01-12-2021, 04:43 PM
(This post was last modified: 19-02-2022, 04:32 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
।।৭৪।।
মনসিজের ঘুম ভেঙ্গেছে।মনে পড়ল মীনাক্ষীর বিয়ের কথা।সবার সঙ্গে দেখা হবে।আশিসদাকে বলেছে কিনা জানে না।রুক্সানা মেয়েটি বেশ।প্রেমের জন্য মেয়েরা কি করতে পারে আপনার ধারণা নেই। বলার সময় চোখে মুখে যে দৃঢ়তা দেখেছিল তাতে কথাটা হেসে উড়িয়ে দিতে পারেনি।বেরিয়ে লণ্ড্রি হতে জামা প্যাণ্ট আনতে হবে।
চা নিয়ে হিমানীদেবী ঢুকলেন।চায়ের কাপ হাতে নিতে হিমানীদেবী বললেন,বেলি খুব রেগে গেছে একটা চিঠি আনার সময় হল না!
--বেলি কে?সব ব্যাপারে ওর এত মাথা ব্যথা কেন?মনসিজের গলায় উষ্মা।
অবাক হয়ে ছেলের দিকে দেখলেন হিমানীদেবী বললেন,তুই কি মানুষ।আর কিছু নাহোক কৃতজ্ঞতা বলেও তো একটা কথা আছে।ঘর ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে গেলেন হিমানীদেবী।
মনসিজের চোখ ছল ছল করে উঠল।তার মধ্যে কৃতজ্ঞতা বোধ নেই মা এই কথা বলল।পর মুহূর্তে মনে হল মা ভুল কিছু বলেনি।বেলি তার জন্য কিইনা করেছে।আজ যত অবধি পৌছেছে বেলির জন্য।তার ওভাবে কথাটা বলা ঠিক হয়নি।চা শেষ করে মায়ের ঘরে গেল।হিমানীদেবী বললেন,কিরে কিছু বলবি?
--আমার ভুল হয়ে গেছে।তোমার মুখে বেলির কথা শুনে খুব রাগ হয়েছিল।বেলি আমার জন্য অনেক করেছে মানছি তাই বলে সব সময় বেলি-বেলি করতে হবে?
--আচ্ছা মনু তুই আমার সামনে এত কথা বলিস বেলিকে কেন বলিস না?
মনসিজ ঠোট বেকিয়ে অবজ্ঞাভরে বলে,তুমি কি ভেবেছো বেলিকে আমি ভয় পাই?নেহাত ও মেয়ে তাছাড়া চোটপাট করলে আমার গায়ে তো ফোস্কা পড়ছে না তাই কিছু বলিনা।তাছাড়া লোকের সঙ্গে ঝগড়া করতে ভাল লাগে না।
ঠোট টিপে মৃদু হেসে হিমানীদেবী বললেন,ওকে যদি বউ করি?
মায়ের মুখে কথাটা শুনে মনসিজের আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা।মাকে দেখেছে বরাবর বাস্তবের পথে চলতে।কাধ ঝাকিয়ে বলল,মা বেলি তোমার মাথাটা খেয়েছে।
--বেলিকে আমি কথা দিয়েছি।
--আচ্ছা তুমি কি ইয়ার্কি বোঝো না?একটা কথা শুনে রাখো আমার মাকে যে অপমান করবে সে যেই হোক তাকে আমি ছেড়ে কথা বলব না।মনসিজ বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।
মায়ের কোনো দোষ নেই, সব কিছুর জন্য বেলিকে দায়ী মনে হয়।বন্ধু বান্ধবরা পর্যন্ত অনেকে ভাবে গার্ল ফ্রেণ্ড।লণ্ড্রি হতে জামা প্যাণ্ট আনতে হবে।জামা গায়ে দিয়ে বেরোতে যাবে হিমানী দেবী বললেন,কোথায় যাচ্ছিস?
--লণ্ড্রির থেকে ঘুরে আসছি।
--পিয়ন না আসা অবধি কোথাও যেতে হবে না।
--মানে পিয়ন কখন আসবে ততক্ষন আমি ঘরে বসে থাকবো?
--হ্যা বসে থাকবি।
--এও কি বেলি বলেছে?
--আমি বলছি তুই এখন কোথাও যাবি না।
মনসিজ ঘরে ফিরে এসে ভাবে সব কেমন বদলে যাচ্ছে।মায়ের এমন চড়া গলা আগে শোনেনি।অবশ্য চিঠিতে কি আছে জানার কৌতূহল তারও কম নেই।কাল চারটের সময় পোস্ট অফিসে গেলে চিঠীটা পেয়ে যেতো।তার গাফিলতির জন্য হয়নি।কি চিঠি কিছু জানলো না বুঝলো না বেলির এতে রাগের কি হল।কলিং বেল বাজতে উঠে বসে,মনে হয় পিয়ন এসেছে।
তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলতে দেখল যা ভেবেছে তাই বলল,একটা রেজিস্ট্রি চিঠি--।
--মনসিজ মজুমদার?
--হ্যা আমি।
--কোনো ছবিওলা পরিচয় পত্র আছে?
মনসিজ ভেবে বলল,পরিচয় পত্র ছবিওলা তো নেই।
পিয়ন যেন কৃপা করছে এমনভাবে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল,এখানে সই করুন।
মনসিজ সই করে খামটা নিয়ে দরজা বন্ধ করতে যাবে দেখল পিয়নটা দাঁড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করল,কিছু বলবেন?
--স্যার কিছু দেবন না?
শালা একেবারে স্যার?ঘরে গিয়ে পাচটা টাকা নিয়ে পিয়নকে দিল।দরজা বন্ধ করে চিঠী খুলে পড়তে থাকে।মনসিজের মুখে ছায়া ঘনিয়ে আসে।হিমানীদেবী পাশে দাঁড়িয়ে ছেলের দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে মুখ দেখে বললেন,কিরে কোনো খারাপ খবর?
মনসিজ ফ্যাল ফ্যাল করে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
--কি রে মনু?
--মাগো তোমায় ছেড়ে আমাকে ট্রেনিং-র জন্য লখনোউ যেতে হবে।
--আর চাকরি?
--এইতো চাকরির শুরু। উইদিন ফরট নাইট মানে দিন পনেরোর মধ্যে যাবার কথা বলেছে।
--মন খারাপ করিস না।তুই কোথায় যাবি বলছিলি যা।
মনসিজ চিঠিটা রেখে বেরিয়ে পড়ল।হিমানী দেবীর মন খারাপ।দু-একদিনের জন্য এখানে সেখানে গেলেও এতদিনের মনু মাকে ছাড়া থাকেনি।তাহলেও ছেলের উন্নতিতে তাকে এটুকু মেনে নিতে হবে।সারা ঘরে কেমন নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। আচলে চোখ মুছলেন।
খাটের উপর পড়ে থাকা মোবাইল বেজে ওঠে।হিমানীদেবী হাত বাড়িয়ে মোবাইল কানে লাগিয়ে বললেন,হ্যা এসেছে...না শরীর ঠিক আছে...ওকে লখনৌ যেতে হবে তাই...আজই যেতে হবে...কি জরুরী...ট্যাক্সিতে যাব কিন্তু আমি তো চিনি না...ওর আবার বিয়ে বাড়ী...আচ্ছা-আচ্ছা...তুই বলছিস যাবনা?...আচ্ছা ঠিক আছে।
মনসিজ লণ্ড্রি থেকে ফেরার পর হিমানীদেবী বললেন,স্নান করে নে,ভাত দিচ্ছি।
বাথরুমে ঢুকে রেজর দিয়ে সেভ করল।সারা গায়ে সাবান মেখে স্নান করল।সন্ধ্যে বেলা বিয়ে বাড়ী সব মাঞ্জা দিয়ে আসবে।সবাই বলাবলি করছিল নাকি দুশো টাকার প্লেট হয়েছে।কুড়ি টাকা দিয়ে দুশো টাকা মনে মনে হাসে।
খেতে বসে হিমানীদেবী ভাবেন কথাটা এখনই বলবেন কিনা।এখন খাচ্ছে খাক,খেয়ে-দেয়ে একটু বিশ্রাম করুক।বিকেলে যেতে বলেছে এখনই বলার দরকার নেই।কি জরুরী দরকার গেলে বলবে বলেছে।
রোদ পড়ে এলে হিমানীদেবী শাড়ী পরা শুরু করেন।নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে না হলে বেলি এভাবে বলতো না।শাড়ী পরা হলে বার কয়েক মনুর ঘরে উকি দিলেন।চুপচাপ শুয়ে আছে।মনুকে কিভাবে বলবে ভেবে বললেন,মনু শোন।
মনসিজ উঠে মায়ের ঘরে গিয়ে সাজগোজ করা মাকে দেখে অবাক হয়ে বলল,কি ব্যাপার তুমি কোথাও যাচ্ছো?
--একটা ট্যাক্সি ডাক।
চমকে উঠে বলল,ট্যাক্সি?কোথায় যাবে?
--বেলির ওখানে জরুরী দরকার।
--তুমি চেনো বেলির মাসীর বাড়ী কোথায়?
--তুই নিয়ে যাবি।
--একটু পরে বিয়ে বাড়ী যাব,কাল গেলে হয়না?
--তুই যদি না যাস আমি কিন্তু আর ফিরব না।
গলার স্বর শুনে মনসিজ আর কথা বাড়ায় না।নিজের ঘরে গিয়ে পাট ভাঙ্গা জামা-প্যাণ্ট পরে ট্যাক্সি ডাকতে গেল।আমি আর ফিরব না কথা মনে হতেই বুক কেপে ওঠে।
ট্যাক্সিতে উঠে মা ও ছেলে রওনা হল।কিছুটা যেতে রাস্তায় বঙ্কিমকে দেখে ট্যাক্সি দাড় করিয়ে জানলা দিয়ে গলা বের করে ডাকল।
বঙ্কিম কিছুটা অবাক হয়ে ট্যাক্সির কাছে এসে বলল,কি রে কোথায় যাচ্ছিস?
--একটা জরুরী কাজে যেতে হচ্ছে।ফিরতে দেরী হতে পারে দিলীপকে বলিস।আর শোন আমি আইএএসে-এ সিলেক্টেড হয়েছি।ট্যাক্সি স্টার্ট করে,বঙ্কিম গলা তুলে বলল,তাড়াতাড়ি ফিরিস।
ট্যাক্সিতে ওর মা ছিলেন,হঠাৎ কি এমন দরকার পড়ল বঙ্কিম ভাবতে থাকে।শেষে কি যেন বলল আইএএসে-এ সিলেকটেড হয়েছে।ঠিক শুনেছে তো...মনা ইয়ার্কি করার ছেলে নয়।রকে আসছিল কম,ওকী তাহলে পরীক্ষার জন্য আসছিল না? অঙ্কটা মেলাবার চেষ্টা করে।আইএএসে-এ সিলেকটেড তাই তো বলল।
মনসিজের ঘুম ভেঙ্গেছে।মনে পড়ল মীনাক্ষীর বিয়ের কথা।সবার সঙ্গে দেখা হবে।আশিসদাকে বলেছে কিনা জানে না।রুক্সানা মেয়েটি বেশ।প্রেমের জন্য মেয়েরা কি করতে পারে আপনার ধারণা নেই। বলার সময় চোখে মুখে যে দৃঢ়তা দেখেছিল তাতে কথাটা হেসে উড়িয়ে দিতে পারেনি।বেরিয়ে লণ্ড্রি হতে জামা প্যাণ্ট আনতে হবে।
চা নিয়ে হিমানীদেবী ঢুকলেন।চায়ের কাপ হাতে নিতে হিমানীদেবী বললেন,বেলি খুব রেগে গেছে একটা চিঠি আনার সময় হল না!
--বেলি কে?সব ব্যাপারে ওর এত মাথা ব্যথা কেন?মনসিজের গলায় উষ্মা।
অবাক হয়ে ছেলের দিকে দেখলেন হিমানীদেবী বললেন,তুই কি মানুষ।আর কিছু নাহোক কৃতজ্ঞতা বলেও তো একটা কথা আছে।ঘর ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে গেলেন হিমানীদেবী।
মনসিজের চোখ ছল ছল করে উঠল।তার মধ্যে কৃতজ্ঞতা বোধ নেই মা এই কথা বলল।পর মুহূর্তে মনে হল মা ভুল কিছু বলেনি।বেলি তার জন্য কিইনা করেছে।আজ যত অবধি পৌছেছে বেলির জন্য।তার ওভাবে কথাটা বলা ঠিক হয়নি।চা শেষ করে মায়ের ঘরে গেল।হিমানীদেবী বললেন,কিরে কিছু বলবি?
--আমার ভুল হয়ে গেছে।তোমার মুখে বেলির কথা শুনে খুব রাগ হয়েছিল।বেলি আমার জন্য অনেক করেছে মানছি তাই বলে সব সময় বেলি-বেলি করতে হবে?
--আচ্ছা মনু তুই আমার সামনে এত কথা বলিস বেলিকে কেন বলিস না?
মনসিজ ঠোট বেকিয়ে অবজ্ঞাভরে বলে,তুমি কি ভেবেছো বেলিকে আমি ভয় পাই?নেহাত ও মেয়ে তাছাড়া চোটপাট করলে আমার গায়ে তো ফোস্কা পড়ছে না তাই কিছু বলিনা।তাছাড়া লোকের সঙ্গে ঝগড়া করতে ভাল লাগে না।
ঠোট টিপে মৃদু হেসে হিমানীদেবী বললেন,ওকে যদি বউ করি?
মায়ের মুখে কথাটা শুনে মনসিজের আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা।মাকে দেখেছে বরাবর বাস্তবের পথে চলতে।কাধ ঝাকিয়ে বলল,মা বেলি তোমার মাথাটা খেয়েছে।
--বেলিকে আমি কথা দিয়েছি।
--আচ্ছা তুমি কি ইয়ার্কি বোঝো না?একটা কথা শুনে রাখো আমার মাকে যে অপমান করবে সে যেই হোক তাকে আমি ছেড়ে কথা বলব না।মনসিজ বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।
মায়ের কোনো দোষ নেই, সব কিছুর জন্য বেলিকে দায়ী মনে হয়।বন্ধু বান্ধবরা পর্যন্ত অনেকে ভাবে গার্ল ফ্রেণ্ড।লণ্ড্রি হতে জামা প্যাণ্ট আনতে হবে।জামা গায়ে দিয়ে বেরোতে যাবে হিমানী দেবী বললেন,কোথায় যাচ্ছিস?
--লণ্ড্রির থেকে ঘুরে আসছি।
--পিয়ন না আসা অবধি কোথাও যেতে হবে না।
--মানে পিয়ন কখন আসবে ততক্ষন আমি ঘরে বসে থাকবো?
--হ্যা বসে থাকবি।
--এও কি বেলি বলেছে?
--আমি বলছি তুই এখন কোথাও যাবি না।
মনসিজ ঘরে ফিরে এসে ভাবে সব কেমন বদলে যাচ্ছে।মায়ের এমন চড়া গলা আগে শোনেনি।অবশ্য চিঠিতে কি আছে জানার কৌতূহল তারও কম নেই।কাল চারটের সময় পোস্ট অফিসে গেলে চিঠীটা পেয়ে যেতো।তার গাফিলতির জন্য হয়নি।কি চিঠি কিছু জানলো না বুঝলো না বেলির এতে রাগের কি হল।কলিং বেল বাজতে উঠে বসে,মনে হয় পিয়ন এসেছে।
তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলতে দেখল যা ভেবেছে তাই বলল,একটা রেজিস্ট্রি চিঠি--।
--মনসিজ মজুমদার?
--হ্যা আমি।
--কোনো ছবিওলা পরিচয় পত্র আছে?
মনসিজ ভেবে বলল,পরিচয় পত্র ছবিওলা তো নেই।
পিয়ন যেন কৃপা করছে এমনভাবে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল,এখানে সই করুন।
মনসিজ সই করে খামটা নিয়ে দরজা বন্ধ করতে যাবে দেখল পিয়নটা দাঁড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করল,কিছু বলবেন?
--স্যার কিছু দেবন না?
শালা একেবারে স্যার?ঘরে গিয়ে পাচটা টাকা নিয়ে পিয়নকে দিল।দরজা বন্ধ করে চিঠী খুলে পড়তে থাকে।মনসিজের মুখে ছায়া ঘনিয়ে আসে।হিমানীদেবী পাশে দাঁড়িয়ে ছেলের দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে মুখ দেখে বললেন,কিরে কোনো খারাপ খবর?
মনসিজ ফ্যাল ফ্যাল করে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
--কি রে মনু?
--মাগো তোমায় ছেড়ে আমাকে ট্রেনিং-র জন্য লখনোউ যেতে হবে।
--আর চাকরি?
--এইতো চাকরির শুরু। উইদিন ফরট নাইট মানে দিন পনেরোর মধ্যে যাবার কথা বলেছে।
--মন খারাপ করিস না।তুই কোথায় যাবি বলছিলি যা।
মনসিজ চিঠিটা রেখে বেরিয়ে পড়ল।হিমানী দেবীর মন খারাপ।দু-একদিনের জন্য এখানে সেখানে গেলেও এতদিনের মনু মাকে ছাড়া থাকেনি।তাহলেও ছেলের উন্নতিতে তাকে এটুকু মেনে নিতে হবে।সারা ঘরে কেমন নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। আচলে চোখ মুছলেন।
খাটের উপর পড়ে থাকা মোবাইল বেজে ওঠে।হিমানীদেবী হাত বাড়িয়ে মোবাইল কানে লাগিয়ে বললেন,হ্যা এসেছে...না শরীর ঠিক আছে...ওকে লখনৌ যেতে হবে তাই...আজই যেতে হবে...কি জরুরী...ট্যাক্সিতে যাব কিন্তু আমি তো চিনি না...ওর আবার বিয়ে বাড়ী...আচ্ছা-আচ্ছা...তুই বলছিস যাবনা?...আচ্ছা ঠিক আছে।
মনসিজ লণ্ড্রি থেকে ফেরার পর হিমানীদেবী বললেন,স্নান করে নে,ভাত দিচ্ছি।
বাথরুমে ঢুকে রেজর দিয়ে সেভ করল।সারা গায়ে সাবান মেখে স্নান করল।সন্ধ্যে বেলা বিয়ে বাড়ী সব মাঞ্জা দিয়ে আসবে।সবাই বলাবলি করছিল নাকি দুশো টাকার প্লেট হয়েছে।কুড়ি টাকা দিয়ে দুশো টাকা মনে মনে হাসে।
খেতে বসে হিমানীদেবী ভাবেন কথাটা এখনই বলবেন কিনা।এখন খাচ্ছে খাক,খেয়ে-দেয়ে একটু বিশ্রাম করুক।বিকেলে যেতে বলেছে এখনই বলার দরকার নেই।কি জরুরী দরকার গেলে বলবে বলেছে।
রোদ পড়ে এলে হিমানীদেবী শাড়ী পরা শুরু করেন।নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে না হলে বেলি এভাবে বলতো না।শাড়ী পরা হলে বার কয়েক মনুর ঘরে উকি দিলেন।চুপচাপ শুয়ে আছে।মনুকে কিভাবে বলবে ভেবে বললেন,মনু শোন।
মনসিজ উঠে মায়ের ঘরে গিয়ে সাজগোজ করা মাকে দেখে অবাক হয়ে বলল,কি ব্যাপার তুমি কোথাও যাচ্ছো?
--একটা ট্যাক্সি ডাক।
চমকে উঠে বলল,ট্যাক্সি?কোথায় যাবে?
--বেলির ওখানে জরুরী দরকার।
--তুমি চেনো বেলির মাসীর বাড়ী কোথায়?
--তুই নিয়ে যাবি।
--একটু পরে বিয়ে বাড়ী যাব,কাল গেলে হয়না?
--তুই যদি না যাস আমি কিন্তু আর ফিরব না।
গলার স্বর শুনে মনসিজ আর কথা বাড়ায় না।নিজের ঘরে গিয়ে পাট ভাঙ্গা জামা-প্যাণ্ট পরে ট্যাক্সি ডাকতে গেল।আমি আর ফিরব না কথা মনে হতেই বুক কেপে ওঠে।
ট্যাক্সিতে উঠে মা ও ছেলে রওনা হল।কিছুটা যেতে রাস্তায় বঙ্কিমকে দেখে ট্যাক্সি দাড় করিয়ে জানলা দিয়ে গলা বের করে ডাকল।
বঙ্কিম কিছুটা অবাক হয়ে ট্যাক্সির কাছে এসে বলল,কি রে কোথায় যাচ্ছিস?
--একটা জরুরী কাজে যেতে হচ্ছে।ফিরতে দেরী হতে পারে দিলীপকে বলিস।আর শোন আমি আইএএসে-এ সিলেক্টেড হয়েছি।ট্যাক্সি স্টার্ট করে,বঙ্কিম গলা তুলে বলল,তাড়াতাড়ি ফিরিস।
ট্যাক্সিতে ওর মা ছিলেন,হঠাৎ কি এমন দরকার পড়ল বঙ্কিম ভাবতে থাকে।শেষে কি যেন বলল আইএএসে-এ সিলেকটেড হয়েছে।ঠিক শুনেছে তো...মনা ইয়ার্কি করার ছেলে নয়।রকে আসছিল কম,ওকী তাহলে পরীক্ষার জন্য আসছিল না? অঙ্কটা মেলাবার চেষ্টা করে।আইএএসে-এ সিলেকটেড তাই তো বলল।