17-01-2022, 04:12 PM
ধান বাছাই , ঝাড়াই মাড়াই সিদ্ধ করার কাজ শেষ । জোএল সর্দার প্রতিশ্রুতি মতো বিয়ের দিন পাকা করে ফেলেছেন । ৯ঐ ফাল্গুন বিয়ে হবে, দিন ১০ এক বাকি । মধুর আগে দেখে নি ধানের হাড়িতে কি করে ধান সিদ্ধ করতে হয় । কেমন গন্ধ তার । কত কাঠ পড়াতে হয় ধান সিদ্ধ করতে । সেগুলো শোকাতে হয় সময় মতো । প্রতিশ্রুতি মতো সব কিছুই তৈরী রেখেছেন জোএল সর্দার আগে ভাগে।
মাত্র ১৭ মন ধান এসেছে মধুরের ২ বিঘে জমি থেকে । তাই বা কম কি । গ্রামের লোকে মধুর কে নিয়ে প্রস্তুতি করলেও মন ভরে নি জোএল এর । ডাকলেন মধুর কে । তার মধুপুরে সে থাকতে পারে , কিন্তু তার বাড়ির পশ্চিমের ঘরটায় থাকবার দিন শেষ ।
সন্ধ্যে হয়ে এসেছে । দুজনকেই মুখোমুখি হতে হবে আজ । ভাবি শাশুড়ি মা আড়ালে ঠাকুর প্রণাম সারছেন ।
জোএল: " আমি আমার প্রতিশ্রুতি মতো আমার ২০ বিঘে জমি তোমার নাম করে দিয়েছি , এই তার কাগজ । আর এটা ৫ লক্ষ টাকার সার্টিফিকেট , তোমার বাবাকে আমি খবর দিয়েছি যে বিয়ে ৯ঐ ফাল্গুন । এবার তুমি চাইলে চলে যেতে পারো তোমার বাড়িতে । আর আমার কথা অনুযায়ী যদি তোমার প্রতিশ্রুতি রাখতে হয় তাহলে এই গ্রামেই যেকোনো জায়গায় একটা জায়গা নিয়ে ঘর করে তুমি থাকতে পারো চৈতি কে নিয়ে । কারণ তুমি হেরে গেছো ! "
মধুর : "নাঃ ওহ টাকা বা জমি লাগবে না ! যখন আমি ভাবি যে সামান্য চাষ করে যদি আপনি আমায় এতো টাকা ,এতো জমি দিতে পারেন , আপনার মেয়ের দিকে তাকিয়ে , তাহলে আপনি কত পরিশ্রম করতে পারেন !আর কতটা ভালোবাসতে পারেন আপনার মেয়েকে । আমি তার সিকি পরিশ্রম করি নি এ কদিনে । ভালো হয়তোঃ বাসি আমি চৈতি কে , ওর ১৮ বছরের পরিশ্রম যা আপনি দিয়েছেন , তার সামনে আমি নিতান্তই সামান্য । আমার কথা আমি রাখবো । অনেক দিন বাড়ি যাই নি । দু চার দিনের জন্য কি বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারি ?"
জোএল উত্তর দিলেন না , ঘরের ভিতরে চলে গেলেন । হয় তো মধুরের মতো খাঁটি হিরেটাকে এতো সহজে পেয়ে চোখের জল সামলাতে পারেন নি ।
কদম ফুলের গাছটা বেড়ি করে দাঁড়িয়ে চৈতি তাকিয়ে আছে ফাঁকা গ্রামের সন্ধ্যে নেমে যাওয়া রাস্তায় । দু একটা হাটুরে ফিরেও আসছে হয়তো বাঁক কাঁধে নিয়ে । মধুর এগিয়ে গেছে সন্ধ্যের মায়া কাটিয়ে , ফিরে আসতেই হবে তাকে। নাঃ এ গ্রামে নয়, এই মাটিতে । এখানেও মধু আছে , আনন্দের , বেচে থাকার , স্বপ্নের , হয়তো তাতে শহরের ভাষা নেই । ভাষা আছে প্রথম কদম ফুলের , ভাষা আছে মাটির , ভাষা আছে সোঁদা গন্ধে ডুবে যাওয়া পুকুর ঘাটের জলের বৃত্যাকার তরঙ্গ গুলোতে । হয়তো এমনি ভাষা নিয়ে চৈতি তাকিয়ে ছিল মধুরের দিকে, প্রথম দেখেছিলো মধুর কে একটা কদম ফুল হাতে রেখে ।
সমাপ্ত
মাত্র ১৭ মন ধান এসেছে মধুরের ২ বিঘে জমি থেকে । তাই বা কম কি । গ্রামের লোকে মধুর কে নিয়ে প্রস্তুতি করলেও মন ভরে নি জোএল এর । ডাকলেন মধুর কে । তার মধুপুরে সে থাকতে পারে , কিন্তু তার বাড়ির পশ্চিমের ঘরটায় থাকবার দিন শেষ ।
সন্ধ্যে হয়ে এসেছে । দুজনকেই মুখোমুখি হতে হবে আজ । ভাবি শাশুড়ি মা আড়ালে ঠাকুর প্রণাম সারছেন ।
জোএল: " আমি আমার প্রতিশ্রুতি মতো আমার ২০ বিঘে জমি তোমার নাম করে দিয়েছি , এই তার কাগজ । আর এটা ৫ লক্ষ টাকার সার্টিফিকেট , তোমার বাবাকে আমি খবর দিয়েছি যে বিয়ে ৯ঐ ফাল্গুন । এবার তুমি চাইলে চলে যেতে পারো তোমার বাড়িতে । আর আমার কথা অনুযায়ী যদি তোমার প্রতিশ্রুতি রাখতে হয় তাহলে এই গ্রামেই যেকোনো জায়গায় একটা জায়গা নিয়ে ঘর করে তুমি থাকতে পারো চৈতি কে নিয়ে । কারণ তুমি হেরে গেছো ! "
মধুর : "নাঃ ওহ টাকা বা জমি লাগবে না ! যখন আমি ভাবি যে সামান্য চাষ করে যদি আপনি আমায় এতো টাকা ,এতো জমি দিতে পারেন , আপনার মেয়ের দিকে তাকিয়ে , তাহলে আপনি কত পরিশ্রম করতে পারেন !আর কতটা ভালোবাসতে পারেন আপনার মেয়েকে । আমি তার সিকি পরিশ্রম করি নি এ কদিনে । ভালো হয়তোঃ বাসি আমি চৈতি কে , ওর ১৮ বছরের পরিশ্রম যা আপনি দিয়েছেন , তার সামনে আমি নিতান্তই সামান্য । আমার কথা আমি রাখবো । অনেক দিন বাড়ি যাই নি । দু চার দিনের জন্য কি বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারি ?"
জোএল উত্তর দিলেন না , ঘরের ভিতরে চলে গেলেন । হয় তো মধুরের মতো খাঁটি হিরেটাকে এতো সহজে পেয়ে চোখের জল সামলাতে পারেন নি ।
কদম ফুলের গাছটা বেড়ি করে দাঁড়িয়ে চৈতি তাকিয়ে আছে ফাঁকা গ্রামের সন্ধ্যে নেমে যাওয়া রাস্তায় । দু একটা হাটুরে ফিরেও আসছে হয়তো বাঁক কাঁধে নিয়ে । মধুর এগিয়ে গেছে সন্ধ্যের মায়া কাটিয়ে , ফিরে আসতেই হবে তাকে। নাঃ এ গ্রামে নয়, এই মাটিতে । এখানেও মধু আছে , আনন্দের , বেচে থাকার , স্বপ্নের , হয়তো তাতে শহরের ভাষা নেই । ভাষা আছে প্রথম কদম ফুলের , ভাষা আছে মাটির , ভাষা আছে সোঁদা গন্ধে ডুবে যাওয়া পুকুর ঘাটের জলের বৃত্যাকার তরঙ্গ গুলোতে । হয়তো এমনি ভাষা নিয়ে চৈতি তাকিয়ে ছিল মধুরের দিকে, প্রথম দেখেছিলো মধুর কে একটা কদম ফুল হাতে রেখে ।
সমাপ্ত