Poll: সহজ একটা প্রশ্ন করি,গল্প কেমন লাগছে?
You do not have permission to vote in this poll.
ভালো
90.16%
55 90.16%
খারাপ
1.64%
1 1.64%
সাধারণ, (কোন মতে চলে আর কি)
8.20%
5 8.20%
Total 61 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.32 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL ✒️গল্পের খাতা ✒️﴾প্রেমিকা ও বান্ধবী সিরিজ-গল্প নং১-মেইবি নেক্সট ফ্রাইডে﴿
#73
একটা কথা আমার গল্প পড়ার আগে মনে রাখবেন...!! BDSM মানেই অত‍্যাচার নয়।


অন‍্য রকম ভালোবাসা

 ফ‍্যান্টাসি, BDSM, Interfaith

– উম্ ..., সত্যিই প্রণিআপু তোমার মুখে জাদু আছে তা ওহহ্.... মানতেই হবে, যেন উপরওয়ালা তোমার ঠোঁট দুটিকে বাড়া চোষার জন্যেই তৈরি করে দিয়েছে উম্...


একটি ঘরের ভেতরে পড়ার টেবিলে বসে আছে ১৮-১৯বছরের একটি ছেলে। ঘরে আলো নেই। পড়ার টেবিলে খুলে রাখা বইয়ের সামনে একটি মোমবাতি জ্বলছিল। ঘরের ভেতরে মোমবাতির হলদেটে আলো আঁধারি পরিবেশে পড়ার টেবিলের নিচে একটি অর্ধনগ্ন মেয়ে বসে আছে হাটুগেড়ে। তার সামনে বসা ছেলেটির হাতে থাকা মোবাইলের ফ্লাসলাইটের আলোই মেয়েটির মুখ পরিস্কার দেখা যায়।
কাজল পড়া বড় বড় দুটি চোখ মেলে সে তাকিয়ে আছে মোবাইলের ক‍্যামেরার দিকে। তার শান্ত চোখের চাহুনিতে কামনার অগ্নিশিখা খেলা করছে এই মুহূর্তে।মেয়েটি তার লিপস্টিক দেওয়া লাল ঠোঁটে ছেলেটির পুরুষাঙ্গের আগাগোড়া আদর করতে ব‍্যস্ত। আর ছেলেটি সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে করতে মেয়েটি উষ্ণ মুখগহ্বরের আদর উপভোগ করতে ব‍্যস্ত।


আমাদের গল্পের মেয়েটির নাম সংক্ষেপে প্রণিকা। বারিয়ে বললে প্রণিকা মজুমদার। মজুমদার পরিবারের আটজন সদস্যদের মধ্যে প্রণিকার বয়স ২১। তার বড়দা সুজন বয়স ২৪ ও বৌদি মঞ্জুশ্রী বয়স ২২ । এছাড়া তার আর দুটি বোন যাদের নাম প্রভা ও প্রমিলা, বয়স ১৭। জমজ বলে এদের মধ্যে দিনে দুবার কে বড় তা নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকে। তবে কখনোই সেই ঝগড়া সঠিক ফলাফল বেড়িয়ে আসতে শোনা যায়নি। এছাড়া পড়িবারে তার বাবা-মা ও বৃদ্ধ ঠাকুমাকে নিয়ে তাদের পরিবার।

প্রণিকার দাদা প্রবাসী। ফ্রতি দু'বছরে একবার তার দেশে আসা যাওয়া। মজুমদার সাহেব শান্তিপূর্ণ লোক।তবে মারাত্মক ভাবে রাগান্বিত হলে তার বাবার আমলের দো'নলা বন্দুকটি,তার শোবার ঘরের দেয়াল ছেড়ে তার হাতে উঠে আসে। ওই টুকু দোষ ছাড়ান দিলে তিনি সারাদিন খবরের কাগজ হাতে কালী মন্দির কাছাকাছি একটি কাপড়ের দোকানে বসেই দিন পার করেন।
প্রণিকার মা শ্রীমতী শুভদ্রা দেবীকে অবশ্য সাধারণ বাঙালী গৃহবধূ বলা চলে। তিনি জগতে সংসারের মারপ্যাঁচে একদমই বোঝেন না। তার জীবন ধারা সংসারের কাজকর্ম ও ঠাকুর দেবতাদের মাঝেই সিমিত।

একটু আগে যে ঘটনা বর্ণনা করছিলাম, সেই ঘটনার শুরুটা জানতে গেলে আমাদের কিছুদিন পিছিয়ে যেতে হবে। কারণ তার সাথে যে ঘটনা এখন ঘটছে। তার সুচনা আছ থেকে ছ'মাস আগে।

প্রণিকাদের বাড়ির সামনেই কার যেন একটি বিশাল ভুতুড়ে বাড়ি ছিল।প্রণিকার যগন থেকে বুঝতে শিখেছে। তখন থেকে আজ অবধি এই বাড়িতে দারোয়ান রহমত কাকু ও তার সহজ সরল স্ত্রী কাকলী ছাড়া আর কেউ কেই দেখেনি।যদিও তাদের কখনো ও বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়নি।এবং ইচ্ছে থাকলেও ওবাড়িতে জঙ্গলা ছেটে কেউ ঢুকতো কি না সন্দেহ। কারণে লোকমুখে এই বিশাল গোলাপ ভিলা ভুতেদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। লোকে বলে ও বাড়িতে রাতে কান্নার আওয়াজ হয়। কখন আবার হাসি । এছাড়া ছাদের ওপড়ে সাদা শাড়ি পড়ে অশরীরী হাটাহাটি ও বাড়িতে জলভাতের মতো। এনিয়ে এলাকার লোকের চায়ের দোকানে সন্ধ্যালাপ ভালোই জমিতো। প্রতি সপ্তাহে গোলাপ ভিলা নিয়ে তৈরি হতো নতুন গল্প। আর সেই গল্পগুলি সন্ধ্যা বেলায় শুভদ্রা দেবী বাড়ির সবাইকে শুনিয়ে আলোচনা করতেন। আর সেই গল্প শুনে মজুমদার সাহেব গম্ভীর গলায় বলতেন,

– এই সব গাজাখুরি গল্প তোমার মাথা কে ঢোকার বলতো?

এই যখন অবস্থা, তখন হঠাৎই একদিন ওবাড়িতে একগাদা লোককে ঢুকতে দেখা গেল। আর দুই সপ্তাহের মধ্যেই বাড়ির জঙ্গলা কেটে পরিস্কার পরিছন্ন করে,বাড়িটিকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলা হলো। বাড়ি পরিস্কারের পর আরও দুই সপ্তাহ পাড়ার লোকে উকিঝুকি মেরে ও রহমত দারোয়ানের সাথে বসে চা সিগারেট খেয়ে,এই বাড়ির ভবিষ্যত বাসিন্দা কে হবে,সেই রহস্য উদঘাটনকরার চেষ্টা চালিয়ে গেল।


অবশেষে পাড়ার সবার প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে, এক রৌদ্রজ্জল শুক্রবারের সকালে বাড়ির সামনে কালো রঙের একটি এসইউভি এসে থামলো। বলি ব‍্যাহুল ভূতুড়ে বাড়ির বাসিন্দা টিকে দেখতে দর্শকের অভাব পরলো না।
গাড়ির দরজা খুলে আহান যখন বাইরে বেরিয়ে এলো।তখন চারপাশে এত লোক দেখে বেচারা অবাক হয়ে চারপাশে দৃষ্টিপাত করে কি হয়েছে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো।
আহানের বয়স ১৮ হলেও তাকে দেখতে তার বয়স আন্দাজ করা কঠিন ছিল। ছয় ফুট তিন ইঞ্চির উচ্চতা, আর জিম করা পেটানো পেশিবহুল দেহটি দেখবার মতো জিনিস বটে। তার সাথে আবার কাধে বসে থাকে বিশাল সাইজের একটা সিন্ধুঈগল। ধবধবে সাদা পাখিটার পালকে যেন কেউ সুনিপুণ হাতে কালো রঙ মাখিয়ে দিয়েছে।

প্রথম যেদিন আহান ওবাড়িতে এসে উঠলো। সেদিন প্রণিকাদের বাড়িতে রাতে খাবার টেবিলে,মজুমদার সাহেবের স্ত্রী, মানে প্রণিকার মা শ্রীমতি শুভদ্রা দেবী বড় বিরক্তি মুখে নিয়ে বললেন,

– না জানি আজকালকার ছেলে ছোকড়াদের অল্প বয়সে মরবার সাধ জাগে কেন। আহা.. ওতো সুশ্রী দেখতে ছেলেটি শেষে মায়ের কোল খালি করে তেনাদের হাতে মারা পরবে!

এই কথাতে মজুমদার সাহেব মুখ তুলে বললেন,

– কে কার হাতে মারা পরছে?

শুভদ্রা দেবী স্বামীর প্রশ্নে উৎসাহ পেয়ে বললে,

– ওমা! তুমি শোননি এখনো? ওযে রাস্তার ওপাড়ে দোতলা বাড়িটায় একটা ছেলে উঠলো আজ,তার কথাই বলছিলাম।

– তা সে তো ভালো কথা, এতোদিনে পাড়ার নেশাখোর ছেলে ছোকরা গুলোর আড্ডা ভঙ্গ হলো।

শ্রীমতী শুভদ্রা দেবী অবশ্য স্বামীর কথা বুঝলেন না। তিনি আবারও বলে চললেন,

– আহা..ওমন কৃষ্ণ ঠাকুরের মত দেখতে ছেলেটি। ওগো শুনছো! বলিকি তুমি একবার বলে দেখ না,যদি বোঝানো যায়...

তিনি আরও কিছু বলতেন, কিন্তু তার আগেই প্রণিকার বৌদি মঞ্জুশ্রী বলল,

– মা আপনি শুধু শুধুই ভয় পাচ্ছেন। তাছাড়া বাবা বললেও ও ছেলে শুনবে কিনা সন্দেহ আছে। আজ সন্ধ্যায় পাড়ার দু এক জন কথা বলে এসেছে, কোন লাভ হয়নি। মনে হয় আপনার তেনাদের ওপড়ে ওই ছেলেটির বিশেষ বিশ্বাস নেই। তার ওপড়ে ছেলেটি বিজাতীয়। সেকি বাবার কথায় কানে দেবে বলে আপনার মনে হয়?

আর কিছু কানে না লাগলেও বিজাতী কথাটি শুভদ্রা দেবীর কান এরিয়ে গেল না। শহরের এই এলাকাটি হি'ন্দু পল্লী। কয়েকটি বিজাতীয় পরিবারের বসবাস যে নেই তা নয়,তবে তাদের সাথে শ্রীমতী শুভদ্রা দেবীর বিশেষ ভালো সম্পর্ক আছে সে কথা বলা যায় না। তিনি মঞ্জুশ্রীর কথায় মোটের ওপড়ে দমে গেলেন একদম। এদিকে মায়ের নীরবতায় প্রণিকা বলল,

– ছেলেটার কাঁধে পাখিটা দেখেছো বৌদি? উফ্..এমন পাখি কেউ পুষতে পারে? সত্যি বলছি বৌদি! পাখিটা দেখলেই আমার বুকটা কেমন করে ওঠে। ও জিনিস ঘরে থাকলে ভুত কেন, ভূতের বাবাও ওমুখো হবে না মিলিয়ে নিও...

মোট কথা পাড়ার অনেকেই তার পরদিন সকাল সকাল রাস্তায় বের হলো শুধুমাত্র গোলাপ ভিলায় রাত কাটানো দুটি সদস‍্যের ঘাড় মটকানো মৃতদেহ আবিষ্কারের উদেশ‍্যে। কিন্তু সকালের প্রথম সূর্যকিণের সাথে সাথেই সবাইকে আশাহত করে গোলাপ ভিলার গেইট খুলে আহান জগিং করতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো। আর তার একটু পরেই আহানের পোষা সিন্ধু ঈগলটিকে দেখা গেল দোতলার ছাদে।

এই পর্যন্ত যথেষ্ট ছিল পাড়ার লোকেদের অবাক করতে। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই আহান অসাধ‍্য সাধন করলো। গায়ের রঙ খানিক কৃষ্ণবর্ণ বলেই হোক বা আহান নিরামিষভোজী বলেই হোক, সে এপাড়ার সবচেয়ে সুন্দরী ও ও সবার প্রিয় শ্রীমতী শুভদ্রা দেবীর পছন্দের পাত্র হয়ে উঠলো। এতে পাড়ার অনেকেরই গায়ের জ্বালা চরমে ওঠার যোগার হলেও। আহানের জিম করা পেশীবহুল দেহ ও বিশালাকার সিন্ধু ঈগল ঘাড়ে পড়ার ভয়ে কিছু করবার সাহস পেল না।

ঘটনা ঠিক কি হয়েছিল তা সঠিকভাবে কেউ বলতে না পারলেও শোনা যায়; পাড়ার মন্দিরের পূজোর সময় মায়ের জন্যে গড়া সোনার গয়না নিয়ে বড় রাস্তার মোড়দিয়ে ফেরার সময়, শুভদ্রা দেবী ছিনতাই কারির হাতে পরেন। আর সেই সময়ে আহানের পোষা ঈগল খানি কোথা হতে এসে পরে সোজা ছিনতাইকারীর মাথার ওপড়ে। এর পরের ঘটনা অবশ্য শুভদ্রা দেবী কাঁদতে কাঁদতে কি বলছিলেন তা অনেকেরই বোধগম্য হয়নি। তবে তার সপ্তাহে খানেক পর থেকে মাঝেমধ্যেই মজুমদার গিন্নিকে বাটি হাতে গোলাপ ভিলায় আসা যাওয়া করতে দেখা গেল। সেই সাথে মজুমদার বাড়ির ছাদে কখন মঞ্জুশ্রী আবার কখনো বা প্রভা ও প্রমিলাকে দেখাগেল আহানের পোষা ঈগলটিকে মাছ খাওয়াতে।
তবে প্রণিকা কিন্তু আহান বা তার পোষা পাখিটার ধারেকাছেও আসতো না।
এমনি যখন চলছিল, তখন হঠাৎ একদিন বসার ঘরে শুভদ্রা দেবী বললেন,

– আচ্ছা বৌমা শুনেছিলাম তোমার নাকি অনেক পড়াশোনা জানা। বলছিলাম আহান ছেলেটার একজন লোক দরকার, কি সব অফিসের কাজকর্ম দেখতে...

শুভদ্রা দেবীর কথা শেষ হবার আগেই মঞ্জুশ্রী একগাল হেসে বলল,

– মা! আমি বলিকি ওবাড়িতে যাওয়া কমিয়ে দিন। বেশ বুঝতে পারছি এইকদিনেই ছেলেটা আপনার মাথা বিগড়ে দিয়েছে। আমি কাজ করলে সংসার কে দেখবে? আপনার হাতে সব ফেলে আমি কাজে যেতে পারবো না।

– এবার কথা বললে ক্ষতি কি বৌমা? তাছাড়া বাড়িতে এমনকি কাজ যা আমি এক পারবো না....

এভাবে বেশ অনেকটা সময় কথা কাটাকাটির পরে,একসময় মঞ্জুশ্রী রাজি হলো আহানের সাথে কথা বলতে। মঞ্জুশ্রী মেধাবী ও বুদ্ধিমতী মেয়ে। সেই সাথে তার গৌরবর্ণ দেহটি যেন কোনো শিল্পী বহু যত্নে নিখুঁত নিটোল করে গড়িয়েছে। সেই রূপ ও কন্ঠের মাদকতা যে কোন পুরুষের মাথা খারাপ করতে বাধ্য। এই কারণেই মঞ্জুশ্রী ঘরের বাইরে খুব একটা পা রাখতো না।
কিন্তু তার শাশুড়ী মায়ের কথা রাখতে,সেদিন সে একটি নীল রঙের ঢাকাই মসলিন শাড়িগায়ে জড়িয়ে হালকা সাজসজ্জা করে সে বেরুতে যাচ্ছিল। এমন সময় প্রণিকা তির সামনে এসে উপস্থিত।

– এ মাই গড বৌদি! তুমি এই সাজে ওই ছেলেটার সাথে দেখা করতে গেছ, এটি দাদা জানলে কি হবে জানো?

প্রণিকার স্বভাব মঞ্জুশ্রীর অজানা ছিল না। সে হান্ড ব‍্যাগ থেকে একশত টাকার একটা নোট বের করে বাড়িয়ে দিল। প্রণিকা গাল ফুলিয়ে ও ঠোঁট বাকিয়ে ভেংচি কেটে বলল,

– ওতে হচ্ছে না, কমছে কম ৫০০ টাকা চাই আমার। নইলে এখুনি দাদাকে ফোন করে বলছি"তোমার আদরের মঞ্জুশ্রী যৌবন জ্বালা সইতে না পেরে, এক বিজাতীয়ের সঙ্গে প্রেমলীলায় মথ্ত হয়ে উঠেছে"

মঞ্জুশ্রী খানিকক্ষণ প্রণিকার মুখেরপানে চেয়ে থেকে টাকাটা তার ব‍্যাগে ডুকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পেছন ফিরলো। আর ওমনি প্রণিকা একরকম লাফিয়ে এসে মঞ্জুশ্রীর সামনে দাঁড়িয়ে বলল,

– আচ্ছা বাবা ওতেই হবে,দাও টাকাটা দিও দেখি!

– কেন দেব? এখুনি না বললে ওতে হবে না, এবার নিজের দাদার কাজে আমার নামে নালিশ করে বকশিশ হাতিয়ে নাও গিয়ে যাও।

কথা শেষ করেই মঞ্জুশ্রী বেরিয়ে গেল। পেছন থেকে প্রণিকা চেঁচিয়ে বলল,

– মাফ চাইছি বৌদি আর হবে না,লক্ষ্মী বৌদি আমার কথা শোন....ভালো হচ্ছে না কিন্তু বৌদি,আমি কিন্তু...

প্রণিকার সম্পূর্ণ কথা মঞ্জুশ্রীর কানে গেল না। তবে তার চিন্তা ছিল না। সে খারাপ কিছুই করছে না। শুধু ভগবানের দেওয়া সৌন্দর্য অস্ত বানিয়ে একটি পুরুষের আসল রূপ বের করে আনতে চাইছে মাত্র।তবে মঞ্জুশ্রীর জানাছিল প্রণিকা তার দাদাকে কিছুই বলবে না। কারণ প্রণিকাকে মাঝেমধ্যেই টাকার জন‍্যে মঞ্জুশ্রীর কাছে হাত পাততে হয়।

দুপুরে মঞ্জুশ্রী তার শাশুড়ী মায়ের বলা ঠিকানায় পৌঁছে আহানের সাথে দেখা করলো। তবে সে শুধু চাকরির ব‍্যপারেই নয়, আহানের এখানে আসার সম্পূর্ণ ইতিহাস বেরকরে এনে সন্ধ্যায় বসার ঘরে সবাইকে নিয়ে গল্প করতে বসলো।

আহান ঢাকার একজন বড় ব‍্যবসায়ী মোঃ রেজাউল হকের দ্বিতীয় পুত্র। মেধাবী ছাত্র,তাই তার মায়ের ইচ্ছে ছেলেকে পারিবারিক ব‍্যবসায় না বসিয়ে ডাক্তার বানাতে। তবে আহানে বাবার মতামত ভিন্ন।তাই সমপ্রতি তাদের চট্টগ্রাম গার্মেন্টস ফ‍্যাক্টরিতে কিছু সমস্যা হবার কারণে তাকে এখানে পাঠানো হয়েছে বিষয়টি দেখার জন্যে। তার বাবার মতে এখন থেকেই সবকিছু ধিরে ধিরে শিখে নেওয়া ভালো। যেন পরবর্তীতে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে পারিবারিক ব‍্যবসায় হাত লাগাতে পারে।
আহানের অবশ্য এইবস দেখাশোনা করতে আপত্তি ছিল না। তবে বাবার ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে মায়ের মনে আঘাত সে দিতে চায় না। তাই এখানে এলেও সে সম্পূর্ণ সময়টা আফিসে কাটাতে নারাজ।এখন তার এমন একজন লোক চাই যে কিনা তার কাজে সাহায্য করে তার সময় ঘাটতি পুষিয়ে দেবে।

মঞ্জুশ্রীর কথা শুনে মজুমদার সাহেব চেয়ারে হেলান দিয়ে বললেন,

– দ্বায়িত্ব নিতান্তই ছোট নয়। এই বয়সে ছেলেটার ওপড়ে এমন ভার চাপিয়ে দেয়া মোটেও ঠিক হয়নি।

শুভদ্রা দেবী এতখন চুপচাপ সব শুনছিলেন, এবার স্বামীর কথার রেশ ধরে বলেন,

– বাবা তো নয় যেন সাক্ষাৎ যম, ওইটুকু ছেলেকে এতো দূরে একা পাঠিয়ে দিল। তাও যদি একটা কাজের লোক থাকতো সাথে‌। আহা... সেদিন প্রথম গেলাম ও বাড়িতে। দেখলাম খাবার টেবিলে ক'খানা আধপোড়া রুটি আর বাটিতে সেদ্ধ করা সবজি পরে আছে। আমার তো দেখেই চোখে জল চলে এলো। ওইটুকু ছেলেকে কেউ একা ছাড়ে।

বলতে বলতে সত্যিই শুভদ্রা দেবীর দুই চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে এলো। তার ফর্সা দুই গাল বেয়ে মুক্ত দানার মত অশ্রু বিন্দু গড়িয়ে পরতে লাগলো। এদিকে প্রণিকা তার মায়ের কথা শুনে মুখের হাসি চাপতে ব‍্যস্ত। মঞ্জুশ্রী তার শাশুড়ী মায়ের পাশেই বসে ছিল,শাশুড়ীর চোখে জল দেখে সে বলল,

– কেন দেশে কি খাবার হোটেলের অভাব পরেছে, যে ঢাকার রাজকুমারকে আধপোড়া রুটি খেতে হচ্ছে?

– সে তো আমিও বললাম; পাড়ার মোড়ে রামপাল দাদার হোটেলে ভালো রান্না করে, সেখানে দুবেলা বলে দিলেই খাবার দিয়ে যাবে।

– তাহলে সমাধান তো হয়েই গেল,ত তুমি কাঁদতে বসলে কেন?

স্বামী প্রশ্নে শুভদ্রা দেবীর চোখের জল যেন খানিকটা বেড়ে গেল। সে কান্না জড়ানো কম্পিত কন্ঠস্বরে বলল,

– সে হলে ত ভালোই হতো, কিন্ত বাছা আমার বাইরের খাবার ছোয় না। বাইরের খাবার তার পছন্দ নয়।

– তা বেশ ত মা, কাল না হয় বাবা একজন রান্নার লোক জোগাড় করে দেবে,আপনি কান্না থামান।

শুভদ্রা দেবী শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে বলতে লাগলেন।

– সেকি আমি দেখিনি ভেবেছ! কিন্তু কে করবে? একে তো বিজাতীয় তার ওপড়ে ভূতুড়ে বাড়িতে একলা বাটাছেলের কাছে কে যাবে শুনি?

ভূতুড়ে বাড়ির কথাটা এতখন কারোরই মনে ছিল না। সত্যিই তো ও বাড়ির ভেতরে ঢোকা তো দূরের কথা, বাড়ির সামনে সন্ধ্যার পরে কে দাঁড়াতে চায় না। সেই বাড়িতে কাজ কেউ কি রাজি হবে!

রাতে সবার খাওয়া শেষ হলে আজ শুভদ্রা দেবীর সাথে মঞ্জুশ্রীও গেল গোলাগ ভিলার ভেতরে। ভাবতেও অবাক লাগে মাসখানেক আগেও এই আলোয় জলমলে বাড়িটি অন্ধকারের চাদরে ঢাকা থাকতো। বাড়ির সামনে গেইটের কাছে রহমত দারোয়ান বসে বসে সিগারেট টানছিল। মঞ্জুশ্রী তার শাশুড়ীমাকে ভেতরে পাঠিয়ে দারোয়ানের কাছে এসে বলল,

– কাকাবাবু! কাকিমার শরীর খারাপ আজ দুদিন হলো,অথচ আমি কিছুই জানলাম না। এটা কোন দোষে বল দেখি?

– দোষ কেন হবে মা,ও সামান্য অসুখ তাই ভাবলাম...

– তুমি ভেবে নিলেই হবে কেন? আর মানুষের বুঝি চিন্তা হয় না? তুমি পর ভাবতে পারো,আমি পারি না। কাল সকালে যাবো তোমার বাড়িতে,কাকিমাকে বলে দিও বাড়ি ফিরে।

– আর কষ্ট করে কেন যাবে মা তুমি, ওর শরীর এখন বেশ ভালো। দেখো ও নিজেই আসবে কাল।

কথা শেষ করে মঞ্জুশ্রী যেই ভেতরে পা বারাবে, তখনে পেছন থেকে প্রণিকা,প্রভা ও প্রমিলা এক সঙ্গে এসে হাজির হল।

– একি কান্ড! তিন বোনে মিলে এখানে আসা কেন? ভূতের ভয় নেই বুঝি মনে?

– ফাজলামি রাখো বৌদি, আমরা শুধু বাইরে দেখবো ভেতরে ঢুকবো না।

– ও এই ব‍্যপার! তাইতো বলি ভীতুর ডিমেরা এখানে কি করতে এল। তবে দেখো, এই রাত্রি বেলা ভূত যদি গাছ থেকে কারো ঘাড়ে পড়ে, তবে কিন্তু আর রক্ষে থাকবে না।

কথাটা বলেই মঞ্জুশ্রী আর অপেক্ষা না করে এগিয়ে গিয়ে দরজায় কলিং বেল চাপলো। আর বাকিরা বাইরে এদিকে ওদিক হাটাহাটি করে চারপাশ দেখতে লাগলো।
যদিও দেখার মতো তেমন কিছুই ছিল না। বড় লোহার গেইট পেরুলে পাথর বাধানো ২৫ ফুটের মতো রাস্তা সোজা চলে গেছে নতুন রঙ করা সাদা বাড়িটির দরজা সংলগ্ন নিচু সিড়ির কাছে। তারপর বামে বাক নিয়ে কিছুটা এগিয়েই নতুন তৈরি করা গাড়ি রাখার একটি ঘর।এছাড়া চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ কিছু আম,লিচু ও নারিকেল গাছ। তারপর পুরোনো আমলের বিশাল দোতলা বাড়িখানা ভেতরের উঠানকে বাইরে থেকে আলাদা করে দিয়েছে।

লক্ষ্য করার মতো তেমন কিছু নেই বলেই হোক বা ভূরের ভয়েই হোক দরজা খোলার সাথে সাথেই মঞ্জুশ্রীর পেছন পেছন বাকিরাও বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। শুভদ্রা দেবী দরজা খুলে বাকিদের দেখে খানিকটা অবাক হয়ে চেয়ে রইলো। মঞ্জুশ্রী ঘটনা সামাল দিতে বলল,

– মা ওরা আপনার পোষা ভুতটি দেখতে এসেছে।

তারপর প্রণিকার কানের কাজে মুখ এনে ফিসফিস করে বলল,ভেতরে ঢুকছো ভালো কথা,তবে সাবধান! এই বাড়ির নতুন ভূতটি বড্ড বেহায়া, দেখো তোমার ঘাড়ে যেন চড়ে না বসে।

আহানের অবশ্য প্রণিকার ঘাড়ে চড়ার ইচ্ছে ছিল না। সে প্রথম দেখাতেই মজুমদার বাড়ির বৌমা মঞ্জুশ্রীর মায়াজালে খানিক জড়িয়ে গিয়েছিল। তবে মঞ্জুশ্রী মোটেও বাজে মেয়ে নয়।
আগেই বলেছি মঞ্জুশ্রী সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী। সে আজ ওই রকম সাজে আহানের অফিসে গিয়েছিল কেবলমাত্র আহানের মনভাব বোঝার জন‍্যে। তার ভাবনা ছিল আহান ছেলেটি হয়তো বড়লোক পিতার বিগড়ে যাওয়া সন্তান। তবে আজ অফিসে আহানের সাথে কথা বলার পর সে আহানকে পুরোপুরি বুঝে উঠতে না পারলেও, আহান যে বিশেষ খারাপ ছেলে নয় তা সে বেশ বূঝেছে।

তবে প্রণিকার বিষয়টি ছিল ভিন্ন। সে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া চঞ্চল ও অতিমাত্রায় আধুনিক মেয়ে। মা ও বৌদির মতো রূপ না পেলেও তার শারীরিক গঠন ছিল বেশ আকর্ষণীয়। অল্প বয়সেই কিছু বাজে বন্ধু বান্ধবীদের সাথে পরে সে খানিক বিগড়ে গিয়েছিল। এবং আজ বৌদির মুখে চাকরির বেতনের অংক শুনে সে মাকে হাত করে চাকরিটা পাবার ধান্দায় আছে।

কাজের চাপ খুব বেশি নয়, সপ্তাহে তিনদিন অফিসে থেকে সব দেখে শুনে রিপোর্ট লিখে আহানকে জানাতে হবে। মাঝে মধ্যে তিনদিনের জায়গায় চিরদিন কখনো বা অভার টাইম,তাতে এমন কি আসে যায়! এমনিতেও লেখাপড়ার দিকে প্রণিকার মনযোগ ছিল না। আর এমন সহজ কাজের জন্যে মাসে ২৫ হাজার টাকা সে অন‍্য কোথাও পাবে বলে মনে হয় না।

সুতরাং যেমন ভাবনা যেমনি কাজ। প্রণিকা তার মায়ের দ্বারা আহানের অফিসে চাকরি টা বাগিয়ে নিল। এই ব‍্যপারে অবশ্য আহান ও মজুমদার সাহেবের বিষণ আপত্তি ছিল প্রথমে। তবে আহানকে মানাতে বেশি বেগ পেতে হলো না।তবে সমস্যা হলো মজুমদার সাহেবকে নিয়ে। তিনি শর্ত দিলেন এই চাকরির জন্যে যদি প্রণিকার লেখাপড়ার আর অবনতি হয় তবে তির লেখা পড়ার পার্ট চুকিয়ে শুভোবিবাহ করিয়ে দেবেন। প্রণিকায় এই শর্তে রাজি হয়ে গেল।

প্রথম কয়েক দিন বেশ ভালো চললেও,অনঅভিজ্ঞ প্রণিকার হাতে ছোটখাটো অনেক ভুলভ্রান্তি হতে লাগলো। অবশ্য এইসব ছোটখাটো বিষয়ে গুলো আহান নিজ দ্বায়ীত্বে সমাধান করে দিত। তবে দিনে দিনে প্রণিকা ভুলের পরিমাণ বাড়তে লাগলো এবং এই কারণে মজুমদার বাড়িতে আহানের আসা যাওয়া ধিরে ধিরে এক রকম স্বাভাবিক হয়ে এলো। সে প্রায় সময় অফিসের ফাই নিয়ে প্রণিকার ঘরে আলোচনায় বসতো। প্রণিকাকে কাজ বোঝানোর চেষ্টা করতো। ধিরে ধিরে মাস তিনএকের ভেতরেই মজুমদার বাড়ির সবাই আহানকে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের মতোই দেখতে শুরু করলো। তবে প্রণিকা ততদিনে বুঝে নিয়েছিল আহান শুভদ্রা দেবীর স্নেহ ও মঞ্জুশ্রীর রূপের মায়াজালে আটকা পরে গেছে।

মঞ্জুশ্রী প্রতিদিন বিকেলে তার ঘরের ভেতরে বিছানায় শুয়ে হাটু অবধি লম্বা চুলে পিঠে ছড়িয়ে ডায়েরী লিখতো। আহান ছুটির দিনে মাঝে মধ্যেই দরজার কাছে এসে সেই দৃশ‍্যটি একিবার দেখে নিয়ে চলে যেতো প্রণিকার ঘরে তাকে কাজ শেখাতে। তবে প্রণিকার কাজ শেখায় কোন মনোযোগ ছিল না।

এমনি একদিন আহান প্রণিকাকে বোঝাতে বোঝাতে বিরক্ত হয়ে বলল,

– প্রণিকা দি তুমি কি চাইছো বলো তো? আমি বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি তোমার কাজে কোন মনো যোগ নেই। উল্টে তোমাকে বোঝাতে গিয়ে আমার পড়ালেখা কতটা ক্ষতি হচ্ছে জানো?

প্রণিকা আহানের থেকে একটু দূরে বসে ছিল। আহানের রাগান্বিত মুখ দেখে সে এগিয়ে এসে তার গলা জড়িয়ে বলল,

– তোমাকে শেখাতে কে বলেছে শুনি?

আহান বেশ অবাক হয়ে বলল,

– মানে!

– ন‍্যাকামি কোর নাতো,তুমি আমাদের বাড়িতে কেন আসো তা আমি ভালো করে জানি।

– প্রণি আপু বাজে কথা বলো না,তোমায় দিয়ে যদি এই কাজ না হয় তবে আমাকে অন্য উপায় দেগতে হবে।

প্রণিকা এবার আহানের পিঠে তার বুক ঠেকিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বলল,

– ও ভুলটি করলে তোমার এ বাড়িতে আসা বন্ধ হয়ে যাবে এবং সেই সাথে বোনাস হিসেবে গণ পিটুনি।

আহানের পিঠে প্রণিকার নরম তুলতুলে বুকের স্পর্শ লাগার সাথে সাথেই আহান চমকে উঠেছিল এবং পরক্ষণেই প্রণিকার কথা শুনে বুঝে নিয়েছি প্রণিকা কি করতে চাইছে। সে এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

– প্রণি আপু তুমি আমাকে চিনতে ভুল করেছ।এই রকম ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই, আমি এখুনি খালামণিকে বলে দেব তোমার সাথে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

বলেই আহান ফাইল হাতে নিয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যেতে চাইলে। প্রণিকা ছুটে এসে দরজা লাগিয়ে দিল। এবং আহানের দিকে ঘুরে দাড়িয়ে বলল,

– দেখ আহান তুমি নিসন্দেহে ভালো ছেলে। তবে ভেবে দেখ বন্ধ ঘরে একটি অসহায় বন্দিনী মেয়ের চিৎকারের কাছে তোমার ওই সুবোধ বালকের সার্টিফিকেট ঠিক কতটা কাজে লাগবে? তা ওপড়ে যদি এই ছবিটি কেউ দেখে ফেলে তবে তো সোনায় সোহাগা..


প্রণিকা আহানের সামনে তার মোবাইলটি তুলে ধরলো। মোবাইলে ভিডিও দেখা মাত্র আহানের মাথা যেন বাজ ফেটে পড়লো। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আহান মঞ্জুশ্রীর কক্ষের দরজায় দাড়িয়ে আছে। আর ভেতরে মঞ্জুশ্রী বিছানায় শুয়ে ডায়েরী লিখছে। এখানে আহান খারাপ কিছুই করছিল না,কিন্তু বলাই ব‍্যাহুল এই কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। তবে আহান মাথা গরম না করে বলল,

– ছিঃ… প্রণিআপু, সামান্য কটি টাকার জন‍্যে তুমি এতো নিচু স্তরের কাজ করবে,এটি আমার কল্পনার বাইরে ছিল। তবে আগেই বলেছি আমাকে চিনতে তুমি বড্ড ভুল করে ফেলেছো।

কথাটা বলেই আহান খানিক পেছনে সরে তার হাতের একটা আঙুল প্রণিকার মোবাই ফোনটির দিকে ইসারায় করে ধরলো।আর অন‍্য হাতটির দুটো আঙ্গুল মুখে ঢুকিয়ে সজোরে একটা শিস বাজালো।প্রণিকা ঘটনা বুঝে ওঠার আগেই তার ঘরে খোলা জানালা দিয়ে আহানের পোষা ঈগলটি বিদ্যুৎ বেগে ঢুকে প্রণিকার হাত থেকে তার ফোনটি ছিনিয়ে নিল। এবং তার সাথে সাথেই আহান এক রকম লাফিয়ে পরে এক হাতে প্রণিকার মুখ চেপে ধরলো। প্রণিকা তখন হাজার ছটফট করলো, আহানের গায়ের জোরের কাছে সে ছিল অসহায়।

খুব অল্প সময়ের ব‍্যবধানে আহান তার প‍্যান্টের পকেট থেকে রুমাল বের করে প্রণিকার মুখে গুজেদিল। এবং প্রণিকার গলায় জড়ানো ওড়না দিয়ে তার হাত দুটি পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলল।

তখন আর এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হঠাৎ এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের ফলে শিকারী শিকারে পরিনত হয়ে প্রণিকার অবস্থা শোচনীয়। আহান তখন প্রণিকার ঘরের মাঝে এখানে ওখানে কি যেন খুঁজতে খুঁজতে বলল,

– প্রণিআপু এইভাবে ব্লাকমেইল করার আইডিয়া তোমায় কে দিল বলো তো?....ও দুঃখিত বলবে কি করে তোমার তো মুখ বাধা। একটু অপেক্ষা কর লক্ষ্মী আপুমণি এখুনি তোমার বাঁধন খুলে দিচ্ছি।

বলতে বলতে আহান একটি কাঁচি হাতে এগিয়ে এসে কাঁচির মাথাটা ছোঁয়াল প্রণিকার নাকের ডগায়।

– "মমমহঃ…"

প্রণিকা মুখবাধা অবস্থায় তার সর্বাঙ্গ মুচড়ে অদ্ভুত সরে গুঙিয়ে উঠলো। আর আহান ধিরে ধিরে কাঁচি ডগাটা নামিয়ে এনে প্রণিকার কামিজের গলার কাছটা বসিয়ে কামিজটা দুভাগে কাটতে কাটতে বলল,

– টাকার বিষয়ে আমি বিশেষ ভাবি না,তবে তুমি ঠিকই ধরেছ। খালামণির আদর আর মঞ্জুশ্রী ভাবিকে না দেখে আমি থাকতে পারবো না। তোমার এই পরিবারের এই দুই নারীর মায়াজালে বাধা পরে গেছি।

বলতে বলতে আহান প্রণিকার কামিজ ও সালোয়ার কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলতেই, প্রণিকার নগ্ননদেহের সৌন্দর্য আহানের চোখের সামনে উন্মোচিত হয়ে গেল। প্রণিকা কামিজের নিচে ব্রা পরে নি,আর সেই কারণেই তার দেহের প্রতিটি মোচড়ের সাথে উন্মুক্ত স্তন দুখানি মৃদুভাবে দোলা খাছিল। দৃশ্যটি সত্যিই দৃষ্টিনন্দনীয়। তবে আহানের হাতে বেশি সময় না থাকায়, সে প্রণিকার কালো প‍্যান্টিটা টেনে নামিয়ে ঝটপট কয়েকটি ছবি তুলে নিল।
তার ছবি তোলা হলে প্রণিকাকে দাঁড় করিয়ে আহান তার পেছনে দাঁড়ালো। এবং দুহাতের থাবায় প্রণিকার দুটি পরিপুষ্ট স্তন চেপেধরে তার কানে কানে বলল,

– আজ সন্ধ্যায় ওই ভিডিও টির সবগুলো কপি আমি চাই। নয়তো তুমি বুদ্ধিমতী, ভালো করেই জানো একটি ভুল সিদ্ধান্তের ফলাফল কতটা খারাপ ড়তে পারে।

এই বলে আহান প্রণিকার হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে ফাইল হাতে বেরিয়ে গেল। এদিকে প্রণিকা তার মুখের বাঁধন ও পায়ের বাঁধন খুলে মেঝেতে ধপ করে বসে দুহাতেরমুঠোয় নিজের মাথার চুল আঁকড়ে কাঁদতে লাগলো।

সে মুখ তুলে তাকালো মাথায় দুটো ঠোকর খেয়ে। এবং“ আআআঃ..”বলে চিৎকার করে পরক্ষণেই এক লাফে প্রায় তিন হাত পেছনে সরে গেল। আসলে আহান চলে গেলেও তার পোষা ঈগলটি তখনো প্রণিকার ঘরে বিছানার ওপড়ে বসে ছিল। এখন আহান চলে যেতেই বোধখরি সে প্রণিকা ফোনটির কি করবে তা বুঝে উঠতে পারছিল না। তবে এবার প্রণিকার চিৎকার শুনে সে প্রণিকার ফোন ফেলে রেখে জানারার ওপড়ে গিয়ে বসলো।


সন্ধ্যায় মজুমদার বাড়িতে বসার ঘরে সবাই এক সাথে বসে আছে। শুভদ্রা দেবী গল্প বলছিলেন,তার দুই পাশে প্রভা ও প্রমিলা বসে ছিল। আর তাদের অপর পাশে মেঝেতে আহান বসে অফিসের একটা ফাইল দেখছিল। তার পাশেই সোফায় বসেছিল মঞ্জুশ্রী ও প্রণিকা। প্রণিকা আড় চোখে বার বার আহানের দিকে চাইলেও আহান তার দিকে একবারও চোখ ফিরিয়ে দেখলো না।

একসময় হঠাৎ আহান উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

– খালামণি প্রণি আপু আমার ওখানে যেতে পারে ঘন্টা খানেক জন‍্যে?

শুভদ্রা দেবী কিছু বলবার আগেই পাশ থেকে মঞ্জুশ্রী প্রশ্ন করলো,

– কেন?

– কিছু কাজ ছিল ভাবি, তাই।

– কই এতদিন তো কাজের জন্যে ও বাড়িতে যেতে হয়নি, আজ হঠাৎ এমন কি কাজ পরলো যে ওবাড়িতে যেতে হচ্ছে?


এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য আহানকে দিতে হলো না। আহান কিছু বলার আগেই শুভদ্রা দেবী বললেন,

– তা যাক না বৌমা, ও আমাদের ঘরের ছেলে।ওর সাথে গৈল অসুবিধার কি আছে?


এর বেশি কিছু আর বলতে হলো না।আহান বাড়িতে ফেরার খানিক পরেই প্রণিকা গোলাপ ভিয়ায় গিয়ে উঠলো। এবং তার সাথে সাথেই হলো লোডশেডিং। আহান এখনো কোন রকম জেনারেটর বসায়নি এই বাড়িতে,তাই অগত্যা মোমবাতি জ্বালিয়ে সে ফাইগুলো চেকআপ করতে বসে ছিল। তার মধ্যে কতগুলো কাপড়ের ডিজাইন ছড়িয়ে আছে। এই ডিজাইনা সিলেকশনের কাজটি আহান প্রণিকার হাতে দিয়ে ছিল গত সপ্তাহে। কিন্তু সে কোন কাজেই ঠিক মতো করে নি। তার কারণ,প্রণিকা ভেবেই রেখেছিল এই ব্লাকমেইল আইডিয়াটি বেশ ভালোভাবেই সফল হবে। এমন উল্টো চাল পরবছ সে নিজেও বুঝে উঠতে পারেনি।

ঘরে ঢুকে প্রণিকা নতমস্তকে দাড়িয়ে ভাবছিল তার সাথে ভবিষ্যতে ঠিক কি হতে চলেছে। এমন সময় আহান ধমকে উঠে বলল,

– একটা কাজও হয়নি তঝমার দ্বারা। মন চাইছে এখুনি গিয়ে আংকেলকে বলি তোমার ঘাড়ে ধরে বিয়ের পিরিতে বসিয়ে দিতে।...কি হলো! দাড়িয়ে আছো কেন? বুকের ওড়নাটা ফেলে দিয়ে এদিকে এসো।

প্রণিকা ধমক খেয়ে কাঁদ কাঁদ মুখ করে বলল,

– লক্ষ্মী দাদা আমার এবারের মত...

– চোপ! আর একটা কথা বলে এখুনি ছবি গুলো আংকেলের মোবাইলে পাঠিয়ে দেব।তখন ঠেলা সামলাতে পারবে তো।

কথাটা বলেই আহান মোবাইল নিয়ে কি যেন করতে লাগলো। এটি দেখা মাত্র প্রণিকার গলা শুকিয়ে এলো, সে জলদি বুকের ওড়না মেঝেতে ফেলে আহানের পায়ে গিয়ে পরলো। এবং আহানের দুপা চেপেধরে চোখের জল ছেড়ে বলল,

– প্লিজ, আহান বাবা মেরেই ফেলবে আমাকে এমনিটি করোনা... আ..আআ.আস্তে..

আহান প্রণিকার কোন কথায় কান না দিয়ে তার হাত গলিয়ে পাতলা কামিজটা খুলে এনে মেঝেতে ছুরে মারলো।এবং প্রণিকার মোটা বেণীটা টেনে ধরে তাকে টেবিলের তলায় বসিয়ে তার প‍্যান্টের চেইন ও আন্ডারওয়্যার নামিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রণিকার চোখের সামনে আহানের উত্তেজিত কামদন্ডিটি লাফালাফি করতে লাগলো।

প্রণিকার অল্পক্ষণেই বুঝে নিল পরবর্তীতে কি হতে চলেছে।এবং সেই সাথে এটিও বুঝে নিয়েছিল এই মুহুর্তে প্রতিবাদ করলে বিশেষ লাভ কিছুই হবে না। তাই আহান যখন তার উত্তেজিত লিঙ্গটি তার ঠোটে ছোয়াল, প্রণিকা কোন বাধা না দিয়ে সেটিকে নিজে উষ্ণ জিভের দ্বারা আলিঙ্গন করতে লাগলো।

প্রণিকার চোষণ উপভোগ করতে করতেই আহান মোবাইল বের করে তার ভিডিও ধারণ করছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সে মোবাইল রেখে প্রণিকার মাথাটা দুহাতে তার কামদন্ডে চেপেধরে,প্রণিকার কন্ঠনালীল ভেতরে তার কামদন্ডের সবটুকু কামরস ঢেলে দিল। প্রণিকার দুই হাতে আহানের দুই হাটু আঁকড়ে চোখ বুঝে অনুভব করলো, তার কন্ঠনালী দিয়ে নেমে যাওয়া উতপ্ত তরল বীর্যের ধারা। এবং মনে মনে ভাবতে লাগলো ভবিষ্যতে তার জন্যে আর কি অপেক্ষা করছে!!

।।।প্রথম পার্ট এখানেই সমাপ্ত।।। 
।।।গল্পটা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে,তাই দ্বিতীয় আর কোন পার্ট আসবে না।‌‌।।
[+] 5 users Like বহুরূপী's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গল্পের খাতা - by buddy12 - 18-08-2024, 10:03 PM
RE: গল্পের খাতা - by বহুরূপী - 20-08-2024, 10:04 PM
RE: গল্পের খাতা - by zahira - 10-11-2024, 01:16 PM



Users browsing this thread: 10 Guest(s)