10-12-2022, 06:53 PM
রেবেকা ভয়ে সিটকে গিয়ে আরো বেশি করে আমার শরীরের সাথে মিশে গেল। সেটা দেখে ওরা আরো বেশি খিস্তি করতে লাগলো। আমি রেবেকাকে ওদের দিকে কান না দিয়ে সোজা হাঁটতে বললাম। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হলো না। পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ছেলেগুলো আমাদের পিছু নিয়েছে। প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম, এই অচেনা জায়গায় রাতের অন্ধকারে একটা যুবতী মেয়েকে নিয়ে আমি একা, যে মেয়েটার সাথে বলার মতো কোন সম্পর্ক আমার নেই। আমি একা এতগুলো ছেলের সাথে মারপিট করে পারবো না। ভয়ে আমার শরীর কাঁপতে লাগলো, রেবেকাকে বোধ হয় আমি আর বাঁচাতে পারলাম না, হায়েনার দল কিছুক্ষণের মধ্যেই ওকে ছিঁড়ে খুঁড়ে খাবে, আমার সামনেই। ছেলেগুলো আরো বেশি খিস্তি করতে লাগলো, বলতে লাগলো, “সুন্দরী, শুধু একজনকে দিলে তো বেশি সুখ পাবে না, এসো আমাদেরকেও সাথে নাও, আমরা তোমাকে অনেক অনেক সুখ দেবো, আদর দেবো”। রেবেকা ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো, ও এতো জোরে আমার হাত চেপে ধরেছিল যে ওর নখগুলো আমার হাতের মাংসের মধ্যে গিঁথে যাচ্ছিল।
আমি তবুও সাহস না হারিয়ে রেবেকাকে বললাম, “ভয় পেয়ো না, আমি আছি, তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না, পা চালাও, আরো জোরে”। আমি রেবেকাকে টেনে হিঁচড়ে হনহন করে হাঁটতে লাগলাম। কিন্তু তবুও ছেলেগুলো আরো কাছে চলে এলো। রেবেকার জুতা ওর হাতেই ছিল, কাজেই ওর দৌড়াতে সমস্যা হবে না, ভেবে নিয়ে আমি এবারে ওর হাত চেপে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললাম, “জাস্ট দৌড়াও”। বলেই ওকে নিয়ে আমি প্রায় উড়ে চললাম, জীবনেও এতো জোরে দৌড়াইনি। রেবেকা শুধু পা চালিয়ে যাচ্ছিল, ওর পুরো ভার আমি টেনে নিয়ে দৌড়ালাম। ছেলেগুলোও আমাদের পিছন পিছন “ধর, ধর, পালালো” বলতে বলতে দৌড়াতে লাগলো। প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তখনও, কিছুদুর গিয়েই আমি একটা টিমটিমে ঘোলা আলো দেখে সেদিকে দৌড়ালাম। পৌঁছে দেখি একটা মুদীর দোকান। আমি রেবেকাকে নিয়ে সোজা দোকানের ভিতরে ঢুকে গেলাম, রেবেকা প্রচন্ডভাবে হাঁফাচ্ছিল। দোকানী লোকটা বেশ বয়স্ক, আমি দোকানীকে সব বললাম, উনি বসতে দিয়ে পানি এনে খেতে দিলেন।
একটু জিরিয়ে নিয়ে আমি উঁকি দিয়ে দেখলাম, ছেলেগুলো একটা গাছের নিজে জটলা করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, সম্ভবত আমরা বেরুলেই ধরবে মনে করে। দোকানী লোকটা আমাদের সব কথা শুনে বললো, “আপনেরা চিন্তা করবেন না, চকিদার আইলে আপনাগোরে চিযারম্যানের বাড়িত পাঠায়া দিমুনে, ঐহানে রাইতটা কাডায়া ভুরে যাইবেন গিয়া”। আমরা বসে রইলাম। প্রায় আধাঘন্টা পরেই হারিকনে আর লাঠি হাতে গ্রামের চৌকিদার এদিকে এলে দোকানী তাকে সব বললো। চৌকিদার আমাদেরকে সাথে করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে গেল। ওখান থেকে চেয়ারম্যানের বাড়ি এতো কাছে ভাবতেও পারিনি। পরে মনে পড়লো, আসবার সময় এই বাড়িটা দেখেছিলাম, গ্রামের মধ্যে এতো সুন্দর বাড়ি দেখে অবাকও হয়েছিলাম। চৌকিদার লোকটা আমাদেরকে বৈঠকখানার বারান্দায় রেখে ভিতরে গেল চেয়ারম্যানকে খবর দিতে। কিছুক্ষনের ভিতরেই একটা বয়স্ক, দাড়িওয়ালা লোক বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলো। দেখেই বোঝা যায়, এই-ই চেয়ারম্যান, ফিনফিনে সাদা পাঞ্জাবী আর সাদা ধবধবে লুঙ্গিতে দারুন দেখাচ্ছিল লোকটাকে, দেখলেই সম্মান করতে ইচ্ছে হয়।
চেয়ারম্যান এগিয়ে এসে ডাকলো, “কই, কে এসেছে?” চৌকিদার কি মনে করে রেবেকাকেই ডাকলো, “এই যে মা জননী, চিয়ারম্যান ছার আপনেরে বুলায়, আহেন”। রেবেকা এগিয়ে গেল এবং চেয়ারম্যানকে আদ্যোপান্ত সব জানালো, কিভাবে আসতে দেরি হয়েছে, কিভাবে ফর্ম ফিলাপ হয়েছে, তারপর বৃষ্টি এসেছে, তারপর কিভাবে ছেলেগুলি তাড়া করেছে সব। চেয়ারম্যান বললেন, “তা মা, তোমার সাথে কে এসেছে?” এই প্রশ্নের উত্তরে রেবেকা যেটা বললো, সেটা শুনে আমার বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। কারন রেবেকা স্পষ্ট, দ্বিধাহীন স্বরে বললো, “আমার স্বামী, ঐতো ঐখানে দাঁড়িয়ে আছে” এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে ডাকলো, “কই, এদিকে এসো”। ধনুক থেকে তীর ছোঁড়া হয়ে গেছে, বিপদ থেকে বাঁচতে এখন আমাকে রেবেকার স্বামী হিসেবে অভিনয় করে যেতে হবে। আমি এগিয়ে গিয়ে সালাম দিয়ে দাঁড়ালাম। চেয়ারম্যান আমাকে ভাল করে দেখলেন এবং বললেন, “ঠিক আছে, তোমরা আমার এলাকায় এসে বিপদে পড়েছ, তোমাদের দেখাশুনা করা আমার দায়িত্ব। রাতে আমার বাড়িতেই থাকো, সকালে আমার লোক তোমাদেরকে সাথে করে নিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসবে”।
আমি তবুও সাহস না হারিয়ে রেবেকাকে বললাম, “ভয় পেয়ো না, আমি আছি, তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না, পা চালাও, আরো জোরে”। আমি রেবেকাকে টেনে হিঁচড়ে হনহন করে হাঁটতে লাগলাম। কিন্তু তবুও ছেলেগুলো আরো কাছে চলে এলো। রেবেকার জুতা ওর হাতেই ছিল, কাজেই ওর দৌড়াতে সমস্যা হবে না, ভেবে নিয়ে আমি এবারে ওর হাত চেপে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললাম, “জাস্ট দৌড়াও”। বলেই ওকে নিয়ে আমি প্রায় উড়ে চললাম, জীবনেও এতো জোরে দৌড়াইনি। রেবেকা শুধু পা চালিয়ে যাচ্ছিল, ওর পুরো ভার আমি টেনে নিয়ে দৌড়ালাম। ছেলেগুলোও আমাদের পিছন পিছন “ধর, ধর, পালালো” বলতে বলতে দৌড়াতে লাগলো। প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তখনও, কিছুদুর গিয়েই আমি একটা টিমটিমে ঘোলা আলো দেখে সেদিকে দৌড়ালাম। পৌঁছে দেখি একটা মুদীর দোকান। আমি রেবেকাকে নিয়ে সোজা দোকানের ভিতরে ঢুকে গেলাম, রেবেকা প্রচন্ডভাবে হাঁফাচ্ছিল। দোকানী লোকটা বেশ বয়স্ক, আমি দোকানীকে সব বললাম, উনি বসতে দিয়ে পানি এনে খেতে দিলেন।
একটু জিরিয়ে নিয়ে আমি উঁকি দিয়ে দেখলাম, ছেলেগুলো একটা গাছের নিজে জটলা করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, সম্ভবত আমরা বেরুলেই ধরবে মনে করে। দোকানী লোকটা আমাদের সব কথা শুনে বললো, “আপনেরা চিন্তা করবেন না, চকিদার আইলে আপনাগোরে চিযারম্যানের বাড়িত পাঠায়া দিমুনে, ঐহানে রাইতটা কাডায়া ভুরে যাইবেন গিয়া”। আমরা বসে রইলাম। প্রায় আধাঘন্টা পরেই হারিকনে আর লাঠি হাতে গ্রামের চৌকিদার এদিকে এলে দোকানী তাকে সব বললো। চৌকিদার আমাদেরকে সাথে করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে গেল। ওখান থেকে চেয়ারম্যানের বাড়ি এতো কাছে ভাবতেও পারিনি। পরে মনে পড়লো, আসবার সময় এই বাড়িটা দেখেছিলাম, গ্রামের মধ্যে এতো সুন্দর বাড়ি দেখে অবাকও হয়েছিলাম। চৌকিদার লোকটা আমাদেরকে বৈঠকখানার বারান্দায় রেখে ভিতরে গেল চেয়ারম্যানকে খবর দিতে। কিছুক্ষনের ভিতরেই একটা বয়স্ক, দাড়িওয়ালা লোক বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলো। দেখেই বোঝা যায়, এই-ই চেয়ারম্যান, ফিনফিনে সাদা পাঞ্জাবী আর সাদা ধবধবে লুঙ্গিতে দারুন দেখাচ্ছিল লোকটাকে, দেখলেই সম্মান করতে ইচ্ছে হয়।
চেয়ারম্যান এগিয়ে এসে ডাকলো, “কই, কে এসেছে?” চৌকিদার কি মনে করে রেবেকাকেই ডাকলো, “এই যে মা জননী, চিয়ারম্যান ছার আপনেরে বুলায়, আহেন”। রেবেকা এগিয়ে গেল এবং চেয়ারম্যানকে আদ্যোপান্ত সব জানালো, কিভাবে আসতে দেরি হয়েছে, কিভাবে ফর্ম ফিলাপ হয়েছে, তারপর বৃষ্টি এসেছে, তারপর কিভাবে ছেলেগুলি তাড়া করেছে সব। চেয়ারম্যান বললেন, “তা মা, তোমার সাথে কে এসেছে?” এই প্রশ্নের উত্তরে রেবেকা যেটা বললো, সেটা শুনে আমার বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। কারন রেবেকা স্পষ্ট, দ্বিধাহীন স্বরে বললো, “আমার স্বামী, ঐতো ঐখানে দাঁড়িয়ে আছে” এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে ডাকলো, “কই, এদিকে এসো”। ধনুক থেকে তীর ছোঁড়া হয়ে গেছে, বিপদ থেকে বাঁচতে এখন আমাকে রেবেকার স্বামী হিসেবে অভিনয় করে যেতে হবে। আমি এগিয়ে গিয়ে সালাম দিয়ে দাঁড়ালাম। চেয়ারম্যান আমাকে ভাল করে দেখলেন এবং বললেন, “ঠিক আছে, তোমরা আমার এলাকায় এসে বিপদে পড়েছ, তোমাদের দেখাশুনা করা আমার দায়িত্ব। রাতে আমার বাড়িতেই থাকো, সকালে আমার লোক তোমাদেরকে সাথে করে নিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসবে”।