25-07-2025, 04:26 PM
(This post was last modified: 25-07-2025, 04:35 PM by কাদের. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ছ
শমিষ্ঠা পানি থেকে উঠে রুমে আসর পর গত দুই তিন ঘন্টায় নিজের আচরণ চিন্তা করে। কোন ব্যাখ্যা পায় না। সুন্দরীদের পিছনে সব সময় ছেলেরা ঘুরে। শমিষ্ঠার পিছনেও ঘুরেছে তবে পাত্তা পায় নি কখনো। জানতেন বাড়িতে এইসব মানবে না। স্নাতকে পড়ার সময় অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিল পরিবার। অবশ্য অখুশী হয় নি শমিষ্ঠা চেহারা যোগ্যতায় অনেক ভাল সৌমেন। এরপর পড়াশুনার পাট চুকিয়ে চাকরির সময়ে অনেক কলিগ পিছনে ঘুরেছে। ইনফ্যাক্ট এখনো লাইন মারার চেষ্টা করে। তবে পাত্তা দেন নি কখনো। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ছেলেরা তার পিছনে ঘুরে এটা একটা ভাল লাগার অনুভূতি তৈরি করেছে সব সময়। কিন্তু লাইন কখনো ক্রস করেন নি আজকের আগ পর্যন্ত। মাহফুজ আর সিনথিয়া কাপলটা কে শুরু থেকে চমৎকার লেগেছে তার। একটাই ছেলে তার। এক বছর আগে বিয়ে করেছে। ছেলের বউ এর সাথে চমৎকার সম্পর্ক। ছেলের বউ এক প্রকার জোর করে তাদের এই সেকেন্ড হানিমুনে পাঠিয়েছে। সৌমিকের সাথে বিয়ের পর কোথায় যায় নি ঘুরতে হানিমুনে এটা শুনে। এমনিতেও একটা ঘোরাঘুরির প্লান ছিল সৌমিক আর তার। ছেলে আর ছেলের বউ এর জোড়াজুড়িতে এই সেকেন্ড হানিমুন। সেসনা প্লেনে বসতেই এই বাংলাদেশী সুদর্শন কাপল কে চোখে পড়েছিল। কথা বলতে বলতে অল্প সময়ে ভাব জমে গেছে। সেই জন্য আজকের পানিতে নামা ওদের সাথে। কিন্তু পানি যেন তার ভিতরের এত দিনের থাকা সংস্কার কে ভাসিয়ে দিয়েছে। নাইলে মাহফুজ পানির সামনে যখন গেঞ্জি খুলল তখন পেটানো শরীরটা দেখে কেন বুকের ভিতর এক ধরনের জেলাসি ফিল করেছিল। তার বিয়ের সময় সঞ্জয় দত্ত ছিল তার প্রিয় নায়ক। নব্বই এর দশকের শুরুর সঞ্জয় দত্তের সেই রুক্ষ হ্যান্ডসাম ভাবটা মাহফুজের ভিতর প্রবল। তাই গেঞ্জি খোলার পর পেটানো শরীরটা দেখে তার কেন জেন জেলাসি ফিল হয়েছিল। নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে। মাহফুজ তার ছেলে অভীকের থেকে দুই তিন বছরের বড় হতে পারে। ছেলের বয়সী এই ছেলে কে দেখে কেন বুকের মাঝে এমন জেলাসি হল। এরপর এই সিনথিয়া। পাগল একটা মেয়ে। হাসিখুশি চঞ্চল। যেখানে যায় চারপাশ মাতিয়ে রাখে। এমন মানুষ কে না ভালবেসে পারা যায় না। মেয়েটাও আজকে কেমন যেন টিজ করছিল ওকে। শমিষ্ঠার মনে হচ্ছিল কলেজ কলেজের দিন গুলোতে ফেরত গিয়েছিল সেই সময়টাতে। বান্ধবীরা যেমন অন্য ছেলেদের নিয়ে টিজ করত। সমুদ্রের পানি আর বাতাস যেন বয়স কমিয়ে দিয়েছিল সেই সময়টাতে। তার উপর নিজের বউয়ের সামনে মাহফুজের হাত তার উপর পড়ছে এটা যেন আর উত্তেজনা দ্বিগুণ করে দিয়েছিল। নিজে পাভার্ট মনে হতে থাকে তার। তবে টের পায় দুই পায়ের মাঝে একদম ভিজে চপচপ করছে। লাস্ট দশ পনের বছরে এমন ভিজেনি দুই পায়ের মাঝে। উফফ কি হচ্ছে কি তার সাথে এইসব। কার সাথে যে শেয়ার করবেন এমন নয়া। তবে নিজেকে এই বলে সান্তনা দেন যে আর মাত্র একদিন। ওদের সাথে আর কখনো দেখা হবে না। এই একটা দিন শুধু নিজেকে সামলে রাখতে পারলে হবে।
সেইদিন রাতের ডিনারটাও এক সাথে করে দুই যুগল। ডিনারের সময় শমিষ্ঠা খেয়াল করে মাহফুজ ওকে আলাদা করে সমাদর করছে। এটা কি নরমাল ভদ্রতা নাকি এর মাঝে কিছু আছে? শমিষ্ঠার অভিজ্ঞ চোখ বুঝতে পারে না। মাহফুজ শেয়ার বাজার, করপোরেট কালচার এইসব নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকে। প্রিয় টপিক পেয়ে সৌমিক মন খুলে কথা বলতে থাকে। একটু রাগ হয় শমিষ্ঠার। সৌমিক তার প্রিয় বিষয় পেলে স্থান কাল পাত্র ভুলে যায়। শমিষ্ঠা একবার মাঝে বলার চেষ্টা করে তোমার জ্ঞান একটু কম দাও তো, ওরা হানিমুনে এসে এই বুড়ো বুড়িদের লেকচার শুনবে নাকি। মাহফুজ বলে আরে না, না আমার তো ভাল লাগছে বলে প্রশ্ন করছি এত। সিনথিয়া বলে আরে আমাদের হানিমুন স্মৃতির একটা ভাল স্মৃতি হিসেবে তোমরা থাকবে। সিনথিয়ার চোখের কোণায় হাসির আভাস। এই কথার কি আর অন্য কোন মানে হয়? নাকি শুধু শুধু অতিরিক্ত ভাবছে ও। সৌমিক বলে দেখেছ ডিয়ার তুমি প্রফেসর বলে কি জ্ঞান দান তুমি একা করবে, আমারো অধিকার আছে প্রফেসরের অর্ধাংগ হিসেবে জ্ঞান দান করার। কথা শুনে টেবিলের সবাই হেসে উঠে। মাহফুজ বলে আমার তো শুনতে কোন অসুবিধা নেই তবে আপনি তো বিজি থাকবেন আগামীকাল। সৌমিক বলে হ্যা আগামীকাল সকাল থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটা অনলাইন কনফারেন্সে থাকতেই হবে। তোমরা ঘোরাঘুরি কর। শমিষ্ঠা ঠোট বাকিয়ে বলল এত বছর পর একটা হানিমুন পেলাম সেখানে এসেও তোমার কাজ করা লাগবে। সৌমিক বলল ইউ নো আই ক্যান নট এভয়েড দিস মিটিং। স্যরি ডিয়ার। সিনথিয়া বলল আরে তোমার সাথে না কথা হল আগামীকাল আমরা এক সাথে কাটাবো। আজকের সমুদ্রে গোসলের পর একটু ডাউট হচ্ছিল আবার এক সাথে সময় কাটানোর ওদের সাথে যখন সৌমিক থাকবে না। তবে সেই মূহুর্তে সৌমিকের মিটিং এর কথা উঠায় একটু রাগ লাগছিল। আবার তার মনে হচ্ছিল তার মনে সব কিছু বুঝি কষ্ট কল্পনা। হয়ত সমুদ্রে ঢেউয়ের মাঝে স্পর্শ গুলো অনিচ্ছাকৃত। আর সে নিজেও তো মানা করে নি। সিনথিয়া নিজেও সব দেখছিল। একটা বউ কি তার বর কে অন্য কোন মহিলার সাথে অন্তরংগ হতে দিতে পারে? সম্ভব না। তাই শমিষ্ঠা বলে ওকে তাহলে তোমাদের হানিমুন থেকে আমি আগামীকালটা ধার নিলাম। সিনথিয়া হেসে বলল অবশ্যই। আমি কথা দিলাম তোমার হানিমুনের বেস্ট দিন হবে আগামীকাল। কি বল মাহফুজ? মাহফুজ হাসে এবং মাথা নাড়ায়।
পরের দিন সকালে আটটায় ব্রেকফাস্টের সময় দেখা হয়ে যায় দুই যুগলের। এক টেবিলে বসে বসে খেতে খেতে কথা হল। তবে সৌমিক কে দ্রুত যেতে হল। গতকাল রাতেই কথা হয়েছিল আজকে কিছু এক্টিভিটিস করার চেষ্টা করবে ওরা। রিসোর্টের পাশেই ওয়াটার এক্টিভিটিস আছে। প্যারা গ্লাইডিং, প্যরা সেইলিং, জেট স্কি আর নানা রকম। শমিষ্ঠা এক জোড়া এক্সট্রা কাপড় নিয়ে এসেছে। যাতে এক্টিভিটিসের কারণে জামা ভিজলে চেঞ্জ করতে পারে। তবে কাপড়ের ব্যাগটা সিনথিয়াদের ভিলায় রাখল কারণ সৌমিক মিটিং করবে ফলে সেখানে ঢুকে ডিস্টার্ব করা লাগবে না। এরপর হেটে হেটে সিনথিয়া, শমিষ্ঠা আর মাহফুজ মিলে গল্প করতে করতে ওয়াটার এক্টিভিটিস এর দিকে গেল। সকালের সুন্দর বাতাসে শমিষ্ঠার মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল। সিনথিয়া হাটতে হাটতে বলল তুমি কিন্তু হাফ প্যান্ট পড়লে পারতে তাহলে সুবিধা হত। শমিষ্ঠা বলল এই বয়সে হাফ প্যান্ট পড়লে কি বলবে লোকে। সিনথিয়া বলল তুমি পুরো আমার আম্মুর মত কথা বল। শমিষ্ঠা হেসে উত্তর দিল আমার বয়স তো তোমার মা এর থেকে বেশি হবে। সিনথিয়া বলে তাও। শমিষ্ঠা বলে আরে কাপড়ে কি এসে যায়। সিনথিয়া শমিষ্ঠা কে আরেকটু ইজি আর ফ্রি করতে চাইছিল ওর সাথে। তবে টের পায় এই ব্যাপারে আর বেশি চাপাচাপি করা ঠিক হবে না। সিনথিয়া বুকের মাঝে একটা থ্রিল অনুভব করে। বিকাল চারটা পর্যন্ত সময় আছে। এই সাত সাড়ে সাত ঘন্টার মাঝে কি পারবে ও সিচুয়েশন ক্রিয়েট করতে যাতে মাহফুজের হাতে ধরাশায়ী হয় শমিষ্ঠা? সব সময় অসম্ভব এমন সব সিচুয়েশন ক্রিয়েট করে থ্রিল অনুভব করতে মজা পায় সিনথিয়া। অন্যদিকে মাহফুজ আজকে চুপচাপ একটু। সিনথিয়ার প্রপোজালটা থ্রিলিং কিন্তু মাহফুজের কাছে মনে হয় বিপদজনক। তবে এই থ্রিল আর বিপদের মিশ্রণ মাহফুজের ভিতরে এড্রোলিন বাড়িয়ে দেয়। তাই ও নিজেও উত্তেজিত ভিতরে। মাহফুজের মনে হয় পারলে ভাল না পারলেও ক্ষতি নেই। কারণ এটা সিনথিয়ার ফ্যান্টাসি। তবে যদি সত্যি সত্যি এমন কিছু হয়ে যায় তাহলে কি হবে সেটা ভাবতেই গায়ে একটা কাটা দেয় ওর।
ওয়াটার এক্টিভিটিস এর এখানে এসে শমিষ্ঠা দোমনা করতে থাকে। উঠবে কি উঠবে না কোন রাইডে। সাতার পারে না তার উপর পানি নিয়ে একটু ভীতি আছে। ফলে মনে উতসাহ থাকলেও সাহসে কুলায় না। সিনথিয়া আর মাহফুজ মিলে খুব উতসাহ দেয় তাতেও কাজ হয় না। ফলে কিছুক্ষণ আলোচনার পর ঠিক হয় স্পিড বোড রাইড নিবে ওরা। এটাতে একটু কম ভয় শমিষ্ঠার। তাই উঠে বসে ওরা। শুরু হয় রাইড। প্রথমে কিছুক্ষণ নরমাল থাকলেও যতটা গভীরে যেতে থাকে ঢেউ এর তালে তালে স্পিডবোট ততটা দুলতে থাকে। দুইপাশে মাহফুজ আর সিনথিয়ার হাত কে শক্ত করে খামচে ধরে শমিষ্ঠা। হাসতে থাকে সিনথিয়া মাহফুজ। দুইজনে শমিষ্ঠা কে উতসাহ দিতে থাকে। শমিষ্ঠার ভয় তাও কমে না। তবে ঢেউ সব সময় একটা নির্দিষ্ট তালে আসে। বেশ কিছুক্ষণ পানিতে থাকলে অভ্যস্ত হয়ে আসে শরীর মন। শমিষ্ঠার তাই হল। একটু পর ধীরে ধীরে শরীর অভ্যস্ত হয়ে আসল প্রতি দশ পনের সেকেন্ড পর পর ঢেউ আর তার তালে তালে স্পিড বোডের ছোট্ট একটা লাফ আর তারপর ধপাস করে পানিতে পড়া। ধীরে ধীরে মাহফুজ আর সিনথিয়ার সাথে সাথে শমিষ্ঠাও গল্পে মশগুল হয়ে পড়ল। প্রতিটা ঢেউ আসলেই তারা তিন জন একসাথে চিতকার দিয়ে উঠে আর ঢেউ শেষে স্পিডবোট আছড়ে পড়লে একসাথে খিল খিল করে হাসতে থাকে। আধা ঘন্টার রাইড ছিল। রাইড শেষে শমিষ্ঠার ভয় কিছুটা কমে। সিনথিয়া বলে কি বলেছিলাম না তোমাকে মজা পাবে। শমিষ্ঠা মাথা নাড়িয়ে সায় দেয় আসলেই থ্রিল ফিল করেছে সে। এরপর আসে জেট স্কির পালা। এবারো উঠবে না শমিষ্ঠা প্রথমে। তাই ওকে দেখানোর জন্য প্রথমবার মাহফুজ আর সিনথিয়া উঠল। মাহফুজ চালাচ্ছে আর সিনথিয়া পিছনে বসে আছে। বেশ কিছুক্ষণ চালানোর পর ফেরত আসল ওরা। শমিষ্ঠা কে আবার রিকোয়েস্ট করল। শমিষ্ঠা এইবার কিছুটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। সিনথিয়া বলল তিনজন মিলে যাব। মাহফুজ চালাবে। তুমি মাঝে আর আমি পিছনে বসে তোমাকে জড়িয়ে রাখব যাতে পড়ে না যাও। বাইক রাইডের মত। বেশ কিছুক্ষণ বুঝানোর পর রাজি হল শমিষ্ঠা। উঠার পর মাহফুজ কে ছোট বাচ্চার মত জড়িয়ে থাকল। সিনথিয়া অভয় দেবার জন্য পিছন থেকে আগলে রাখল। মাহফুজ এইবার রাইডে খুব বেশি কারিক্কুরি করল না যাতে শমিষ্ঠা ভয় না পায়। পাচ মিনিটের রাইড। শেষ করার পর সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল কেমন লেগেছে? শমিষ্ঠা বলল ভাল। মাহফুজ সিনথিয়া টের পেল ভয় একটু কমেছে। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল আরেকটা রাইডের জন্য রেডি কিনা। শমিষ্ঠা মাথা নাড়ল। এইবার সেকেন্ড রাইড শুরু করল। মাহফুজ এইবার স্বভাবমত রাইডে বেশ কারিকুরি করল। শার্প টার্ন, ঢেউয়ের উপর জেট স্কি নিয়ে উঠে পড়া। প্রতিটা বিপদজনক স্টান্টে শমিষ্ঠা মাহফুজ কে একদম আকড়ে ধরে আর মাহফুজ টের পায় শমিষ্ঠার বিশাল দুটো স্তন ওর পিঠে একদম গেথে যাচ্ছে। শমিষ্ঠা গতকালের মত লেগিংস আর গেঞ্জি পড়া। পিছন থেকে সিনথিয়া ইচ্ছা করে আর চেপে দিচ্ছে শমিষ্ঠার শরীর মাহফুজের গায়ে। তাই মাহফুজ টের পাচ্ছে বড় দুই স্তনের অস্তিত্ব। তার উপর শমিষ্ঠা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে পেটের কাছে। বেশ একটা সুরসুরি অনুভূতি হচ্ছে ওর। এই রাইড শেষে বুঝা গেল শমিষ্ঠা বেশ খুশি। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল এটা কি ওর হানিমুনের বেস্ট দিন কিনা? শমিষ্ঠা হেসে বলল নো ডাউট। সৌমিকের সাথে এসে খালি আশেপাশে ঘুরে দেখা আর বিচে বসে বই পড়া ছাড়া তেমন কিছু করা হয় নি। সেই তুলনায় গত এক ঘন্টায় ওর দশ বছরের এক্টিভিটিস করা হয়ে গেছে। হাসল মাহফুজ আর সিনথিয়া। সিনথিয়া বলল এখনো অনেক সময় বাকি। আজকের পর হানিমুনের এই দিনটার কথা শমিষ্ঠা কোন দিন ভুলবে না। এটা হবে তার জীবনের বেস্ট মেমরি। শমিষ্ঠা বলল দেখা যাক। মাহফুজ টের পায় সিনথিয়ার চোখের কোণে দুষ্টমি হাসি।
এরপর ঠিক হল শমিষ্ঠা আর মাহফুজ মিলে যাবে জেট স্কিতে। সিনথিয়া বলল ওর একটু ওয়াশরুমে যাবার দরকার। মাহফুজ বুঝল সিনথিয়া ওদের কে একটু একা টাইম দিতে চাচ্ছে। যাওয়ার সময় সিনথিয়া চোখের ইশারা দিল সময়টা কাজে লাগাতে। মাহফুজ এইবার শুরু করল ওর রাইড। যত রকম কারিকুরি আছে সব দেখানো শুরু করল এই রাইডে। শমিষ্ঠা শিশুর মত চিতকার শুরু করল। মাহফুজ কে আকড়ে ধরল শক্ত করে। শমিষ্ঠার শরীরের উত্তাপ ওর গায়ে লাগছে ভাল মত। মাহফুজের শরীর গরম হতে শুরু করেছে। শমিষ্ঠার স্তন একদম লেপ্টে আছে মাহফুজের গায়ে। শমিষ্ঠার সেই দিকে খেয়াল নেই। মাহফুজ কে ভাল ভাবে আকড়ে ধরে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছে শমিষ্ঠা। শমিষ্ঠার এক দিকে ভয় লাগছে অন্যদিকে পানির এই রাইডে থ্রিল লাগছে। সত্য কথা হল শমিষ্ঠার জীবন নরমাল বাংগালী মধ্যবিত্ত জীবন। এখানে স্ট্যাবিলিটি অনেক কিন্তু থ্রিল নেই বললেই চলে। তাই আজকের দিনে এই কম বয়সী দু’টো ছেলে মেয়ের পাল্লায় পড়ে শমিষ্ঠার মনে হল সে যেন কলেজ জীবনে ফিরে গেছে। উপভোগ করছে সময়। একটু পর শমিষ্ঠা খেয়াল করল কিভাবে নির্লজ্জের মত জোয়ান একটা ছেলে কে জড়িয়ে রেখেছে সে। একটু হালকা করে ধরে দুই শরীরের দূরত্ব বাড়াতে চাইল তবে সফল হল না। মাহফুজের জেট স্কি শার্প টার্ন নিচ্ছে ফলে না চাইলেও শক্ত করে ধরে রাখতে হচ্ছে। সৌমিকের শরীর বিয়ের পাচ বছরের মধ্যে মেদ জমা করতে শুরু করেছিল। ফলে শেষ কবে এমন একটা শক্তপোক্ত শরীর জড়িয়ে ধরেছে মনে করতে পারছে না শমিষ্ঠা। এই থ্রিল রাইডের ফলে শরীরে এড্রোলিন রাশ হয়েছে অনেক। এড্রোলিন শরীরে অনেক সময় এলকোহলের কাজ করে। নরমাল সময়ে মানুষ যা করে না এড্রোলিন রাশ সেই কাজটা ইজি করে দেয়। শমিষ্ঠার মনে হয় এটা নির্দোষ হাগ। ঠিক ভাবে না ধরে রাখলে পড়ে যাবে ও। সিনথিয়া ফেরত আসার আগে তিন টা রাইড কমপ্লিট করল শমিষ্ঠা মাহফুজ। প্রতিটা রাইডের সাথে সাথে শমিষ্ঠার মনে হল ওর শরীরে যেনা আর বেশি উত্তেজনা শুরু হচ্ছে। সিনথিয়া আসার পর জেট স্কি রাইড শেষ হল। মাহফুজ যখন জেট স্কি বুঝিয়ে দিচ্ছে তখন সিনথিয়া শমিষ্ঠা কে ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করল কেমন হল রাইড। হেসে উত্তর দিল শমিষ্ঠা খুব ভাল। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল মাহফুজ কে ভাল মত জড়িয়ে ধরেছিল তো। ইনসেন্ট মনে শমিষ্ঠা বলল হ্যা,বাবা নাইলে তো পড়ে যেতাম। সিনথিয়া বলল মাহফুজের শরীরটা দারুণ না, একদম শক্ত পাথরের মত। শমিষ্ঠা একটু লাল হলেও বলল হ্যা ওর ফিগারটা ভাল। সিনথিয়া একটা চোখ টিপ দিয়ে বলল গ্লাড টু শেয়ার। শমিষ্ঠা আর লাল হল। সিনথিয়া বলল আরে লজ্জা পাচ্ছ কেন। প্রাকটিক্যালি আমরা আজকে বান্ধবী। বান্ধবী যদি বান্ধবী কে একটু টিজ করে কে করবে বল। শমিষ্ঠা মেনে নিল কথাটা। বলল তাহলে আমাকে বরং নাম ধরেই ডাক। সিনথিয়া মেনে নিল।
শমিষ্ঠা পানি থেকে উঠে রুমে আসর পর গত দুই তিন ঘন্টায় নিজের আচরণ চিন্তা করে। কোন ব্যাখ্যা পায় না। সুন্দরীদের পিছনে সব সময় ছেলেরা ঘুরে। শমিষ্ঠার পিছনেও ঘুরেছে তবে পাত্তা পায় নি কখনো। জানতেন বাড়িতে এইসব মানবে না। স্নাতকে পড়ার সময় অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিল পরিবার। অবশ্য অখুশী হয় নি শমিষ্ঠা চেহারা যোগ্যতায় অনেক ভাল সৌমেন। এরপর পড়াশুনার পাট চুকিয়ে চাকরির সময়ে অনেক কলিগ পিছনে ঘুরেছে। ইনফ্যাক্ট এখনো লাইন মারার চেষ্টা করে। তবে পাত্তা দেন নি কখনো। হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ছেলেরা তার পিছনে ঘুরে এটা একটা ভাল লাগার অনুভূতি তৈরি করেছে সব সময়। কিন্তু লাইন কখনো ক্রস করেন নি আজকের আগ পর্যন্ত। মাহফুজ আর সিনথিয়া কাপলটা কে শুরু থেকে চমৎকার লেগেছে তার। একটাই ছেলে তার। এক বছর আগে বিয়ে করেছে। ছেলের বউ এর সাথে চমৎকার সম্পর্ক। ছেলের বউ এক প্রকার জোর করে তাদের এই সেকেন্ড হানিমুনে পাঠিয়েছে। সৌমিকের সাথে বিয়ের পর কোথায় যায় নি ঘুরতে হানিমুনে এটা শুনে। এমনিতেও একটা ঘোরাঘুরির প্লান ছিল সৌমিক আর তার। ছেলে আর ছেলের বউ এর জোড়াজুড়িতে এই সেকেন্ড হানিমুন। সেসনা প্লেনে বসতেই এই বাংলাদেশী সুদর্শন কাপল কে চোখে পড়েছিল। কথা বলতে বলতে অল্প সময়ে ভাব জমে গেছে। সেই জন্য আজকের পানিতে নামা ওদের সাথে। কিন্তু পানি যেন তার ভিতরের এত দিনের থাকা সংস্কার কে ভাসিয়ে দিয়েছে। নাইলে মাহফুজ পানির সামনে যখন গেঞ্জি খুলল তখন পেটানো শরীরটা দেখে কেন বুকের ভিতর এক ধরনের জেলাসি ফিল করেছিল। তার বিয়ের সময় সঞ্জয় দত্ত ছিল তার প্রিয় নায়ক। নব্বই এর দশকের শুরুর সঞ্জয় দত্তের সেই রুক্ষ হ্যান্ডসাম ভাবটা মাহফুজের ভিতর প্রবল। তাই গেঞ্জি খোলার পর পেটানো শরীরটা দেখে তার কেন জেন জেলাসি ফিল হয়েছিল। নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে। মাহফুজ তার ছেলে অভীকের থেকে দুই তিন বছরের বড় হতে পারে। ছেলের বয়সী এই ছেলে কে দেখে কেন বুকের মাঝে এমন জেলাসি হল। এরপর এই সিনথিয়া। পাগল একটা মেয়ে। হাসিখুশি চঞ্চল। যেখানে যায় চারপাশ মাতিয়ে রাখে। এমন মানুষ কে না ভালবেসে পারা যায় না। মেয়েটাও আজকে কেমন যেন টিজ করছিল ওকে। শমিষ্ঠার মনে হচ্ছিল কলেজ কলেজের দিন গুলোতে ফেরত গিয়েছিল সেই সময়টাতে। বান্ধবীরা যেমন অন্য ছেলেদের নিয়ে টিজ করত। সমুদ্রের পানি আর বাতাস যেন বয়স কমিয়ে দিয়েছিল সেই সময়টাতে। তার উপর নিজের বউয়ের সামনে মাহফুজের হাত তার উপর পড়ছে এটা যেন আর উত্তেজনা দ্বিগুণ করে দিয়েছিল। নিজে পাভার্ট মনে হতে থাকে তার। তবে টের পায় দুই পায়ের মাঝে একদম ভিজে চপচপ করছে। লাস্ট দশ পনের বছরে এমন ভিজেনি দুই পায়ের মাঝে। উফফ কি হচ্ছে কি তার সাথে এইসব। কার সাথে যে শেয়ার করবেন এমন নয়া। তবে নিজেকে এই বলে সান্তনা দেন যে আর মাত্র একদিন। ওদের সাথে আর কখনো দেখা হবে না। এই একটা দিন শুধু নিজেকে সামলে রাখতে পারলে হবে।
সেইদিন রাতের ডিনারটাও এক সাথে করে দুই যুগল। ডিনারের সময় শমিষ্ঠা খেয়াল করে মাহফুজ ওকে আলাদা করে সমাদর করছে। এটা কি নরমাল ভদ্রতা নাকি এর মাঝে কিছু আছে? শমিষ্ঠার অভিজ্ঞ চোখ বুঝতে পারে না। মাহফুজ শেয়ার বাজার, করপোরেট কালচার এইসব নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকে। প্রিয় টপিক পেয়ে সৌমিক মন খুলে কথা বলতে থাকে। একটু রাগ হয় শমিষ্ঠার। সৌমিক তার প্রিয় বিষয় পেলে স্থান কাল পাত্র ভুলে যায়। শমিষ্ঠা একবার মাঝে বলার চেষ্টা করে তোমার জ্ঞান একটু কম দাও তো, ওরা হানিমুনে এসে এই বুড়ো বুড়িদের লেকচার শুনবে নাকি। মাহফুজ বলে আরে না, না আমার তো ভাল লাগছে বলে প্রশ্ন করছি এত। সিনথিয়া বলে আরে আমাদের হানিমুন স্মৃতির একটা ভাল স্মৃতি হিসেবে তোমরা থাকবে। সিনথিয়ার চোখের কোণায় হাসির আভাস। এই কথার কি আর অন্য কোন মানে হয়? নাকি শুধু শুধু অতিরিক্ত ভাবছে ও। সৌমিক বলে দেখেছ ডিয়ার তুমি প্রফেসর বলে কি জ্ঞান দান তুমি একা করবে, আমারো অধিকার আছে প্রফেসরের অর্ধাংগ হিসেবে জ্ঞান দান করার। কথা শুনে টেবিলের সবাই হেসে উঠে। মাহফুজ বলে আমার তো শুনতে কোন অসুবিধা নেই তবে আপনি তো বিজি থাকবেন আগামীকাল। সৌমিক বলে হ্যা আগামীকাল সকাল থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটা অনলাইন কনফারেন্সে থাকতেই হবে। তোমরা ঘোরাঘুরি কর। শমিষ্ঠা ঠোট বাকিয়ে বলল এত বছর পর একটা হানিমুন পেলাম সেখানে এসেও তোমার কাজ করা লাগবে। সৌমিক বলল ইউ নো আই ক্যান নট এভয়েড দিস মিটিং। স্যরি ডিয়ার। সিনথিয়া বলল আরে তোমার সাথে না কথা হল আগামীকাল আমরা এক সাথে কাটাবো। আজকের সমুদ্রে গোসলের পর একটু ডাউট হচ্ছিল আবার এক সাথে সময় কাটানোর ওদের সাথে যখন সৌমিক থাকবে না। তবে সেই মূহুর্তে সৌমিকের মিটিং এর কথা উঠায় একটু রাগ লাগছিল। আবার তার মনে হচ্ছিল তার মনে সব কিছু বুঝি কষ্ট কল্পনা। হয়ত সমুদ্রে ঢেউয়ের মাঝে স্পর্শ গুলো অনিচ্ছাকৃত। আর সে নিজেও তো মানা করে নি। সিনথিয়া নিজেও সব দেখছিল। একটা বউ কি তার বর কে অন্য কোন মহিলার সাথে অন্তরংগ হতে দিতে পারে? সম্ভব না। তাই শমিষ্ঠা বলে ওকে তাহলে তোমাদের হানিমুন থেকে আমি আগামীকালটা ধার নিলাম। সিনথিয়া হেসে বলল অবশ্যই। আমি কথা দিলাম তোমার হানিমুনের বেস্ট দিন হবে আগামীকাল। কি বল মাহফুজ? মাহফুজ হাসে এবং মাথা নাড়ায়।
পরের দিন সকালে আটটায় ব্রেকফাস্টের সময় দেখা হয়ে যায় দুই যুগলের। এক টেবিলে বসে বসে খেতে খেতে কথা হল। তবে সৌমিক কে দ্রুত যেতে হল। গতকাল রাতেই কথা হয়েছিল আজকে কিছু এক্টিভিটিস করার চেষ্টা করবে ওরা। রিসোর্টের পাশেই ওয়াটার এক্টিভিটিস আছে। প্যারা গ্লাইডিং, প্যরা সেইলিং, জেট স্কি আর নানা রকম। শমিষ্ঠা এক জোড়া এক্সট্রা কাপড় নিয়ে এসেছে। যাতে এক্টিভিটিসের কারণে জামা ভিজলে চেঞ্জ করতে পারে। তবে কাপড়ের ব্যাগটা সিনথিয়াদের ভিলায় রাখল কারণ সৌমিক মিটিং করবে ফলে সেখানে ঢুকে ডিস্টার্ব করা লাগবে না। এরপর হেটে হেটে সিনথিয়া, শমিষ্ঠা আর মাহফুজ মিলে গল্প করতে করতে ওয়াটার এক্টিভিটিস এর দিকে গেল। সকালের সুন্দর বাতাসে শমিষ্ঠার মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল। সিনথিয়া হাটতে হাটতে বলল তুমি কিন্তু হাফ প্যান্ট পড়লে পারতে তাহলে সুবিধা হত। শমিষ্ঠা বলল এই বয়সে হাফ প্যান্ট পড়লে কি বলবে লোকে। সিনথিয়া বলল তুমি পুরো আমার আম্মুর মত কথা বল। শমিষ্ঠা হেসে উত্তর দিল আমার বয়স তো তোমার মা এর থেকে বেশি হবে। সিনথিয়া বলে তাও। শমিষ্ঠা বলে আরে কাপড়ে কি এসে যায়। সিনথিয়া শমিষ্ঠা কে আরেকটু ইজি আর ফ্রি করতে চাইছিল ওর সাথে। তবে টের পায় এই ব্যাপারে আর বেশি চাপাচাপি করা ঠিক হবে না। সিনথিয়া বুকের মাঝে একটা থ্রিল অনুভব করে। বিকাল চারটা পর্যন্ত সময় আছে। এই সাত সাড়ে সাত ঘন্টার মাঝে কি পারবে ও সিচুয়েশন ক্রিয়েট করতে যাতে মাহফুজের হাতে ধরাশায়ী হয় শমিষ্ঠা? সব সময় অসম্ভব এমন সব সিচুয়েশন ক্রিয়েট করে থ্রিল অনুভব করতে মজা পায় সিনথিয়া। অন্যদিকে মাহফুজ আজকে চুপচাপ একটু। সিনথিয়ার প্রপোজালটা থ্রিলিং কিন্তু মাহফুজের কাছে মনে হয় বিপদজনক। তবে এই থ্রিল আর বিপদের মিশ্রণ মাহফুজের ভিতরে এড্রোলিন বাড়িয়ে দেয়। তাই ও নিজেও উত্তেজিত ভিতরে। মাহফুজের মনে হয় পারলে ভাল না পারলেও ক্ষতি নেই। কারণ এটা সিনথিয়ার ফ্যান্টাসি। তবে যদি সত্যি সত্যি এমন কিছু হয়ে যায় তাহলে কি হবে সেটা ভাবতেই গায়ে একটা কাটা দেয় ওর।
ওয়াটার এক্টিভিটিস এর এখানে এসে শমিষ্ঠা দোমনা করতে থাকে। উঠবে কি উঠবে না কোন রাইডে। সাতার পারে না তার উপর পানি নিয়ে একটু ভীতি আছে। ফলে মনে উতসাহ থাকলেও সাহসে কুলায় না। সিনথিয়া আর মাহফুজ মিলে খুব উতসাহ দেয় তাতেও কাজ হয় না। ফলে কিছুক্ষণ আলোচনার পর ঠিক হয় স্পিড বোড রাইড নিবে ওরা। এটাতে একটু কম ভয় শমিষ্ঠার। তাই উঠে বসে ওরা। শুরু হয় রাইড। প্রথমে কিছুক্ষণ নরমাল থাকলেও যতটা গভীরে যেতে থাকে ঢেউ এর তালে তালে স্পিডবোট ততটা দুলতে থাকে। দুইপাশে মাহফুজ আর সিনথিয়ার হাত কে শক্ত করে খামচে ধরে শমিষ্ঠা। হাসতে থাকে সিনথিয়া মাহফুজ। দুইজনে শমিষ্ঠা কে উতসাহ দিতে থাকে। শমিষ্ঠার ভয় তাও কমে না। তবে ঢেউ সব সময় একটা নির্দিষ্ট তালে আসে। বেশ কিছুক্ষণ পানিতে থাকলে অভ্যস্ত হয়ে আসে শরীর মন। শমিষ্ঠার তাই হল। একটু পর ধীরে ধীরে শরীর অভ্যস্ত হয়ে আসল প্রতি দশ পনের সেকেন্ড পর পর ঢেউ আর তার তালে তালে স্পিড বোডের ছোট্ট একটা লাফ আর তারপর ধপাস করে পানিতে পড়া। ধীরে ধীরে মাহফুজ আর সিনথিয়ার সাথে সাথে শমিষ্ঠাও গল্পে মশগুল হয়ে পড়ল। প্রতিটা ঢেউ আসলেই তারা তিন জন একসাথে চিতকার দিয়ে উঠে আর ঢেউ শেষে স্পিডবোট আছড়ে পড়লে একসাথে খিল খিল করে হাসতে থাকে। আধা ঘন্টার রাইড ছিল। রাইড শেষে শমিষ্ঠার ভয় কিছুটা কমে। সিনথিয়া বলে কি বলেছিলাম না তোমাকে মজা পাবে। শমিষ্ঠা মাথা নাড়িয়ে সায় দেয় আসলেই থ্রিল ফিল করেছে সে। এরপর আসে জেট স্কির পালা। এবারো উঠবে না শমিষ্ঠা প্রথমে। তাই ওকে দেখানোর জন্য প্রথমবার মাহফুজ আর সিনথিয়া উঠল। মাহফুজ চালাচ্ছে আর সিনথিয়া পিছনে বসে আছে। বেশ কিছুক্ষণ চালানোর পর ফেরত আসল ওরা। শমিষ্ঠা কে আবার রিকোয়েস্ট করল। শমিষ্ঠা এইবার কিছুটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। সিনথিয়া বলল তিনজন মিলে যাব। মাহফুজ চালাবে। তুমি মাঝে আর আমি পিছনে বসে তোমাকে জড়িয়ে রাখব যাতে পড়ে না যাও। বাইক রাইডের মত। বেশ কিছুক্ষণ বুঝানোর পর রাজি হল শমিষ্ঠা। উঠার পর মাহফুজ কে ছোট বাচ্চার মত জড়িয়ে থাকল। সিনথিয়া অভয় দেবার জন্য পিছন থেকে আগলে রাখল। মাহফুজ এইবার রাইডে খুব বেশি কারিক্কুরি করল না যাতে শমিষ্ঠা ভয় না পায়। পাচ মিনিটের রাইড। শেষ করার পর সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল কেমন লেগেছে? শমিষ্ঠা বলল ভাল। মাহফুজ সিনথিয়া টের পেল ভয় একটু কমেছে। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল আরেকটা রাইডের জন্য রেডি কিনা। শমিষ্ঠা মাথা নাড়ল। এইবার সেকেন্ড রাইড শুরু করল। মাহফুজ এইবার স্বভাবমত রাইডে বেশ কারিকুরি করল। শার্প টার্ন, ঢেউয়ের উপর জেট স্কি নিয়ে উঠে পড়া। প্রতিটা বিপদজনক স্টান্টে শমিষ্ঠা মাহফুজ কে একদম আকড়ে ধরে আর মাহফুজ টের পায় শমিষ্ঠার বিশাল দুটো স্তন ওর পিঠে একদম গেথে যাচ্ছে। শমিষ্ঠা গতকালের মত লেগিংস আর গেঞ্জি পড়া। পিছন থেকে সিনথিয়া ইচ্ছা করে আর চেপে দিচ্ছে শমিষ্ঠার শরীর মাহফুজের গায়ে। তাই মাহফুজ টের পাচ্ছে বড় দুই স্তনের অস্তিত্ব। তার উপর শমিষ্ঠা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে পেটের কাছে। বেশ একটা সুরসুরি অনুভূতি হচ্ছে ওর। এই রাইড শেষে বুঝা গেল শমিষ্ঠা বেশ খুশি। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল এটা কি ওর হানিমুনের বেস্ট দিন কিনা? শমিষ্ঠা হেসে বলল নো ডাউট। সৌমিকের সাথে এসে খালি আশেপাশে ঘুরে দেখা আর বিচে বসে বই পড়া ছাড়া তেমন কিছু করা হয় নি। সেই তুলনায় গত এক ঘন্টায় ওর দশ বছরের এক্টিভিটিস করা হয়ে গেছে। হাসল মাহফুজ আর সিনথিয়া। সিনথিয়া বলল এখনো অনেক সময় বাকি। আজকের পর হানিমুনের এই দিনটার কথা শমিষ্ঠা কোন দিন ভুলবে না। এটা হবে তার জীবনের বেস্ট মেমরি। শমিষ্ঠা বলল দেখা যাক। মাহফুজ টের পায় সিনথিয়ার চোখের কোণে দুষ্টমি হাসি।
এরপর ঠিক হল শমিষ্ঠা আর মাহফুজ মিলে যাবে জেট স্কিতে। সিনথিয়া বলল ওর একটু ওয়াশরুমে যাবার দরকার। মাহফুজ বুঝল সিনথিয়া ওদের কে একটু একা টাইম দিতে চাচ্ছে। যাওয়ার সময় সিনথিয়া চোখের ইশারা দিল সময়টা কাজে লাগাতে। মাহফুজ এইবার শুরু করল ওর রাইড। যত রকম কারিকুরি আছে সব দেখানো শুরু করল এই রাইডে। শমিষ্ঠা শিশুর মত চিতকার শুরু করল। মাহফুজ কে আকড়ে ধরল শক্ত করে। শমিষ্ঠার শরীরের উত্তাপ ওর গায়ে লাগছে ভাল মত। মাহফুজের শরীর গরম হতে শুরু করেছে। শমিষ্ঠার স্তন একদম লেপ্টে আছে মাহফুজের গায়ে। শমিষ্ঠার সেই দিকে খেয়াল নেই। মাহফুজ কে ভাল ভাবে আকড়ে ধরে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছে শমিষ্ঠা। শমিষ্ঠার এক দিকে ভয় লাগছে অন্যদিকে পানির এই রাইডে থ্রিল লাগছে। সত্য কথা হল শমিষ্ঠার জীবন নরমাল বাংগালী মধ্যবিত্ত জীবন। এখানে স্ট্যাবিলিটি অনেক কিন্তু থ্রিল নেই বললেই চলে। তাই আজকের দিনে এই কম বয়সী দু’টো ছেলে মেয়ের পাল্লায় পড়ে শমিষ্ঠার মনে হল সে যেন কলেজ জীবনে ফিরে গেছে। উপভোগ করছে সময়। একটু পর শমিষ্ঠা খেয়াল করল কিভাবে নির্লজ্জের মত জোয়ান একটা ছেলে কে জড়িয়ে রেখেছে সে। একটু হালকা করে ধরে দুই শরীরের দূরত্ব বাড়াতে চাইল তবে সফল হল না। মাহফুজের জেট স্কি শার্প টার্ন নিচ্ছে ফলে না চাইলেও শক্ত করে ধরে রাখতে হচ্ছে। সৌমিকের শরীর বিয়ের পাচ বছরের মধ্যে মেদ জমা করতে শুরু করেছিল। ফলে শেষ কবে এমন একটা শক্তপোক্ত শরীর জড়িয়ে ধরেছে মনে করতে পারছে না শমিষ্ঠা। এই থ্রিল রাইডের ফলে শরীরে এড্রোলিন রাশ হয়েছে অনেক। এড্রোলিন শরীরে অনেক সময় এলকোহলের কাজ করে। নরমাল সময়ে মানুষ যা করে না এড্রোলিন রাশ সেই কাজটা ইজি করে দেয়। শমিষ্ঠার মনে হয় এটা নির্দোষ হাগ। ঠিক ভাবে না ধরে রাখলে পড়ে যাবে ও। সিনথিয়া ফেরত আসার আগে তিন টা রাইড কমপ্লিট করল শমিষ্ঠা মাহফুজ। প্রতিটা রাইডের সাথে সাথে শমিষ্ঠার মনে হল ওর শরীরে যেনা আর বেশি উত্তেজনা শুরু হচ্ছে। সিনথিয়া আসার পর জেট স্কি রাইড শেষ হল। মাহফুজ যখন জেট স্কি বুঝিয়ে দিচ্ছে তখন সিনথিয়া শমিষ্ঠা কে ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করল কেমন হল রাইড। হেসে উত্তর দিল শমিষ্ঠা খুব ভাল। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করল মাহফুজ কে ভাল মত জড়িয়ে ধরেছিল তো। ইনসেন্ট মনে শমিষ্ঠা বলল হ্যা,বাবা নাইলে তো পড়ে যেতাম। সিনথিয়া বলল মাহফুজের শরীরটা দারুণ না, একদম শক্ত পাথরের মত। শমিষ্ঠা একটু লাল হলেও বলল হ্যা ওর ফিগারটা ভাল। সিনথিয়া একটা চোখ টিপ দিয়ে বলল গ্লাড টু শেয়ার। শমিষ্ঠা আর লাল হল। সিনথিয়া বলল আরে লজ্জা পাচ্ছ কেন। প্রাকটিক্যালি আমরা আজকে বান্ধবী। বান্ধবী যদি বান্ধবী কে একটু টিজ করে কে করবে বল। শমিষ্ঠা মেনে নিল কথাটা। বলল তাহলে আমাকে বরং নাম ধরেই ডাক। সিনথিয়া মেনে নিল।