Poll: সহজ একটা প্রশ্ন করি,গল্প কেমন লাগছে?
You do not have permission to vote in this poll.
ভালো
90.16%
55 90.16%
খারাপ
1.64%
1 1.64%
সাধারণ, (কোন মতে চলে আর কি)
8.20%
5 8.20%
Total 61 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.32 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL ✒️গল্পের খাতা ✒️﴾প্রেমিকা ও বান্ধবী সিরিজ-গল্প নং১-মেইবি নেক্সট ফ্রাইডে﴿
#49
গোলাপ বাগানে গন্ডগোল

পর্ব ২

গোলাপ কুঠির থেকে বাড়ি এসেই উদয়দা সটান ঢুকলো রান্নাঘরে।সেখানে ঢুকেই উদয়দা বৌমণির চোখ দুটি পেছন থেকে হাত দিয়ে চেপেধরলো। এখানে বর্ণনা টা বলে দিতে হয় আগে,যেন এই বিশেষ নারীটির চিত্র সকল পাঠকদের কল্পনায় কিছুটা পরিষ্কার হয়।


বৌমণির দেহের বর্ণ মাজা তামার ফলকের মত উজ্জ্বল। একটি তামার ফলক মেজে তার সূর্যালোকের দিকে ধরলে যেমন চিকচিক করে অনেকটা তেমনি।তার কাজলে রাঙা দুটি চোখে যেন সব সময় ধীকি ধীকি বিদ্যুৎ খেলা করে। রেগে গেল তার পাকা লঙ্কার মতো ওষ্ঠাধর ফুলিয়ে কথা বলতে দেখলে,যে কোন পুরুষের কামনার সাগরে টেউ ওঠা অস্বাভাবিক নয়। সেই সাথে বৌমণির চিবুক ও ঠোঁটের মাঝামাঝি মুখের বাঁ পাশে একটি তিল তাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। তার শাড়ির আঁচল ঠেলে পরিপক্ক যৌবনের আভা যেন আগুনের দীপ্তির মত বিচ্ছুরিত হয়ে আকর্ষণকরতে চায় সবাইকে।

– উফফ্..চোখ ছাড়ো ঠাকুরপো

বৌমণি রান্না রেখে দুই হাতে উদয়দার হাত দুটি তার চোখ থেকে সরিয়ে দিল। তারপর দুই হাতে উদয়দাকে ঠেলে সরিয়ে দিতে লাগলো।

– আ-আরে কর কি! পড়ে যাব যে

উদয়দা বৌমণির হালকা ঠেলায় বৌমণির কোমড় জড়িয়ে দুই পা পিছিয়ে পেছনে দেওয়ালে ঠেসদিল। এতে করে বৌমণি এক রকম আঁছড়ে পরলো উদয়দার বুকের ওপরে।সেই সাথে উদয়দা বৌমণিকে তার হাতের বাঁধনে আটকা নিল।

বৌমণি কটাক্ষ ভরা দৃষ্টিতে উদয়দার দিকে তাকালো। উদয়দা হাসি হাসি মুখে বলল,

– একটু হাসো না বৌমণি! মুখটা ওমন বাংলার পাঁচের মত হয়ে রয়েছে কেন শুনি! দাদা বকেচে বুঝি?

বৌমণি কোন কথা না বলে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আবারও রান্নায় মন দিল। এই ফাঁকে উদয়দা আমাকে বলল,

– অভি যা ত,ভিতরে গিয়ে দেখে আয় বাড়ির কার কি অবস্থান।

আমি কিছুটা দমে গেলাম।সত্যি বলতে বৌমণিকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না।বৌমণিকে আমারও বেশ ভালো লাগে।আমাকে একবার পাড়ার এক ঠাকুমা জিগ্যেস করেছিল,আমার কেমন বউ পছন্দ।তখন আমি বলিলাম বৌমণির মত বউ হলেই আমার চলবে।পরে বুঝেছিলাম কথাটা বলা ঠিক হয়নি।কারণ এর জন্য পাড়ার কাকিমার আমাকে নিয়ে অনেক লজ্জায় ফেলেছে বৌমণিকে।তারপরও বৌমণি আমায় বেশ স্নেহ করে। কিন্তু কি আর করার উদয়দার আদেশ, অগত্যা যেতে হল।

রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বৈঠক ঘরে কাছে আসতেই দেখলাম বাবা ফিরেছে,এবং নূপুরদির সাথে দাবা খেলতে বসেছে। বড়দাও সোফার একপাশে বসে কিসের কাগজপত্র দেখছে। দাবাতে আমার বিশেষ আগ্রহ নেই বলেই এগিয়ে গেলাম মায়ের ঘরের দিকে। ঘরের সামনে এসেই দেখি মা বিছানায় শুয়ে।বুঝলাম শড়িলটা আবারও বোধকরি খারাপ করল। আর কিছু দেখার ছিল না তাই সোজা উঠলাম ছাদে।কারণ উদয়দাকে এই মুহুর্তে বিরক্ত করা ঠিক হবে না।তাছাড়া বৌমণিরও মন খারাপ।

ছাদে পায়চারী করতে করতে ভাবছি গোলাপ কুঠিরের সেই মেয়েটির কথা।আমি ঠিকই ধরেছি,মেয়েটির মা একজন ল‍্যাটিন আমেরিকান। গোলাপ কুঠিরের দোতলার সিঁড়ির শেষে বেশ বড় সর একটা ছবি আছে তার। হাতে আঁকা ছবি।তার চেয়েও বড়কথা তার নিজের আঁকা। বছর দুই তিন আগে কাদম্বিনী মা বাবা একসাথে গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা পরে। তার পর থেকে প্রীতম বাবু মানে তাদের ম‍্যানেজার তাদের দেখা শোনা করছে।কাদম্বিনীর একটি ছোট্ট বোন আছে। মেয়েটির নাম লীলা,তার মায়ের রাখা নাম।এছাড়া চশমা পড়া যে লোখটিকে দেখলাম।সে প্রীতম বাবুর একমাত্র ছেলেনাম সুমিত।থাকে কলকাতায়,দুদিন হল এসেছে।

এখানে একটি বিষয় লক্ষ্য করবার মতো। কাদম্বিনীর পিতা রঞ্জন সিং কাদম্বিনী জন্মের পর প্রীতম বাবুকে বলেন, তার ছেলের সাথে কাদম্বিনীর বিয়ে হবে।তিনি ছিলেন রঞ্জন সিং এর ছেলেবেলার বন্ধু।কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারণে প্রীতম বাবু কয়েকদিন আগে সেই ইচ্ছে ত‍্যাগ করেন। কারণটি যদিও জানা যায়নি,তবুও বোঝা যায় তার পুত্রটি ঠিক সোনার টুকরো নয়,কিছুটা গোলমেলে।

এবার আসি বাড়ির বাকিদের নিয়ে। গোলাপ কুঠিরের দুইজন দাড়োয়ান লালু ও রহিম এখানকার নয় তবে তারা কাজে আছে প্রায় দশ বছর ধরে।এছাড়া তাদের গারোয়ান রামু এখানকার এক বস্তিতে থাকে।সে প্রতি সকালে বাগানে ভাড়াটে কর্মচারীদের সাথে আসে। এছাড়া তাদের রাঁধুনি কমলা নিচ তলায় একটা রুমে থাকে।প্রীতম বাবুর স্ত্রীর সাথে দেখা হয়নি এমনকি তার ছেলের সাথেও নয়। অবশ্য আমার হয়েছে আর খুব খারাপ ভাবেই হয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই।তবে গতকাল আবারও গোলাপ কুঠির।

বেশ খানিকটা সময় ছাদে কাটিয়ে যখন নিচে নামলাম,তখন বৈঠক ঘরে গরম গরম পাকোড়া খাওয়া হচ্ছে।আমি এগিয়ে গিয়ে এক-আধটু মুখে পুড়ে ও দুটো হাতে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাড়িটা বেশ বড়সড়ই বলা চলে। সামনে পেছনে বড় বড় নানান রকম গাছ। ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ বেশ পেচ্ছাপের বেগ হওয়ায় একটা গাছের আঁড়ালে দাঁড়িয়ে কাজ সারতে লাগলাম।এখানে কেই বা দেখছে আমায়। তা যাই হোক কাজ হলে যখন আবার হাটা লাগাবো, ঠিক তখনি চোখ পড়লো দিদির ঘরের খোলা জানালায়। কামেনীদি কখন যেন খেলা ছেরে ঘরে ঢুকেছে।আর সে একা নয় সাথে উদয়দা।

এখানে বলে রাখা ভালো যে আমাদের পরিবারে একমাত্র আমি ছাড়া আর কেউ মায়ের গায়ের রঙ পায়নি। তাই বলে কামেনী দিদিকে কালো বলছি না।তবে ওত ফর্সাও নয়। কামেনীদি আর পাঁচটি সাধারণ বাঙ্গালী মেয়েদের মত। তবে মায়ের গায়ের রঙ না পেলেও মায়ের দেহের লাবণ্য কামেনীদি সবটুকুই পেয়েছে। উঁচু বুক ,ভারি নিতম্ব, বড় বড় টানা টানা চোখ আর এক রাশ কোকড়ানো লম্বা লম্বা চুল,কোনটাই বাত পরেনি। তবে ওসব পরে আরো বলা যাবে না হয়,কিন্তু এখন এই ব‍্যপারখানা দেখা দরকার।

আমি ধিরে ধিরে আরো কিছু টা এগিয়ে আর একটা গাছে পেছনে দাঁড়ালাম।উঁকি দিয়ে দেখলাম ভেতরে বিছানায় উদয়দা কামেনীদি কে কোলে বসিয়ে এক হাতে ব্লাউজের ওপড়দিয়ে দিদির ডান মাই টিপছে।আর বাঁ হাতে একটা বই নিয়ে কি সব যেন বলছে।

কামেনীদির শাড়ির আঁচলটা বিছানার এক পাশে পরে আছে।আর দিদির লম্বা বেণীটা বুকের ওপড়দিয়ে এসে উন্মুক্ত পেটের সুগভীর নাভির কাছে এসে কোলে লুটিয়ে পরেছে। কথা বলতে বলতে উদয়দা মাঝে মধ্যেই দিদির বুকে কি যেন ধরে মুচড়ে দিচ্ছিল। আর এতেই কামেনীদি কেঁপে উঠে ছটফট করছিল। এদিকে আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না।বৌমণির সাথে উদয়দাকে দেখেছি এক দুবার, কিন্তু দিদির সাথে এই প্রথম। হঠাৎ দেখলাম উদয়দা কেমন রেগে গেল। তার হাতের বইটা কামেনীদির কোলে রেখে দুই হাতে দিদির ব্লাউজের ওপড় দিয়ে কি যেন ধরে রেডিওর ভলিউম বাড়ানো- কমানোর মতো মুচড়ে দিতে লাগলো। আমি এতখনে বুঝলাম উদয়দা কি মুচড়ে দিচ্ছে,দিদির মাইয়ের বোঁটা। মানে যেটা দিয়ে মেয়েদের দুধ বের হয়।ছোট কালে কত খেয়েছি মায়ে দুধ। কিন্তু মা তো কখোনো দিদির মতো এমন ছটফট করেনি। উদয়দা তো শুধু মুচড়ে দিচ্ছে,আর আমি তো রীতিমতো কামড় বসিয়ে দিতাম।

উদয়দা দিদির মাই চটকাতে চটকাতে কি যে বলছে কিছুই বুঝতে পারছি না।তাই ভাবনাল আর একটু এগুলে মন্দ হয় না। আমি আর একটু এগিয়ে গিয়ে আর একটা গাছের পেছনে চলে এলাম। এখান থেকে সরাসরি সব আর ভালো দেখা গেলেও কোন আওয়াজ কানে এল না।উল্টে ভয় হতে লাগলো ধরা পরে যাওয়ার।তবে ধরা পরলেও উদয়দা আমাকে কিছুই বলবে না বোধ হয়। উদয়দা ও আমার সম্পর্ক আলাদা।

এবারে জানালায় চোখ রেখেই দেখলাল দিদি বই মুখের কাছে নিয়ে পড়ছে আর উদয়দা কামেনীদির ঘাড়ে,গলায়,কাঁধে চুমু খাচ্ছে। মাঝে মাঝে দিদির পেটের মাংস খাঁমচে দিদিকে কোমর নাড়াতে বাধ‍্য করছে।আর কামেনীদিও বাধ্য মেয়ের মত বই দুহাতে মুখের ধরে উদয়দার কোলে তার নিতম্ব ঘষে চলেছে।

– অভি! অভি!!

হঠাৎ বাবার গলার আওয়াজ।যেতে ইচ্ছে করচিল না,কিন্তু কি আর করার এখান থেকে সারা দেওয়ায় যাবে না,অগত্যা যেতেই হল।

/////

বাবার সাথে বেড়িয়ে একে বারে সন্ধ্যার পরে ফিরলাম।বাজার থেকে কিছু জিনিস আনার ছিল। তবে আমি পুরোটা সময় আজকে দিনটির কথা ভাবছিলাম। এখন ছাড়া পেয়ে এক ছুটে ছাদে উঠে এলাম।

উদয়দা ছাদে দাঁড়িয়ে সিগারেটের টেনে ধোয়া ছাড়ছে আর কপালে বাম হাতের মাঝের আঙ্গুলের ডগা দিয়ে টোকা দিচ্ছে। আমি এগিয়ে গিয় বললাম,

– উদয়দা ভেবে কিছু পেলে?

আমি ভেবেছিলাম এমন হঠাৎ প্রশ্নে উদয়দা চমকে যাবে ।কিন্তু সেটি হল না। উদয়দা একি ভাবে দাঁড়িয়ে বলল,

– কিছু তো পেয়েছি,আগে বল তুই কি জানতে চাস

আমি কোন রকম দ্বিধা না করে বললাম,

– চিঠিটা কে দিল? এবং কাকে দিল?

– চিঠিটা কাকে দিয়েছে তা নিশ্চিত।তবে কে বা কারা দিয়েছে সেটা এখনি জানা যাচ্ছে না।

– আমার তো মনে হয় বাইড়ে থেকে যারা কাজ করতে আসে তাদের মধ্যে কেউ হবে। তোমার কি মনে?

উদয়দা এবার আমার দিকে চেয়ে একটু হেসে বলল,

– শব্দটা ল‍্যাটিন, এক গাদা বস্তির অশিক্ষিত লোক এই ভাষা জানবে বলে তোর মনে হয়? তাছাড়া ভুলে যাসনে অফিস ঘর তালা বন্ধ থাকে সব সময় আর তার চাবি মাত্র দুটো।

– তাহলে কি চেনা কেউ?

– অবশ্যই চেনা কেউ।

– এতটা নিশ্চিত ভাবে বলছো কিভাবে।

উদয়দা আর একটা টান দিয়ে সিগারেট ফেলে বলল,

– কারণ চিঠিটা ল‍্যাটিন ভাষা ছিল তাই।

আমি বুঝে পেলাম না এতে বোঝার কি আছে। পৃথিবীতে ল‍্যাটিন ভাষা জানা তো অনেক লোকই আছে। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে উদয়দার মুখের দিকে তাকালাম। উদয়দা আমার মুখ দেখে আবার বলতে লাগলো,

– দেখ কাদম্বিনীর মা ল‍্যাটিন আমেরিকার বাসিন্দা। সেই সূত্রে কাদম্বিনী নিশ্চয়ই ল‍্যাটিন ভাষা শিখেছে।কিন্তু প্রীতম বাবুর ল‍্যাটিন ভাষায় কোন জ্ঞান নেই। আর এখানে দেখার বিষ‍য় এই যে চিঠিটা দিয়েছে সে জানতো কাদম্বিনী প্রতিদিন সকালে অফিস ঘর পরিষ্কার করতে ঢোকে।

– এতে কি বোঝা গেল?

উদয়দা আমার মাথায় একটা চাটি মেরে বলল,

– আরে গাধা, হুমকি যদি তুই বুঝতেই না পারিস তবে হুমকি দিয়ে লাভটা কি। কিন্তু প্রশ্ন হল কাদম্বিনী কেন প্রীতম বাবুকে বলল না চিঠির কথা।

এবার আমি বললাম,

– মেয়েটি বেশ সহজ সরল,তাই মনে হয় কেউকে চিন্তায় ফেলতে চায়নি।

– হতে পারে,প্রীতম বাবুর ছেলেটার সম্পর্কে জানাটা প্রয়োজন এবং তার স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা দরকার।

– তার মানে কাল সকালে গোলাপ কুঠির?

– এছাড়া আর উপায় কি

এরপর আর কথা হলো না, খানিকক্ষণ ছাদে থেকে আমরা নিচে নেমে এলাম। বাকি সময় কাটলো সবাই মিলে তাশ খেলে। তারপর রাতের খাবার খেয়ে ছাদে উঠে দেখলাম উদয়দা নেই। খুঁজতে খুঁজতে উদয়দাকে পেলাম নিচের তলায় বাবার ঘরে।উদয়দা একটা বই হাতে চেয়ারে বসে পড়ছে। ওকে বিরক্ত করতে ইচ্ছে হল না।আমি এদিক ওদিক ঘুরো ঘুরি করে সময় কাটাতে লাগলাম।

/////

তার পরদিন গোলাপ কুঠিরে সবাইকে উদয়দা জেরা করছে। প্রথমে দুই দাড়োয়ান কে প্রশ্ন করে কিছুই জানা গেল না। তার বলল, পার্টির দিন তারা বাড়ির পেছন দিকটায় যায়নি। সারাটা সময় গেইটে পাহাড়ায় ছিল। তার পর গারোআন,

– রামু তুমি পার্টির দিন কোথায় ছিলে?

– আমি সেদিন আমার বাড়িতে ছিলাম,মায়ের অসুখ হঠাৎ বেরে গেছিল, বাড়িতে আমি ছাড়া আর কেউ নেই।

– তা তুমি তো এখানে অনেক দিন ধরে আছো ,তা এবাড়ি সবার সম্পর্কে নিশ্চয়ই একটা ধরণা হয়েছে তোমার।

ঊদয়দার ইসারা বুঝে রামু দাতে জীভ কাটলো।তার মতে এই বাড়ির লোক সবাই বেশ ভালো।শুধুমাত্র ছোট বাবু একটু রাগি স্বভাবের। রামুর থেকে এর বেশীকিছু জানা গেল না,এরপর রাঁধুনি।

– পার্টির দিন মোট কত জনের রান্না হয়েছিল। মানে বাইরের লোক করজন ছিল?

– বাড়ির লোক ছাড়া বাড়তি আট জন হবে।

– তুমি সবাইকে চেনো? বা আগে কখনো এসেছে তারা!

– না সবাই না,দুইজন অচেনা। একজন সাহেবদের সাজে আর একজন বাঙ্গালী।

– তারা কেউ পার্টি ছেড়ে বাড়িতে ঢুকেছিল?

– না এমনতো মনে হয় না।

– ভালো করে ভেবে দেখ,কেউ কোথাও গিয়েছিল কিনা মনে করে দেখ।

মেয়েটা বেশ খানিকটা সময় নিয়ে ভেবে বলল

– হ্যাঁ একজনের কথা মনে আছে। অনিমেষ বাবু! তার আঙুল কেটে যাওয়ায় আমি ওষুধ আনতে যাই।ওষুধ নিয়ে এসে দেখি সে নেই।

– অনিমেষ! ইনি কে!

– কলকাতার কাপরের দোকানের জমাদার।

এর পর আর কিছুই তার মুখ থেকে বের হল না। উদয়দা আর আমি বাগান থেকে এসে সোজা বাড়িতে ঢুকলাম। বৈঠক ঘরে প্রীতম বাবু ও তার স্ত্রী বসে ছিলেন। দেখলাম ভদ্রমহিলা বেশ নাদুসনুদুস দেখতে, সেই সাথে হাসি হাসি মুখ। আমরা ঘরে ঢুকতেই তিনি আমাকে ডেকে নিলেন।আমি তার পাশে গিয়ে বসলাম। উদয়দা আমার বাঁ পাশের সোফায় বসলো।প্রাথমিক পরিচয় শেষে উদয়দা প্রীতম বাবুকে বলল,

– পার্টির দিন তো আপনি ছিলেন। তো ঐদিন ছোটখাটো কোন দুর্ঘটনা হয়েছিল কি?

– দুর্ঘটনা! না এমন কিছু হয়েছিল বলে তো মনে হয় না।

– আপনার রাঁধুনি বলছিল আপনাদের কাপরের দোকানের জমাদার অনিমেষ বাবুর আঙুল কেটে গিয়েছিল।

– এমন কিছুই তো হয়নি যাবার সময় অনিমেষের হাতে কোন আঘাত দেখলাম না।

– আচ্ছা ঐদিন পার্টিতে দুই জন অপরিচিত লোক ছিল তাদের পরিচয়?

– একজন আমার বন্ধু সোহম সরকার,অন‍্য জন তার বাড়িতে দুদিন হলো এসেছে বিদেশি।

– আমি তাদের ঠিকানা গুলো চাই।

এবার ভদ্রমহিলা বললেন,

– অনিমেষ কিন্তু খুব ভালো ছেলে,কলকাতায় আমাদের কাপড়ের দোকান ওই দেখাশোনা করে।

কাদম্বিনী দেবীর সঙ্গে উদয়দা কথা বলতে চাইছিল।কিন্তু তিনি কথা বলতে চাইছেন না। এরপর উদয়দা আর কিছুক্ষণ আলাপ করে অনিমেষ ও প্রীতম বাবু বন্ধুর ঠিকানাটা যেনে নিল।এবং আমরা কাদম্বিনী দেবীর মায়ের সেই গোলন্ডে ক্রসটি দেখতে দোতলায় উঠলাম। দোতলায় উঠে কাদম্বিনীর ঘরে ঢুকে কাদম্বিনী কে বললেন আমরা গোলন্ডে ক্রসটি দেখতে চাই।

ক্রসটি নাম গোলন্ডে ক্রস হলেও, তিন ইঞ্চির ক্রসটিতে তিনটে বড় বড় সাদা হিরে বসানো এবং চার পাশে আর ছোট ছোট বেশ কিছু পাথর বা হিরে। কাদম্বিনীর মা ছিলেন খ্রিস্টান। কাদম্বিনীর বাবা-মায়ের ভালোবাসায় তাদের এক করে। এবং বিয়ের দুই বছর পর কাদম্বিনীর বাবা তার স্ত্রী কে দেশে নিয়ে আসেন। গোলন্ডে ক্রসটি কাদম্বিনীর ঠাকুমা কাদম্বিনীর মাকে দেয়। উদয়দা বেশ খানিকটা সময় নিয়ে ক্রসটি দেখে তারপর এক সময় রেখে দিয় বলল,

– জিনিসটা পুরনো, বর্তমান বাজারে এর দাম কত হবে?

– তা আনুমানিক লাক্ষ দুই তিন তো হবেই।

– এতো সাংঘাতিক জিনিস,এর লোভে পরলে তো দু একটা খুন অনায়াসে করা যেতে পারে।

– না, সে আশা নেই

– কারণ!?

– এইটার কথা খুব বেশি লোক জানে না।জানার মধ্যে আমি, আমার স্ত্রী, কাদম্বিনী ও এখন তুমি ।তবে তোমাকে আমার ভরশা আছে।

– একদিনের পরিচয়ে এতটা ভরশা কি ঠিক?

ভদ্রলোক একটু হেসে উদয়দাকে নিয়ে বাইরে চলে গেলেন। যাবার আগে উদয়দার সঙ্গে কাদম্বিনীর একবার চোখাচোখি হতেই ,কাদম্বিনী তার শাড়ির আঁচল টেনে মুখ ঢাকলো। এদিকে আমি কি করবো বুঝতে না পেরে কাদম্বিনীর পাশে দাঁড়িয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।

ওখান থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে। আমরা আশপাশটা ভালো ভাবে ঘুরে দেখলাম।এর মধ্যেই উদয়দা কাল কলকাতা যাবার বন্ধবস্ত করে আমাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো। বাবা আর বড়দা এখানকার দুই একজন দক্ষ মৎস্য শিকারীর সাথে মাছ ধরতে গেছে।উদয়দা আজকের খবরের টা মুখের সামনে ধরে সোফায় বসে পরলো। আমি অবশ্য সেই চিঠির কথাটা ভাবছি আর ভাবছি প্রীতম বাবু তার ছেলের সাথে কাদম্বিনীর বিবাহ বাতিল কেন করলেন।। ভাবতে ভাবতে কখন যেন চোখ দুটো বুঝে এলো।


দুপুরে ঘুমিয়ে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই বৌমণির ঘর থেকে একটা চাপা আর্তনাদ কানে এলো। এই দিকটা বাড়ির সিড়ির দিক।সিঁড়ির মুখেই বৌমণির ঘর।দরজায় কান লাগিয়ে শুনলাম ঘর থেকে এক নাগাড়ে আহ্… আহ্… আহ্… আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আমি দৌড়ে বাইরে গিয়ে জানলার কাছে এসে দেখলাম জানলা লাগানো। হতাশ হয়ে ভাবছি কি করা যায়,এমন সময় মায়ের ডাকে সে দিকেই এগিয়ে গেলাম। আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম এর পর কি? উদয়দা বলেছি প্রীতম বাবু সাথে দেখা করবে রাতে।কিন্তু কোথায়,কেন যেন  প্রীতম বাবুর ছেলে আমাদের সাথে কথা বলতে চাইছে না।

আশা করি ভালো লাগলে বলে যাবে চলবে কি না?
[+] 6 users Like বহুরূপী's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গল্পের খাতা ( রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ গল্প নং ১– গোলাপ বাগানে গন্ডগোল) - by বহুরূপী - 08-07-2024, 10:38 AM
RE: গল্পের খাতা - by buddy12 - 18-08-2024, 10:03 PM
RE: গল্পের খাতা - by zahira - 10-11-2024, 01:16 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)