19-12-2022, 12:32 PM
রূপান্তর: ৪
পাঁচী- ‘তারপর কি হইল’।
ভিখু- তরফদার বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি রতন আর আমার সাগরেদটাকে কইলাম ‘দুইটা মার্ডার হইল, RAB অনেক জ্বালাবো, তারউপর আবার আমার হাত ভালো না, তোরা টাহা পয়সা, সোনা-দানা সব সমান ভাগ করে যে যার মত পারস পালাই যা। কোনোদিন সময় ভালো হলি আবার দ্যাহা হবে, আবার দল হবে। আমি কোনোদিন ডাহাতির টাহা-পয়সা নেই নাই। তয় এইবার আমারে ভাগ দিস। রতন তুই তোর ভাগ আর আমার ভাগ নিয়া চাঁদপুরে চইলা যাবি। চাঁদপুরে তুই একা থাকবি। আমি পরে তোরা সাথে যোগাযোগ করমু’।
রতন- ‘ওস্তাদ আমি যদি আফনার টাহা পয়সা মাইরা দেই?’
ভিখু- ‘তুই মানুষ তাই এই কাম করবিনা, পশু হইলে করতি’।
ভিখু ঠিকই মানুষ চিনেছিল। কেননা রতন তার জীবন দিয়ে দেবে কিন্তু ওস্তাদের কোনো ক্ষতি হতে দেবেনা। আর ওস্তাদের মাল মাইরা দেয়ার কথা মনে পরলে তার কেমন যেন শরীর গুলিয়ে বমি আসে! ওস্তাদের প্রতি তার এমনই ভক্তি।
পাঁচী- ‘ভাগে কয়টাহা পাইছিলি?’
ভিখু- রতনরে পরে ফোন দিয়া জিগাইছিলাম। আমরা একেক জন ভাগে ১ কোটি ৩ লাখ নগদ টাহা। ২ কেজির বেশি সোনা আর প্রায় ৩ কেজির উপরে রূপা পাইলাম। ৩ বউর গহনা কম ছিলনা। কিন্তু ভাইগ কাছে হুণ্ডির টাহা বাদে নিজেগো নগদ টাহা বেশি ছিলনা’।
পাঁচী- ‘ভিখু তা অহন তুই কি করবি? ঢাহা যাইতাছস, ঢাহা তো আর ডাহাতি করতে পারবিনা’।
ভিখু- ‘না আমি আমার সব ঠিক করছি। ডাহাতি বাদ। বাদ দিতাম না। RAB ই এতদিনে আমার একগাছ বাল ছিড়তে পারেনাই। আমি ক্যান ডাহাতি বাদ দিমু? কিন্তু পারলাম না ডাইন হাতটারে নিয়া। এক হাতে তো আর ডাহাতি করন যায়না! তাই ঠিক করলাম তোরে নিয়া ভাগমু আর ঢাহা গিয়া রতনরে লইয়া যেকোনো একটা ব্যাবসা বানিজ্য ধরমু। টাহা পয়সা আমাগো ২ জনের ভালোই আছে। তোর আর আমার আর ভিক্ষা করন লাগবোনা।
ভিখু- আমার কাহিনী তো হুনলি, এবার তোর কাহিনী ক’।
পাঁচী- একটা দির্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে ‘কি আর কমু? সবই খালি দুঃখ আর দুঃখ। বাবা মারা গেল ছোড বেলায়, মারা যাওনের পর জায়গা জমি যেটুকু ছিল তাই বেইচা বড় ভাইডা সৌদি গেল। কয়েক বছর পর দেশে আইসা বিয়া করল। আর বিয়া কইরাই শেষ! বাড়িতে আর যোগাযোগ করতনা এমনকি দেশে আসলেও বাড়িতে আসত না। খবর পাইলাম ভাই আমার শ্বশুর বাড়িতে বিল্ডিং করেছে, শালারে বিদেশে নিয়া গেছে, শালিরে অনেক টাহা খরচা কইরা বড় ঘরে বিয়া দিছে। তখন মনে মনে দেশ-গ্রামে প্রচলিত কথাটা বলতাম আর তা হইল ‘ভাই না হয়ে ভাইর শালা হইলে ভালো হইত!’
‘যা হউক অনেক কষ্টে আমার পড়া শুনা চলতে লাগল। মাথা ভালো ছিল, অঙ্ক খুব ভালো বুঝতাম, ইংরেজিও খুব ভালো পারতাম। গরিব ছিলাম ভাত জোটাইতে কষ্ট হইত তাই প্রাইভেট পড়তে পারতাম না। আর সেই কারণেই ক্লাশে ফার্স্ট হতে পারতাম না। তাই বইলা ৩ এর নিচেও কোনোদিন নামিনাই। ক্লাশ ৮ এ পড়ার সময় ৪-৫ মাস যাওয়ার পর কলেজের মিতালী দিদি একদিন আমার মায়রে কইল পাঁচীর মা মাইয়ার মাথাডা ভালো, অরে আমার কাছে পাঠাই দিও। সামনে বৃত্তি পরীক্ষা, অঙ্কটা দেহাই দিলে ভালো করতে পারবে। ভয় নাই টাহা পয়সা কিছু দেওন লাগব না। এই বলে সে আমার দুধের দিকে কেমন করে তাকিয়ে রইল। আর বলল মাঝে মাঝে আমার ঘর-দুয়ার একটু পয়-পরিষ্কার করে দিলেই হবে।
মায় আমারে কইল এই পাঁচী তুই দিদির কাছে যাবি, দিদি তোরে পড়াইব আর তুই দিদির থালা বাসন, ঘর দোর প্রতিদিন পরিষ্কার করে দিবি।
পাঁচী- ‘তারপর কি হইল’।
ভিখু- তরফদার বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি রতন আর আমার সাগরেদটাকে কইলাম ‘দুইটা মার্ডার হইল, RAB অনেক জ্বালাবো, তারউপর আবার আমার হাত ভালো না, তোরা টাহা পয়সা, সোনা-দানা সব সমান ভাগ করে যে যার মত পারস পালাই যা। কোনোদিন সময় ভালো হলি আবার দ্যাহা হবে, আবার দল হবে। আমি কোনোদিন ডাহাতির টাহা-পয়সা নেই নাই। তয় এইবার আমারে ভাগ দিস। রতন তুই তোর ভাগ আর আমার ভাগ নিয়া চাঁদপুরে চইলা যাবি। চাঁদপুরে তুই একা থাকবি। আমি পরে তোরা সাথে যোগাযোগ করমু’।
রতন- ‘ওস্তাদ আমি যদি আফনার টাহা পয়সা মাইরা দেই?’
ভিখু- ‘তুই মানুষ তাই এই কাম করবিনা, পশু হইলে করতি’।
ভিখু ঠিকই মানুষ চিনেছিল। কেননা রতন তার জীবন দিয়ে দেবে কিন্তু ওস্তাদের কোনো ক্ষতি হতে দেবেনা। আর ওস্তাদের মাল মাইরা দেয়ার কথা মনে পরলে তার কেমন যেন শরীর গুলিয়ে বমি আসে! ওস্তাদের প্রতি তার এমনই ভক্তি।
পাঁচী- ‘ভাগে কয়টাহা পাইছিলি?’
ভিখু- রতনরে পরে ফোন দিয়া জিগাইছিলাম। আমরা একেক জন ভাগে ১ কোটি ৩ লাখ নগদ টাহা। ২ কেজির বেশি সোনা আর প্রায় ৩ কেজির উপরে রূপা পাইলাম। ৩ বউর গহনা কম ছিলনা। কিন্তু ভাইগ কাছে হুণ্ডির টাহা বাদে নিজেগো নগদ টাহা বেশি ছিলনা’।
পাঁচী- ‘ভিখু তা অহন তুই কি করবি? ঢাহা যাইতাছস, ঢাহা তো আর ডাহাতি করতে পারবিনা’।
ভিখু- ‘না আমি আমার সব ঠিক করছি। ডাহাতি বাদ। বাদ দিতাম না। RAB ই এতদিনে আমার একগাছ বাল ছিড়তে পারেনাই। আমি ক্যান ডাহাতি বাদ দিমু? কিন্তু পারলাম না ডাইন হাতটারে নিয়া। এক হাতে তো আর ডাহাতি করন যায়না! তাই ঠিক করলাম তোরে নিয়া ভাগমু আর ঢাহা গিয়া রতনরে লইয়া যেকোনো একটা ব্যাবসা বানিজ্য ধরমু। টাহা পয়সা আমাগো ২ জনের ভালোই আছে। তোর আর আমার আর ভিক্ষা করন লাগবোনা।
ভিখু- আমার কাহিনী তো হুনলি, এবার তোর কাহিনী ক’।
পাঁচী- একটা দির্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে ‘কি আর কমু? সবই খালি দুঃখ আর দুঃখ। বাবা মারা গেল ছোড বেলায়, মারা যাওনের পর জায়গা জমি যেটুকু ছিল তাই বেইচা বড় ভাইডা সৌদি গেল। কয়েক বছর পর দেশে আইসা বিয়া করল। আর বিয়া কইরাই শেষ! বাড়িতে আর যোগাযোগ করতনা এমনকি দেশে আসলেও বাড়িতে আসত না। খবর পাইলাম ভাই আমার শ্বশুর বাড়িতে বিল্ডিং করেছে, শালারে বিদেশে নিয়া গেছে, শালিরে অনেক টাহা খরচা কইরা বড় ঘরে বিয়া দিছে। তখন মনে মনে দেশ-গ্রামে প্রচলিত কথাটা বলতাম আর তা হইল ‘ভাই না হয়ে ভাইর শালা হইলে ভালো হইত!’
‘যা হউক অনেক কষ্টে আমার পড়া শুনা চলতে লাগল। মাথা ভালো ছিল, অঙ্ক খুব ভালো বুঝতাম, ইংরেজিও খুব ভালো পারতাম। গরিব ছিলাম ভাত জোটাইতে কষ্ট হইত তাই প্রাইভেট পড়তে পারতাম না। আর সেই কারণেই ক্লাশে ফার্স্ট হতে পারতাম না। তাই বইলা ৩ এর নিচেও কোনোদিন নামিনাই। ক্লাশ ৮ এ পড়ার সময় ৪-৫ মাস যাওয়ার পর কলেজের মিতালী দিদি একদিন আমার মায়রে কইল পাঁচীর মা মাইয়ার মাথাডা ভালো, অরে আমার কাছে পাঠাই দিও। সামনে বৃত্তি পরীক্ষা, অঙ্কটা দেহাই দিলে ভালো করতে পারবে। ভয় নাই টাহা পয়সা কিছু দেওন লাগব না। এই বলে সে আমার দুধের দিকে কেমন করে তাকিয়ে রইল। আর বলল মাঝে মাঝে আমার ঘর-দুয়ার একটু পয়-পরিষ্কার করে দিলেই হবে।
মায় আমারে কইল এই পাঁচী তুই দিদির কাছে যাবি, দিদি তোরে পড়াইব আর তুই দিদির থালা বাসন, ঘর দোর প্রতিদিন পরিষ্কার করে দিবি।