13-11-2021, 11:07 PM
< ডাক যুবতী >
পর্ব ১
রবিবারের সকাল, অভি চুপচাপ বিছানায় বসে জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছিল। মা কয়েক বার ডেকে সাড়া না পেয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো…তোর কি হয়েছে বল তো? অফিসে কিছু গন্ডগোল হয়েছে?
নাঃ…
কিছু হয়নি তো সব সময় চুপকরে বসে থাকিস কেন?
বলছি তো কিছু হয়নি, বার বার কেন জিজ্ঞেস করছো?
অভি কোনোদিন এইভাবে ঝাঁঝিয়ে কথা বলে না... আজ ওর কথাটা শুনে মা একটু চুপ করে থেকে বলল…ভালো না লাগলে কয়েকদিন কোথাও গিয়ে ঘুরে আয়।
অফিস থেকে দিন তিনেকের ছুটি নিয়ে অভি আর ওর বন্ধু ঋজু বকখালি এসেছে। অভি সেই আগের মতো চুপচাপ, খুব একটা কথা বলছে না। ঋজু অনেক চেষ্টা করেও ওর মুখ থেকে কিছু বের করতে পারেনি। সন্ধেবেলা দুজনে বসে টিভি দেখছিল, ঋজু অনেক অনুরোধ উপরোধ করে ওকে এক পেগ খেতে রাজী করিয়েছে। ঋজুর তিন পেগ শেষ হয়ে গেলেও অভি সেই একটা নিয়ে বসে ছিল।
অভি, চল, একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি বলে ওকে জোর করে টেনে নিয়ে বেরোল। দুজনে সমুদ্রের দিকে মুখ করে বসে, হু হু করে হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। অভি হাঁটুতে মুখ গুজে বসে, মনে হয় কাঁদছে। ঋজু ওর খুব কাছে সরে এসে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল…অভি, প্লিজ বল কি হয়েছে। কাউকে না বললে নিজেকে কি করে হালকা করবি।
অভি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না, অল্প খেলেও মাথা টা একটু ঝিম ঝিম করছিল। বন্ধুর আন্তরিক ব্যাবহারে ওর বুকের ভেতর থেকে অনেক কষ্টে আটকে রাখা কথা গুলো একটু একটু করে বেরিয়ে এলো। রিম্পা, ওর কলেজ লাইফের বান্ধবী, দিন পনেরো আগে জানিয়ে দিয়েছে ওর পক্ষে অভির সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কারন টা খুব ই সামান্য, অভির মতো ছেলের সাথে প্রেম করা যায় কিন্তু বিয়ে করতে পারবে না। অভী ওকে অনেক বোঝাবার চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই রিম্পাকে ফেরাতে পারেনি। পরে যেটা জেনেছিল… রিম্পার এক বান্ধবী মারফত, রিম্পার দাদার এক বন্ধু, বেশ ভালো একটা চাকরী করে, সিঙ্গাপুরে থাকে, রিম্পার মা বাবার খুব পছন্দ। রিম্পাও এখন আর অভির মতো ছেলের সাথে নিজেকে জড়াতে চাইছে না, যার নাকি কোনো উচ্চাশা নেই, থাকলে এতদিনে বাইরে কোথাও চলে যেতে পারতো।
বকখালি থেকে ফেরার পর আরো কয়েক দিন কেটে গেছে। ঋজু এখন প্রায় প্রতিদিন ফোন করে ওর খোঁজ খবর নেয়। অভি পরিস্থিতির সাথে কিছুটা মানিয়ে নিলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারেনি, তবে এখন মনের কথা বন্ধুকে বলে একটু নিজেকে হালকা করতে পারছে। শনিবার অফিসের পর ঋজু সোজা ওর অফিসে চলে এলো আগে থেকে কিছু না বলেই। অভি ও বেরোবো বেরোবো ভাবছিল। অফিস থেকে বেরিয়ে রিজু একটা ট্যাক্সি নিয়ে গড়িয়াহাটের দিকে যেতে বলে ওর দিকে তাকিয়ে বলল…অভি, তুই তো জানিস। আমার ও তোরই মতো অবস্থা হয়েছিল। স্বর্নালী আমাকে প্রায় একই ভাবে না বলে দিয়েছিল। একবার ও ভাবেনি, তিন বছরেরও বেশী একটা সম্পর্ক ভাঙ্গার আগে। আমি কিন্তু তোর মতো ভেঙ্গে পড়িনি। এমন কি তোকেও কোনোদিন বুঝতে দিই নি, প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগতো কিন্তু নিজেকে সামলে নিতে পেরেছিলাম।
অভি বাইরের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল…কি ভাবে?
এখনই বলছি না, এক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি, ওখানে গিয়ে বুঝতে পারবি।
অভি চুপ করে থেকে বোঝার চেষ্টা করছিল ঋজু ওকে কোথায় এমন নিয়ে যাবে যেখানে গিয়ে ও নিজের দুঃখ ভুলতে পেরেছিল। বুঝতে না পেরে বলল…এখন বলতে কি হয়েছে? তুই তো জানিস আমি ড্রিঙ্কস খুব একটা পছন্দ করি না। আমার ভালো লাগে না। মনে হয় নিজের দুঃখ যন্ত্রনা আরো বেড়ে যায় ওতে।
ঋজু একটা সিগারেট ধরিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে জবাব দিল…ধর কেউ যদি তোকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও খুব কাছে টেনে আপন করে নেয়, তোর ভালো লাগবে না?
বুঝলাম না।
তুই চিরকাল সেই একই রকম থেকে গেলি, কিছুই বুঝিস না। কোনো সুন্দরী মেয়ে যদি তোকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করে একেবারে প্রেমিকার মতো, তোর কেমন লাগবে?
এখোনো বুঝলাম না। কোনো সুন্দরী মেয়ে কেন আমাকে সঙ্গ দেবে?
কেন দেবে না, আজকাল টাকা খরচ করলে সুন্দরী মেয়ের শরীর প্রেম সব কিছু পাওয়া যায়। কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আনন্দ সুখ সব কিছু পাওয়া কোনো ব্যাপারই না।
অভির মাথা কাজ করছিল না, কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল…আমাকে এখানে নামিয়ে দে। তুই গেলে যা। আমি পারবো না।
অভি, পাগলামি করিস না, তোর ভালোর জন্য ই নিয়ে যাচ্ছি। তোর ক্ষতি করার ইচ্ছে থাকলে আমি অনেক দিন আগেই নিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু আমি সেটা করিনি। আমার মন বলছে তোর এখন দরকার, তাই নিয়ে যাচ্ছি।
ঋজু, বিশ্বাস কর আমি মন থেকে মেনে নিতে পারছি না…একটা অচেনা অজানা মেয়ের সাথে কি করে…
ঠিক আছে, মন থেকে মেনে নিতে পারছিস না তো মানতে হবে না। কিছু না করতে পারিস, বসে গল্প করতে তো কোনো অসুবিধা নেই।
পর্ব ১
রবিবারের সকাল, অভি চুপচাপ বিছানায় বসে জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছিল। মা কয়েক বার ডেকে সাড়া না পেয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো…তোর কি হয়েছে বল তো? অফিসে কিছু গন্ডগোল হয়েছে?
নাঃ…
কিছু হয়নি তো সব সময় চুপকরে বসে থাকিস কেন?
বলছি তো কিছু হয়নি, বার বার কেন জিজ্ঞেস করছো?
অভি কোনোদিন এইভাবে ঝাঁঝিয়ে কথা বলে না... আজ ওর কথাটা শুনে মা একটু চুপ করে থেকে বলল…ভালো না লাগলে কয়েকদিন কোথাও গিয়ে ঘুরে আয়।
অফিস থেকে দিন তিনেকের ছুটি নিয়ে অভি আর ওর বন্ধু ঋজু বকখালি এসেছে। অভি সেই আগের মতো চুপচাপ, খুব একটা কথা বলছে না। ঋজু অনেক চেষ্টা করেও ওর মুখ থেকে কিছু বের করতে পারেনি। সন্ধেবেলা দুজনে বসে টিভি দেখছিল, ঋজু অনেক অনুরোধ উপরোধ করে ওকে এক পেগ খেতে রাজী করিয়েছে। ঋজুর তিন পেগ শেষ হয়ে গেলেও অভি সেই একটা নিয়ে বসে ছিল।
অভি, চল, একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি বলে ওকে জোর করে টেনে নিয়ে বেরোল। দুজনে সমুদ্রের দিকে মুখ করে বসে, হু হু করে হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। অভি হাঁটুতে মুখ গুজে বসে, মনে হয় কাঁদছে। ঋজু ওর খুব কাছে সরে এসে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল…অভি, প্লিজ বল কি হয়েছে। কাউকে না বললে নিজেকে কি করে হালকা করবি।
অভি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না, অল্প খেলেও মাথা টা একটু ঝিম ঝিম করছিল। বন্ধুর আন্তরিক ব্যাবহারে ওর বুকের ভেতর থেকে অনেক কষ্টে আটকে রাখা কথা গুলো একটু একটু করে বেরিয়ে এলো। রিম্পা, ওর কলেজ লাইফের বান্ধবী, দিন পনেরো আগে জানিয়ে দিয়েছে ওর পক্ষে অভির সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কারন টা খুব ই সামান্য, অভির মতো ছেলের সাথে প্রেম করা যায় কিন্তু বিয়ে করতে পারবে না। অভী ওকে অনেক বোঝাবার চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই রিম্পাকে ফেরাতে পারেনি। পরে যেটা জেনেছিল… রিম্পার এক বান্ধবী মারফত, রিম্পার দাদার এক বন্ধু, বেশ ভালো একটা চাকরী করে, সিঙ্গাপুরে থাকে, রিম্পার মা বাবার খুব পছন্দ। রিম্পাও এখন আর অভির মতো ছেলের সাথে নিজেকে জড়াতে চাইছে না, যার নাকি কোনো উচ্চাশা নেই, থাকলে এতদিনে বাইরে কোথাও চলে যেতে পারতো।
বকখালি থেকে ফেরার পর আরো কয়েক দিন কেটে গেছে। ঋজু এখন প্রায় প্রতিদিন ফোন করে ওর খোঁজ খবর নেয়। অভি পরিস্থিতির সাথে কিছুটা মানিয়ে নিলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারেনি, তবে এখন মনের কথা বন্ধুকে বলে একটু নিজেকে হালকা করতে পারছে। শনিবার অফিসের পর ঋজু সোজা ওর অফিসে চলে এলো আগে থেকে কিছু না বলেই। অভি ও বেরোবো বেরোবো ভাবছিল। অফিস থেকে বেরিয়ে রিজু একটা ট্যাক্সি নিয়ে গড়িয়াহাটের দিকে যেতে বলে ওর দিকে তাকিয়ে বলল…অভি, তুই তো জানিস। আমার ও তোরই মতো অবস্থা হয়েছিল। স্বর্নালী আমাকে প্রায় একই ভাবে না বলে দিয়েছিল। একবার ও ভাবেনি, তিন বছরেরও বেশী একটা সম্পর্ক ভাঙ্গার আগে। আমি কিন্তু তোর মতো ভেঙ্গে পড়িনি। এমন কি তোকেও কোনোদিন বুঝতে দিই নি, প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগতো কিন্তু নিজেকে সামলে নিতে পেরেছিলাম।
অভি বাইরের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল…কি ভাবে?
এখনই বলছি না, এক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি, ওখানে গিয়ে বুঝতে পারবি।
অভি চুপ করে থেকে বোঝার চেষ্টা করছিল ঋজু ওকে কোথায় এমন নিয়ে যাবে যেখানে গিয়ে ও নিজের দুঃখ ভুলতে পেরেছিল। বুঝতে না পেরে বলল…এখন বলতে কি হয়েছে? তুই তো জানিস আমি ড্রিঙ্কস খুব একটা পছন্দ করি না। আমার ভালো লাগে না। মনে হয় নিজের দুঃখ যন্ত্রনা আরো বেড়ে যায় ওতে।
ঋজু একটা সিগারেট ধরিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে জবাব দিল…ধর কেউ যদি তোকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও খুব কাছে টেনে আপন করে নেয়, তোর ভালো লাগবে না?
বুঝলাম না।
তুই চিরকাল সেই একই রকম থেকে গেলি, কিছুই বুঝিস না। কোনো সুন্দরী মেয়ে যদি তোকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করে একেবারে প্রেমিকার মতো, তোর কেমন লাগবে?
এখোনো বুঝলাম না। কোনো সুন্দরী মেয়ে কেন আমাকে সঙ্গ দেবে?
কেন দেবে না, আজকাল টাকা খরচ করলে সুন্দরী মেয়ের শরীর প্রেম সব কিছু পাওয়া যায়। কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আনন্দ সুখ সব কিছু পাওয়া কোনো ব্যাপারই না।
অভির মাথা কাজ করছিল না, কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল…আমাকে এখানে নামিয়ে দে। তুই গেলে যা। আমি পারবো না।
অভি, পাগলামি করিস না, তোর ভালোর জন্য ই নিয়ে যাচ্ছি। তোর ক্ষতি করার ইচ্ছে থাকলে আমি অনেক দিন আগেই নিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু আমি সেটা করিনি। আমার মন বলছে তোর এখন দরকার, তাই নিয়ে যাচ্ছি।
ঋজু, বিশ্বাস কর আমি মন থেকে মেনে নিতে পারছি না…একটা অচেনা অজানা মেয়ের সাথে কি করে…
ঠিক আছে, মন থেকে মেনে নিতে পারছিস না তো মানতে হবে না। কিছু না করতে পারিস, বসে গল্প করতে তো কোনো অসুবিধা নেই।