27-10-2021, 12:42 AM
(This post was last modified: 23-01-2022, 11:50 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।।৫১।।
ঘুম থেকে উঠে চা-টা খেয়ে ডায়েরী নিয়ে বসল।মনে পড়ল কালকের কথা।লেখা শুরু করে।
প্রথমে বেলির উপর খুব রাগ হয়েছিল।লাট সাহেবের মত--লিখে কেটে দিয়ে লিখল মহারাণীর মত হুকুম করেই দায় শেষ।এখন মনে খুব বাচা বেচে গেছে।দু-শো টাকা কম নয় মুখের উপর বলতে হবে ভেবে খারাপ লাগছিল।এখন আর খারাপ লাগছে না। বেলি খালি খালি বলেনি।বয়স কম হলে কি হবে আমি বুঝিনি ও ঠিক বুঝেছে।বেলির প্রতি আস্থা অনেক বেড়ে গেল। বিজন চৌধুরী বলতে বিজন বাবু-বিজনবাবু বলছিল,মনে হল চেনেন।বেলিকে সব কথা বলতে হবে ফোন নম্বর নিয়েছে,কিছু কথা অবশ্য বলা যাবে না। ও যদি পাশে থাকে মনে অনেক জোর পাওয়া যায়। এই অবধি লিখে মনটা উদাস হয়ে যায়।কিছুক্ষন চুপচাপ কি যেন ভাবে তারপর লেখে, চিরকাল সব একই রকম থাকবে না।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বদলায়। পড়াশুনা শেষ হলে বিজনবাবু মেয়ের বিয়ে দেবেন।কোথায় বিয়ে হবে,বিদেশেও হতে পারে।সংসার ফেলে আমার কথা ভাবার সময় পাবে কি?
হিমানীদেবী ঢুকে বললেন,কি রে কলেজ যবি না?আজ রেজাল্ট বেরোবার কথা না?
--যা হবার হবে।আগে যাই কি পরে যাই।
--খেয়ে দেয়ে বেরোবি তো?
--রান্না হয়ে গেলে বোলো।
--রান্না আর কি--ভাতটা হয়ে গেলেই হল।
হিমানীদেবী চলে গেলেন।আবার লিখতে শুরু করে,
আজ রেজাল্ট বেরোবে, কি হবে জানি না।মায়ের উদবেগের সীমা নেই।আগে একটু আগ্রহ ছিল তাপসকাকু বলেছিলেন,রেজাল্ট বেরলে খবর দিতে।চাকরি যখন করবে না তখন সেসবের প্রয়োজন কি? নিমু শুভরা সব হয়তো তৈরী হচ্ছে।সকলের এক কলেজ না হলেও ইউনিভার্সিটি এক।শিউলি বলছিল মুখ দেখাবে কি ভাবে।শুভর যদি খারাপ কিছু হয়ও ওর উচিত পাশে দাড়ানো।লোকে বলে প্রেম নাকি অন্ধ।এখন দেখছে প্রেম অত্যন্ত সেয়ানা হিসেব বুঝে নেয় কত উপার্জন নিজের বাড়ী কিনা ইত্যদি।আশিসদা ব্রাহ্মন বলে বিয়েতে রাজি হচ্ছে না।এদিক দিয়ে কল্পনা--।
মোবাইল বাজতে কানে লাগিয়ে বলল,হ্যা বলো...হ্যা দিচ্ছি।
মনসিজ খাট থেকে নেমে রান্না ঘরে গিয়ে মায়ের হাতে ফোন দিয়ে বলল,তোমার মেয়ে।
হিমানীদেবী হেসে ফোন নিয়ে কানে লাগিয়ে বললেন,বল মা...হ্যা ভাল আছি....বেরোবে তো...আমি বলেছি...হ্যা খেয়ে দেয়ে বের হবে।তুই কেমন আছিস মা...ঠিকই তো সময় পেলেই আসবি...আচ্ছা রাখি।
মনসিজ ভেবেছিল জিজ্ঞেস করবে কালকের খবর ট্যুইশনি ছেড়ে দিয়েছি কিনা? সে সব কিছু না--মামণিকে দে।এই জন্য ওর উপর রাগ হয়।মনসিজ ঠিক করে যেচে কিছুই আর বলতে যাবে না।
এলিনা ছুটি নিয়েছে।পূর্নেন্দু একজন সব সময়ের লোক রেখেছে এলিনাকে দেখাশোনা করার জন্য।তাকে কাজ কিছুই করতে হয়না বসে বসে টিভি দেখে।ছুটি নিলেও অন লাইনে অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।অলস কাহাতক বসে থাকা যায়।
খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়ে মনসিজ।রাস্তায় কারো সাথে দেখা হয়না।বাস স্ট্যাণ্ডে গিয়ে অপেক্ষা করে।এখন কেমন নার্ভাস বোধ হচ্ছে।মনে মনে ভাবার চেষ্টা করে কি লিখেছিল।কিছুই মনে করতে পারেনা।রেজাল্ট যাইহোক ফেল করবে না।কলেজের কাছে নেমে কিছুটা এগোতে সঞ্জীবের সঙ্গে দেখা।উচ্ছ্বসিত ভাবে বলল,তুমি শালা ফার্স্ট ক্লাস মেরে দিয়েছো।
সঞ্জীব মজা করছে নাতো?দ্রুত কলেজের দিকে হাটতে থাকে।নোটিশ বোর্ডের সামনে জটলা।অফিসেও লাইন পড়ে গেছে।মনসিজ অফিসের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ল।লাইন ধীরে ধীরে এগোতে থাকে।রেজাল্ট হাতে পেলো তখন প্রায় তিনটে বাজে।সঞ্জীব ভুল বলেনি।রেজাল্টে চোখ বোলাতে চোখে জল চলে এল।মনে পড়ল বাবার কথা।বাবা দেখে যেতে পারল না।বাইরে বেরিয়ে একটা ফুলের দোকান থেকে একটা রজনী গন্ধার মালা কিনল।রকে সবার খবর পাওয়া যাবে।মনসিজ বাসে উঠে পড়ল।
হিমানীদেবী ঘর ব্বারান্দা করছেন।ছেলেটা কি করবে কে জানে।এক সময় নজরে পড়ে মনু আসছে।বুকের মধ্যে ধক করে উঠল কেমন থম্থমে মুখ।কলিং বেল টেপার আগে দরজা খুলে দিলেন হিমানী দেবী।মাকে পাস কাটিয়ে মায়ের ঘরে ঢুকে গেল।হিমানীদেবী দরজা বন্ধ করে ঘরে এসে দেখলেন বাবার গলায় মালা পরিয়ে চোখ বুজে কি বিড়বিড় করছে।কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল।হিমানীদেবীর চোখেও জল এসে গেল।মনসিজ কিছু ক্ষন পর চোখ খুলে ফিক করে হেসে বলল,মা আমি ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছি।নীচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।
চিবুকে হাত দিয়ে মুখে ঠেকিয়ে বলল,বেলিকে খবর দে।
--আমি পারব না।
--ওকি কথা,তুই ওর সঙ্গে ওরকম করিস কেন?
মনসিজ নম্বর টিপে মাকে দিয়ে বলল তুমি কথা বলো।
মনসিজকে বেরোতে দেখে হিমানী দেবী বললেন,এখন কোথায় যাচ্ছিস?
--দেখি ওদের খবর নিই।
কলেজ ছুটির পর মণিকুন্তলা গেটের কাছে উস্খুশ করছে।বন্দনা এসে বলল,ওমা তুমি এখানে?আমি ভাবলাম বুঝি চলে গেছো।
--তুই যা আমার একটা কাজ আছে।
বন্দনা চলে যেতে মনে হল ওর সঙ্গে চলে গেলেই হতো।কোনো দায়িত্ববোধ নেই।কি করবে স্টেশনে চলে যাবে?সকালে একটা প্লান করে বেরিয়েছিল।মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।কলেজের দিদিমণিকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৌতূহলী লোকের নজর তাকে ছুয়ে যাচ্ছে।ওর কলেজ কি এখনো ছুটি হয়নি?
ঘুম থেকে উঠে চা-টা খেয়ে ডায়েরী নিয়ে বসল।মনে পড়ল কালকের কথা।লেখা শুরু করে।
প্রথমে বেলির উপর খুব রাগ হয়েছিল।লাট সাহেবের মত--লিখে কেটে দিয়ে লিখল মহারাণীর মত হুকুম করেই দায় শেষ।এখন মনে খুব বাচা বেচে গেছে।দু-শো টাকা কম নয় মুখের উপর বলতে হবে ভেবে খারাপ লাগছিল।এখন আর খারাপ লাগছে না। বেলি খালি খালি বলেনি।বয়স কম হলে কি হবে আমি বুঝিনি ও ঠিক বুঝেছে।বেলির প্রতি আস্থা অনেক বেড়ে গেল। বিজন চৌধুরী বলতে বিজন বাবু-বিজনবাবু বলছিল,মনে হল চেনেন।বেলিকে সব কথা বলতে হবে ফোন নম্বর নিয়েছে,কিছু কথা অবশ্য বলা যাবে না। ও যদি পাশে থাকে মনে অনেক জোর পাওয়া যায়। এই অবধি লিখে মনটা উদাস হয়ে যায়।কিছুক্ষন চুপচাপ কি যেন ভাবে তারপর লেখে, চিরকাল সব একই রকম থাকবে না।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বদলায়। পড়াশুনা শেষ হলে বিজনবাবু মেয়ের বিয়ে দেবেন।কোথায় বিয়ে হবে,বিদেশেও হতে পারে।সংসার ফেলে আমার কথা ভাবার সময় পাবে কি?
হিমানীদেবী ঢুকে বললেন,কি রে কলেজ যবি না?আজ রেজাল্ট বেরোবার কথা না?
--যা হবার হবে।আগে যাই কি পরে যাই।
--খেয়ে দেয়ে বেরোবি তো?
--রান্না হয়ে গেলে বোলো।
--রান্না আর কি--ভাতটা হয়ে গেলেই হল।
হিমানীদেবী চলে গেলেন।আবার লিখতে শুরু করে,
আজ রেজাল্ট বেরোবে, কি হবে জানি না।মায়ের উদবেগের সীমা নেই।আগে একটু আগ্রহ ছিল তাপসকাকু বলেছিলেন,রেজাল্ট বেরলে খবর দিতে।চাকরি যখন করবে না তখন সেসবের প্রয়োজন কি? নিমু শুভরা সব হয়তো তৈরী হচ্ছে।সকলের এক কলেজ না হলেও ইউনিভার্সিটি এক।শিউলি বলছিল মুখ দেখাবে কি ভাবে।শুভর যদি খারাপ কিছু হয়ও ওর উচিত পাশে দাড়ানো।লোকে বলে প্রেম নাকি অন্ধ।এখন দেখছে প্রেম অত্যন্ত সেয়ানা হিসেব বুঝে নেয় কত উপার্জন নিজের বাড়ী কিনা ইত্যদি।আশিসদা ব্রাহ্মন বলে বিয়েতে রাজি হচ্ছে না।এদিক দিয়ে কল্পনা--।
মোবাইল বাজতে কানে লাগিয়ে বলল,হ্যা বলো...হ্যা দিচ্ছি।
মনসিজ খাট থেকে নেমে রান্না ঘরে গিয়ে মায়ের হাতে ফোন দিয়ে বলল,তোমার মেয়ে।
হিমানীদেবী হেসে ফোন নিয়ে কানে লাগিয়ে বললেন,বল মা...হ্যা ভাল আছি....বেরোবে তো...আমি বলেছি...হ্যা খেয়ে দেয়ে বের হবে।তুই কেমন আছিস মা...ঠিকই তো সময় পেলেই আসবি...আচ্ছা রাখি।
মনসিজ ভেবেছিল জিজ্ঞেস করবে কালকের খবর ট্যুইশনি ছেড়ে দিয়েছি কিনা? সে সব কিছু না--মামণিকে দে।এই জন্য ওর উপর রাগ হয়।মনসিজ ঠিক করে যেচে কিছুই আর বলতে যাবে না।
এলিনা ছুটি নিয়েছে।পূর্নেন্দু একজন সব সময়ের লোক রেখেছে এলিনাকে দেখাশোনা করার জন্য।তাকে কাজ কিছুই করতে হয়না বসে বসে টিভি দেখে।ছুটি নিলেও অন লাইনে অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।অলস কাহাতক বসে থাকা যায়।
খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়ে মনসিজ।রাস্তায় কারো সাথে দেখা হয়না।বাস স্ট্যাণ্ডে গিয়ে অপেক্ষা করে।এখন কেমন নার্ভাস বোধ হচ্ছে।মনে মনে ভাবার চেষ্টা করে কি লিখেছিল।কিছুই মনে করতে পারেনা।রেজাল্ট যাইহোক ফেল করবে না।কলেজের কাছে নেমে কিছুটা এগোতে সঞ্জীবের সঙ্গে দেখা।উচ্ছ্বসিত ভাবে বলল,তুমি শালা ফার্স্ট ক্লাস মেরে দিয়েছো।
সঞ্জীব মজা করছে নাতো?দ্রুত কলেজের দিকে হাটতে থাকে।নোটিশ বোর্ডের সামনে জটলা।অফিসেও লাইন পড়ে গেছে।মনসিজ অফিসের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ল।লাইন ধীরে ধীরে এগোতে থাকে।রেজাল্ট হাতে পেলো তখন প্রায় তিনটে বাজে।সঞ্জীব ভুল বলেনি।রেজাল্টে চোখ বোলাতে চোখে জল চলে এল।মনে পড়ল বাবার কথা।বাবা দেখে যেতে পারল না।বাইরে বেরিয়ে একটা ফুলের দোকান থেকে একটা রজনী গন্ধার মালা কিনল।রকে সবার খবর পাওয়া যাবে।মনসিজ বাসে উঠে পড়ল।
হিমানীদেবী ঘর ব্বারান্দা করছেন।ছেলেটা কি করবে কে জানে।এক সময় নজরে পড়ে মনু আসছে।বুকের মধ্যে ধক করে উঠল কেমন থম্থমে মুখ।কলিং বেল টেপার আগে দরজা খুলে দিলেন হিমানী দেবী।মাকে পাস কাটিয়ে মায়ের ঘরে ঢুকে গেল।হিমানীদেবী দরজা বন্ধ করে ঘরে এসে দেখলেন বাবার গলায় মালা পরিয়ে চোখ বুজে কি বিড়বিড় করছে।কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল।হিমানীদেবীর চোখেও জল এসে গেল।মনসিজ কিছু ক্ষন পর চোখ খুলে ফিক করে হেসে বলল,মা আমি ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছি।নীচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।
চিবুকে হাত দিয়ে মুখে ঠেকিয়ে বলল,বেলিকে খবর দে।
--আমি পারব না।
--ওকি কথা,তুই ওর সঙ্গে ওরকম করিস কেন?
মনসিজ নম্বর টিপে মাকে দিয়ে বলল তুমি কথা বলো।
মনসিজকে বেরোতে দেখে হিমানী দেবী বললেন,এখন কোথায় যাচ্ছিস?
--দেখি ওদের খবর নিই।
কলেজ ছুটির পর মণিকুন্তলা গেটের কাছে উস্খুশ করছে।বন্দনা এসে বলল,ওমা তুমি এখানে?আমি ভাবলাম বুঝি চলে গেছো।
--তুই যা আমার একটা কাজ আছে।
বন্দনা চলে যেতে মনে হল ওর সঙ্গে চলে গেলেই হতো।কোনো দায়িত্ববোধ নেই।কি করবে স্টেশনে চলে যাবে?সকালে একটা প্লান করে বেরিয়েছিল।মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।কলেজের দিদিমণিকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৌতূহলী লোকের নজর তাকে ছুয়ে যাচ্ছে।ওর কলেজ কি এখনো ছুটি হয়নি?