Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
এইসব ভাবতে ভাবতে মাহফুজ ঘড়ির দিকে তাকায়। প্রায় মিনিট বাইশের মত গেছে। আর প্রায় আট দশ মিনিট শুনতে হবে এই কথার মালা। এরপর আবার নুসাইবা বক্তৃতা দিবে আর আধা ঘন্টা। কোন রকমে হাই আটকে পাশে তাকায় মাহফুজ। নুসাইবা এখনো আরশাদের কথা শুনছে হালকা বাকা হয়ে। মাহফুজের ডান পাশে ডায়াসে আরশাদ কথা বলছে আর বাম পাশে চেয়ারে নুসাইবা বসা, সামনে অডেটরিয়াম। ওদের ঠিক পিছনে একটা স্ট্যান্ড ফ্যান রাখা। ফ্যানটা ঘুরে ঘুরে বাতাস দিচ্ছে মঞ্চের চারজন কে। ফ্যানটা প্রতি দশ সেকেন্ড পর যখন ঘুরে নুসাইবা আর মাহফুজের দিকে আসছে তখন বাতাসে নুসাইবার চুল গুলো উড়ছে। স্ট্রেইট করা চুল। পিঠের উপর পিছন দিকে ছেড়ে দেওয়া, কাধের মাঝ বরাবর। প্রতিবার ফ্যানের বাতাসে চুল গুলে দুলে উঠছে। কানের পাশে দুই একটা অবাধ্য চুল সামনে চলে এসে চোখের উপর পড়ছে। নুসাইবা একটু পর পর সেই চুল গুলো একটা আংগুল দিয়ে ঠেলে কানের পিছনে নিয়ে যাচ্ছে। তন্ময় হয়ে কথা শুনা নুসাইবার চেহারায় একটা শান্ত স্নিগ্ধ ভাব। উড়তে থাকা চুলে যেন সেই স্নিগ্ধ সৌন্দর্যের আভা আর বাড়িয়ে দিচ্ছে। মাহফুজ টের পায় ফ্যানের বাতাসে একটা সুন্দর ঘ্রাণ ভেসে আসছে নাকে। চমৎকার পাগল করা একটা ঘ্রাণ। আরেকটু ভাল করে খেয়াল করতে মাহফুজ বুঝে নুসাইবার শরীর থেকে পারফিউমের গন্ধ ভেসে আসছে। এই পরিবারের প্রত্যেকটা মেয়ে বুঝি পারফিউম ব্যবহারে পারদর্শী। সিনথিয়া, সাবরিনা আর এখন নুসাইবা। সবার পারফিউমের চয়েজ আলাদা তবে প্রত্যেকের পারফিউম মনে কেড়ে নিবে নিশ্চিত। এখন যেমন নুসাইবার পারফিউম এর গন্ধ নাকে আসতেই মনে হচ্ছে একটা ঝাঝালো সুন্দর ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ যখন মাহফুজের নাকের ভিতর দিয়ে মাথায় বিক্রিয়া ঘটাচ্ছে তখন মাহফুজ আর ভাল করে নুসাইবা কে খেয়াল করে। সাবরিনা বা সিনথিয়ার মত একদম ধবধবে ফর্সা না নুসাইবা। প্রচেলিত টার্মে বলা যায় উজ্জ্বল শ্যামলা। ফর্সাদের থেকে এক শেড ডার্ক কিন্তু কালদের থেকে কয়েক শেড লাইট গায়ের কালার নুসাইবার। একদম খাটি বাংগালী বাদামী সৌন্দর্য। চেহারায় কোন অতিরিক্ত মেকাপের চিহ্ন নেই। চোখে হালকা কাজল। নাকের নাকফুলটা আলোয় মাঝে মাঝে ঝিকমিক করে উঠছে। আজকে একটা জামদানী শাড়ি পড়ে আছে। লাইট মেরুন কালারের। চমৎকার মানিয়েছে নুসাইবা কে। বসার ভংগী, চাহনি, চেহারা, শাড়ি আর সাথে মন মাতানো ঘ্রাণ। সব মিলিয়ে দারুণ সুন্দর লাগছে। এলিগেন্ট এন্ড বিউটিফুল। আরশাদের স্পিচ শেষ হল। সবাই হাত তালি দিচ্ছে। এমন সময় উপস্থাপক, নুসাইবার নাম ঘোষণা করল। নুসাইবা চেয়ার থেকে যখন উঠে দাড়াচ্ছে তখন ভদ্রতা বশত মাহফুজ উঠে দাড়াল। সিনথিয়া আর সাবরিনা দুইজনের তুলনায় একটু খাট হবে নুসাইবা। মাহফুজ আন্দাজ করল পাচ ফুট দুই ইঞ্চির আশে পাশে হবে হাইট।


নুসাইবা উঠে ডায়াসে দাড়াল। নুসাইবা প্রথমে কয়েক মিনিট বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে বলল। বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি কিভাবে অন্য ব্যাংক এবং অন্য সরকারী চাকরি থেকে সেই ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করল। মাহফুজ মনযোগ দিয়ে নুসাইবা কে দেখছে। একটু আগে যে ঘুম ঘুম ভাব ছিল চোখে সেটা এখন হাওয়া। এমন নয় যে নুসাইবার চাকরি  বিষয়ক বক্তব্যে হঠাত করে মাহফুজের খুব আগ্রহ জন্মেছে অথবা নুসাইবা দূর্দান্ত বক্তব্য দিচ্ছে। আসলে বক্তা চেঞ্জ হওয়ার পর থেকে মাহফুজের মনযোগ আগের থেকে বেড়ে গেছে। সবাই যখন বক্তব্য শুনতে ব্যস্ত মাহফুজ তখন বক্তা কে দেখতে ব্যস্ত। ডায়াস টা ওদের টেবিল থেকে কোণাকুণি ভাবে দুই ফুট সামনে। নুসাইবা কে সাইড থেকে ভাল ভাবে দেখা যাচ্ছে।। একটু আগে পাওয়া ঘ্রাণ যেন মাহফুজের ভিতরের আদিম স্বত্তা কে জাগিয়ে দিয়েছে না চাওয়া স্বত্তেও। নুসাইবার চেহারাটা যেন কম দায়ী না। আমরা অনেক সময় আমাদের সামনে থাকা অনেক জিনিস কে একভাবে দেখি, তখন সামান্য কোন ঘটনা বা তথ্য আমাদের সেই দেখার দৃষ্টিটা সম্পূর্ণ পালটে দেয়। এই যেমন অনুষ্ঠানের শুরুতে যে নুসাইবার চেহারা দেখে সুন্দর সুশ্রী ব্যক্তিতবান একজন চল্লিশ বছরের মহিলা মনে হচ্ছিল সামান্য একটা ঘ্রাণ সেখানে অনেক কিছু পালটে দিয়েছে। মনের ভিতরে এখন সেই ঘ্রাণের সূত্রে মাহফুজ সিনথিয়া আর সাবরিনার সাথে যেন তুলনা করছে নুসাইবা কে। মাহফুজ নিজের মনের মাঝেই নিজেকে রুখবার চেষ্টা করে। তবে একবার এইসব বন্ধ দরজা খুলে সেটা বন্ধ করা বড় কষ্ট। তাই না চাইতেই এর আগেরবার  নুসাইবাদের বাসায় নুসাইবার পাছার খাজে আটকে থাকা সালোয়ার কামিজের কথা মনে পড়ে যায়। কি সুন্দর একটা পাছা। নিজের মনের ভিতর মাহফুজ নিজেকে ধমকে দেয়। হবু বউয়ের আপন ফুফু কে নিয়ে এভাবে ভাবা ঠিক হচ্ছে না। মনের ভিতর আরেকটা অংশ তখন যেন হেসে উঠে, বলে, বউয়ের আপন বোন কে ছাড়িস নি এখন তাহলে ফুফু কে নিয়ে এত চিন্তা কেন। তাই না চাইতেই আবার চোখ চলে যায় নুসাইবার পিছন দিকে। জামদানী শাড়ির পিছন দিকটা উচু হয়ে আছে যেন ভিতরে লুকানো গুপ্তধনের ইংগিত দিচ্ছে। সিনথিয়া আর সাবরিনার যেখানে কম বয়সের কারণে শরীরে একটা ছিপছিপে ভাব আছে সেটা নেই নুসাইবার। তবে বয়সের সাথে শরীরে যোগ হওয়া ওজন দারুণ ভাবে সামলেছেন সেটা বলতেই হয়। কোন বিচারেই নুসাইবা কে মোটা বলা যাবে না। বয়সের সাথে যে ওজন যোগ হয় সেটা যেন সুনিপুণ ভাবে সারা শরীরে ছড়িয়ে গেছে। আর বাংগালী মহিলাদের এই বয়সে একটু ভারী শরীর হলে আলাদা একটা সৌন্দর্য তৈরি হয়। নুসাইবার বাদামী চামড়া, পাচ ফুট দুই ইঞ্চির শরীরে সে ওজন যেন আলাদা একটা জেল্লা তৈরি করেছে। সাথে মুখটা। একটু আগে শান্ত স্নিগ্ধ মনে হওয়া মুখটা কে যেন মনে হচ্ছে আকর্ষণীয়। মাহফুজের মনে হয় আজকাল বুঝি ওর শরীরে হরমোনরা বড় বেশি দৌড়ঝাপ করছে। তাই সব কিছুকেই যেন আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে। মাহফুজের নিজের ভাবনাদের উপর যেন আর নিয়ন্ত্রণ নেই। সাবরিনা আর সিনথিয়ার পাছা ওদের গায়ের রঙের সাথে মানান সই। ধব ধবে সাদা। হাত দিয়ে জোরে একটা চাপড় মারলেই সেখানে লাল হয়ে হাতের দাগ টের পাওয়া যায়। নুসাইবা সেখানে বাদামী চামড়া। নুসাইবার জামদানীর নিচে কি তাহলে থাকবে বাদামী পর্বত। মাহফুজ ওর নজর ঘুরাতে চেষ্টা করে। তবে তেমন সফল হয় না। কোণাকুণি সামনে মাহফুজ দেখতে পায় শাড়ির আচলের ফাক দিয়ে বেশ ভালভাবে নুসাইবার ব্লাউজ আর দুধের শেপ দেখা যাচ্ছে। মাহফুজ একটু অস্বস্তিতে পাশে তাকায়। কোন মহিলা ব মেয়ের স্বামী পাশে থাকা অবস্থায় আজ পর্যন্ত কখনো কোন মেয়ে কে এভাবে চোখে পরখ করে দেখে নি। আরশাদ সাহেব নিজের মোবাইল স্ক্রল করছেন। মাহফুজ একটু খুশি হয়। যেন মনে হয় ওর চোখের দৃষ্টি কে কড়া নজরদারিতে তো আর রাখছে না আরশাদ। তাই নিশ্চিন্ত মনে যেন আবার তাকায়। শাড়ির আচলের ফাক দিয়ে হালকা স্ফীত হয়ে থাকা পেটের দিকে নজর যায়। ভূড়ি নয় তবে সামান্য মেদের আভাস। সিনথিয়ার পেট যেখানে প্রায় সমান, সাবরিনার পেটে সেখানে খুব অল্প মেদের আভাস। নুসাইবার তার থেকে একটু বেশি। মোটেই সেটা ভুড়ি নয়। চমৎকার করে মেইনটেইন করা শরীর। সেখানে বয়সের সাথে হালকা মেদ জমা হয়ে যেন শরীরে আর আকর্ষণ বাড়িয়েছে। ব্লাউজের হাতার দিকে তাকায় মাহফুজ। দেখেই বুঝা যায় বেশ একটা নরম হাত। নজর আবার পেটের দিকে যায়। সাবরিনার যেমন নাভী দূর্বল জায়গা নুসাইবার দূর্বল জায়গা কোনটা? চোখ আর একটু উপরের দিকে যায়। ব্লাউজের ভিতর স্ফীত বক্ষ জোড়া কে বেশ ভাল ভাবে দেখা যাচ্ছে কোণাকুণি পজিশন থেকে। নুসাইবার বাচ্চা না হবার পরেও এমন স্ফীত বক্ষ দেখে মনে হয় বাচ্চা হলে কি হত। মনের ভিতর যেন নুসাইবার বুক, পেট আর পাছার একের পর এক ছবি তুলে চলছে মাহফুজ। হঠাত করে হাত তালির শব্দে টের পায় মাহফুজ নুসাইবার বক্তব্য শেষ। এত তাড়াতাড়ি? হাত ঘড়ির দিকে তাকায় মাহফুজ, নাহ, আধা ঘন্টা বক্তব্য দিয়েছে। তবে এই আধা ঘন্টা যেন ঝড়ের বেগে চলে গেল। মগ্ন হয়ে কিছু নিয়ে ভাবলে সময় যে দ্রুত যায় যেন তার প্রমাণ আবার পেল আজকে।


দুই বক্তার বক্তব্য শেষ হবার পর আধা ঘন্টা হল প্রশ্ন উত্তর পর্ব। বোঝা গেল শ্রোতারা বেশ মনযোগ দিয়ে শুনেছে কথা। তাই প্রশ্ন উত্তরের আধা ঘন্টা শেষ হবার পরেও আর অতিরিক্ত পনের মিনিট চলল প্রশ্নের পালা। একদম শেষে ধন্যবাদ স্বরূপ ক্যারিয়ার ক্লাব থেকে আরশাদ আর নুসাইবা দুই জনকেই ক্রেস্ট দেওয়া হল। আরশাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিল আরিফ আর নুসাইবার  হাতে মাহফুজ। অনুষ্ঠানের শেষে শ্রোতাদের অনেক আসল ছবি আর সেলফি তুলতে। মাহফুজ একটু দূড়ে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করছিল। আরশাদ আর নুসাইবা দুইজনেই এই যে মনযোগের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারা এই জিনিসটা উপভোগ করছে। মনে মনে সিনথিয়ার প্রশংসা করল। সিনথিয়া ঠিক বলেছিল, ওর ফুফা ফুফু দুইজনেই সেন্টার অফ এটেনশন হতে পছন্দ করে, আর সেটা যদি তাদের পেশার কারণে হয় তাহলে তারা আর খুশি হয়। সরকারী চাকরিজীবি হিসেবে সাধারণত এমন মনযোগ পান না উনারা যতই ক্ষমতাধর হন না কেন। আজকের এই সেশনে সেই এটেনশন পেয়ে সাধারণ শ্রোতা থেকে বেশ ভালভাবে উপভোগ করছেন। মাহফুজ মনে মনে ভাবে গুড জব। একটু পর আস্তে আস্তে শ্রোতাদের ভীড় কমে আসে। মাহফুজ আরশাদ আর নুসাইবার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দুইজনেই মাহফুজ কে ধন্যবাদ দেয় এমন সুন্দর একটা অনুষ্ঠানের জন্য। মাহফুজ বলে সব কৃতিত্ব ক্যারিয়ার ক্লাবের ছেলেদের। নুসাইবা আরশাদ দুইজনেই বলে তুমি আমাদের কে এই  ক্লাবের সাথে যোগ করিয়ে দিয়েছ তাই ধন্যবাদ। সিনথিয়ার কাছে আগেই শুনেছে মাহফুজ, নুসাইবা বেশ সাহিত্যের ভক্ত। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অল্প দূরে বিউটি বোর্ডিং। ষাটের দশকের ঢাকার সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্র। বাংলা সাহিত্য নিয়ে যাদের সামান্য আগ্রহ আছে তারা এখানে আসলে একবার হলেও ঢু মারে। মাহফুজের জানা ছিল বিউটি বোর্ডিং এর ব্যাপারটা। তাই একটা ঠিল ছুড়ে দেখে কোন পয়েন্ট কামাতে পারে কিনা।

মাহফুজ বলে কাছেই বিউটি বোর্ডিং। ঐখানে যাবেন কি দেখতে? আরশাদের সাহিত্যে কোন আগ্রহ নেই তাই বিউটি বোর্ডিং কোন আগ্রহ জাগায় না তার মনে। তবে নুসাইবার চোখ ঝলমল করে উঠে। বলে কত কাছে? আমি অনেকবার যাব যাব করেই যাই নি কখনো। মাহফুজ বলে এই তো হাটলে মাত্র পাচ মিনিট লাগবে। আর আরশাদের যে সাহিত্যে আগ্রহ নেই তা আরশাদের মুখ ভংগীতে বুঝে ফেলেছে। তাই আরশাদের জন্য বলে, বিউটি বোর্ডিং এ বিকালের নাস্তা কিন্তু খুব ভাল। কলিজার সিংগারাটা দারুণ করে এরা। খাবারের কথায় একটু যেন আগ্রহ হয় আরশাদের। আরশাদ দোমনা করতে থাকে তবে নুসাইবা সাফ বলে দেয় চল গেলেই দেখবে। ষাটের ঢাকার সাহিত্যের রথী মহারথীরা কোথায় আড্ডা দিত। আর তোমার তো সিংগারা প্রিয় নাস্তা তুমি নাহয় ভাল করে খেয়ে নিও। মাহফুজ টের পায় বৌয়ের কথার বাইরে যাবার ক্ষমতা আরশাদ সাহেবের নেই। তাই সবাই মিলে রওনা হয় বিউটি বোর্ডিং এর দিকে। আরশাদ সাহেবদের গাড়িটা ভার্সিটি ক্যাম্পাসেই রেখে যায় কারণ বিউটি বোর্ডিং এর সামনে গাড়ি পার্কিং এর জায়গা পাওয়া কঠিন হবে। বাহাদুর শাহ পার্ক কে হাতের বামে রেখে মাহফুজ, আরশাদ আর নুসাইবা হাটতে থাকে। হাটতে হাটতে মাহফুজ চারপাশের রাস্তা বাড়ি এইসব নিয়ে বলতে থাকে। পুরান ঢাকার প্রতিটা রাস্তা ইতিহাসের খনি। মাহফুজ এই এলাকায় বড় হওয়ায় হাতের তালুর মত চিনে সব। আর ওর নানার সাথে সাথে ছোট বেলায় ঘুরত অনেক আর নানা ঘুরতে ঘুরতে প্রতিটা রাস্তার নানা ঐতিহাসিক ঘটনা গুলো বলত। এই যে বাহাদুর শাহ পার্ক আগের ভিক্টরিয়া পার্ক। সিপাহী বিদ্রোহের সময় যেখানে নিয়মিত ধরে আনা বিদ্রোহীদের ফাসি দেওয়া হত। মাহফুজ বলে একটার পর একটা গলির ইতিহাস। নুসাইবা আর আরশাদ শুনে। পুরান ঢাকার ভীড়, রাস্তায় মানুষ, ময়লা এড়িয়ে হাটতে হাটতে দুইজনেই মাহফুজের কথা শুনে। একটু পরেই বিউটি বোর্ডিং এর সামনে এসে দাঁড়ায় তিনজন। এখনো পুরান আমলের বাড়ির আমেজটা রয়ে গেছে। বাউন্ডারির ভিতরে এখনো অনেকটা ফাকা জায়গা। হলুদ বিল্ডিং আর সবুজ দরজা। ভিতরে বেশ গাছপালা। ছোটখাট একটা বাগান। বিকালের আলো পড়ে আসছে। এর মধ্যে শহরের এই কোলাহলের মাঝে শান্ত গাছপালা ভরা বাগানটা দেখতে সুন্দর লাগে। আরশাদ সাহেব নুসাইবা কে বলেন তুমি দাড়াও তো ঐ ফুল গাছগুলোর সাথে একটা ছবি তুলে দেই। মাহফুজের দেখে মনে হয় আর দশটা বাংগালী কাপলের মত বুঝি এরা। ছবি তোলার উপলক্ষ্য পেলে আর ছাড়াছাড়ি নেই। মনে মনে একটু হাসে মাহফুজ। নিজ থেকে বলেই আপনারা দুই জন একসাথে দাড়ান না আমি একটা ছবি তুলে দেই। আরশাদ আর নুসাইবা এক সাথে দাঁড়ায়। আরশাদের নতুন আইফোনের স্ক্রিনে দুইজন কে মধ্যখানে রেখে একের পর এক ছবি তুলে দেয়। ছবি তুলতে তুলতে আরশাদ কে ভাল ভাবে খেয়াল করে মাহফুজ। সিনথিয়ার কাছ থেকে শুনে জানে আরশাদ নুসাইবার তিন বছরের বড়। আরশাদের মধ্যপ্রদেশে ভূড়ি জলজ্যান্ত। মাথায় হালকা টাক। উচ্চতা বড়জোর পাচ ফুট চার হবে। গড়পড়তা ছেলেদের তুলনায় তেমন লম্বা না। পেটে ভুড়ি। একজন উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তার সব লক্ষণ চেহারা আর শরীরে। বেশ একটা সবজান্তা ভাব আছে কথায়। আশেপাশের সবাই কে যেন মাপছে দাড়িপাল্লায়। ঠিক তার সমকক্ষ কিনা। মাহফুজের এই ধরণের লোকদের একদম পছন্দ না। এমনিতে অনান্য দিক দিয়ে লোকটা খারাপ না। বউয়ের প্রতি ভাল একটা গদগদ ভাব আছে। অবশ্য সুন্দরী বউয়ের প্রতি এমন গদগদ ভাব থাকার কথা। তার উপর সিনথিয়ার কথা মনে নুসাইবার কোন ফিজিক্যাল সমস্যার কারণে বাচ্চা হওয়া সম্ভব না সেখানে আরশাদ সাহেব এটা নিয়ে কোন কথা বলেন না। সেই দিকটা তার ভাল। আর সব মানুষের সব দিক ভাল বা মন্দ হয় না সাধারণত।

একটু পর ছবি তোলার পালা শেষ হলে ভিতরে গিয়ে বসে সবাই। মাহফুজ হালকা পাতলা গল্প উপন্যাস পড়লেই এককালে সাহিত্যের অত মনযোগী ছাত্র না। আসলে ভার্সিটির শুরুর দিকে ওর মারুফ  বলে এক  বন্ধু ছিল। সাহিত্যে যার অগাধ আগ্রহ। এত কাছেই বিউটি বোর্ডিং। তাই সুযোগ পেলেই আসত আর সাথে আনত মাহফুজ কে। বিউটি বোর্ডিং সম্পর্কিত যাবতীয় জ্ঞান উগড়ে দিত মাহফুজের কাছে। মাহফুজ বরাবর মনযোগী শ্রোতা আর ওর মনে রাখার ক্ষমতা ভাল। আজকে তাই পুরান দিনের সেই সব জ্ঞান আস্তে আস্তে ঝাড়তে থাকে। উপরে উঠে দোতলার এই রুমটায় এক সময় তাসের আড্ডা  বসত শামসুর রাহমান আর তার বন্ধুদের। বাগানের কোণায় ঐ বাধানো চত্ত্বরে চুপচাপ বসে বই পড়তেন রফিক আযাদ। মাহফুজের জ্ঞানে একটু ইমপ্রেস হন নুসাইবা। পলিটিক্স করা ছেলেরা সাহিত্যের এত গভীরে খবর রাখে জানা ছিল না নুসাইবার। এরমধ্যে অর্ডার করা খাবার টেবিলে পরিবেশন করে দোকানের বেয়ারা। আরশাদ খেতে খেতে স্বীকার করেন আসলেই দারুণ স্বাদ খাবারের।


খাবার পর চা খেতে খেতে আরশাদ সাহেব মাহফুজ কে নানা প্রশ্ন শুরু করেন। মনে মনে এই প্রশ্ন গুলোর জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করে ছিল মাহফুজ। কারণ আরশাদ সাহেবের মত মানুষ যে কিনা সব মানুষ কে দাড়িপাল্লায় মেপে যাচাই করতে চাই সেই মানুষের গূরুত্ব তার এই প্রশ্ন করা স্বাভাবিক। মাহফুজ পলিটিক্স করে এটা জানা ছিল আরশাদ সাহেবের। তাই ঢাকার এক পাওয়ারফুল এমপির নাম বলে বলেন গত পরশুদিন একটা কাজে উনার অফিসে এসেছিলেন এমপি সাহেব। সাথে সাথে নুসাইবা পাশ থেকে বলে উঠেন এমপি সাহেবের সাথে আরশাদের ভাল খাতির। মনে মনে হাসে মাহফুজ। প্রশ্ন কমন পড়েছে। এই এমপি মাহফুজদের যুবসংগঠনের সভাপতি ছিল বছর দশেক আগে। তাই এখনো ওদের যুব সংগঠনের নানা প্রোগ্রামে আসেন। সেই সূত্রে ভাল করে পরিচয় আছে। তার উপর মাহফুজের নানা এবং বাবা যদিও রাজনীতির হিসাবে বড় কোন নেতা নন। ঢাকার একটা ওয়ার্ডের সভাপতি ছিল ওর নানা এক সময়। এখন ওর বাবা আরেক ওয়ার্ডের সভাপতি। কিন্তু দুই জনেই দল যখন বিরোধী দলে ছিল তখন রাজপথে সোচ্চার ছিলেন বেশ। তাই দলের মূল পার্টি অফিসে খুব পরিচিত চেহারা দুইজনেই। এইজন্য অনেক বড় বড় নেতাদের সাথে এমনিতেই খাতির তাদের। সেই হিসাবে এই এমপি সাহেব যথেষ্ট জুনিয়র এবং মাহফুজের বাবা কে বেশ সম্মান করেন। এছাড়া এই এমপি খালেদ চাচা কে মেইনটেইন করে ঢাকার পলিটিক্সে। আর এই মূহুর্তে মাহফুজ হচ্ছে খালেদ চাচার হয়ে ঢাকায় যুবসংগঠনের ভিতর পলিটিক্স দেখাশোনা করে। তাই মাহফুজের জন্য এটা ইজি কোশ্চেন। মাহফুজ জানে এধরনের লোকদের সাথে কিভাবে ডিল করতে হয়। তাই বলল দাড়ান, এই বলে সরাসরি এমপি কে ফোন দিল। এমপি ফোন ধরে বলল কি খবর মাহফুজ? মাহফুজ সালাম দিয়ে বলল না ভাই তেমন কিছু না। একজনের সাথে দেখা হল উনি আপনার খুব প্রশংসা করল তাই ভাবলাম আপনাকে জানাই। এমপি জানতে চাইলেন কার কথা বলছ। মাহফুজ আরশাদ সাহেবের নাম বললেন। এমপি বললেন হ্যা উনি দক্ষ অফিসার। আমার কাজ করে দেন মাঝে মাঝে। মাহফুজ বলল উনি আমার সামনেই আছেন। এমপি সাহেব আরশাদের সাথে কথা বলতে চাইলেন। মাহফুজ ফোন দিলেন আরশাদের হাতে। ফোন দেবার সময় লক্ষ্য করলেন একটু বিস্মিত ভাব আরশাদের চেহারায়। আরশাদ সাহেব এক মিনিটের মত কথা বলে ফোনটা আবার দিলেন মাহফুজের হাতে। মাহফুজ কে এমপি সাহেব বললেন তার একটা কাজ আছে পারলে যেন আগামীকাল একটা ফোন দেয় মাহফুজ। মাহফুজ ঠিকাছে বলে সালাম দিয়ে ফোন রেখে দিল। আরশাদ আর নুসাইবা দুইজনেই এখন মাহফুজ কে একটু অবাক চোখে দেখছে। মাহফুজ জানে এতক্ষণ মাহফুজ কে একদম গোণায় ধরছিল না দুইজন। এখন তাদের চোখে মাহফুজ কে নতুন করে মাপছে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ১৬) - by কাদের - 04-06-2023, 12:30 PM



Users browsing this thread: Bansali, 13 Guest(s)