Thread Rating:
  • 187 Vote(s) - 3.32 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
(পূর্বের অংশ আগের পৃষ্ঠায়) 



হাইওয়ে থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে মাহফুজ আর নুসাইবার গাড়ি। এয়ারপোর্ট থেকে বের হবার পর নুসাইবা খালি জিজ্ঞেস করেছিল কোথায় যাচ্ছি আমরা? মাহফুজ বলেছিল গেলেই দেখবেন। মাহফুজের উপর এতটুকু ভরসা করে এতদূর এসেছে তাই বাকিটা ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই। গাড়ির সিটে পিঠ দিয়ে বাইরে রাস্তা দেখতে থাকে নুসাইবা। টের পায় বুকের কাপুনি এখুনি কমে নি। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। মাহফুজের নিজের অবশ্য জানা নেই পরের প্ল্যান কি। ওর মনে পড়ে সোলায়মান শেখ অনেকবার করে বলেছে দেশ ছাড়া কঠিন হবে বরং দেশের ভিতর কোথাও লুকানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার। তবে দেশের ভিতর কোথায় লুকিয়ে রাখা যায় নুসাইবা কে নিয়ে এইটা ঘাটতে গিয়ে দুইজনের মনে হয়েছে ম্যানেজার আর মুন্সী দুইজনে মিলে লাগলে আসলেই বেশিদিন লুকিয়ে থাকা কষ্টকর। সবচেয়ে ভাল হয় কয়েকদিন পর পর জায়গা চেঞ্জ করলে। আবার বেশি জায়গা চেঞ্জ করলে মানুষের চোখে পড়ার চান্স বেশি। তাই তখন ঠিক হয় রিস্ক যাই হোক প্রথমে দেশের বাইরে বের হবার চেষ্টা করতে হবে। কারণ একবার বের হতে পারলে এরপর রিস্ক কম। আর দেশে থাকলে প্রতিনিয়ত লুকিয়ে থাকতে হবে। তবে মুন্সী তার পরেও দুই তিনবার প্ল্যান বি ঠিক করতে বলেছে মানে দেশের ভিতর কোথাও লুকানো। সেটা আর মাহফুজের করা হয় নি। সোলায়মান শেখ বলেছিল সে কিছু ভেবে দেখবে করা যায় কিনা। মাহফুজ এখন তাই সোলায়মান শেখের উপর আস্থা রেখে গাড়ি চালাচ্ছে। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে তাই আগের ঠিক করা একটা জায়গায় যেতে থাকে মাহফুজ। এটাই ছিল প্ল্যান বি। এরপর কোথায় যাবে কি করবে মাহফুজ ঠিক করে জানে না। উত্তরার ভিতর দিয়ে পূর্বাচল হয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা গলি রাস্তা মতন জায়গায় দাড়িয়ে আছে মাহফুজ গাড়ির লাইট বন্ধ করে। পূর্বাচলের এই সাইডে নতুন বাড়ি ঘর হওয়া শুরু হয় নি। পুরান কিছু বাড়িঘর রয়ে গেছে। সরকার সব জায়গা দখল নিয়ে সরকারি হাউজিং করছে। পুরাতন জমির মালিকেরা কেউ কেউ এখনো উচ্ছেদ এড়িয়ে রয়ে গেছে। একটু সামনেই একটা রেস্টুরেন্ট আছে। রাত দশটার দিকে বন্ধ হয়ে যায়। এখান এইখানটা তাই প্রায় শুনশান। একটু পর পর শেয়ালের ডাক আসছে। ঢাকার ভিতর এইভাবে শিয়াল ডাকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। মানুষ সব দখল করে নিতে চাইলেও প্রকৃতি ঠিক কোন না কোন ভাবে তার অস্তিত্ব বজায় রাখে। পৃথিবীর অন্যতম বড় মেগাসিটির কয়েক মাইলের মধ্যেই অন্ধকার আলোহীন রাতে শেয়ালের ডাক এক রকম আধৌভৌতিক অনুভূতি এনে দেয়। নুসাইবা গাড়ির ভিতর বসে বসে দোয়া পড়ছে। মাহফুজ চিন্তিত। নুসাইবা কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলছে সব প্ল্যান অনুযায়ী হচ্ছে কিন্তু প্ল্যানটা কি সেটাই জানে না এখনো। সোলায়মান শেখের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই ওদের এখন।

অবশেষে রাত তিনটার দিকে মাহফুজের কাছে থাকা মোবাইলটায় মেসেজ আসে, আপনারা আছেন। মাহফুজ উত্তর দেয় জায়গা মত। এর তিন চার মিনিট পর মাহফুজ টের পায় একটা গাড়ি আসছে আর এর পিছনে আছে একটা বাইক। মাহফুজ শ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করতে থাকে। গাড়ি আর বাইকটা রেস্টুরেন্টার ঠিক সামনে এসে আলো ব্লিংক করে। মাহফুজ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গাড়িটার পাশে নেয়। বাইক থেকে নেমে আসে সোলায়মান শেখ। সোলায়মান শেখ কে দেখে মাহফুজের যেন জানে পানি আসে। গাড়ি থেকে নামে না নুসাইবা। ওর মনে এখন ভয় আর আতংক দুইটাই কাজ করছে। সারাজীবন বাড়ীর ভাল মেয়ে নুসাইবা। রাত বিরাতে এমন অজায়গায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। ঢাকার ভিতরেই যেন জংগলে এসে পড়েছে। মাহফুজ নতুন আসা গাড়ির দিকে তাকায়। সোলায়মান বলে ভয় নাই। আমার লোক। আপনাদের যাত্রার পরের অংশ এর হাতে। মাহফুজ কিছু বলে না। সোলায়মান শেখ এতদিন পর্যন্ত আস্থা রেখে এসেছে। তার উপর মাসুদ চাচার ঐখানে সোলায়মান শেখের যে গল্প শুনেছে সেটা শুনে মনে হয়েছে এই লোক আস্থাবান। পিছ থেকে ছুরি মারার লোক না। মাহফুজ তাই জিজ্ঞেস করে পরের প্ল্যান কি। সোলায়মান শেখ বলে আপনাদের কয়েকদিন ঘাপটি মেরে থাকতে হবে। মাহফুজ বলে কয়দিন। সোলায়মান শেখ বলে মিনিমাম দুই সাপ্তাহ। এর মধ্যে নির্বাচনের মনোনয়ন দিয়ে দিবে পার্টিগুলা। এরপর খেলা অন্য দিকে ঘুরে যাবে। তখন ম্যাডামের উপর নজর রাখবে না ম্যানেজার আর মুন্সী। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে আপনি না বললেন এয়ারপোর্ট সেফ আছে, মেসেজ পাঠালেন সেইমত। সোলায়মান শেখ বলে যখন মেসেজ পাঠিয়েছি তখন পর্যন্ত তাই ছিল। এরপর আমার বড় স্যার আমারে ডেকে পাঠাল। নুসাইবা ম্যাডামের নাম দিয়ে আর একটা ছবি দিয়ে বলল আমার যত সোর্স আছে সব কাজে লাগাতে। ঢাকার ভিতর কোথায় ম্যাডাম থাকতে পারে। আর আরেক কলিগ কে এয়ারপোর্ট, রেলস্টেশন, বাস স্টেশন এগুলা দেখার দ্বায়িত্ব দিল। তখন কথায় কথায় বুঝলাম স্যার কে মুন্সী হাত করেছে। তাই তাড়াতাড়ি আপনাকে মেসেজ দিছি। এরপর বাকি সময় আপনাদের কে সেফলি ঢাকা থেকে সরানোর জন্য ব্যবস্থা করছি। সোলায়মান শেখ এইবার গাড়ির দিকে তাকিয়ে ডাক দেয়, আমিন। এই আমিন। গাড়ি থেকে একটা বছর পঞ্চাশেক বয়সের লোক নামে। মাথায় টুপি, লম্বা দাড়ি। সোলায়মান শেখ বলে এই হল আমিন। ভাড়ার মাইক্রো চালায়। আপনাদের ভাগ্য ভাল আজকে ও ঢাকা ছিল। নাইলে বিপদ হয়ে যেত। আপনারা ওর সাথে যাবেন। একসময় ও আমার সোর্স হিসেবে কাজ করত। এখনো করে তবে আগের মত অত রেগুলার না। ফলে আমাদের সার্ভিসের লোকজন এখন আর ওরে কেউ তেমন স্মরণ করে না। ফলে ধরতে পারেন ও প্রায় আউট অফ রাডার। তবে ও আমার উপর কৃতজ্ঞ। ওরে কয়েকবার বড় ঝামেলা থেকে বাচাইছি আমি। আর ওরে দিয়ে এরকম কাজ আর করাই নাই কখনো। অনেক আগে ওর সাথে গল্প করার সময় শুনছিলাম ওর বাড়ির কথা। তখন মনে হইছিল কোন ইমাররেজন্সিতে লুকায় থাকার জন্য ভাল জায়গা। ওর বাড়ি সুনামগঞ্জে হাওড়ের কাছে। ধরতে পারেন ওর বাড়ি ছোট একটা দ্বীপ। নৌকা ছাড়া যাওয়া যায় না।  বাড়ির এক কোণায় অল্প একটু জায়গা ছাড়া ফোনের সিগনাল পাবেন না। ফলে লুকিয়ে থাকার জন্য পারফেক্ট জায়গা। ও সাধারণত ঢাকা টু সিলেট বিভিন্ন রুটে মাইক্রো ভাড়া চালায়। বেশি টাকা পাইলে অন্য রুটেও যায়। একবার বের হইলে তিন চারদিন কখনো এর বেশি বাড়ির বাইরে থাকে। তবে ওর বাড়ি লুকানোর জন্য সেফ জায়গা। আমিন বলে স্যার চিন্তা করবেন না। আমার হাতে যখন স্যার দ্বায়িত্ব দিছে আমি জান দিয়ে আপনাদের সেফ রাখব। আমিন একবার কথা দিলে কথা রাখে। মাহফুজ বলে আমাদের কার কাছে তো এক্সট্রা কাপড় নাই। আমিন বলে স্যার আগে চলেন এরপর সব ব্যবস্থা হবে। মাহফুজ বলে আমার কাছে তো আমার রেগুলার ফোনও নাই। কার সাথে যোগাযোগ করতে পারব না। সোলায়মান বলে এইটা ভাল বরং। কারণ মুন্সী বা ম্যানেজার তিন চারদিনের মধ্যে আপনার আর ম্যাডামের কানেকশন বের করে ফেলতে পারে। তখন ওরা আপনার ফোন ট্রেস করবে ২৪ ঘন্টা। তাই ফোন ছাড়া থাকাই ভাল। মাহফুজ বলে আর টাকার ব্যবস্থা? সোলায়মান বলে আপনারা আগে ভালভাবে ফিরে আসেন। এরপর টাকার কথা হবে। আপনি টাকা মেরে খাওয়ার লোক না। আর এই ঝামেলাতে আমারো কিছু ভাগ আছে। তাই আপাতত ধরে নেন আমি উপকার করতেছি। আমিন বলে স্যার টাকার চিন্তা করবেন না। সোলায়মান স্যার আপনাদের দ্বায়িত্ব দিছে। স্যারের কাছে আমার জীবনের ঋণ। আমি সেই শোধ করার একটা সুযোগ পাইছি। আপনারা টাকা পয়সা যখন সব ঠিক হবে তখন দিয়েন। সোলায়মান এইবার আমিন কে বলে তুমি গাড়িতে গিয়ে বস আমি উনাদের সব প্ল্যান ভাল করে বুঝায়ে দিয়ে আসি।


নুসাইবা গাড়ির ভিতর থেকে দেখছিল । মাহফুজ সামনে এগিয়ে যেতেই একটা লোক বাইক থেকে নামল। মাহফুজের সাথে লোকটার কথা বলার ধরণ দেখে বুঝা যাচ্ছে তারা পূর্বপরিচিত। একটু পরে আরেকটা লোক নামে সাথের মাইক্রো থেকে। দাড়ি টুপি পড়া। দুই জন লোকই মিডিয়াম হাইটের। অন্ধকারে এত দূর থেকে কার ফেস বুঝার উপায় নেই। কি কথা বলছে ওরা তিনজন? মাহফুজের হাইটের জন্য তিনজনের মধ্যে দূর থেকে ওকে সহজে আলাদা করা যাচ্ছে। নুসাইবার শরীরে একটা অবসাদ। সারাদিন ধরে বাসা থেকে বের হবার প্ল্যান নিয়ে উত্তেজনা, বের হবার পর মুক্তির উত্তেজনা, মাহফুজের সাথে গাড়ির ভিতর উদ্যোম  সেই সময়, এরপর এয়ারপোর্টে ধরা পড়তে পড়তে কোন রকমে বেচে বের হয়ে আসা। সব মিলিয়ে শরীর আর কোন চাপ নিতে চাইছে না। মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করেছিল এরপরের প্ল্যান কি। মাহফুজ বলেছে একটু অপেক্ষা করতে তারপর সব বলবে। নুসাইবা দেখে মাহফুজ আর একটা লোক ওদের গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। আর দাড়িওয়ালা লোকটা মাইক্রোতে গিয়ে বসছে। মাহফুজ গাড়ির কাছে এসে দরজায় নক করে। এরপর দরজা খুলে। মাহফুজের সাথে থাকা লোকটা নুসাইবা কে সালাম দেয়, আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম। আমি মাহফুজ ভাইকে আপনাদের সব প্ল্যানে হেল্প করতেছি। মুন্সী যে এয়ারপোর্টে যাচ্ছে এই খবর আমি দিয়েছি ভাই কে। এখন আপনাদের পরের প্ল্যানে আমি হেল্প করতেছি। নুসাইবা সালামের উত্তর দেয়। জিজ্ঞেস করে আমাদের পরের প্ল্যান কি? নুসাইবা মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজ বলে প্ল্যানের এর পরের অংশ সোলায়মান ভাইয়ের করা। সোলায়মান নুসাইবার কথায় বুঝে ওর উপর ঠিক ভরসা পাচ্ছে না নুসাইবা। সমাজের উচু স্তুরের লোকেরা সাধারণত ওর মত সাধারণ একজন ইনসপেক্টর কে কখনো পাত্তা দেয় না। তবে সোলায়মান জানে ডিবি পুলিশে এতদিনের চাকরি, আইনের উভয়পাশে অনেক কানেকশন থাকার কারণে ওর পক্ষে এমন অনেক কাজ করা সম্ভব যা খুব কম লোক করতে পারবে এই দেশে। একবার ওর কাজের ম্যাজিক দেখলে সবাই মুগ্ধ হয়। তাই সোলায়মান নুসাইবার অনাস্থা কে গোনায় না ধরে ওর প্ল্যান বলে যেতে থাকে।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৭) - by কাদের - 05-01-2024, 12:56 AM



Users browsing this thread: 18 Guest(s)