02-12-2021, 08:30 PM
(This post was last modified: 20-02-2022, 04:00 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।।৭৫।।
করিডোরে দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞাকে খুব চিন্তিত মনে হয়।কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখল,মনে মনে কি যেন হিসেব করে।শুভেন্দু এসে বলল,হাই প্রজ্ঞা ক্লাসে যাবি না?
--নারে আমাকে বাসায় ফিরতে হবে জরুরী কাজ আছে।
--তাহলে না আসলেই পারতিস।
--আগে তো জানতাম না এই মাত্র খবর পেলাম।
বাসায় ফিরতে মাসীমণি অবাক,কিরে এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি?
--মাসীমণি তোমার মাস্তানকে মনে আছে?
--যে এসেছিল একদিন?ওকী সত্যি মস্তানি করে বেড়ায়?
প্রজ্ঞা হাসে বলল,মাস্তান সিভিল সার্ভিস পাস করেছে।
--ওমা তাই?তোকে কে বলল?
--ও মাকে নিয়ে আসছে।
--কেন এই বেলি শোন--।
প্রজ্ঞা অন্য ঘরে গিয়ে মোবাইলের বাটন টিপে কানে লাগায়,রিং হচ্ছে।--হ্যা-হ্যা রিঙ্কু পোদ্দার...আমি প্রজ্ঞা চৌধুরী বিজন চৌধুরীর মেয়ে...আপনাকে আগে বলেছিলাম মনে আছে...হ্যা-হ্যা আজ আসতে পারবেন....দেরী মানে...ঠিক আছে আটটার মধ্যে আসলেই হবে...আপনি ঠিকানাটা লিখে নিন...অনেক ধন্যবাদ।ফোন রেখে স্বস্তির শ্বাস ফেলল।
সেজে গুজে একে একে সব রকে এসে জমা হয়।পারফিউমের গন্ধ ভুর ভুর করে।নির্মল বলল,কিরে মনাকে দেখছি না।
--ওর একটু দেরী হবে।বঙ্কিম বলল।
--আমরা কিন্তু সাড়ে-সাতটায় স্টার্ট করব।কারো জন্য অপেক্ষা করতে পারব না।শুভ বলল।
--হ্যা-হ্যা বেশি রাত করা ঠিক হবে না।শঙ্কর বলল।
--দেরী হবে,তোর সঙ্গে কথা হয়েছে?নির্মল জিজ্ঞেস করল।
বঙ্কিম ভাবে কথাটা বলবে কিনা।
--তুই কি করে জানলি?একবার ফোন করনা।
--ও বাসায় নেই।আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে কি নাকি জরুরী কাজ আছে।বলছিল আইএএস সিলেক্ট হয়েছে।
শুভ ভ্রু কুচকে বঙ্কিমকে দেখে তারপর বলল,আই এ এস কি বুঝিস?
বঙ্কিম বিরক্ত হয়ে বলল,তুই বুঝলেই হবে আমার বোঝার দরকার নেই।
বঙ্কিমের মনে হল কথাটা না বললেই ভাল হত।তার মনে হচ্ছে মনা আইএএসই বলেছিল।
--তুই কি করে জানলি?নির্মল জিজ্ঞেস করল।
--বললাম না আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে,ট্যাক্সি করে যাচ্ছিল সঙ্গে মাসীমাও ছিলেন।
--আই এ এস?আড্ডায় আসতো না, আমারও কেমন সন্দেহ হয়েছিল।চাদু বলল।
--আড্ডায় আসতো না অমনি সন্দেহ হল আই এ এস?শুভ খিচিয়ে ওঠে।শোনো সাড়ে-সাতটা বাজলেই রওনা হব সে আইএ এস আসুক না আসুক।
ট্যাক্সি থেকে নজরে পড়ে বেলি বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।মাকে কি দিয়ে বশ করেছে ভগবান জানে।এতক্ষন ওরা হয়তো বিয়ে বাড়ি পৌছে গেছে।ট্যাক্সি বাড়ীর সামনে থামতে প্রজ্ঞা ভাড়া মিটিয়ে দিল।দরজা খুলে হিমানীদেবীকে ধরে নামালো।হিমানীদেবী নেমে জিজ্ঞেস করলেন,বেলি কি হয়েছে মা?
--ভিতরে চলো সব বলছি।
মনসিজ লক্ষ্য করে বেলি মাকে নিয়ে উপরে চলে গেল,তাকে দেখলোই না।ট্যাক্সি করে ফেরা সম্ভব নয় তাকে বাসেই যেতে হবে।কিন্তু মাকে ফেলে তো যাওয়া যায় না।মার সঙ্গে দেখা করে যা করার করবে।মনসিজও উপরে উঠে এল।একটা ঘরে মা বেলি আর বেলির মাসী কি নিয়ে কথা বলছে।মনসিজ ঢুকে ওদের আলাপ শুনতে থাকে।
চারুলতা বললেন,বড়দিকে না জানিয়ে এতবড় একটা কাজ--শেষে আমাকে দুষবে--।
--মাসীমণি তোমাকে কেউ কিছু বলবে না।
হিমানীদেবী বললেন,বেলি তোর মাসীমণির কথাটা বোঝার চেষ্টা কর--।
--মামণি এতদূর যাবে এভাবে একলা আমি ছাড়তে পারি না।
মনসিজ এতক্ষনে একটু বুঝতে পারে বিষয়টা কি বলল,হ্যা বেলি মাসী মণির কথায় যুক্তি আছে--।
--এই তুই বড়দের কথার মধ্যে কথা বলছিস কেন?শোনো মাসীমণি তোমার ছেলে এ্যামেরিকা গিয়ে কি করল,আর বাপি বিলেত যাবার আগে দাদার বিয়ে দিয়েছিল কেন?
--ও ওরকম ছেলে নয়।চারুলতা বললেন।
--মাস্তান কেমন ছেলে আমাকে বোঝাতে এসো না।এ্যাই তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস,ও ঘরে চল।
প্রজ্ঞার সঙ্গে মনসিজ পাশের ঘরে চলে গেল।খাটের উপর ধুতি পাঞ্জাবী পড়ে আছে ওগুলো দেখিয়ে বলল,এখানে সব রইল তাড়াতাড়ি পরে ফেল।
মনসিজ ধুতি হাতে নিয়ে বলল,আমি ধুতি পরতে পারব না।জম্মে কোনোদিন ধুতি পরিনি।
--কি পারিস তুই?
--যতটা পারিস পর আমি শিখিয়ে দেবো।
চারুলতা ভাবেন দিনের পর দিন এক এক করে সব কিনেছে মেয়েটা এই দিনটার জন্য।কেমন মায়া হল।বড়দি যা খুশি বলুক তখন দেখা যাবে ওকে আর বাধা দেবেন না।হিমানীদেবীকে বললেন,দিদি অনেক আশা করে মেয়েটা ট্রলিব্যাগ জামা প্যাণ্ট বরের যা কিছু একটা-একটা করে কিনেছে বেচারি।ওকে আশির্বাদ করুন।
--বেলিকে আমি পর ভাবিনা ভাবছি মেয়েটাকে এজন্য লাঞ্ছনা সহ্য করতে না হয়।
কাজের পিসি এসে খবর দিল,নীচে এক মেম সাব এসেছেন।প্রজ্ঞা তাকে বসতে বলে নিজে শাড়ি পরতে থাকে।লক্ষ্য করে মাস্তান না কুচিয়ে মুঠো করে ধরে কাছা দিচ্ছে।
--এই গাধা দে এদিকে দে।কাপড়টা নিয়ে কুচি দিয়ে দু-পায়ের ফাক দিয়ে কাছা পিছন দিকে নিতে গিয়ে হাতে ছোয়া লাগতে চমকে ওঠে।মনে হচ্ছে বেশ লম্বা হবে।মাস্তানের দিকে তাকিয়ে নির্বিকার ভাব দেখে বুঝল তার হাত লেগেছে ব্যাটা বুঝতে পারেনি।সিভিল সার্ভিস পাস করলেও একেবারে ছেলে মানুষ।ওরা সাজগোজ করে মাসীমণির ঘরে এস প্রজ্ঞা বলল,এবার আমাদের আশির্বাদ করো।
হিমানীদেবী নিজের গলার হার খুলে বেলির গলায় পরিয়ে দিয়ে বললেন,তুই তো আগে কিছুই বলিস নি মা।
সবাই বৈঠক খানায় নেমে এল।রিঙ্কু পোদ্দার সব কিছু রেডি করে অপেক্ষা করছিলেন।ওরা আসতে কাগজ এগিয়ে দিয়ে একে একে সবাইকে দিয়ে সই করালেন।মনসিজ ভাবে আজ মীনাক্ষীর বিয়ে হচ্ছে আর এখানে তার বিয়ে হচ্ছে।শুভ লগ্ন।
সই সাবুদের পর রিঙ্কু পোদ্দার বললেন,বলুন আমি মনসিজ মজুমদারকে সজ্ঞানে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম।তারপর মনসিজকে দিয়েও বলিয়ে নিলেন।
কাজের পিসি এসে খবর দিল,মেমসাব সাহেব এসেছে।
অশোক এসে গেছে,দ্রুত উপরে উঠে গেলেন চারুলতা।চারুলতা ঢুকতে অশোক জিজ্ঞেস করলেন,নীচে কি হচ্ছে?
সব শুনে অশোক গম্ভীর হয়ে বসে থাকেন।চারুলতার মনে হয় কাজটা ঠিক করেন নি।অশোক জিজ্ঞেস করল,ছেলেটা কি ওর কলেজে পড়ে?
--না।তাল পুকুরে থাকতো।এবার সিভিল সার্ভিস পাস করেছে।
অশোকের মুখে স্বস্তির আলো ফোটে।চারুলতা বললেন,আমি ভাবছি বড়দির কথা--।
বন্ধুদের মধ্যে মনসিজকে না দেখে জিজ্ঞেস করল,কিরে মনা আসেনি?
--মনা আই এ এস হয়েছে।ব্যঙ্গচ্ছলে বলল শুভ।
দিলীপ বুঝতে পারে না,দুর্বোধ্য চোখে অন্যদের দিকে তাকায়।দিলীপকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বঙ্কিম ফিস ফিস করে ঘটনাটা বলল।রুক্সানা এসে বলল, দিদি তোমার খোজ করছে।
দিলীপ বলল,তোরা বোস আমি আসছি।
রিঙ্কি পোদ্দারকে টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করে প্রজ্ঞা বলল,মামণি তোমরা একটু বোসো।মেশো এসেছে আমি দেখা করে আসি।
মনসিজ বসে ঘামতে থাকে।একটা সই করল বিয়ে হয়ে গেল।দিলীপের বাড়ীতে ওরা এতক্ষনে চলে গেছে।হিমানীদেবী বললেন,মনু ফোন বাজছে।
মনসিজ ফোন কানে লাগিয়ে বলল,ভেরি স্যরি এমন একটা বাজে ব্যাপারে আটকে গেলাম...তোকে বঙ্কা কিছু বলেনি...হ্যা আমি তো বঙ্কাকে বলেছিলাম...হ্যা-হ্যা সেই চিঠিতেই খবরটা পেয়েছি...এ্যা...হ্যা খুব খারাপ লাগছে...আমার খোজ করছিল...হ্যা বলেছিল বিয়ে বাড়ীতে আবার দেখা হবে,ওকে আমার অবস্থাটা বুঝিয়ে বলিস...আচ্ছা বাই।
ফোন রেখে দিয়ে স্বস্তি বোধ করে।
--কি বলছিল?
--কি বলবে কেন যাইনি জিজ্ঞেস করছিল।বিয়েটা একদিন পরে করা যেতো না?
--তুই বেলিকে বলিস।
--না না ওকে কিছু বলার দরকার নেই।
করিডোরে দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞাকে খুব চিন্তিত মনে হয়।কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখল,মনে মনে কি যেন হিসেব করে।শুভেন্দু এসে বলল,হাই প্রজ্ঞা ক্লাসে যাবি না?
--নারে আমাকে বাসায় ফিরতে হবে জরুরী কাজ আছে।
--তাহলে না আসলেই পারতিস।
--আগে তো জানতাম না এই মাত্র খবর পেলাম।
বাসায় ফিরতে মাসীমণি অবাক,কিরে এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি?
--মাসীমণি তোমার মাস্তানকে মনে আছে?
--যে এসেছিল একদিন?ওকী সত্যি মস্তানি করে বেড়ায়?
প্রজ্ঞা হাসে বলল,মাস্তান সিভিল সার্ভিস পাস করেছে।
--ওমা তাই?তোকে কে বলল?
--ও মাকে নিয়ে আসছে।
--কেন এই বেলি শোন--।
প্রজ্ঞা অন্য ঘরে গিয়ে মোবাইলের বাটন টিপে কানে লাগায়,রিং হচ্ছে।--হ্যা-হ্যা রিঙ্কু পোদ্দার...আমি প্রজ্ঞা চৌধুরী বিজন চৌধুরীর মেয়ে...আপনাকে আগে বলেছিলাম মনে আছে...হ্যা-হ্যা আজ আসতে পারবেন....দেরী মানে...ঠিক আছে আটটার মধ্যে আসলেই হবে...আপনি ঠিকানাটা লিখে নিন...অনেক ধন্যবাদ।ফোন রেখে স্বস্তির শ্বাস ফেলল।
সেজে গুজে একে একে সব রকে এসে জমা হয়।পারফিউমের গন্ধ ভুর ভুর করে।নির্মল বলল,কিরে মনাকে দেখছি না।
--ওর একটু দেরী হবে।বঙ্কিম বলল।
--আমরা কিন্তু সাড়ে-সাতটায় স্টার্ট করব।কারো জন্য অপেক্ষা করতে পারব না।শুভ বলল।
--হ্যা-হ্যা বেশি রাত করা ঠিক হবে না।শঙ্কর বলল।
--দেরী হবে,তোর সঙ্গে কথা হয়েছে?নির্মল জিজ্ঞেস করল।
বঙ্কিম ভাবে কথাটা বলবে কিনা।
--তুই কি করে জানলি?একবার ফোন করনা।
--ও বাসায় নেই।আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে কি নাকি জরুরী কাজ আছে।বলছিল আইএএস সিলেক্ট হয়েছে।
শুভ ভ্রু কুচকে বঙ্কিমকে দেখে তারপর বলল,আই এ এস কি বুঝিস?
বঙ্কিম বিরক্ত হয়ে বলল,তুই বুঝলেই হবে আমার বোঝার দরকার নেই।
বঙ্কিমের মনে হল কথাটা না বললেই ভাল হত।তার মনে হচ্ছে মনা আইএএসই বলেছিল।
--তুই কি করে জানলি?নির্মল জিজ্ঞেস করল।
--বললাম না আমার সঙ্গে দেখা হয়েছে,ট্যাক্সি করে যাচ্ছিল সঙ্গে মাসীমাও ছিলেন।
--আই এ এস?আড্ডায় আসতো না, আমারও কেমন সন্দেহ হয়েছিল।চাদু বলল।
--আড্ডায় আসতো না অমনি সন্দেহ হল আই এ এস?শুভ খিচিয়ে ওঠে।শোনো সাড়ে-সাতটা বাজলেই রওনা হব সে আইএ এস আসুক না আসুক।
ট্যাক্সি থেকে নজরে পড়ে বেলি বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।মাকে কি দিয়ে বশ করেছে ভগবান জানে।এতক্ষন ওরা হয়তো বিয়ে বাড়ি পৌছে গেছে।ট্যাক্সি বাড়ীর সামনে থামতে প্রজ্ঞা ভাড়া মিটিয়ে দিল।দরজা খুলে হিমানীদেবীকে ধরে নামালো।হিমানীদেবী নেমে জিজ্ঞেস করলেন,বেলি কি হয়েছে মা?
--ভিতরে চলো সব বলছি।
মনসিজ লক্ষ্য করে বেলি মাকে নিয়ে উপরে চলে গেল,তাকে দেখলোই না।ট্যাক্সি করে ফেরা সম্ভব নয় তাকে বাসেই যেতে হবে।কিন্তু মাকে ফেলে তো যাওয়া যায় না।মার সঙ্গে দেখা করে যা করার করবে।মনসিজও উপরে উঠে এল।একটা ঘরে মা বেলি আর বেলির মাসী কি নিয়ে কথা বলছে।মনসিজ ঢুকে ওদের আলাপ শুনতে থাকে।
চারুলতা বললেন,বড়দিকে না জানিয়ে এতবড় একটা কাজ--শেষে আমাকে দুষবে--।
--মাসীমণি তোমাকে কেউ কিছু বলবে না।
হিমানীদেবী বললেন,বেলি তোর মাসীমণির কথাটা বোঝার চেষ্টা কর--।
--মামণি এতদূর যাবে এভাবে একলা আমি ছাড়তে পারি না।
মনসিজ এতক্ষনে একটু বুঝতে পারে বিষয়টা কি বলল,হ্যা বেলি মাসী মণির কথায় যুক্তি আছে--।
--এই তুই বড়দের কথার মধ্যে কথা বলছিস কেন?শোনো মাসীমণি তোমার ছেলে এ্যামেরিকা গিয়ে কি করল,আর বাপি বিলেত যাবার আগে দাদার বিয়ে দিয়েছিল কেন?
--ও ওরকম ছেলে নয়।চারুলতা বললেন।
--মাস্তান কেমন ছেলে আমাকে বোঝাতে এসো না।এ্যাই তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস,ও ঘরে চল।
প্রজ্ঞার সঙ্গে মনসিজ পাশের ঘরে চলে গেল।খাটের উপর ধুতি পাঞ্জাবী পড়ে আছে ওগুলো দেখিয়ে বলল,এখানে সব রইল তাড়াতাড়ি পরে ফেল।
মনসিজ ধুতি হাতে নিয়ে বলল,আমি ধুতি পরতে পারব না।জম্মে কোনোদিন ধুতি পরিনি।
--কি পারিস তুই?
--যতটা পারিস পর আমি শিখিয়ে দেবো।
চারুলতা ভাবেন দিনের পর দিন এক এক করে সব কিনেছে মেয়েটা এই দিনটার জন্য।কেমন মায়া হল।বড়দি যা খুশি বলুক তখন দেখা যাবে ওকে আর বাধা দেবেন না।হিমানীদেবীকে বললেন,দিদি অনেক আশা করে মেয়েটা ট্রলিব্যাগ জামা প্যাণ্ট বরের যা কিছু একটা-একটা করে কিনেছে বেচারি।ওকে আশির্বাদ করুন।
--বেলিকে আমি পর ভাবিনা ভাবছি মেয়েটাকে এজন্য লাঞ্ছনা সহ্য করতে না হয়।
কাজের পিসি এসে খবর দিল,নীচে এক মেম সাব এসেছেন।প্রজ্ঞা তাকে বসতে বলে নিজে শাড়ি পরতে থাকে।লক্ষ্য করে মাস্তান না কুচিয়ে মুঠো করে ধরে কাছা দিচ্ছে।
--এই গাধা দে এদিকে দে।কাপড়টা নিয়ে কুচি দিয়ে দু-পায়ের ফাক দিয়ে কাছা পিছন দিকে নিতে গিয়ে হাতে ছোয়া লাগতে চমকে ওঠে।মনে হচ্ছে বেশ লম্বা হবে।মাস্তানের দিকে তাকিয়ে নির্বিকার ভাব দেখে বুঝল তার হাত লেগেছে ব্যাটা বুঝতে পারেনি।সিভিল সার্ভিস পাস করলেও একেবারে ছেলে মানুষ।ওরা সাজগোজ করে মাসীমণির ঘরে এস প্রজ্ঞা বলল,এবার আমাদের আশির্বাদ করো।
হিমানীদেবী নিজের গলার হার খুলে বেলির গলায় পরিয়ে দিয়ে বললেন,তুই তো আগে কিছুই বলিস নি মা।
সবাই বৈঠক খানায় নেমে এল।রিঙ্কু পোদ্দার সব কিছু রেডি করে অপেক্ষা করছিলেন।ওরা আসতে কাগজ এগিয়ে দিয়ে একে একে সবাইকে দিয়ে সই করালেন।মনসিজ ভাবে আজ মীনাক্ষীর বিয়ে হচ্ছে আর এখানে তার বিয়ে হচ্ছে।শুভ লগ্ন।
সই সাবুদের পর রিঙ্কু পোদ্দার বললেন,বলুন আমি মনসিজ মজুমদারকে সজ্ঞানে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম।তারপর মনসিজকে দিয়েও বলিয়ে নিলেন।
কাজের পিসি এসে খবর দিল,মেমসাব সাহেব এসেছে।
অশোক এসে গেছে,দ্রুত উপরে উঠে গেলেন চারুলতা।চারুলতা ঢুকতে অশোক জিজ্ঞেস করলেন,নীচে কি হচ্ছে?
সব শুনে অশোক গম্ভীর হয়ে বসে থাকেন।চারুলতার মনে হয় কাজটা ঠিক করেন নি।অশোক জিজ্ঞেস করল,ছেলেটা কি ওর কলেজে পড়ে?
--না।তাল পুকুরে থাকতো।এবার সিভিল সার্ভিস পাস করেছে।
অশোকের মুখে স্বস্তির আলো ফোটে।চারুলতা বললেন,আমি ভাবছি বড়দির কথা--।
বন্ধুদের মধ্যে মনসিজকে না দেখে জিজ্ঞেস করল,কিরে মনা আসেনি?
--মনা আই এ এস হয়েছে।ব্যঙ্গচ্ছলে বলল শুভ।
দিলীপ বুঝতে পারে না,দুর্বোধ্য চোখে অন্যদের দিকে তাকায়।দিলীপকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বঙ্কিম ফিস ফিস করে ঘটনাটা বলল।রুক্সানা এসে বলল, দিদি তোমার খোজ করছে।
দিলীপ বলল,তোরা বোস আমি আসছি।
রিঙ্কি পোদ্দারকে টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করে প্রজ্ঞা বলল,মামণি তোমরা একটু বোসো।মেশো এসেছে আমি দেখা করে আসি।
মনসিজ বসে ঘামতে থাকে।একটা সই করল বিয়ে হয়ে গেল।দিলীপের বাড়ীতে ওরা এতক্ষনে চলে গেছে।হিমানীদেবী বললেন,মনু ফোন বাজছে।
মনসিজ ফোন কানে লাগিয়ে বলল,ভেরি স্যরি এমন একটা বাজে ব্যাপারে আটকে গেলাম...তোকে বঙ্কা কিছু বলেনি...হ্যা আমি তো বঙ্কাকে বলেছিলাম...হ্যা-হ্যা সেই চিঠিতেই খবরটা পেয়েছি...এ্যা...হ্যা খুব খারাপ লাগছে...আমার খোজ করছিল...হ্যা বলেছিল বিয়ে বাড়ীতে আবার দেখা হবে,ওকে আমার অবস্থাটা বুঝিয়ে বলিস...আচ্ছা বাই।
ফোন রেখে দিয়ে স্বস্তি বোধ করে।
--কি বলছিল?
--কি বলবে কেন যাইনি জিজ্ঞেস করছিল।বিয়েটা একদিন পরে করা যেতো না?
--তুই বেলিকে বলিস।
--না না ওকে কিছু বলার দরকার নেই।