05-05-2025, 03:40 PM
(This post was last modified: 05-05-2025, 03:40 PM by Abirkkz. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
রাত গভীর হল। গ্রামের চারপাশে এক অলৌকিক নীরবতা ছড়িয়ে পড়ল, শুধু দূরের জঙ্গল থেকে কখনো কখনো অজানা পশুর ডাক ভেসে আসছিল।
মালতী তার ছোট্ট ঘরে একা বসে ছিল, তার হাতে একটি মৃদু কাঁপুনি। ঘরের একমাত্র তেলের প্রদীপটি ক্ষীণভাবে জ্বলছিল, দেয়ালে তার ছায়া অদ্ভুতভাবে নড়াচড়া করছিল।
সে চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করল, কিন্তু প্রতিবারই কামিনীর মুখ তার মনের পর্দায় ভেসে উঠে, তার রক্তলাল শাড়ি, তার লম্বা চুল, তার মায়াবী হাসি—সবই যেন তার সামনে ভেসে উঠছিল।
হঠাৎ, ঘরের জানালায় একটি ঠান্ডা, অস্বাভাবিক হাওয়া এসে প্রদীপের শিখাটিকে নাচিয়ে দিল। মালতী চমকে উঠল। তার চোখ জানালার দিকে ছুটে গেল, এবং সেখানে সে দেখল—একটি কালো, ঘন কুয়াশা, যেন জীবন্ত হয়ে জানালার কাচের ওপর পাক খাচ্ছে।
কুয়াশার মধ্যে দুটি জ্বলন্ত চোখ ভেসে উঠল, এবং সেই চোখে একটি অপার দুঃখ মিশে ছিল। মালতীর হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হতে শুরু করল, তার শ্বাস আটকে আসছিল।
তারপর সেই ফিসফিস ভেসে এল—মধুর, মোহনীয়, কিন্তু ভয়ংকর। "মালতী, আমি জানি তুই আমাকে চাস। আমি ফিরব।" কণ্ঠটি যেন তার কানের ভেতর দিয়ে সোজা তার হৃদয়ে গিয়ে বিঁধল।
ঘরের বাতাস আরও ঠান্ডা হয়ে গেল, প্রদীপের আলো প্রায় নিভে যাওয়ার উপক্রম। কালো কুয়াশা জানালার কাচে আরও ঘনীভূত হল, এবং তার মধ্যে কামিনীর মুখ আবছাভাবে ফুটে উঠল। তার লম্বা চুল কুয়াশার সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল, তার রক্তলাল শাড়ি যেন অন্ধকারে জ্বলছিল।
তার ঠোঁটে সেই প্রলোভনময় হাসি, কিন্তু তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত তৃষ্ণা—যেন সে মালতীর আত্মাকেই গ্রাস করতে চায়।মালতীর হাত কাঁপছিল, তাবিজটি আবার গরম হয়ে উঠল, কিন্তু এবার সে তা ধরে রাখল।
তার চোখ কামিনীর মুখের ওপর স্থির হয়ে গেল। তার মনে ভয় ছিল, কিন্তু সেই ভয়ের সঙ্গে মিশে ছিল এক অদ্ভুত মুগ্ধতা। কামিনীর সেই অন্ধকার, তার দুঃখ, তার অপূর্ণ ভালোবাসার গল্প—সবই মালতীর মনকে টানছিল। সে জানত, কামিনী একটি বিপদ, কিন্তু তার মধ্যে এমন কিছু ছিল যা মালতীকে প্রতিরোধ করতে বাধা দিচ্ছিল।
ধীরে ধীরে, মালতীর ঠোঁটে একটি হালকা, প্রায় অদৃশ্য হাসি ফুটে উঠল। তার চোখে ভয় ছিল, কিন্তু সেই ভয়ের গভীরে একটি অজানা সংকল্প জ্বলছিল। সে ফিসফিস করে বলল, "তুই ফিরলে আমি প্রস্তুত থাকব, কামিনী।" তার কণ্ঠে কাঁপুনি ছিল, কিন্তু সেই কথাগুলোতে ছিল একটি অদ্ভুত শক্তি।
কুয়াশা এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেল, যেন কামিনী তার কথাগুলো শুনতে পেয়েছে। তারপর, ধীরে ধীরে, কুয়াশা জানালা থেকে মিলিয়ে গেল, কিন্তু ঘরে সেই অলৌকিক হাসির প্রতিধ্বনি রয়ে গেল।
মালতী প্রদীপের দিকে তাকাল। তার শরীর এখনো কাঁপছিল, তার ত্বকে কামিনীর নখের দাগ জ্বলছিল। কিন্তু তার মনে একটি নতুন সংকল্প জন্ম নিয়েছিল। কামিনী ফিরবে, এবং এবার মালতী তার মুখোমুখি হবে—ভয় নিয়ে নয়, বরং তার নিজের শক্তি নিয়ে।
রাতের নিস্তব্ধতায় মালতী তার ঘরে বসে ছিল, তার চারপাশে ছড়িয়ে ছিল রুদ্রনাথের দেওয়া তান্ত্রিক শাস্ত্রের পুরনো পাতা। প্রদীপের ক্ষীণ আলোয় সেগুলোর বিবর্ণ অক্ষর যেন জীবন্ত হয়ে উঠছিল, প্রতিটি শব্দ মালতীর মনে এক অদৃশ্য শক্তির সঞ্চার করছিল।
তার হাতে ধরা ছিল একটি তামার পাত্র, যার মধ্যে জ্বলছিল সুগন্ধী ধূপের ধোঁয়া, যা ঘরে একটি গাঢ়, মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করছিল। তার গলায় ঝোলানো তাবিজটি এখনো উষ্ণ ছিল, যেন কামিনীর অদৃশ্য উপস্থিতি তাকে সতর্ক করছিল।
রুদ্রনাথ তার সামনে বসে ছিল, তার কপালে সিঁদুরের তিলক জ্বলজ্বল করছিল। তার চোখে ছিল এক অটল দৃঢ়তা। "মালতী," সে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, "কামিনী একটি আত্মা নয়, সে একটি শক্তি—তোমার ভয়, তোমার দুর্বলতা, তোমার লুকানো তৃষ্ণার প্রতিফলন। তাকে পরাস্ত করতে হলে তোমাকে তোমার মনের শক্তি জাগাতে হবে।"
সে মালতীর হাতে একটি রুদ্রাক্ষের মালা তুলে দিল। "এটি তোমার ইচ্ছাশক্তির প্রতীক। এটি ধরে মন্ত্র পড়ো, আর তোমার ভেতরের আলো জ্বালাও।"মালতী মালাটি হাতে নিল। তার আঙুলের স্পর্শে রুদ্রাক্ষের পুঁতিগুলো যেন স্পন্দিত হচ্ছিল।
সে চোখ বন্ধ করল এবং রুদ্রনাথের শেখানো মন্ত্র আবৃত্তি শুরু করল। প্রতিটি শব্দের সঙ্গে তার শরীরে এক অদ্ভুত শক্তি প্রবাহিত হচ্ছিল, যেন তার ভেতরের ভয় ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে। কিন্তু তার মনের গভীরে কামিনীর ছায়া এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছিল—তার মায়াবী হাসি, তার উষ্ণ স্পর্শ, তার ফিসফিস। মালতীর শ্বাস ভারী হয়ে এল, তার কপালে ঘাম জমল।
মন্ত্র পড়তে পড়তে তার মনে হল, সে শুধু কামিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে না, তার নিজের অন্ধকারের সঙ্গেও লড়ছে।ঘরের বাতাস হঠাৎ ঠান্ডা হয়ে গেল। ধূপের ধোঁয়া অদ্ভুতভাবে পাক খেয়ে উঠল, যেন কোনো অদৃশ্য সত্ত্বা তাকে নাড়া দিচ্ছে।
মালতীর হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হল, কিন্তু সে মন্ত্র পড়া থামাল না। তার কণ্ঠে এক নতুন শক্তি ফুটে উঠছিল।
রুদ্রনাথ তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। "তুমি প্রস্তুত হচ্ছো, মালতী। কিন্তু মনে রেখো, কামিনী তোমার শক্তির চেয়েও তোমার দুর্বলতাকে বেশি চায়।
রাতের গভীর অন্ধকারে মালতীর ঘর যেন একটি অলৌকিক শক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। প্রদীপের ক্ষীণ শিখা দেয়ালে অদ্ভুত ছায়া ফেলছিল, যা নড়াচড়া করছিল যেন সেগুলো জীবন্ত।
মালতী তার বিছানায় বসে ছিল, তার হাতে রুদ্রাক্ষের মালা শক্ত করে ধরা। তার মন এখনো কামিনীর ফিসফিসে আচ্ছন্ন, তার ত্বকে এখনো সেই নখের দাগের জ্বালা।
রুদ্রনাথ তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, তার ত্রিশূল মাটিতে ঠেকানো, চোখে সতর্কতা। সে মালতীকে আরও একটি মন্ত্র শেখাচ্ছিল, তার কণ্ঠ গম্ভীর কিন্তু শান্ত।
কিন্তু হঠাৎ, ঘরের বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেল। প্রদীপের শিখা এক মুহূর্তের জন্য নীল হয়ে জ্বলে উঠল, এবং একটি গাঢ়, মধুর গন্ধ ঘরে ছড়িয়ে পড়ল—যেন অজানা ফুলের সুবাস।
রুদ্রনাথের কপালে ভাঁজ পড়ল। তার হাতের ত্রিশূল কেঁপে উঠল, এবং তার চোখ হঠাৎ অদ্ভুতভাবে স্থির হয়ে গেল। মালতী তার দিকে তাকাল, এবং তার হৃৎপিণ্ড ধক করে উঠল।
রুদ্রনাথের চোখে একটি অচেনা জ্বলন্ত আলো, তার ঠোঁটে একটি মৃদু, প্রলোভনময় হাসি—যা রুদ্রনাথের নয়, কামিনীর।
।
html।
মালতী তার ছোট্ট ঘরে একা বসে ছিল, তার হাতে একটি মৃদু কাঁপুনি। ঘরের একমাত্র তেলের প্রদীপটি ক্ষীণভাবে জ্বলছিল, দেয়ালে তার ছায়া অদ্ভুতভাবে নড়াচড়া করছিল।
সে চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করল, কিন্তু প্রতিবারই কামিনীর মুখ তার মনের পর্দায় ভেসে উঠে, তার রক্তলাল শাড়ি, তার লম্বা চুল, তার মায়াবী হাসি—সবই যেন তার সামনে ভেসে উঠছিল।
হঠাৎ, ঘরের জানালায় একটি ঠান্ডা, অস্বাভাবিক হাওয়া এসে প্রদীপের শিখাটিকে নাচিয়ে দিল। মালতী চমকে উঠল। তার চোখ জানালার দিকে ছুটে গেল, এবং সেখানে সে দেখল—একটি কালো, ঘন কুয়াশা, যেন জীবন্ত হয়ে জানালার কাচের ওপর পাক খাচ্ছে।
কুয়াশার মধ্যে দুটি জ্বলন্ত চোখ ভেসে উঠল, এবং সেই চোখে একটি অপার দুঃখ মিশে ছিল। মালতীর হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হতে শুরু করল, তার শ্বাস আটকে আসছিল।
তারপর সেই ফিসফিস ভেসে এল—মধুর, মোহনীয়, কিন্তু ভয়ংকর। "মালতী, আমি জানি তুই আমাকে চাস। আমি ফিরব।" কণ্ঠটি যেন তার কানের ভেতর দিয়ে সোজা তার হৃদয়ে গিয়ে বিঁধল।
ঘরের বাতাস আরও ঠান্ডা হয়ে গেল, প্রদীপের আলো প্রায় নিভে যাওয়ার উপক্রম। কালো কুয়াশা জানালার কাচে আরও ঘনীভূত হল, এবং তার মধ্যে কামিনীর মুখ আবছাভাবে ফুটে উঠল। তার লম্বা চুল কুয়াশার সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল, তার রক্তলাল শাড়ি যেন অন্ধকারে জ্বলছিল।
তার ঠোঁটে সেই প্রলোভনময় হাসি, কিন্তু তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত তৃষ্ণা—যেন সে মালতীর আত্মাকেই গ্রাস করতে চায়।মালতীর হাত কাঁপছিল, তাবিজটি আবার গরম হয়ে উঠল, কিন্তু এবার সে তা ধরে রাখল।
তার চোখ কামিনীর মুখের ওপর স্থির হয়ে গেল। তার মনে ভয় ছিল, কিন্তু সেই ভয়ের সঙ্গে মিশে ছিল এক অদ্ভুত মুগ্ধতা। কামিনীর সেই অন্ধকার, তার দুঃখ, তার অপূর্ণ ভালোবাসার গল্প—সবই মালতীর মনকে টানছিল। সে জানত, কামিনী একটি বিপদ, কিন্তু তার মধ্যে এমন কিছু ছিল যা মালতীকে প্রতিরোধ করতে বাধা দিচ্ছিল।
ধীরে ধীরে, মালতীর ঠোঁটে একটি হালকা, প্রায় অদৃশ্য হাসি ফুটে উঠল। তার চোখে ভয় ছিল, কিন্তু সেই ভয়ের গভীরে একটি অজানা সংকল্প জ্বলছিল। সে ফিসফিস করে বলল, "তুই ফিরলে আমি প্রস্তুত থাকব, কামিনী।" তার কণ্ঠে কাঁপুনি ছিল, কিন্তু সেই কথাগুলোতে ছিল একটি অদ্ভুত শক্তি।
কুয়াশা এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেল, যেন কামিনী তার কথাগুলো শুনতে পেয়েছে। তারপর, ধীরে ধীরে, কুয়াশা জানালা থেকে মিলিয়ে গেল, কিন্তু ঘরে সেই অলৌকিক হাসির প্রতিধ্বনি রয়ে গেল।
মালতী প্রদীপের দিকে তাকাল। তার শরীর এখনো কাঁপছিল, তার ত্বকে কামিনীর নখের দাগ জ্বলছিল। কিন্তু তার মনে একটি নতুন সংকল্প জন্ম নিয়েছিল। কামিনী ফিরবে, এবং এবার মালতী তার মুখোমুখি হবে—ভয় নিয়ে নয়, বরং তার নিজের শক্তি নিয়ে।
রাতের নিস্তব্ধতায় মালতী তার ঘরে বসে ছিল, তার চারপাশে ছড়িয়ে ছিল রুদ্রনাথের দেওয়া তান্ত্রিক শাস্ত্রের পুরনো পাতা। প্রদীপের ক্ষীণ আলোয় সেগুলোর বিবর্ণ অক্ষর যেন জীবন্ত হয়ে উঠছিল, প্রতিটি শব্দ মালতীর মনে এক অদৃশ্য শক্তির সঞ্চার করছিল।
তার হাতে ধরা ছিল একটি তামার পাত্র, যার মধ্যে জ্বলছিল সুগন্ধী ধূপের ধোঁয়া, যা ঘরে একটি গাঢ়, মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করছিল। তার গলায় ঝোলানো তাবিজটি এখনো উষ্ণ ছিল, যেন কামিনীর অদৃশ্য উপস্থিতি তাকে সতর্ক করছিল।
রুদ্রনাথ তার সামনে বসে ছিল, তার কপালে সিঁদুরের তিলক জ্বলজ্বল করছিল। তার চোখে ছিল এক অটল দৃঢ়তা। "মালতী," সে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, "কামিনী একটি আত্মা নয়, সে একটি শক্তি—তোমার ভয়, তোমার দুর্বলতা, তোমার লুকানো তৃষ্ণার প্রতিফলন। তাকে পরাস্ত করতে হলে তোমাকে তোমার মনের শক্তি জাগাতে হবে।"
সে মালতীর হাতে একটি রুদ্রাক্ষের মালা তুলে দিল। "এটি তোমার ইচ্ছাশক্তির প্রতীক। এটি ধরে মন্ত্র পড়ো, আর তোমার ভেতরের আলো জ্বালাও।"মালতী মালাটি হাতে নিল। তার আঙুলের স্পর্শে রুদ্রাক্ষের পুঁতিগুলো যেন স্পন্দিত হচ্ছিল।
সে চোখ বন্ধ করল এবং রুদ্রনাথের শেখানো মন্ত্র আবৃত্তি শুরু করল। প্রতিটি শব্দের সঙ্গে তার শরীরে এক অদ্ভুত শক্তি প্রবাহিত হচ্ছিল, যেন তার ভেতরের ভয় ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে। কিন্তু তার মনের গভীরে কামিনীর ছায়া এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছিল—তার মায়াবী হাসি, তার উষ্ণ স্পর্শ, তার ফিসফিস। মালতীর শ্বাস ভারী হয়ে এল, তার কপালে ঘাম জমল।
মন্ত্র পড়তে পড়তে তার মনে হল, সে শুধু কামিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে না, তার নিজের অন্ধকারের সঙ্গেও লড়ছে।ঘরের বাতাস হঠাৎ ঠান্ডা হয়ে গেল। ধূপের ধোঁয়া অদ্ভুতভাবে পাক খেয়ে উঠল, যেন কোনো অদৃশ্য সত্ত্বা তাকে নাড়া দিচ্ছে।
মালতীর হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হল, কিন্তু সে মন্ত্র পড়া থামাল না। তার কণ্ঠে এক নতুন শক্তি ফুটে উঠছিল।
রুদ্রনাথ তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। "তুমি প্রস্তুত হচ্ছো, মালতী। কিন্তু মনে রেখো, কামিনী তোমার শক্তির চেয়েও তোমার দুর্বলতাকে বেশি চায়।
রাতের গভীর অন্ধকারে মালতীর ঘর যেন একটি অলৌকিক শক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। প্রদীপের ক্ষীণ শিখা দেয়ালে অদ্ভুত ছায়া ফেলছিল, যা নড়াচড়া করছিল যেন সেগুলো জীবন্ত।
মালতী তার বিছানায় বসে ছিল, তার হাতে রুদ্রাক্ষের মালা শক্ত করে ধরা। তার মন এখনো কামিনীর ফিসফিসে আচ্ছন্ন, তার ত্বকে এখনো সেই নখের দাগের জ্বালা।
রুদ্রনাথ তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, তার ত্রিশূল মাটিতে ঠেকানো, চোখে সতর্কতা। সে মালতীকে আরও একটি মন্ত্র শেখাচ্ছিল, তার কণ্ঠ গম্ভীর কিন্তু শান্ত।
কিন্তু হঠাৎ, ঘরের বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেল। প্রদীপের শিখা এক মুহূর্তের জন্য নীল হয়ে জ্বলে উঠল, এবং একটি গাঢ়, মধুর গন্ধ ঘরে ছড়িয়ে পড়ল—যেন অজানা ফুলের সুবাস।
রুদ্রনাথের কপালে ভাঁজ পড়ল। তার হাতের ত্রিশূল কেঁপে উঠল, এবং তার চোখ হঠাৎ অদ্ভুতভাবে স্থির হয়ে গেল। মালতী তার দিকে তাকাল, এবং তার হৃৎপিণ্ড ধক করে উঠল।
রুদ্রনাথের চোখে একটি অচেনা জ্বলন্ত আলো, তার ঠোঁটে একটি মৃদু, প্রলোভনময় হাসি—যা রুদ্রনাথের নয়, কামিনীর।
।
html।