আমার একজন খুব কাছের বন্ধু আজ চলে গেলেন। মানসিক পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। তাই আজ রাতে আপডেট আসবে না .. তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। [image]
কোনো ব্যাপার নয় দাদা আপনার যখন ইচ্ছে হবে আরামসে তখন আপডেট দিবেন।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 459
Threads: 1
Likes Received: 232 in 178 posts
Likes Given: 74
Joined: May 2021
Reputation:
6
দারুন হচ্ছে.........আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষায় রইলাম
Posts: 1,248
Threads: 2
Likes Received: 2,225 in 1,016 posts
Likes Given: 1,622
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
মরে টরে গেলে নাকি বাঁড়া তুমি?
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,493 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
(19-08-2022, 02:22 PM)Bumba_1 Wrote: আমার একজন খুব কাছের বন্ধু আজ চলে গেলেন। মানসিক পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। তাই আজ রাতে আপডেট আসবে না .. তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। [image]
ইটস ওকে দাদা
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
•
Posts: 1,404
Threads: 2
Likes Received: 1,422 in 982 posts
Likes Given: 1,750
Joined: Mar 2022
Reputation:
82
(19-08-2022, 02:22 PM)Bumba_1 Wrote: আমার একজন খুব কাছের বন্ধু আজ চলে গেলেন। মানসিক পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। তাই আজ রাতে আপডেট আসবে না .. তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। [image]
কে গো?
•
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(21-08-2022, 03:52 PM)Somnaath Wrote: কে গো?
you won't know
•
Posts: 1,404
Threads: 2
Likes Received: 1,422 in 982 posts
Likes Given: 1,750
Joined: Mar 2022
Reputation:
82
(21-08-2022, 06:07 PM)Bumba_1 Wrote: you won't know
মন আমারও একদম ভালো নেই।
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,114 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,736
21-08-2022, 07:14 PM
(This post was last modified: 21-08-2022, 07:16 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
৪/৫ দিন ঠিক করে এখানে নজরও দেওয়া হয়ে ওঠেনি। খালি নেক্সট পেজ এর গল্পটা পড়তে পেরেছিলাম। নিজের গল্প নিয়েও এগোনো হয়নি কিছু অসুবিধার। ভেবেছিলাম তোমার নতুন পর্বটা চলে এসেছে কিন্তু এখন এসে দেখি তুমিও ওই বিশেষ কারণের জন্য দিতে পারোনি। সত্যিই কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেলো হটাৎ করেই। একটা নির্দিষ্ট পথে চলতে চলতে হটাৎ কি যেন হয়ে গেলো আমাদের লেখাগুলোর সাথে। যাইহোক তুমিও সময় করে পোস্ট কোরো, আমিও দেখি আবার লিখতে শুরু করি পরবর্তী পর্ব। ♥️
•
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(21-08-2022, 07:14 PM)Baban Wrote: ৪/৫ দিন ঠিক করে এখানে নজরও দেওয়া হয়ে ওঠেনি। খালি নেক্সট পেজ এর গল্পটা পড়তে পেরেছিলাম। নিজের গল্প নিয়েও এগোনো হয়নি কিছু অসুবিধার। ভেবেছিলাম তোমার নতুন পর্বটা চলে এসেছে কিন্তু এখন এসে দেখি তুমিও ওই বিশেষ কারণের জন্য দিতে পারোনি। সত্যিই কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেলো হটাৎ করেই। একটা নির্দিষ্ট পথে চলতে চলতে হটাৎ কি যেন হয়ে গেলো আমাদের লেখাগুলোর সাথে। যাইহোক তুমিও সময় করে পোস্ট কোরো, আমিও দেখি আবার লিখতে শুরু করি পরবর্তী পর্ব। ♥️
হ্যাঁ অবশ্যই, আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে আমাদের।
•
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(21-08-2022, 06:25 PM)Somnaath Wrote: মন আমারও একদম ভালো নেই।
মন ভালো নেই? ঠিক আছে, এক্ষুনি মন ভালো করে দিচ্ছি। আমাদের বাড়িতে তো বিচিত্র মানুষের সমাগম এবং বসবাস। তাদের মধ্যেই একজনকে নিয়ে একটা মজার ঘটনা শেয়ার করছি। শোনো ..
আমাদের বাড়িতে নমিতা বলে যে মেয়েটি থাকে (রান্নাবান্না করে আর কি) ঘটনাটা তাকে নিয়েই। নমিতা ঠিক জিনিসকে (বিশেষ করে ইংরেজি) ভুল উচ্চারণ করার জন্য আমাদের বাড়ি তথা এলাকাবাসীর কাছে খ্যাত। সেই বিষয় না হয় আরেকদিন আলোচনা করা যাবে।
তো যাইহোক, সেদিনকে আমাকে বলছে "আমার আগের ফোনটা একদমই চলছে না, তাই একটা নতুন ফোন কিনবো ভাবছি। তোমার তো সব ব্যাপারে বিশাল জ্ঞান, তাই তুমি বলো তো কোনটা ভালো হবে!"
আমি বললাম "আর যে বিষয়ের উপর জ্ঞান থাকুক আর না থাকুক, স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে আমার কোনো ধারণাই নেই। তোর budget কতো?"
নমিতা বললো "হাজার পাঁচেকের বেশি খরচ করতে পারবো না বাপু। আর হ্যাঁ একটা কথা, আমার কিন্তু হেজেল ছাড়া ফোন চাই, ওইসব হেজেল-টেজেল আমি সহ্য করতে পারি না একদম। আর একটা কথা, ছয় ইঞ্চির কম লম্বা ফোন কিন্তু আমি নেবো না। আমার একটা পেসটিজ আছে, এরপর তো বন্ধুদের কাছে মুখ দেখাতে পারবো না।"
মোবাইলের ক্ষেত্রে হেজেল শব্দটা জীবনে প্রথমবার শুনে আমি কিছুটা ভিড়মি খেয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম - কি জানি হতেও পারে, হয়তো মোবাইলে এইরকম নতুন কোনো সফটওয়্যার অথবা অ্যাপস যুক্ত হয়েছে, যেটা আমি জানিনা। তারপর আমার ছেলে ভ্যানিলা ব্যাপারটা খোলসা করে দিয়ে বললো "I think নমিতা মাসি বোধহয় bezel বলতে চাইছে। মাসি bezel less ফোন চাইছে।" এই কথা শুনে বাড়িতে as usual প্রতিবারের মতোই কিছুক্ষণ হাসাহাসি হলো। আমি বললাম "ঠিক আছে দেখছি, কিন্তু কিনতে গিয়ে যদি দেখা যায় কিছু টাকা বেশী লাগছে।" নমিতা বললো "টাকা বেশি লাগলে তুমি দেবে। আমি তো বললাম পাঁচ হাজারের বেশি আমি দিতে পারবো না।"
আমাদের ওখানে একটা মোবাইলের দোকান আছে, যেটা আশেপাশের দোকান থেকে তো বটেই, এমনকি অনলাইনের রেটে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার থেকেও কমে ফোন বিক্রি করে এবং অবশ্যই authentic ফোন বিক্রি করে। আমি সন্ধ্যাবেলা অফিস থেকে ফেরার পর সেখান থেকেই অনেক দেখেশুনে একটি ব্র্যান্ডেড কোম্পানির ওর পছন্দমত ফোন ওকে কিনে দেওয়া হলো।
Posts: 1,404
Threads: 2
Likes Received: 1,422 in 982 posts
Likes Given: 1,750
Joined: Mar 2022
Reputation:
82
ব্যাপক ব্যাপক  তা শেষমেষ কোন ব্র্যান্ডের ফোন কিনে দিলে ওকে?
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(21-08-2022, 09:16 PM)Somnaath Wrote: ব্যাপক ব্যাপক [image] [image] [image] তা শেষমেষ কোন ব্র্যান্ডের ফোন কিনে দিলে ওকে?
ভুলে গেছি .. আর তাছাড়া সেটা বড় কথা নয়, আসল কথা হলো হাসি-ঠাট্টা, মজা করা, extreme level পর্যন্ত এর ওর পেছনে লাগা .. এসব চলতেই থাকে। কিন্তু at the end of the day আমরা সবাই মিলে মিশে একসঙ্গে থাকি।
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(৮)
"বটে? আমার উপকার? তাও আবার তুমি উপযাজক হয়ে করতে এসেছো? ঠিক আছে ভেতরে এসো।" ইশারা করে গোগোলকে ভেতরে ডাকলো নিশীথ বটব্যাল।
"আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার .. আপনার মতো সৎ এবং পরোপকারী মানুষ এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমার এবং আমার পরিবারের উপর আপনার আনুকূল্যের ঋণের বোঝা এত বছর ধরে বইতে বইতে আমি ক্লান্ত। তাই তো একটা সুযোগ পেয়েই ছুটে চলে এসেছি আপনার কাছে। যদি আপনার একটু কাজে লাগতে পারি, তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করবো আর ঋণের বোঝাটাও একটু হাল্কা হবে।" নিশীথ বাবুর উল্টোদিকের চেয়ারটা টেনে নিয়ে তার মুখোমুখি বসে কথাগুলো বললো গোগোল।
"একটু ঝেরে কাশো তো হে ছোকরা .. তোমার কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।" কিছুটা অধৈর্য হয়ে বিরক্তির সুরে কথাগুলো বললো প্রধান শিক্ষক।
"আপনাকে বোঝাবো বলেই তো এসেছি স্যার। তার আগে এইটা একটু শুনুন .. তাহলে যদি পুরনো দিনের কথা কিছু মনে পড়ে।" এই বলে টেবিলের উপর বহু পুরনো একটি ছোট ফোন রেখে তার কি-প্যাড টিপলো গোগোল।
সুইচ টেপার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই একটি পুরনো কথোপকথনের রেকর্ডিং শোনা গেলো। যেখানে অরুন্ধতী এবং অনিরুদ্ধর (যদিও তার মৃত্যুটা তখনও জানা যায়নি) মৃত্যুর পরের দিন সকালে নিশীথ বাবু এবং লতিকা দেবীর মধ্যে টাকা নিয়ে বার্গেনিং হচ্ছিলো। যেখানে লতিকা দেবী প্রধান শিক্ষককে একবার এটা বলেও হুমকি দিয়েছিলো - তার প্রাপ্ত টাকার অঙ্ক দ্বিগুণ না করলে সে মুখ খুলতে বাধ্য হবে।
রেকর্ডিংটা শোনা মাত্রই মুখের ভাব পরিবর্তন হতে শুরু করলো নিশীথ বাবুর। এসি রুমেও কুলকুল করে ঘামতে লাগলো সে। দ্রুত হাত বাড়িয়ে টেবিলের উপর থেকে ছোট ফোনটা নিতে যাওয়ার আগেই গোগোল ক্ষিপ্রগতিতে ফোনটা উঠিয়ে নিয়ে সুইচ বন্ধ করে তার প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে নিলো। "অত সোজা স্যার? দিদা মারা যাওয়ার পর রান্নাঘরে গিয়ে যখন দেখলাম একটা সেলফের উপর এই ফোনটা রাখা আছে, চুপচাপ এটা নিজের পকেটস্থ করে নিয়েছিলাম। তারপর থেকে এই সাত বছর ধরে ফোনটা নিজের কাছে যত্ন সহকারে রেখে দিয়েছি, কাক পক্ষীতেও টের পায়নি। এত সহজে তো আপনার জিম্মায় যেতে দেবো না এটাকে। চিন্তা করবেন না .. এই ফোনটার ভেতর এরকম আরো বেশ কিছু রেকর্ডিং আছে। যাই বলুন, বয়স্ক হলেও মালটা আই মিন আমার দিদা কিন্তু সেয়ানা ছিলো, না হলে আপনার সঙ্গে ফোনে কথোপকথন রেকর্ডিং করে রাখে? মনে হয় ভবিষ্যতে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করার ধান্দায় ছিলো। তবে আপনাদের মতো চুতিয়াদের সঙ্গে খেলতে গেলে সেয়ানা তো হতেই হবে।"
"ভদ্রভাবে কথা বলো .. আমি এই এলাকার সবথেকে নামী কলেজের একজন রেসপেক্টেড প্রধান শিক্ষক। তার সঙ্গে এইভাবে গালাগালি দিয়ে কথা বলছো কেন? তাছাড়া ওই ফোনের ভয়েস মোটেই আমার নয়। আর কে তোমার দিদা? তাকে তো আমি চিনিই না। এইসব ভুলভাল কথা বলে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবে না।" রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে কথাগুলো বললো নিশিথ বাবু।
"আরে ধুর মশাই .. আপনাদের মতো ক্রিমিনালদের সঙ্গে আবার ভদ্রভাবে কি কথা বলবো! এখনো যে চার অক্ষর, পাঁচ অক্ষর দিয়ে দিইনি .. এটাই আপনার চোদ্দপুরুষের ভাগ্য। আর একটু আগে কি বললেন ওটা আপনার ভয়েস নয়? ঠিক আছে পুলিশ তো ওই বুড়িমাগী, সরি সরি এক্সট্রিমলি সরি আমি বলতে চাইছি আমার দিদার মৃত্যুর তদন্ত এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। আর উনার মৃত্যুর সময় আমি একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম বলে আমাকে এখনো মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে পাঠায়। ভাবছি এবার ডাকলে এই ফোনটা পুলিশকেই দিয়ে দেবো। তারপর না হয় ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট নির্ধারণ করবে কোনটা কার কণ্ঠস্বর। যাগ্গে ওসব ছাড়ুন, আমি তো এখানে ঝগড়া করতে আসিনি আর আপনাকে থ্রেট দিতেও আসিনি, তাহলে তো এখানে না এসে পুলিশের কাছেই যেতে পারতাম। আমি এসেছি একটা ডিল করতে।"
"ডিল .. কিরকম ডিল?" ভিতর ভিতর যথেষ্ট ঘাবড়ে গেলেও বাইরে 'কিছুই হয়নি' এরকম একটা ভাব প্রকাশ করে, গলায় আপাত গাম্ভীর্য এনে জিজ্ঞাসা করলো নিশীথ বাবু।
হেডস্যারের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থেকে মুচকি হেসে বলতে শুরু করলো গোগোল "একটু আগে বলছিলাম না - আমার এবং আমার পরিবারের উপর আপনার আনুকূল্যের ঋণের বোঝা অপরিসীম। তবে সে ক্ষেত্রে শুধু আপনি নয়, আরো তিনজন ছিলো যারা আমার পরিবারের উপর উজাড় করে দিয়েছিলো তাদের ভালোবাসা। তারই ফলস্বরূপ তো আজ আমার এই পরিণতি। ওই চতুর্ভুজের মধ্যে তিনটে ভুজের নাম তো আমি জানি .. আপনি, লতিকা যিনি দুর্ভাগ্যবশত আমার দিদা আর আমার বাবার অফিসের সহকর্মী মিস্টার কামরাজ। চতুর্থ ব্যক্তিটি কে? ওই লোকটার নাম জানতে চাই। নাম বলুন আর এই মোবাইলটা নিয়ে নিন। গিভ এন্ড টেক পলিসি .. এটাই আমার ডিল।"
গোগোলের কথাগুলো শেষ হতেই উচ্চ হাসিতে ফেটে পড়লো নিশীথ বাবু। তারপর নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলতে শুরু করলো "এখানে কি জ্যামিতির ক্লাস হচ্ছে নাকি হে ছোকরা? তখন থেকে চতুর্ভুজ, ত্রিভুজ .. এইসব কি বলে যাচ্ছ? আমি ভাই সাহিত্যের শিক্ষক, ওইসব ভুজ-টুজ বুঝিনা। আর কে তোমার ঐসব শর্তের তোয়াক্কা করে? অনেক সময় নষ্ট করেছো আমার। এবার ভালোয় ভালোয় কেটে পরো এখান থেকে। না হলে দারোয়ান ডেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে এক্ষুনি বের করে দেবো, সাত বছর আগে যেরকম বের করে দিয়েছিলাম। আর তাতেও যদি কাজ না হয় তাহলে পুলিশ ডাকবো।"
"আপনি ধরা পড়ে গেছেন কাকা। দারোয়ান দিয়ে বের করে দেওয়ার হলে অনেক আগেই করে দিতেন আর পুলিশ ডাকার হলে অনেক আগেই ডাকতে পারতেন। কিন্তু কোনোটাই আপনি করেননি, তার কারণ এই বিষয়টাকে আপনি লোক জানাজানি হতে দিতে চান না আর পুলিশের কাছেও খবরটা পৌঁছোক সেটাও চান না .. দুই ক্ষেত্রেই আপনার বিপদ। কারণ স্বপ্না দাসের কেসটা নিয়ে এই ক' বছর ধরে আপনারা সামান্য হলেও ব্যাকফুটে আছেন। প্রশাসন যদিও আপনাদের হাতে, তবুও সামনে পরিবর্তনের একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে, সেইজন্য হাইকম্যান্ড থেকেও খুব বেশি ভরসা পাচ্ছেন না। তাই ধমকে চমকে যদি আমাকে এখান থেকে বিদায় করা যায়, সেই চেষ্টা করছেন। আমি কিন্তু একটু অন্যরকম মাল, সামথিং কালা ইন দা ডাল .. তাই আমাকে চমকানো শুধু মুশকিল নয়, একপ্রকার অসম্ভব। ঊনিশ পেরিয়ে কুড়িতে সবে পড়েছি। কিন্তু এই বয়সেই জীবনের পাঠ অনেকখানি পড়ে নিয়েছি। অনেক আঁটঘাট বেঁধে, অনেক ওয়ার্কশপ করে এখানে এসেছি কাকা। এত সহজে কি আমাকে এভোয়েড করা যাবে? তবে হ্যাঁ, আমি কিন্তু ভীষণ সহৃদয় ব্যক্তি। আপনি মুখ খুললে আমি আপনাকে একটা নয় দুটো জিনিস দেবো তার বদলে। যাকে বলে বাই ওয়ান এন্ড গেট ওয়ান ফ্রি। ওই চতুর্থ বাহুর নামটা বলে দিলে এই ফোনটা তো পাবেনই তার সঙ্গে আপনার জন্য একটা দারুন অফার নিয়ে এসেছি। আপনি তো বরাবরের রমণীমোহন .. না না এই শব্দটা আপনার জন্য অনেক ভদ্র হয়ে গেলো। এত ভালো ভালো কথা আপনি ডিজার্ভ করেন না। মানে আমি বলতে চাইছি আপনি হলেন পাক্কা মাগীবাজ। তাই আপনি যদি নামটা আমাকে বলেন তাহলে তাহলে আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।" নিশীথ বাবুর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বললো গোগোল।
জোঁকের মুখে নুন পড়লে যেরকম অবস্থা হয়, নিশীথ বাবুর ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই ঘটলো। আমতা আমতা করে জিজ্ঞাসা করলো "ক..কি সারপ্রাইজ?"
"আমাদের রেলপাড়ের স্বপন সাধুখাঁ'র মেয়ে টগর .. যার ওপর অনেক দিনকার নজর আপনার .. মাঝে মাঝে তো ওকে পটানোর জন্য জামাকাপড়, কসমেটিক্স, এমনকি গয়নাগাটিও দিয়ে থাকেন এইরকম খবর আছে আমার কাছে। কিন্তু পাখি ভীষণ সেয়ানা, ধরা আর দিচ্ছে না .. জিনিসপত্র গুলো নিচ্ছে আর কেটে পড়ছে। কি তাই তো? আমি চাইলে ফোনটার সাথে টগর আপনার আর আমি না চাইলে আপনার শ্রীঘরে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবেনা। এবার আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ওই নামটা বলে দিয়ে বাকি জীবনটা নির্ঝঞ্ঝাটে আয়েশ করে আর বেলেল্লাপনা করে কাটিয়ে দেবেন নাকি পুলিশের চক্করে পড়বেন।" খুব স্বাভাবিকভাবে অথচ দৃঢ় কন্ঠে কথাগুলো বললো গোগোল।
টগরের নামটা শুনেই এই পরিস্থিতিতেও নারীমাংস লোভী নিশীথ বাবুর চোখদুটো জ্বলজ্বল করে উঠলো। "তুমি কি সত্যিই পারবে ওকে আমার কাছে আনতে? কিন্তু তোমার কথা টগর শুনবে কেন?" উৎসুক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো নিশীথ বাবু।
"আমি ওকে কি করে রাজি করাবো সেটা না হয় আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাক। যখন কথা দিয়েছি তখন ওকে আপনার কাছে আমি ঠিক নিয়ে আসবো। অনেকক্ষণ হেজিয়েছেন, এবার বলুন আপনি আমার শর্তে রাজি কি না? আপনার এখানে বসে বসে সময় নষ্ট করলে আমার চলবে না। এখানে কাজ না হলে অন্যভাবে নামটা আমি ঠিক জেনে নেবো, তারপর যদি থানা থেকে ফোন আসে আপনার কাছে, তাহলে কিন্তু আমাকে দোষ দিতে পারবেন না।" অত্যন্ত আত্মপ্রত্যয় নিয়ে কথাগুলো বলে প্রধান শিক্ষকের চোখে চোখ রাখলো গোগোল।
গোগোলের তারুণ্যের দীপ্তির কাছে হঠাৎ করেই নিজেকে বড় নিষ্প্রভ মনে হচ্ছিল নিশীথ বাবুর। একদা এই কলেজের ছাত্র তার সামনে বসা বছর কুড়ির ছেলেটির দিকে তাকিয়ে প্রধান শিক্ষকের অন্তরাত্মা যেন বলে উঠলো - হে তরুণ, তুমি নিত্য প্রভাত অরুণ, তল্প ছেড়ে কল্পো গণ কী নিদারুণ! শেরসমা, সমীরিত, বলভি, মোক্ষম .. এ বিশ্বে স্থাপন করো তুমি যা কল্যাণী, উত্তম। রিক্ত সভায় তপ্তো; মুক্ত সব বাঁধন .. তীক্ষ্ণ অসিতে করো অবিচার নিধন। তুমি অবাধ, নির্ভিক, দুষ্কর সৈনিক - পায়ে ঠেলে দাও সব অপসংস্কৃতি। অগ্নি তুমি, সিন্দু সম ও অশেষবিধ .. নীচতেজ করো না সামাজিক অবিধ! উঁচু আকাশেই গতিশীল গ্রহ-তারা, ভেদ করো সে পথ আঁধারে যা ঘেরা! একদিকে লতিকা দেবীর ওই ফোনটা হাতে পাওয়া মানেই অরুন্ধতী এবং অনিরুদ্ধর নির্মম পরিণতির ওই অন্তর্তদন্ত থেকে নিজেকে মুক্ত করা এবং চিরজীবনের মতো হাতে একটা লাইফলাইন পেয়ে যাওয়া। অন্যদিকে টগরের প্রতি জমে থাকা অমোঘ আকর্ষণে লোভ সামলাতে পারলো না নিশীথ বাবু। সে মনে মনে ভাবলো - চতুর্থ ব্যক্তির নামটা যদি এই ছোকরাকে বলেই দেওয়া হয় তাহলে কিই বা ক্ষতি হবে? লতিকা দেবীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনা ছাড়া এতদিন তাদের নাম জেনেই বা কি ক্ষতি করতে পেরেছে ছেলেটা? একবার টগর আর ফোনটা হাতে পেলেই তার দুই ক্রাইম পার্টনার কামরাজ আর বিধায়ক মশাইকে সবকিছু জানিয়ে দেবে সে। তারপর ওরাই ব্যবস্থা করবে এই ছোকরার।
নিজের গলাটা একটু পরিষ্কার করে নিয়ে গাম্ভীর্য এনে প্রধান শিক্ষক বললো "ঠিক আছে তোমার প্রস্তাবে আমি রাজি। তবে আমার বাড়িতে আমি কোনো ঝামেলা চাইছি না। আগামীকাল থেকে আমাদের কলেজে এক মাসের জন্য গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে। কলেজ একদম ফাঁকা হয়ে যাওয়ার পর তুমি কাল ঠিক এই সময় টগরকে এখানে নিয়ে এসে আমার কাছে হ্যান্ড ওভার করে দেবে আর তার সঙ্গে ফোনটাও। তোমাকে তোমার ওই চতুর্থ ভুজের নাম তখনই জানাবো .. বোঝা গেলো? কি পারবে তো মেয়েটাকে আনতে, নাকি এতক্ষণ ধরে ফাঁকা আওয়াজ দিচ্ছিলে?"
পরবর্তী পদক্ষেপের কার্যক্রম সম্পর্কে গোগোলের মাথায় অন্য কিছু ঘুরছিলো। হেডস্যারের কথাগুলো শুনে তার মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠলো। "না স্যার কোনো ফাঁকা আওয়াজ নয়, আমি কথা দিয়ে কথা রাখতে জানি। কাল তাহলে একদম এই সময় দেখা হচ্ছে আমাদের। এখন আসি .. ভালো থাকবেন।" কথাগুলো বলে বিদায় নিলো গোগোল।
★★★★
নারীদেহের নির্মাতা ঈশ্বর হলেও, তার উল্লেখের সময় সে যেন দ্বিতীয়বারের মতো নির্মিত হয় সাহিত্যিকদের হাতে। নারীর মধ্যে তারাই তো প্রকৃত সৌন্দর্য সঞ্চার করে থাকেন। পৃথিবীর সব ভাষার সাহিত্যে নারীর শরীরের বাইরের শোভা, গড়ন, লাবণ্য, মাধুর্য নিয়ে সাহিত্যিকরা সাজিয়েছেন এক আশ্চর্য বাস্তব ও কল্পনার জগত। সাহিত্যিকরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন নারীর বয়ঃসন্ধিকাল ও যৌবনের ওপর .. এর পেছনে প্রেম, কাম, ভালোবাসা, অনুরাগ ইত্যাদি। সাহিত্যিকরা যেন সৃষ্টির সূচনাকাল থেকে নারীর দেহের বন্দরে ভিড়িয়েছেন কল্পনার তরী। এ কল্পনায় তাদের কোনো ক্লান্তি নেই, নেই কোনো বিরতি। তারা আবিষ্কার করেই চলছে অফুরান এক সৌন্দর্যের ভুবন। সাহিত্যিকদের মৌলিক প্রেষণাই হচ্ছে কোনো বস্তুর মধ্যে সুন্দর অন্বেষণ এবং তাকে কল্পনার ছাঁচে ঢেলে প্রকাশ করা। সাহিত্য জগতে রমণীর দেহশ্রীকে অমর করে রাখার প্রয়াস। আমিও এই সাহিত্যচক্রের বাইরে নই, তাই নিজের সীমিত ক্ষমতার লেখনীর দ্বারা গড়ে তোলার চেষ্টা করবো আমার উপন্যাসের এই কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রটিকে।
এই বছর আঠারো পূর্ণ হলো হিয়ার। কলেজের গন্ডি সবে পেরিয়েছে। শরীরে যৌবনের চিহ্নগুলি ধীরে ধীরে ফুটে উঠলেও তার কিশোরী মন চঞ্চলা হরিনীর মতো অস্থির .. সর্বদা নেচে বেড়াতে উদ্যত। তার নবযৌবন প্রাপ্ত শরীরে বয়সের এক নূতন ঋতু এসে তাকে যেন পত্রে, পুষ্পে, ফলভারে অনির্বচনীয় সাজে সজ্জিত করেছে। হিয়া যে অপরূপ সুন্দরী তা হয়তো জোর দিয়ে বলা যায় না। কিন্তু সৌন্দর্যের সংজ্ঞা তো শুধুমাত্র ছাঁচে ফেলা মুখশ্রী এবং আকর্ষণীয় দেহবল্লরী দিয়ে বিচার হয় না । শাস্ত্রোক্ত সৌন্দর্য্য লক্ষণের সঙ্গে যার বিন্দুমাত্র মিল নেই, সেও এমন এক আকর্ষণে বরণীয়া হয়ে ওঠে যার ব্যাখ্যা হয় না। ক্ষীণ কটি, উন্নত বক্ষ, গুরু নিতম্ব, পর্ক বিদাধর বা হরিণ-নয়নের যতই প্রশংসা থাকুক, এ সকল শারীরিক সৌন্দর্য যার মধ্যে নেই, সেও অন্য কারণে যে সৌন্দর্যের লহর তুলতে পারে, হয়তো হিয়াই তার প্রমাণ।
হিয়ার মুখমন্ডলে একটি বুদ্ধির দ্যুতি আছে, যা সচরাচর ওর বয়সী মেয়েদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় না। দীর্ঘ শরীর, প্রায় মেদবর্জিত মজবুত গড়ন হলেও শারীরিক গঠনে কোমলতার কিছুমাত্র অভাব লক্ষ্য করা যায় না, মুখখানা যেন বিধাতা নরুনে চেঁচে কুঁদে অতিমাত্রায় ধারালো করে তুলেছে .. তন্মধ্যে বুদ্ধির ছাপ স্পষ্ট। হিয়ার গায়ের রঙ কিছুটা শ্যামবর্ণ। উজ্জ্বল গৌরবর্ণা নয় বলে তা অগৌরবের কিছু নয়, বরং মেয়েটির গাত্রবর্ণ নূতন তামার পয়সার মতোই উজ্জ্বল .. যা অতিমাত্রায় আকর্ষণীয়া করে তুলেছে তাকে।
সন্ধ্যের একটু আগে প্রবল ঝড় হয়ে গেছে, তারপর বাতাসের বেগ কমলে শুরু হয়েছে বৃষ্টি .. অবিরত, একটানা। ধীরে ধীরে জল জমছে রাস্তায়। হিয়া জানলায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে অনেকক্ষণ ধরে। খুব জোর ছাঁট, ভিতরে জল আসছে। ভিজে যাচ্ছে পরনের শাড়ি, তবু তার ভ্রুক্ষেপ নেই .. হ্যাঁ, আঠারো বছরের পর থেকেই মা কাবেরী দেবী থাকে শাড়ি ধরিয়েছে। মা বারণ করলেও বৃষ্টির সময় ঘরের সব জানালা বন্ধ করে রাখতে তার ভালো লাগে না। এমনকি কাচের পাল্লার মধ্যে দিয়েও বাইরের বৃষ্টি দেখলে মনের সাধ মেটে না তার। বাতাসে বৃষ্টির গন্ধ আর গায়ে তার স্পর্শ পেলে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় হিয়ার। গলা দিয়ে গুনগুন স্বর সোনা না গেলেও মাথা দুলছে হিয়ার। অর্থাৎ তার শরীরের মধ্যে ঘুরছে একটা গান .. নিঃশব্দে। গত দু' বছরে হঠাৎ লম্বা হয়ে উঠেছে সে। আগে শাড়ি পড়তেই চাইতো না, এখন মায়ের বকুনিতে শাড়ি পড়তে হয়। তার হলুদ রঙের শাড়ির আঁচলটা কাঁধের কাছে মাঝে মাঝে উড়ছে .. যেন সেটা জীবন্ত।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হলো, এখনো তার পাত্তা নেই। মনটা ভারাক্রান্ত হিয়ার। আজ বিকেলে সে চুল বাঁধেনি .. হয়তো অভিমানে। রাস্তায় মানুষজন খুবই কম, যারা বাধ্য হয়ে বেরিয়েছে তারা ছাতা চেপে ধরে গোড়ালি ডোবা জলে পা ফেলছে শালিকের মতো। মোড়ের মাথায় একটা ষাঁড় অনেকক্ষণ ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ভিজছে। সাইকেল চেপে গায়ে বর্ষাতি জড়ানো রেলপাড়ের মোড় দিয়ে বেঁকে একজন আসতে লাগলো তাদের কোয়ার্টারের দিকে। ঠিক করে মুখ দেখা যাচ্ছে না, তবুও হিয়া তাকে চিনতে পেরেছে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলেও অভিমানে গালদুটো যেন ফুলে উঠলো তার। সাইকেলটা কোয়ার্টারের গেটের সামনে থামতেই হিয়া সরে এলো জানলার কাছ থেকে।
★★★★
হসপিটালে এখন নিজের একটা ছোট্ট কেবিন হয়েছে সুজাতার। স্ট্রেট ডিউটি থাকলে দুপুরের দিকে নিজের কেবিনে বসে বই পড়তে পড়তে সে অনেক সময় বিশ্রাম নেয়। ভেতর থেকে দরজা ভেজানো রয়েছে, এই সময় জেগে থাকলেও সাড়া দেবে না সুজাতা। তাই হসপিটালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাক্তার দাশগুপ্ত নিজেই দরজা ঠেলে খুলবেন কিনা ভাবছেন, এমন সময় ভেতর থেকে নারীকন্ঠে আওয়াজ এলো "ভেতরে আসুন .."
অবাক কান্ড .. সুজাতা কি করে ডাক্তার দাসগুপ্তর উপস্থিতি টের পেয়ে গেলো, তা তিনি বুঝতে পারলেন না। দরজা ফাঁক করে মুখ বাড়িয়ে বললেন "স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে এই চিঠিটা ড্রাফট করার জন্য দু' একটা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করার ছিলো .. তাই একটু .."
ফাইনাল রাউন্ড শেষ হয়ে গিয়েছে, একটু পরেই ছুটি হয়ে যাবে সুজাতার। তাই নার্সের পোশাক খুলে নীল রঙের একটি সুতির শাড়ি পড়ে চেয়ারের উপর বসেছিল সে। টেবিলের উপর শরৎ রচনাবলীর একটি পৃষ্ঠা খোলা। ওখান থেকে চোখ তুলে ডাক্তার দাসগুপ্তর দিকে তাকিয়ে বললো "ওইসব চিঠির কথা কাল হবে। আপনি নিশ্চয়ই অন্য কিছু বলতে এসেছেন .. বলুন।"
"না, মানে সেরকম কিছু নয়। কয়েকদিন ধরেই দেখছি তোমার শারীরিক এবং মানসিক বেশ পরিশ্রম যাচ্ছে .. আসলে আমাদের ডিউটি তো স্ট্রেসপূর্ণ, তাই বলছিলাম ক'দিনের জন্য যদি বাইরে কোথাও ঘুরে আসতে। তুমি পুরী যাবে বলছিলে না সেদিনকে? জগন্নাথ দেবের দর্শন করতে। আমারও ছুটিগুলো পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। তুমি চাইলে আমি তোমায় নিয়ে যেতে পারি সুজাতা। আমার সঙ্গে বাইরে কোথাও যেতে নিশ্চয়ই তোমার কোনো আপত্তি নেই।" একদমে কথাগুলো বলে গেলেন ডক্টর দাশগুপ্ত।
কথাগুলো শুনে স্থির দৃষ্টিতে হসপিটালের সুপারিনটেনডেন্টের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে সুজাতা বললো "আপনি কি চান?"
"আমি কি চাই তুমি জানো না? বছর তিনেক হলো আমার স্ত্রী পক্ষাঘাতে পঙ্গু। কনজুগাল লাইফ বলতে কিচ্ছু নেই আমার .. কিচ্ছু নেই। আর তুমি? এত বছর ধরে নিজেকে সন্ন্যাসিনী করে রেখেছো। আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছো তুমি। তোমার জন্য ধীরে ধীরে আমি শুধুমাত্র এই হসপিটালের সেবাদাস হয়ে যাচ্ছি .. তাছাড়া আর কিচ্ছু না। তুমি বুঝতে পারো না .. আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি তোমাকে চাই! এত তেজ কিসের তোমার? আজ সমস্ত অহঙ্কার, সমস্ত তেজ ভাঙ্গবো আমি তোমার।" কথাগুলো বলে সুজাতাকে দু'হাতে জড়িয়ে ধরে ডক্টর দাশগুপ্ত তার ঠোঁটে ঠোঁট রাখতে গেলেন। চুম্বনের একটা ভঙ্গিম মাত্র, প্রকৃত চুম্বন নয়। শুধু এইটুকু স্পর্শেই আটচল্লিশ বছর বয়সী ডক্টর প্রতাপ দাশগুপ্ত এমন কেঁপে উঠলেন যে, নিজেই সুজাতাকে ছেড়ে দূরে সরে গেলেন .. একটা ভয়ার্ত পশুর মতো উল্টো দিকের চেয়ারে থপ করে বসে পড়লেন।
ঠিক যেন সম্মোহন করার মতো ডক্টর দাশগুপ্তর দিকে সুজাতা নিষ্ফলকভাবে চেয়ে রইলো কয়েক মুহূর্ত। তারপর রাগের বদলে তার মুখে ফুটে উঠলো করুনা মিশ্রিত হাসি। হঠাৎ কয়েক পা এগিয়ে ঠিক সুপারিনটেনডেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের বুক থেকে আঁচলটা ফেলে দিল সে। তারপর পটপট শব্দে নীল রঙের ব্লাউজের টিপ বোতামগুলো খুললো সুজাতা। ভেতরে সাদা রঙের ব্রেসিয়ার সরিয়ে ধীরে ধীরে নিজের উদ্ধাঙ্গ অনাবৃত করলো সে। মা যেমন করে তার সন্তানকে স্তন্যপান করায়, ঠিক সেই ভাবে নিজের একটি বুকে হাত দিয়ে হঠাৎ 'আপনি' থেকে 'তুমি' তে চলে গিয়ে সুজাতা বলে উঠলো "এসো .. এই তো চাও তুমি .. এর জন্য বাইরে কোথাও যাওয়ার কি দরকার!"
অস্পৃষ্ট, অনাঘ্রাত নিটোল দুটি স্তন এবং তার উপর প্রস্ফুটিত দুটি বৃন্তের দিকে বিস্ফোরিত নেত্রে তাকিয়ে থাকলেন ডক্টর দাশগুপ্ত। কিন্তু চেয়ার থেকে হাজার চেষ্টা করে উঠতে পারলেন না তিনি। ডক্টর দাশগুপ্ত দেরি করছে দেখে সুজাতা শাড়িটা সম্পূর্ণরূপে খুলে সায়ার দড়িতে হাত দিয়ে আরো মধুর করে হেসে বললো "তুমি যা চাও আজ তোমায় সব কিছু দেবো প্রতাপ। সত্যিই তো আমি এতদিন তোমার সঙ্গে অন্যায় করেছি। এসো, নাও আমাকে .. গ্রহণ করো আমায়।"
ডক্টর দাশগুপ্তের মনে হলো তার শরীরে যেন হাজার হাজার তীর বিঁধছে এই মুহূর্তে। ঘরে অবস্থিত কাঠের টেবিল, দুটো কাঠের চেয়ার, দেয়াল ঘড়ি, টেবিলের উপর রাখা প্রেসার মাপার যন্ত্র, এমনকি ওই শরৎ রচনাবলীটাও তার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে .. এক্ষুনি এসে যেন সবকিছু তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। সুজাতার মতো এইরূপ জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডকে সে কি করে সামলাবে? এতখানি সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই .. আর তিনি তো এতো কিছু চাননি। সুজাতার একটু স্পর্শ, মুখের হাসি, যদি সে তার বুকে একবার তাকে মাথা রাখতে দেয় .. সেই তো যথেষ্ট তার কাছে। অদ্ভুত ভয় মাখানো গলায় ডক্টর দাশগুপ্ত বলে উঠলেন "আমায় ক্ষমা করো সুজাতা, আমি অন্যায় করেছি .. আমার মাথার ঠিক ছিলো না।"
প্রতুত্তরে অত্যন্ত নির্লিপ্তভাবে সুজাতা বললো "এত দ্বিধাদ্বন্দ্ব, ভয় কিসের প্রতাপ? তোমার মনে মনে যখন এতটাই ইচ্ছে .. এই অতি সামান্য শরীর, রক্তমাংসের পিণ্ড .. তার প্রতি তোমার যদি এতটাই মোহ থাকে, তবে সে মোহটাকে মিটিয়ে নাও আজকেই। শরীরে তো পাপ-পুণ্য থাকে না, সব কিছুই তো মনের। দেখো প্রতাপ .. যতদিন তোমার চোখে লোভ থাকবে, মোহ থাকবে ততদিন তুমি তোমার প্রফেশনের উপর ঠিক মতো জাস্টিফাই করতে পারবে না। বড় কাজ কিছুই করতে পারবে না। তাই তো বলছি .. এসো প্রতাপ আমাকে ছুঁয়ে দেখো, আমার ভেতরেও যদি ষড়রিপুর কিছু অবশিষ্ট থাকে, তাকে শেষ করে দাও।"
ডক্টর দাশগুপ্তর মনে হলো সুজাতা যেন তার মাথা ছাড়িয়ে উঠে যাচ্ছে আরো উপরে। সুজাতার দুই স্তন, তার নিম্ন উদর, দুই উরু, নিতম্বদ্বয় .. সবকিছুই বিশাল। সুজাতার তুলনায় তিনি যেন ক্রমশ কুঁকড়ে ছোট হয়ে যাচ্ছেন খুব দ্রুত।
আরো কয়েক পা এগিয়ে এসে সুজাতা বললো "তুমি তখন বলছিলে না আমি এত বছর ধরে সন্ন্যাসিনীর জীবন যাপন করে চলেছি। কেন জানো? যে মানুষটাকে আমি আমার সবকিছু দিয়ে ভালবেসে ছিলাম, একদিন দেখলাম সে আমার প্রিয় বান্ধবী এবং সব থেকে বড় কথা আমার এক দিদির স্বামী হতে চলেছে। এই ঘটনায় আমি হয়তো তখন প্রচন্ড দুঃখ পেয়েছিলাম, কিন্তু তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছিলাম। তাহলে ভালোবাসার কি কোনো মূল্যই নেই? কিন্তু তারপরেই ভাবলাম এতে তো আমার ওই দিদিটার কোনো দোষ নেই। আমার সরল সাদাসিধে দিদিটা বিয়ের পর তার স্বামীকেও তো নিজের মন প্রাণ দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসেছে। আমি যদি তখন প্রতিবাদ করতাম তাহলে তিন তিনটে জীবন নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু আমি নিরব থেকে সবকিছু মেনে নিলাম আর জয় হলো ভালোবাসার .. আমার ভালবাসার। আমি কিন্তু হারিনি, আমি শেষ পর্যন্ত দিতে গিয়েছি। আরো শুনতে চাও প্রতাপ?"
কম্পিত গলায় ডাক্তার দাশগুপ্ত বললেন "সুজাতা .. সুজাতা তুমি এখন একটু শান্ত হও আমি তোমার সব কথা শুনবো .. কিন্তু পরে।"
এরপর সুজাতা ধীরে ধীরে নিজেকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে ডক্টর দাশগুপ্তর কাঁধে একটা হাত রেখে বললো "আমিও শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজেছি প্রতাপ .. কিছুতেই পাইনি। সে যে কি কষ্ট! শরীরে একটা জৈবিক সুখ অবশ্যই বিদ্যমান, কিন্তু ভালোবাসা না পাওয়ার উপলব্ধির বেদনা যে আরো অনেক, অনেক বেশি তীব্র। তোমার স্ত্রী পক্ষাঘাতে পঙ্গু, তুমি তার কাছ থেকে শারীরিক সুখ পাওনা। তাই তুমি আমার শরীরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজতে চাইছো, তাই তো? তবে নাও .. দেখো খুঁজে পাও কি না! ভালো করে দেখো আমাকে প্রতাপ .. মনে কোনো দ্বিধা রেখো না, যদি এই শরীরটাকে পেলে তোমার ভেতরের সমস্ত মোহ মিটে যায় .."
রক্তচন্দনবর্না, স্খলিতবসনা সুজাতাকে দেখে ডক্টর দাশগুপ্তর মনে হলো যেন তার সামনে এক অচেনা দেবী মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আর তাকাতে পারছেন না। এক অদ্ভুত উত্তেজনায় তার শরীর ঠকঠক করে কাঁপছে। মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সুজাতাকে প্রণাম করে ফেললেন তিনি।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন
The following 15 users Like Bumba_1's post:15 users Like Bumba_1's post
• Baban, Bichitro, Boti babu, Chandan, Crushed_Burned, Mampi, nextpage, Sanjay Sen, scentof2019, Somnaath, sudipto-ray, suktara, swank.hunk, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।, মাগিখোর
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
এতদিন পর আপডেট পড়ে বেশ ভালো লাগছে ....
নারীর সৌন্দর্য সাহিত্যিকদের হাতের লেখায় বা বর্ণনায়। কিন্তু এই সব অলঙ্কার বাচক শব্দ গুলোকে যদি একটা নারী মূর্তি তে প্রয়োগ করা যায় তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই নারী মূর্তি অগ্রহনযোগ্য হয়ে উঠবে । ভয় পাবে লোকে । ভালোবাসা তো দূরে থাক তাকে দেখে হার্ট এ্যাটাক ও হতে পারে  ।
গোগোলের সাথে নিশিথের কথোপকথন দারুন লাগছিল । বিশেষ করে গোগোলের কনফিডেন্স দেখে ... এতদিন ধরে এইসবের প্রস্তুতিই তো সে নিচ্ছিল .... প্রতিশোধের খেলা শুরু হয়ে গেছে তাহলে ... দেখা যাক ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে এগোয় ... গোগোলের বয়স ২০ , তার বেশি তো নয়...
হিয়ার একটু বর্ণনাতেই বোঝা গেছে সে গোগোল কে কতোটা ভালোবাসে ...
সুজাতা আর দাশগুপ্তের এ কি খেলা চলছে সেটাই দেখার ... দুজন দুই রকমের ... দেখা যাক এদের ঘটনা কোন দিকে যায়...
অনেক চরিত্র এসেছে , অনেক গেছে , তাতে যেন গল্পটা আরো বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছে
❤️❤️❤️
Posts: 1,248
Threads: 2
Likes Received: 2,225 in 1,016 posts
Likes Given: 1,622
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
22-08-2022, 09:43 PM
(This post was last modified: 22-08-2022, 09:49 PM by Sanjay Sen. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
অনেক কিছু বলার আছে আজকের পর্ব নিয়ে। প্রথমেই আসি নামকরণের কথায়। আজকের পর্ব তিনটি আলাদা সিচুয়েশনের এবং সবক্ষেত্রেই আলাদা চরিত্রের উপর নির্ভর করে সাজানো হয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো নামকরণের মতো প্রতিটি ভাগের সঙ্গেই অপেক্ষা শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে।
• প্রথম ভাগে নিজেকে পাপমুক্ত করা এবং টগর নামের একটি মেয়ের সর্বনাশ করার অপেক্ষায় আছে নিশীথ বাবু। তার সঙ্গে গোগোল অপেক্ষায় আছে তারপর পরবর্তী শিকারের।
• দ্বিতীয় আগে এই উপন্যাসের নায়িকা হিয়া অপেক্ষায় আছে তার মনের মানুষের।
• তৃতীয় ভাগে ডাক্তার দাশগুপ্ত অপেক্ষায় আছে তার ভালোবাসা সুজাতাকে নিজের করে পাওয়ার, হয়তো এই অপেক্ষা তার সারা জীবন থাকবে।
আর সবশেষে 'কি হয় কি হয়' এটা জানতে চাতক পাখির মতন পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছে আমাদের মতো পাঠকেরা।
এবার আসি এই উপন্যাসের কাহিনী বিন্যাস, গতিপ্রকৃতি এবং কিছু মনোমুগ্ধকর বর্ণনার প্রসঙ্গে। সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে এইটুকু অবশ্যই বলবো - এই ফোরামে আসার পর রাম, লক্ষণ ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক মহান লেখকের নাম শুনে এসেছি এবং তাদের গল্পও পড়েছি। কিন্তু এইরকম quality writing skill কারোর মধ্যে আছে কিনা সন্দেহ। লিখতে থাকো বন্ধু সঙ্গে আছি।
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(22-08-2022, 09:31 PM)Bichitro Wrote: এতদিন পর আপডেট পড়ে বেশ ভালো লাগছে ....
নারীর সৌন্দর্য সাহিত্যিকদের হাতের লেখায় বা বর্ণনায়। কিন্তু এই সব অলঙ্কার বাচক শব্দ গুলোকে যদি একটা নারী মূর্তি তে প্রয়োগ করা যায় তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই নারী মূর্তি অগ্রহনযোগ্য হয়ে উঠবে । ভয় পাবে লোকে । ভালোবাসা তো দূরে থাক তাকে দেখে হার্ট এ্যাটাক ও হতে পারে [image] ।
গোগোলের সাথে নিশিথের কথোপকথন দারুন লাগছিল । বিশেষ করে গোগোলের কনফিডেন্স দেখে ... এতদিন ধরে এইসবের প্রস্তুতিই তো সে নিচ্ছিল .... প্রতিশোধের খেলা শুরু হয়ে গেছে তাহলে ... দেখা যাক ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে এগোয় ... গোগোলের বয়স ২০ , তার বেশি তো নয়...
হিয়ার একটু বর্ণনাতেই বোঝা গেছে সে গোগোল কে কতোটা ভালোবাসে ...
সুজাতা আর দাশগুপ্তের এ কি খেলা চলছে সেটাই দেখার ... দুজন দুই রকমের ... দেখা যাক এদের ঘটনা কোন দিকে যায়...
অনেক চরিত্র এসেছে , অনেক গেছে , তাতে যেন গল্পটা আরো বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছে
❤️❤️❤️
একজন সাহিত্যিকের দ্বারা নারীর সৌন্দর্যের বর্ণনায় ব্যবহৃত রূপক একজন পাঠকের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য এবং কতটা বর্জনের উপযোগী হয়ে উঠবে সেটা নির্ভর করে সেই পাঠকের রুচির উপর। একজন পাঠকের কাছে যা ভয়ের এবং হৃদযন্ত্র বিকলের কারণ বলে মনে হয়, অন্য পাঠকের কাছে তা অমৃতসম হতেই পারে।
দেখা যাক ভবিষ্যতে কোন দিকে এগোয় এই উপন্যাস।
Posts: 4,427
Threads: 6
Likes Received: 9,229 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(22-08-2022, 09:43 PM)Sanjay Sen Wrote: অনেক কিছু বলার আছে আজকের পর্ব নিয়ে। প্রথমেই আসি নামকরণের কথায়। আজকের পর্ব তিনটি আলাদা সিচুয়েশনের এবং সবক্ষেত্রেই আলাদা চরিত্রের উপর নির্ভর করে সাজানো হয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো নামকরণের মতো প্রতিটি ভাগের সঙ্গেই অপেক্ষা শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে।
• প্রথম ভাগে নিজেকে পাপমুক্ত করা এবং টগর নামের একটি মেয়ের সর্বনাশ করার অপেক্ষায় আছে নিশীথ বাবু। তার সঙ্গে গোগোল অপেক্ষায় আছে তারপর পরবর্তী শিকারের।
• দ্বিতীয় আগে এই উপন্যাসের নায়িকা হিয়া অপেক্ষায় আছে তার মনের মানুষের।
• তৃতীয় ভাগে ডাক্তার দাশগুপ্ত অপেক্ষায় আছে তার ভালোবাসা সুজাতাকে নিজের করে পাওয়ার, হয়তো এই অপেক্ষা তার সারা জীবন থাকবে।
আর সবশেষে 'কি হয় কি হয়' এটা জানতে চাতক পাখির মতন পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছে আমাদের মতো পাঠকেরা।
এবার আসি এই উপন্যাসের কাহিনী বিন্যাস, গতিপ্রকৃতি এবং কিছু মনোমুগ্ধকর বর্ণনার প্রসঙ্গে। সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে এইটুকু অবশ্যই বলবো - এই ফোরামে আসার পর রাম, লক্ষণ ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক মহান লেখকের নাম শুনে এসেছি এবং তাদের গল্পও পড়েছি। কিন্তু এইরকম quality writing skill কারোর মধ্যে আছে কিনা সন্দেহ। লিখতে থাকো বন্ধু সঙ্গে আছি। [image]
এমন কিছু ব্যক্তি থাকেন বা বলা ভালো পাঠক থাকেন যাঁদের সুচিন্তিত আর মার্জিত মন্তব্য এবং অবশ্যই তার সঙ্গে ভর্ৎসনা .. এই দুটোই ক্রমশ গ্রহণযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে থাকে লেখকের কাছে। ভালো বললে অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে পরবর্তী পর্ব লেখার অনুপ্রেরণা পাওয়া আর খারাপ বললে নিজেকে রেক্টিফাই করে নিয়ে নতুন উদ্যমে আবার শুরু করা। পাঠক সঞ্জয়ের সঙ্গে লেখক বুম্বার সম্পর্কটা অনেকটা এখন সেইরকম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পর্বের নামকরণ নিয়ে যে বিশ্লেষণ তুমি করলে এর পরে আর কিছুই বলার থাকতে পারে না। তবে শেষ কথাগুলো, অর্থাৎ বিশেষ কারোর নাম করে তুলনা টানার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। এই ফোরামে সব লেখকেরা (যারা আদৌ পাতে দেওয়ার যোগ্য, শুধুমাত্র তাদের কথা বলছি) নিজের মতো করে সেরা। তবে একজন পাঠকের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে একটা কথা অবশ্যই বলবো - আগের লেখাগুলির থেকে পরবর্তীতে এই ফোরামে যাঁরা এসেছেন যেমন Jupiter10 , Nextpage , Nandanadasnandana , Baban ইত্যাদি ইত্যাদি .. এঁদের লেখা অনেক উন্নতমানের। সঙ্গে থাকো, পড়তে থাকো
Posts: 1,172
Threads: 3
Likes Received: 1,396 in 934 posts
Likes Given: 3,658
Joined: Apr 2022
Reputation:
150
22-08-2022, 11:14 PM
(This post was last modified: 23-08-2022, 12:32 AM by Boti babu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
এখনও পর্বটা পড়িনি বুম্বা দা পড়ে পড়বো কিছু কথা বলার ছিল তাই, আচ্ছা আপনাকে সব পাঠকরা লেখকরা এত ভালো পাই কেন ???
আমার মনে হয় এক আপনি কথা দিয়ে কথা রাখেন। অন্য লেখকদের মতো নিজের লেখার উপর দেমাক দেখান না যখনই আপনার পাঠকরা কোনো কমেন্ট করে আপনি রিপলাই ঠিক দেন । আপনার নিজের যতই অসুবিধা থাকুক শারীরিক ও মানসিক ভাবে কিন্তু গল্পের পর্ব ঠিক সময়ে আপডেট চলে আসে। কখনও দেখিনি আপনাকে কোনো লেখকের লেখা নিয়ে বা উদ্দেশ্যে খারাপ কিছু বলতে। কোনো পাঠকের সাথে মাথা গরম করে দুর্ব্যবহার করতে।
লেখা নিয়ে কি আর বলবো আপনার লেখা পড়ে কেমন প্রভাব পড়ে শরীরে একটা দৃশ্য থেকে বুঝতে পারেন যখন আপনার লেখা পড়ি একটা হাত থাকে পেন্টের ভেতরে আর বারবার বুকে মোচড় যেন কি হয় কি হয় । টেনশন জন্য কয়টা সিগারেট শেষ হয় ঐ সময় নিজের মনে জানি না, এটা কিন্তু প্রতি পর্বে হয়।
এমনই থাকবেন সব সময় দাদা ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এই ভাবেই আপনার পাঠকদের আনন্দ দিয়ে যান এই আশাই সব সময় করবো।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
|