04-01-2022, 06:11 PM
তাহমিনা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলো মাত্র। সুন্দরী, বুদ্ধিমতী, সমাজ সচেতন এক যুবতী। সংবাদ চলাকালেই বাবার পাশে বসে, টেলিভিশন দেখতে দেখতে তাহমিনা বলে উঠলো, ব্যাপারটা কি সত্যিই? তাহমিনার বাবা বশীর আহমেদ পত্রিকাতেই চোখ রাখছিলো। টেলিভিশন সংবাদটা শুনেনি, এরকম একটা ভাব দেখিয়ে বললো, কোন ব্যাপারটা? তাহমিনা সহজভাবেই বললো, এই যে বলছে, জাতীয় নগ্ন দিবসের কথা! বশীর আহমেদ টেলিভিশনের দিকে তাঁকিয়ে বললো, কেনো তুমি জানতেনা? তাহমিনা বললো, হ্যা, শুনেছি! তবে এতটা যে সিরীয়াস তা তো ভাবিনি! যাদের ইচ্ছে হয় নগ্ন হতে, হউক! সবাইকে কেনো বাধ্য করবে? বশীর আহমেদ বললো, কি আর করার? যখন ক্ষমতা যাদের হাতে! সংসদে বিল পাশ হয়ে গেছে! তাহমিনা রাগ করেই বললো, তুমি কি এটা সাপোর্ট করছো? তাহমিনার ছোট ভাই সাগর ক্লাস এইটে পড়ে। সেও ওপাশে সোফায় পা তুলে বসে, খুব মজা করেই টেলিভিশন দেখছিলো। সেও তাহমিনা আর বাবার আলাপে যোগ দিয়ে বললো, আমার কাছে কিন্তু রোমান্টিকই লাগছে! তাহমিনা সাগরের দিকে চোখ লাল করেই তাঁকালো। তারপর ধমকের গলাতেই বললো, সাগর, তুমি সারাদিন ন্যাংটু হয়ে ঘুরে বেড়াও, নাচো, গাও, আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসেনা। তবে, সাবধান! আমার দু চোক্ষের সামনে যেনো তোমাকে না দেখি। রান্নাঘরে রান্না করার ফাঁকে ফাঁকেই চুপি দিয়ে দিয়ে সংবাদটা শুনছিলো, তাহমিনার মা রোমানা। সেও রান্নাটা চড়িয়ে দিয়ে বসার ঘরে ঢুকে বললো, তুমি এত উদ্বিগ্ন হচ্ছো কেনো তাহমিনা? আমার কাছেও তো ভালো লাগছে। এই গরমে গায়ে কাপর জড়িয়ে রাখতে তো দমটাই বন্ধ হয়ে আসে! তার মাঝে শপিং যাওয়া, এখানে সেখানে যাওয়া, ঘেমে পোষাকের কি অবস্থাটাই না হয়! অন্তত বছরে একটা দিন খোলামেলা মুক্ত বাতাসে চলাফেরা করা যাবে, মন্দ কি? আমি তো কোন সমস্যা দেখছিনা! তাহমিনা বললো, মা, সমস্যাটা তোমার নয়! আমার! তুমি ন্যাংটু হয়ে শপিংএই যাও আর যেখানেই যাও, তোমার ঐ নেতিয়ে থাকা বুকের দিকে কেউ চোখ তুলেও তাঁকাবে না। আমার এখন ভরা যৌবন! এমনিতে পোষাকে, ওড়নাতে ঢেকে ঢুকে একটু বাইরে গেলে, শত শত ছেলে বুড়ুর নজর পরে আমার বুকে! একদিন পোষাক না পরলে ব্যাপারটা কেমন হবে, ভাবতে পারো? সাগর বলে উঠলো, আপু, এটা তোমার বাড়িয়ে বলা কথা! তুমি তো ঘরে ওড়নাও পরোনা। আমি কিংবা বাবা কি তোমার বুকের দিকে কখনো তাঁকাই? আমি আর বাবাও কিন্ত ছেলে বুড়ুদের মাঝে পরি! তাহমিনা মুখ ভ্যাংচিয়ে বললো, বড্ড পেঁকেছো তুমি। সাগরের কথাটা শুনে, বাশীর আহমেদ এক নজর আঁড় চোখেই তাঁকালো তাহমিনার বুকের দিকে। তাইতো, সেও তো কোনদিন তাহমিনার বুকের দিকে তাঁকায়নি! চোখের সামনে দেখতে দেখতে মেয়েটা এত বড় হয়ে গেছে! টাইট কামিজটার উপর দিয়েও বাতাবী লেবুর মতোই দুটো বক্ষ উপচে উপচে ভেসে আছে! এমন বক্ষের মেয়ে, নগ্ন দেহে ঘরের বাইরে গেলে, নির্ঘাত সব ছেলে বুড়ুরই মাথা খারাপ হয়ে যাবে। তাই সে তাহমিনাকে লক্ষ্য করে বললো, কালকে ঘরের বাইরে না গেলেই তো হয়! কেউ তো আর কারো ঘরে এসে দেখতে চাইবে না যে, কেউ পোষাক পরে রেখেছে কিনা! তাহমিনা বললো, সে কথাই তো বলতে চাইছিলাম। কালকে ক্লাশ টিউটরিয়াল আছে। বাধ্য হয়েই যেতে হবে! টিচারগুলোও বদমাশ! ইচ্ছে করেই যেনো টিউটরিয়াল গুলো ঝুলিয়ে রেখেছ! যেনো কেউ ক্লাশ ফাঁকি দিতে না পারে! নিজের মেয়ের নগ্নতা অন্য কেউ দেখুক, সেটাও মানতে পারছেনা বশীর আহমেদ। সে বললো, একটা টিউটরিয়ালে এটেন্ড না করলেই বা কি? তাহমিনা মন খারাপ করেই বললো, বাবা, ইউনিভার্সিটি কি আর তোমাদের যুগের মতো আছে? টিউটরিয়ালে এটেন্ড না করা মানে, ফেল! সেকেন্ড ইয়ারে প্রোমোশনটাই হবে না। বশীর আহমেদ নিরুপায় হয়েই বললো, কি আর করার! তাহলে তো আর উপায় নেই! তহমিনা রাগ করেই বললো, উপায় নেই মানে? একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে, তোমার প্রতিবাদ করা কি উচিৎ না? বশীর আহমেদ বললো, আমার প্রতিবাদে কি কারো কিছু আসে যায়? এখন ক্ষমতা সিকদার অনির হাতে। তার ভক্ত, অনুসারীও প্রচুর! শুনছি তো এই জাতীয় নগ্ন দিবস সফলভাবে উদযাপন হলে, মন্ত্রীও নাকি হয়ে যাবে? তাহমিনা চোখ কপালে তুলে বললো, মন্ত্রী? সিকদার অনি? তাহমিনা একটু থেমে আবার বললো, মন্ত্রী হয়ে হারামজাদা করবেটা কি? বশীর আহমেদও খানিকটা রাগ করে বললো, অমন গাল দিয়ে কথা বলছো কেনো? একজন সম্মানিত সংসদ সদস্য! যৌনসেবা মন্ত্রী হিসেবে যা যা করা উচিৎ সবই করবে! মন্ত্রী না হয়েও তো অনেক কিছু করলো। আমাদের এলাকায় আগে কোন লাভার্স ক্লাব ছিলো না, এখন হয়েছে! এতে করে সমাজের কতটা উপকার হয়েছে অনুমান করতে পারছো? কলেজ ইউনিভার্সিটির মেয়েরা পার্ট টাইম কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছে! প্রেমে ব্যর্থ ছেলে বুড়ুরা কয়টা পয়সার বিনিময়ে হলেও প্রেম করার স্বাদটা পূরণ করতে পারছে। তাহমিনা গলার সুর পরিবর্তন করে বললো, বাবা, ঐ লাভার্স ক্লাবে তুমি আবার যাও টাও না তো? বশীর আহমেদ একবার রোমানার দিকে আঁড় চোখে তাঁকালো। তারপর, বিড় বিড় করে বললো, তোমার মায়ের যা ছিরি! না গিয়ে কি আর পারি নাকি? তাহমিনা বললো, কিছু বললে নাকি? বশীর আহমেদ আমতা আমতা করেই বললো, না মানে, সিকদার অনির কথাই বলছিলাম! তাকে গালাগাল করে লাভ নাই! শিমুলপুর পতিতালয়টার কথাই ধরো না। ঐটা নির্মান হয়ে গেলে দেখবে, আমাদের এলাকায় কোন ;.,ই থাকবে না। এটা একটা সমাজের জন্যে কতটা আশীর্বাদ, অনুমান করতে পারো? তাহমিনা বললো, লাভার্স ক্লাব, পতিতালয়, এসবের সাথে জাতীয় নগ্ন দিবসের সম্পর্ক কি? লাভার্স ক্লাব, পতিতালয়, এসবে যাদের ইচ্ছে হয় যাতায়াত করবে, আমি তো খারাপ বলছিনা! কিন্তু! বশীর আহমেদ বললো, নিশ্চয়ই কোন কিন্তু আছে! সবারই তো চেনা জানা সবার নগ্ন দেহটা দেখতে ইচ্ছে করে! দেখার জন্যে চিরকালই মনটা ছটফট করে! অথচ, সে আশা কখনো পূরণ হয় না।