Thread Rating:
  • 200 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
আপডেট ৩২




মাহফুজ বেশ চিন্তার মধ্যে আছে। একটু আগে গঞ্জের মধ্যে আসছে। বাড়িতে সকাল সকাল একটা ছেলে এসে খবর দিয়ে গেছে আমিন গঞ্জে এক ফোনের দোকানে ফোন করবে। মাহফুজ যেন সেখানে থাকে সকাল দশটার দিকে ফোন রিসিভ করতে। ঢাকার থেকে বেশ কয়দিন একদম বিচ্ছিন্ন মাহফুজ। এটা নির্বাচনের আগের সময়। এই সময় এমন করে একদম গায়েব হয়ে যাওয়া ওর পলিটিক্যাল ক্যারিয়ারের জন্য মোটেও ভাল না। মূল দলের নানা অঙ্গ সংগঠন গুলো, যেমন ছাত্র সংগঠন, যুব সংগঠন বা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে ঘুরে মনোনয়ন প্রাপ্তদের হয়ে কাজ করছে। এই সময়টায় হবু এমপিদের কাজ করলে পরে এদের ব্যাকিং পাওয়া যায়। আবার অনেক বড় নেতারা এদের বিভিন্ন এলাকায় পাঠায় নিজেদের ব্যাকিং এর মনোনয়ন পাওয়া এমপি প্রার্থীদের সাপোর্ট দিতে। মাহফুজ আপাতত ঢাকা মহানগর যুব সংগঠন দক্ষিণের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি। আর উপরে উঠার জন্য এই নির্বাচন একটা বড় সিড়ি। আর এখন এখানে এই হাওড়ের মাঝে অনেকটা আত্মগোপন করে আছে মাহফুজ। গঞ্জে নৌকা থেকে নামতেই টের পায় নির্বাচনী হাওয়া। অনেকগুলো পোস্টার লেগে আছে। হাটার পথে মাটিতে পড়ে থাকা লিফলেট দেখে। এই এলাকা থেকে নির্বাচনী মনোনয়ন যে পেয়েছে ওদের পার্টি থেকে সে খালেদ চাচার কাছে প্রায় আসে ব্যাকিং এর জন্য। মাহফুজের সাথে হালকা পরিচয় আছে তবে মাহফুজ এখন সব পরিচয় গোপন করে থাকতে চায় কিছুদিন। আমিন নরমালি জোহরা কে প্রতিদিন ফোন দেয় বিকালের দিকে। বাড়ির একটা অংশে হালকা মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করে জোহরা বিকালের দিকে ফোনে। সেই সব কলে তেমন কিছু বলে নি আমিন। আর মাহফুজ একবার জোহরা কে বলে আমিনের সাথে কথা বলেছে। তবে আমিন আসলে কিছু বলতে পারে নি। বলতে পারার কথাও না। ও একজন সোর্স মাত্র সোলায়মান শেখের। মাহফুজ খোজ খবর নেওয়ার জন্য ওর পরিচিত আর অনেক কে বলতে পারত তবে সোলায়মান শেখের সাবধান বাণীর জন্য আপাতত চুপ করে আছে। সোলায়মান শেখ বলে দিয়েছে সাধারণত যারা পালিয়ে থাকে তাদের খুজে বের করার সব চেয়ে সহজ উপায় হল তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিত জনদের উপর নজর রাখা। ফলে মুন্সি বা ম্যানেজার তার বা নুসাইবার পরিচিতদের উপর নজর রাখবে। এই কারণে মাহফুজ আর কার সাথে যোগাযোগ করে নি। তবে আজকে আমিনের পাঠানো এই খবর শুনে মনে হচ্ছে সোলায়মান শেখ আমিনের মাধ্যমে ওকে কোন খবর পাঠাবে।


ফোনের দোকানে একটা বেঞ্চ পাতা আছে। মাহফুজ গতকালের পত্রিকাটা নিয়ে পড়তে থাকে। এখানে প্রতিদিন খবরের কাগজ আসে বিকালের দিকে। তাই সকাল বেলা অন্য দিনের পত্রিকা পড়া লাগে। মানুষজন দোকানে আসছে ফোন রিচার্জ করাতে বা ফোনের কার্ড কিনতে। দোকানের লোকটা বলে আমিন ভাই ফোন দিছিলো। আপনে ভাইয়ের ফোন আসলে সামনের  ঐ গাছতলায় বইয়া কথা কইয়েন। আপনি ভাইয়ের মেহমান বলে। অন্য কেউ হইলে দোকান থেকে মোবাইল লইয়া বাইর হইতে দেই না তয় আপনের কথা ভিন্ন। আমিন ভাই কইছে আপনের লগে কিছু পার্সনাল কথা আছে তাই একটু যেন আড়ালে যাইতে দেই। আর দোকানে এত লোক আহে, দেখছেন তো। এইহানে প্রাইভেসি নাই। মাহফুজ পত্রিকা পড়তে পড়তে দোকানির মাথার পিছনের দেয়াল ঘড়িটা দেখে। আর দশ মিনিট বাকি দশটা বাজতে। মাহফুজ পত্রিকার পাতায় নজর দেয়। কোন আসনে কে মনোনয়ন পাবে সেটা নিয়ে জল্পন কল্পনা। বিরোধীদল কি নির্বাচনে আসবে। মাহফুজ রাজনীতি নিয়ে সব সময় খুব উৎসুক কিন্তু আজকে পত্রিকায় মনযোগ দিতে পারছে না। আমিন কি খবর দেয়, নাকি সোলায়মান শেখ ফোন দিবে? দশটা বাজার দুই মিনিট পর কল আসল। ফোন ধরতেই ঐপাশ থেকে আমিন বলে ভাইজান, স্যারে কথা বলবে। সোলায়মান শেখ ফোন ধরে বলে কেমন আছেন মাহফুজ ভাই? মাহফুজ ফোনটা নিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে একটু দূরে দাঁড়ায়, বের হওয়ার সময় হাতের ইশারা করে দোকানদার কে যে একটু দূরে দাড়াচ্ছে। দোকানদার মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়। মাহফুজ বলে কেমন থাকব সোলায়মান ভাই বলেন? আপনাদের থেকে কোন খবর পাচ্ছি না। ইলেকশনের সময় এক গ্রামের ভিতর লুকিয়ে আছি, আপনি জানেন এই সময় পার্টির হয়ে কাজ করা আমার ক্যারিয়ারের জন্য কত ইম্পোর্টেন্ট। সোলায়মান শেখ বলে জানি ভাই। কিন্তু এটা তো মাথায় রাখতে হবে সেফটি আগে। আর অনেক সময় লুকিয়ে থাকতে সঠিক সুযোগের জন্য। মাহফুজ বলে সব জানি সোলায়মান ভাই। তবে আর কতদিন? সোলায়মান বলে ভাই, এই খবর দেওয়ার জন্য তো আপনাকে ফোন দিলাম। মাহফুজ শ্বাস আটকে অপেক্ষা করে কি বলবে সোলায়মান।


সোলায়মান বলে মাহফুজ ভাই মুন্সী আপাতত নিষ্ক্রিয়। মাহফুজ বলে মানে? সোলায়মান বলে মানে আমরাও জানি না। তবে গুজব হল পার্টি হাইকমান্ড ওশন গ্রুপের মালিক কে ডেকে ঝাড়ি দিছে, বলছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে সমস্যা নাই তবে কোন দূর্নীতির খবর বের করার চেষ্টা করলে ভাল হবে না। ওশন গ্রুপ তাই মাঠ থেকে মুন্সী কে তুলে নিছে। মাহফুজ বলে আপনি শিওর? সোলায়মান বলে অনেকটুকু শিওর। নির্বাচনের সব ব্যাপার নজরদারি করার জন্য আমাদের অফিসের  যে জাতীয় সেল আছে আমি এই কয়দিন সেটাতে কাজ করছি। আমার দ্বায়িত্ব হল নির্বাচনে আন্ডারগ্রাউন্ডের লোকজনের কাজকর্ম নজরদারি করা। ফলে মুন্সীর ব্যাপারটা সেলের যে অংশ দেখে আমি সেই অংশের দ্বায়িত্বে। আমাদের তথ্যমতে ওশন গ্রুপের কোন কাজের সাথে আপাতত নেই মুন্সী। মুন্সীর লোকজনও মাঠে নেই। আমি খোজ নেবার জন্য ফোন দিয়েছিলাম মুন্সী কে। আসলে অফিস থেকেই দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুন্সীর ব্যাপারে আর খোজ নেবার জন্য। ভেরি আনপ্রেডিক্টেবল লোক। মাহফুজ বলে কি জানলেন? বেশ কিছুক্ষণ কথা হইছে চা বিড়ি খেতে খেতে। ক্ষেপে আছে তবে আপনাদের উপর না মেইনলি সানরাইজ গ্রুপ, ম্যানেজার আর কিছুটা ওশন গ্রুপের উপর। মুন্সী হারতে পছন্দ করে না। ম্যানেজার ওকে বুদ্ধির চালে হারাইছে এইটা মানতে পারতেছে না। আর ওশন গ্রুপ ওকে সত্যি সত্যি বসায়ে রাখছে এইটাতেও ক্ষেপা। তবে আমাকে অনেক জিজ্ঞেস করছে আমি ম্যানেজার কিভাবে আরশাদ আর তার বউ কে হাওয়া করছে সেইটা জানি কিনা। মাহফুজ শ্বাস আটকে জিজ্ঞেস করে কি বললেন আপনি মুন্সী কে? সোলায়মান বলে ভাই যেইটা বলার কথা সেইটা বললাম। বললাম, দেখেন মুন্সী ভাই আপনি কিছু করার সময় আমারে বলে করেন না ঠিক তেমনি ম্যানেজার আমাকে জানায়ে কিছু করে না। আপনারা আমার খোজ নেন যদি কিছু করার পর গন্ডোগোল লাগে তাহলে সেই গন্ডগোল সামলানোর জন্য। মাহফুজ বলে তাহলে এই একটা প্রবলেম সলভ? সোলায়মান বলে আপাতত। তবে মুন্সী যে পরিমাণ ক্ষেপে আছে ম্যানেজার, সানরাইজ গ্রুপ, ওশন গ্রুপ সবার উপর ফলে সে আপনাদের কাছে আবার আসতেও পারে। কারণ সানরাইজ গ্রুপের মেইন দূর্নীতির খবর বের করতে হলে আরশাদ স্যার কে লাগবে। মাহফুজ হু বলে একটা শ্বাস ছাড়ে। তারপর জিজ্ঞেস করে আর সানরাইজ গ্রুপ? মুন্সী বলে এই ব্যাপারে আমি নিজেও খুব দ্বিধায় আছি। সানরাইজ গ্রুপ খুব নীরব ছিল আপনাদের চলে যাবার পর। এইটা খুব সন্দেহজনক। আমি খোজ নিছি, ওরা এয়ারপোর্টের সিসিটিভি ফুটেজ নিছে মুন্সীর মত। তবে মুন্সী যেমন আপনাদের খোজের জন্য অনেক সোর্সে লোক লাগিয়েছে ম্যানেজার তা করে নি বরং চুপ ছিল একদম। এটাও একদিক দিয়ে আপনাদের জন্য লাভ হয়েছে। মুন্সী ওদের কে একদম চুপ করে থাকতে দেখে ভেবেছে পুরা কাজটা ম্যানেজারের এবং আপনি ম্যানেজারের লোক। ম্যানেজার কেন চুপ করে থাকল এই ব্যাখ্যা সোলায়মানের মত মাহফুজের মাথাতেইও আসল না। দেয়ার ইজ সামথিং দ্যাট ডাজেন্ট মেক সেন্স হেয়ার।

মাহফুজ জিজ্ঞেস করে তাহলে কি আমরা ঢাকায় ফিরব? সোলায়মান একটু চুপ করে থাকে। মাহফুজ বলে দেখেন ভাই আমার পলিটিক্যাল ক্যারিয়ারে বড় ক্ষতি হবে যদি না থাকি নির্বাচনের সময় মাঠে। এমনিতে নমিনেশনের সময় ছিলাম না এখন আসল নির্বাচনের সময় না থাকলে ভবিষ্যতে পদ ধরে রাখতে কষ্ট হবে। সোলায়মান শেখ বলে আপনি আসতে পারেন এখন তবে নুসাইবা ম্যাডাম আর কয়েকদিন থাক গ্রামে। আপনার পরিচয় এখনো জানে না মুন্সী আর ম্যানেজার যেভাবে চুপ আছে তাতে মনে হচ্ছে না সে আপনাদের ঘাটাবে। আসলে আপনারা হাওয়া হওয়ায় একদিক দিয়ে তার লাভ হইছে সো সে ঝামেলা করবে না। তাই আপনি আসেন ঢাকায়। হাওয়া বুঝেন আর দুই সাপ্তাহ। এর মধ্যে দেখা যাক ম্যানেজার আরশাদ সাহেব কে ছাড়ে কিনা। তারপর নুসাইবা ম্যাডাম কে ঢাকা আনা যাবে। এইটা হল সবচেয়ে সেফ অপশন। সোলায়মানের কথা মেনে নেয় মাহফুজ। এর থেকে আপাতত ভাল কোন উপায় নেই। মাহফুজ বলে তাহলে আমি আপনাকে জানাচ্ছি নুসাইবার ফুফুর সাথে কথা বলে। সোলায়মান শেখ বলে তাহলে সেটা করেন। আপনি আর দুই তিন দিন পর ঢাকা ঢুকেন। আমি এর মাঝে কোন আপডেট পাইলে আপনাকে জানাব। মাহফুজ ফোন রেখে দেয়। হাওড়ের মাঝে এই কয়দিন যে অস্থির হয়ে ছিল সেটা কিছুটা কমেছে। তবে ওর মাথায় আবার আসে ঢাকা গেলে  নুসাইবার থেকে আবার দূরে সরে যেতে হবে। সেটা মনে খানিকটা হতাশাও আনে। তবে একসাথে অত কিছু চিন্তা করতে চায় না মাহফুজ আপাতত। ওয়ান স্টেপ এট এ টাইম। এর আগেরবার গঞ্জে এসে কেনা পুরাতন স্মার্টফোনটা চালু করে। টাকা ভরে দোকান থেকে। সিনথিয়া কে ফোন দিতে হবে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ ) - by কাদের - 29-05-2024, 10:35 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)