10-04-2025, 02:15 AM
(05-10-2023, 12:52 PM)কাদের Wrote: চ75......এই উপন্যাসের উপর একটি মুভি বানানো উচিত নামকরা কোন প্রডিউসার এবং ডাইরেক্টর দিয়ে, অসাধারণ বাজিমাত হবে। ❤️রেপু রইলো। ধন্যবাদ।
মুন্সী একটা কুয়াশা। অস্বিত্ব বুঝা যায় তবে ঠিক দেখা যায় না। মুন্সীর আসল নাম কি আসলে কেউ জানে না। নামের আগে বা পড়ে কিছু আছে কিনা সেটাও জানা নেই কার। কোথা থেকে এসেছে কোথায় বাড়ি জানা নেই। কথায় কোন আঞ্চলিক ভাষার টান নেই যেটা শুনে টের পাওয়া যাবে। অদ্ভুত একটা লোক। পাচ ফুট এক বা দুই ইঞ্চি লম্বা। গড়পড়তা বাংলাদেশের ছেলদের তুলনায় নিতান্ত ছোটখাট মানুষ। বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মাঝামাঝি কোথাও। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সব সময় একটা সাফারি সুট পড়ে থাকবে। মুন্সীর জন্ম কোথায় এটা কার জানা নেই, কিভাবে তার উত্থান সেটাও কেউ সিওর না। তবে গত বিশ বছর ধরে মুন্সী বাংলাদেশের অনন্য এক নাম। কার সম্পর্কে গোপন খবর বের করা দরকার, কাউকে ব্লাকমেইল করা দরকার তাহলে মুন্সী কে ভাড়া কর। মুন্সী ঠিক খবর বের করবে, আর ব্লাকমেইল ব্যাপারটা কে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে মুন্সী। ব্লাকমেইলের সাইকোলজিক্যাল মাস্টার। কিভাবে মানসিক প্রেসার দিয়ে একজন লোক কে ভেংগে ফেলতে হয়, কথা শুনতে বাধ্য করতে হয় সেটা মুন্সীর থেকে ভাল কেউ জানে না। ওশন গ্রুপ যখন নির্বাচনে নমিনেশন পাবার জন্য মরিয়া তখন তাদের এক আন্ডারগ্রাউন্ড কানেকশন প্রথম মুন্সীর কথা বলে। ওশন গ্রুপের মালিক ব্যাপারটা নিয়ে খোজ খবর নিতে গিয়ে অবিশ্বাস্য সব গল্প শুনে। শুনে মনে হয় যেন সব গালগল্প। দেশের বড় বড় কেলেংকারী, ক্ষমতার হাত বদল এই সবের অনেক গুলোর সাথে নাকি মুন্সী জড়িত। মুন্সী কে হায়ার করলে মুন্সী আপনাকে খবর জোগাড় করে দিবে এরপর এই খবর আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। আর মুন্সী কে খুজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটা কাজের পর কয়েক মাসের জন্য হাওয়া হয়ে যায়। এরপর হঠাত উদয় হয়। কোথায় যায় কোথা থেকে আসে কেউ জানে না। ওশন গ্রুপের মালিক তাই অনেক কাঠখোড় পুড়িয়ে মুন্সীর সাথে একটা মিটিং ফিক্স করে। মুন্সী প্রফেশনাল। কথাবার্তার শুরুতেই জানতে চায় কাদের সম্পর্কে খবর যোগাড় করতে হবে। সানরাইজ গ্রুপের নাম শুনে কিছুক্ষণ চুপ থাকে। সানরাইজ গ্রুপের টাকার জোর সবার জানা, আরেকটা জিনিস অনেকের জানা। সেটা হল সানরাইজ গ্রুপের মালিক আনোয়ার খান। এই লোকটা প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য কতটা নির্মম হতে পারে তার অনেক গল্প মাঠে প্রচলিত আছে। মুন্সী একটু ভেবে বলে আমি আপনাদের খবর যোগাড় করে দিব তবে সরাসরি সানরাইজ গ্রুপের কার সাথে আমি লাগতে পারব না। আপনাকে তথ্য দিব বাকিটা আপনার কাজ। রাজি হয়ে যায় ওশন গ্রপের মালিক।
গত তিন মাস ধরে সানরাইজ গ্রুপের অতীত থেকে বর্তমানের সব স্ক্যান্ডাল খোজ বের করার চেষ্টা করছে মুন্সী। তবে এমন ফ্রাস্টেটিং কাজ আগে করে নি কখনো। প্রতিটা স্ক্যান্ডালের খোজ যেন একটা কানা গলি। হঠাত করে একটা জায়গায় গিয়ে রাস্তা শেষ। যারা এইসব স্ক্যান্ডালের সঠিক খবর দিতে পারত তারা হয় মৃত, নিখোজ না হয় দেশের বাইরে। এই দেশে বড়লোকদের দুই একটা স্ক্যান্ডাল থাকবে না তা হয় না, আর লোকেরাও তা অনেকটা মেনে নিয়েছে। তাই কোন প্রমাণ ছাড়া এইসব নিয়ে মিডিয়ায় রিপোর্ট করলে দুই একদিন একটু হইচই হবে কিন্তু আসল কাজ কিছু হবে না এটা মুন্সী বুঝে। তবে সানরাইজ গ্রুপ যেন সব প্রমান হাওয়া করে দিয়েছে না হয় সাত ফুট মাটির নিচে পুতে ফেলেছে। একের পর এক ব্যর্থ লিডের পিছনে ঘুরে ঘুরে যখন মুন্সী ভেবে নিয়েছে এইবার বুঝি কিছু খবর বের করা সম্ভব না ঠিক তখন এক ঘটনার সূত্রে আরশাদের খোজ পায় মুন্সী। ওশন গ্রুপের মালিকের সাথে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে ট্যাক্স ক্যাডারের এক সিনিয়র অফিসার কে দিয়ে একটা সমঝোতা করতে চায় আরশাদের সাথে। তবে আরশাদ সানরাইজ গ্রুপের ভয়ে এত ভীত যে সে এই ব্যাপারে কোন কথা শুনতে রাজি না। তখন মুন্সী নামে আরশাদের খোজ খবর বের করতে। লোকটা সরকারী বড় অফিসার তবে খারাপ শখের অভাব নেই। জুয়া খেলা, ঘুষের টাকায় প্রোপার্টি বানানো আর মেয়ে মানুষ সব কিছুর সখ আছে। আর ভাল হচ্ছে সবার সামনে বউ নিয়ে খুব সুখী মানুষের ভান করে। ব্লাকমেইলের জন্য আদর্শ ক্যান্ডিডেট। তার হাতে কলমে আর কিছু খবর জোগাড় করে আরশাদ কে বাগে আনার জন্য কয়েক দিন সময় নেয় মুন্সী। এর মধ্যেই যেন আরশাদ হাওয়া। কোথাও নেই। হঠাত করে এক দিনের নোটিশে বদলি হয়ে ঢাকা এসে জয়েন করে হাওয়া। কেউ বলতে পারে না কই আছে। ফোন বন্ধ। সানরাইজ গ্রুপ যে আবার প্রমাণ হাওয়া করেছে টের পায় মুন্সী। তবে কিছু করার নেই যেন। এইবার মুন্সীর যেন জেদ চেপে গেল। যেভাবেই হোক খোজ বের করতে হবে আরশাদের।
আরশাদের তথ্য গুলো নিয়ে আবার বসে মুন্সী। লোকটা বড় অফিসার, বাইরে সৎ হিসেবে সুনাম আছে। তবে সৎ যে না সেটা মুন্সী বুঝে ফেলেছে। তবে এই লোক হরেদরে সবার কাছ থেকে ঘুষ খায় না। লুকিয়ে চুরিয়ে বড় পার্টির কাছ থেকে বড় ঘুষ খায়। ওর সোর্স বলছে এই লোক সানরাইজ গ্রুপের অন্তত লাস্ট পাচ বছরের ট্যাক্সের কাজ গুলো করে দিয়েছে। অর্থাৎ ওদের ট্যাক্স রিলেটেড কোন ঘাপলা থাকলে এই লোক জানবে। সরকারী দল বর্তমানে দূর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে তাই ট্যাক্স কেলেংকারী করেছে এমন কার খবর ছাপা হলে সরাসরি এই মুহুর্তে নমিনেশন দিবে না। তাই এইটা একটা সেফ বেট। তবে আরশাদ লোকটা ঘাগু। বাসায় সুন্দরী বউ আছে। ছবিটা দেখে মুন্সী। নুসাইবা করিম নাম। দেখতে সুন্দরী নিসন্দেহে বলা যায়। এমন একটা বউ রেখে কেউ ফস্টি নশটি করে। পাশে থাকা ফ্লোরা হাসানের ছবিটা দেখে। এই মহিলাও সুন্দরী তবে বয়সের ছাপ পড়েছে চেহারায়। এই লাইনে কাজ করতে গিয়ে কত কিছু দেখেছে জীবনে। এক বড় সৎ অফিসার কে একবার বশ মানিয়েছিল তার কাজের মেয়েদের নজর দেবার অভ্যাস টাকে ইউজ করে। লোকটার বাসায় এত সুন্দরী বউ থাকতেও দেখতে বাসার মাঝ বয়সী বুয়াদের উপর হামলে পড়ত। সেই খবরটাই বের করে লোকটাকে নত করিয়েছিল। আর এখানে আরশাদ তো ফ্লোরা হাসানের মত সুন্দরীর চক্করে। তবে এই ফ্লোরা হাসানও একদম হাওয়া। খোজ নিয়ে দেখেছে মহিলা অস্ট্রিলিয়া গেছে কয়েক মাসের জন্য ছেলের কাছে। যে সময় আরশাদ হাওয়া হয়েছে তার কাছাকাছি সময়ে। কাকতলীয় মনে হলেও মুন্সী জানে এইসব সানরাইজ গ্রুপের কাজ। মুন্সী আবার নুসাইবার ছবি দেখে। এই মহিলা কি ট্রফি ওয়াইফ? অনেক বড় অফিসার বিজনেস ম্যান সুন্দরী বউ রাখে কারণ এতে তাদের প্রেস্টিজ বাড়ে আর বাইরে রক্ষিতা রাখে কারণ সেটা তাদের খায়েশ মিটায়। এইসব বউদেরও বাইরে অনেক চক্কর থাকে। এই মহিলার আছে নাকি? এইসব কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় এমন অনেক মহিলার থেকে কিছু আদায় করে নিয়েছে মুন্সী। অবশ্য মুন্সীর মতে এইটা আনএথিকাল না। বেশির ভাগ সময় এইসব মহিলারা ধোয়া তুলসী পাতা না। স্বামীর সব অন্যায় চোখ বুঝে মানে কারণ তাদের চাকচিক্যময় জীবন দরকার আর বাইরে প্রেমিক পুষে স্বামীর মনযোগের অভাবে। সেখানে মুন্সী হয়ত কয়েকদিন তাদের মনরঞ্জন করে। উইন উইন। এই মহিলার কেস কি সেরকম নাকি? হলে ভাল হয়। তাহলে বউটাকে ব্লাকমেইল করে জামাই এর খবর প্লাস দুই একদিনের সংগ পাওয়া যায়। মুন্সীর কাছে এই সংগ গুলা হল বোনাস। মুন্সী ঠিক করে এই মহিলার আর খবর বের করতে হবে আর সাথে দেখাও করতে হবে। মুন্সী মানুষের পেটের খবর কিভাবে মুখে ছায়া ফেলে সেটা পড়তে জানে। আর এটা দেখার জন্য সামনা সামনি একটা স্বাক্ষাতকার দরকার। আর কে জানে এই সুন্দরীর কাছে অতিরিক্ত কিছু পাওয়া যায় কিনা।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)