23-04-2024, 11:53 AM
(19-04-2024, 01:33 AM)nusrattashnim Wrote:একদম প্রথম থেকে গল্পটা পড়তেছি। প্রত্যেকটা পর্ব আসার পর মনে হয় এবারের টা বেস্ট। কিন্তু তার পরের আপডেটে আবার হিসাব নিকাশ গুলায়ে যায়। আগের পর্ব ছাপিয়ে নতুন পর্ব হয়ে উঠে আরো উত্তেজক, আরো থ্রিলিং আরো জোস। তাই এবারের পর্ব বেস্ট কিনা এই বৃথা তর্কে যাবোনা। তবে পড়তে পড়তে একটা জিনিস নিজে অনুভব করেছি। একটা অনুভূতির রোলার কোস্টারে যেন দুলতে দুলতে এগোচ্ছিলাম। সাবরিনা! আহা সাবরিনা!! কতদিন পর পর্দার সামনে আসলো। এবং এসেই আগুন লাগিয়ে দিলো। সাবরিনার এই রূপ আমাদের কাছে যতটা অপরিচিত ঠিক ততটা তার হাজব্যান্ড সাদমানের কাছেও। এই কি সেই সোয়ারীঘাট কিংবা তুরাগের সেই জাহাজ কিংবা আবাসিক হোটেল এর ইন্ট্রোভার্ট সাবরিনা? না। এই সাবরিনা যেন মাহফুজের আগুনে দগ্ধ হয়ে অবিকল রূপ পালটে ফেলা এক নতুন সাবরিনা। কি সুন্দর করে সেই দৃশ্যায়ন করলেন আপনি!
উত্তেজনার পারদ যখন তুঙ্গে তখন আবার রোলার কোস্টারে চড়িয়ে এবার নামিয়ে আনলেন উত্তেজনা। এবার প্রবেশ করালেন এক মানবীয় প্রেমের জগতে। যেন ল্যান্ডফোনের দিনের সেই প্রেমগুলি! কি অনাবিল সচ্ছতা, কি এক চুপিচুপি মন দেয়া নেওয়ার প্রেমময় কাব্য। কাজলদা! তবে কি কঠিন উপসংহার। হ্রদয় যখন কিছুটা দগ্ধ সাফিনার বিরহকাতরতায়, ঠিক তখনি আবার নিয়ে চললেন হাওড়ে।
কি এক খুনসুটি ভরা কাহিনী দিয়ে শুরু। এরপর যেন প্রেমিক- প্রেমিকার ছোয়াছুয়ি খেলা। দারুণ উপভোগ্য। জোহরার ইনক্লুশন আর ওর ন্যাচারাল খোলামেলা কথাবার্তা যেন আরো প্রাণ সঞ্চার করে জীবন্ত করে তুলেছিলো হাওড়ের ঘটনাপ্রবাহগুলোকে। এরপর, বলতে হয়, জোহরার বাচ্চাকে দেখে নুসাইবার ভেতর নতুন করে আবার মাতৃত্বের আকাঙ্খা সৃষ্টি , দত্তক নেয়ার চিন্তা, সেটা আরশাদ কিংবা যে কারো সাথেই হোক। ছোট কিছু বাক্য কিন্তু প্রচ্ছন্ন এবং পরোক্ষ কিছু ইঙ্গিত অনুমেয়। পরের পর্বগুলোর একটা মেজর টপিক হয়তো হতে যাচ্ছে এই ব্যাপারটাই। যা ভাবছি তা হলে একদম সোনায় সোহাগা। এবং এরপর! এরপর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মনে আছে কি? সাব কুচ ইয়াদ রাখখা যায়েগা! হ্যা, নুসাইবার পাছা টার যাতে প্রাপ্য শাস্তিটা হয় সেটা মনে মনে কিন্তু আমার মত হয়তো অনেকেই চেয়েছে। তবে ব্যাপারখানা কি? জোহরার সেই কথাটাই সত্য। একটা নারী যত কিছুই করুক একটা ছেলের সাথে, শরীর দিলে সব ঠান্ডা। তাই হয়তো আগের সেই ক্ষোভ, রাগ সময়ের সাথে সাথে নুসাইবার শরীরের ভাজে ভাজে ভুলেই গেছে যেন মাহফুজ অনেকটা। তাই এখন শুধু ভালোবাসা আর কামনাই এ রমণের বিষয়বস্তু। এনাল সেক্স এর কথা আলাদা করে বলতে চাই। একদম ন্যাচারাল ছিলো। কোনো উটকো বাড়তি বর্ণণা নয়। তবে একদম ঠিক মন ভরার মত পরিমাণ হতে যতটুক দরকার ছিলো তার থেকে যেন একটু কম হয়ে গিয়েছে বোধ হলো। তবে প্রথমবার দেখে এর বেশী টানলে হয়তো কিছুটা আনরিয়েল হতো। তাই এই অল্পতেই তৃষ্ণা মেটাচ্ছি। তবে বিনীত অনুরোধ থাকবে আরেকটু যদি খেয়াল দেয়া যায় নুসাইবার সাথে এনাল সেক্স এর ব্যাপারে। অন্তত একবার। যেহেতু হাওড়ের দিনগুলো ফুড়িয়ে আসছে।
উত্তেজনায় যখন আবারো পুড়ছি ঠিক তখন আবার ট্রাঞ্জিশন। এবার নিয়ে গেলেন থ্রিলের রাজ্যে। মুন্সী। সেই নরকের কীট মুন্সী। আহা!! বেচারার রঙিন স্বপ্ন ছিলো সেদিন গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্টে ফেরার সময় আজ রাত হয়তো হতে পারে নুসাইবার সাথে তার স্বপ্নের রাত। কিন্তু সে কি ভুলেও জানতো সেদিন রাত থেকেই তার দু:স্বপ্নের রাত শুরু। অন্যদিকে, ম্যানেজার এর এবারের চালটা হয়েছে যেন একদম দাবার বোর্ডে ৫/৬ চাল খেলেই চেকমেট দেয়ার মতোন। যেন মুন্সীর হাতে সব গুটিই আছে কিন্তু তার আসল ক্ষমতাই হুমকির মুখে। এত সহজে ম্যানেজার এরকম একটা মাস্টারস্ট্রোক দিবে এটা মাথায় আসেনি। ব্যাপারটা হয়তো রক্তারক্তি বা খুনোখুনির দিকে যাবে মনে হয়েছিলো একবার। অথবা সরায় দেয়া বা গুম করা। কিন্তু যা করলেন আপনি। চোখে চশ্মা পড়েও ভুলে মাঝে মাঝে চশ্মা খুজি না আমরা অনেকে। ঠিক যেন তেমন ব্যাপার ঘটিয়ে দিলেন। হাতের সামনে সলিউশন তাও চোখে পড়ে না। তবে ম্যানেজার নুসাইবার নিখোঁজ হবার পিছনে কী ভাবছে না ভাবছে তা দেখানো হয়নি। মুন্সীকে একদম নিউট্রাল করে ফেলা হলো। সেই অর্থে কি তাহলে ম্যানেজারের এখন নুসাইবা কিংবা আরশাদ কে নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই? তবে, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কি রিস্ক নিবে ম্যানেজার আরশাদ কে ছেড়ে দিয়ে?? সামনের পর্ব গুলোয় দেখা যাবে কি হয়। ধুন্দুমার থ্রিলার অপেক্ষা করছে সহজেই অনুমেয়।
শেষ প্রশ্নের মত যেন অনেক গুলো প্রশ্ন জমা হলো সাবরিনার মনে। কিন্তু প্রশ্ন জমা হতে হতেই পর্বের সমাপ্তি ঘটলো। সিন্থিয়ার পরিবারকে মানাতেই কি মাহফুজের এই গেইম? কিন্তু মাহফুজের চার্ম সাবরিনা কিভাবে অস্বীকার করবে? আর মাহফুজ তার ইজ্জত যদি নিয়ে থাকে, সোয়ারীঘাটের সেই রাতে মাহফুজই তো ইজ্জত বাচিয়েছিলো সাবরিনার। ধর্ষিতা তকমা লাগা থেকে বাঁচিয়ে এনেছে তাকে। আর, মাহফুজ তো তাকে জোরও করেনি। সেও তো নিজেকে সেচ্ছায় বিলিয়ে মনেপ্রাণে সপে দিয়েছে মাহফুজ এর কাছে। সাব্রিনার ভেতর থেকে মাহফুজই তো বের করে এনেছে নতুন এক সাবরিনাকে যাকে সে চিনতো না। কি করবে এখন সাবরিনা! জলে কুমির ডাঙায় বাঘ আর মনে যে শুধু মাহফুজ!!
অনেক কিছু লিখে ফেললাম। হয়তো আরো কিছু মাথায় ছিলো, হাতে আসেনি। তবে আপনি তো জানেন আমার অবস্থা। তাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷ আপনার হাতে ফুলচন্দন পড়ুক। পরের আপডেট এর অধীর অপেক্ষায় রইলাম। বিরতি টা আশা করি সহনীয় পর্যায়ে রাখবেন। অনেক অনেক শুভকামনা। ভালো থাকবেন।
মাঝে মাঝে কিছু কমেন্ট দেখে ভাবি লোকজন এত মনযোগ দিয়ে গল্প পড়ছে নাকি। কোন পাঠক যখন তার চিন্তা গুলো তুলে ধরে তার থেকে ভাল প্রাপ্তি লেখকের জন্য আর কিছু নেই। এটা তেমন একটা মন্তব্য।