Thread Rating:
  • 187 Vote(s) - 3.32 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )


যে ভাবে হোক মুন্সি আর ম্যানেজারের খপ্পর থেকে বের হতে হবে এটা ঠিক করার পর থেকে নুসাইবার মনে একটা জোর এসেছে। আরশাদের খবর গুলো শোনার পর থেকে হেল্পলেস মনে হচ্ছিল গত কয়েক মাস। গত দুই মাসে এই প্রথমবারের মত সেই হেল্পলেস ভাবের জায়গায় মনে হচ্ছে নিজে কে কিছু করতে হবে। মাথায় নির্দিষ্ট কোন প্ল্যান নেই। তবে বুঝতে পারছে একা সব কিছু করতে পারবে না। তবে আর কাউকে  বিপদে জড়াতে চাইছে না। মাহফুজ কে দরকার হবে বুঝতে পারছে। তবে কিভাবে সেটা শিওউর না। যাই করুক টাকার দরকার। তবে নিজের একাউন্ট থেকে টাকা তুলতে চাইছে না। মুন্সী আর ম্যানেজারের হাত  কত গভীরে তা শিওউর না। নিজের একাউন্ট থেকে টাকা তুললে সেটা ওরা যদি কোন ভাবে টের পায় তাহলে বুঝবে ও কিছু একটা করতে যাচ্ছে। তখন সাফিনা ভাবীর কথা মাথায় এসেছে। ম্যানেজারের লোক ওকে ফলো করে, মুন্সীর লোকও ফলো করে শিওর। তাই এমন একটা জায়গা দরকার যেটাতে কেউ সন্দেহ করবে না। ভাবী প্রতি মংগলবার কাউন্সিলিং এ যায়। এটা ভাবতে ভাবতে প্রথম বুদ্ধিটা মাথায় আসে। ভাবীর সাথে ঐখানে দেখা করতে হবে। ম্যানেজারের লোকেরা কিছু জিজ্ঞেস করলে বলতে হবে কাউন্সিলিং এ যাচ্ছে। আর দরকার হলে ঐখানে গিয়ে একটা ফেক শিডিউল নিতে হবে পরের সাপ্তাহের জন্য। যাতে কেউ পরে ঐখানে গিয়ে খোজ করলে সন্দেহ না করে। তাই প্রথম কাজটা করে সাফিনা কে ফোন দিয়ে একটু আগে যেতে বলে কাউন্সিলিং এ।
সাফিনা, নুসাইবা কে দেখে চমকে উঠে। চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে ঝড় বয়ে গেছে। সাফিনা ওয়েটিং রুমের চেয়ার থেকে উঠে দাড়াতে যায় নুসাইবা চোখের ইশারায় না করে। সাফিনা বসে পড়ে। নুসাইবার পিছন পিছন একটা ছেলে ঢুকে। নুসাইবা কাউন্টারে গিয়ে কিছু কথা বলে। ওয়েটিং রুমটা অবশ্য বেশি বড় না। চার পাচটা সিংগেল সোফা। মাঝে একটা কাচের টেবিল। তার উপর কিছু পেপার ম্যাগাজিন রাখা। নুসাইবা এসে সাফিনার কাছের সোফাটাতে বসে। ছেলেটা নুসাইবার দিকে তাকায়। নুসাইবা বলে আমার একটু দেরি হবে। ডাক্তারের সাথে কথা বলে তারপর আসব। ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে বাইরে চলে যায়। সাফিনা অবাক হয়ে সব লক্ষ্য করে। নুসাইবা দরজার দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত হয় ছেলেটা নেই। কাউন্টারে বসা মেয়েটা মোবাইলে স্ক্রল করছে। নুসাইবা এইবার সাফিনার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়। সাফিনা বলে এইসব কি হচ্ছে নুসাইবা? ছেলেটা কে? তোর চেহারার এই হাল কেন? নুসাইবা তখন আস্তে আস্তে সাফিনা কে সব বলতে থাকে। আসলে কি বলবে ঠিক করে এসেছে আগে থেকে। সাফিনা যত কম জানবে তত ভাল সাফিনা আর ভাইয়ার জন্য। তবে সাফিনার হেল্প লাগবে। সাফিনা কে আগে আরশাদের ব্যাপারে বলেছিল কিছু। তাই সেখান থেকে শুরু করে। কিভাবে সানরাইজ গ্রুপ আরশাদ কে সরিয়ে নিয়েছে। ইচ্ছা করে ম্যানেজারের নামটা বলে না। মুন্সির কথা গোপন করে বলে, সানরাইজ গ্রুপের প্রতিপক্ষও ওকে হুমকি দিচ্ছে। আর এই ছেলেটাকে রাখা হয়েছে নুসাইবার নিরাপত্তা আর সাথে ওর উপর নজর রাখার জন্য। সাফিনার মুখ হা হয়ে যায়। কি বলছে এইসব নুসাইবা। একবার বলে চল পুলিশের কাছে যাই। নুসাইবা বলে পাগল হয়েছ ভাবী। এরা পুলিশ কে কিনে রেখেছে। আর পুলিশের কাছে গেলে আরশাদের কি হবে। এরা আরশাদ কে আস্ত রাখবে না তখন। সাফিনার প্রচন্ড রাগ হয় আরশাদের উপর। এতদিন ধরে আরশাদ কে সোনার টুকরা ছেলে ভেবেছে কিন্তু কেউ এমন ভাবে নিজের বউ কে বিপদে ফেলে। তার উপর মদ জুয়া এইসব। সাফিনা বলে তোর আরশাদের ব্যাপারে ভাবতে হবে না। ও কি এইসব করার সময় তোর ব্যাপারে ভেবেছে, তুই কি বিপদে পড়বি ভেবেছে? তোর সেফটি নিশ্চিত করা দরকার। তুই আজকে এখনি আমাদের বাসায় চল। আমাদের বাসায় থাকবি তুই। নুসাইবা বলে বুঝতে পারছ না ভাবী এত তোমরা বিপদে পড়বে। আপাতত এইভাবে চলতে দাও। আর আরশাদের উপর আমার রাগ আছে তবে ওর খুব বড় কিছু হোক সেটা আমি চাই না। ওর সাথে আমি বোঝাপড়া মেটাব ও ফেরত আসলে। তার আগে এই বিপদ থেকে বের হতে হবে। সাফিনার মাথায় কিছু ঢুকে না। কিভাবে এইসব সামলাবে একা নুসাইবা। নুসাইবা বলে আমার উপর আস্থা রাখ ভাবী। আপাতত আমার টাকার দরকার কিন্তু আমার একাউন্ট থেকে তুলতে পারব না। তাহলে ওরা জেনে যাবে। তুমি তোমার একাউন্ট থেকে পাচ লাখ টাকা তুলতে পারবে? এরপর আগামী বৃহস্পতিবার এইখানে আসবে সেইম টাইমে। একটা পলিথিনে টাকাটা মুড়িয়ে রাখবে। আর আসলে অন্য সবার সামনে আমাকে না চেনার ভান করবে। ওয়েটিং রুমের টয়লেটটা দেখিয়ে বলে প্রথমে তুমি ঐখানে যাবে টাকার পলিথিনটা রেখে আসবে। আমি সাথে সাথে ভিতরে ঢুকব আর টাকাটা নিব। তবে তুমি এর মাঝে আমাকে আর ফোন করবে না। আমি দরকার মত ফোন করব। সাফিনা বলে এই টাকা দিয়ে তুই কি করবি। নুসাইবা বলে আপাতত তোমার না জানা ভাল। এর মধ্যে সাফিনার ডাক আসে কাউন্সিলিং এর। নুসাইবা কাউন্টারে গিয়ে বলে বৃহস্পতিবার আসব আমি। কাউন্টারের মহিলা বলে ওকে তাহলে সেদিন আমি আপনার জন্য পরের কোন দিন শিডিউল ফ্রি আছে খুজে রাখব। সেখান থেকে বের হয়ে পড়ে নুসাইবা। প্রথম কাজটা শেষ।


দ্বিতীয় কাজের জন্য আরেক জনের হেল্প দরকার। সন্ধ্যার দিকে বাসার কাজের বুয়া আসবে। সেখান থেকে নিতে হবে পরের স্টেপ। বাসায় সাতটার দিকে কাজের বুয়া আসল। এই মহিলা গত প্রায় সাত আট বছর ধরে ওদের বাসায় কাজ করে। যথেষ্ট হেল্পফুল, বিশ্বস্ত। মহিলার ছেলে গত বছর কলেজে ভর্তি হবার সময় নুসাইবা ভর্তির পুরো টাকা দিয়েছে। এছাড়াও অসুখ বিসুখে এক্সট্রা টাকা দেয়। ফলে এই মহিলা নুসাইবা কে খুব পছন্দ করে। মহিলা আসতেই নুসাইবা বলে তোমার ফোনটা দাও তো বুয়া। আমার ফোনে ডিস্টার্ব দিচ্ছে। এক জায়গায় ফোন করতে হবে। টাকা ভরা আছে তোমার ফোনে? বুয়া বলে আইজাকা বিকালেই ৫০ টাকা ভরছি আপা। নুসাইবা বলে ঠিক আছে তাহলে। আমার একটা জায়গায় ফোন করা দরকার। একটু সময় লাগবে কথা বলতে। তুমি কাজ কর। এরপর আমি আবার তোমাকে ১০০ টাকা দিয়ে দিব নে ফোন রিচার্জ করার জন্য। বুয়া খুশি হয়। ফোনটা নিয়ে নিজের রুমে এসে মাহফুজের নাম্বারে ফোন দেয়। দুইবার ফোন বাজলেও ফোন ধরে না মাহফুজ। এইবার একটা মেসেজ পাঠায় নুসাইবা। মাহফুজ আমি নুসাইবা ফোনটা ধর। এরপরের বার কল দিতেই মাহফুজ ফোনটা ধরে। মাহফুজ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে এইটা কার নাম্বার। নুসাইবা বলে বলছি প্লিজ আমাকে আগে কথা বলতে দাও। নুসাইবার গলায় তাড়া টের পায় মাহফুজ।  ঐপাশ থেকে মাহফুজ কিছু বলে না। নুসাইবা মাহফুজ কে কি বলবে এই কয়েক ঘন্টায় তার প্রাকটিস করেছে। সেইভাবে বলতে থাকে। তবে কথা কথা বলতে গিয়ে নুসাইবা টের পায় ওর কথা জড়িয়ে যাচ্ছে উত্তেজনায়। কারণ ওর প্ল্যানের মূল অংশটা সফল করার জন্য মাহফুজের সাহায্য দরকার। মাহফুজকে বুঝানো দরকার কতটা সাহায্য প্রয়োজন ওর। ম্যানেজার আর মুন্সী দুইজনের কথাই তাই বলে তবে মুন্সীর রাতের বেলার কান্ডকীর্তির কিছুটা বলে কিছুটা গোপন রাখে। পিস্তল দিয়ে ভয় দেখানোর কথা বললেও বাকিটা গোপন রাখে নুসাইবা। টানা দশ মিনিট সাজানো কথা গুলো হড়বড় করে বলে যায়। বলা শেষে টের পায় গলা কাপছে, চোখের কোনা দিয়ে পানি পরছে। ওর মনে হয় মাহফুজ ওর সামনে নেই এটা ভাল হয়েছে।


মাহফুজের মন মেজাজ এমনিতে গত কয়েক দিন ধরে ভাল নেই। সিনথিয়া পরীক্ষার ব্যস্ততায় ঠিক মত কথা বলতে পারছে না। সাবরিনা গত একমাস ধরে দেশের বাইরে একটা ট্রেনিং এর জন্য। আর দুই মাস আসবে না দেশে। আর নুসাইবার সাথে ফ্লোরার দোকানের ঘটনার পর সব যেন এক রকম জট পাকিয়ে গেছে। ওর জীবনে আশেপাশে সব নারীরা যেন এখন ব্যস্ত না হলে দূরে সরে গেছে। এটা ভাবতেই নিজের মনে প্রশ্ন আসে সাবরিনা আর নুসাইবা কে কি হিসেবে নিজের বলে ভাবছে ও। সাবরিনার সাথে যে আকর্ষণ ওর দিক থেকে শুরু হয়েছিল সেই আকর্ষণের জ্বালে সাবরিনাও ভালবাবে জড়িয়েছে এটা বুঝে মাহফুজ। এই সম্পর্কের পরিণতি নেই সেটাও জানে। আবার সাবরিনা যদি জানে সিনথিয়ার সাথে ওর সম্পর্ক তাহলে এটার পরিণতি কি হবে সেটাও জানে না। আর সিনথিয়া যদিও এমনিতে সেক্স টকের সময় সাবরিনা কে নিয়ে কথা বলে তবু সত্যি সতি সাবরিনা আর ওর সম্পর্ক জানলে কি বলবে সেটা পুরো আনপ্রেডিকটেবল। এর মাঝে নুসাইবা। বারমুডা ট্রায়াংগল। যে আকর্ষণে পড়লে নিস্তার নেই। মেয়েদের সাথে সম্পর্ক মাহফুজের জন্য সব সময় একটা ইজি ব্যাপার ছিল। মেয়েরা বরাবর ওর আকর্ষণে পড়েছে। কিন্তু সিনথিয়ার পরিবারের মেয়ে গুলো যেন পাশার দান উলটে দিয়েছে ওর জন্য। সুন্দরী মেয়ে কম দেখে নি মাহফুজ, কম সুন্দরীর সাথে মিশে নি। তবে এমন ভাবে উইক হয় নি কখনো। সিনথিয়ার ফ্যামিলির মেয়েদের জিনে যেন ওকে হারানোর রহস্য মিশে আছে। এক  উদ্দ্যেশ সাধন করতে এসে যেন নতুন দুই ফাদে জড়িয়ে গেছে। এইসব ভেবে ভেবে মন মেজাজ তীরিক্ষে হয়ে ছিল। এমন সময় অচেনা একটা নাম্বার থেকে পর পর দুইবার ফোন আসল। ফোন ধরে না মাহফুজ। প্রতিদিন কত আজগুবি ফোন আসে। পলিটিক্যাল ফোন, বিজনেসের কাজে ফোন। ফোন ধরার ব্যাপারে সব সময় খুব সচেতন মাহফুজ। সহজে ফোন মিস করে না। কোন কারণে ধরতে না পারলেও কল করে বা টেক্সট দেয়। আজকে আর এইসব কিছুই করতে ইচ্ছা করছে না। সারাদিন টেন্ডারের কাজ নিয়ে বেশ ছুটোছুটি করতে হয়েছে। তার উপর সিনথিয়া, সাবরিনা আর নুসাইবার চিন্তা। তাই ফোন ধরে না। এর পর একটা টেক্সট। ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে মেসেজটা দেখে। মাহফুজ আমি নুসাইবা ফোনটা ধর। অবাক হয় মাহফুজ। নুসাইবা নামের এক জনকেই চিনে ও। কিন্তু কার নাম্বার এটা? ভাবতে ভাবতে আবার ফোন বাজে, সেই নাম্বার। হ্যালো বলেই জিজ্ঞেস করে কার নাম্বার এটা? নুসাইবা বলে আগে আমাকে কথা বলতে দাও প্লিজ। নুসাইবার গলায় অস্থিরতা। একটু বিরক্ত হয় সব সময় নিজের কথা আগে বলতে হবে, তবু বলে বলুন।


নুসাইবার কথা শুনতে শুনতে সজাগ হয়ে উঠে মাহফুজের মন। সত্যি বলছে নুসাইবা? এইসব কারণেই কি আরশাদ ওকে ফোন দিয়ে খেয়াল রাখতে বলেছিল নুসাইবার? লোকটা গাড়ল না শয়তান? এইভাবে বউ কে বিপদে ফেলে যায় নাকি কেউ? সানরাইজ গ্রুপের নিষ্ঠুরতার গল্প রাজনৈতিক মহলের সবাই কমবেশি জানে। ম্যানেজার লোকটাকে কয়েকবার পার্টি অফিসে দেখেছে আনোয়ার খান আর আজিম খানের সাথে। আর এই মুন্সী লোকটা কে? একজন উচ্চপদস্থ সরকারী অফিসারের বাসায় পিস্তল নিয়ে ঢুকে ভয় দেখিয়ে যায়? কে আছে এর পিছনে? বানানো কোন গল্প না তো? কিন্তু এমন নিখুত বর্ণ্নায় গল্প বানাতে হলে তো নোবেল পাওয়া লেখক আনতে হবে। নুসাইবার কথা শুনার সাথে সাথে মাহফুজের চোয়াল দৃঢ় হয়। চ্যালেঞ্জ প্রিয় ভিতরের মানুষটা মাথা তুলে দাঁড়ায়। নুসাইবার প্রতি ক্ষোভ আর এট্রাকশনের পাশে ভিতরের চ্যালেঞ্জ প্রিয় মানুষটা দাঁড়ায়। মনের ভিতর যেন বলে উঠে নুসাইবা কে বাচাতে হবে যে কোন মূল্যে। এট্রাকশন না মানুষ কে উপকারের নেশা কোনটা তাড়া দেয় মনের ভিতর নিজেই জানে না মাহফুজ। তবে জানে কিছু একটা করতে হবে। তাই এইবার নুসাইবা কে প্রশ্ন করে করে আর খুটিয়ে সব জানতে থাকে মাহফুজ। নুসাইবার প্ল্যান, ম্যানেজার, মুন্সী সব।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৬) - by কাদের - 18-12-2023, 04:35 PM



Users browsing this thread: 16 Guest(s)