Thread Rating:
  • 36 Vote(s) - 3.28 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চাওয়া-পাওয়া by Kamonamona (সমাপ্ত)
#81
খেয়ে দেয়ে ঘরে এসে ফোনটা ব্যাগ থেকে বের করলাম।
অন করে প্রথমে মামীকে কল দিলাম। সে তো রেগেমেগে আগুন।
-কাল থেকে হাজার বার কল দিচ্ছি, মোবাইলটা বন্ধ করে রেখেছো কেন? মানুষের মনে কি যায় তা কখনো বুঝতে চাইলে না তুমি?
-সরি মামী, মাথা ঠিক ছিলো না।
একে একে সবাইকে কল দিয়ে খোঁজ খবর নিলাম।
আজব জিনিস এই মোবাইল। এতোদূর থেকে মুহুর্তে সবার সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। আর এখন মোবাইল তো প্রায় সবার হাতে হাতে।
দরজা বন্ধ করে সিগারেট ধরালাম। বাবা নেই এখন আর অতো ভয় কিসের ঘরে সিগারেট খেতে? তারপরও মনে কি রকম জানি লাগছে।
১৯৯৭ তে বাড়ী ছেড়ে ছিলাম আর আজ ২০১০। অনেক কিছু বদলে গেছে, আমিও বদলে গেছি। আমার লক্ষ্মী সৎ মা-ও।
তার কথা মনে হতে আবার শরীরটা শিরশির করে উঠলো। ইস চেহারাটা কী রকম হয়ে গেছে তার। আগে ছিলো পর্নস্টার সামান্তা রেইনের মতো, এখন লাগছে চ্যানেল প্রিস্টনের মতো।
স্বাস্থ্য ভারী হয়েছে, তাতে যেন আরো কামুকী লাগছে। শুধু অভাব-অনটনে জৌলুশ হারিয়ে ফেলেছে। মনে মনে বললাম আবার সব জৌলুশ ফিরিয়ে দিবো সোনা, আবার ফিরিয়ে দিবো। হ্যাঁ, আরও হারিয়ে গেছে সেই মন মাতানো গজ দাঁতের হাসি আর চঞ্চল হরিনীর ছন্দ। অভাব অনটনে মানুষের সহজাত প্রবৃদ্ধি হারিয়ে যায়।
ঠকঠক শব্দে চিন্তায় ছেদ পড়লো, তাড়াতাড়ি সিগারেট নিভিয়ে বললাম
-দরজা খুলা আছে
মা এলো, ঘরে ধোয়ার গন্ধ পেয়ে জোরে করে নিশ্বাস নিলো। এটা যে সিগারেটের গন্ধ তা বুঝতে পেরে ঠোঁট টিপে হেসে দিলো। আমি তা দেখে লজ্জা পেলাম। হাজার হলেও মা, যতোই সৎ হোক।
-চা আনি?
-না থাক,  এখন আর অতো খায় না।
-কেন? আগে তো খুব পচ্ছন্দ করতে?
-এখন করি না।
-সময়ের সাথে সাথে সব ভালো লাগাগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলেছো?
-আরে না, তা না। সময়ের সাথে সাথে চলতে হয় তাই (সে কি “সব ভালো লাগা” বলে তার কথাও বুঝালো, তাকেও তো আমার ভালো লাগতো)
-এতটা কঠিন করে নিজেকে তৈরি করেছো তাহলে?
-না হয়ে যে উপায় ছিলো না।
-আমার কারণে তোমার সুন্দর জীবনটা এরকম হয়ে গেছে। এই বলে হু হু করে কাঁদতে লাগলো।
-আরে আরে করো কি, প্লিজ কেঁদো না, প্লিজ।
-আমি বুঝি রেজা বুঝি, তাইতো আসার পর থেকে একবারও আমাকে মা বলে ডাকো নি। মা বলে ডাকতে ঘৃণা হলে নাম ধরে অন্তত ডাকো।
লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে গেলো। কি জবাব দিবো এখন?
-না “মা” এমনটা না। আসলে আমি ভীষণ লজ্জিত। আমার পুরনো পাপ আমাকে প্রতি মুহূর্তে তাড়া করছে।
-ওটা একটা ভুল ছিলো রেজা। শুধু তোমার ভুল নয় আমারও ভুল ছিলো। আমার অনেক বড় ভুল হয়েছিলো তোমার বাবা কে বলা।
-বাদ দাও ওসব কথা ।
-না রেজা, আজ আমাকে বলতে দাও।
-মা, রনি কোথায়?
-ঘুমিয়ে গেছে।
-এতো তাড়াতাড়ি?.
-গ্রামে তো সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমায়, শহরের মানুষেরা জাগে।
-তুমিও ঘুমাতে যাও, সকাল সকাল রওনা দিবো।
-কি সুন্দর কথা ঘুরিয়ে দিলে রেজা, অনেক বদলে গেছো তুমি। আগের সেই মিষ্টি রেজা নেই, হয়ে গেছে পাথরের মতো শক্ত।
-আমি আগের মতোই আছি মা, হয়তো সময়ের বিবর্তনে একটু অন্য রকম হয়ে গেছি।
মা আবার কাঁদতে লাগলো।
-আহ, কি হয়েছে তোমার?
-অনেক কিছু রেজা, অনেক কথা বলার আছে।
-ঢাকা গিয়ে বলো, অফুরন্ত সময় পড়ে আছে।
-না, আজকে এক্ষুনি বলবো। না বলতে পারলে বুক ফেটে যাচ্ছে রেজা। এই বলে হাও মাও করে কাঁদতে কাঁদতে আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।
আমি পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
-আচ্ছা আচ্ছা বলো। তোমার মনে যা চাই, যা আছে, যা বলতে চাও বলো। এই বলে টেনে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলাম।
-তুমি শুয়ে পড়ো, আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
-আরে না না, তুমি বলো কি বলতে চাও।
মা আমাকে জোর করে শুইয়ে দিয়ে নিজেও আমার পাশে আধশোয়া হয়ে শুয়ে পড়লো।
আমার তো চোখ কপালে উঠলো। ব্যাপার কি মালে হঠাৎ এতো পিরিত দেখাচ্ছে কেন? আমি ছাড়া তাদের গতি নেই বলে, না কি সত্যি সে অনুতপ্ত? না কি অন্য কিছু?
মা আমার মাথাটা টেনে তার কোলের উপরে রাখলো। চুলে নরম হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, খুব ভালো লাগলো তার এই মমতা।
শাড়ীর আঁচল দিয়ে ঢাকা বড় বড় দুধ দুটো আমার মুখের ওপর ঝুলে আছে। সামান্য একটু মাথা উঁচু করলেই তা মুখে ঠেকবে। মা’র শরীরের সেই পুরনো মন মাতানো ঘ্রাণ। ইস এখন যদি একটু আদর করতে পারতাম?
না, নিজেকে সামলে নিলাম, সেই ভুল দ্বিতীয়বার করতে চাই না।
-মা?
-হু।
-হেলেনা, রনি জেগে গিয়ে তোমাকে খুজবে না তো?
-না, তাদের তো সকালের আগে ঘুমই ভাংবেনা৷
-খুব কষ্ট পেয়েছো এতোদিন তাই না?
-পেলে পেয়েছি, এখন তো তুমি আছো আর কোন কষ্ট নেই আমার।
-সরি মা, আমার অনেক আগেই আসা উচিৎ ছিলো।
-যাকগে ওসব, তুমি বিয়ে করেছো?
-পরে বলবো।
-তারমানে করো নি?
-কেন একথা মনে হলো তোমার?
-আমাকে আগে বউ না দেখিয়ে তুমি বিয়ে করতেই পারো না।
-আর যদি করে থাকি?
-তাতেও আমার দুঃখ নেই। শুধু বউমাকে বলবো তার বাড়ীতে এক কোনে আমাদের জায়গা দিতে৷
-ছি ছি কি বলছো এসব, তার বাড়ী হবে কেন। বাড়ীতো তোমার, বরং সে লাটসাহেবের বেটি বলবে তোমাকে একটু জায়গা দিতে।।
-ধন্যবাদ রেজা। আর কিছু চাইবার নেই আমার, এই সন্মানটুকুই আমার জন্য যথেষ্ট।
-সারাজীবন এমনি থাকবে তুমি মা, তোমার জায়গা আমার বুকে আমার মাথায়।
-আমাকে ক্ষমা করে দাও রেজা। তোমার জীবনটা আমার কারণে কষ্টে ভরে গেছে, হাসি আনন্দের সময় কতো না জানি কষ্ট করতে হয়েছে।
-আবার ওকথা বলছো কেন, তোমার কোন দোষ নেই, আসলে আমি বখে গিয়েছিলাম।
-আরে না, সে বয়সে ছেলেরা একটু আধটু ওরকম করেই। আসলে আমি রিএ্যাক্ট বেশি করে ফেলেছিলাম, পরে যখন নিজের ভুল ভাংলো ততোদিনে তুমি তো দুরে চলে গেলে, জানো তুমি ছাড়া বাড়ি খালি খালি মনে হতো, একা একা কতো চোখের জল ফেলেছি, কতো মানুষকে খুঁজতে পাঠিয়েছি, কেউ খবর এনে দিতে পারেনি।
-ছাড়ো না ওসব কথা।
-না সোনা বলতে দাও, বাপের বাড়ী গিয়ে বড় ভাইকে বললাম শহরে গিয়ে তোমাকে খুঁজে আনতে।
সে আমার মুখের দিকে চেয়ে তাই গেলো। মা বাড়ীর পিছনে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরলো
-বল কেন রেজা বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে? কি হয়েছে সত্যি করে বল।
আমিও থামতে না পেরে সব বলে দিলাম। মা সব শুনে বললো
-আরে পাগলী ছেলেরা তো বড় হয় মা চাচিদের দেখে দেখে। তাদের দেখে দেখে তো যৌবনে পদার্পণ করে, তাই প্রথম কামনার নারী হয় সে সব মা, চাচি, খালা, ভাবী। তাদের দেখে দেখে উত্তেজিত হয়, কেউ সামলে নিয়ে চুপিচুপি কামনা মিটায়, আর যে সামলাতে না পারে সে কিছু একটা করে বসে। তখন সেই মহিলার কাজ হলো তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত করা অথবা তার কামনা কে সঠিক রাস্তা দেখানো। সেখানে তুই তো দেখি সব কিছু বার্স্ট করে দিয়েছিস বোমার মতো। তোর উচিৎ ছিলো তাকে সুন্দর করে সব কিছু বুঝিয়ে বলা। পরে শান্ত হলে বলতি যে আমি তোমার মা, আমাকে অনন্ত সে সন্মানটুকু দাও তাতেই দেখতি সে তার ভুল বুঝতে পারতো। তার চোখ থেকে রঙিন চশমা সরে গিয়ে বাস্তবতা দেখতে পেত। আর যদি তাতেও কাম না হতো তাহলে কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিতি। মা’র কথা শুনে আমি আরো ভেংগে পড়লাম। এ আমি কি করেছি, নিজ হাতে তোমার জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছি, তোমার বাবাকে এসব বলে দেওয়া মানে যে তোমার জীবন ধ্বংস করা। সারাজীবন তার সামনে তোমাকে মাথা নিচু করে থাকতে হবে। আমিই তোমার জীবন ধ্বংসের কারিগর।

মনে মনে ভাবলাম, তুমি যদি ফিরে আসো তাহলে তোমার বাবাকে বলবো আমি রেজাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাকে মিথ্যে বলেছি। এতে যদি তোমার বাবা আমাকে শাস্তি দেই, দিক।
[+] 6 users Like MNHabib's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: চাওয়া-পাওয়া by Kamonamona (সংগৃহীত) - by MNHabib - 24-04-2022, 02:26 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)