13-01-2022, 03:49 PM
কয়েকদিন পরেই এসে পড়লেন বরেন বাঁড়ুজ্জে, ছেলের ভালোবাসার মুখ চেয়ে জাত পাত মাথায় তুলে, দিল দরাজ এই লোক । চৈতি মাকে তার যে পছন্দ হয় নি তা নয় , বলা যায় খুবই পছন্দ । এমন লক্ষি মেয়ে যে সাত চড়ে রা করবে না এমন মেয়েই ঘরের জন্য আদর্শ বৌ । জোএল সদ্দার গ্রামে নিজের নাম বাঁচাতে গুনাক্ষরেও কাওকে বলে নি যে চৈতি কে আজ শহর থেকে দেখতে আসছে । স্বাতীর জামাই-এর বন্ধু হলেও স্বাথীর বাড়িতে জানায় নি মধুরও । তার উপর ছেলে মেয়ে একে অপরকে চেনে জানে । লজ্জায় নাক কাটা যাবে । শুরু হলো কথা ।দু পক্ষের । বরেন বাঁড়ুজ্জের একটাই চিন্তা , কি ভাবে মানানো যায় জোএল সদ্দার কে ।
বরেন বাঁড়ুজ্জে: দেখুন সদ্দার মশাই , আপনার মেয়েকেই ঘরের লক্ষ্মী করবো মনস্থির করে এসেছি , ছেলে আমায় বললে বাবা যখন ভালোবাসি তখন আর আমার ভগবানের সাথে পাপ করতে বোলো না । তাই উপযাজক হয়েই আমি এসেছি আপনার কাছে । আমি জানি যে এ বিয়েতে সম্মতি আপনার নেই । কিন্তু আমার ছেলেকেই বা আমি খারাপ বলি কি করে ! সে তো চাইলেই পারতো অন্য মেয়ে কে বিয়ে করতে । কিন্তু আমায় বললো বাবা এ জীবনে তা আর হবার নয় , সে নাকি চৈতি মাকে কথা দিয়েছে ! এবার আপনি আমায় একটা বিহিত করে বলুন আমি কি করি !
জোএল সদ্দার: আচ্ছা বাঁড়ুজ্জে মশাই ছেলে তো আপনার সঙ্গে এসেছে , হয়তো কাছে পিঠে আছে , সে এসেছেই ! তাকে ডাকুন ! তাকে আমি বিধান দেব !
মধুপুর স্টেশনেই একটা চায়ের দোকানে বসে ছিল মধুর , তার কলকাতায় থাকতে মন চাইছিলো না , বাবা কে সঙ্গে করেই নিয়ে যাবে সে , ফল যাই হোক । খবর পাঠালেন বাঁড়ুজ্জে মশাই । খবর আসতেই মধুর পৌঁছে গেলো চৈতির বাড়িতে । এক দিকে জোএল সর্দার অন্য দিকে বরেন বাঁড়ুজ্জে । বসতে দিলেন জোএল সদ্দার তাদেরই সামনে মধুর কে । সে শহরের ছেলে ছোকরা, কেতা দস্তুর তার পোশাক । খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসলো জোএল এর সামনে ।সেই ঘরের বন্ধ দরজার উপর শরীর ফেলে মৃত প্রায় দাঁড়িয়ে আছে চৈতি । বাবা বলেই দিয়েছে ওই ছেলের সাথে বিয়ে তিনি দেবেন না ।
জোএল: দেখো বাবা মধুর , তোমার বাবা কে আমি শ্রদ্ধা করেছি ! তোমার মনে যে খারাপ উদ্দেশ্য নেই সেটাও বুঝিছি তোমার সৎ সাহস দেখে । তুমি চাইলে আমার ক্ষতি করতে পারতে । কারণ তোমরা শহরে মেলা মেশা করেছো সে খবর আমার কাছে এসেছে । আমি বাবা চাষার ছেলে । মনে কোনো প্যাচ রাখি না । আমার ইচ্ছা ছিল মেয়েকে সরকারি চাকুরী জীবি ছেলের হাতে তুলে দেব । আর কিছু হোক না হোক মেয়ে আমার না খেতে পেয়ে মরবে না । স্বামী মরে গেলেও পেনসন পাবে । তাই ওকে কলেজে পড়িয়েওছি । আর এক বছর পড়ে ওহ কলেজ পাশ করবে । গায়ের মানুষের আমি পরোয়া করি না । তা বাবা , তুমি মেয়ের বাবা হলে বুঝতে যে আমার এই নূন্যতম ইচ্ছাটা একেবারে ফেলেদেবার নয় ।
তোমার বাবা দায়িত্ব নিয়েছেন । তোমার বাবাকে আমি অসম্মান করবো না । মাটি আমার কাছে মায়ের সমান । আমার যে কিছু প্রশ্ন ছিল তোমাকে ।
মধুর: বলুন আমি তৈরী ।
জোএল: এক বিঘে জমিতে , ক বস্তা ধান হয় ?
মধুর: একই , আপনি চাষাবাদ করেছেন , আপনি এসব জানেন , আমি কি করে জানবো এসব কথা !
জোএল : আমি কিন্তু জানি ফিনাইল তৈরী করতে কি লাগে , আর এক সাথে কত ফিনাইল তৈরী করা যায় । আর বাজারে কত ফিনাইল বেচা যায় । মানে আমি লেখা পড়া করেই জেনেছি । তুমি একটা চাষার মেয়ে কে বিয়ে করতে এসছো , যদি তুমি তার বিন্দু বিসর্গ না জানো তাহলে চাষার মেয়ে কে কি তুমি বুঝতে পারবে ?
মধুর: সুখে , ভালোবেসে চৈতি কে বাড়ির বৌ করে রাখার মধ্যে চাষ কেন আসবে ?
জোএল: হ্যাঁ এখানেই আমার আপত্তি বাবা , আমি চাই না আমার মেয়ে কে তুমি বাড়ির বৌ করেই রেখে দাও । আমি চাই সে তোমাদের ঘরের একজন হোক , একজন হোক যেমন তোমার মা , বাবা , ভাই বোন , ঠিক তেমন ।
বাঁড়ুজ্জে মশাই কিন্তু জেওল সদ্দারের অভিব্যক্তি বুঝে নিয়েছেন । জোএল সদ্দারের দূরদৃষ্টির সামনে মধুর নিতান্তই শিশু । শুধু আবেগের বসে প্রেম হয় সংসার গড়া যায় না ।
মধুর শহরের ছেলে, কথার মার্ প্যাচ বোঝে না । জোএল সদ্দারের কথার উপলব্ধি ধরতে না পেরে প্রশ্ন করে বসলো ।
মধুর: আচ্ছা আপনি সোজাসুজি বলুন তো আপনার মেয়ে কে বিয়ে করতে হলে আমায় কি করতে হবে ? আমি তাই করবো !
জলে সদ্দার : বেশ
বাঁড়ুজ্জে মশাই বাধা দিতে গেলেও শুনলো না মধুর । সে চৈতি কে প্রাণ দিয়েই ভালোবেসেছে কোনো ছলনা নেই । তাই চৈতিকেই তার জীবন সঙ্গিনী হিসাবে গ্রহণ করবে । তার সামনে যত বড়োই প্রতিঘাত আসুক । এ পন নিয়েই সে এসেছে ।
জোএল একটা দীর্ঘ নিঃস্বাস ফেলে আবার জিজ্ঞাসা করলেন "তাহলে আমার মেয়ে কে তুমি বিয়ে করবেই ?"
মধুর: আপনি বলুন আপনি কি চান , কি আমি করলে, আপনি আপনার মেয়ে কে বিয়ে দেবেন ।
জোএল : বাড়ুজ্জে মশাই আপনি কিন্তু আপনার ছেলের সাথে পরামর্শ করতে পারেন । এখুনি উত্তর আমার না পেলেও চলবে । "
বরেন বাঁড়ুজ্জে: দেখুন সদ্দার মশাই , আপনার মেয়েকেই ঘরের লক্ষ্মী করবো মনস্থির করে এসেছি , ছেলে আমায় বললে বাবা যখন ভালোবাসি তখন আর আমার ভগবানের সাথে পাপ করতে বোলো না । তাই উপযাজক হয়েই আমি এসেছি আপনার কাছে । আমি জানি যে এ বিয়েতে সম্মতি আপনার নেই । কিন্তু আমার ছেলেকেই বা আমি খারাপ বলি কি করে ! সে তো চাইলেই পারতো অন্য মেয়ে কে বিয়ে করতে । কিন্তু আমায় বললো বাবা এ জীবনে তা আর হবার নয় , সে নাকি চৈতি মাকে কথা দিয়েছে ! এবার আপনি আমায় একটা বিহিত করে বলুন আমি কি করি !
জোএল সদ্দার: আচ্ছা বাঁড়ুজ্জে মশাই ছেলে তো আপনার সঙ্গে এসেছে , হয়তো কাছে পিঠে আছে , সে এসেছেই ! তাকে ডাকুন ! তাকে আমি বিধান দেব !
মধুপুর স্টেশনেই একটা চায়ের দোকানে বসে ছিল মধুর , তার কলকাতায় থাকতে মন চাইছিলো না , বাবা কে সঙ্গে করেই নিয়ে যাবে সে , ফল যাই হোক । খবর পাঠালেন বাঁড়ুজ্জে মশাই । খবর আসতেই মধুর পৌঁছে গেলো চৈতির বাড়িতে । এক দিকে জোএল সর্দার অন্য দিকে বরেন বাঁড়ুজ্জে । বসতে দিলেন জোএল সদ্দার তাদেরই সামনে মধুর কে । সে শহরের ছেলে ছোকরা, কেতা দস্তুর তার পোশাক । খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসলো জোএল এর সামনে ।সেই ঘরের বন্ধ দরজার উপর শরীর ফেলে মৃত প্রায় দাঁড়িয়ে আছে চৈতি । বাবা বলেই দিয়েছে ওই ছেলের সাথে বিয়ে তিনি দেবেন না ।
জোএল: দেখো বাবা মধুর , তোমার বাবা কে আমি শ্রদ্ধা করেছি ! তোমার মনে যে খারাপ উদ্দেশ্য নেই সেটাও বুঝিছি তোমার সৎ সাহস দেখে । তুমি চাইলে আমার ক্ষতি করতে পারতে । কারণ তোমরা শহরে মেলা মেশা করেছো সে খবর আমার কাছে এসেছে । আমি বাবা চাষার ছেলে । মনে কোনো প্যাচ রাখি না । আমার ইচ্ছা ছিল মেয়েকে সরকারি চাকুরী জীবি ছেলের হাতে তুলে দেব । আর কিছু হোক না হোক মেয়ে আমার না খেতে পেয়ে মরবে না । স্বামী মরে গেলেও পেনসন পাবে । তাই ওকে কলেজে পড়িয়েওছি । আর এক বছর পড়ে ওহ কলেজ পাশ করবে । গায়ের মানুষের আমি পরোয়া করি না । তা বাবা , তুমি মেয়ের বাবা হলে বুঝতে যে আমার এই নূন্যতম ইচ্ছাটা একেবারে ফেলেদেবার নয় ।
তোমার বাবা দায়িত্ব নিয়েছেন । তোমার বাবাকে আমি অসম্মান করবো না । মাটি আমার কাছে মায়ের সমান । আমার যে কিছু প্রশ্ন ছিল তোমাকে ।
মধুর: বলুন আমি তৈরী ।
জোএল: এক বিঘে জমিতে , ক বস্তা ধান হয় ?
মধুর: একই , আপনি চাষাবাদ করেছেন , আপনি এসব জানেন , আমি কি করে জানবো এসব কথা !
জোএল : আমি কিন্তু জানি ফিনাইল তৈরী করতে কি লাগে , আর এক সাথে কত ফিনাইল তৈরী করা যায় । আর বাজারে কত ফিনাইল বেচা যায় । মানে আমি লেখা পড়া করেই জেনেছি । তুমি একটা চাষার মেয়ে কে বিয়ে করতে এসছো , যদি তুমি তার বিন্দু বিসর্গ না জানো তাহলে চাষার মেয়ে কে কি তুমি বুঝতে পারবে ?
মধুর: সুখে , ভালোবেসে চৈতি কে বাড়ির বৌ করে রাখার মধ্যে চাষ কেন আসবে ?
জোএল: হ্যাঁ এখানেই আমার আপত্তি বাবা , আমি চাই না আমার মেয়ে কে তুমি বাড়ির বৌ করেই রেখে দাও । আমি চাই সে তোমাদের ঘরের একজন হোক , একজন হোক যেমন তোমার মা , বাবা , ভাই বোন , ঠিক তেমন ।
বাঁড়ুজ্জে মশাই কিন্তু জেওল সদ্দারের অভিব্যক্তি বুঝে নিয়েছেন । জোএল সদ্দারের দূরদৃষ্টির সামনে মধুর নিতান্তই শিশু । শুধু আবেগের বসে প্রেম হয় সংসার গড়া যায় না ।
মধুর শহরের ছেলে, কথার মার্ প্যাচ বোঝে না । জোএল সদ্দারের কথার উপলব্ধি ধরতে না পেরে প্রশ্ন করে বসলো ।
মধুর: আচ্ছা আপনি সোজাসুজি বলুন তো আপনার মেয়ে কে বিয়ে করতে হলে আমায় কি করতে হবে ? আমি তাই করবো !
জলে সদ্দার : বেশ
বাঁড়ুজ্জে মশাই বাধা দিতে গেলেও শুনলো না মধুর । সে চৈতি কে প্রাণ দিয়েই ভালোবেসেছে কোনো ছলনা নেই । তাই চৈতিকেই তার জীবন সঙ্গিনী হিসাবে গ্রহণ করবে । তার সামনে যত বড়োই প্রতিঘাত আসুক । এ পন নিয়েই সে এসেছে ।
জোএল একটা দীর্ঘ নিঃস্বাস ফেলে আবার জিজ্ঞাসা করলেন "তাহলে আমার মেয়ে কে তুমি বিয়ে করবেই ?"
মধুর: আপনি বলুন আপনি কি চান , কি আমি করলে, আপনি আপনার মেয়ে কে বিয়ে দেবেন ।
জোএল : বাড়ুজ্জে মশাই আপনি কিন্তু আপনার ছেলের সাথে পরামর্শ করতে পারেন । এখুনি উত্তর আমার না পেলেও চলবে । "