Thread Rating:
  • 315 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৬)


সাফিনার কলেজ থেকে সাত দিনের ছুটি নিয়েছে। তবে কালকে থেকে ছুটি শুরু হবে। সিনথিয়ার বিয়ের জন্য ছুটি নিয়েছে, নরমালি খুব সিনসিয়ার সাফিনা। সহজে ছুটি নেয় না। সাবরিনা, সিনথিয়া খুব ছোট থাকা অবস্থায় ওরা অসুস্থ হলে কয়েকবার নিতে হয়েছে। এরপর এত লম্বা ছুটি সাফিনা কখন নিয়েছে মনে করতে পারছে না। কলেজে সিনিয়র পজিশনে আছে সাফিনা। প্রচুর দ্বায়িত্বে আছে। বলা যায় কলেজের প্রিন্সিপালের পর সবচেয়ে ক্ষমতাধর শিক্ষক সাফিনা করিম। তাই সাতদিন না থাকলে অনেক কাজ জমে যাবে। তাছাড়া যে সাতদিন থাকবে না সে সাতদিন যেন সব কাজ ঠিকমত চলে সেই জন্য অনেক রকম ইনসট্রাকশন রেখে যেতে হবে। সামনের সাপ্তাহ থেকে ফর্ম ফিলাপের লাস্ট দিন পড়েছে। সেইদিন কলেজে উপস্থিত থাকতে পারবে না সাফিনা কারণ সেদিন সিনথিয়ার গায়ে হলুদ হবে। তাই আজকেই ফর্ম ফিলাপের কাগজ গুলো সাইন করে রেখে যাচ্ছে যাতে সেদিন উপস্থিত না থাকলেও কলেজের ক্লার্ক সব কাজ করে ফেলতে পারে। কাগজ সাইন করতে করতে সাফিনা মাথায় হিসাব করত থাকে আর কি কি করতে হবে। এক্সাটলি ছয়দিন বাকি আছে সিনথিয়ার বিয়ের। সব কিছু এত দ্রুত হচ্ছে, তাল সামলাতে কষ্ট হচ্ছে। সাবরিনার বিয়ের সময় দুই পরিবারের দেখা হওয়ার প্রায় ছয়মাস পরে বিয়ে হয়েছিল। ফলে মাঝে অনেক সময় ছিল সব কিছু আয়োজন করার। এখন সেই সময়টুকু নেই। সিনথিয়া আসার আগে দুই ফ্যামিলির মাঝে প্রাথমিক দেখা স্বাক্ষাত হল। সেখানে প্রথমে কথা হয়েছিল এইবার হয়ত আকদ হবে তারপর পরে সিনথিয়া আবার ছুটিতে আসলে তখন বিয়ের মূল প্রোগ্রাম করে সবাই কে দাওয়াত দেওয়া হবে। সিনথিয়া পাগলী টা সব সময়ের মত পাগলামী করল আবার। যেদিন আসার কথা তার সাত দিন আগে হাজির। কিভাবে কিভাবে নাকি সব ম্যানেজ করে সাত দিন আগে ছুটি পেয়েছে। বাসায় এসে যখন কলিংবেল টিপল তখন সন্ধ্যা প্রায়। কলেজ থেকে সাফিনা বেগম মাত্র এসে পৌছেছেন। ক্লান্ত। অফিসে পড়ে যাওয়া শাড়িও খুলেন নি তখনো। সেই সময় কে আসল দেখার জন্য দরজার দিকে গেলেন, কারণ মিজবাহ আজকে আগেই বলে দিয়েছে আসতে আসতে দশটা বাজবে। দরজা খুলতেই চমকে গেলেন সাফিনা। আম্মু বলে জোরে চিতকার দিয়ে যেভাবে তাকে জাপটে ধরল সিনথিয়া তাতে তার পিলে চমকানোর মত অবস্থা। সিনথিয়া এখানে কেন? ওর না আর পরে আসার কথা। সিনথিয়া ওকে জড়িয়ে ধরে বলে আম্মু আমাকে দেখে খুশি হও নি? পাগল মেয়ে কি বলে। মেয়ে কে এত দিন পরে দেখে কোন মা না খুশি হবে? সিনথিয়া বলে তাহলে মুখে হাসি কই। সাফিনা বলে তুই আমাকে যেভাবে চমকে দিয়েছিস আগে সেখান থেকে বের হতে তো দে। তারপর সাফিনা কে প্রতিজ্ঞা করাল যেন মিজবাহ বা সাবরিনা কে না বলে ও এসেছে। সারপ্রাইজ। রাতে অফিস শেষে ফেরত এসে মিজবাও সেরকম শক পেল। তবে মিজবাহর খুশি দেখে কে। মেয়েদের জন্য পাগল লোকটা। সাফিনা যদি মাঝে মাঝে লাগাম না টেনে ধরত তাহলে বড় হবার সময় সাবরিনা আর সিনথিয়া চাইলে বাবার কাছ থেকে সব আদায় করে নিতে পারত। তবে সাফিনা জানেন চাইলেই যদি সব পাওয়া যায় তাইলে সেটা সন্তানদের বড় হবার জন্য ভাল কিছু না। যাই হোক সিনথিয়া এবারো তার কার্ড খেললো বাবার সাথে। এইবার খালি আকদ না। পুরো বিয়ে হবে। এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সম্ভব? সাফিনা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে চাইলেন এইসব পাগলামি। কিন্তু কে শুনে কার কথা। এমনিতে অনেকদিন পর বাবা মেয়ের দেখা হয়েছে তাই মিনহাজ এমনিতেও একটু বেশি গলে ছিলেন তাই রাজি হয়ে গেছেন। সাফিনা ভাবলেন সাবরিনা বা নুসাইবা কে দিয়ে আটকাতে হবে এই পরিকল্পনা। কিন্তু পরের দিন ফ্যামিলির সবাই যখন সিনথিয়ার যখন একসাথে হল সেখানেও সাফিনা অবাক হয়ে দেখলেন সাবরিনা বা নুসাইবা এই দ্রুত বিয়ের অনুষ্ঠানের কথায় একটু অবাক হলেও মানা করল না। বরং বলা যায় সাপোর্ট দিল। এমন নরমালি হয় না। সাফিনা জানেন তার কথা ফেলার মত মানুষ এই পরিবারে নাই। যদি তার কথা কে কেউ একটু চ্যালেঞ্জ করতে পারে সেটা হল সিনথিয়া। সেই সিনথিয়ার পাগলামিও এতদিন উনি আটকে রেখেছেন। যদি কখনো খুব সমস্যা হয় তাহলে সাবরিনা বা নুসাইবার সাহায্য নিয়ে বুঝিয়েছেন সিনথিয়া কে। তখন কাজ হয়েছে। এইবার সাবরিনা আর নুসাইবা দেখি সিনথিয়ার প্রস্তাবে রাজি। নুসাইবার ব্যাপারটা কিছুটা আন্দাজ করছেন সাফিনা। এতবড় বিপদে মাহফুজ হেল্প করেছে ফলে মাহফুজ আর সিনথিয়ার যে কোন ব্যাপারে নুসাইবা এখন বাই ডিফল্ট ওদের পক্ষ নিবে। তবে সাবরিনার কারণ টা তার মাথায় ঢুকছে না। সাফিনা, সাবরিনা কে আড়ালে নিয়ে একবার জিজ্ঞেস করেছিলেন কি ব্যাপার তুই সিনথিয়ার পাগলামি তে সাপোর্ট দিচ্ছিস কেন। জানিস একটা বিয়ে আয়োজন করতে কত কাজ করতে হয়, কত দ্বায়িত্ব। তোর বিয়ের সময় আমরা ছয়মাস সময় পেয়েছিলাম তাও কাজের প্রেসারে নাভিশ্বাস উঠেছিল। আর এখানে দুই তিন সাপ্তাহের মধ্যে পুরো বিয়ে আয়োজন করতে বলছিস। সাবরিনা দুই একবার আমতা আমতা করে বলল মা, সিনথিয়া তো এমন। সব কিছুতে তাড়াহুড়া করে। তাই এটা নতুন কিছু না। আর ওরা যদি ওদের বিয়ের অনুষ্ঠান এভাবে করে খুশি হয় তাহলে আমাদের আপত্তি থাকা উচিত না। আর সত্য হচ্ছে বিয়ে এমন একটা অনুষ্ঠান যেখানে এক বছর আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু কর আর দশ দিন আগে থেকে। সব সময় কিছু না কিছু কাজ বাকি থাকবেই এবং প্রেসার থাকবেই। তার থেকে বরং ওরা যেভাবে চাইছে সেইভাবেই আমরা করে দেই। পরে সবাই মিলে কথা হল এইবার সবাই অল্প বিস্তর দ্বায়িত্ব নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান নামিয়ে দিবে ঠিক করে। সাফিনা একবার শেষ চেষ্টা করেছিল এই বলে যে সিনথিয়ার চাচারা ইংল্যান্ড থাকে। এত অল্প নোটিশে কিভাবে আসবে তারা। সেখানেও অবাক হবার পালা। সিনথিয়া দেশে আসার আগে তার চাচা চাচীদের সাথে সলাপরামর্শ করে এসেছে। বিয়ের সময় চার দিনের জন্য ওরা দেশে আসবে।

সাফিনা এইসব যখন ভাবতে ভাবতে কাগজে সাইন করছেন। তখন বাইরে থেকে হই হট্টগোলের শব্দ আসতে থাকল। সরকারি এইসব কলেজে এই একটা সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর বাইরে এইসব কলেজে অনার্স চালু হবার পর থেকে দেশের কলেজ গুলোর মান পড়ে গেল অনেক। ছেলেমেয়েরা ঠিক করে ক্লাস করে না। আর যথেষ্ট পরিমাণ মান সম্মত শিক্ষকও নেই সব কলেজে। কলেজে অনার্স খুলেছে কিন্তু বিসিএস দিয়ে এমন অনেকে সরকারি শিক্ষকতায় আসছে যাদের দৌড় সর্বোচ্চ এইচএসসির ছাত্রছাত্রী পড়ানো পর্যন্ত হতে পারে। সব মিলিয়ে হযবরল। ফলে ছাত্রছাত্রীরা কলেজে আসলেও পড়াশুনার থেকে বেশি অনান্য জিনিসে ব্যস্ত থাকে। তারপর এইসব কলেজে রাজনীতির বিস্তার ঘটেছে অনেক লাস্ট বিশ পচিশ বছরে। সেই সাথে সামনে ইলেকশন। ফলে প্রতিদিন ছোটখাট একটা দুইটা সমস্যা লেগেই থাকে। কলেজের এডমিন শাখার ক্লার্ক ভবতোষ তার সামনে দাঁড়িয়ে কাগজ গুলো সাইন করিয়ে নিচ্ছিল। ভবতোষ বলল ম্যাডাম আজকে মনে হয় বড় মারামারি একটা লাগবে। সাফিনা বললেন তাই নাকি? কেন কি হয়েছে? ভবতোষ বাবু বললেন, ম্যাডাম প্রেসিডেন্ট আর সেক্রেটারি গ্রুপের মধ্যে গত কয়েকদিনের ধরে উত্তেজনা চলতেছে। আজকে সকালে কলেজের বাইরে চা এর দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম অফিসে ঢোকার আগে। সেখানে সেক্রেটারি গ্রুপের এক ছেলেকে চড় মারছে প্রেসিডেন্ট গ্রুপের আরেকজন। সেইটা থেকে হাতা হাতি হইছিল। চড় খাওয়া ছেলেটা যাওয়ার সময় বলছে দেখে নিবে। মনে হয় সেইটা নিয়ে লাগছে গন্ডগোল। ভবতোষ বাবুর কথা বলার মাঝেই হট্টগোলের শব্দ বেড়ে যায়। হঠাত করে একটা কাচ ভাংগার আওয়াজ হয়। সাফিনা একবার বের হবেন নাকি ভাবেন। কলেজে যেই কয়েকজন শিক্ষক কে এখনো পলিটিক্যাল ছেলেরা সমীহ করে তিনি তার একজন। ভাবতে ভাবতে মোবাইল চেক করেন। আজকে সিনথিয়া আর সাবরিনা মিলে বিয়ের শাড়ি কিনতে যাবে আর মাহফুজ আসবে সেখানে। এখনো বাসা থেকে বের হয়েছে কিনা সিনথিয়া জিজ্ঞেস করার জন্য ফোন ডায়াল করতে যাবে ঠিক তখন কলেজের জুনিয়র একজন শিক্ষক দৌড়ে আসেন হাপাতে হাপাতে। সাফিনা কিছু জিজ্ঞেস করার আগে সেই শিক্ষক বলেন ম্যাডাম তাড়াতাড়ি চলেন। নিচে গন্ডগোল লাগছে। ছেলেপেলেরা ক্লাসরুম ভাংচুর করছে। একটু পর নাকি রাস্তা অবরোধ করবে। প্রমাদ গুণলেন সাফিনা। এইসব রুম ভাংগা শুরু হলে একবারেই কলেজের কয়েক লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যায়। ছেলে গুলো কেন বুঝে না এটা তাদের কলেজ। আর দরজা জানালা বা বেঞ্চ গুলো তো কার কোন ক্ষতি করে নি। তার উপর রাস্তা অবরোধ করলে একটা ঝামেলা বাড়বে আবার। পুলিশ আসবে। ভাবতে ভাবতে  উঠে দাড়ান সাফিনা। সেই শিক্ষক কে বলেন চল দেখি কি করা যায়, আর ভবতোষ কে বলেন, বাকি কাগজ গুলো আপনি নিয়ে যান। গন্ডগোল থামলে আমার কাছে আবার আসবেন তখন সাইন করে দিব। ব্যস্ততার সাথে সাফিনা বের হয়ে গেলেন কিন্তু ভুলে মোবাইলটা টেবিলিলে ফেলে গেলেন সেটা আর তার মনে রইলো না।


সিনথিয়া কে সাবরিনা বলল নিজের বিয়ের শপিং এর সময়ও বুঝি তোর দেরি করা লাগল। সিনথিয়া হেসে বলল আপু তুমি সব সময় এত সিরিয়াস থাক কেন, একটু দেরি তো হবেই। সাবরিনা বলল মাহফুজ তো অপেক্ষা করছে। আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছে। সিনথিয়া বলল আরে বিয়ে করবে আমাকে একটু যদি অপেক্ষা না করে তাহলে কিভাবে হবে  বল। আর ও জানে আমি একটু এরকম। সাবরিনা বলে তুই আর বড় হলি না, এখন তোর বিয়ে হবে আরেকটু দ্বায়িত্বশীল হ।আমি আজকে তোর জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি আর তুই বাসায় ঘুমিয়ে ছিলি। আর নতুন একটা মানুষের সাথে সংসার করা তো এত ইজি না। শুরুতে এমন লেট করলে পরে কি করবি? সিনথিয়া বলে, আপু ফার্স্ট অফ অল মাহফুজ আমার নতুন মানুষ না। আমরা অনেক বছর ধরে প্রেম করছি। ও আমাকে ভাল করে জানে। তুমি আর সাদমান ভাই যেমন এরেঞ্জড ম্যারেজ করেছ আমাদের টা তো তা না। আর এরেঞ্জ ম্যারেজ হলে শুরুতে শুরুতে অনেক ইমেজ ভাল করার জন্য কাজ করতে হয় প্রেমের শুরুতে আমরা যেমন করি। আমি তো অলরেডি মাহফুজের কাছে নিজেকে লক্ষী গার্ল হিসেবে প্রমাণ করেছি তাই এখন আর এত নিয়ম মানতে পারব না। এই বলে সাবরিনা কে জড়িয়ে ধরে। গাড়ি যাচ্ছে মিরপুর দশ, বেনারসী পল্লির দিকে। রাস্তায় অত জ্যাম নেই তবে একদম ফাকাও না। ফলে ধীর গতিতে আগাচ্ছে গাড়ি। সিগনালের জ্যাম। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে। দুইবোন পিছনে বসে বসে গল্প করছে। সিনথিয়া বলে আপু আমার বিয়ে নিয়ে আমি আসার পর একটা কথাও বললে না। সাবরিনা বলল আমি কি বলব, তোর বিয়ে তোর চয়েজ। সিনথিয়া বোন কে জড়িয়ে ধরে বলে আমার উপর রাগ করে আছিস? সাবরিনা বলল না। সিনথিয়া বলল তোকে আমি চিনি, তুই নিজে থেকে তো আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করলি না। খুশি হলে ঠিক কত প্রশ্ন করতি। মাহফুজ নিয়ে তুই একটাও প্রশ্ন করিস নি, ছেলে কেমন, কি করে। সাবরিনা একটু অস্বস্তিতে পড়ে যায়। মাহফুজের অনেক কিছু যে ওর জানা সেটা সিনথিয়ার জানা নেই। আজকে এই শাড়ি কেনার প্রোগ্রামটা সাবরিনা অনেকবার এড়াতে চাইছিল। আসলে মাহফুজের মুখোমুখি হতে চাইছিল না সাবরিনা, সিনথিয়ার সামনে। কিন্তু সিনথিয়া নাছোড় বান্দা, বোন কে সাথে না নিয়ে কিছু কিনবে না। আর সাবরিনাও ঠিক কোন যুক্তি দিয়ে পেরে উঠছিল না। সিনথিয়া বলে মাহফুজ যে তোমাদের অফিসে যেত তখন আমার সাথে পরিচয় আছে এটা না বলাতে তুই মাইন্ড করেছিস তাই না? সাবরিনা মনে মনে ভাবে এটা করলে কত গুলো ঝামেলা এড়ানো যেত আজকে, অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হত না। তবে মুখে উত্তর দিল- এটা করা তোদের ঠিক হয় নি। তুই জানিস আমি ম্যানিপুলেশন পছন্দ করি না। সিনথিয়া হেসে বলল, ওরে আমার আইস কুইন। সাবরিনা বুঝে অফিসে যে লোকে আইস কুইন ডাকে এই খবরটা মাহফুজের মাধ্যমে সিনথিয়ার কাছে পৌছে গেছে। আর কি কি জানে সিনথিয়া। গাড়ির এসির ভিতর বসেই মৃদু ঘামতে থাকে সাবরিনা। সাবরিনা পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ নেবার জন্য বলে আমাকে তুই শুরুতে বলতে পারতি মাহফুজ তোর পরিচিত। আমি তাহলে ওর সাথে আর ভাল ব্যবহার করতাম। সিনথিয়া ভাবে সাবরিনা বুঝি স্বভাবসুলভ ভাবে তার দেমাগ দেখিয়েছে মাহফুজের সাথে, তবে একটু অবাক হয় মাহফুজ এইসব কিছু ওকে ঠিক বলে নি। সিনথিয়া বলে আপু আমি চাইছিলাম তুমি মাহফুজ কে খোলা মনে বিচার করো। যদি জানতে ওর সাথে আমার সম্পর্ক আছে তাহলে হয়ত শুরুতেই তুমি বায়াসড হয়ে যেতে। সাবরিনা ভাবে ওর মন বায়াসড হয়েছে ঠিক তবে সিনথিয়া যেভাবে ভেবেছে সেভাবে নয়। একটা গিল্ট ফিলিংস বুক জুড়ে অনুভব করে সাবরিনা। নিজের বোনের হবু স্বামীর সাথে কিভাবে এটা করতে পারল ও? ও নাহয় জানে না কিন্তু মাহফুজ তো জানত সবারিনা কে। তবে মাহফুজ ওকে যেভাবে যুক্তি দিয়েছে সেটাও ওর মনে পড়ে। নিজের মনের অপরাধবোধ কে চাপা দিতে সাবরিনা নিজেকে নিজে যুক্তি দেয় যে এটা পুরোটা ভাগ্যের খেল। নাহলে মাহফুজ  বা ও পরষ্পরের প্রতি এইভাবে দূর্বল হয়ে পড়ত না। সাবিরিনা এটা টের পেয়েছে চাইলে মাহফুজ এখনো ওকে জয় করে নিতে পারে যেকোন দিন। তবে মাহফুজের আরাধ্য সিনথিয়া। সাবরিনার মনের মধ্যে তাই একটা জেলাসিও কাজ করে। তবে জানে বাস্তবে এটা কখনো সম্ভব নয়। তাই মাহফুজ আর ওর মাঝের সম্পর্কটা লুকিয়ে রাখা সবার জন্য ভাল। মাহফুজ অন্তত ওর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছে। এইসব ভাবতে ভাবতে বেনারসি পল্লী চলে আসে। গাড়ির ভিতর থেকে সিনথিয়া হাত নাড়ায় মাহফুজের দিকে।  

মাহফুজ অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে। সিনথিয়া অবশ্য কোন জায়গায় টাইমমত আসতে পারে না। এটা ওর পুরাতন অভ্যাস। মাহফুজ অন্যদিকে সব সময় পারলে সময়মত হাজির হয়। ওদের যেমন অনেক মিলের জায়গা আছে তেমন অনেক মিলের জায়গা আছে। মাহফুজের মাঝে মাঝে মনে হয় ওদের এই মিল অমিলের কেমিস্ট্রি ওদের বন্ডিঙ আর শক্ত করেছে । মাহফুজ একবার মেসেজ দিল, কই তুমি? সিনথিয়া উত্তর দিল পথে, আরেকটু দেরি হবে। চিন্তা করো না, আপু আমাকে হাত পা বেঁধে নিয়ে আসছে নইলে আরেকটু দেরি হত। মেসেজ দেখে ওর মনে হয় কতটা পার্থক্য সাবরিনা আর সিনথিয়ার। সাবরিনা পারলে যে কোন জায়গায় দশ মিনিট আগে গিয়ে হাজির হবে, দশবার করে চেক করবে সব কিছু ঠিক আছে নাকি। সে জায়গায় সিনথিয়া কেয়ার ফ্রি, যা হবার হবে এমন একটা ভাব সব সময়। দুই বোনের এত পার্থক্য কিছু কিছু জায়গায়। কিভাবে ভিন্ন চরিত্রের দুইবোনের প্রতি ওর এট্রাকশন তৈরি হল? এটা ওর কাছে একটা রহস্য। দুই বোনের সৌন্দর্য একটা বড় ব্যাপার সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই তবে ওদের পার্সনালিটি আরেকটা বড় ব্যাপার। খালি শারীরিক সৌন্দর্য মাহফুজ কে টলাতে পারে না সাথে আর এক্স ফ্যাক্টর থাকতে হয় ওর পছন্দের নারীদের। সাবরিনা আর সিনথিয়া দুইজনের মাঝে তা আছে। সাবরিনা একদিকে আইস কুইন যার ভিতরে চলছে গরম নদী। আর অন্যদিকে সিনথিয়া যেন প্রবল জলোচ্ছাস। চলার পথে সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আজকে এই প্রথম দুইবোন ওর সামনে আসবে একসাথে। সিনথিয়া যদিও ওদের সেক্স সেশনগুলোতে ওর আপুকে নিয়ে নানা রকম উত্তেজক কথা বলেছে। এক দিক দিয়ে চিন্তা করলে সিনথিয়ার এই কথা গুলো ওকে প্রথম সাবরিনার প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। কিন্তু বিছানায় করা ফ্যান্টাসি আর বাস্তব ভিন্ন জিনিস। সাবরিনার সাথে ওর সম্পর্ক জানতে পারলে সিনথিয়া কি রিএকশন দিবে শিওর না মাহফুজ।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৫ ) - by কাদের - 25-07-2025, 04:13 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)