Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
।।৯৬।।
   
 

বাপি ডাকছে শুনে প্রজ্ঞা দ্রুত নীচে নেমে এল।বিজন চৌধুরী বেরোবার জন্য তৈরী।প্রজ্ঞা কাছে গিয়ে বলল,আমাকে ডাকছিলে?
বিজন চৌধুরী মেয়ের মাথায় হাত দিয়ে ঠোটে ঠোট চেপে কি যেন ভাবছেন।প্রজ্ঞা বুঝতে পারে বাপি সিরিয়াস কিছু বলবে।মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েক পলক দেখে বললেন,শোন মা ওকে প্রদোষের ওখানে আসতে বলিস।
--বাপি যদি--।
--আমার গেস্ট তুই চিনিস কাউকে বলার দরকার নেই।
প্রজ্ঞা হাসল বাপি নিশ্চয়ই কিছু একটা করতে চায়।বাপির উপর তার অগাধ বিশ্বাস।মেশো বলছিল দাদা নিশ্চয়ই কলকাটি নেড়েছে।বাপি অবশ্য কিছু বলেনি তবু তারও মনে হয়েছে মেশোর কথা ঠিক।
বিজন চৌধুরী গাড়ীতে উঠতে উঠতে বললেন,তাহলে মা আসি?
ঘটা করে বিয়ে দিতে পারেন নি সেজন্য ছেলে পাস করে দেশে ফিরেছে বলে একটা পার্টির আয়োজন করেছেন।মোটামুটি কাছের আত্মীয়-স্বজন আর কিছু রেসপেক্টেবল গেস্টকে বলা হচ্ছে।পার্টি হবে সল্ট লেকে একটা হল ভাড়া করা হয়েছে।মস্তানকে বলতে বলল বাপি।তুমি আমার দ্বিতীয় জন্মদাত্রী।কথাটা মনে পড়তে রক্তিম হয় মুখ।মস্তান তাকে মায়ের সম্মান দিয়েছে।মস্তান এমনি খুব স্মার্ট তার কাছেই একটু যা নার্ভাস হয়ে পড়ে।সেজন্য ভাবছে না তার চিন্তা মাকে নিয়ে।দাদাভাইয়ের ডাক্তার বন্ধু বান্ধবরাও আসবে, রমিতার বাপের বাড়ীর লোকজনও আসবে।পাচজনের সামনে মাম্মী কোনো সিন ক্রিয়েট না করে। বাপি কি করতে চায় অনুমান করতে পারে না।অত ভাবার দরকার কি বাপি বলেছে,বলে দেবে। 
আশালতা কয়েকবার গেছেন সল্টলেকে রমিতা কোনদিন তাল্পুকুরে আসেনি।মেয়েটিকে স্বার্থপর মনে হয়।মাসীমণির কাছে শুনেছে গাড়ীতে পুটিমাসীকে সিমলা পৌছে দিয়ে গেছিল কিন্তু গাড়ী থেকে নামেনি।দাদাভাইয়ের ফিরে আসার সময় হয়ে গেছে বলে এড়িয়ে গেছে।দাদাভাইটাও হয়েছে বউয়ের ন্যাওটা।মাম্মীর কাছে শুনেছে দাদাভাই নাকি আজকাল ড্রিঙ্ক করে। এদিক দিয়ে বলতে নেই মস্তান আজে বাজের ছেলের সঙ্গে মিশলেও তার কোনো নেশা ণেই।ভীষণ কাছে পেতে ইচ্ছে করছে মস্তানকে।মাম্মীর ডাক শুনে প্রজ্ঞা দ্রুত দোতলায় উঠে যায়। 
ঘরে ঢুকে মনে হল মাম্মী কাউকে ফোন করল।প্রজ্ঞা জিজ্ঞেস করে,মাম্মী ডাকছিলে?
--কাল তো কলেজ ছুটি আজই তোর যাবার এত তাড়া কিসের?
--বললাম না জরুরী কাজ আছে।
--কি কাজ পুটির সঙ্গে কথা বললাম ওতো কিছু বলল না।
মাসীমণির সঙ্গে কথা হয়েছে।মাম্মী কিছু সন্দেহ করছে নাতো?প্রজ্ঞা বলল,মাসীমণি জানবে কি করে?দাদাভাইয়ের পার্টিতে আমার কজন বন্ধুকে বলব। 
--যা খুশি করো।আশালতা বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।
মুচকি হেসে সোফায় শরীর এলিয়ে দিল।বাপি মস্তানকে বলতে বলল কেন অনুমান করার চেষ্টা করে।চোখের সামনে ওর মুখটা ভেসে ওঠে।ওর ঐটা বেশ লম্বা।নর্দমার ধারে হিসি করতে দেখেছে কাউকে কাউকে,এত বড় নয়।ক্লাসে স্যার ফ্রয়েড পড়াতে পড়াতে বলছিলেন, penis envy-র কথা।লিঙ্গ ঈর্ষা ফ্রয়েডের একটা মতবাদ।যেখানে বলা হচ্ছে পুরুষ জনন অঙ্গের মত একটি অঙ্গ মেয়েদের ণেই বলে মেয়েরা পুরুষদের তুলনায় নিজেদের হীন ও হেয় জ্ঞান করে।যদি কোনো মেয়ে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিতে যায় তাহলে বুঝতে হবে আসলে হেয়-বোধের গ্লানি থেকে আত্মরক্ষার প্রয়াস মাত্র অর্থাৎ  defence reaction.এই যুক্তি প্রজ্ঞা মানতে পারে না।সেকি মস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিতে যায়?মস্তান কেমন মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার যোনীর দিকে তাকিয়েছিল।মনে হচ্ছিল যোনী না থাকার জন্য ওর মনে দীনতা। চুষে চুষে কি হাল করেছে,ভাবলে এখনো শুর শুর করে ওঠে।দৃশ্যটি কল্পনা করে প্রজ্ঞা শরীরে শিহরণ অনুভব করে।মস্তান তাকে মায়ের মত ভাবে।মা কি কখনো সন্তানকে ঈর্ষা করে?ইচ্ছে করছে মস্তানের মাথাটা কোলে নিয়ে মুন্তু সোনা বলে আদর করে।ভগবানের কাছে কৃতজ্ঞ মস্তানের মত স্বামী পেয়েছে বলে।হঠাৎ খেয়াল হয় বেলা হয়েছে।প্রজ্ঞা হেয়ার রিমুভার ক্রীম নিয়ে বাথরুমে ঢুকলো।
দেবীকাকে নিয়ে রান্না ঘরে আশালতা।আগের রান্না করত সে চলে গেছে।দেবীকাকে নতুন রেখেছেন।মেয়েটা রান্না খারাপ করেনা কিন্তু আশালতার দেবীকা নামটা পছন্দ নয়।রান্নার লোকের নাম মোক্ষদা খেমঙ্করী মানান সই।মেয়েটা খেয়ে দেয়ে বেরোবে।দেবীকা রান্না করছে আশালতা তত্তাবধান করছেন।
প্রজ্ঞা তলপেটের নীচে ভাল করে হেয়ার রীমুভার লাগিয়ে অপেক্ষা করছে।কিছু সময় পর তোয়ালে দিয়ে ঘষলে একেবারে পরিস্কার হয়ে যাবে।নীচু হয়ে ক্রীম লাগাবার সময় নজরে পড়ল আয়নায় প্রতিফলিত একজোড়া পাছার ফাকে ঠোট মেলে যোনী।মনে হল মস্তানকে বলতে হবে একদিন পিছন দিয়ে ঢোকাতে।সারা গায়ে সাবান মেখে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে পড়ে,সারা শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়তে থাকে জল।নিজের ফিগার দেখে নিজেই মুগ্ধ সে কেন পুরুষকে ঈর্ষা করতে যাবে।ছেলেরাই তার দিকে হ্যাংলার মত চেয়ে থাকে। 
--কিরে বেলি তোর হল?
মাম্মীর গলা পেয়ে প্রজ্ঞা তোয়ালে দিয়ে গা মুছে বেরিয়ে এল।দিন দিন লাউডগার মত বাড়তে বাড়তে আগুনে চেহারা হয়েছে মেয়েটার।দেখে শিউরে ওঠেন। বিয়ে না হওয়া অবধি স্বস্তি নেই।দীর্ঘশ্বাস ফেললেন আশালতা।পরীক্ষাটা হয়ে গেলে আর দেরী করবেন না।
--আমার কথার তো কোনো দাম নেই।কদিন পর পরীক্ষা এখন এসব পার্টি-ফার্টি না করলে কি হত?
মাম্মীর কথার দাম নেই,কথাটা শুনে হাসে প্রজ্ঞা।এ বাড়ীতে মাম্মীর অমতে কারো কিছু করার সাহস আছে।
খাওয়া দাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে দিলেন হিমানীদেবী।মনুটা কতমাস পরে এল আবার কোথায় গেল,একা একা ভাল লাগে না।বেলিটাও আসছে না কদিন।অবশ্য ফোন করে খবর নিয়েছে।কানে শোনা আর চোখে দেখা কি এক।বেলির বাবা এসেছিল বলে নি।ফ্লাটে থাকতে থাকতে কেমন মায়া পড়ে গেছে।ওনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে দেওয়ালে দেওয়ালে।দেওয়ালে ঝোলানো ছবিটায় চোখ আটকে যায়।সব ফেলে রেখে দিব্যি চলে গেলেন।দাদার সংসারে থেকেও অনাথের মত জীবন কাটছিল ওনার কাছে এসে আকড়ে ধরেছিলেন প্রানপণ।ভাবতে ভাবতে এক সময় চোখ লেগে যায়।
সূর্য ঢলে পড়েছে পশ্চিমে।পৃথিবীর আলো শুষে নিয়ে এক সময় ছায়া ঘনিয়ে আসে।হঠাৎ বাজতে ঘুম ভাঙ্গে হিমানীদেবীর।চোখ মেলে তাকালেন।কলিং বেল বাজলো না?ভুল শোনেন নি তো ভেবে আবার চোখ বুঝলেন।আবার বেল বেজে উঠল।এবার বেশ স্পষ্ট হিমানীদেবী উঠে বসলেন।ভর সন্ধ্যে বেলা আবার কে এল?খাট থেকে নেমে দরজার দিকে এগিয়ে যান।মনু বলেছিল হুট-হাট দরজা খুলবে না।দরজা ঘেষে দাঁড়িয়ে গলা তুলে বললেন,কে-এ-এ?
--মামণি আমি।
ওমা বেলি হিমানীদেবি উচ্ছ্বলিত হয়ে দরজা খুলে দিলেন।প্রজ্ঞা ঢুকতেই জিজ্ঞেস করেন,কোথা থেকে আসছিস মা?
--তাল পুকুর।তুমি ঘুমোচ্ছিলে?
--আর ঘুম আমার কি ঘুমোবার জো আছে।তুই বোস--চা খাবি তো?
প্রজ্ঞা জড়িয়ে ধরে বলল,এই না হলে আমার মামণি,মুখ ফুটে না বলতেই বুঝে যায়।
--পাখার নীচে বোস।আমি চা করছি।
মনসিজের ঘরে গিয়ে বসল।মস্তান তা হলে এখনো আসেনি।আজ কি আসবে না?মোবাইল বাজতে স্ক্রিনে চোখ পড়তে অবাক হল।এতদিন পরে মন্দা কি ব্যাপার?কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--তুই এখন কোথায়?
প্রজ্ঞা একটু ভেবে বলল,তাল পুকুর।
--কলকাতায় এলে আয় একদিন।
--ভার্সিটি কেমন চলছে?
--এইতো পরীক্ষা চলে এল।
প্রজ্ঞার খেয়াল হয় দুজনে একই সঙ্গে শুরু করেছিল।প্রজ্ঞা বলল,কিছু হল?
ওপাশ থেকে হাসি শোনা যায়।প্রজ্ঞা বলল,হাসছিস?
--একটা ছেলে আমার সিনিয়ার--গতবার পরীক্ষা দিল--।
--তাহলে আর কি হবে?
--যোগাযোগ আছে,ফোনে প্রায়ই কথা হয়।ফোন করলে ছাড়তে চায় না। 
--ছেলেটা কেমন?
--এমনি ভাল দেখতে শুনতে খারাপ নয় কিন্তু--।
--কিন্তু কি?  
--আমার মনে হয় ওর মধ্যে একটা কমপ্লেক্স আছে।
--মানে?
--ওদের অবস্থা মনে হয় তেমন ভাল নয়।আমি ওকে এ্যাক্সেপ্ট করবো কিনা--একটা দ্বিধারভাব কাজ করছে।
হিমানী দেবী চা নিয়ে ঢুকছে দেখে প্রজ্ঞা বলল,এখন রাখছি পরে কথা বলব।
প্রজ্ঞা হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিল।হিমানীদেবী জিজ্ঞেস করলেন,মনু কবে আসবে কিছু বলেছে?
--ভেবেছিলাম তো আজ  আসবে,দেখো হয়তো কাল আসতে পারে।
--তুই একটু বোস--থাকবি তো?
--তাহলে কোথায় যাব।
হিমানীদেবী হেসে চলে গেলেন।মন্দা বলছিল ফোন করলে ছাড়তে চায় না।ফ্রয়েড বলছেন সেক্সের ব্যাপক অর্থ প্লেজ্যাণ্ট মানে সুখানুভূতি।ফোনে কথা বলার মধ্যেও পরোক্ষ একটা সুখানুভুতি কাজ করে।শিশু যখন মাতৃদুগ্ধ পান করে তাতেও সে সুখানুভব করে।একজন কুস্তিগীর যখন প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে কিম্বা একটা গান শুনে তৃপ্তি পাওয়া সেক্সের সূক্ষানুভূতি।কখনো জেনে কখনো না জেনে আমরা যৌনাচরণ করি।প্রজ্ঞা কথাগুলো নিয়ে মনে মনে আন্দোলিত করতে থাকে।বিছানায় পড়ে থাকা মস্তানের বালিশটা তুলে বুকে চেপে ধরল। 
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - by kumdev - 14-02-2022, 11:31 AM



Users browsing this thread: 45 Guest(s)