09-01-2023, 06:12 PM
পর্ব ১১
দরজা বন্ধ করেই মনীষা অতো সাত পাঁচ না ভেবে রবিকে জড়িয়ে ধরলো। ধরে নিজে থেকেই রবিকে এলোপাথাড়ি চুমু খেতে শুরু করলো। রবি তো অবাক , মনীষার এই নতুন পরিবর্তিত রূপ দেখে ! মনীষা আজ শাড়ির বদলে নাইটি পড়েছিল। হয়তো মানসিকভাবে সে প্রস্তুত ছিল , আজ হয় এসপার নয় ওসপার। হয় সে অরুণের চিরসাথী হয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দেবে , নাহলে সারাজীবনের জন্য অরুণকে ভুলে রবিকে আপন করে নেবে। তার কপালে দ্বিতীয় পরিণামটাই লেখা হলো।
রবির পরনে ছিল একটা সাদা টি-শার্ট , আর নীল রঙের ট্র্যাকস্যুট। মনীষা রবিকে নিজের বজ্রআঁটুনি দিয়ে জাপটে ধরেছিলো। রবির পিঠে নিজের হাত রেখে রবির টিশার্টটা-কে খামচে ধরেছিলো। ঠিক যেমন কোনো বাঘিনী তার শিকারকে জড়িয়ে ধরে। হ্যাঁ , আজকে অরুণের ময়ূরপক্ষীর ন্যায়ে কোমল মনীষা অরুণেরই বন্ধুর সামনে উত্তেজনার পারদ তুলে তেজস্বীনি বাঘিনী হয়ে উঠেছিল। ঘরোয়া আদর্শ বউয়ের খোলস ছেড়ে মনীষা এখন যৌনতা উপভোগকারী ডার্কসাইটের হর্নি নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিল।
রবি বারবার মনীষাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলো। আরেকবার ভেবে দেখার পরামর্শ দিচ্ছিলো , হিট অফ দা মোমেন্টে সে যেন কোনো ভুল পদক্ষেপ না নেয়। কিন্তু মনীষা কোনো কথা শোনার মতো পরিস্থিতিতে ছিলো না। তার মধ্যে এখন আগুন জ্বলছিল। যে স্বামীকে সে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো সেই স্বামী তাকে একপ্রকার প্রত্যাখ্যান করেছে , তাকে তার বন্ধুর হাতে সোঁপে দিয়েছে। এই অপমানের জ্বালা যে এতো সহজে মেটবার নয় , সেটা রবি বুঝতে পারছিলো না। নারী যখন বেপরোয়া হয়ে পড়ে , তখন যুগে যুগে প্রলয়ের সৃষ্টি হয় , ইতিহাস তার সাক্ষী আছে।
মনীষা বেপরোয়া ভাবে রবির কলার ধরে এদিক ওদিক ওকে চুমু খাচ্ছিলো। মনীষার এই খামখেয়ালীপনাতে রবিও আস্তে আস্তে উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলো। পুরুষমানুষ বলে কথা , আর কতক্ষণই বা নিজেকে সংবরণ করে রাখতে পারতো , যখন উল্টো দিক দিয়ে ডানা কাটা পরীর মতো একটি মেয়ে তাকে চরমতরভাবে সিডিউস করে যাচ্ছে। তাই রবিও ডুব দিলো যৌনতার সমুদ্রে। আর সে বোঝানোর চেষ্টা করলো না মনীষাকে , ঠিক বা ভুলের বিচার করার সে কে ? পাপ পুণ্যের অংক নাহয় সে পরে কষবে , এখনকার মতো এটাই তার কাছে পরম সুযোগ , হাতছাড়া করা উচিত হবে না। তাই রবিও মনীষাকে এবার জড়িয়ে ধরলো। পরস্পরের প্রতি চুম্বন বিনিময় করতে লাগলো।
৫ ফুট ৫ ইঞ্চির উচ্চতা , ৩৬C ৩৪ ৩৮ এর প্রাণঘাতিকা ভূগোল , এবং নেশা ধরানো চোখ , এই সকল কিছুর সমষ্টিগত রূপের নাম হলো , মনীষা। অরুণের বিয়ে করা এই সুশীলা নারীকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়তো গোটা সমাজই । মনীষাকে এক ঝলক দেখার জন্য, ওর ছোঁয়া পাওয়ার জন্য না জানি কতো অবিবাহীত পুরুষপ্রাণ মনে মনে আশায় দিন গোণে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য আজ পর্যন্ত শুধু অরুণের দখলে ছিল। আজ রবির ভাগ্যেও সেই শিকে ছিঁড়েছিলো। রবির মন সুরা পানে নিমজ্জিত ছিল। বোতলের সুরা নয় , যেই সুরা মনীষা নিজের ঠোঁটের ভেতরে রবির মুখ ঢুকিয়ে লালামিশ্রিত চুম্বনের ন্যায় রবিকে পান করাচ্ছিল সেই সুরার কথা বলা হচ্ছে।
হঠাৎ বাড়িতে লোডশেডিং হয়ে গেলো। যাহঃ ! সব অন্ধকার ! কিন্তু তাতে কি। রবি ও মনীষার সেই দিকে কোনো খেয়ালই ছিলোনা। তাদের কাছে এখন দিন রাত , রোদ জল ঝড় বৃষ্টি , যা কিছুই হয়ে যাক , কিছুতেই কিছু যায় আসবেনা, লোডশেডিং হয়ে আলো চলে যাওয়া তো খুব তুচ্ছ ব্যাপার। তারা যেন এখন এই পৃথিবীতেই ছিলোনা। যৌন উত্তেজনার পারদকে জ্বালানি বানিয়ে কল্পনার রকেটে চরে তারা দুজনে শত আলোকবর্ষ পার করে ফেলেছিলো। তাদের নীতিবাদী আত্মা তাদের শরীরের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েগেছিলো। এখন তারা শুধুই কামদেবের আশীর্বাদধন্য যৌনপিপাসী দুটি নর-নারী, যারা একে অপরের শরীর উপভোগ করতে অতিশয় আকুল।
লোডশেডিং এর অন্ধকার নিয়তির দ্বারা ওদের দুজনকে আরো কাছাকাছি আনার একটা গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। এই অন্ধকারে তারা নিজেদের লজ্জা দূর করে আরো কাছে আসার সুযোগ পেয়েছিলো। প্রথমবার রবি মনীষার এই শরীরটা কে এতো কাছ থেকে অনুভব করতে পাচ্ছিলো। যেন মনে হচ্ছিলো মনীষার শরীরটা রবির মধ্যে মিশে গ্যাছে। তাদের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসও বাতাসে একে অপরের সাথে মিশে যাচ্ছিলো।
ওদিকে অরুণ এতোক্ষণ ভারী মন নিয়ে নিজের মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলো। সে জানে আজ রাতে ওই ঘরে মনীষা ও রাহুলের মধ্যে কি হতে চলেছে। কিন্তু হঠাৎ করে আসা লোডশেডিং পরীর প্রায় এসে যাওয়া ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিলো। সে তখন জেদ করতে লাগলো মায়ের কাছে যাওয়ার।
অসহায় অরুণ
কিন্তু অরুণ কি করে ওকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবে ? ওর মা-ই তো ওকে বলেছে আজকে সারারাত সে রবি আংকেলের সাথে এক "বিশেষ কাজে " ব্যস্ত থাকবে। সেটাই অরুণ বারবার ছোট্ট পরীকে বোঝাচ্ছিলো , কিন্তু পরী বুঝতেই চাইছিলো না , শিশু মন হলে যা হয় , একবার বেঁকে বসলে বোঝানো পিতৃপুরুষেরও সাদ্ধি হয়ে ওঠেনা।
না পেরে অরুণ না চাইতেও মনীষার ঘরের দিকে রওনা দিলো , মনীষাকে "ডিস্টার্ব" করার জন্য। ঘরের ভেতরে অন্ধকারে রবি ও মনীষা গভীর চুম্বনে মত্ত ছিল। তারা একে অপরের পোশাক ধরে টান মেরে খুলতেই যাচ্ছিলো কি তখুনি দরজায় কড়া পড়লো , "ঠক ঠক। ....."
দুজনে চমকে উঠলো , যেন সেই পুড়ে যাওয়া দুটি নীতিবাদী আত্মা পুনর্জীবিত হলো। মুহূর্তের মধ্যে আকর্ষণ বিন্দু বিকর্ষণ বিন্দুতে পরিণত হয়ে একে অপরকে একে অপরের থেকে আলাদা করে দিলো। দুজনেরই অবস্থা একদম কাহিল ছিল , মনে হচ্ছিলো কোনো বৃহৎ যুদ্ধে বিধস্ত দুই দেহ জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বুকের ভেতর দম ভরছে । ঘাম ঝরছিল শরীর থেকে , চুল এলো মেলো , গায়ের জামা অর্ধেক ওঠানো , যেটা আগেই বললাম তারা একে অপরের পোশাক খুলতেই যাচ্ছিলো কি দরজায় নক করার শব্দ তাদের কানে এসে পৌঁছলো।
মনীষা যেমন তেমন করে নিজেকে সামলে দরজা খুললো , দেখে অরুণ দাঁড়িয়ে। .......
-- "তুমি ? এখন ? এখানে ?"
একটি শব্দের তিনটি প্রশ্ন করলো মনীষা অরুণকে। অরুণ মনীষার এলোমেলো অগোছালো রূপ দেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে কেন মনীষার এরকম অপ্রস্তুত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বুঝলেও মন যে তখন অরুণের মানতে চাইছিলো না , যে মনীষা কেবলমাত্র তার ছিল , সেই মনীষাকে তার নিজের ঘরে এক অন্য পুরুষের সাথে এরকম অগোছালো অবস্থায় দেখতে কোনো স্বামীরই বা ভালো লাগে। ওহঃ , আমি তো ভুলেই গেছিলাম , অরুণ তো এখন মনীষার স্বামী নয় , প্রাক্তন স্বামী , হয়তো মনীষাও সেটাই মেনে নিয়েছিল।
"কি হলো , কিছু বলো ? কি হয়েছে ?" , মনীষার ফের প্রশ্নবাণে অরুণের গভীর ভাবনা কেটে চেতনা ফিরলো। অরুণ বললো , "আসলে পরীর ঘুম আসছিলো না , লোডশেডিং হয়েগেছে তো , তাই এই অন্ধকারে খানিকটা ভয় পেয়ে সে তোমাকে চাইছে। "
Fit and Muscular Robi
মনীষা কয়েক সেকেন্ড ভেবে রবির দিকে পিছন ফিরে তাকালো। রবি ইশারা করে ওকে অরুণের সাথে পরীর কাছে যেতে বললো। তারপর মনীষা মুখ ঘুরিয়ে অরুণের দিকে তাকিয়ে অরুণকে বললো , "ঠিক আছে , তুমি যাও। আমি আসছি। "
অরুণ চুপচাপ সেখান থেকে ফিরে এলো। মায়ের আসার আশ্বাস মেয়ে কে দিলো। মনে মনে ভাবলো যে এই কিছু মুহূর্তের মধ্যে মনীষা কতোটা বদলে গ্যাছে। ওর কথার ভঙ্গিমাটাও কিরকম একটু অশ্রদ্ধাশীল হয়েছে তার প্রতি। সে আরো ভাবলো যে মনীষার এখন নিজের মেয়েকে দেখতে আসতেও রবির নিয়মমাফিক অনুমতি লাগছে ? এই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে মনীষা এতোটা অধিকার রবিকে দিয়ে বসেছে !