12-07-2024, 01:56 PM
গোলাপ বাগানে গন্ডগোল
পর্ব ৫
ক্লান্ত পাতাদুটো ভারী হয়ে নেমে আসে চোখের ওপর। চারদিকে চেপে বসে অন্ধকার। ঘটনার শুরু বৃষ্টির আগে।অভি বাড়ির বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে জোনাকি পোকা দেখছিল।তারপর ঝোপের আড়ালে এক নাম্বার সারতে গিয়ে,একটা ঘোড়ার গাড়িতে চেনা মুখ দেখে থমকে যায় কিছুটা।কৌতূহল বশত কিছু টা এগুলো লেও,ঘোড়ার গাড়ির সাথে তার পারার কথা নয়।গাড়িটি দৃষ্টির আঁড়াল হতেই অন্ধকারে একরাশ ভয় এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। তারপর হঠাৎ বৃষ্টিপাত।অভির ভূতের ভয় নেই, অন্ধকারে রাস্তায় চোখ দুটোর ঠিক পাতার নিচে ওদের ছায়া। নড়েচড়ে উঠে আসে। সুতরাং বাড়ির কাছাকাছি এসেই অভি অজ্ঞান।
জ্ঞান ফেরার পরে অভি তার ঘরে বিছানায়।চারদিকে চেয়ে দেখে উদয়দা ও তার বৌমণি ছাড়া আর কেউ নেই। অভির কিছুটা লজ্জায় লাগছিল তার ভূতের দূর্বলতা টা বৌমণি না জেনে ফেলে। অভি কিছুটা সুস্থ হলেই উদয় জিগ্যেস করল,
– বাইরে কি করছিলি?
– গোলাপ কুঠিরের গারোয়ানকে দেখলাম আআআ...
অভির উত্তর সম্পূর্ণ করার আগেই বৌমণি অভির ডান কানটা টেনে ধরে বলল,
– এমন যদি আবারও হয় তো সোজা বাবাকে বলব,দুই বাদরের গোয়েন্দাগিরি পিটিয়ে বের করে দেবে।
যাই হোক রাতে আর কথা হলো না।অবন্তিকা অভিকে আগলে রইলো সারা রাত। উদয় নিচে নেমে গেল। বৈঠক ঘরে কিছুক্ষণ কাটিয়ে, তারপর বৃষ্টি কমলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এল রাস্তায়।
////
যখন ঘুম ভাঙলো তখন ভোরের আলো ফুটেছে মাত্র।উঠেই দেখি বৌমণির বুকে মুখ গুজে শুয়ে আছি।ঘুম থেকে উঠেই বৌমণির মলিন মুখ দেখে কিছুটা লজ্জায় লাগলো,বেচারী আমার জন্যে হয়তো ঘুমায়নি।
সকালে উদয়দাকে না পেয়ে ছাদে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটিয়ে দেবার কথা ভাবছিলাম,এমন সময় প্রীতম বাবু এলেন,বাবার সাথে কথা বলার পরে আমরা সবাই গোলাপ কুঠিরের উদেশ্য রওনা দিলাম।
গোলাপ কুঠিরে এমনটা দেখ ভাবিনি। বাড়ির সামনে রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আর তাতে প্রীতম বাবুর ছেলে সুমিত ও একজন বিদেশি লোক বসে আছে। আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকে পরলাম এক দৌড়ে। বারান্দায় উদয়দা ও থানার বড় বাবু বসে কথা বলছিলেন,
– এমনটা বলবেন না, আপনি সঠিক সময়ে না এলে চিঠির কথাটা কিন্তু সত্যিই ফলে যেত।
– উঁহু্. আমার জন্যে নয়,আপনি যদি সময় মতো ফোন না করতেন তবে আমার আর আশা হতো না। তবে কি জানেন,এর পর থেকে আপনার শখের গোয়েন্দাগিরির নিশ্চয়ই ইতি ঘটবে।
এই প্রশ্নের উত্তরে উদয়দা কোন কথা না বলে অল্প হাসলো।আসল ঘটনা পরে জানতে পারলাম। গতকাল রাতে উদয়দা গোলাপ কুঠিরে এসে ছিল সব ঠিকঠাক কিনা দেখার জন্যে।কিন্তু এখানে এসে যখন দেখে বাড়ি গেইট খোলা ও দারোয়ান নেই তখনই বুঝে নেয় কোন একটা গন্ডগোল নিশ্চয়ই হয়েছে।
আসলে প্রীতম বাবুর ছেলে সুমিত জানতো যে সে জুয়াড়ি জানার পর তার কোন ভাবেই কাদম্বিনীকে তার হাতে তুলে দেবে না।তার প্রথম প্ল্যান টা সহজ ছিল। চিঠি দিয়ে কাদম্বিনী কে ভয় দেখি তার মনকে দূর্বল করে বিয়ের রাজি করানো। তার আইডিয়া কাজে লাগলেও চিঠিটা তার বাবার হাতে পরায় পুরো ব্যাপারটা ঊল্টো দিকে মোর নিল। তার বাবা যে এতো অল্পেই এতটা বিচলিত হয়ে পরবে সুমিত তা বুঝতে পারেনি।তারপর উদয়দার আগমনে সে নিজেই কিছুটা ঘাবড়ে যায়।এবং তার পরের দিন কলকাতা ফিরে সোজা অনিমেষের বাড়িতে গিয়ে তর ওপড়ে দোষ চাপানো বন্ধবস্ত করে। অবশ্য এতে তার বিয়ে ভাঙার রাগটারও একটা সঠিক ব্যবহার হয়েছে।
আর বিদেশি লোকটা প্রীতম বাবু বন্ধুর সাথে পার্টিতে এসেছিল। তার হাতেই চিঠিটা পাচার হয়েছিল।এবং গতকাল রাতে উদয়দা না এলে কাদম্বিনী দেবীর গোলন্ডে ক্রসটি সহ কাদম্বিনী দেবী নিজেও পাচার হতেন। সুমিত বাবু টাকার প্রতি বিশেষ নজর না থাকলেও কাদম্বিনী কে ছাড়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর কাদম্বিনী নিজেও চায়নি তার জন্যে বাড়ির অন্য কারো ক্ষতি হোক।
তবে বাড়ির গারোয়ান কে থানায় নেওয়া হলো না।তার কাজ ছিল শুধু তাদের নদীঘাটে পৌঁছে দেওয়া তাও আদেশ কাদম্বিনীর।সুতরাং তাকে দোষ দেওয়া যায় না। পুলিশ যাবার পরে গোলাপ বাগানের পাশে আম গাছের নিছে বসে আমি উদয়দাকে বললাম,
– কাদম্বিনী দেবী চাইলে পুলিশের নিতেই পারতো তাই নয় কি?
– তার মনে কি ছিল বলা সম্ভব নয়।তবে আমার মনে হয় তিনি ভেবেছিলেন বিয়ের পর হয়তো সুমিত বাবু ভালো হয়ে যাবে।
যাই হোক এরপর উদয়দা উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
– আয় তোকে গাছে চরা শেখাই ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
আমিও এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম।উদয়দার কাছে এর আগে সাতার শিখেছি,গাছে চড়া নিশ্চয়ই কঠিন হবে না! অবশ্য পরে যদিও বুঝেছিলাম ওতটা সহজও নয়।
এখানেই ইতি টানবো,প্রথমেই বলেছি গল্পটা বিশেষ ভালো হবে না।তবে হয়তো পরবর্তীতে ভালো হলেও হতে পারে,দেখা যাক কি হয়,আবার হয় তো নতুন কোন ঘটনা নিয়ে অভি ও উদয়দা ফিরবে,কিন্তু এখন বিদায়।
পর্ব ৫
ক্লান্ত পাতাদুটো ভারী হয়ে নেমে আসে চোখের ওপর। চারদিকে চেপে বসে অন্ধকার। ঘটনার শুরু বৃষ্টির আগে।অভি বাড়ির বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে জোনাকি পোকা দেখছিল।তারপর ঝোপের আড়ালে এক নাম্বার সারতে গিয়ে,একটা ঘোড়ার গাড়িতে চেনা মুখ দেখে থমকে যায় কিছুটা।কৌতূহল বশত কিছু টা এগুলো লেও,ঘোড়ার গাড়ির সাথে তার পারার কথা নয়।গাড়িটি দৃষ্টির আঁড়াল হতেই অন্ধকারে একরাশ ভয় এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। তারপর হঠাৎ বৃষ্টিপাত।অভির ভূতের ভয় নেই, অন্ধকারে রাস্তায় চোখ দুটোর ঠিক পাতার নিচে ওদের ছায়া। নড়েচড়ে উঠে আসে। সুতরাং বাড়ির কাছাকাছি এসেই অভি অজ্ঞান।
জ্ঞান ফেরার পরে অভি তার ঘরে বিছানায়।চারদিকে চেয়ে দেখে উদয়দা ও তার বৌমণি ছাড়া আর কেউ নেই। অভির কিছুটা লজ্জায় লাগছিল তার ভূতের দূর্বলতা টা বৌমণি না জেনে ফেলে। অভি কিছুটা সুস্থ হলেই উদয় জিগ্যেস করল,
– বাইরে কি করছিলি?
– গোলাপ কুঠিরের গারোয়ানকে দেখলাম আআআ...
অভির উত্তর সম্পূর্ণ করার আগেই বৌমণি অভির ডান কানটা টেনে ধরে বলল,
– এমন যদি আবারও হয় তো সোজা বাবাকে বলব,দুই বাদরের গোয়েন্দাগিরি পিটিয়ে বের করে দেবে।
যাই হোক রাতে আর কথা হলো না।অবন্তিকা অভিকে আগলে রইলো সারা রাত। উদয় নিচে নেমে গেল। বৈঠক ঘরে কিছুক্ষণ কাটিয়ে, তারপর বৃষ্টি কমলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এল রাস্তায়।
////
যখন ঘুম ভাঙলো তখন ভোরের আলো ফুটেছে মাত্র।উঠেই দেখি বৌমণির বুকে মুখ গুজে শুয়ে আছি।ঘুম থেকে উঠেই বৌমণির মলিন মুখ দেখে কিছুটা লজ্জায় লাগলো,বেচারী আমার জন্যে হয়তো ঘুমায়নি।
সকালে উদয়দাকে না পেয়ে ছাদে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটিয়ে দেবার কথা ভাবছিলাম,এমন সময় প্রীতম বাবু এলেন,বাবার সাথে কথা বলার পরে আমরা সবাই গোলাপ কুঠিরের উদেশ্য রওনা দিলাম।
গোলাপ কুঠিরে এমনটা দেখ ভাবিনি। বাড়ির সামনে রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আর তাতে প্রীতম বাবুর ছেলে সুমিত ও একজন বিদেশি লোক বসে আছে। আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকে পরলাম এক দৌড়ে। বারান্দায় উদয়দা ও থানার বড় বাবু বসে কথা বলছিলেন,
– এমনটা বলবেন না, আপনি সঠিক সময়ে না এলে চিঠির কথাটা কিন্তু সত্যিই ফলে যেত।
– উঁহু্. আমার জন্যে নয়,আপনি যদি সময় মতো ফোন না করতেন তবে আমার আর আশা হতো না। তবে কি জানেন,এর পর থেকে আপনার শখের গোয়েন্দাগিরির নিশ্চয়ই ইতি ঘটবে।
এই প্রশ্নের উত্তরে উদয়দা কোন কথা না বলে অল্প হাসলো।আসল ঘটনা পরে জানতে পারলাম। গতকাল রাতে উদয়দা গোলাপ কুঠিরে এসে ছিল সব ঠিকঠাক কিনা দেখার জন্যে।কিন্তু এখানে এসে যখন দেখে বাড়ি গেইট খোলা ও দারোয়ান নেই তখনই বুঝে নেয় কোন একটা গন্ডগোল নিশ্চয়ই হয়েছে।
আসলে প্রীতম বাবুর ছেলে সুমিত জানতো যে সে জুয়াড়ি জানার পর তার কোন ভাবেই কাদম্বিনীকে তার হাতে তুলে দেবে না।তার প্রথম প্ল্যান টা সহজ ছিল। চিঠি দিয়ে কাদম্বিনী কে ভয় দেখি তার মনকে দূর্বল করে বিয়ের রাজি করানো। তার আইডিয়া কাজে লাগলেও চিঠিটা তার বাবার হাতে পরায় পুরো ব্যাপারটা ঊল্টো দিকে মোর নিল। তার বাবা যে এতো অল্পেই এতটা বিচলিত হয়ে পরবে সুমিত তা বুঝতে পারেনি।তারপর উদয়দার আগমনে সে নিজেই কিছুটা ঘাবড়ে যায়।এবং তার পরের দিন কলকাতা ফিরে সোজা অনিমেষের বাড়িতে গিয়ে তর ওপড়ে দোষ চাপানো বন্ধবস্ত করে। অবশ্য এতে তার বিয়ে ভাঙার রাগটারও একটা সঠিক ব্যবহার হয়েছে।
আর বিদেশি লোকটা প্রীতম বাবু বন্ধুর সাথে পার্টিতে এসেছিল। তার হাতেই চিঠিটা পাচার হয়েছিল।এবং গতকাল রাতে উদয়দা না এলে কাদম্বিনী দেবীর গোলন্ডে ক্রসটি সহ কাদম্বিনী দেবী নিজেও পাচার হতেন। সুমিত বাবু টাকার প্রতি বিশেষ নজর না থাকলেও কাদম্বিনী কে ছাড়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর কাদম্বিনী নিজেও চায়নি তার জন্যে বাড়ির অন্য কারো ক্ষতি হোক।
তবে বাড়ির গারোয়ান কে থানায় নেওয়া হলো না।তার কাজ ছিল শুধু তাদের নদীঘাটে পৌঁছে দেওয়া তাও আদেশ কাদম্বিনীর।সুতরাং তাকে দোষ দেওয়া যায় না। পুলিশ যাবার পরে গোলাপ বাগানের পাশে আম গাছের নিছে বসে আমি উদয়দাকে বললাম,
– কাদম্বিনী দেবী চাইলে পুলিশের নিতেই পারতো তাই নয় কি?
– তার মনে কি ছিল বলা সম্ভব নয়।তবে আমার মনে হয় তিনি ভেবেছিলেন বিয়ের পর হয়তো সুমিত বাবু ভালো হয়ে যাবে।
যাই হোক এরপর উদয়দা উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
– আয় তোকে গাছে চরা শেখাই ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
আমিও এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম।উদয়দার কাছে এর আগে সাতার শিখেছি,গাছে চড়া নিশ্চয়ই কঠিন হবে না! অবশ্য পরে যদিও বুঝেছিলাম ওতটা সহজও নয়।
এখানেই ইতি টানবো,প্রথমেই বলেছি গল্পটা বিশেষ ভালো হবে না।তবে হয়তো পরবর্তীতে ভালো হলেও হতে পারে,দেখা যাক কি হয়,আবার হয় তো নতুন কোন ঘটনা নিয়ে অভি ও উদয়দা ফিরবে,কিন্তু এখন বিদায়।
সমাপ্ত