19-12-2024, 10:21 PM
(19-12-2024, 10:08 PM)Henry Wrote: পাঠকের জন্য কয়েকটি কথা:দাদা তুমি তোমার মতো লেখো। একেক জনের চিন্তা ভাবনা একেক রকম।আর বাঙ্গালী মানেই আবেগ। এই নিয়ে কিছুই বলার নেই।কেন না,আমি নিজেই বাঙ্গালী। তবে বাংলা সেকশনে এখন আর আগের মতো নতুন কিছু নেই,অধিকাংশ এক ধরনের গল্প। বাংলার "গোল্ডেন টাইম" হারিয়ে গেছে। আর কখনো ফিরে পাবো কি না কে জানে!
মাতৃত্বের প্রতি বঞ্চনা হেনরির গল্পের উপপাদ্য বলছেন অনেকেই। আমি কিন্তু তা আপাতত শেষ তিনটি গল্পে লিখিনি (একটি অসম্পূর্ণ)। মাতৃত্ব নারীদের মধ্যে অক্সিটোসিন হরমোনের প্রভাবে বরাবরই থাকে। মাতৃত্বহীন নারী কঠোর হয়, এবং তা পুরুষদের কাছেও আকর্ষণীয় হয় না। মাতৃত্ব এমনই এক সত্বা যা শুধু নিজের সন্তানের জন্য নয়, পাশের বাড়ির সন্তান কিংবা আত্মীয়স্বজনের সন্তানদের প্রতিও নারীরা দেখিয়ে থাকে। পূর্বের গল্পে রমা তার সন্তানের জীবন ফেরাতেই দুঃসাহসী হয়ে উঠছিল, সেখান থেকেই এক অবাঞ্ছিত সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। এবং স্বামীর কাছে না পাওয়া চাহিদাগুলি টের পায়। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চল্লিশ ছুঁই নারীরা অবজ্ঞা করে কিংবা দমিয়ে রাখে। কিন্তু কখনো কখনো তা এমন পুরুষের সংস্পর্শে এসে যায় যে খুব সতী স্বাধী বা শিক্ষিতা নিয়ন্ত্রিত জীবনের নারীও পতিত হয়। রমার তাই হয়েছিল। রমা বরং বঞ্চিত করেছিল তার স্বামী পীযূষকে। এই গল্পে সুচিত্রা একবিন্দু অংশুর প্রতি বঞ্চনা করেনি। বরং সুচির মাতৃত্ব এখানে আরো বেশি। দুটি অনাথ শিশুর প্রতি তার মাতৃত্ব ফুটিয়ে তুলতে রূপক হিসেবে সুচিত্রার এই আকস্মিক স্তনদুগ্ধ বা সিমুলেশনের ফলে ল্যাক্টেশন বিষয়টা আনা হয়েছে। তাছাড়া গফুরের মত উচ্ছল অথচ গভীর দুধর্ষ প্রেমিককে তার অতীত থেকে ছাড়িয়ে নিতে সুচি পারবে কিনা সময় বলবে, নাকি সুচিই সরে আসবে গফুরের জীবন থেকে তা গল্পের গতিতে জানা যাবে।
যদি গল্পে নারী সতী হয়, বিশ্বাসী হয় তবে তো সাধারণ স্বামী-স্ত্রীর গল্প হবে, xossipy তে তো আমরা দাম্পত্য প্রেমের উপন্যাস পড়তে আসিনি। নিষিদ্ধতার উত্তেজনা থাকলেই তো যৌন ধর্মী ইরোটিক উপন্যাস হয়ে উঠবে। পরকীয়া সমাজের সেই নিষিদ্ধ স্বাদ। যা বিশ্বাসঘাতক বা ঘাতিনী করে তোলে, নিষিদ্ধ সংস্পর্শ গড়ে তোলে। ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে নতুবা ঈর্ষা সৃষ্টিকারী নতুন কোনো গঠন।
তাই এই গল্প পরকীয়ার। অবশ্য হেনরিকে দুষ্ট করতে পারেন বরং, যে হেনরি মূলত মধ্যবয়সী দাম্পত্য, পরকীয়া, ল্যাক্টফিলিয়া ও ক্লাস ডিফারেন্স নিয়ে যৌন গল্প লেখে। এটা সত্য। আমি মূলত এই বিষয়গুলোই বেছে নিয়েছি। আমি ছাড়া বাংলা ইরোটিকায় যাদের হাত বেশ সাবলীল, ঐ ধর তক্তা মারো পেরেক নয়, তারা কেউ এই বিষয় নিয়ে লেখে না। স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকা সেক্স করবে সে তো স্বাভাবিক, তাতে নতুন করে ইরোটিক সাহিত্যের নিষিদ্ধতার কি স্বাদ পাওয়া যাবে? পরকীয়া আমাদের সমাজে আকছার ঘটে, এবং তার নিষিদ্ধতার আকর্ষণও খুব বেশি। তাই তাবড় তাবড় ঔপন্যাসিকরা একে উপজীব্য করেছেন। আমরা যখন আশির দশকের শুরুর দিকে কলেজে পড়ি, তখন কলকাতার রাস্তায় ঢেলে বিক্রি হত বহু বই। এর সেখানে সাহিত্য ধর্মী ইরো উপন্যাসের বই, পত্রিকা বিক্রি হত। কত অনামী আবার কত তাবড় তাবড় লেখক তাতে লিখেছেন, তাতে শক্তিপদ রাজগুরু, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, ঘনশ্যাম মিত্র এমন অনেকে। সেসব গল্প ছিল অসাধারণ।
আরেকটি প্রসঙ্গ আসছে যে সুচির দেহের বর্ননা। পুরুষ মানুষের সৌন্দর্য পড়ন্ত বয়সেও থেকে যায়, নারীর থাকে না। জয়ন্ত তাই তার হ্যান্ডসাম মধ্যবয়সী ব্যক্তিত্ব দিয়ে মিতার মত ডাগর নারীকে ভোগ করেছে। চেয়েছে পরিবার বৃত্তের বাইরে অবলীলায় সে গোপন পরকীয়া চালিয়ে যাবে। কিন্তু তার ঘরনিটি থাকবে সতী সাবিত্রী। বহু পুরুষই এমন মনে করে। অথচ মধ্যবয়সের পড়ন্ত শরীরে যখন নারীর রূপ লাবণ্য কমতে শুরু করে তখন তাদের শরীরে যে গোপনে যৌন চাহিদা স্রোত খেলা করে সে খেয়াল স্বামীটিও রাখে না। সুচিত্রা বরং একটা প্রতিহিংসার ছবি। সুচিত্রার শরীর মধ্যবয়সের নারীর। মোটেই যুবতী নারীদের মত ডাগর নয়, তবু যেমন আমরা সেই যৌবনের শুরুর দিকে সবচেয়ে আকর্ষিত বোধ করতাম ঐ চল্লিশ-পঞ্চাশের গায়ে গতরে মেদ জমা হওয়া কিংবা পাটকাঠির মত শুঁটকি কাকিমা,জেঠিমাদের প্রতি, যেমন তাদের শরীরের ভাঁজ, ঝুলে পড়া বড় বড় স্তন বা, শুঁটকি চেহারার ফর্সা ফর্সা ইকলেজের দিদিমণি কাকিমার ঐ ছোট ছোট দুদুগুলোর প্রতি, ঠিক তেমনই সুচিত্রারা। অথচ সেই শরীরে ক্ষিদে কিংবা যৌন পীড়ন গ্রহণ করার ক্ষমতা যুবতী মেয়েদের থেকে অনেক বেশি।