16-01-2022, 08:36 PM
সেদিন সন্ধে বেলা জোএল সদ্দার গেছে শহরে সার কিনতে , বাড়িতে কেউ নেই । মন আর মানলো না মধুরের । কত দিন কথা বলে নি চৈতির সাথে । তুলসী তলায় বাতি জ্বালিয়ে সারির আচঁল বুকে জড়িয়ে প্রণাম করলো চৈতি । সে ঠাকুর কে ডাকে , যেন তার বাবা মধুর কে ক্ষমা করে দেয় । সে জানে মধুর পারবে না ধান তুলতে ।
টেনে নিলো খড়ের গাদায় চৈতি কে ।
পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো মধুর । একটু থেমে বললো "তোমার জন্য আমি সব পারি ! হয় তো ৩০ মন ধান আমি তুলতে পারবো না , কিন্তু ধান আমি ফলাবোই ।"
খড়ের গাদায় চৈতির শরীর টা নিয়ে খেলতে থাকে মধুর । মানা করে না চৈতিও । শুধু মাথায় হাত বুলিয়ে বলে "খুব কষ্ট তাই না , এই যে সব কাজ একা একা !"
মধুর বলে: নাঃ তোমার মায়ের রান্না খুব সুন্দর , আমার অভ্যেস হয়ে গেছে !"
চৈতির পেলব মুখে একটা চুমু খায় । "যাও কেউ এসে পড়বে !"
চৈতি বুকে জড়িয়ে ধরে মধুর কে ।"উঁহুঁ যেতে ইচ্ছে করছে না ।"
মধুর : আমি কথা দিয়েছি , যাও আর তো ৩ টি মাস !"
মধুর কে ছেড়ে দাবায় উঠে যায় চৈতি । মা বেরিয়ে আসে ঘর থেকে । "কিরে কার সাথে কথা বলছিস উঠোনে ?"
চৈতি মাথা নামিয়ে ঘরে চলে যায় ।
ভাবি শাশুড়ি মা ডাকে "মধুর চা খাবে ?"
মধুর গোলার গামছা দিয়ে শরীর টা ঝাড়তে ঝাড়তে বলে "নাঃ থাক ! "
চৈতির মা বলে "ভিতরে এসে বসো !"
মধুর তাকিয়ে থাকে চৈতির মায়ের দিকে । সত্যি যেন মায়ের মতো বড়ো লাল টিপ্ , লাল পাড় থান শাড়ি , মনে অহংকার নেই , বরং তার প্রতি মমতা উপচে পড়ছে , না না বেইমানি করা যাবে না কিছুতেই ।
নিজের মুখ ঘুরিয়ে নেয় বাধ্য হয়ে ফিরে যায় তার পচ্ছিমের ঘরের দিকে । কদম গাছে অনেক ফুল ধরেছে । অন্ধকার দাবায় বসে একটা কদম ফুল নিয়ে গন্ধ শুকতে থাকে । কাল মাধব বাবু আসলে শিখে নিতে হবে আরো অনেক কিছু ।
মাধব: কি ভায়া কাল যে বলেছিলুম তুতে গুলে দিতে , দিয়েছিলে ?
মধুর: হ্যাঁ কাল বিকেলেই দিয়ে দিয়েছি ।
মাধন: গাছের বার নিয়ে ভেবো না গোসাই , এবার সার দেবার পালা বুঝলে । দেখো চাড্ডি ইউরিয়া-N এনে ছড়িয়ে দিও নি । বলদের গোবর গুলো করলে টা কি ? জমি সমান করার সময় একটু ফসফরাস মেরে দিলে পরে গাছের বারণ ভালো হতো , যাগগে সে তো দেরি হয়ে গেছে । কাল গিয়ে আরকানসাস নাইট্রোজেন নিয়ে আসবে বুঝলে , আমি শিখেছি কাওকে বলোনি যেন ।
তোমার জমিতে জল কমে গেছে । একটু জল দিয়ো গোসাই বাকি সব ঠিক হয়ে যাবে ।
ভালো করে শুনে নাও । আগে জলে গুলে গোবর ছড়িয়ে দেবে । পরের দিন যা বললাম ওটা এনে আগেই জলে গুলবে না । একটা ধানের পাতা ছিড়ে রং মেলাবে । দেখবে সারের প্যাকেটে কালার ইনডেক্স আছে । যে রঙের সাথে মিল খাবে ততো টা মাত্রা জলে গুলে সমান ভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে সব গাছের গোড়ায় । মাপ যোগ কানাই না হয় বলে দেবে ।
এই সমান ভাবে ছড়িয়ে দেয়ার উপর তোমার বিয়ে নির্ভর করবে গোসাই । এতে তোমার শশুরও জব্দ বুঝলে ।
আমাদের দেশে ৩২ শতাংশ ধান পোকায় খেয়ে নষ্ট করে । অথচ সরকার ভগবান দাস হয়ে বসে আছে । তোমরা লেখা পড়া জানা ছেলে ছোকরা তোমাদের আমি কি বোঝাবো ! আর শোনো সার দিলেই পিল পিল করে ধানের সিস্ আসবে । মনে রেখো কারবারাইল, আর মুসতাঙ কিনে রেখো । দুটো হলো পোকামাকড়ের যম । তাবলে একে বাড়ে স্নান করিয়ে দিয়ো নি । ২০০ মিলি ২০ লিটার জলে গুলে শুধু স্প্রে মারবে বুঝেছো , দু বার কি তিন বার । এটা তোমাদের বিয়েতে আমার যৌতুক রইলো ।
তোমার শশুর এসব করে না । তুমি তাকেও শিখিয়ে দিতে পারো বৈকি । আজ আমি আসি হে গোসাই । বিয়েতে অনেক গুলো মিষ্টি খাবো ।
মনে এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে শরীর টা এলিয়ে দেয় আলের উপর । উপর দিয়ে দু একটা সারস উড়ে যাচ্ছে । নীল মেঘে জমি তার উপর বড্ডো মায়া পড়ে যাচ্ছে মধুরের । সেই জন্য বুঝি আজ গ্রামের চাষী রা গ্রাম ছেড়ে শহরে ছুটে যায় না । দু একটা আলের আগাছা হাতে ছিড়ে শুকতে থাকে বুনো গাছের গন্ধ । সবুজ নতুন ধানের পাতা গুলো হালকা হয় কাঁপছে । চোখ ফেরালেই ধানের জমি শেষ হয়ে যাবে । এই টুকু ছোট জমি কে ৪ মাস বুকে আগলে রেখেছে মধুর ।
মাধবদার কথা গুলো মনে আওড়ে নেয় মধুর । কত দিন ফেইসবুক দেখেনি । জানে না বন্ধুদের কি অবস্থা । ফেসবুকের আর কি দরকার? উঠে দাঁড়িয়ে শরীরের ধুলো ঝেড়ে নিলো । চলে গেলো আরো একটা মাস ।
কাদা ভিজে মাটিতে গুলগুলি করে সযত্নে দিয়েছে সার , দিয়েছে নাইট্রোজেন , ছড়িয়েছে পেস্টিসাইড । শুধু ধানের গাছ হলুদ হওয়ার অপেক্ষা । টিপে টিপে দেখে নিয়েছে ফাঁপা ধানের শীষ কত । ধানের শীষ অনেক দেখতে কিন্তু ফাঁপা ধান অনেক হয় । সেগুলো তুষ হয়ে কেটে বেরিয়ে যাবে । গোলায় ধান তোলা মানে , ধানের গাছ নিড়িয়ে আটি কেটে , ঝাড়াই মাড়াই করে , ধান সিদ্ধ করে বস্তায় ভরে নেওয়া । অনেক কাজ বিস্তর কাজ বাকি ।
টেনে নিলো খড়ের গাদায় চৈতি কে ।
পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো মধুর । একটু থেমে বললো "তোমার জন্য আমি সব পারি ! হয় তো ৩০ মন ধান আমি তুলতে পারবো না , কিন্তু ধান আমি ফলাবোই ।"
খড়ের গাদায় চৈতির শরীর টা নিয়ে খেলতে থাকে মধুর । মানা করে না চৈতিও । শুধু মাথায় হাত বুলিয়ে বলে "খুব কষ্ট তাই না , এই যে সব কাজ একা একা !"
মধুর বলে: নাঃ তোমার মায়ের রান্না খুব সুন্দর , আমার অভ্যেস হয়ে গেছে !"
চৈতির পেলব মুখে একটা চুমু খায় । "যাও কেউ এসে পড়বে !"
চৈতি বুকে জড়িয়ে ধরে মধুর কে ।"উঁহুঁ যেতে ইচ্ছে করছে না ।"
মধুর : আমি কথা দিয়েছি , যাও আর তো ৩ টি মাস !"
মধুর কে ছেড়ে দাবায় উঠে যায় চৈতি । মা বেরিয়ে আসে ঘর থেকে । "কিরে কার সাথে কথা বলছিস উঠোনে ?"
চৈতি মাথা নামিয়ে ঘরে চলে যায় ।
ভাবি শাশুড়ি মা ডাকে "মধুর চা খাবে ?"
মধুর গোলার গামছা দিয়ে শরীর টা ঝাড়তে ঝাড়তে বলে "নাঃ থাক ! "
চৈতির মা বলে "ভিতরে এসে বসো !"
মধুর তাকিয়ে থাকে চৈতির মায়ের দিকে । সত্যি যেন মায়ের মতো বড়ো লাল টিপ্ , লাল পাড় থান শাড়ি , মনে অহংকার নেই , বরং তার প্রতি মমতা উপচে পড়ছে , না না বেইমানি করা যাবে না কিছুতেই ।
নিজের মুখ ঘুরিয়ে নেয় বাধ্য হয়ে ফিরে যায় তার পচ্ছিমের ঘরের দিকে । কদম গাছে অনেক ফুল ধরেছে । অন্ধকার দাবায় বসে একটা কদম ফুল নিয়ে গন্ধ শুকতে থাকে । কাল মাধব বাবু আসলে শিখে নিতে হবে আরো অনেক কিছু ।
মাধব: কি ভায়া কাল যে বলেছিলুম তুতে গুলে দিতে , দিয়েছিলে ?
মধুর: হ্যাঁ কাল বিকেলেই দিয়ে দিয়েছি ।
মাধন: গাছের বার নিয়ে ভেবো না গোসাই , এবার সার দেবার পালা বুঝলে । দেখো চাড্ডি ইউরিয়া-N এনে ছড়িয়ে দিও নি । বলদের গোবর গুলো করলে টা কি ? জমি সমান করার সময় একটু ফসফরাস মেরে দিলে পরে গাছের বারণ ভালো হতো , যাগগে সে তো দেরি হয়ে গেছে । কাল গিয়ে আরকানসাস নাইট্রোজেন নিয়ে আসবে বুঝলে , আমি শিখেছি কাওকে বলোনি যেন ।
তোমার জমিতে জল কমে গেছে । একটু জল দিয়ো গোসাই বাকি সব ঠিক হয়ে যাবে ।
ভালো করে শুনে নাও । আগে জলে গুলে গোবর ছড়িয়ে দেবে । পরের দিন যা বললাম ওটা এনে আগেই জলে গুলবে না । একটা ধানের পাতা ছিড়ে রং মেলাবে । দেখবে সারের প্যাকেটে কালার ইনডেক্স আছে । যে রঙের সাথে মিল খাবে ততো টা মাত্রা জলে গুলে সমান ভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে সব গাছের গোড়ায় । মাপ যোগ কানাই না হয় বলে দেবে ।
এই সমান ভাবে ছড়িয়ে দেয়ার উপর তোমার বিয়ে নির্ভর করবে গোসাই । এতে তোমার শশুরও জব্দ বুঝলে ।
আমাদের দেশে ৩২ শতাংশ ধান পোকায় খেয়ে নষ্ট করে । অথচ সরকার ভগবান দাস হয়ে বসে আছে । তোমরা লেখা পড়া জানা ছেলে ছোকরা তোমাদের আমি কি বোঝাবো ! আর শোনো সার দিলেই পিল পিল করে ধানের সিস্ আসবে । মনে রেখো কারবারাইল, আর মুসতাঙ কিনে রেখো । দুটো হলো পোকামাকড়ের যম । তাবলে একে বাড়ে স্নান করিয়ে দিয়ো নি । ২০০ মিলি ২০ লিটার জলে গুলে শুধু স্প্রে মারবে বুঝেছো , দু বার কি তিন বার । এটা তোমাদের বিয়েতে আমার যৌতুক রইলো ।
তোমার শশুর এসব করে না । তুমি তাকেও শিখিয়ে দিতে পারো বৈকি । আজ আমি আসি হে গোসাই । বিয়েতে অনেক গুলো মিষ্টি খাবো ।
মনে এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে শরীর টা এলিয়ে দেয় আলের উপর । উপর দিয়ে দু একটা সারস উড়ে যাচ্ছে । নীল মেঘে জমি তার উপর বড্ডো মায়া পড়ে যাচ্ছে মধুরের । সেই জন্য বুঝি আজ গ্রামের চাষী রা গ্রাম ছেড়ে শহরে ছুটে যায় না । দু একটা আলের আগাছা হাতে ছিড়ে শুকতে থাকে বুনো গাছের গন্ধ । সবুজ নতুন ধানের পাতা গুলো হালকা হয় কাঁপছে । চোখ ফেরালেই ধানের জমি শেষ হয়ে যাবে । এই টুকু ছোট জমি কে ৪ মাস বুকে আগলে রেখেছে মধুর ।
মাধবদার কথা গুলো মনে আওড়ে নেয় মধুর । কত দিন ফেইসবুক দেখেনি । জানে না বন্ধুদের কি অবস্থা । ফেসবুকের আর কি দরকার? উঠে দাঁড়িয়ে শরীরের ধুলো ঝেড়ে নিলো । চলে গেলো আরো একটা মাস ।
কাদা ভিজে মাটিতে গুলগুলি করে সযত্নে দিয়েছে সার , দিয়েছে নাইট্রোজেন , ছড়িয়েছে পেস্টিসাইড । শুধু ধানের গাছ হলুদ হওয়ার অপেক্ষা । টিপে টিপে দেখে নিয়েছে ফাঁপা ধানের শীষ কত । ধানের শীষ অনেক দেখতে কিন্তু ফাঁপা ধান অনেক হয় । সেগুলো তুষ হয়ে কেটে বেরিয়ে যাবে । গোলায় ধান তোলা মানে , ধানের গাছ নিড়িয়ে আটি কেটে , ঝাড়াই মাড়াই করে , ধান সিদ্ধ করে বস্তায় ভরে নেওয়া । অনেক কাজ বিস্তর কাজ বাকি ।