11-01-2022, 10:25 PM
ভোরের কদম ফুল
চৈতি আজ উনিশে পড়লো । কলেজ ফাইনাল পাশ করতে পারে নি বলে , কোনো পাত্র রাজিও হচ্ছে না বিয়ে করতে । দেখতে এমন কিছু আহামরি নয় তবুও মুখে খুব মিষ্টি একটা ভাব আছে । বয়স কম মনে হয় , যেন এখনো বাচ্চা রয়ে গেছে । এক মাত্র সঙ্গী, বান্ধবী স্বাথী । সামনেই ফাল্গুনে বিয়ে হবে তার আর এক মাসও নেই । ছেলে বড়ো সরকারি দপ্তরে কাজ করে । স্বাথীর বাবাই দেখা শুনা করে দিয়েছে । সেই নিয়ে রোজই গালমন্দ শুনতে হয় চৈতি কে বাড়িতে । তাকে কেউ পছন্দ না করলে তার কি দোষ ?
মনের বন্ধু চলে যাবে শশুর বাড়ি , এক হয়ে যাবে সে সারা গাঁয়ে । কে তার সঙ্গে ধান সিদ্ধ করবে ? কেই বা যাবে তেতুল কুড়োতে? ভেবে কুল পায় না এক রত্তি মেয়েটা । বাবা জোএল সদ্দার, নামের মতো খুব নিচু জাত নয় । ধানেরই কারবার করে । কিছু জমি আছে বটে । সামর্থ যে খারাপ তা নয় । তবে একটু কিপ্টে । সে চায় তার মেয়ে কে কেউ এমনি নিয়ে যাক ঘরের বৌ করে । টাকা না হয় খরচ করবে, বিয়ে দিতে যা লাগে ।
গ্রামে এমন প্রতিযোগিতা অনেক হয় !" সমসাময়িক একটা মেয়ের বিয়ে দিলেই বাকি মেয়েদের মা বাবার বুক জ্বলতে শুরু করে । যেমনটা নাকি হয়েছিল চৈতির মা বা বাবার । বেচারি চৈতি । কিন্তু স্বাথী তাকে ভালোবাসে । তাদের মন এমন জ্বলে না মা বা বাবার মতো । তাই কনে সাজাবার ভার নিলো চৈতি । এই কাজ তা সে খুব যত্ন করে নিখুঁত দক্ষতায় করতে পারে । প্রশংসাও পেলো ভুরি ভুরি, স্বাথীর বিয়েও হলো সুস্থ ভাবে । কেঁদে কেঁদে বিদায়ের পালা শেষ হলো । কিন্তু কোথাও একটা গাছের ফুলের কোনো বীজ , দানার আকারে জলে ভিজে অংকুরিত হলো বিয়ে বাড়ির ঘটনা প্রবাহে । সেই অংকুরিত বীজ আসতে আসতে হয়ে উঠলো কদম ফুলের গাছ ।
মধুর বামুনের ছেলে , বরযাত্রীদের সাথেই এসেছিলো , বর জাতে সুড়ি । আর তেমন জাতপাতের বালাই পশ্চিমবঙ্গে নেই । কিন্তু তবুও একটু গন্ধ শুকে নিতে হয় বৈকি জাত পাতের । মেলোচ্ছ জাত কে ঘরে ঢুকতে দিতে আজও সংশয় থেকেই যায় মানুষের মনে । কিন্তু কামদেবের ধনুকের ছিলা থেকে একটা বান ছিটকে ভুল করেই বেরিয়ে গিয়েছিলো সেদিন । বুঝতেই পারেনি কামদেব কখন অঘটন ঘটে গেছে । বিয়ের বাড়ির মধ্যেই শুভ দৃষ্টি আর প্রণয়ের মালা দান একে অপরকে । কাল্পনিক বিয়েও হয়ে গেলো চৈতি আর মধুরের । মধুরেণ সমাপয়েৎ হতে পারতো বৈকি যদি নাকি জোএল সদ্দার খুব বেশি বাগড়া না দিতো ।
বাড়ির এক কোনে পুঁতেছে একটা কদম ফুলের গাছ , কদম ফুল মধুরের খুব পছন্দ । সেই চেয়েছিলো একটা কদম ফুলের গাছ নিয়ে যাবে তার বাড়িতে । চৈতি বিয়ের পরের দিন সকালে অনেকগুলো তাজা কদমফুল দিয়েছিলো মধুর কে । ফুল শয্যা শেষ মেশ হয় নি । কিন্তু জীবনে প্রথম পুরুষের স্বাদ পেয়ে হটাৎ করে ছেলেমানুষ খুকি টা খোলস ছেড়ে নারীর রূপ নিলো । থেমে গেলো তার সব খেলা । আর আসতে আসতে ঢুকলো তার জীবনে বিরহের পালা একটু একটু করে কুয়াশার মতো ।
এখন মধুর এর পৈতৃক ফিনাইল এর ব্যবসা , ভালোই রোজগার তবুও মন ভরলো না জোএল এর ।মধুর কে তার পছন্দ হয় নি পাত্র হিসাবে । পয়সা থাক তার বাবার ,কিন্তু ব্যবসাদার ছেলের হাতে মেয়ে কিছুতেই দেবেন না । নূন্যতম সকারী চাকরি করুক তাতেও তিনি রাজি ।
মধুপুর কলেজ আর বাড়ি এর বাইরের কোনো পৃথিবী ছিল না চৈতির । কদিন আগেও সে কখনো ভাবতে পারে নি কলকাতায় যাবে সে এক । আর ও ভাবতে পারে নি কেউ তার জন কলকাতা থেকে মধুপুর আসবে ২ ঘন্টার রাস্তা ঠেঙিয়ে ।বয়েই গেছে শহরের ছেলেদের গাঁয়ের মেয়ের জন্য এতো রাস্তা ঠেলে আসতে । শহরের মেয়েরা কোনো টিপটপ সুন্দর । তাদের পোশাক মানানসই আধুনিক মাপের । চুড়িদার পড়া মেয়েদের শহরের ছেলেরা গেওয়া ভাবে । এক্ষত্রে সেটা খাটলো না । নিয়ম করে মধুর আসতে লাগলো চৈতির কলেজে । কারণ সে চৈতি কে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না । তাকেই যে ভালোবেসেছে । আর ভালোবেসেছে বলেই এখনো চুমু পর্যন্ত খেতে চায় নি ।
চৈতির শরীরে যৌবনের মধু এসেছে অনেকদিন আগেই । হটাৎ করে পুতুল খেলা , আম কুড়োনো ছেড়ে , শরীরটাও একটু গা ঝেড়ে যুবতীর আকার নিয়েছে প্রকৃতির নিয়মে । ঠিক কচি পাতা প্রথমে সবুজ খয়েরি কুঁড়ি থেকে আসতে আসতে জীবন্ত সবুজ হয় , তেমন করে তার মুখের ভুবন ভোলানো হাসি আর মাধুর্য্য মধুর কে টেনে এনেছিল চৈতির পৃথিবীতে । ভালোবাসা দিনে দিনে গভীর থেকে গভীরতর হয় । যখন তার গভীরতা থাকে না দুটো প্রাণ দুদিকে ছিটকে যায় , আর টা নাহলে একে ওপর কে আঠার মতো আটকে রাখে , অনেক অনেক বছর । ঝগড়া অশান্তি সে যতই হোক । এ কৈশোরের ভালোলাগা , প্রেম এর তীব্রতা সব কিছুইর থেকে বেশি । কোনো কিছুই বাধা মানে না । এমনটাই হলো চৈতির সাথে ।
চৈতি আজ উনিশে পড়লো । কলেজ ফাইনাল পাশ করতে পারে নি বলে , কোনো পাত্র রাজিও হচ্ছে না বিয়ে করতে । দেখতে এমন কিছু আহামরি নয় তবুও মুখে খুব মিষ্টি একটা ভাব আছে । বয়স কম মনে হয় , যেন এখনো বাচ্চা রয়ে গেছে । এক মাত্র সঙ্গী, বান্ধবী স্বাথী । সামনেই ফাল্গুনে বিয়ে হবে তার আর এক মাসও নেই । ছেলে বড়ো সরকারি দপ্তরে কাজ করে । স্বাথীর বাবাই দেখা শুনা করে দিয়েছে । সেই নিয়ে রোজই গালমন্দ শুনতে হয় চৈতি কে বাড়িতে । তাকে কেউ পছন্দ না করলে তার কি দোষ ?
মনের বন্ধু চলে যাবে শশুর বাড়ি , এক হয়ে যাবে সে সারা গাঁয়ে । কে তার সঙ্গে ধান সিদ্ধ করবে ? কেই বা যাবে তেতুল কুড়োতে? ভেবে কুল পায় না এক রত্তি মেয়েটা । বাবা জোএল সদ্দার, নামের মতো খুব নিচু জাত নয় । ধানেরই কারবার করে । কিছু জমি আছে বটে । সামর্থ যে খারাপ তা নয় । তবে একটু কিপ্টে । সে চায় তার মেয়ে কে কেউ এমনি নিয়ে যাক ঘরের বৌ করে । টাকা না হয় খরচ করবে, বিয়ে দিতে যা লাগে ।
গ্রামে এমন প্রতিযোগিতা অনেক হয় !" সমসাময়িক একটা মেয়ের বিয়ে দিলেই বাকি মেয়েদের মা বাবার বুক জ্বলতে শুরু করে । যেমনটা নাকি হয়েছিল চৈতির মা বা বাবার । বেচারি চৈতি । কিন্তু স্বাথী তাকে ভালোবাসে । তাদের মন এমন জ্বলে না মা বা বাবার মতো । তাই কনে সাজাবার ভার নিলো চৈতি । এই কাজ তা সে খুব যত্ন করে নিখুঁত দক্ষতায় করতে পারে । প্রশংসাও পেলো ভুরি ভুরি, স্বাথীর বিয়েও হলো সুস্থ ভাবে । কেঁদে কেঁদে বিদায়ের পালা শেষ হলো । কিন্তু কোথাও একটা গাছের ফুলের কোনো বীজ , দানার আকারে জলে ভিজে অংকুরিত হলো বিয়ে বাড়ির ঘটনা প্রবাহে । সেই অংকুরিত বীজ আসতে আসতে হয়ে উঠলো কদম ফুলের গাছ ।
মধুর বামুনের ছেলে , বরযাত্রীদের সাথেই এসেছিলো , বর জাতে সুড়ি । আর তেমন জাতপাতের বালাই পশ্চিমবঙ্গে নেই । কিন্তু তবুও একটু গন্ধ শুকে নিতে হয় বৈকি জাত পাতের । মেলোচ্ছ জাত কে ঘরে ঢুকতে দিতে আজও সংশয় থেকেই যায় মানুষের মনে । কিন্তু কামদেবের ধনুকের ছিলা থেকে একটা বান ছিটকে ভুল করেই বেরিয়ে গিয়েছিলো সেদিন । বুঝতেই পারেনি কামদেব কখন অঘটন ঘটে গেছে । বিয়ের বাড়ির মধ্যেই শুভ দৃষ্টি আর প্রণয়ের মালা দান একে অপরকে । কাল্পনিক বিয়েও হয়ে গেলো চৈতি আর মধুরের । মধুরেণ সমাপয়েৎ হতে পারতো বৈকি যদি নাকি জোএল সদ্দার খুব বেশি বাগড়া না দিতো ।
বাড়ির এক কোনে পুঁতেছে একটা কদম ফুলের গাছ , কদম ফুল মধুরের খুব পছন্দ । সেই চেয়েছিলো একটা কদম ফুলের গাছ নিয়ে যাবে তার বাড়িতে । চৈতি বিয়ের পরের দিন সকালে অনেকগুলো তাজা কদমফুল দিয়েছিলো মধুর কে । ফুল শয্যা শেষ মেশ হয় নি । কিন্তু জীবনে প্রথম পুরুষের স্বাদ পেয়ে হটাৎ করে ছেলেমানুষ খুকি টা খোলস ছেড়ে নারীর রূপ নিলো । থেমে গেলো তার সব খেলা । আর আসতে আসতে ঢুকলো তার জীবনে বিরহের পালা একটু একটু করে কুয়াশার মতো ।
এখন মধুর এর পৈতৃক ফিনাইল এর ব্যবসা , ভালোই রোজগার তবুও মন ভরলো না জোএল এর ।মধুর কে তার পছন্দ হয় নি পাত্র হিসাবে । পয়সা থাক তার বাবার ,কিন্তু ব্যবসাদার ছেলের হাতে মেয়ে কিছুতেই দেবেন না । নূন্যতম সকারী চাকরি করুক তাতেও তিনি রাজি ।
মধুপুর কলেজ আর বাড়ি এর বাইরের কোনো পৃথিবী ছিল না চৈতির । কদিন আগেও সে কখনো ভাবতে পারে নি কলকাতায় যাবে সে এক । আর ও ভাবতে পারে নি কেউ তার জন কলকাতা থেকে মধুপুর আসবে ২ ঘন্টার রাস্তা ঠেঙিয়ে ।বয়েই গেছে শহরের ছেলেদের গাঁয়ের মেয়ের জন্য এতো রাস্তা ঠেলে আসতে । শহরের মেয়েরা কোনো টিপটপ সুন্দর । তাদের পোশাক মানানসই আধুনিক মাপের । চুড়িদার পড়া মেয়েদের শহরের ছেলেরা গেওয়া ভাবে । এক্ষত্রে সেটা খাটলো না । নিয়ম করে মধুর আসতে লাগলো চৈতির কলেজে । কারণ সে চৈতি কে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না । তাকেই যে ভালোবেসেছে । আর ভালোবেসেছে বলেই এখনো চুমু পর্যন্ত খেতে চায় নি ।
চৈতির শরীরে যৌবনের মধু এসেছে অনেকদিন আগেই । হটাৎ করে পুতুল খেলা , আম কুড়োনো ছেড়ে , শরীরটাও একটু গা ঝেড়ে যুবতীর আকার নিয়েছে প্রকৃতির নিয়মে । ঠিক কচি পাতা প্রথমে সবুজ খয়েরি কুঁড়ি থেকে আসতে আসতে জীবন্ত সবুজ হয় , তেমন করে তার মুখের ভুবন ভোলানো হাসি আর মাধুর্য্য মধুর কে টেনে এনেছিল চৈতির পৃথিবীতে । ভালোবাসা দিনে দিনে গভীর থেকে গভীরতর হয় । যখন তার গভীরতা থাকে না দুটো প্রাণ দুদিকে ছিটকে যায় , আর টা নাহলে একে ওপর কে আঠার মতো আটকে রাখে , অনেক অনেক বছর । ঝগড়া অশান্তি সে যতই হোক । এ কৈশোরের ভালোলাগা , প্রেম এর তীব্রতা সব কিছুইর থেকে বেশি । কোনো কিছুই বাধা মানে না । এমনটাই হলো চৈতির সাথে ।