Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.23 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica স্বামী ﴾ পর্ব নং:- ১৪ ﴿
রান্নাঘরের দুয়ারে বসে কুন্দনন্দিনী আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে সেদ্ধ আলুর খোসা তুলছিল। ভেতরে খুনতি নাড়তে নাড়তে গল্প বলছিল সরোজবালা। খানিক দূরে উঠোনের কিনারে কাঠ কাটার "খটাস" "খটাস" শব্দ উঠছিল। সে থেমে থেমে তাকাচ্ছিল বাইরে।


সমীরের পরনের ধুতি হাঁটুর ওপরে তুলে বাঁধা, গায়ে সাদা গামছা ফেলে, কুঠার হাতে এক এক করে খড়ির গুঁড়ি চেরা ধরছে। তার লম্বা সবল দেহটা থাকলেও কুন্দনন্দিনী কখনো তাকে বাড়ির কাজ করতে দেখে নি—এক বাগান ছাড়া। তবে এখন প্রতিটি কুঠারের কোপে যে কতটা  দৃঢ়তা আছে , তা কাঠ চেরা খরখরে আওয়াজে বেশ বোঝা যায়। এই দৃশ্যটা দেখে সমীরের হাঁটুতে ওই কাঁটা রাগটা আর অদ্ভুত লাগে না কুন্দনন্দিনী। সে বেশ বুঝতে পারে শান্ত এই পুরুষ প্রয়োজন পড়লে প্রলয়ের হুংকার দিতে দুবার ভেবে দেখবে না। তৎক্ষণাৎ একটি কথা মনে পরে কুন্দনন্দিনীর! সরোজবালাকে ডেকে সে দেখায়। প্রথমটা সরোজবালা লজ্জায়  গাল লাল করলেও,পরে নন্দিনীর কথায় খেয়াল করে কাঁটা দাগটা,

– ও তো জানি নে দিদি,তবে মায়ের কাছে শুনেছিলাম সে গাঁয়ের জমিদার ছেলের সাথে সুপ্রিয়াদিকে নিয়ে কি গোল বাঁধে। এর পর থেকেই তো দিদি বাড়ির বাইরে বেরোয় না। কি আর করা বলো, মেয়েদের রূপ থাকলেও জ্বালা, না থাকলেও জ্বালা.......

এই ব্যাপারে বেশি জানা নেই বলে কথা অন্যদিকে গড়ায়।  ওদিকে সমীর কাঠ চেরা শেষে কাঁধের গামছায় ঘাম মুছে রোয়াকে বসে জল চাইলো। সুপ্রিয়া তখন গোয়াল ঘরে ব্যস্ত থাকায় কুন্দনন্দিনীই উঠে গেল জল দিতে। মাটির কলস থেকে জল ঢেলে গ্লাসটা ধরে কুন্দনন্দিনী রোয়াকে এসে দাঁড়ালো। কাছ থেকে স্বামীর মুখটা দেখলো ঘামে ভিজে চকচক করছে, কপালের কাছের চুলগুলো কাঁপছে বাতাসে, ধুতি কোমরের কাছ থেকে কিছুটা সরে গেছে—গায়ে জড়িয়ে থাকা গামছার ফাঁক দিয়ে তার তীক্ষ্ণ বুকের রেখা এবং পরিশ্রমে স্ফীত পেশি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। জল পান শেষে কুন্দনন্দিনী বললে,

– বাবার কোন চিঠি এসেছে?

সমীর কিছু বলার আগেই সুপ্রিয়া উপস্থিত হলো যেখানে। বারান্দায় বাঁশে খুঁটিতে হেলান দিয়ে সে বললে,

– মহারানীর রাগ পড়েছে তবে। কেন রে, গেল হাট বারেও তো পত্র এলো,তখন খবর নিলিনে কেন? এখন ও চিঠি যেতেই হপ্তা পেরুবে।

সমীর উঠে দাঁড়িয়ে  অভ্যাসের বশেই সুপ্রিয়ার হাতে গামছা ও জলের গ্লাস তুলে দিতে যাচ্ছিল। অবশ্য পরক্ষনেই একটু অপ্রস্তুত হল নন্দিনীর হাত বাড়ানো দেখে। তবে ততক্ষণে সুপ্রিয়ার হাতে গামছাটা পৌঁছে গেছে এবং জলের গ্লাসটি তার আঙুলে স্পর্শ করতেই সে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কুন্দনন্দিনীও তার হাত গুটিয়ে নিয়েছে বটে । সমীর তার অপ্রস্তুত ভাবটা কাটিয়ে উঠতে  বললে,

– ডাকঘর রাধাপুরে নেই,তবে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে দিয়েছি,একদিন দেরি হয়েছে বটে.....

নন্দিনী কিছুই বললো না। সমীর চলে গেলে। রান্নাঘরে ফিরবে  কি না তাই যখন নন্দিনীর ভাবনা,তখন আড়চোখে দেখলে,সুপ্রিয়া সেখানেই দাঁড়িয়ে স্বামীর ঘামে ভেজা গামছাটি তুলে ধরেছে নাকের খুব কাছে। পরক্ষনেই নন্দিনীকে অবাক করে সুপ্রিয়া নাক ডুবিয়ে দিল তাতে, লম্বা নিঃশ্বাস নিল কবার চোখ চোখ বুজে। 

সুপ্রিয়ার উজ্জ্বল হাসিমাখা মুখে দেখে নন্দিনী ভেবে পেল না কি এমন আহামরি আছে ওতে! ঘামের দুর্গন্ধ থেকে খোলা বাতাসের ঘ্রাণ টি মন্দ কিসে? বিকেল না, দুপুর না—এমন এক সময় যখন মেঘ আর রোদ দু'জনেই আশেপাশে ঘোরে, যেন একে অপরকে বিদায় জানাতে এসে পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গেছে। বর্ষা যেন ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছে গাছপালার ডালে—সবুজ পাতা মুছে নিচ্ছে শেষ বৃষ্টির ছাঁট। রান্নাঘরের জানালা দিয়ে দূরে মাঠ দেখা যায়—ধান কাটা শুরু হয়নি, তবু বাতাসে কাঁচা শস্যের গন্ধ ওর থেকে ত ঢের ভালো!

তবুও নন্দিনী কিছুই তার কৌতুহল দূর করতে পারে না। দুপুরে নিজের ঘরে স্বামীর ব্যবহৃত গামছাটি হাতে তুলে নাকের কাছে ধরে সে। ইদানিং সুপ্রিয়া কে অনুকরণ করার একটা প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে তার মধ্যে। কিন্তু আজ এটি করতে গিয়ে তাকে লজ্জায় পড়তে হলো। সমীর ঘরে ঢুকতেই এই দৃশ্যটা পড়লো তার চোখের সামনে। যদিও বুঝতে পেরে নিজের পেছনে ওঠা লুকানো ছাড়া নন্দিনীর আর কিছুই করার ছিল না।তবে সমীর কিন্তু ঘটনাটি  দেখলোও তেমন আমল না দিয়ে, কুন্দনন্দিনীকে বলল,

– শোন, আমি একটু বেরুচ্ছি। আসতে দেরি হলে সুপ্রিয়াকে  সামলে নিও লক্ষ্মীটি!
 
লজ্জা কুন্দনন্দিনী আগেই পেয়ে বসে আছে, সুতরাং এই আদরের ডাকে নতুন করে লজ্জা না পেলেও উত্তরে সে কি বলবে কিছুতেই ভেবে পেল না। 

তবে কিছু না বললেও সুপ্রিয়াকে সে সামলে নিল ঠিকই। বিকেল সরোজবালা ও  সুপ্রিয়াকে সাথে নিয়ে নদী পারে ভাঙ্গা মন্দির দেখতে গিয়ে দেখলো,মন্দিরটি মোটেও ভাঙ্গা নয় বরং সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। অবশেষে সুপ্রিয়াকে সবটা বলতেই সুপ্রিয়া হাসতে হাসতে বললেন,

– পাগল একটা, ওসব তুও বিশ্বাস করেছিস নাকি? আসলে বৃষ্টির মধ্যে হয়তো মাথা বাঁচাতে এসেছিলাম এখানে,লোকে ভেবে নিয়েছে কি না কি ঘটে গেল।  তবে বাবা বলে এর পর নাকি গাঙ্গুলী মশাই এখানেই নতুন মন্দির গড়ে। তার এই সুমতি কেন হলো তাতো আমি জানি নে ভাই,তবে পুরো গাঁয়ের লোকে এখন পুজো দেয় এখানে,এই সুগেই আমি সুখি।

সুপ্রিয়ার কথায় সরোজবালা অবিশ্বাসের স্বরে বলল,

– আর ডাকাতির ব্যাপারটি বুঝি গাঁজাখুরি?

– না তা হবে কেন, ডাকাতরা সব এখানে আস্তানা গেড়েছিল। এখন কি দেখছিস, তখন এই জায়গা রীতিমতো জঙ্গলা। ডাকাতের আস্তানা হিসেবে মন্দ ছিল না। পরে অবশ্য শুনা যায়,কোন সাহেবের বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে সবাই ধরা পরে এক যোগে,দু একজন নাকি পালিয়েও ছিল। পর তাদের কি হয় তা কে জানে! তবে ভাগ্য কর্মে ঠাকুর নিজেই উদ্ধার করলে সব।

নন্দিনী বিশ্বাস করলেও সরোজবালা বিশ্বাস করলো কি না সন্দেহ। তবে এই বিষয়ে সে আর কথা না বাড়িয়ে বাকিদের সাথে পুজোর কথায় মনোযোগী হয়ে উঠলো। ভাদ্র প্রায় শেষের দিকে, আর ত মাত্র দিন পনেরো পরে মহালয়া। মায়ের আগমন বিশেষ দূরে নেই এখন। কুন্দনন্দিনী ভাবলো কথাটা। মনে পড়লো বন্ধু বান্ধবী দের সাথে পূজোতে কাটানো অতীতের দিন গুলো।

///////

গাঙ্গুলী বাড়ির পাশে ঘুরে ফিরে সন্ধ্যার আগেই তাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আকাশে মেঘের দল ঘন হয়ে আসছে দেখে সুপ্রিয়ার আর দেরি করার ইচ্ছে  হলো না। চটজলদি বাড়ি ফিরতেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। সরোজ তখন পাশের মাঠে থেকে তার গাইটিকে নিয়ে এসে গোয়ালে বাঁধতে বাঁধতে বলল,

—নন্দিনীদি! পেছনের পুকুর পাড়ে ধুতি-চাদরগুলো আছে ভাই, ভিজে গেলে আর শুকোবে না আজ!

কুন্দনন্দিনী তখন বারান্দায়। এক লাফে ছুটে গেল পেছনের দিকটায়, সেখানে লটকে থাকা দুটো ধুতি আর কয়েকটি শাড়ি- গামছা খুলে নিতে নিতে সে দেখল—পেছনের পুকুর  ঘাটে কেউ যেন দাঁড়িয়ে আছে। আলো কম, বৃষ্টির তীব্রতা ছড়িয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে,ঝম ঝম শব্দ চারদিক চেপে রেখেছে। কুন্দনন্দিনী ভেবেছিল কেউ কাপড় নিতে এসেছে, হয়তো বৃষ্টি জোরে এল বলে সরোজবালা!  কিন্তু কৌতুহল বসে নিজে ভিজে গেলেও সে একটু এগিয়ে গিয়ে বুঝল—সমীর! স্নানের শেষ মুহূর্তে, সম্ভবত ধুতি পাল্টাতে গেছিল । কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির তীব্রতা দেখে চমকে এই দূর্ঘটনা!  তবে সে বেচারা এই সময়ে কাউকেই এখানে আশা করে নি। সে তারাহুরায় গামছা রেখে ধুতি পারছিল। সারা দেহ থেকে পানি ঝরছে—আর এক মুহূর্ত, মাত্র এক মুহূর্তে ।তখনি ধুতির নিচে থেকে তার লিঙ্গটি সম্পূর্ণ অনাবৃত হয়ে কুন্দনন্দিনীর চোখে পড়ে গেল। তবে সমীর কিন্তু নন্দিনী কে দেখতে পেল না। 

এদিকে ওই একঝলকে কুন্দনন্দিনী পেছনে সরে পালিয়ে এলেও, সেই দৃশ্য তার ভেতরে সেঁধিয়ে গেল। ধোঁয়াটে আলোর মধ্যে, পরিশ্রমে ক্লান্ত পুরুষদেহ, কাঁপতে থাকা এক মুহূর্তের সরল নগ্নতা—
কুন্দনন্দিনীর সমস্ত শরীর কেমন চুপসে এল। মুখ শুকিয়ে গেল, চোখ স্থির হয়ে রইল বৃষ্টি ভেজা উঠানের পানে। মনের ভাবনা তাকে সে দেখে ফেলেনি তো? কিন্তু সে তো ব্যস্ত ছিল জলদি কাপড় পড়ে  উঠে আসতে! তবুও তার মনে হচ্ছিল গোটা আকাশ তার দিকে তাকিয়ে আছে।

গলায় একটা ঢোঁক গিলে সে দৌড়ে ঘরে ঢুকে পড়ল। আধভেজা শাড়িতে কাপড় গুলো কোলে রেখেই ভিতরের ঘরে গিয়ে বসল খাটে—বৃষ্টি পড়ছে, কুপি জ্বলছে, কিন্তু কুন্দনন্দিনীর মনে কেবল ঘুরে ফিরে আসছে সেই মুহূর্তের ছবি।  হাত দিয়ে নিজের বুক ছুঁয়ে দেখল সে —হৃদস্পনদন অস্বাভাবিক।


(আমিও স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। বিশেষ করে কারো কোন মেসেজের উত্তর দিতে ইচ্ছে করছে না আপাতত ( আমি দুঃখিত) 


INKITT:– ☛inkitt☚   / ছোট গল্প:–গল্পের খাতা 

[Image: IMG-20241001-072115.jpg]

Like Reply


Messages In This Thread
RE: স্বামী ﴾ পর্ব নং:- ৭ ﴿ - by বহুরূপী - 04-07-2025, 07:06 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)