Thread Rating:
  • 315 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৬)


হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। সাফিনাদের এপার্টমেন্টের নিচতলায় একটা কমিউনিটি সেন্টার আছে সবার জন্য। সেখানে হচ্ছে। খুব বড় করে কিছু হচ্ছে না। ক্লোজ আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবরাই মূলত এসেছে। মিউজিক সিস্টেমে গান বাজছে। সাফিনা এক কোণায় দাঁড়িয়ে সব তদারকি করছেন। আগামীকাল মূল বিয়ে হবে। সিনথিয়ার চাচা চাচী আর কাজিনরাও এসে গেছে ইংল্যান্ড থেকে। বাড়ি জুড়ে মানুষ। হইহই রইরই ব্যাপার। একটু পরে ছেলে পক্ষ চলে আসবে তখন হলুদ লাগানোর প্রোগ্রাম শুরু হবে। সিনথিয়ার বান্ধবীরা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে হাসি ঠাট্টা করছে আর ছবি তুলছে। সাবরিনা এদিক ঐদিক দৌড়াদৌড়ি করে সব কিছু ম্যানেজ করছে। সিনথিয়ার গায়ে হলুদ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না ভাবী। সাফিনা করিম পাশে তাকান, নুসাইবা দাঁড়ানো। তার একমাত্র ননদ। সাফিনা বলেন আমারো বিশ্বাস হচ্ছে না। নুসাইবা বলে পাগলীটা কবে এত বড় হয়ে গেল? আজকে হলুদ আর কালকে ওর বিয়ে। কিভাবে কিভাবে আমাদের সবাই কে বিয়েতে রাজি করিয়ে ফেলেছে। সাফিনা মাথা নাড়েন। হাসতে হাসতে বলেন মনে আছে ক্লাস টেনে থাকতে একবার কোন ছেলের প্রেমে পড়ল সিনথিয়া। ওকেই নাকি বিয়ে করবে। ঘটনা মনে করে নুসাইবা আর সাফিনা দুইজন হাসতে থাকেন। কি পাগলামিটাই না করল তখন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় প্রেমটা গেল। নুসাইবা বলে হ্যা ভাবী সব সময় সিনথিয়া একটু চঞ্চল ছিল। সাফিনা বলেন হ্যা, হুটহাট করে প্রেমে পড়া তো ওর অভ্যাস ছিল। আমি এক সময় আর জিজ্ঞেস করতাম না কার সাথে প্রেম করছে। কারণ আমি জানতাম ছেলেটার নাম মুখস্ত করার আগে ব্রেকাপ হয়ে যাবে। নুসাইবা হাসতে হাসতে বলে হ্যা, কি সব সময় ছিল। সাফিনা বলে আমি আসলে এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না সিনথিয়া মাহফুজের প্রেম এত দিন ধরে চলেছে। আর এখন সিনথিয়া যখন কথা বলে তখন মনে হয় এইটা আগের সিনথিয়া না। অনেক ধীরস্থির, বুদ্ধিমান। দেখনা কিভাবে আমাদের সবাই কে রাজি করিয়ে ফেলেছে। নুসাইবা মাথা নাড়ে। মাহফুজ ছেলেটা অনেক বুদ্ধিমান আর ধীরস্থির। ওর প্রভাবে সিনথিয়ার ভিতরে এই পরিবর্তন গুলো এসেছে। সাফিনা বলে হ্যা সাথে সাথে মাহফুজ খুব সাহসী বটে। ঐদিন কলেজের মারামারির ভিতর ও যেভাবে শেষ মূহুর্তে এসে আমাকে রক্ষা করল। না হলে সেই ক্যাওসের মাঝে হয় পুলিশের লাঠির বাড়ি না হয় ইট মাথায় পড়ে কিছু একটা হতে পারত। নুসাইবা বলে ভাবী তুমিও না একটু বেশি জেদি আর দুঃসাহসী। না হলে কেউ ওমন করে মারামারির মাঝে যায়। তুমি বেতন পাও পড়ানোর জন্য। মারামারি থামানোর জন্য না। সাফিনা হেসে বলল তুই তো জানিস  নুসাইবা আমি এমন সময় চুপ থাকতে পারি না। যদি একটা ছেলে সেদিন মারা যেত তাহলে আমি সারাজীবন নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না। নুসাইবা বলে জানি আমি। আমার কি মনে হয় জান ভাবী মাঝে মাঝে? সাফিনা বলে কী? নুসাইবা বলে তোমার দুই মেয়ে আসলে তোমার দুই রূপ। সামনে থেকে দেখলে তুমি সাবরিনা। শান্ত ধীর স্থির, সব কিছু সুন্দর ম্যানেজ করে চলছ। আর যারা তোমাকে ভাল ভাবে চিনে তারা জানে তোমার ভিতর একটা জেদি কম বয়সী মেয়ে লুকিয়ে আছে। দূর্দান্ত সাহসী সে মেয়ে নিজের বিশ্বাস কে সমুন্নত রাখার জন্য যে কোন কিছু করতে পারে। সাফিনা হাসতে হাসতে বলে কিরে এত তেল দিচ্ছিস। নুসাইবা বলে আরে তেল না ভাবী। আমি তোমাকে খুব পছন্দ করি এটা সত্য তবে এই কথা গুলো সে জন্য বলা না। তোমার মত মা পেয়েছে বলেই তো সাবরিনা আর সিনথিয়া ওদের নিজেদের মত করে বড় হয়ে উঠেছে। সাবরিনা অনেক টা শান্ত কিন্তু শান্ত বাচ্চাদের যেমন কনফিডেন্সের অভাব হয় ঐটা ওর হয় নি, কারণ তুমি। আমি দেখেছি ছোটবেলা থেকে তুমি কিভাবে ওর কনফিডেন্স বিল্ডাপ করেছ। আর সাবরিনা তোমাকে যেভাবে মানে আর কোন বাচ্চা তাদের মা কে এইভাবে মান্য করে কিনা আমি জানি না। ও তোমাকে কপি করে। দেখ শাড়ি পড়ার স্টাইলটাও আজকে তোমার মত করে করেছে। তোমার মত সাজ দেয়। সাফিনা হাসতে হাসতে বলে তাহলে সিনথিয়া সম্পর্কে কি বলবি? ও তো আমার সব কিছুতে উলটা। নুসাইবা বলে ভাবী উপরে দেখলে তা মনে হয়। ও হয়ত ড্রেসাপ, কথা বলার ধরণ এইসব তোমার থেকে অনেক পার্থক্য তবে ওর ভিতরটা? সেটা পুরাটা তোমার কার্বন কপি। দূর্দান্ত সাহস, একবার যা বিশ্বাস করে তাকে শেষ পর্যন্ত ডিফেন্ড করা এইগুলা তো আসলে তোমার গুণ। ভাইয়া এতটা সাহসী না। হাসতে থাকে নুসাইবা। সাফিনা বলে এইসব শুনলে তোর ভাই তোকে মারবে। নুসাইবা বলে ভাইয়া কে আর কে বলতে যাচ্ছে। জা আর ননদ দুইজন মিলে হাসতে থাকে জোক্সে।

সাফিনা এইবার জিজ্ঞেস করে তোর আর আরশাদের সব কেমন যাচ্ছে? প্রশ্নটা শুনে মুখটা কাল হয়ে গেল নুসাইবার। একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ল। সাফিনা চুপ করে অপেক্ষা করে উত্তরের। নুসাইবা বলে আমি জানি না ভাবী। ও ফেরত আসার পর আমাদের ভিতর আসলে সেইভাবে কথা হয় নি। আরশাদ আমার চারপাশে কেমন জানি ভয়ে ভয়ে থাকে। ওকে দেখলে আমার রাগ হয় একবার। আরেকবার গিল্ট ফিলিংস হয়। সাফিনা বলেন রাগ হয় কেন? নুসাইবা বলল ভাবী ওর আরেকটা মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল সেটা তো বলেছি তোমাকে। আমাকে বাসায় এসে অনেকবার স্যরি বলেছে। তবু আমি মাথা থেকে সরাতে পারছি না ব্যাপারটা। প্রতিবার কথাটা মনে পড়লে মনে হয় আমার বুকটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আর গিল্ট ফিলিংস হয় কেন? নুসাইবা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। এই কথাটা ভাবীকেও হয়ত সারাজীবন বলা হবে না। মাহফুজের সাথে হাওরে ওর রাত গুলো কি বলতে পারবে ও? কলতলার সেই দুপুর? সম্ভব না। এর আগে লজ্জায় মারা যাবে ও। সিনথিয়া কি ভাববে? ওর ভাতিজি সব সময় ওকে দেবীর মত শ্রদ্ধা করে এসেছে। পরচিত মানুষ গুলোর চোখে ছোট জীবনেও হতে পারবে না ও। দরকার হলে আত্মহত্যা শ্রেয় এর থেকে। তবে আরেকটা কারণ আছে গিল্ট ফিলিংসের। সেটাই বলে নুসাইবা। ভাবী আমার বাচ্চা না হবার পরেও আরশাদ আমাকে কোন দিন এই বিষয়ে কথা শুনায় নি। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমার এই অপূর্ণতা কি ওকে এই রাস্তায় ঠেলে দিল? সাফিনা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। সাফিনার সব সময় আরশাদ আর নুসাইবা কে আদর্শ কাপল মনে হত। আরশাদ নিজেও খুব ভাল ব্যবহার করে তাদের সাথে। যদিও কথাবার্তায় একটা তেলতেলে ভাব আছে। অতিরিক্ত প্রশংসা করা। তবে সাফিনার সব সময় মনে হয়েছিল আরশাদ নুসাইবার প্রতি ডেডিকেটেড। তাদের ভিতরে যে এত বড় একটা ফাকি এতদিন ধরে চলছিল কে বিশ্বাস করবে সেটা। তবে সাফিনা বললেন, মন খারাপ করিস না নুসাইবা। ভাব। ভেবে সিদ্ধান্ত নে। নতুন করে কি তোরা আবার শুরু করতে পারবি? যদি মনে হয় পারবি না তাহলে কি করতে চাস সেটাও ভেবে দেখিস। নুসাইবা এইবার বলে বাদ দাও ভাবী।



তারপর ভাবী তোমার কথা বল? সাফিনা বলল কিসের কথা বলব? নুসাইবা বলল তোমার ডিপ্রেশন এর কি অবস্থা। আমি দেখেছি তুমি হঠাত হঠাত আনমনা হয়ে যাও। তোমার মুখে এমন একটা বিষাদের ছায়া থাকে যেটা দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। তোমার হাসিটা কতটা মিষ্টি তুমি জান? তোমার মেয়েগুলো তোমার হাসি পেয়েছে তবে তোমার হাসিটা ওদের থেকেও সুন্দর। আগে তোমার মুখে সব সময় একটা মিষ্টি হাসি লেগে থাকত। আজকাল আর সেটা দেখি না। সাফিনা একটু উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেন কথা। বলেন, আরে বয়স হয়েছে না। বাচ্চাদের মত সারাদিন হাসি হাসি মুখ করে থাকা যায় নাকি। আর বুড়ো হয়েছি না। নুসাইবা বলে কে বলল তুমি বুড়ো হয়েছ? সাফিনা বলল তোর ভাই আর আমি দুইজনের বয়স হয়েছি নুসাইবা। নুসাইবা দূরে ওর ভাই কে দেখে। কথা বলছে কয়েকজন আত্মীয়ের সাথে। নুসাইবা হেসে বলল হ্যা ভাইয়ার মাথার চুল দেখলে বুঝা যায় বয়স হয়েছে। আর দেখ না ওর ভুড়িটা কেমন বেঢপ হয়েছে। সাফিনা বলল, তুই না একটা বজ্জাত।  নিজের ভাইকে এইভাবে কেউ বলে। নুসাইবা বলল, ওরে লজ্জা!!! মেয়ের বিয়ে হচ্ছে আবার এদিকে ভাইয়ার প্রেমে হাবুঢুবু খাচ্ছ। সাফিনা নুসাইবার কাধে একটা কিল দিয়ে বলে তুই যত বলিস আমাদের বয়স হয়েছে। নুসাইবা বলে ভাইয়ার হয়েছে তোমার হয় নি। তোমাকে দেখলে মনে হয় বড়লোক বুড়ার কম বয়সী বউ। এটা শুনে হো হো করে হেসে উঠে সাফিনা। নুসাইবা বলে তোমার এই হাসিটা খুব মিস করি ভাবী। কি চমৎকার। সাফিনা বলল তোর মত এইসব কথা আর কে বলে বল। নাইলে এমন হাসি সব সময় হাসতাম। নুসাইবা বলে আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না ভাবী। নিজে কে আয়নায় দেখ তুমি। আমার থেকে ছয় বছরের বড় কিন্তু তোমাকে দেখলে মনে হয় আমার ছোট। তোমার এত বড় দুইটা মেয়ে আছে কে বলবে বল। ইজিলি ওদের বড় বোন বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। সাফিনা হাসেন, প্রশংসা শুনতে কার না ভাল লাগে। সাফিনা বলেন তোর এই বকবকানি থামা। তুই কি কম সুন্দর? নুসাইবার যখন চৌদ্দ বছর বয়স তখন বিয়ে করে এই বাড়িতে এসেছিলেন সাফিনা। ননদ আর ভাবীর মধ্যে একটা দুষ্টমিষ্টি সম্পর্ক তখন থেকে। নুসাইবা বলে ভাবী তুমি হচ্ছ আদর্শ সুন্দরী।আমি সুন্দরী তার একটা বড় কারণ হল আমার মেইনটেনেন্স, পার্সনালিটি, কাপড় সব মিলিয়ে। আর তুমি হল ন্যাচারাল। তুমি গ্রামের মেয়ে হলেও সুন্দর শহরের মেয়ে হলেও সুন্দর। তোমার হাইট দেখ। পাচ ফুট ছয়। কতগুলো বাংগালী মেয়ে পাবে তুমি এই হাইটের? তোমার গায়ের কালার দেখ। দুধে আলতা হলুদ বরণ। তোমার মত নারীর জন্য ট্রয়ের যুদ্ধ হত আগের কালে। আমি আজ পর্যন্ত এমন কোন কাপড় দেখি নি যাতে তোমাকে মানায় নি। এইবার হাসতে থাকেন সাফিনা। বলেন তুই সব সময় যত বাজে কথা বলিস। আমার জন্য কে যুদ্ধ করবে। নুসাইবা বলে তা কেউ করবে আমি বলছি না। তবে আমার ভাই একটা বিশাল লটারি জিতেছে আসলে এই বিয়ে করে। সাফিনা বলেন এটা তোর ভাই কে বলিস। লোকটা অফিস অফিস করে আমাকে তো আর দেখে না।  নুসাইবা বলে ছেলে গুলো সব সময় হাতের কাছে রত্ন থাকলেও চিনতে পারে না। নুসাইবার গলায় বিষাদের ছায়া। সাফিনা টের পেয়ে আবার কথা কে হাসি ঠাট্টার দিকে মোড় ঘুরাতে চান। বলেন তুই এত বড় একটা অফিসার আর মাঝে মাঝে আমার সাথে যে দুষ্টমি করিস এইগুলা লোকে শুনলে বিশ্বাস করবে না যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুগম্ভীর ডিডি নুসাইবা করিম এমন কথা বলতে পারে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৫ ) - by কাদের - 25-07-2025, 04:17 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)