12-01-2025, 05:18 PM
(This post was last modified: 12-01-2025, 10:47 PM by বহুরূপী. Edited 10 times in total. Edited 10 times in total.)
অদ্ভুত নিয়তি:পর্ব ৩
স্বর্ণচাঁপা দুপুর বা গন্ধরাজ বিকেলে অনেকদিন মাঠপারের সবুজ ঘাসের টিলায় বসা হয় না। শিমুল পলাশ নিয়ে কত ফাল্গুন পেরিয়ে গেল তার হিসেবেও রাখা হয়নি। পথের দুই পাশে ধানের মাঠ আর কাঁচা-সবুজ পাতায় ঢেউ তোলা দেখতে দেখতে বৈশাখের এক বিকেলে নন্দিনী আজ হয়তো প্রকৃতির সেই হিসেব মেলাতে গ্রামের পথে গাড়িতে বসেছে।
সময়টা বোধহয় ৪:০৫। গন্তব্য এখনো আধঘণ্টার পথ। নন্দিনী গাড়ির বাইরে দৃষ্টি রেখে নিজের মনে গত কয়েকটি সপ্তাহের কথা ভেবে চলেছে। গত কয়েকটি সপ্তাহ ধরে নন্দিনী খুব অল্প কথাই বুঝেছে,তবে জেনেছে ও জানিয়েছে অনেক কথা। যদিও কথা গুলি নন্দিনী বলেছে শুধুমাত্র সূর্যমুখীর সাথেই। তবে সে ঠিক জানে অর্পণ তাদের সব কথাই শুনেছে।
অবশ্য এরমধ্যে অনেক কথাই অর্পণ আগে থেকে জানে। কি করে নন্দিনী গ্রাম থেকে মিথ্যে ভালোবাসার ফাঁদে পরে শহরের নষ্ট পল্লীতে বিক্রি হল!তারপর পাড়াগাঁয়ের অসহায় মেয়েটি পরিস্থিতির চাপে পরে কেন সবকিছু মেনে নিতে বাধ্য হল! অর্পণ এই সব আগে থেকেই জানে। আর শুধু কি তাই! তার পরিবার, মাঝে মাঝে নষ্ট পল্লীতে আসা সেই ডাক্তার,এমনকি বেশ্যা পল্লীতে তার কয়েকটি কাছের মানুষদের ওপরেও অর্পণের নজর ছিল।এইসব শুনে নন্দিনী নিজের মনেই ভেবেছিল এই ছেলেটা নির্ঘাৎ পাগল।
প্রথম যখন নন্দিনী শোনে যে,অর্পণ তাকে অনেক আগে থেকেই চেনে। নন্দিনী অবাক না হয়ে থম মেরে না জানি কতখন বসে ছিল। তারপর এক সময় জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে সূর্যমুখী ও মিতালী কাকিমার দিকে তাকাতেই কথা হল ধীরে ধীরে,
– ছোট বেলা থেকেই ছেলেটা একটু চাপা স্বভাবের। নিজের সমস্যা নিয়ে কারো সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারে না। আমাকে সব কাহিনী খুলে বলতো করিম ভাই, আর সেই সাথে কি করা যায় পরামর্শ চাইতো!
– কি কাহিনী?
– তখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে,বয়স কম। এমনিতে সব ম্যানেজার নিজেই দেখতো,তবে মাঝেমধ্যে কিছু মিটিংয়ে অর্পণকে থাকতেই হতো। এমনই একদিন মিটিং শেষ করে আসার পথে তোমাকে দেখেছিলো রাস্তার মোড়ে এক ফুলের দোকানে।
– আর তোর ঐ চোখের দৃষ্টিতে প্রথম দেখাতেই মেরেছি আমার ভাই'টাকে। এরপর কত দিন তোকে খুঁজে বেরিয়েছে। এই সব চোখ পড়ায় করিমচাচা বুঝতে পারেন অর্পণের পছন্দ হয়েছিলো তোকে!
–কিন্তু আমি যে....
– যে তো আর ছোট বাবু জানতো না তখন। তারপর খুঁজতে খুজতে হঠাৎ এক রাতে চৌরাস্তায় তোমার দেখা পেল। তবে সেই দর্শনকে ঠিক সুখের বলা চলে না। প্রায় দেখতো তোমাকে অন্যকারো সাথে চলে যেতে মোড় থেকে! অল্প কদিনেই বুঝতে পারলো তোমার কাজ! বললে বিশ্বাস করবে না মা, যেদিন জেনেছে তুমি কি কর, সেই দিন যে কি কান্ড.....
– কাকিমা ওসব না বললেও হবে।
– না! না! দিদি, বলতে দাও। আমি শুনবো!
– সেই দিন রুমে ঢুকে আয়না, টিভি,ঘরের বাকি সব কিছু ভেঙেচুরে একাকার করেছে। নিজের ক্ষতিও কম করেনি,দুই দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এখনো হাতে কাটা দাগ রয়ে গেছে। এরপর ওই পথ অনেকদিন আর যায়নি!
– অন্য কোন মেয়ের প্রতি উনার...
– সে হলে আর তোমাকে আনা! তাছাড়া ম্যানেজারও বিয়ের ব্যাপারটা বলতে পারে না। তখনো তার বিয়ের বয়স হয়নি! তাছাড়া এই ঘটনার পর মেয়েদের সাথে কথা বলতে বললে প্রচন্ড রেগে যেতো। তখন বুদ্ধি করে কিছু দিনের জন্যে করিম ভাই তাকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু বেশিদিন থাকতে পারল কই!ওখানে তার মন টিকলো না,তাছাড়া পড়াশোনারও ক্ষতি হয়। কিন্তু ফিরে এসে প্রায় মাস খানিক পর নাকি তুমি যেখানে দাঁড়াতে ওই রাস্তা যেত একা একা!
– জানিস ভাই! এই ভালোবাসা আমাকেও মেরেছে! তাই আমিও অনেক বার বোঝাতে চেয়েছিলাম। দেশে কি মেয়েদের আকাল পরেছে। কিন্তু দেখলি তো কেমন রগচটা! এভাবেই সে রাগ দেখিয়ে চলতো, তাও তোর কাছে যেতো না। জানে কষ্ট পাবে, তাও। এরপর কদিন আগে হঠাৎ শুনলাম তোকে নাকি কিনেছে! টাকা নাকি ম্যানেজারকে দিয়ে পাঠিয়েছিলো!
একটু থেমে সূর্যমুখী হেসেছিল। তারপর নন্দিনীকে কাছে টেনে জিজ্ঞেস করেছিল,
– সেদিন রাতে তোর উপড় বড্ড রেগে ছিলো তাই না?
মনে পরে নন্দিনী তখন চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। ছলছল চোখে সূর্যমুখীর কাঁধে মাথা রেখে মিনমিন করে বলেছিল,
– শুধুই রাগ? সেদিন তার দেহের সব ঝাল একেবারে বুঝিয়ে দিয়েছে!
তারপর চোখ বুঝে শুধু চোখের জল ফেলেছে সে সারাদিন। অর্পণ সেদিনের পর আর তার কাছে আসেনি। বোধহয় সব শুনেছে।ছেলেটা সত্যই তার ওপরে মরেছে এবং সেই সাথে তাকেও মারবে বলেই তুলে এনেছে। আজব দুনিয়া! আজ থেকে নয় বছর আগে এই প্রেম তাকে গ্রাম ছাড়া করে এনে ফেললো নষ্ট পল্লীতে।আর আজ অন্য কারও প্রেমের তাড়নায় সেই নষ্ট পল্লী থেকে চলেছে গ্রামের পথে।
– কি রে! থম মেরে বসে রইলি যে?
হটাৎ সূর্যমুখীর কথায় ঘোর ভেঙে যায় নন্দিনীর। এক পলকে চোখে পরে আলুথালু বাতাসে রাস্তার পাশে কলাগাছের পাতার দুলুনি। তার একপাশে শিরীষ গাছের ডালে বসে দুটি ঘুঘু বিরহী সুরে ডাকছে। তাদের গাড়িটি রাস্তার পাশে একটি দোকানের সামনে কখন এসে দাঁড়িয়েছে নন্দিনী খেয়াল করেনি।
– এই নে!
সূর্যমুখীর হাতে চায়ের কাপ। নন্দিনী কিছু না বলে কাপ হাতে নিয়ে বসে রইলো।
– কি হল! কথা বলছিস না যে?
– কি বলবো?
– কি বলবি মানে! গতকাল রাতে যে তোকে অর্পণের কাছে পাঠালাম! তার কি হলো?
– কিচ্ছু হয়নি?
–ইসস্ ..বললেই হল! দ্যাখ নন্দিনী সত্য বল আমায়, বল কি হয়েছে?
– সত্যি বলছি দিদি কিছুই হয়নি। তার কাছ থেকে কিছু আশা করলে আমাকে চোখ বেঁধে তবে পাঠাতে হবে!
কথাটা বলেই নন্দিনী লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিল। অন্য দিকে সূর্যমুখী হতভম্ব হয়ে শুধু বললো,
– চোখ বেঁধে!
এখানেই কথাবার্তা শেষ,আর কিছুই নন্দিনী বলার সাহস দেখায়নি। সূর্যমুখী সোজা মেয়ে নয়,যা বলেছে এই নিয়েই তাকে জ্বালিয়ে মারবে। মেয়েটি খারাপ নয়,শুধু মাঝে মধ্যে বেশ জ্বালায় নন্দিনীকে।
গত সপ্তাহে নন্দিনী সূর্যমুখীর সাথে গিয়েছিল একটা প্রাইভেট স্কু'লে। সূর্যমুখী সেখানেই কাজ করে। ফুটফুটে কতগুলি ছেলেমেয়েদের পড়ায় সে। সেখানে নিয়ে আচমকা তাকে আর্ট ক্লাস করাতে ঢুকিয়ে দিল। নন্দিনী মুর্খ নয়,শুধু বাচ্চাদের কেন সে এইট কি নাইনের ছাত্র-ছাত্রীদের কেউ পড়াতে সক্ষম। কিন্তু তাই বলে আর্ট! এটা সে মোটেও ভালো পারে না। তবে সূর্যমুখী শুধু যে তাকে বিপদে ফেলে তা নয়, ওর মতো বন্ধু পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার বটে।
নন্দিনীর এই নতুন জীবনের সকালটা কাটে মিতালী কাকিমার সাথে বাড়ির কাজে বা সূর্যমুখীর সাথে বাচ্চাদের স্কু'লে। কলেজ থেকে ফেরে দুপুরে অর্পণের সাথে। তারপর বাকিটা সময় মন্দ কাটে না। কিন্তু সত্য বলতে এমন হাসি সুখী পারিবারিক জীবনের আশা নন্দিনীর মন থেকে অনেক আগে হাড়িয়ে গিয়েছিল। এই ক্ষেত্রে তাকে ভাগ্যবতী বলা চলে। কিন্তু যার জন্যে এতকিছু সেই যে এখন বিমুখ।
এমনও দিন গেছে পূর্ণিমা রাতে পালঙ্কে বসে নন্দিনী তার পথে চেয়ে ছিল দুটো কথা বলবে বলে। কিন্তু কোথায় কি! রাত পেরিয়ে যায় তবুও তার খোঁজ নেই। দু দিনের জন্যে কাছে টেনে এখন একি রকমের আচরণ! এখন তাকে দেখলে নন্দিনীর ভয় হয় না বরং খুব রাগ হয়। সে এখন শুধু একটি বার অর্পণ কে কাছে পেতে চায়। নিস্তব্ধ নিবিড় রাতে তাকে বুকে জড়িয়ে নন্দিনীর মনের কিছু কথা তাকে বলতেই হবে,এরপর যা হবার হবে!
/////////
নন্দিনীর বাবার বাড়িটা গ্রামের উত্তর দিকের বড় মাঠের একপাশে পরে। সরু কাঁচা মাটির রাস্তার ডানপাশে গাছপালায় ঢাকা কয়েকটি মাটির ঘর। যদিও রাস্তা এখন চওড়া এবং পাকা। তবে মাটির ঘরগুলি এখনো দাড়িয়ে। নন্দিনীর ঘরটা এখন খালি,কিন্তু তার ঘরের পেছনে আম-কাঁঠালের বনে ঘেরা ছোট পুকুর পাড় এখনো আছে সেই আগের মতনই । নন্দিনীর ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে আজো পাখিদের কিচিরমিচির কলহ ও বন্য ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসে।
নন্দিনীর পরিবারটি একদম দিন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন নয়। তাদের বাড়িটির সাথে লাগোয়া কিছু ধান জমিন ও গঞ্জে তার বাবার একটা মসলার দোকান আছে। গ্রামে তার বাবাও একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাই নিজের বাড়িতে পা দিতেও ভয়ে নন্দিনীর ঘাম ছুটে গেল। তবে সূর্যমুখী যখন অম্লানবদনে তার সমুখ দিয়ে বাড়িতে ঢুকে গেল তখন তাকেও পিছু নিতে হলো।
নয় বছর পর হঠাৎ এসে একটা অচেনা অচেনা ভাব বোধহয় মনে আসে। তবে সেই ভাব সূর্যমুখীর জন্যে বিশেষ পাত্তা পেল না। এক সময় নন্দিনীর মনে হল; যেন সূর্যমুখী এই বাড়ির মেয়ে আর সে বাইরের লোক, বিনা নিমন্ত্রণে ঢুকে পরেছে।
নন্দিনীর বাবা শয্যাশায়ী। মায়ের দেহটাও যেন ভেঙে পরেছে। এক বোন ছিল,সে বিয়ে করে এখন দূর দেশে। ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়ে একটা ফুটফুটে মেয়ে কোলে করে ঘুরছে বাড়ির বধূ। মেয়েটির সবে পাঁচ বছর বয়স।
নন্দিনীকে চিনতে পেরে তার মা কান্নায় ভেঙে পরলো। অনেকদিন পর পরিবারের সংস্পর্শে এসে নন্দিনী নিজেও সামলে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে সূর্যমুখী সাথে না থাকলে নন্দিনীর হয়তো এই বাড়িতে পা দেবার সাহস হতো না কখনোই। অবশ্য নন্দিনীর মা কিছু না বললেও সূর্যমুখীর কথা নন্দিনীর বাবার বোধহয় বিশ্বাস করে নি। আসলে নন্দিনীর সাথে অর্পণের বয়সের তফাৎ হয়তো তিনি বুঝে নিয়েছেন।
কিন্তু নন্দিনী অবাক হয়েছে অর্পণ যখন নিজেকে তার স্বামী বলে স্বীকার করে। আর নন্দিনীর নিরবতা সুযোগে সূর্যমুখীও বর বধূ হিসেবে তাদের চালিয়ে দেয়। তবে এইসব না হলে নন্দিনী নিজেও জানেনা সে কি বলতো। বলা বাহুল্য অর্পণের আসল বয়স জানলে এই কথা কারোরই বিশ্বাস হতো না। আর এখনো যে সবার বিশ্বাস হয়েছে এমনটাও নয়। তবে আড়ষ্টতা পরে গিয়ে বেশ অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে সবাই। এই নয় বছর নন্দিনী কোথায় ছিল সে কথা বলার কোন ইচ্ছে অর্পণের নেই।তাই সূর্যমুখী বিষ্ময়কর ভাবেই সবদিক সামাল দিছিল।তবে একটা গন্ডগোল হবারই ছিল,যে টা তারা একদম ভুলে মেরে দিয়েছে,
– ম-মানে মা! উনি এস সব মানেন না...
– তাতে কি হয়! সে শহরের ছেলে, তাই বলে * র মেয়ে হয়ে তুই শাঁখা সিঁদুর পরবিনা, এ কেমন কথা? জানিস না শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। স্বামীর অমঙ্গল ঘঠে.......
লম্বা ভাষণ শুনে নন্দিনীর গলা শুকিয়ে যাবার জোগাড়। অবশেষে সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ দেবার পর নন্দিনীর হাতে শাঁখা ও সীথিতে সিঁদুর পরলো। মঙ্গলসূত্রটা বোধহয় আজ পাওয়া যায়নি,তবে কাল সকালে অবশ্যই নন্দিনীর গলায় ওটাও পরবে। এই সব হলে নিজের ঘরে আয়নার সমুখে থ মেরে নন্দিনী অনেকক্ষণ বসে ছিল। তার এই ২৮বছরের জীবনে এই স্বপ্নটি অনেকবার দেখলেও এই স্বপ্ন সত্য হবার আশা গত নয় বছরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অর্পণ যখন নিজ হাতে তার সিথী রাঙিয়ে দিল,তখন সে শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে ছিল ছেলেটার মুখের দিকে। আর তখনই প্রথম নন্দিনী খেয়াল করলো অর্পণ তার চোখে চোখ রেখে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না। নন্দিনী এতে অবাক হয়নি , কারণ এই অনুভূতি তার জানা। নন্দিনী যেমন অর্পণের কথা অবাধ্য হতে পারে না!তার কথা কানের পর্দায় আঘাত করলেই সে যেমন দুনিয়াদাড়ি সব ভুলে মেরে দেয়!বোধহয় প্রতিটি মানুষের এমন কিছু দূর্বলতা থাকে যার কাছে কোন জারিজুরি খাটে না। নন্দিনীর চোখদুটো বোধহয় অর্পণের কাছে তেমনই কিছু একটা হবে!
////////
রাতে খাবার পর পরই লোডশেডিং। রাত দশটার দিকে বাড়ির বারান্দায় সূর্যমুখী ও বাকিরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। নন্দিনী তাই দেখে আর মনে মনে ভাবে “মেয়েটি এত কথা কি করে বলতে পারে একটানা”।
যাহোক নন্দিনী সূর্যমুখীর অযথা কথার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে এগারোটায় এল নিজের ঘরে। তখন অন্ধকার ঘরে একখানি মোমবাতি জ্বেলে অর্পণ বিছানায় শুয়ে খোলা জানালা দিয়ে বাইরের অন্ধকার দেখছে।
নন্দিনী সেই প্রথম দিনের মিলনের পর অর্পণকে আর তুমি বলে ডাকতে পারেনি। আসলে ছেলেটা তার ছোট হলেও এই কথা মানতে হয় যে,শুধু কথার জোরেই সে নন্দিনী কে বশ করে ফেলেছে। তবে আজ নন্দিনীর সংকোচ নেই। সে এখন জানে এই ছেলেটা যেমনি হোক শুধুমাত্র তার, কিন্তু নিজের মনপ্রাণ যার পায়ে সম্পূর্ণ রূপে সমর্পণ করতে মনটি তার উতলা, তাকে শেষ বারের মতো একটু পরখ করে নিতে ক্ষতি কি!
বাইরের অন্ধকারের সাথে তাল মিলিয়ে চারদিকে রাতজাগা পোকাদের দল একটানা ডেকে চলেছে। মোমবাতির মৃদু আলো সাথে খোলা জানালা দিয়ে জঙ্গলী ফুলে হালকা সুবাস প্রবেশ করে ভেতরের আবহাওয়া করে তুলেছে মায়াময়। পরিবেশটা মিলনের জন্যে বড়ই উপযোগী বলেই মনে হলো নন্দিনীর। তাই সে আলগোছে দরজা লাগিয়ে মন্দ পদক্ষেপ সরে এল অর্পণের কাছে। এদিকে অর্পণ তখনও আনমনা।
– খেতে এলে না কেন?
হঠাৎ প্রশ্নে চমকে গিয়ে অর্পণ মুখ ঘুরিয়ে তাকায় নন্দিনীর দিকে। টেবিলে রাখা মোমবাতির আলোয় এক মায়াবি রূপ ফুটেছে তার মুখে। নন্দিনীর মুখটা খুব কাছে। অপূর্ব সুন্দর চোখ দুটির গাঢ় কালো মনিতে মোমবাতির জলজলে অগ্নিশিখার স্পষ্ট চোখে পরে অর্পণের। তবে এই সৌন্দর্যের দিকে বেশিক্ষণ তাকানো যায় না। চোখ বোঝে অর্পণ। নন্দিনী তার পাশে শুয়ে বা হাতটি আলতোভাবে রাখে অর্পণের বুকে। পরক্ষণেই মিনমিন কররে বলে–
– কেন ভালোবাসলে এই অভাগী কে? আমি যে তোমার যোগ্য নই!
বোধহয় অর্পণের কানে এই প্রশ্ন যায়নি। তার বাঁ হাতটি এখন নন্দিনীর খোলা চুলগুলো বিলি কাটতে ব্যস্ত। নিশ্বাস দ্রুত ও উত্তপ্ত । নন্দিনী দীর্ঘ নয় বছরের অভিজ্ঞতায় পুরুষের কামনার ভাবটা ভালোই বোঝে। সে আর প্রশ্ন করে না,তার বদলে অর্পণের বুকে আরো ঘন হয়ে আসে। না চাইতেও নন্দিনীর উষ্ণ দেহের স্পর্শে অর্পণের রুদ্ধ কণ্ঠনালী থেকে কামনা সূচক অস্ফুট আওয়াজ বেরিয়ে আসে
– উম্ম্ম........
আড়চোখে নন্দিনী দৃষ্টি দেখ অর্পণের দিকে। তার ডান হাতটি প্যান্টের পকেট হাতড়াছে। বোধকরি কালো কাপরের সন্ধানে। কিন্তু আজ অর্পণের কাছে কালো কাপড় ছিল না।এমন পরিস্থিতিতে সে যে পরতে পারে একথা বেচারার জানা ছিল না। ওদিকে কালো কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা নন্দিনী আজকেই জেনেছে। অর্পণ তার চোখের দিকে তাকালে দূর্বল হয়ে পরে। তাই সে একটু হেসে বললে,
– চোখ বুঝে থাকলে হবে?
সে এখন অর্পণের বুকের ওপরে। দুজনার ঠোঁটে ঠোঁটে দূরত্ব পাঁচ ইঞ্চি মাত্র। অর্পণ মুখ ঘুরিয়ে নেয় জানালার দিকে।
– ও বাবা! এখনো এত্তো অভিমানী! আচ্ছা দেখি কি করা যায়!
অর্পণের বুকে মাথা রেখেই চারপাশটা একবার দেখার চেষ্টা করে সে। তারপর উঠে পরে এবং খানিক পরেই হাতে একখানা লাল রঙের ওড়না নিয়ে নিজেই নিজের চোখ হালকাভাবে বেঁধে একটু হেসে কি যেন বলেতে চায়! তবে বলার সময় হয়ে ওঠেনা, তার আগেই অর্পণের হাতের টানে তার চোখের বাঁধন খুলে যায়। পরক্ষণেই কর্কশ কন্ঠে ভর্ৎসনা,,
– শোনো! ফাজলামো করবে না আমার সাথে।
নন্দিনী ভয় পায় না। ভয় তার অনেক আগেই কেটে গিয়েছে।তাছাড়া অর্পণ তার কিইবা করবে! বড় জোড় খাটে ফেলে একদফা গাদন দেব। মিলনের সময় অর্পণের বলিষ্ঠ হাতের থাবা দুই একবার নন্দিনীর পাছায় পরলেও অকারণে গায়ে হাত তোলা অর্পণের স্বভাব নয়। তাই সে মুখখানি এগিয়ে রাঙা ঠোঁট দুটি অর্পণের মুখের খুব কাছে নিয়ে বলে,
– আমার থেকে তুমি ভালো কিছুর আশা কর কি করে? এখনো সময় আছে বুঝে দ্যাখো! আমি তোমার যোগ্য নই! একদম না! এখন ভালো লাগলেও পরে কিন্তু পস্তাতে হবে! আমায় শুধু তোমার বেশ্যা ক..আআ....
নন্দিনীর কথা শেষ হয় না তার আগেই অর্পণ তার চুলের মুঠি টেনে ধরে দৃঢ় কন্ঠে বলে,
– এই শব্দেটা আর একবার বললে জিভ ছিড়ে ফেলবো!
হটাৎ চুল টানাটা সামলে নিতে একটু সময় লাগে নন্দিনী। তবে সামলে উঠতেই অর্পণের রাগকে তোয়াক্কা না করে সে ঠোঁট নামিয়ে আনে অর্পণের কাঁধে। প্রথমে কামড় ও পরে তা চুম্বনের রূপ নিয়ে ধীরে ধীরে নেমে আসে বুকে। অর্পণ বাধা দেবে কি না তা ভাবতে ভাবতেই নন্দিনী তার শার্ট খুলে ফেলে দেয় মাটিতে। নিজের উত্তেজনা অর্পণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এলোপাতাড়ি চুম্বন করতে থাকে অর্পণের বুকে। অবস্থা সামাল দিতে নন্দিনীর চোয়ালে চেপেধরে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন করে অর্পণ। তবে কার্যে সফলতা অর্জন করে না। চুম্বন রত অবস্থাতেই নন্দিনী তার নিপুণ হাতে অল্প সময়েই প্যান্ট খুলে হাতের মুঠোয় বন্দী করে অর্পণের লিঙ্গটিকে।পরক্ষণেই চুম্বন ভাঙে নন্দিনী। উত্তেজনায় ফুলে ফেপে ওঠা পুরুষাঙ্গে নরম ঠোঁটের ছোঁয়া পরে একটু পরেই।
বসে থাকা অসম্ভব হয়ে পরে অর্পণের পক্ষে। বিছানায় গা এলিয়ে কোমড় উঁচিয়ে নিজের কামদন্ডটি প্রেয়সীর রাঙা ঠোঁট দুটির ফাঁক দিয়ে উষ্ণ লালাময় মুখে ঢুকিয়ে দিতে চায় সে। কিন্ত নন্দিনীর তখনও ওটি পরখ করা বাকি। সে লিঙ্গ মুন্ডিতে আলতো চুম্বন করতে করতে হাত বারিয়ে তুলে আনে জ্বলন্ত মোমবাতিটি।
ওদিকে কামতাড়িত অর্পণ মাথা উঠিয়ে করুণ চোখে বোধহয় অনুরোধ জানায় নন্দিনীকে। নন্দিনী তখন দুষ্টুমি ভরা চোখে মোমবাতির উজ্জ্বল আলো অর্পণের কামদন্ড টি পরখ করে চলেছে। দীর্ঘ,সুঠাম ও শিরাবহুল লৌহ দন্ডে এখন কাম উত্তেজনার ভূমিকম্প বইছে। নন্দিনী ডান হাতের তর্জনী দিয়ে লিঙ্গমুন্ডিটা মুখে কাছে টেনে আবারও চুম্বন করে। এবারের চুম্বন আগের থেকেও গাঢ়। তারপর হঠাৎ ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে নন্দিনীর ছোট্ট লালচে জিভটা বেরিয়ে এসে কামদন্ডের মূত্রনালীর ছিদ্র স্পর্শ করতেই কেঁপে ওঠে অর্পণ।
এবার অনুরোধ নয়,হাত বারিয়ে নন্দিনীর মাথাটা চেপে ধরে কামদন্ড প্রবেশ করার প্রেয়সীর উষ্ণ লালাময় মুখোগহবরে। নন্দিনী নিজেকে সামলাতে বাঁ হাতে অর্পণের উরু খাঁমচে ধরে। অন্যদিকে অর্পণ বেসামাল ভাবে ঠাপাতে থাকে নন্দিনীর মুখে ভেতরে। অর্পণের উত্তেজনা ছিল চরমে, তাই বেশিক্ষন ধরে রাখতে না পেরে নন্দিনীর মাথা চেপেধরে তার পুরুষাঙ্গের ওপড়ে।অবশেষে নন্দিনীর কন্ঠনালীর ভেতরে একদলা থকথকে কামরস ঢেলে দিয়ে বালিশে মাথা এলিয়ে হাপাতে থাকে অর্পণ।
এদিকে ছাড়া পেয়ে দুবার কেশেই নিজেকে সামলে নেয় নন্দিনী। তারপর ডানহাতের মোমবাতিটি টেবিলে নামিয়ে রেখে অর্পণের মুখের কাজে মুখ নামিয়ে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো নন্দিনী। অর্পণ সেদিকে একবার তাকিয়েই চোখ নামিয়ে মৃদু কন্ঠে বললে,
– আই'ম সরি, আই ডোন্ট নো হোয়া....
– শসস্... ডোন্ট হেজিটেট! আই ডোন্ট কেয়ার!
পরবর্তী আপডেট খুব সম্ভব সামনে শুক্রবার এবং ওটাই শেষ আপডেট এই গল্পের।
স্বর্ণচাঁপা দুপুর বা গন্ধরাজ বিকেলে অনেকদিন মাঠপারের সবুজ ঘাসের টিলায় বসা হয় না। শিমুল পলাশ নিয়ে কত ফাল্গুন পেরিয়ে গেল তার হিসেবেও রাখা হয়নি। পথের দুই পাশে ধানের মাঠ আর কাঁচা-সবুজ পাতায় ঢেউ তোলা দেখতে দেখতে বৈশাখের এক বিকেলে নন্দিনী আজ হয়তো প্রকৃতির সেই হিসেব মেলাতে গ্রামের পথে গাড়িতে বসেছে।
সময়টা বোধহয় ৪:০৫। গন্তব্য এখনো আধঘণ্টার পথ। নন্দিনী গাড়ির বাইরে দৃষ্টি রেখে নিজের মনে গত কয়েকটি সপ্তাহের কথা ভেবে চলেছে। গত কয়েকটি সপ্তাহ ধরে নন্দিনী খুব অল্প কথাই বুঝেছে,তবে জেনেছে ও জানিয়েছে অনেক কথা। যদিও কথা গুলি নন্দিনী বলেছে শুধুমাত্র সূর্যমুখীর সাথেই। তবে সে ঠিক জানে অর্পণ তাদের সব কথাই শুনেছে।
অবশ্য এরমধ্যে অনেক কথাই অর্পণ আগে থেকে জানে। কি করে নন্দিনী গ্রাম থেকে মিথ্যে ভালোবাসার ফাঁদে পরে শহরের নষ্ট পল্লীতে বিক্রি হল!তারপর পাড়াগাঁয়ের অসহায় মেয়েটি পরিস্থিতির চাপে পরে কেন সবকিছু মেনে নিতে বাধ্য হল! অর্পণ এই সব আগে থেকেই জানে। আর শুধু কি তাই! তার পরিবার, মাঝে মাঝে নষ্ট পল্লীতে আসা সেই ডাক্তার,এমনকি বেশ্যা পল্লীতে তার কয়েকটি কাছের মানুষদের ওপরেও অর্পণের নজর ছিল।এইসব শুনে নন্দিনী নিজের মনেই ভেবেছিল এই ছেলেটা নির্ঘাৎ পাগল।
প্রথম যখন নন্দিনী শোনে যে,অর্পণ তাকে অনেক আগে থেকেই চেনে। নন্দিনী অবাক না হয়ে থম মেরে না জানি কতখন বসে ছিল। তারপর এক সময় জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে সূর্যমুখী ও মিতালী কাকিমার দিকে তাকাতেই কথা হল ধীরে ধীরে,
– ছোট বেলা থেকেই ছেলেটা একটু চাপা স্বভাবের। নিজের সমস্যা নিয়ে কারো সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারে না। আমাকে সব কাহিনী খুলে বলতো করিম ভাই, আর সেই সাথে কি করা যায় পরামর্শ চাইতো!
– কি কাহিনী?
– তখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে,বয়স কম। এমনিতে সব ম্যানেজার নিজেই দেখতো,তবে মাঝেমধ্যে কিছু মিটিংয়ে অর্পণকে থাকতেই হতো। এমনই একদিন মিটিং শেষ করে আসার পথে তোমাকে দেখেছিলো রাস্তার মোড়ে এক ফুলের দোকানে।
– আর তোর ঐ চোখের দৃষ্টিতে প্রথম দেখাতেই মেরেছি আমার ভাই'টাকে। এরপর কত দিন তোকে খুঁজে বেরিয়েছে। এই সব চোখ পড়ায় করিমচাচা বুঝতে পারেন অর্পণের পছন্দ হয়েছিলো তোকে!
–কিন্তু আমি যে....
– যে তো আর ছোট বাবু জানতো না তখন। তারপর খুঁজতে খুজতে হঠাৎ এক রাতে চৌরাস্তায় তোমার দেখা পেল। তবে সেই দর্শনকে ঠিক সুখের বলা চলে না। প্রায় দেখতো তোমাকে অন্যকারো সাথে চলে যেতে মোড় থেকে! অল্প কদিনেই বুঝতে পারলো তোমার কাজ! বললে বিশ্বাস করবে না মা, যেদিন জেনেছে তুমি কি কর, সেই দিন যে কি কান্ড.....
– কাকিমা ওসব না বললেও হবে।
– না! না! দিদি, বলতে দাও। আমি শুনবো!
– সেই দিন রুমে ঢুকে আয়না, টিভি,ঘরের বাকি সব কিছু ভেঙেচুরে একাকার করেছে। নিজের ক্ষতিও কম করেনি,দুই দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এখনো হাতে কাটা দাগ রয়ে গেছে। এরপর ওই পথ অনেকদিন আর যায়নি!
– অন্য কোন মেয়ের প্রতি উনার...
– সে হলে আর তোমাকে আনা! তাছাড়া ম্যানেজারও বিয়ের ব্যাপারটা বলতে পারে না। তখনো তার বিয়ের বয়স হয়নি! তাছাড়া এই ঘটনার পর মেয়েদের সাথে কথা বলতে বললে প্রচন্ড রেগে যেতো। তখন বুদ্ধি করে কিছু দিনের জন্যে করিম ভাই তাকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু বেশিদিন থাকতে পারল কই!ওখানে তার মন টিকলো না,তাছাড়া পড়াশোনারও ক্ষতি হয়। কিন্তু ফিরে এসে প্রায় মাস খানিক পর নাকি তুমি যেখানে দাঁড়াতে ওই রাস্তা যেত একা একা!
– জানিস ভাই! এই ভালোবাসা আমাকেও মেরেছে! তাই আমিও অনেক বার বোঝাতে চেয়েছিলাম। দেশে কি মেয়েদের আকাল পরেছে। কিন্তু দেখলি তো কেমন রগচটা! এভাবেই সে রাগ দেখিয়ে চলতো, তাও তোর কাছে যেতো না। জানে কষ্ট পাবে, তাও। এরপর কদিন আগে হঠাৎ শুনলাম তোকে নাকি কিনেছে! টাকা নাকি ম্যানেজারকে দিয়ে পাঠিয়েছিলো!
একটু থেমে সূর্যমুখী হেসেছিল। তারপর নন্দিনীকে কাছে টেনে জিজ্ঞেস করেছিল,
– সেদিন রাতে তোর উপড় বড্ড রেগে ছিলো তাই না?
মনে পরে নন্দিনী তখন চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। ছলছল চোখে সূর্যমুখীর কাঁধে মাথা রেখে মিনমিন করে বলেছিল,
– শুধুই রাগ? সেদিন তার দেহের সব ঝাল একেবারে বুঝিয়ে দিয়েছে!
তারপর চোখ বুঝে শুধু চোখের জল ফেলেছে সে সারাদিন। অর্পণ সেদিনের পর আর তার কাছে আসেনি। বোধহয় সব শুনেছে।ছেলেটা সত্যই তার ওপরে মরেছে এবং সেই সাথে তাকেও মারবে বলেই তুলে এনেছে। আজব দুনিয়া! আজ থেকে নয় বছর আগে এই প্রেম তাকে গ্রাম ছাড়া করে এনে ফেললো নষ্ট পল্লীতে।আর আজ অন্য কারও প্রেমের তাড়নায় সেই নষ্ট পল্লী থেকে চলেছে গ্রামের পথে।
– কি রে! থম মেরে বসে রইলি যে?
হটাৎ সূর্যমুখীর কথায় ঘোর ভেঙে যায় নন্দিনীর। এক পলকে চোখে পরে আলুথালু বাতাসে রাস্তার পাশে কলাগাছের পাতার দুলুনি। তার একপাশে শিরীষ গাছের ডালে বসে দুটি ঘুঘু বিরহী সুরে ডাকছে। তাদের গাড়িটি রাস্তার পাশে একটি দোকানের সামনে কখন এসে দাঁড়িয়েছে নন্দিনী খেয়াল করেনি।
– এই নে!
সূর্যমুখীর হাতে চায়ের কাপ। নন্দিনী কিছু না বলে কাপ হাতে নিয়ে বসে রইলো।
– কি হল! কথা বলছিস না যে?
– কি বলবো?
– কি বলবি মানে! গতকাল রাতে যে তোকে অর্পণের কাছে পাঠালাম! তার কি হলো?
– কিচ্ছু হয়নি?
–ইসস্ ..বললেই হল! দ্যাখ নন্দিনী সত্য বল আমায়, বল কি হয়েছে?
– সত্যি বলছি দিদি কিছুই হয়নি। তার কাছ থেকে কিছু আশা করলে আমাকে চোখ বেঁধে তবে পাঠাতে হবে!
কথাটা বলেই নন্দিনী লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিল। অন্য দিকে সূর্যমুখী হতভম্ব হয়ে শুধু বললো,
– চোখ বেঁধে!
এখানেই কথাবার্তা শেষ,আর কিছুই নন্দিনী বলার সাহস দেখায়নি। সূর্যমুখী সোজা মেয়ে নয়,যা বলেছে এই নিয়েই তাকে জ্বালিয়ে মারবে। মেয়েটি খারাপ নয়,শুধু মাঝে মধ্যে বেশ জ্বালায় নন্দিনীকে।
গত সপ্তাহে নন্দিনী সূর্যমুখীর সাথে গিয়েছিল একটা প্রাইভেট স্কু'লে। সূর্যমুখী সেখানেই কাজ করে। ফুটফুটে কতগুলি ছেলেমেয়েদের পড়ায় সে। সেখানে নিয়ে আচমকা তাকে আর্ট ক্লাস করাতে ঢুকিয়ে দিল। নন্দিনী মুর্খ নয়,শুধু বাচ্চাদের কেন সে এইট কি নাইনের ছাত্র-ছাত্রীদের কেউ পড়াতে সক্ষম। কিন্তু তাই বলে আর্ট! এটা সে মোটেও ভালো পারে না। তবে সূর্যমুখী শুধু যে তাকে বিপদে ফেলে তা নয়, ওর মতো বন্ধু পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার বটে।
নন্দিনীর এই নতুন জীবনের সকালটা কাটে মিতালী কাকিমার সাথে বাড়ির কাজে বা সূর্যমুখীর সাথে বাচ্চাদের স্কু'লে। কলেজ থেকে ফেরে দুপুরে অর্পণের সাথে। তারপর বাকিটা সময় মন্দ কাটে না। কিন্তু সত্য বলতে এমন হাসি সুখী পারিবারিক জীবনের আশা নন্দিনীর মন থেকে অনেক আগে হাড়িয়ে গিয়েছিল। এই ক্ষেত্রে তাকে ভাগ্যবতী বলা চলে। কিন্তু যার জন্যে এতকিছু সেই যে এখন বিমুখ।
এমনও দিন গেছে পূর্ণিমা রাতে পালঙ্কে বসে নন্দিনী তার পথে চেয়ে ছিল দুটো কথা বলবে বলে। কিন্তু কোথায় কি! রাত পেরিয়ে যায় তবুও তার খোঁজ নেই। দু দিনের জন্যে কাছে টেনে এখন একি রকমের আচরণ! এখন তাকে দেখলে নন্দিনীর ভয় হয় না বরং খুব রাগ হয়। সে এখন শুধু একটি বার অর্পণ কে কাছে পেতে চায়। নিস্তব্ধ নিবিড় রাতে তাকে বুকে জড়িয়ে নন্দিনীর মনের কিছু কথা তাকে বলতেই হবে,এরপর যা হবার হবে!
/////////
নন্দিনীর বাবার বাড়িটা গ্রামের উত্তর দিকের বড় মাঠের একপাশে পরে। সরু কাঁচা মাটির রাস্তার ডানপাশে গাছপালায় ঢাকা কয়েকটি মাটির ঘর। যদিও রাস্তা এখন চওড়া এবং পাকা। তবে মাটির ঘরগুলি এখনো দাড়িয়ে। নন্দিনীর ঘরটা এখন খালি,কিন্তু তার ঘরের পেছনে আম-কাঁঠালের বনে ঘেরা ছোট পুকুর পাড় এখনো আছে সেই আগের মতনই । নন্দিনীর ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে আজো পাখিদের কিচিরমিচির কলহ ও বন্য ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসে।
নন্দিনীর পরিবারটি একদম দিন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন নয়। তাদের বাড়িটির সাথে লাগোয়া কিছু ধান জমিন ও গঞ্জে তার বাবার একটা মসলার দোকান আছে। গ্রামে তার বাবাও একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাই নিজের বাড়িতে পা দিতেও ভয়ে নন্দিনীর ঘাম ছুটে গেল। তবে সূর্যমুখী যখন অম্লানবদনে তার সমুখ দিয়ে বাড়িতে ঢুকে গেল তখন তাকেও পিছু নিতে হলো।
নয় বছর পর হঠাৎ এসে একটা অচেনা অচেনা ভাব বোধহয় মনে আসে। তবে সেই ভাব সূর্যমুখীর জন্যে বিশেষ পাত্তা পেল না। এক সময় নন্দিনীর মনে হল; যেন সূর্যমুখী এই বাড়ির মেয়ে আর সে বাইরের লোক, বিনা নিমন্ত্রণে ঢুকে পরেছে।
নন্দিনীর বাবা শয্যাশায়ী। মায়ের দেহটাও যেন ভেঙে পরেছে। এক বোন ছিল,সে বিয়ে করে এখন দূর দেশে। ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়ে একটা ফুটফুটে মেয়ে কোলে করে ঘুরছে বাড়ির বধূ। মেয়েটির সবে পাঁচ বছর বয়স।
নন্দিনীকে চিনতে পেরে তার মা কান্নায় ভেঙে পরলো। অনেকদিন পর পরিবারের সংস্পর্শে এসে নন্দিনী নিজেও সামলে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে সূর্যমুখী সাথে না থাকলে নন্দিনীর হয়তো এই বাড়িতে পা দেবার সাহস হতো না কখনোই। অবশ্য নন্দিনীর মা কিছু না বললেও সূর্যমুখীর কথা নন্দিনীর বাবার বোধহয় বিশ্বাস করে নি। আসলে নন্দিনীর সাথে অর্পণের বয়সের তফাৎ হয়তো তিনি বুঝে নিয়েছেন।
কিন্তু নন্দিনী অবাক হয়েছে অর্পণ যখন নিজেকে তার স্বামী বলে স্বীকার করে। আর নন্দিনীর নিরবতা সুযোগে সূর্যমুখীও বর বধূ হিসেবে তাদের চালিয়ে দেয়। তবে এইসব না হলে নন্দিনী নিজেও জানেনা সে কি বলতো। বলা বাহুল্য অর্পণের আসল বয়স জানলে এই কথা কারোরই বিশ্বাস হতো না। আর এখনো যে সবার বিশ্বাস হয়েছে এমনটাও নয়। তবে আড়ষ্টতা পরে গিয়ে বেশ অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে সবাই। এই নয় বছর নন্দিনী কোথায় ছিল সে কথা বলার কোন ইচ্ছে অর্পণের নেই।তাই সূর্যমুখী বিষ্ময়কর ভাবেই সবদিক সামাল দিছিল।তবে একটা গন্ডগোল হবারই ছিল,যে টা তারা একদম ভুলে মেরে দিয়েছে,
– ম-মানে মা! উনি এস সব মানেন না...
– তাতে কি হয়! সে শহরের ছেলে, তাই বলে * র মেয়ে হয়ে তুই শাঁখা সিঁদুর পরবিনা, এ কেমন কথা? জানিস না শাঁখা-পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। স্বামীর অমঙ্গল ঘঠে.......
লম্বা ভাষণ শুনে নন্দিনীর গলা শুকিয়ে যাবার জোগাড়। অবশেষে সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ দেবার পর নন্দিনীর হাতে শাঁখা ও সীথিতে সিঁদুর পরলো। মঙ্গলসূত্রটা বোধহয় আজ পাওয়া যায়নি,তবে কাল সকালে অবশ্যই নন্দিনীর গলায় ওটাও পরবে। এই সব হলে নিজের ঘরে আয়নার সমুখে থ মেরে নন্দিনী অনেকক্ষণ বসে ছিল। তার এই ২৮বছরের জীবনে এই স্বপ্নটি অনেকবার দেখলেও এই স্বপ্ন সত্য হবার আশা গত নয় বছরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অর্পণ যখন নিজ হাতে তার সিথী রাঙিয়ে দিল,তখন সে শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে ছিল ছেলেটার মুখের দিকে। আর তখনই প্রথম নন্দিনী খেয়াল করলো অর্পণ তার চোখে চোখ রেখে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না। নন্দিনী এতে অবাক হয়নি , কারণ এই অনুভূতি তার জানা। নন্দিনী যেমন অর্পণের কথা অবাধ্য হতে পারে না!তার কথা কানের পর্দায় আঘাত করলেই সে যেমন দুনিয়াদাড়ি সব ভুলে মেরে দেয়!বোধহয় প্রতিটি মানুষের এমন কিছু দূর্বলতা থাকে যার কাছে কোন জারিজুরি খাটে না। নন্দিনীর চোখদুটো বোধহয় অর্পণের কাছে তেমনই কিছু একটা হবে!
////////
রাতে খাবার পর পরই লোডশেডিং। রাত দশটার দিকে বাড়ির বারান্দায় সূর্যমুখী ও বাকিরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। নন্দিনী তাই দেখে আর মনে মনে ভাবে “মেয়েটি এত কথা কি করে বলতে পারে একটানা”।
যাহোক নন্দিনী সূর্যমুখীর অযথা কথার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে এগারোটায় এল নিজের ঘরে। তখন অন্ধকার ঘরে একখানি মোমবাতি জ্বেলে অর্পণ বিছানায় শুয়ে খোলা জানালা দিয়ে বাইরের অন্ধকার দেখছে।
নন্দিনী সেই প্রথম দিনের মিলনের পর অর্পণকে আর তুমি বলে ডাকতে পারেনি। আসলে ছেলেটা তার ছোট হলেও এই কথা মানতে হয় যে,শুধু কথার জোরেই সে নন্দিনী কে বশ করে ফেলেছে। তবে আজ নন্দিনীর সংকোচ নেই। সে এখন জানে এই ছেলেটা যেমনি হোক শুধুমাত্র তার, কিন্তু নিজের মনপ্রাণ যার পায়ে সম্পূর্ণ রূপে সমর্পণ করতে মনটি তার উতলা, তাকে শেষ বারের মতো একটু পরখ করে নিতে ক্ষতি কি!
বাইরের অন্ধকারের সাথে তাল মিলিয়ে চারদিকে রাতজাগা পোকাদের দল একটানা ডেকে চলেছে। মোমবাতির মৃদু আলো সাথে খোলা জানালা দিয়ে জঙ্গলী ফুলে হালকা সুবাস প্রবেশ করে ভেতরের আবহাওয়া করে তুলেছে মায়াময়। পরিবেশটা মিলনের জন্যে বড়ই উপযোগী বলেই মনে হলো নন্দিনীর। তাই সে আলগোছে দরজা লাগিয়ে মন্দ পদক্ষেপ সরে এল অর্পণের কাছে। এদিকে অর্পণ তখনও আনমনা।
– খেতে এলে না কেন?
হঠাৎ প্রশ্নে চমকে গিয়ে অর্পণ মুখ ঘুরিয়ে তাকায় নন্দিনীর দিকে। টেবিলে রাখা মোমবাতির আলোয় এক মায়াবি রূপ ফুটেছে তার মুখে। নন্দিনীর মুখটা খুব কাছে। অপূর্ব সুন্দর চোখ দুটির গাঢ় কালো মনিতে মোমবাতির জলজলে অগ্নিশিখার স্পষ্ট চোখে পরে অর্পণের। তবে এই সৌন্দর্যের দিকে বেশিক্ষণ তাকানো যায় না। চোখ বোঝে অর্পণ। নন্দিনী তার পাশে শুয়ে বা হাতটি আলতোভাবে রাখে অর্পণের বুকে। পরক্ষণেই মিনমিন কররে বলে–
– কেন ভালোবাসলে এই অভাগী কে? আমি যে তোমার যোগ্য নই!
বোধহয় অর্পণের কানে এই প্রশ্ন যায়নি। তার বাঁ হাতটি এখন নন্দিনীর খোলা চুলগুলো বিলি কাটতে ব্যস্ত। নিশ্বাস দ্রুত ও উত্তপ্ত । নন্দিনী দীর্ঘ নয় বছরের অভিজ্ঞতায় পুরুষের কামনার ভাবটা ভালোই বোঝে। সে আর প্রশ্ন করে না,তার বদলে অর্পণের বুকে আরো ঘন হয়ে আসে। না চাইতেও নন্দিনীর উষ্ণ দেহের স্পর্শে অর্পণের রুদ্ধ কণ্ঠনালী থেকে কামনা সূচক অস্ফুট আওয়াজ বেরিয়ে আসে
– উম্ম্ম........
আড়চোখে নন্দিনী দৃষ্টি দেখ অর্পণের দিকে। তার ডান হাতটি প্যান্টের পকেট হাতড়াছে। বোধকরি কালো কাপরের সন্ধানে। কিন্তু আজ অর্পণের কাছে কালো কাপড় ছিল না।এমন পরিস্থিতিতে সে যে পরতে পারে একথা বেচারার জানা ছিল না। ওদিকে কালো কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা নন্দিনী আজকেই জেনেছে। অর্পণ তার চোখের দিকে তাকালে দূর্বল হয়ে পরে। তাই সে একটু হেসে বললে,
– চোখ বুঝে থাকলে হবে?
সে এখন অর্পণের বুকের ওপরে। দুজনার ঠোঁটে ঠোঁটে দূরত্ব পাঁচ ইঞ্চি মাত্র। অর্পণ মুখ ঘুরিয়ে নেয় জানালার দিকে।
– ও বাবা! এখনো এত্তো অভিমানী! আচ্ছা দেখি কি করা যায়!
অর্পণের বুকে মাথা রেখেই চারপাশটা একবার দেখার চেষ্টা করে সে। তারপর উঠে পরে এবং খানিক পরেই হাতে একখানা লাল রঙের ওড়না নিয়ে নিজেই নিজের চোখ হালকাভাবে বেঁধে একটু হেসে কি যেন বলেতে চায়! তবে বলার সময় হয়ে ওঠেনা, তার আগেই অর্পণের হাতের টানে তার চোখের বাঁধন খুলে যায়। পরক্ষণেই কর্কশ কন্ঠে ভর্ৎসনা,,
– শোনো! ফাজলামো করবে না আমার সাথে।
নন্দিনী ভয় পায় না। ভয় তার অনেক আগেই কেটে গিয়েছে।তাছাড়া অর্পণ তার কিইবা করবে! বড় জোড় খাটে ফেলে একদফা গাদন দেব। মিলনের সময় অর্পণের বলিষ্ঠ হাতের থাবা দুই একবার নন্দিনীর পাছায় পরলেও অকারণে গায়ে হাত তোলা অর্পণের স্বভাব নয়। তাই সে মুখখানি এগিয়ে রাঙা ঠোঁট দুটি অর্পণের মুখের খুব কাছে নিয়ে বলে,
– আমার থেকে তুমি ভালো কিছুর আশা কর কি করে? এখনো সময় আছে বুঝে দ্যাখো! আমি তোমার যোগ্য নই! একদম না! এখন ভালো লাগলেও পরে কিন্তু পস্তাতে হবে! আমায় শুধু তোমার বেশ্যা ক..আআ....
নন্দিনীর কথা শেষ হয় না তার আগেই অর্পণ তার চুলের মুঠি টেনে ধরে দৃঢ় কন্ঠে বলে,
– এই শব্দেটা আর একবার বললে জিভ ছিড়ে ফেলবো!
হটাৎ চুল টানাটা সামলে নিতে একটু সময় লাগে নন্দিনী। তবে সামলে উঠতেই অর্পণের রাগকে তোয়াক্কা না করে সে ঠোঁট নামিয়ে আনে অর্পণের কাঁধে। প্রথমে কামড় ও পরে তা চুম্বনের রূপ নিয়ে ধীরে ধীরে নেমে আসে বুকে। অর্পণ বাধা দেবে কি না তা ভাবতে ভাবতেই নন্দিনী তার শার্ট খুলে ফেলে দেয় মাটিতে। নিজের উত্তেজনা অর্পণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এলোপাতাড়ি চুম্বন করতে থাকে অর্পণের বুকে। অবস্থা সামাল দিতে নন্দিনীর চোয়ালে চেপেধরে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন করে অর্পণ। তবে কার্যে সফলতা অর্জন করে না। চুম্বন রত অবস্থাতেই নন্দিনী তার নিপুণ হাতে অল্প সময়েই প্যান্ট খুলে হাতের মুঠোয় বন্দী করে অর্পণের লিঙ্গটিকে।পরক্ষণেই চুম্বন ভাঙে নন্দিনী। উত্তেজনায় ফুলে ফেপে ওঠা পুরুষাঙ্গে নরম ঠোঁটের ছোঁয়া পরে একটু পরেই।
বসে থাকা অসম্ভব হয়ে পরে অর্পণের পক্ষে। বিছানায় গা এলিয়ে কোমড় উঁচিয়ে নিজের কামদন্ডটি প্রেয়সীর রাঙা ঠোঁট দুটির ফাঁক দিয়ে উষ্ণ লালাময় মুখে ঢুকিয়ে দিতে চায় সে। কিন্ত নন্দিনীর তখনও ওটি পরখ করা বাকি। সে লিঙ্গ মুন্ডিতে আলতো চুম্বন করতে করতে হাত বারিয়ে তুলে আনে জ্বলন্ত মোমবাতিটি।
ওদিকে কামতাড়িত অর্পণ মাথা উঠিয়ে করুণ চোখে বোধহয় অনুরোধ জানায় নন্দিনীকে। নন্দিনী তখন দুষ্টুমি ভরা চোখে মোমবাতির উজ্জ্বল আলো অর্পণের কামদন্ড টি পরখ করে চলেছে। দীর্ঘ,সুঠাম ও শিরাবহুল লৌহ দন্ডে এখন কাম উত্তেজনার ভূমিকম্প বইছে। নন্দিনী ডান হাতের তর্জনী দিয়ে লিঙ্গমুন্ডিটা মুখে কাছে টেনে আবারও চুম্বন করে। এবারের চুম্বন আগের থেকেও গাঢ়। তারপর হঠাৎ ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে নন্দিনীর ছোট্ট লালচে জিভটা বেরিয়ে এসে কামদন্ডের মূত্রনালীর ছিদ্র স্পর্শ করতেই কেঁপে ওঠে অর্পণ।
এবার অনুরোধ নয়,হাত বারিয়ে নন্দিনীর মাথাটা চেপে ধরে কামদন্ড প্রবেশ করার প্রেয়সীর উষ্ণ লালাময় মুখোগহবরে। নন্দিনী নিজেকে সামলাতে বাঁ হাতে অর্পণের উরু খাঁমচে ধরে। অন্যদিকে অর্পণ বেসামাল ভাবে ঠাপাতে থাকে নন্দিনীর মুখে ভেতরে। অর্পণের উত্তেজনা ছিল চরমে, তাই বেশিক্ষন ধরে রাখতে না পেরে নন্দিনীর মাথা চেপেধরে তার পুরুষাঙ্গের ওপড়ে।অবশেষে নন্দিনীর কন্ঠনালীর ভেতরে একদলা থকথকে কামরস ঢেলে দিয়ে বালিশে মাথা এলিয়ে হাপাতে থাকে অর্পণ।
এদিকে ছাড়া পেয়ে দুবার কেশেই নিজেকে সামলে নেয় নন্দিনী। তারপর ডানহাতের মোমবাতিটি টেবিলে নামিয়ে রেখে অর্পণের মুখের কাজে মুখ নামিয়ে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো নন্দিনী। অর্পণ সেদিকে একবার তাকিয়েই চোখ নামিয়ে মৃদু কন্ঠে বললে,
– আই'ম সরি, আই ডোন্ট নো হোয়া....
– শসস্... ডোন্ট হেজিটেট! আই ডোন্ট কেয়ার!
পরবর্তী আপডেট খুব সম্ভব সামনে শুক্রবার এবং ওটাই শেষ আপডেট এই গল্পের।