15-04-2024, 02:43 PM
(This post was last modified: 15-04-2024, 07:13 PM by বহুরূপী. Edited 11 times in total. Edited 11 times in total.)
পর্ব ৩
আজকে সন্ধ্যায় তালতলায় চায়ের আসরে আড্ডা জমজমাট।আজ শুধু মুরুব্বি নয়,সাথে জুটেছে কিছু নিষ্কর্মা ছেলে ছোকরার দল।মুরুব্বিদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ চরণ ঘোষ তার ওতি প্রিয় হুকোটা হাতে নিয়ে কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যে হুকোয় টান দিছেন।আর বাকি সবাই তার পানে হা হয়ে তাকিয়ে তাই শুনছিল। ঠিক তখনই তালতলা দিয়ে সঞ্জয়ের মোটরসাইকেল টি যেই একটু সামনে এগিয়েছে,ওমনি চায়ের আসর ভেঙে দু তিন জন ছুটে এল। বলা চলে তারা একরকম সঞ্জয়ের গায়ের ওপরে এসেই পড়লো ।
– আরে আরে করিস কি!
সঞ্জয় কোন মতে তাদের পাশ কাটিয়ে মোটরসাইকেল টি দাড় করালো একটু সামনে এগিয়ে। অবশ্য ততখনে পাঁচ ছয়জন তাকে ঘিরে ধরেছে।তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলে উঠলো।
– সঞ্জয়দা খবর শুনেছো কিছু!?
সঞ্চয় একবার সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে এগিয়ে গেল চায়ের দোকানের দিকে। কারণ সে জানে এরা ছুটে এলেও আসল খবর এদের থেকে পাওয়া বড় কষ্ট সাধ।কারণ এরা আসল খবরের রসবোধ বারিয়ে দিয়ে যা বলবে তা শোনার ইচ্ছে সঞ্জয়ের নেই।
চায়ের দোকানে সবার সাথে কূশল বিনিময় শেষে সঞ্জয় যা শুনলো।তা হল নদীর ওপারে রাজেন্দ্র রায় সঞ্জয়ের বৌদিমণির বাপের বাড়িটি ভাঙার বন্দোবস্ত করছে।সেই সাথে তার কানে নয়নতারার মাঝি পাড়াতে নন্দলালের বাড়িতে যাওয়ার কথাও উঠলো।আর এতো কথার মাঝেও চরণ ঘোষ তাদের তালদিঘির পাশে মন্দিরটি যে সংস্কার করা দরকার সেকথা সঞ্জয়কে মনে করিয়ে দিতে ভুলল না মোটেও।
সব কথা শুনে সঞ্জয় বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলো চায়ের দোকান থেকে।তারপর তালদিঘির পথধরে মোটরসাইকেল টি ছোটালো মাঝি পাড়ার দিকে।
~~~~~|~~~~~~~~~~~~
সকাল সকাল স্নান করার অভ্যেস নয়নতারার। তবে আজ একটু দেরি হয়েগেছে তার।গতকাল রাতে হঠাৎ করেই মন্দিরার জ্বর উঠলো।এমন হঠাৎ জ্বরে কোন কারণ খুঁজে পায়নি নয়নতারা। সে যাই হোক,তবুও সকালে উঠে আগে স্নান সেরে তবে রান্নাঘরে ঢুকবে সে।তবে একটু চিন্তা হচ্ছিল সঞ্জয়কে নি। গতরাতে সঞ্জয় বলেছিল আজ একটু জলদি বেরোবে সে।তাই তারাতারি একটু রুটি তরকারি না করে দিলে ছেলেটা মুখে কিছু না দিয়েই বেরিয়ে পড়বে নিশ্চয়ই।অবশ্য এতে সঞ্জয়ের কোন আপত্তি নেই।সে একা মানুষ এইসবে সে অভস্থ।কিন্তু নয়নতারা এবাড়িতে থাকতে সেটি হবে কেন শুনি!বলি এতদিন একাছিল এখন নয়নতারা যতদিন আছে ওমন ছন্নছাড়া জীবনযাপন কেন করবে সঞ্জয়।
এইসব ভাবতে ভাবতে নয়নতারা স্নান সেরে নিল।তারপর গায়ে শুধু একটি লাল শাড়ি জরিয়ে নিয়ে, কলপাড়ের অস্থায়ী ভাবে দাঁড় কারানো নতুন বাঁশের বেড়ার সমূখের থাকা পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছিল সে। ঠিক তখনি বেখেয়ালে পা হড়কে গিয়ে একটা কেলেঙ্কারি কান্ড হতেই যাচ্ছিল আর কি।তবে নয়নতারার ভাগ্য ভালো যে সঞ্জয় ছিল সিঁড়ির সমূখে।তাই তো শেষ মুহূর্তে সঞ্চয় ছুটে এসে সামলে নিল তাকে।তবে নয়নতারাকে সামলাতে গিয়ে দেবুর আনাড়ি হাতে তৈরি নতুন বাঁশের বেড়ায় লেগে সঞ্জয়ের হাতখানি কেটেগেল বেশ কিছুটা। তবে সঞ্জয়ের কি আর সেদিকে খেয়াল আছে! সে ব্যস্ত হয়ে নয়নতারার সামনে বসে,হড়কে যাওয়া পা টি হাতে তুলে দেখতে লাগলো।
– উফ্...সঞ্জয় একি করছো ছাড় বলছি কিছু হয়নি আমার...
– ছাড়বো মানে! দেখতে হবে তো কোথায় লাগলো কি না।
– অত দেখে কাজ নেই,বলছি তো লাগেনি।
সঞ্জয় সে কথায় কান না দিয়ে নয়নতারার পা টি পরক্ষ করতে লাগলো।এদিকে নয়নতারা এক পায়ে তার দেহে ভারসাম্য ধরে রাখতে না পেরে সঞ্জয়ের কাঁধে হাত রেখে ঝুঁকে গেল কিছুটা।অবশেষে সঞ্জয় যখন উঠলো।তখন নয়নতারার চোখ পড়লো তার হাতে।
– হায় ভগ'বান একি করেছো তুমি!
সঞ্জয়ের রক্তঝরা হাতদেখে নয়নতারা এক রকম আর্তনাদ করে উঠলো।আর সেটি শুনে ঠাকুরঘর হতে নয়নতারার মা ও পাশে নয়নতারার ঘরথেকে হেমলতা ছুটে বেরিয়ে এল।এদিকে সঞ্জয় এক নজর তার বৌদিমণিকে দেখে তৎক্ষণাৎ মুখ ঘুরিয়ে নিল অন্যদিকে। তবে সেই এক নজরে সে যা দেখেছে তাতে তার মুখে তালা লেগে গেল।এদিকে নয়নতারা তার আঁচল খানা দিয়ে সঞ্জয়ের হাতটি চেপেধরেছে। সে কি ভাবে জানবে তার শাড়ির আঁচল টি বেখেয়ালে তার বুকের ওপড় থেকে সরে গিয়েছে অনেকটা।আর সেই সাথে তার মাতৃদুগ্ধে পরিপূর্ণ উন্নত স্তনের শোভা যে এক ঝলক সঞ্জয়ের চোখে লেগেগেছে।তা নয়নতারা না বুঝলেও মিনতী দেবীর বুঝতে দেরি হয়নি। কিন্তু সে কি ভাবিয়া তার কন্যাটিকে সাবধান না করে হেমলতাকে বলল।
– তা ওভাবে দাঁড়িয়ে কী যাত্রাপালা নাটক দেখা হচ্ছে নাকিরে হেম।দেখছিস ছেলেটা হাত কেটেছে,তারপরেও মুখ হা করে দাঁড়িয়ে আছে।
মায়ের কাছে ধমক খেয়ে নয়।বরং দিদিকে যেন লজ্জায় পরতে না হয় সে কথা ভেবেই হেমলতা এগিয়ে গেল।এবং দিদির আঁচল হতে সঞ্জয়ের হাতটি তার আঁচলে নিয়ে সঞ্জয়কে টানিয়া আনলোও বটে। তবে বারান্দায় উঠিবার সময় যখন তার ডাগর দুটো হরিণীর মত চোখের মিলন হল তার সমুখের থাকা শিকারীর চোখের সহিত।তখন হেমলতার অন্তর কাঁপিয়া উঠিলো।না কাঁপিয়া যাইবে কোথায়!সঞ্জয়ের নেশাচরের মতো চোখ দুটি যে এখন হেমলতার বুকে বন্দী হয়ে আছে। আর সেই কৌতূহলী চোখদুটো হেমলতার শাড়ি ও ব্লাউজের ঢাকা বুক দুখানির সঠিক আকৃতি পরিমাপ করার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পরেছে।এবং সেই সাথে সঞ্জয়ের মনটি কেন যেন দুই বোনে বুকের মাপখানির হিসেবে মেলাতে বসে গেছে।সঞ্জয় তার অবাধ্য মনটি কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারছে না।
কিন্তু সে সময় নয়নতারার সঙ্গে ওমন ভালো মানুষের ভঙ্গ ধরে,এখন তার সাথে এমন নোংরামি হেমলতার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগিলো যে,তার কি হবে! তাই বলাই বাহুল্য রাগে হেমলতার শরীর জ্বলতে শুরু করেছে।তবুও এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবে কিভাবে।তাই সে গাল ফুলিয়ে বসার ঘরে ঢুকলো সঞ্জয়কে নিয়ে।
সঞ্জয়ের হাতে হলুদ লাগানোর সময় হেমলতার মুখ ভার দেখে সঞ্জয় বলল।কি ব্যাপার!মহারানীর মুখ কালো কেন?
হেমলতা সঞ্জয়ের প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে নিজের কাজ শেষ করে উঠে যাচ্ছিল।সে যাবার জন্যে পেছন ফিরতেই সঞ্জয় তার একটা হাতের কব্জি ধরে হেঁচকা টানে বুকি জরিয়ে নিলো।
– আঃ..কি করছেন ছাড়ুন আমায়..
তা হেমলতা মুখে বললেও আজকে তার পতন সামলাতে দুহাত বুকের সামনে আনিতে পারিলো না।কারণ তার দুহাত যে বন্ধ।এদিকে সঞ্জয়ের হাতের টানে হেমলতার হাতথেকে হলুদের বাটিখানা প্রায় পরেই গেছিল।কিন্ত তার চেয়েও বড় কথা হল এই যে,সঞ্জয় হেমলতার এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার হাতখানি হেমলতার কোমড়ে জড়িয়ে অন্য হাতে হেমের ফোলা ফোলা গালখানি টিপে দিয়েছে। আর তাতেই আমাদের হেমলতার রাগটি হাওয়ার হয়ে গিয়ে তার জায়গায় দখল করেছে একরাশ লজ্জা।সেই সাথে তার বুকের খাঁচায় আবদ্ধ দুর্বল হৃদয় খানির ছটফটানি যে বেরে গেছে শতগুণ।তা যদি এই পাষণ্ড বুঝিতো।তবে তাকে ওমন কঠিন বাহু বন্ধনে বাধিত না। কিন্তু সে কথা ভাবিয়া আর কি হবে,তাই বন্দী হেমলতা এবার উপায় না দেখে মৃদু স্বরে বলল।
– ছাড়ুন আমাকে মা দেখলে কেলেঙ্কারি কান্ড হবে যে।
তবে সঞ্জয় হেমের কথা শুনে তার বাহু বন্ধন আরো মজবুত করলো। তাতে হেমলতার নরম বুকখানি সঞ্জয়ের পেশিবহুল বুকে পিষ্ট হয়ে যেন মিশে যেতে চাইলো সঞ্জয়ের বুকের মাঝে।তবে মাঝখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হেমের কালো ব্লাউজ ও সবুজ শাড়িখানা।তবে যদি এসব না থাকি তো তবে! ইসস্.. এইসব কি ভাবিতেছে সে। নিজের মনের এমন অধঃপতন দেখিয়া এবার হেমলতা ভয়ে কাঁপিয়া উঠিলো।সঞ্জয় তাকে কোন মন্ত্রবলে বশ করছে না তো! কথাটা মনে আসতেই সে ব্যস্ত হয়ে বলল।
– ছাড়ুন বলছি,নইলে চিৎকার করব এখনি!
এবার সঞ্জয় হেমলতার কথায় হাসতে হাসেত বলল।তাই বুঝি!সেটি তো হচ্ছে না হেম!খুব জ্বালিয়ে ছো আমায়।এবার সবকিছুর হিসেবে নেবার পালা।
এই বলে সঞ্জয় যখন হেমলতার চিবুকে ধরে তার মুখখানি এগিয়ে আনিতে লাগলো।বাস্, এটুকু দেখিয়া সঞ্জয়ের উদেশ্য বুঝিয়া লইতে হেমলতার দেরি হলো না। এতখন ধরে তার হৃদস্পন্দন সে সামাল দিয়েছে বটে।তবে আর পারিলো না।সঞ্জয়ের মুখখানি তার ঠোঁটে কাছে আসতেই সে হাত থেকে সব ফেলেদিয়ে "দিদি" বলিয়া চিৎকার দিয়ে উঠলো।
তবে সঞ্জয় তাকে ছাড়লো না।নয়নতারা যতখনে বসার ঘরে আসলো।ততখনে সঞ্জয় হেমেলতার কোমল ঠোঁট দুখানিতে একটি চুমু বসিয়ে দিয়েছে।
এদিকে নয়নতারা ঘরে ঢুকে সঞ্জয় ও হেমলতাকে এভাবে দেখে প্রশ্ন করলো কি হয়েছে। আর ওমনি বৌদিমণিকে দেখেই সঞ্জয় ভালো মানুষের ভঙ্গিতে বলল।
– তোমরা দুটি বোন দেখি একই রকম।তোমার তো তাও পা হড়কে গিয়েছিল,কিন্তু তোমার বোনটি দেখছি তোমার থেকেও একপা এগিয়ে। ঘরে এত কিছু থাকতে নিজের পায়ে পা বেঁধে পড়ের যাচ্ছিল।আমি কোন মতে সামলেছি।এই দেখ না সরা ঘরের কি অবস্থা করেছে।
সঞ্জয়ের কথায় নয়নতারা মেঝের দিকে চোখ নামাতেই দেখলো।মেঝেতে একদিকে পানির পাত্র ও অন্য দিকে হলুদের পাত্রটি উল্টে পরেছে।আর সেই সাথে সারা মেঝেতে হলুদের ছড়াছড়ি। তবে নয়নতারা কিছু বলিবার আগেই মিনতী দেবী এইসব দেখিয়া কপালে হাত ঠুকে বলল।
– হায় আমার পোড়া কপাল,বলি তোর দাড়া কি কোন কাজই ঠিকমত হয় না রে হেম...
তবে এতকিছুর মধ্যেও বেচারী হেম কিছুই বলিতে পারিলো না।বলি প্রথম পুরুষের ঠোঁটের স্পর্শ তার ঠোঁটে লাগিতেই তার মনে যে ঝড় উঠেছে,তা যদি তার মা ও দিদি জানিত...।সে যাই হোক,তারা নাই বা জানিলো।তবে আমার জানার আছে।সেই পরিচিত প্রশ্ন, গল্পটি কি চলিবে?
আজকে সন্ধ্যায় তালতলায় চায়ের আসরে আড্ডা জমজমাট।আজ শুধু মুরুব্বি নয়,সাথে জুটেছে কিছু নিষ্কর্মা ছেলে ছোকরার দল।মুরুব্বিদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ চরণ ঘোষ তার ওতি প্রিয় হুকোটা হাতে নিয়ে কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যে হুকোয় টান দিছেন।আর বাকি সবাই তার পানে হা হয়ে তাকিয়ে তাই শুনছিল। ঠিক তখনই তালতলা দিয়ে সঞ্জয়ের মোটরসাইকেল টি যেই একটু সামনে এগিয়েছে,ওমনি চায়ের আসর ভেঙে দু তিন জন ছুটে এল। বলা চলে তারা একরকম সঞ্জয়ের গায়ের ওপরে এসেই পড়লো ।
– আরে আরে করিস কি!
সঞ্জয় কোন মতে তাদের পাশ কাটিয়ে মোটরসাইকেল টি দাড় করালো একটু সামনে এগিয়ে। অবশ্য ততখনে পাঁচ ছয়জন তাকে ঘিরে ধরেছে।তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলে উঠলো।
– সঞ্জয়দা খবর শুনেছো কিছু!?
সঞ্চয় একবার সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে এগিয়ে গেল চায়ের দোকানের দিকে। কারণ সে জানে এরা ছুটে এলেও আসল খবর এদের থেকে পাওয়া বড় কষ্ট সাধ।কারণ এরা আসল খবরের রসবোধ বারিয়ে দিয়ে যা বলবে তা শোনার ইচ্ছে সঞ্জয়ের নেই।
চায়ের দোকানে সবার সাথে কূশল বিনিময় শেষে সঞ্জয় যা শুনলো।তা হল নদীর ওপারে রাজেন্দ্র রায় সঞ্জয়ের বৌদিমণির বাপের বাড়িটি ভাঙার বন্দোবস্ত করছে।সেই সাথে তার কানে নয়নতারার মাঝি পাড়াতে নন্দলালের বাড়িতে যাওয়ার কথাও উঠলো।আর এতো কথার মাঝেও চরণ ঘোষ তাদের তালদিঘির পাশে মন্দিরটি যে সংস্কার করা দরকার সেকথা সঞ্জয়কে মনে করিয়ে দিতে ভুলল না মোটেও।
সব কথা শুনে সঞ্জয় বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলো চায়ের দোকান থেকে।তারপর তালদিঘির পথধরে মোটরসাইকেল টি ছোটালো মাঝি পাড়ার দিকে।
~~~~~|~~~~~~~~~~~~
সকাল সকাল স্নান করার অভ্যেস নয়নতারার। তবে আজ একটু দেরি হয়েগেছে তার।গতকাল রাতে হঠাৎ করেই মন্দিরার জ্বর উঠলো।এমন হঠাৎ জ্বরে কোন কারণ খুঁজে পায়নি নয়নতারা। সে যাই হোক,তবুও সকালে উঠে আগে স্নান সেরে তবে রান্নাঘরে ঢুকবে সে।তবে একটু চিন্তা হচ্ছিল সঞ্জয়কে নি। গতরাতে সঞ্জয় বলেছিল আজ একটু জলদি বেরোবে সে।তাই তারাতারি একটু রুটি তরকারি না করে দিলে ছেলেটা মুখে কিছু না দিয়েই বেরিয়ে পড়বে নিশ্চয়ই।অবশ্য এতে সঞ্জয়ের কোন আপত্তি নেই।সে একা মানুষ এইসবে সে অভস্থ।কিন্তু নয়নতারা এবাড়িতে থাকতে সেটি হবে কেন শুনি!বলি এতদিন একাছিল এখন নয়নতারা যতদিন আছে ওমন ছন্নছাড়া জীবনযাপন কেন করবে সঞ্জয়।
এইসব ভাবতে ভাবতে নয়নতারা স্নান সেরে নিল।তারপর গায়ে শুধু একটি লাল শাড়ি জরিয়ে নিয়ে, কলপাড়ের অস্থায়ী ভাবে দাঁড় কারানো নতুন বাঁশের বেড়ার সমূখের থাকা পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছিল সে। ঠিক তখনি বেখেয়ালে পা হড়কে গিয়ে একটা কেলেঙ্কারি কান্ড হতেই যাচ্ছিল আর কি।তবে নয়নতারার ভাগ্য ভালো যে সঞ্জয় ছিল সিঁড়ির সমূখে।তাই তো শেষ মুহূর্তে সঞ্চয় ছুটে এসে সামলে নিল তাকে।তবে নয়নতারাকে সামলাতে গিয়ে দেবুর আনাড়ি হাতে তৈরি নতুন বাঁশের বেড়ায় লেগে সঞ্জয়ের হাতখানি কেটেগেল বেশ কিছুটা। তবে সঞ্জয়ের কি আর সেদিকে খেয়াল আছে! সে ব্যস্ত হয়ে নয়নতারার সামনে বসে,হড়কে যাওয়া পা টি হাতে তুলে দেখতে লাগলো।
– উফ্...সঞ্জয় একি করছো ছাড় বলছি কিছু হয়নি আমার...
– ছাড়বো মানে! দেখতে হবে তো কোথায় লাগলো কি না।
– অত দেখে কাজ নেই,বলছি তো লাগেনি।
সঞ্জয় সে কথায় কান না দিয়ে নয়নতারার পা টি পরক্ষ করতে লাগলো।এদিকে নয়নতারা এক পায়ে তার দেহে ভারসাম্য ধরে রাখতে না পেরে সঞ্জয়ের কাঁধে হাত রেখে ঝুঁকে গেল কিছুটা।অবশেষে সঞ্জয় যখন উঠলো।তখন নয়নতারার চোখ পড়লো তার হাতে।
– হায় ভগ'বান একি করেছো তুমি!
সঞ্জয়ের রক্তঝরা হাতদেখে নয়নতারা এক রকম আর্তনাদ করে উঠলো।আর সেটি শুনে ঠাকুরঘর হতে নয়নতারার মা ও পাশে নয়নতারার ঘরথেকে হেমলতা ছুটে বেরিয়ে এল।এদিকে সঞ্জয় এক নজর তার বৌদিমণিকে দেখে তৎক্ষণাৎ মুখ ঘুরিয়ে নিল অন্যদিকে। তবে সেই এক নজরে সে যা দেখেছে তাতে তার মুখে তালা লেগে গেল।এদিকে নয়নতারা তার আঁচল খানা দিয়ে সঞ্জয়ের হাতটি চেপেধরেছে। সে কি ভাবে জানবে তার শাড়ির আঁচল টি বেখেয়ালে তার বুকের ওপড় থেকে সরে গিয়েছে অনেকটা।আর সেই সাথে তার মাতৃদুগ্ধে পরিপূর্ণ উন্নত স্তনের শোভা যে এক ঝলক সঞ্জয়ের চোখে লেগেগেছে।তা নয়নতারা না বুঝলেও মিনতী দেবীর বুঝতে দেরি হয়নি। কিন্তু সে কি ভাবিয়া তার কন্যাটিকে সাবধান না করে হেমলতাকে বলল।
– তা ওভাবে দাঁড়িয়ে কী যাত্রাপালা নাটক দেখা হচ্ছে নাকিরে হেম।দেখছিস ছেলেটা হাত কেটেছে,তারপরেও মুখ হা করে দাঁড়িয়ে আছে।
মায়ের কাছে ধমক খেয়ে নয়।বরং দিদিকে যেন লজ্জায় পরতে না হয় সে কথা ভেবেই হেমলতা এগিয়ে গেল।এবং দিদির আঁচল হতে সঞ্জয়ের হাতটি তার আঁচলে নিয়ে সঞ্জয়কে টানিয়া আনলোও বটে। তবে বারান্দায় উঠিবার সময় যখন তার ডাগর দুটো হরিণীর মত চোখের মিলন হল তার সমুখের থাকা শিকারীর চোখের সহিত।তখন হেমলতার অন্তর কাঁপিয়া উঠিলো।না কাঁপিয়া যাইবে কোথায়!সঞ্জয়ের নেশাচরের মতো চোখ দুটি যে এখন হেমলতার বুকে বন্দী হয়ে আছে। আর সেই কৌতূহলী চোখদুটো হেমলতার শাড়ি ও ব্লাউজের ঢাকা বুক দুখানির সঠিক আকৃতি পরিমাপ করার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পরেছে।এবং সেই সাথে সঞ্জয়ের মনটি কেন যেন দুই বোনে বুকের মাপখানির হিসেবে মেলাতে বসে গেছে।সঞ্জয় তার অবাধ্য মনটি কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারছে না।
কিন্তু সে সময় নয়নতারার সঙ্গে ওমন ভালো মানুষের ভঙ্গ ধরে,এখন তার সাথে এমন নোংরামি হেমলতার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগিলো যে,তার কি হবে! তাই বলাই বাহুল্য রাগে হেমলতার শরীর জ্বলতে শুরু করেছে।তবুও এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবে কিভাবে।তাই সে গাল ফুলিয়ে বসার ঘরে ঢুকলো সঞ্জয়কে নিয়ে।
সঞ্জয়ের হাতে হলুদ লাগানোর সময় হেমলতার মুখ ভার দেখে সঞ্জয় বলল।কি ব্যাপার!মহারানীর মুখ কালো কেন?
হেমলতা সঞ্জয়ের প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে নিজের কাজ শেষ করে উঠে যাচ্ছিল।সে যাবার জন্যে পেছন ফিরতেই সঞ্জয় তার একটা হাতের কব্জি ধরে হেঁচকা টানে বুকি জরিয়ে নিলো।
– আঃ..কি করছেন ছাড়ুন আমায়..
তা হেমলতা মুখে বললেও আজকে তার পতন সামলাতে দুহাত বুকের সামনে আনিতে পারিলো না।কারণ তার দুহাত যে বন্ধ।এদিকে সঞ্জয়ের হাতের টানে হেমলতার হাতথেকে হলুদের বাটিখানা প্রায় পরেই গেছিল।কিন্ত তার চেয়েও বড় কথা হল এই যে,সঞ্জয় হেমলতার এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার হাতখানি হেমলতার কোমড়ে জড়িয়ে অন্য হাতে হেমের ফোলা ফোলা গালখানি টিপে দিয়েছে। আর তাতেই আমাদের হেমলতার রাগটি হাওয়ার হয়ে গিয়ে তার জায়গায় দখল করেছে একরাশ লজ্জা।সেই সাথে তার বুকের খাঁচায় আবদ্ধ দুর্বল হৃদয় খানির ছটফটানি যে বেরে গেছে শতগুণ।তা যদি এই পাষণ্ড বুঝিতো।তবে তাকে ওমন কঠিন বাহু বন্ধনে বাধিত না। কিন্তু সে কথা ভাবিয়া আর কি হবে,তাই বন্দী হেমলতা এবার উপায় না দেখে মৃদু স্বরে বলল।
– ছাড়ুন আমাকে মা দেখলে কেলেঙ্কারি কান্ড হবে যে।
তবে সঞ্জয় হেমের কথা শুনে তার বাহু বন্ধন আরো মজবুত করলো। তাতে হেমলতার নরম বুকখানি সঞ্জয়ের পেশিবহুল বুকে পিষ্ট হয়ে যেন মিশে যেতে চাইলো সঞ্জয়ের বুকের মাঝে।তবে মাঝখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হেমের কালো ব্লাউজ ও সবুজ শাড়িখানা।তবে যদি এসব না থাকি তো তবে! ইসস্.. এইসব কি ভাবিতেছে সে। নিজের মনের এমন অধঃপতন দেখিয়া এবার হেমলতা ভয়ে কাঁপিয়া উঠিলো।সঞ্জয় তাকে কোন মন্ত্রবলে বশ করছে না তো! কথাটা মনে আসতেই সে ব্যস্ত হয়ে বলল।
– ছাড়ুন বলছি,নইলে চিৎকার করব এখনি!
এবার সঞ্জয় হেমলতার কথায় হাসতে হাসেত বলল।তাই বুঝি!সেটি তো হচ্ছে না হেম!খুব জ্বালিয়ে ছো আমায়।এবার সবকিছুর হিসেবে নেবার পালা।
এই বলে সঞ্জয় যখন হেমলতার চিবুকে ধরে তার মুখখানি এগিয়ে আনিতে লাগলো।বাস্, এটুকু দেখিয়া সঞ্জয়ের উদেশ্য বুঝিয়া লইতে হেমলতার দেরি হলো না। এতখন ধরে তার হৃদস্পন্দন সে সামাল দিয়েছে বটে।তবে আর পারিলো না।সঞ্জয়ের মুখখানি তার ঠোঁটে কাছে আসতেই সে হাত থেকে সব ফেলেদিয়ে "দিদি" বলিয়া চিৎকার দিয়ে উঠলো।
তবে সঞ্জয় তাকে ছাড়লো না।নয়নতারা যতখনে বসার ঘরে আসলো।ততখনে সঞ্জয় হেমেলতার কোমল ঠোঁট দুখানিতে একটি চুমু বসিয়ে দিয়েছে।
এদিকে নয়নতারা ঘরে ঢুকে সঞ্জয় ও হেমলতাকে এভাবে দেখে প্রশ্ন করলো কি হয়েছে। আর ওমনি বৌদিমণিকে দেখেই সঞ্জয় ভালো মানুষের ভঙ্গিতে বলল।
– তোমরা দুটি বোন দেখি একই রকম।তোমার তো তাও পা হড়কে গিয়েছিল,কিন্তু তোমার বোনটি দেখছি তোমার থেকেও একপা এগিয়ে। ঘরে এত কিছু থাকতে নিজের পায়ে পা বেঁধে পড়ের যাচ্ছিল।আমি কোন মতে সামলেছি।এই দেখ না সরা ঘরের কি অবস্থা করেছে।
সঞ্জয়ের কথায় নয়নতারা মেঝের দিকে চোখ নামাতেই দেখলো।মেঝেতে একদিকে পানির পাত্র ও অন্য দিকে হলুদের পাত্রটি উল্টে পরেছে।আর সেই সাথে সারা মেঝেতে হলুদের ছড়াছড়ি। তবে নয়নতারা কিছু বলিবার আগেই মিনতী দেবী এইসব দেখিয়া কপালে হাত ঠুকে বলল।
– হায় আমার পোড়া কপাল,বলি তোর দাড়া কি কোন কাজই ঠিকমত হয় না রে হেম...
তবে এতকিছুর মধ্যেও বেচারী হেম কিছুই বলিতে পারিলো না।বলি প্রথম পুরুষের ঠোঁটের স্পর্শ তার ঠোঁটে লাগিতেই তার মনে যে ঝড় উঠেছে,তা যদি তার মা ও দিদি জানিত...।সে যাই হোক,তারা নাই বা জানিলো।তবে আমার জানার আছে।সেই পরিচিত প্রশ্ন, গল্পটি কি চলিবে?