06-10-2021, 09:10 PM
(This post was last modified: 07-10-2021, 09:06 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বন্যার চিঠিটা পড়ে, আমি বোকা বনে গেলাম। আমি তো কখনোই অহংকারী ছিলাম না। এটা বন্যার ভুল ধারনা। নাগপুর থেকে বদলী হয়ে আমতলী যাবার পর, আসলে নিজের নুতন ক্যারিয়ার ছাড়া অন্য কিছুই ভাবিনি! শফিক সাহেবকে বিয়ে করা মানে, চোখের সামনে আমাকে ডাষ্টবিনে ছুড়ে ফেলে, একটা বুড়ুকে নিয়ে সংসার করা। আর, আমাকে সারা জীবন আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারা! কি সাংঘাতিক নিষ্ঠুর শাস্তি আমার জন্যে অপেক্ষা করেছিলো এতটা দিন, তা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।
ইচ্ছে হলো শফিক সাহেবকে একটা টেলিফোন করি! কিন্তু, কি হবে টেলিফোন করে? শফিক সাহেব তো খ্যাক খ্যাক করে বিজয়ের হাসিই হাসবে! আমার মনটা সত্যিই খুব নিসংগ হয়ে উঠলো। এমন মূহুর্ত গুলোতে অন্য কেউ হলে কে কি করতো জানিনা, তবে আমি মনে মনে এমন কিছু আপন জন খোঁজতে লাগলাম, যার সাথে খানিকটা কথা বলে বুকের কষ্টটাকে লাঘব করতে পারবো।
আমার মনে হলো, সেই লাভার্স ক্লাবের লুনার কথা! বন্যার ভালোবাসার ময্যাদা দিতে গিয়েই, যার শেষ মেইলটি খুলেও পড়িনি। আমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে সেই মেইলটাই খোঁজতে থাকলাম। হ্যা পেয়েছি। লুনা লিখেছিলো, এই উইক এন্ডে সুর লাভার্স ক্লাবে আমার শেষ দিন। ইচ্ছে হলে এসো। - লুনা।
মাই গড! অনেকদিন আগের মেইল। সেপ্টেম্বর পেরিয়ে অক্টোবর। আমি তাড়াহুড়া করেই, যেতে পারিনি বলে দুঃখ প্রকাশ আর ক্ষমা চেয়ে, মেইল করলাম লুনাকে। আশ্চয্য, মেইলটা সাথে সাথেই ফিরে এলো। এরর মেসেজে জানালো, অজানা এড্রেস! ব্যাপার কি? তাহলে কি লুনা মোবাইল বদলিয়েছে? বদলানোরই তো কথা! লাভার্স ক্লাবের অনেক কাষ্টোমারদের বিরক্তিকর মেইল থেকে নিজেকে রক্ষার এটাই তো একমাত্র পথ! আমার মনটা আরও খারাপ হলো। শুধু সিগারেট এর পর সিগারেটই ধ্বংস করতে থাকলাম।
সারাটা দিন এক দুঃসহ কঠিন ভাবেই কাটলো আমার। আমি ভাবতেই পারিনি, বন্যা কখনো এমন প্রতারনা করতে পারবে। প্রতারনাই তো! আমার অহংকার যদি তাকে আঘাত করে থাকতো, তাহলে তো সে বলতেও পারতো? অথচ, মনে মনে সব কিছু চেপে রেখে, আমাকে এমন একটা শাস্তি দিয়ে সত্যিই আগুনে নিক্ষেপ করলো।
সকালে পরটা দুটো আর ডিম ভাঁজাটা ছাড়া পেটে আর কিছুই ছিলো না। তারপরও সন্ধ্যা পয্যন্ত কোন ক্ষুধা অনুভব হলো না। সন্ধ্যার পর, বাসার সামনের গলির, চায়ের দোকানটার বেঞ্চিতে গিয়ে বসলাম অবচেতন মনেই। বয় এসে বললো, কি দেবো স্যার?
আমি বয়টার দিকে এক নজর তাঁকালাম। কিছু বললাম না। কেনোনা, আমার মাথার ভেতরটা কোন কাজ করছিলো না। আমি দোকান থেকে বেড়িয়ে হাঁটতে থাকলাম। কতক্ষণ হাঁটলাম অনুমান করতে পারলাম না। তবে, নিজের অজান্তেই যেখানে এসে পৌঁছুলাম, সেটা ইভাদের বাড়ী।
সেদিন, ইভাদের বাড়ীর ভেতরের পরিবেশটা কেমন যেনো অন্য রকম মনে হলো। সব সময় এইবাড়ীটা কেমন যেনো খুব নীরব থাকে। অথচ সেদিন সন্ধ্যার অনেক পরও, তখনও বাইরের কলাপসিবল গেইটটা যেমনি খোলা, বসার ঘরের দরজাটাও খোলা। ভেতর বাড়ীটাও খুব কোলাহলময় মনে হলো। মনে হলো, ভেতরে অনেক মেহমান। আমি কলিং বেলটা টিপবো কি টিপবো না দ্বিধা দন্দের মাঝেই ছিলাম। আসলেই আমার মাথাটা ঠিক মতো কাজ করছিলো না। আমি কলিংবেলটা টিপেই ফেললাম।
ভেতর থেকে বারো তেরো বছরের একটা মেয়ে চুপি দিয়ে, আবারো ভেতরে ঢুকে গেলো। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। বাড়ীর ভেতর একটা উৎসবের গন্ধই পাচ্ছিলাম। ইভার জন্মদিন কিংবা অন্য কিছু, কে জানে? আমি তো আর দাওয়াত পাইনি! আমি ফিরে যাবার উদ্যোগই করছিলাম। ঠিক তখনই ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো শাড়ী পরা এক মহিলা। চির পরিচিতার মতোই ডাকলো, ওহ, অনি?
আমি ভালো করে দেখতেই বুঝলাম, রুনু আপা, মানে ইভার মা। শাড়ীতে তাকে সত্যিই অন্যরকম লাগছিলো। আমি বললাম, বাসায় বুঝি মেহমান? আমি তাহলে আসি।
রুনু আপাকেও খুব অস্থির দেখালো। এক ধরনের অস্থির গলাতেই বললো, অনি, তুমি এসেছো খুব ভালো করেছো! আমি একা কতটা দিক সামলাই বলো? এদিকে, ভাইয়া ভাবী রাগ করে শেষ পয্যন্ত এলোই না। তোমার দুলাভাইকে টেলিফোন করে জানালাম, সেও সব দায়ীত্ব আমার মাথায় তুলে দিয়ে বিদেশে শান্তিতেই আছে।
রুনু আপার অস্থিরতা দেখে, বন্যার কথা ভুলে গেলাম বেমালুম! আমি আগ্রহ করেই বললাম, কি ব্যাপার? বলুন তো!
রুনু আপা বললো, সব বলবো, তুমি আগে ভেতরে এসো।
ইচ্ছে হলো শফিক সাহেবকে একটা টেলিফোন করি! কিন্তু, কি হবে টেলিফোন করে? শফিক সাহেব তো খ্যাক খ্যাক করে বিজয়ের হাসিই হাসবে! আমার মনটা সত্যিই খুব নিসংগ হয়ে উঠলো। এমন মূহুর্ত গুলোতে অন্য কেউ হলে কে কি করতো জানিনা, তবে আমি মনে মনে এমন কিছু আপন জন খোঁজতে লাগলাম, যার সাথে খানিকটা কথা বলে বুকের কষ্টটাকে লাঘব করতে পারবো।
আমার মনে হলো, সেই লাভার্স ক্লাবের লুনার কথা! বন্যার ভালোবাসার ময্যাদা দিতে গিয়েই, যার শেষ মেইলটি খুলেও পড়িনি। আমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে সেই মেইলটাই খোঁজতে থাকলাম। হ্যা পেয়েছি। লুনা লিখেছিলো, এই উইক এন্ডে সুর লাভার্স ক্লাবে আমার শেষ দিন। ইচ্ছে হলে এসো। - লুনা।
মাই গড! অনেকদিন আগের মেইল। সেপ্টেম্বর পেরিয়ে অক্টোবর। আমি তাড়াহুড়া করেই, যেতে পারিনি বলে দুঃখ প্রকাশ আর ক্ষমা চেয়ে, মেইল করলাম লুনাকে। আশ্চয্য, মেইলটা সাথে সাথেই ফিরে এলো। এরর মেসেজে জানালো, অজানা এড্রেস! ব্যাপার কি? তাহলে কি লুনা মোবাইল বদলিয়েছে? বদলানোরই তো কথা! লাভার্স ক্লাবের অনেক কাষ্টোমারদের বিরক্তিকর মেইল থেকে নিজেকে রক্ষার এটাই তো একমাত্র পথ! আমার মনটা আরও খারাপ হলো। শুধু সিগারেট এর পর সিগারেটই ধ্বংস করতে থাকলাম।
সারাটা দিন এক দুঃসহ কঠিন ভাবেই কাটলো আমার। আমি ভাবতেই পারিনি, বন্যা কখনো এমন প্রতারনা করতে পারবে। প্রতারনাই তো! আমার অহংকার যদি তাকে আঘাত করে থাকতো, তাহলে তো সে বলতেও পারতো? অথচ, মনে মনে সব কিছু চেপে রেখে, আমাকে এমন একটা শাস্তি দিয়ে সত্যিই আগুনে নিক্ষেপ করলো।
সকালে পরটা দুটো আর ডিম ভাঁজাটা ছাড়া পেটে আর কিছুই ছিলো না। তারপরও সন্ধ্যা পয্যন্ত কোন ক্ষুধা অনুভব হলো না। সন্ধ্যার পর, বাসার সামনের গলির, চায়ের দোকানটার বেঞ্চিতে গিয়ে বসলাম অবচেতন মনেই। বয় এসে বললো, কি দেবো স্যার?
আমি বয়টার দিকে এক নজর তাঁকালাম। কিছু বললাম না। কেনোনা, আমার মাথার ভেতরটা কোন কাজ করছিলো না। আমি দোকান থেকে বেড়িয়ে হাঁটতে থাকলাম। কতক্ষণ হাঁটলাম অনুমান করতে পারলাম না। তবে, নিজের অজান্তেই যেখানে এসে পৌঁছুলাম, সেটা ইভাদের বাড়ী।
সেদিন, ইভাদের বাড়ীর ভেতরের পরিবেশটা কেমন যেনো অন্য রকম মনে হলো। সব সময় এইবাড়ীটা কেমন যেনো খুব নীরব থাকে। অথচ সেদিন সন্ধ্যার অনেক পরও, তখনও বাইরের কলাপসিবল গেইটটা যেমনি খোলা, বসার ঘরের দরজাটাও খোলা। ভেতর বাড়ীটাও খুব কোলাহলময় মনে হলো। মনে হলো, ভেতরে অনেক মেহমান। আমি কলিং বেলটা টিপবো কি টিপবো না দ্বিধা দন্দের মাঝেই ছিলাম। আসলেই আমার মাথাটা ঠিক মতো কাজ করছিলো না। আমি কলিংবেলটা টিপেই ফেললাম।
ভেতর থেকে বারো তেরো বছরের একটা মেয়ে চুপি দিয়ে, আবারো ভেতরে ঢুকে গেলো। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। বাড়ীর ভেতর একটা উৎসবের গন্ধই পাচ্ছিলাম। ইভার জন্মদিন কিংবা অন্য কিছু, কে জানে? আমি তো আর দাওয়াত পাইনি! আমি ফিরে যাবার উদ্যোগই করছিলাম। ঠিক তখনই ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো শাড়ী পরা এক মহিলা। চির পরিচিতার মতোই ডাকলো, ওহ, অনি?
আমি ভালো করে দেখতেই বুঝলাম, রুনু আপা, মানে ইভার মা। শাড়ীতে তাকে সত্যিই অন্যরকম লাগছিলো। আমি বললাম, বাসায় বুঝি মেহমান? আমি তাহলে আসি।
রুনু আপাকেও খুব অস্থির দেখালো। এক ধরনের অস্থির গলাতেই বললো, অনি, তুমি এসেছো খুব ভালো করেছো! আমি একা কতটা দিক সামলাই বলো? এদিকে, ভাইয়া ভাবী রাগ করে শেষ পয্যন্ত এলোই না। তোমার দুলাভাইকে টেলিফোন করে জানালাম, সেও সব দায়ীত্ব আমার মাথায় তুলে দিয়ে বিদেশে শান্তিতেই আছে।
রুনু আপার অস্থিরতা দেখে, বন্যার কথা ভুলে গেলাম বেমালুম! আমি আগ্রহ করেই বললাম, কি ব্যাপার? বলুন তো!
রুনু আপা বললো, সব বলবো, তুমি আগে ভেতরে এসো।