26-01-2022, 08:54 AM
পরের দিন সকাল আট’টায় এয়ার ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীন ফ্লাইট টেক-অফ করলো। যথাসময়ে ক্যাপটেন সকল যাত্রীদের এয়ার ইন্ডিয়াই ভ্রমণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিবাজী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করালো।
ট্যাক্সি ড্রাইভার কে ঠিকানা বলে দিয়ে উঠে বসলাম।
সরাসরি ড্রিমস গ্রুপের হেড অফিসের নিচে নামলাম। ট্যাক্সি ভাড়া মিটিয়ে।
সুন্দরী রিসেপশনিস্টকে আমার আসার কারণ বললাম। (কথা হচ্ছে হিন্দি তে)
আমার এ্যাপয়নমেন্ট নেই শুনে বলে- রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করে যান। দুই দিন পরে আসবেন।
বলে কি মাগী! এতোদূর থেকে এসে বলে কি না দুই দিন পরে আসবেন। দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা।
ফোনটা বের করে ডিএমডি স্যার কে কল দিলাম...–(যদিও ব্যাঙ্গালোর ছাড়তেই কল রোমিং হয়ে গেছে)
আমি- স্যার ভালো মসিবতে পড়ে গেছি তো। এখানের রিসেপশনিস্ট ম্যাডাম তো দুই দিন পরে আসতে বলছে।
ডি এম ডি- তাই, তা সেই ম্যাডাম কে একটু ফোন টা দাও তো...
-এই যে, হ্যালো ম্যাডাম।
ম্যাডাম দেখি আমার দিকে না চেয়ে খটখট করে কম্পিউটারের কি-বোর্ড টিপে চলেছে...
-একটু কথা বলুন স্যারের সাথে।
-আপনার স্যারের সাথে আমি কেন কথা বলবো?
-আরে ম্যাডাম উনি শুধু আমার স্যার না, আপনারও স্যার। লাইনে আছেন এ কোম্পানির ডিএমডি জয় সিং জাদব। স্যারের নাম শুনে তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে।
-দিন দিন প্লিজ। ফোনটা তার হাতে দিলাম।
-গুড আফটারনুন স্যার। -ইয়েস স্যার। -ইয়েস স্যার। -জী স্যার
কথা বলা শেষে ফোনটা আমাকে দিয়ে বের হয়ে এলো।
-আসুন স্যার প্লিজ। আপনাকে সরাসরি চেয়ারম্যান স্যারের কাছে নিয়ে যেতে বলেছে।
-তাই। চলুন তাহলে...এতোক্ষণে মাগী লাইনে এসেছে। কেমন স্যার স্যার করছে আমাকে। মাগীর পিছন পিছন তার দোল খেলানো পাছার ঢেউ দেখতে দেখতে লিফটে উঠলাম
চেয়ারম্যান স্যারের কাছ থেকে ছাড়া পেতে পাক্কা দেড় ঘন্টা কেটে গেলো। বুড়ো পাঁকা ঝুনো মাল। খুটিয়ে খুটিয়ে কাগজপত্র চেক করে তবেই সাইন করলো।
নিচে এসে সেই রিসেপশনিস্ট কে পেলাম। আমাকে দেখে উঠে দাড়িয়ে...। স্যার লাঞ্চ করবেন তো। ছোট স্যার বার বার করে বলে দিয়েছে......
-না।সময় নেই। পরের বার আসলে নিশ্চয় করবো। অবশ্য তখন যদি এসে আপনাকে পাই তবেই।
আমার কথা শুনে খুশিতে গদগদ হয়ে
-পরের বার কতদিন পার আসবেন স্যার?
-এখন থেকে দুই মাস পর পর রেগুলার আসবো বলে নিচের ঠোঁট টা একটু নিজে নিজে জীহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে নিলাম...
-আমাকে আপনি রেজা বলে ডাকতে পারেন। মাগী তো তা দেখে লজ্জায় গালগুলো লাল করে দিলো।
-আমি চেরী কোটালি। আপনি আমাকে চেরী বলতে পারেন।
-তাই। আচ্ছা চেরী আমাকে একজন লোক জোগাড় করে দিতে পারো? আসলে বোম্বেতে আমি প্রথম তো। এখানের কিছু চেনা নেই। কিছু কেনাকাটা করার ছিলো।।
-অবশ্যই পারবো...এই বলে একজন পিয়ন কে ডাক দিলো। আমাক দেখিয়ে সেই পিয়নকে বললো।
-উনি ছোট স্যারের মেহেমান। একটু মার্কেট যাবে। আপনি সাথে যান।
চেরী কে বাই বলে পিয়ন চাচাকে বললাম।
-আংকেল আমি তো নতুন। আপনি আমাকে বাচ্চাদের খেলনা, খাবারের সপ ও মিষ্টির দোকানে নিয়ে চলেন। তাকে আংকেল ডেকেছি দেখে খুশিতে মুখটা ঝলমল করে উঠলো।
-চলুন স্যার আপনাকে আমি আজ বোম্বে শহর ঘুরিয়ে দেখাবো।
-না আংকেল। আজ সময় নেই। পরের বার আসলে আপনাকে সাথে নিয়ে পুরো শহর ঘুরবো।
এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো। বের করে দেখি দিদি কল দিয়েছে।
আমি- হ্যালো দিদি।
দিদি- কোথায় তুমি রেজা?
আমি- আমি তো অফিসের সামনে।
দিদি- কাজ শেষ হয়েছে?
আমি- ঘন্টা দুয়েক লাগবে। কেন দিদি?
দিদি- তোমার জিজাজী তো আজ অফিস যায় নি তুমি আসবে বলে। সে বলছে তুমি বাসা চিনে আসতে পারবে কি না। তাই সে তোমাকে নিতে যেতে চাইছে।
আমি- তাহলে তো অনেক ভালো হয়।
দিদি- এই নাও জিজাজীর সাথে কথা বলে ঠিকানা দাও।
আমি সুনাইনার পতির সাথে কথা বলে ঠিকানা দিয়ে দিলাম।
সে বললো ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে পৌঁছে যাবে। যদি না ট্রাফিকে ফেঁসে যায়।
পিয়ন আংকেলকে নিয়ে রেষ্টুরেন্টে ঢুকে পেট পূজো করলাম। তারপর তাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে দিদির মেয়ের জন্য জামা কাপড় কিনলাম। জুনিয়র হরলিক্স, শুকনো দুধের টিন, ছোট বাচ্চাদের পাস্তুরিতো খাবার ও সবার জন্য কয়েক পদের মিষ্টি মিঠাই।
শেষে কি মনে করে দিদির জন্য দুইটা থ্রিপিস। দিদির হ্যাঁসবেন্ড এর জন্য এক সেট শার্ট প্যান্ট। যদিও প্যান্ট তার কোমরে হবে কি না জানিনা। তাই আমার কোমরের মাপে নিয়েছি। যদি তার না লাগে। তাহলে আমি পরবো।
চেরীর জন্যও একটা থ্রি-পিস নিয়ে নিলাম। জানি না ছোরি নিবে কি না। না নিলে দিদির কপালে জুটবে।
শপিং শেষ করে যখন অফিসের সামনে এলাম। তখন ঘড়ি দেখি আমারই তিন ঘন্টা লেগে গেছে।
রিসেপশনের দিকে চেয়ে দেখি। পেট মোটা কুমড়োর মতো এক লোক বসে বসে পেপার পড়ছে।
চেরীর কাছে গিয়ে তার দিকে ব্যাগটা বাড়িয়ে দিয়ে–
-এটা তোমার জন্য চেরী। নিলে খুব খুশি হবো।
চেরি শপিং ব্যাগটা নিয়ে মেলে ধরে দেখে...
-খুব সুন্দর। আপনার পচ্ছন্দ আছে।
-ও হ্যাঁ আপনাকে নিতে এক ভদ্রলোক এসেছে। ঐ যে উনি। বলে কুমড়ো কে দেখিয়ে দিলো।
চেরী কে বাই বলে কুমড়োর কাছে গেলাম।
বিন্দাশ বাবু তো এক মনে নিউজ পেপার পড়ছে।
-হ্যালো জিজাজী।
-তুমিই রেজা?
-হ্যাঁ।
-আমি ভিরু গ্রিস। সুনাইনার হ্যাঁসবেন্ড। হাত মিলিয়ে বাইরে এলাম।
পিয়ন আংকেল ট্যাক্সি ডেকে এনে ব্যাগগুলো ডিকিতে তুলে দিলো ।
আমি একটা পাঁচশো টাকার নোট তার পকেটে গুজে দিলাম। বললাম-আবার দেখা হবে চাচা।
ট্যাক্সিতে উঠতেই ভিরুদা গ্লাস নামিয়ে সিগারেট ধরালো। আমাকেও একটা দিলো
-আরে নাও নাও সমস্যা নেই। সিগারেট টানছি আর ভাবছি।
যার জামাই এরকম একটা কুমড়ো। সে আর দেখতে কতো ভালো হবে...। যে এমন লোককে বিয়ে করেছে। তারমানে সেও দেখতে আহমরি কিছু নয় যে একে রিফিউজ করে অন্য কাওকে বিয়ে করবে। দেখা যাক কি আছে সামনে—
ট্যাক্সিতে ভিরুদার সাথে অনেক কথা হলো। আমার আর রামের ব্যাবসা বাণিজ্য নিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করলো। আমিও তার সম্বন্ধে ধারণা পেলাম।
যখন ট্যাক্সি দিদির ভাড়া বাসার সামনে এলো ততক্ষণে গোধুলির আলো-আঁধারের খেলা শুরু হয়ে গেছে।
ভিরুদা জোর করে ভাড়া দিয়ে ট্যাক্সি বিদায় করলো
দুজনে ভাগাভাগি করে ব্যাগগুলো নিয়ে একটা একটা করে সিঁড়ি ভেংগে তিন তলায় উঠলাম।