Thread Rating:
  • 315 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৬)
আপডেট ৩৫



মাহফুজ এর আগে লাস্ট কবে এত টেনশনে ছিল মনে করতে পারছে না। সময়ের এক ঘন্টা আগে ভেন্যুতে এসে বসে আছে। আজকে সিনথিয়ার আম্মু ওর সাথে দেখা করতে রাজি হয়েছে এইটা শোনার পর ওর বুক থেকে একটা ভার নেমে গেছে। তবে অন্য একটা ভার যুক্ত হয়েছে। সাফিনা সম্পর্কে যত শুনেছে তত ওর মনে একটা শ্রদ্ধাযুক্ত ভয় যুক্ত হয়েছে সাথে কৌতুহল। সিনথিয়া, সাবরিনা এবং নুসাইবা। তিনজন যখন সাফিনা করিম সম্পর্কে কথা বলে তখন বুঝা যায় এই তিন জন কতটা ট্রাস্ট করে সাফিনা কে, কতটা শ্রদ্ধা করে। মাহফুজ সাধরণত মানুষ সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা নেবার জন্য সব সময় লক্ষ্য করে সেই লোকটার কাছের লোকগুলো তার সম্পর্কে কিভাবে ভাবে। সাফিনা সম্পর্কে তার কাছের তিনজন যেইভাবে শ্রদ্ধা আর সম্মানের সাথে ভাবে তাতে মাহফুজের কোন সন্দেহ নেই সাফিনা ইজ এ গুড টিম লিডার। নুসাইবা সব সময় বলত আমাদের ফ্যামিলিতে খালি আমাদের বাসা না, আমাদের বৃহত্তর ফ্যামিলিতেও আম্মুর সমান প্রভাব আর কার নেই। ইংল্যান্ডে থাকা চাচারা বা নুসাইবা ফুফুও বড় কোন সিদ্ধান্ত নেবার সময় আম্মুর সাথে পরামর্শ করে। আম্মু যদি না বলে তাহলে সেই কাজ করে না। তবে আম্মু কখনো খালি খালি কোন জিনিস না করবে না। আম্মু যদি কিছুতে না করে তার মানে তার পিছনে আম্মুর যুক্তি আছে। শুধুমাত্র ইগোর কারণে আম্মু সহজে না করে না। ধর তুমি পরামর্শ চাইলে আর আম্মু বলল এই কাজটা করো না। সেই ক্ষেত্রে আম্মু তোমাকে যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দিবে কেন এই কাজটা তোমার জন্য ক্ষতিকারক। অনেক ক্ষেত্রে আম্মুর কথা তোমার ভাল না লাগতে পারে তবে আম্মুর যুক্তি সহজে অগ্রাহ্য করতে পারবে না। সাবরিনা মাহফুজ কে কথায় কথায় বলেছিল ওর মা কিভাবে কার বিপদের সময় সর্বশক্তি দিয়ে পাশে থাকে। এর ফলে মানুষের লয়ালটি সহজে পায় সাফিনা করিম। আর নুসাইবা গল্পচ্ছলে বলেছিল, ভাবী এমন একটা মানুষ যাকে তুমি বিশ্বাস করে সব কথা বলতে পার। আর কেউ জানবে না। তোমার সুখ দুখের সব কথাই তুমি শেয়ার করতে পার। ভাবী যদি দরকার হয়ে মেয়েদের সাথে বান্ধবীর মত আচরণ করতে পারে আবার চাইলে কঠোর মায়ের মত ওদের শাসন করতে পারে। দুই ক্ষেত্রে ভাবী সমান সফল। মাহফুজ বুঝে সাফিনার সম্মতি পেলে আর কোন বাধাই থাকবে না ওর জন্য। তাই আজকের দিনটা ওর জন্য খুব গূরুত্বপূর্ণ। সিনথিয়া, সাবরিনা আর নুসাইবার সাথে আলাদা আলাদা করে কথা বলে সাফিনার পছন্দ অপছন্দ সব কিছুর একটা লিস্ট বানিয়ে নিয়েছে। কি করা যাবে সাফিনার সামনে, কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না। আগে থেকে এসে বসে আছে। সাফিনা এখনো আসে নি। যত দেরি হচ্ছে তত টেনশন হচ্ছে মাহফুজের। আসবে তো সিনথিয়ার আম্মু? আসলে কিভাবে  নিজের ব্যাপারটা প্রেজেন্ট করবে সাফিনার সামনে। এইসব কিছু যত ভাবছে তত গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। অলরেডি দুই গ্লাস পানি খেয়ে ফেলেছে বসে  বসে। সেই সময় রিসেপশনের সামনে একজনের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি আটকে যায়।



রিসেপশনের সামনে একজন নজরকাড়া সুন্দরী দাঁড়িয়ে আছে। ছবিতে বহুবার দেখেছে তবে যথেষ্ট দূরে বসে থাকলেও মাহফুজের মনে হয় ছবি গুলো ঠিক করে ফুটিয়ে তুলতে পারে নি সাফিনা করিমের সৌন্দর্য। রিসেপশনের লোকের পিছে পিছ আসতে থাকে সাফিনা করিম। সিনথিয়ার আম্মু। যত কাছে আসতে থাকে তত বুকে ধুকপুক বাড়তে থাকে মাহফুজের। যেন ক্লাসের কড়া টিচারের কাছে বাড়ির কাজ জমা দেবার আগের যে ভয় সংশয় মনে আসে সব অনেক বছর পর মাহফুজের মনে আবার এসে জমা হয়েছে। মাহফুজ ভাবে এত ভয় পাবার কিছু নেই। এটাকে ভাবতে হবে একটা নেগোশিয়েশন মিটিং এর মত। জাদরেল প্রতিপক্ষ তবে মাহফুজ জানে কেউ অজেয় না। মাহফুজ প্রতিপক্ষ কে মাপতে থাকে। পাচ ফুট ছয় ইঞ্চি হবে লম্বায়। ফর্সা। চমকার চেহারা। অনেকে খালি ফর্সাদের সুন্দর বলে, সাফিনা করিম মোটেই সেই টাইপ  ফর্সা সুন্দরী না বরং উনার ফেস কাটিং চমৎকার। বড় বড় চোখ, টিকলো নাক। সরু ঠোট। পরিপাটি করে জামদানি পরা। শাড়ি পরার ধরণ আর হাটার স্টাইলে অভিজাত্য ঠিকরে বের হচ্ছে। কিছু মানুষ আছে যারা রুমে ঢুকলে তাদের শারীরিক সৌন্দর্য আর ব্যক্তিত্বের জন্য রূমের সবাই একবার হলেও ফিরে তাকাবে। সাফিনা হচ্ছেন সেই সুন্দরী। রুফটপে বেশি কাস্টমার নেই এই মূহুর্তে। অফিস শেষের ভীড়টা এখনো শুরু হয় নি। তবে অল্প যে কয়টা টেবিলে লোকজন আছে তারা প্রায় সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে একবার হলেও তাকাচ্ছে সাফিনার দিকে। সাফিনার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। বুঝাই যাচ্ছে সাফিনা বছরের পর বছর এমন দৃষ্টি দেখে অভ্যস্ত। প্রতিটা পদক্ষেপে কনফিডেন্স ঠিকরে বের হচ্ছে। মাহফুজের মনে হয় দিজ ইজ গোয়িং টু বি টাফ। মাহফুজ নিজে কে নিজে সাহস দেয়। সাফিনা আন্টির সব পছন্দ অপছন্দের লিস্ট ওর মনে গাথা আছে। এখন শুধু সাফিনা আন্টির প্রশ্ন গুলোর ঠিকঠাক উত্তর দিয়ে উতরে যেতে পারলে আর বড় কোন বাধা থাকবে না। টেবিলের একদম কাছে এসে সাফিনা কয়েক সেকেন্ড থমকে থাকেন। মাহফুজের দিকে তাকিয়ে থাকে কয়েক সেকেন্ড। সাফিনার চোখে একটা বিস্ময় ফুটে উঠে অল্প সময়ের জন্য তবে দ্রুত সেটা সামলিয়ে নিয়েছেন। মাহফুজ একবার নিজের দিকে তাকায়। তাকে দেখে হঠাত চমকে উঠার কি কারণ থাকতে পারে? মাহফুজ সালাম দেয়। সাফিনা উত্তর দেয়। সাফিনার চেয়ার টেনে ধরে মাহফুজ। সাবরিনা, সিনথিয়া আর নুসাইবা সবাই বলে দিয়েছে সাফিনা এটিকেট খুব পছন্দ করে। একজন মানুষ তার আশেপাশে সবার সাথে কতটা কার্টেসি শো করছে সেইটা দেখে সাফিনা সিদ্ধান্ত নেয় মানুষটা কেমন। তাই সাফিনার চেয়ার টেনে ধরে। সাফিনা  বসলে উলটো দিকের নিজের চেয়ারে বসে। সাফিনা চকলেট কেক পছন্দ করে শুনেছে মাহফুজ। তাই জিজ্ঞেস করে আন্টি এদের চকলেট কেক ভাল। আনতে বলব। সাফিনা মাথা নেড়ে না বলে। তবে সাফিনার চোখে একটা বিস্ময় মাহফুজে অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে এড়ায় না। সাফিনা জিজ্ঞেস করে তোমাদের বাড়ি কি ময়মনসিং বা ঐ এলাকায় তোমাদের কোন আত্মীয় আছে। মাহফুজ বলে না আন্টি। আমরা পুরান ঢাকাইয়া কয়েক পুরুষ ধরে। সাফিনা সামনে থাকা পানির গ্লাস থেকে এক ঢোক পানি খান। তারপর বলেন তোমার সাথে আমার পূর্ব পরিচিত একজনের অনেক মিল। তাই ভাবলাম তোমার বাড়ি ময়মনসিং কিনা, হয়ত তুমি তার আত্মীয়। মাহফুজ নিজের ড্রেসাপের দিকে তাকায়। আজকে আসার সময় ঠিক পরিকল্পনা করে আসে নি। তবে  নিজের ড্রেসাপে স্পষ্ট কাজলের ছাপ পায়। সাদা পাঞ্জাবী। বুকের উপর ক্রস করে রাখা চাদর আর ব্যাক ব্রাশ চুল। এতদিন ধরে কাজলের যে গল্প গুলো শুনেছে তাতে বুঝে দুই জনের হাইট প্রায় কাছাকাছি। কাজলের নানা রকম বীরত্বের গল্প শোনার কারণে মনে মনে কাজলের ফ্যান হয়ে গেছে খানিকটা। তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় ড্রেসাপে সেই ছায়া পরেছে। আর হাইট আর ড্রেসাপের মিলের কারণে সাফিনার মনে যে একটা ভ্রম তৈরি হয়েছে সেইটা আন্দাজ করে মাহফুজ। তবে কাজল কে যে চিনে সেই কথাটা বলতে চায় না। তাই জিজ্ঞেস করে আন্টি কার কথা বলছেন আপনি? আপনাদের কোন আত্মীয়? মাহফুজের দিকে কয়েক সেকেন্ড ভাল করে তাকায় সাফিনা। তারপর মাথা নেড়ে বলে তুমি চিনবে না। আমাদের আত্মীয় না তবে আমার পরিচিত। তবে ভাল করে তাকালে বুঝা যায় তোমাদের চোয়াল নাক আলাদা প্যাটার্নের। আসলে তোমার মত করে ব্রাক ব্রাশ করত, পাঞ্জাবী পরত, হাইট তোমার মত। এইসব কারণে প্রথমে একটু চমকে গেছিলাম। ভাল করে খেয়াল করলে পার্থক্যটা ধরা যায়। মাহফুজ কাজল সম্পর্কে জানে এটা লুকানোর জন্য বলে, আমাকে উনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েন। নিজের খানিকটা হলেও লুক এলাইক কে দেখতে পেতাম। সাফিনা চুপ করে থাকে। মৃত মানুষের সাথে তো পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায় না। সাফিনা বলে উনি জীবিত নেই। মাহফুজ বলে স্যরি। সাফিনা বলে তোমার স্যরি বলার কিছু নেই। আর প্রসংগ তো আমি তুললাম। সাফিনা এই প্রসংগ থেকে বের হতে চায়। ত্রিশ বছর পরেও এই প্রসংগটা বড় কষ্টের তার কাছে। তাই কথা ঘুরানোর জন্য বলে তোমার সম্পর্কে বল।



মাহফুজ ইন্টারভিউ এর সব প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। তাই সাফিনার এই প্রশ্নটার জন্য রেডি ছিল। নিজের সম্পর্কে তাই সংক্ষেপে বলা শুরু করে। বাবা- মা সম্পর্কে। বাড়িতে আর কে কে আছে। কলেজ কলেজ ভার্সিটি কোথায় পড়েছে। এখন কি করে। রাজনীতি প্রসংগ এড়িয়ে ওর নিজের যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা আর কনসট্রাকশনের ব্যবসা আছে সেই প্রসংগে কথা বলে। ঘড়ি ধরে পাচ মিনিট সব কিছু নিয়ে একটু একটু বলে। সাফিনা মনযোগ দিয়ে চুপচাপ শুনেন। কেউ কথা বলার সময় তার কথায় বাধা দেওয়া একদম অপছন্দ তার। ক্লাসে স্টুডেন্ট পড়া বলার সময় মনযোগ দিয়ে যেমন শুনেন সেইভাবে মাহফুজের কথা গুলো শুনতে থাকেন। মাহফুজ কথা শেষ করতে করতে ওয়েটার এসে পাশে দাঁড়ায় অর্ডারের জন্য। সাফিনা মাহফুজের কথা শুনে মনে মনে ভাবেন। সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে ছেলেটা। অপ্রয়োজনীয় কথা একদম না। বলবার জন্য যে কথা গুছিয়ে এনেছে শুনেই বুঝা যাচ্ছে। তবে সাফিনা এই গুছানো কথার বাইরের মাহফুজ কে বুঝতে চান। সিনথিয়ার মত চঞ্চল মেয়ে কে সামলাতে পারবে এই ছেলে? রাজনীতি প্রসংগে একটা কথাও বলে নি ছেলেটা। তার রাজনীতি নিয়ে যে এলার্জি আছে সেইটা ভাল করে জেনে এসেছে ছেলেটা বুঝা যায়। তবে কথায় না বললেও এই প্রসংগ তো আর হারিয়ে যাবে না। সিনথিয়ার ভবিষ্যতের সুখের সাথে এই প্রসংগ জড়িত। এইসব বিষয়ে কথা বলার আগে একটু রিলাক্স হওয়া দরকার। তাই মেনু উলটান। মাহফুজ কে বলেন তোমার কি পছন্দ অর্ডার দাও। আজকে আমি খাওয়াবো। মাহফুজ মানা করে উঠে। আন্টি আজকে আপনি আমার মেহমান। সাফিনা হেসে উঠেন, সিনথিয়ার বন্ধুরা যখনি আসে আমি খাওয়াই তাদের। আজকে যেহেতু বাসায় না তাই এখানের বিলটা আমি দিব। মাহফুজ সাফিনার গলার স্বরে টের পান এই বিষয়ে তর্ক করা যাবে না। সাফিনার গলায় টিচার সুলভ একটা কর্তৃত্ব আছে। চাইলেও এই না করা যায় না। যদিও ও বিল দিবে সেইটা ঠিক করে এসেছিল কিন্তু সাফিনার আদেশের কাছে মাথা নোয়াতে হল। থাই সুপ, অংথং আর ক্যাশনাট সালাদ।



অর্ডার আসার অপেক্ষার সময়টা সাফিনা প্রশ্ন করেন। সিনথিয়া বলল তুমি নাকি পলিটিক্সের সাথে জড়িত। সত্যি? মাহফুজ বলে জ্বী আন্টি। সাফিনা বলে তাহলে তুমি এই ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলে কেন তোমার নিজের সম্পর্কে বলার সময়? মাহফুজ বলে এড়াই নি আন্টি। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করেছি। সাফিনা জানেন তার ঠান্ডা গলায় করা প্রশ্ন অনেক বড় বড় লোককেও ঘাবড়ে দেয়। সেখানে মাহফুজ বেশ শান্ত ভাবে তার প্রশ্নটার উত্তর দিল। মাহফুজের কনফিডেন্স আর বাকচাতুরতা প্রসংসা করেন। সাফিনা বলেন এখন সঠিক সময় হয়েছে? বলতে চাও? মাহফুজ ভেবেছিল এই প্রসংগ  আর পরে আনবে। তবে এখন এই প্রসংগ আর এড়ানোর উপায় নেই। তাই বলে জ্বী অবশ্যই। মাহফুজ বলে রাজনীতি জিনিসটা কে আমাদের শিক্ষিত আরবান সমাজে বেশ খেলো করে দেখে আন্টী। তবে আমার মতে রাজনীতি জিনিসটা তেমন না। রাষ্ট্র, সমাজ এমনকি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের সব কিছুর উপর রাজনীতির প্রভাব আছে। আমরা খালি ভাবি রাজনীতি খারাপ লোকদের কাজ। ক্ষমতালোভীদের কাজ। এই বলে বলে গত পঞ্চাশ বছরে আমাদের দেশের রাজনীতিটা আমরা খালি ক্ষমতালিপ্সু লোকদের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। আমি মনে করি এর পরিবর্তন প্রয়োজন। আমার নানা দলের রাজনীতি করে কিশোর বয়স থেকে। দলের সব সিনিয়র নেতারা সবাই তাকে চিনে। দলের প্রয়োজনে মাঠে নামতে কখনো দ্বিধা করে নি নানা। তার অর্ধেক পরিমান কানেকশন থাকলেও সহজে কোটিপতি হয়ে গেছে লোকে। সেখানে নানা কিছুই করেন নি। আমার বাবাও সেরকম। সরকারি দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা হয়ত খুব ছোট জিনিস। তবে এই ঢাকা শহরে একটা ওয়ার্ড সেক্রেটারি কতটা পাওয়ারফুল সেটা অনেকেই জানে না। সম্ভবত আমার বাবা একমাত্র ওয়ার্ড সেক্রেটারি সরকারি দলের যে কোন টু পাইসের বিজনেস করে না। আমি উনাদের থেকে শিখেছি। উনাদের দেখে আমার রাজনীতির দীক্ষা। আর বিপ্লব করে পুরো সিস্টেম সব সময় বদলানো যায় না। একটা সিস্টেম হল অসংখ্য মানুষের সমষ্টি। যথেষ্ট সংখ্যক ভাল মানুষ সিস্টেমে থাকলে সিস্টেম নিজে নিজে ভাল ভাবে কাজ শুরু করবে। এই আইডিওলজি থেকে আমার রাজনীতিতে আসা। আমার রাজনীতি দোকান থেকে চাদা তোলা বা ফাও খাওয়ার রাজনীতি না। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলাম এক সময়। খোজ নিলেই দেখবেন এই পদটায় যারা থাকে তারা পুরান ঢাকার দোকান থেকে টাকা তুলে বছর ঘুরতে না ঘুরতে বড়লোক হয়। আমি তেমন কিছু করি নি। আমার যে বিজনেস আছে সেটা আমি নিজে থেকে গড়ে তুলেছি। পলিটিক্স করতে গিয়ে যে সব কানেকশন হয় সেগুলো ব্যবসায় আমাকে কাজে দেয়। তবে মাসল পাওয়ার খাটিয়ে প্রতিপক্ষ কে বিজনেস থেকে সরানোর মত রাজনীতিবিদ আমি না। একটানে অনেকগুলো কথা বলে মাহফুজ একটু থামে, দম নেয়। গ্লাস থেকে পানিতে চুমুক দেয়। সাফিনা খুব মনযোগের সাথে মাহফুজের কথা গুলো শুনে। কথা বলার সময় মাহফুজের চোখ, মুখ আর হাতের অংগভংগি খেয়াল করে। সাফিনা এইটা বিশ্বাস করে যে মানুষ সহজে মিথ্যা বলতে পারে তবে তার চোখ, মুখের অংগ ভংগি এইসব সহজে মিথ্যা বলতে পারে না। মানুষ যা বিশ্বাস করে না তা যদি বলে তখন সেটা তার চোখ মুখের দিকে তাকালে বুঝা যায়। যে জিনিস মানুষ বিশ্বাস করে সেটা সে যখন বলে তখন তার চোখ জ্বল জ্বল করে। মুখের দিকে তাকালে বুঝা যায় কতটা দৃঢ় তার সংকল্প এই কথার পিছনে। সাফিনার মনে হয় তার এই স্কেলে মাহফুজ পাশ করে গেছে। মাহফুজ আসলে বিশ্বাস করে রাজনীতিতে ভাল মানুষ আসার দরকার আছে। আর রাজনৈতিক সিস্টেম বদলাতে গেলে ভিতর থেকে বদলাতে হবে ধীরে ধীরে। সাফিনার কিশোরী বয়সে শোনা আরেকজনের কথা মনে পড়ে। কাজল’দা ঠিক এইভাবে বিশ্বাস করে দেশ বদলানোর কথা বলত। এত বছর পরেও কেউ একজন ঠিক সেইভাবে ভাবে ভাবতে ভাল লাগে তার। মাহফুজ কে প্রথম দেখাতে খুব প্রাকটিক্যাল একটা ছেলে মনে হলেও ওর এই কথা গুলোতে ওকে মনে হচ্ছে দেশ বদলানোর স্বপ্ন দেখা একজন স্বপ্নালু তরুণ। মাহফুজ কি আসলেই এরকম? মাহফুজের চোখের দিকে আবার তাকায় সাফিনা। চোখে মুখ জ্বল জ্বল করছে। নিজের স্বপ্নের কথা বলবার সময় সবাই যেমন উদ্দীপ্ত হয়, মাহফুজের চেহারায় এখন তেমন একটা ছাপ। সিনথিয়ার মাঝেও তো তার রক্ত, তার জিন। সিনথিয়া কি এই কারণে তার মত সিস্টেম চেঞ্জ করতে চাওয়া এক স্বপ্নালু ছেলে কে ভালবেসেছ?
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৪ ) - by কাদের - 08-05-2025, 10:52 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)