28-08-2021, 08:52 PM
(This post was last modified: 22-12-2021, 01:30 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।।২৩।।
মনোসিজ ভোর বেলা হাটতে বেরিয়েছে।রেল লাইনের ধার দিয়ে বরাবর যায় আজ কি হল অন্য পথ ধরল।বেশ কিছুটা হেটে হসপিটালের কাছে আসতে নজরে পড়ল কয়েকটা ছেলে কেমন চেনা চেনা লাগছে।কাছে যেতে মনে পড়ে এরা ভজুয়ার সঙ্গে সেদিন ছিল।চোখাচুখি হতে জিজ্ঞেস করল,এখানে?
একটি ছেলে বলল,গুরুর মা এখানে ভর্তি হয়েছে,অপরেশান হবে।
--তোমাদের গুরুকে দেখছিনা সে কোথায়?
ছেলেটি বিরক্তি সহকারে বলল,গুরু বেলাডের ব্যবস্থা করতে গেছে।
--চলোতো দেখে আসি।
ছেলেটি ইতস্তত করে আরেকটি ছেলে ইশারায় যেতে বললে অনিচ্ছা সত্বেও ছেলেটি মনোসিজকে নিয়ে উপরে উঠে এল।মনোসিজ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে বুঝল দ্রুত অপারেশন করতে হবে।তাহলে কেন করছে না?ব্লাড লাগবে।
--আপনাদের হসপিটালে ব্লাড নেই?
--থাকবে না কেন?ওনার রেয়ার গ্রুপ এবি নেগেটিভ।
মনোসিজ দেখল সঙ্গের ছেলেটি অদৃশ্য হয়ে গেছে।একটু ভেবে বলল,ঠিক আছে অপারেশনের ব্যবস্থা করুণ।আমার ও-নেগেটিভ।
ডাক্তারবাবু কিছুটা বিস্মিত হয়ে মনোসিজকে নিয়ে একটা বেড-এ শুইয়ে দিয়ে রক্ত নেবার ব্যবস্থা করেন।
রবিকে একা নেমে আসতে দেখে মদন জিজ্ঞেস করে,কি হল ও বেটা কোথায়?
--শালা ডাক্তারের সঙ্গে আলফাল বকছে।
--বোকাচোদা চলে এলি কেন?শালা কোনো গড়বড় করবে নাতো?
--আমি তো যেতে চাইনি তুই তো যেতে বললি।
--সাইকেল নিয়ে যা গুরুর পাত্তা লাগা।
রবি সাইকেল নিয়ে ভজুয়াকে খুজতে বেরিয়ে গেল।ওরা নীচে দাঁড়িয়ে ভাবে শালা কখন গেছে এখনও নামার নাম নেই।এই স্বপন যাতো পাত্তা লাগা মালটা কি করছে?
স্বপন উপরে উঠে গেল।এদিক-ওদিক ঘুরে কাউকে দেখতে না পেয়ে হতাশ বোধ করে।বেডে মাইজীকে না দেখে বুকটা ধড়াস করে ওঠে।
দ্রুত নীচে নেমে এসে মদনকে বলল,গাড় মারিয়েছে! মাইজী গায়েব।
--হারামীটাকে দেখলি না?
--মনে হচ্ছে অন্য সিড়ি দিয়ে নেমে গেছে।
মদন বাইকে উঠে বলল,নে ওঠ।
ভজুয়ার মা সিদ্ধেশ্বরী যাদবের অপারেশন সাকসেস ফুল।জ্ঞান ফিরলেই বেডে দেওয়া হবে।মনোসিজ ঘড়ি দেখল,অনেক বেলা হয়ে গেছে।কাউকে না দেখে নীচে নেমে এল।নীচেও কেউ নেই।তার অপেক্ষা করার সময় নেই।একটু দুধ দিয়েছিল ক্ষিধেতে পেট চড়বড় করছে,মনোসিজ বাড়ীর পথ ধরল।
অনেক খোজাখুজির পর গুরুর দেখা মিলল।রবির সঙ্গে কথা বলছে।ওদের কাছে সব শুনে আর্তনাদ করে উঠল ভজুয়া।তোরা কি গাড় মারাচ্ছিলি। শালা কিসিকো নেহি বক্সায়গা।খোকন বাইক স্টার্ট কর।
মদন বলল,এই শালা রবির জন্য--।
--ফালতু কথা বলবি না,তুই তো বললি নিয়ে যেতে।
দোতলায় উঠে করিডোরে সাজানো চেয়ারগুলোয় লাথি মারে।অপেক্ষমান লোকজন ভয়ে এদিক-ওদিক সরে গেল।খবর পেয়ে সুপার ছুটে এলেন।ভজুয়া তার অপরিচিত নয়,তিনি হাত তুলে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
--ভজন কি হচ্ছে?
--সুপার সাব আমার মা কই?
--এইমাত্র বেডে দেওয়া হয়েছে।গোলমাল কোরোনা।
ভজুয়া সঙ্গীদের দিকে তাকায়।সুপারকে বলে,অপ্রশন হবে না?
--অপারেশন হয়ে গেছে।এখন উনি ভাল আছেন,ঘুমোচ্ছেন।
--বেলাড?
--ঐতো তোমার দলের একটা ছেলে ব্লাড দিল। ছেলেটি সময় মতো না এলে মুষ্কিল হতো, নাম মনোসিজ মজুমদার।
ভজুয়া ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।সুপার বলল,তোমার দলের তো?মনে হল শিক্ষিত।এখন যেওনা কিছুক্ষন পরে যেও।
--স্যার বুড়িয়া ভাল আছে তো?
--হ্যা-হ্যা সন্ধ্যেবেলা বাড়ী নিয়ে যেও।
সুপার তাকিয়ে দেখলেন কয়েকটা চেয়ার ভেঙ্গেছে সময় মতো হস্তক্ষেপ না করলে কি যে হতো ভেবে চমকে ওঠেন।
দরজা খুলে হিমানীদেবী বললেন,তুই একটু শান্তি দিবি না?কোথায় গেছিলি?
--বাবা কি করছে?
--খেয়েদেয়ে এইমাত্র শুয়ে পড়ল।ওর শরীরটা ভাল নেই।
--তুমিও খেয়ে নিতে পারতে।
--বকিস নাতো?তাড়াতাড়ি স্নান করে খেতে আয়।
এলিনার যখন ডাক পড়ল দেখল পাশে তাতাই নেই।এইতো ছিল কোথায় গেল।এলিনা অপেক্ষা না করে একাই ঢুকে গেল।
ড সমর মুখার্জীর উলটো দিকে চেয়ারে বসল।
--বলুন কি সমস্যা?ড জিজ্ঞেস করলেন।
এলিনা মাসিক বন্ধের কথা বলল।ঘন ঘন বাথরুম পায়।খাওয়া-দাওয়া অরুচি।মুখে একটা ব্যাড স্মেল--।বলতে বলতে ডাক্তারের দিকে চোখ পড়তে দেখল ডাক্তারের মুখে রহস্যময় হাসি।
--ওই টেবিলে শুয়ে পড়ুন।
একজন এসে প্রেশার নিল।তারপর ডাক্তারবাবু তলপেটে হাত বুলিয়ে কি বোঝার চেষ্টা করেন।
--কতদিন এরকম হচ্ছে?
--সপ্তা দুয়েকের মত হবে।
--ঐ চেয়ারে গিয়ে বসুন।
এমিলা টেবিল থেকে নামতে পূর্ণেন্দু ঢুকল।ডাক্তার তাকাতে এলিনা বলল,আমার হাজব্যাণ্ড।
--ডাক্তারবাবু কি বুঝলেন?পূর্ণেন্দু জিজ্ঞেস করে।
--শী উইল প্রোবাবলি বিকাম মাদার।তবুও এই টেস্টগুলো করে আনবেন।কনফার্মড না হয়ে কিছু বলতে চাইনে।
এলিনা লাজুক চোখে তাতাইকে দেখে।
সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিম দিগন্তে।মনোসিজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচড়ায়।আজ একটা ভাল কাজ করেছে।ভাল কাজ করলে মনটাও ভাল থাকে।মাকে অবশ্য সেকথা বলেনি।রক্ত দিয়েছে শুনলে ঘাবড়ে যাবে।
মিসেস পাকড়াশী বিরক্ত ছেলেটার কোনো সময় জ্ঞান নেই।রাস্তার দিকে তাকিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে উশ্রী।স্যার কি আজ আসবে না? হঠাৎ কি দেখে ভ্রু কুচকে যায়।স্যারই তো একটু কাছে আসতে নিশ্চিত হয় স্যার।ঘরে ঢুকে বলল,মম হি ইজ কামিং।
দরজা খুলে মিসেস পাকড়াশী বললেন,আই লাইক পাংকচুয়ালিটি।
--না মানে একটা কাজে--।
--নো এক্সকিউজ।
মনোসিজ স্টাডি রুমে ঢুকে বসল।ম্যাম হয়তো বিরক্ত হয়েছেন।কিন্তু তার কিছু করার নেই।
--স্যার ডিড ইউ স্লিপিং?
চোখ লেগে গেছিল সোজা হয়ে বসে মনোসিজ বলল,গল্পটা পড়েছো?
--আর ইউ ফিলিং টায়ার্ড স্যার?
--আয় এ্যাম ওকে।মনোসিজ হেসে বলল,রাত জেগে পড়ার অভ্যেস তারপর সারাদিন বেশ ধকল গেছে--গল্পটা পড়েছো?
--দা ক্লাসিক্যাল স্টোরি--।
--স্পিক ইন বেঙ্গলি।
--স্যার গল্পটা পড়তে পড়তে বাংলার প্রতি তীব্র আকর্ষণ তৈরী হয়েছে।
--সারমর্মটা বলো।
--দা বয় গ্রো আপ ইন ন্যাচারাল এনভায়ারনমেণ্ট--।
--বাংলায় বল।
--স্যরি।ছেলেটা মানে কি বলব প্রাকৃতিক গ্রাম্য পরিবেশে বড় হয়েছে তাকে হঠাৎ ইট কাঠের শহুরে পরিবেশে মানে হি ইজ নট ফিলিং কম্ফোরট--।
--গল্পটা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের লেখা "ছুটি।" ফটিক গ্রাম্য খোলামেলা পরিবেশে বড় হয়েছে তার মা তাকে ভাইয়ের সঙ্গে আরো ভাল পরিবেশে পাঠালো।কিন্তু ফটিকের সেটা সহ্য হল না মা ভাই আত্মীয় বন্ধু বান্ধব ছেড়ে অকালে চলে যেতে হল।
--স্যার আই কাণ্ট কন্ট্রোল মাই টিয়ারস।হাউ পাথেটিক।
--প্রত্যেকের একটা নিজস্ব পরিবেশ থাকে যে পরিবেশে সে স্বচ্ছন্দ।
--স্যার আমাকে আরো বুক দেবেন আমার বাংলা পড়তে ভাল লাগে।স্যার একটা কথা বলব?
--হ্যা বলো।
--স্যার আপনি মমের কথা কিছু মাইণ্ড করবেন না।হার লাইফ ইজ ভেরি স্যাড।
--কেন উনি ভাল উপার্জন করেন তোমার মত সুন্দর সন্তান আছে--।
--উফস গড বিয়ে করেন নি আপনি বুঝবেন না।ইউ আর রিয়ালি ইমম্যাচিয়োর।জাস্ট এ্যা মিনিট--।
উশ্রী চলে গেল।সম্ভবত টয়লেটে গিয়ে থাকবে।মনোসিজেরও টয়লেটে যেতে হবে।চেপে রেখে ধোন ফুলে উঠেছে।ভেবেছিল পড়ানো শেষ করে বাইরে গিয়ে কাজটা শেষ করবে।
উশ্রী ফিরে আসতে মনোসিজ আবার শুরু করে।প্রত্যেককে নিজের মত করে মানুষ করতে হয়।অতিরিক্ত শাসনে দেখা গেছে বিপরীত ফল হয়।ব্যক্তির মধ্যের শক্তিকে বিকশিত করাতে হবে।যার মধ্যে যে গুণ আছে সেটাকে সমৃদ্ধ করতে হবে।একজনের মধ্যে সাহিত্যে অনুরাগ তাকে জোর করে বিজ্ঞানের দিকে ঠেলে দিলে সাহিত্য এবং বিজ্ঞান কোনোটারই লাভ হয়না।মনোসিজ এক সময় বলে ফেলে,উশ্রী তোমাদের টয়লেটে যেতে পারি?
--হোয়াই নট?বেরিয়ে বা-দিকে টয়লেট।
মনোসিজ দ্রুত উঠে টয়লেটের দিকে গেল।দরজা খুলে ভেজিয়ে রেখেই জিপার খুলে কমোডে শুরু করে দিল।অনেক্ষন চেপে রাখার জন্য বেশ একটা সুখানুভুতি হয়।
উশ্রী ভাবে স্যার এক্সিলেন্ত ইন্তারপ্রিতেশন এ্যাবস্লুটলি লাইক দা পিকচার।
উশতী পাকড়াশি সাড়াশব্দ না পেয়ে উঠে বসেন।টয়লেটের দিকে যেতে যেতে বলেন,হোয়াত আর ইউ ডুইং সো লং টাইম ইন টয়লেট।
মনোসিজের হয়ে গেছে অবশিষ্টটুকু ঝেড়ে ফেলার জন্য বাড়াটা করতলে নিয়ে ঝাকাতে থাকে।উশতী দরজায় ধাক্কা দিয়ে চমকে ওঠেন।ওয়াও! কি দেখছেন।দ্রুত স্যরি বলে নিজের ঘরে ফিরে গেলেন।
ঘরে ফিরেও মনের মধ্যে একটু আগে এক পলক দেখা দৃশ্যটা ভেসে থাকে।হাউ লার্জ ইট ইজ।একবার মনে হল তিনি ভুল দেখেন নি তো।
মনোসিজ ফিরে গিয়ে বসতে গীতা একরাশ খাবার দিয়ে গেল।মনোসিজ খেতে থাকে উশ্রী উঠে বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়।উশতী এক পলক দেখলেও মোটামুটি আন্দাজ করে নিয়েছেন মিনিমাম সেভেন অর এইট ইঞ্চেস হবে।দেখলে যে কোনো মেয়ে পাগল হয়ে উঠবে।
মনোসিজ ভোর বেলা হাটতে বেরিয়েছে।রেল লাইনের ধার দিয়ে বরাবর যায় আজ কি হল অন্য পথ ধরল।বেশ কিছুটা হেটে হসপিটালের কাছে আসতে নজরে পড়ল কয়েকটা ছেলে কেমন চেনা চেনা লাগছে।কাছে যেতে মনে পড়ে এরা ভজুয়ার সঙ্গে সেদিন ছিল।চোখাচুখি হতে জিজ্ঞেস করল,এখানে?
একটি ছেলে বলল,গুরুর মা এখানে ভর্তি হয়েছে,অপরেশান হবে।
--তোমাদের গুরুকে দেখছিনা সে কোথায়?
ছেলেটি বিরক্তি সহকারে বলল,গুরু বেলাডের ব্যবস্থা করতে গেছে।
--চলোতো দেখে আসি।
ছেলেটি ইতস্তত করে আরেকটি ছেলে ইশারায় যেতে বললে অনিচ্ছা সত্বেও ছেলেটি মনোসিজকে নিয়ে উপরে উঠে এল।মনোসিজ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে বুঝল দ্রুত অপারেশন করতে হবে।তাহলে কেন করছে না?ব্লাড লাগবে।
--আপনাদের হসপিটালে ব্লাড নেই?
--থাকবে না কেন?ওনার রেয়ার গ্রুপ এবি নেগেটিভ।
মনোসিজ দেখল সঙ্গের ছেলেটি অদৃশ্য হয়ে গেছে।একটু ভেবে বলল,ঠিক আছে অপারেশনের ব্যবস্থা করুণ।আমার ও-নেগেটিভ।
ডাক্তারবাবু কিছুটা বিস্মিত হয়ে মনোসিজকে নিয়ে একটা বেড-এ শুইয়ে দিয়ে রক্ত নেবার ব্যবস্থা করেন।
রবিকে একা নেমে আসতে দেখে মদন জিজ্ঞেস করে,কি হল ও বেটা কোথায়?
--শালা ডাক্তারের সঙ্গে আলফাল বকছে।
--বোকাচোদা চলে এলি কেন?শালা কোনো গড়বড় করবে নাতো?
--আমি তো যেতে চাইনি তুই তো যেতে বললি।
--সাইকেল নিয়ে যা গুরুর পাত্তা লাগা।
রবি সাইকেল নিয়ে ভজুয়াকে খুজতে বেরিয়ে গেল।ওরা নীচে দাঁড়িয়ে ভাবে শালা কখন গেছে এখনও নামার নাম নেই।এই স্বপন যাতো পাত্তা লাগা মালটা কি করছে?
স্বপন উপরে উঠে গেল।এদিক-ওদিক ঘুরে কাউকে দেখতে না পেয়ে হতাশ বোধ করে।বেডে মাইজীকে না দেখে বুকটা ধড়াস করে ওঠে।
দ্রুত নীচে নেমে এসে মদনকে বলল,গাড় মারিয়েছে! মাইজী গায়েব।
--হারামীটাকে দেখলি না?
--মনে হচ্ছে অন্য সিড়ি দিয়ে নেমে গেছে।
মদন বাইকে উঠে বলল,নে ওঠ।
ভজুয়ার মা সিদ্ধেশ্বরী যাদবের অপারেশন সাকসেস ফুল।জ্ঞান ফিরলেই বেডে দেওয়া হবে।মনোসিজ ঘড়ি দেখল,অনেক বেলা হয়ে গেছে।কাউকে না দেখে নীচে নেমে এল।নীচেও কেউ নেই।তার অপেক্ষা করার সময় নেই।একটু দুধ দিয়েছিল ক্ষিধেতে পেট চড়বড় করছে,মনোসিজ বাড়ীর পথ ধরল।
অনেক খোজাখুজির পর গুরুর দেখা মিলল।রবির সঙ্গে কথা বলছে।ওদের কাছে সব শুনে আর্তনাদ করে উঠল ভজুয়া।তোরা কি গাড় মারাচ্ছিলি। শালা কিসিকো নেহি বক্সায়গা।খোকন বাইক স্টার্ট কর।
মদন বলল,এই শালা রবির জন্য--।
--ফালতু কথা বলবি না,তুই তো বললি নিয়ে যেতে।
দোতলায় উঠে করিডোরে সাজানো চেয়ারগুলোয় লাথি মারে।অপেক্ষমান লোকজন ভয়ে এদিক-ওদিক সরে গেল।খবর পেয়ে সুপার ছুটে এলেন।ভজুয়া তার অপরিচিত নয়,তিনি হাত তুলে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
--ভজন কি হচ্ছে?
--সুপার সাব আমার মা কই?
--এইমাত্র বেডে দেওয়া হয়েছে।গোলমাল কোরোনা।
ভজুয়া সঙ্গীদের দিকে তাকায়।সুপারকে বলে,অপ্রশন হবে না?
--অপারেশন হয়ে গেছে।এখন উনি ভাল আছেন,ঘুমোচ্ছেন।
--বেলাড?
--ঐতো তোমার দলের একটা ছেলে ব্লাড দিল। ছেলেটি সময় মতো না এলে মুষ্কিল হতো, নাম মনোসিজ মজুমদার।
ভজুয়া ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।সুপার বলল,তোমার দলের তো?মনে হল শিক্ষিত।এখন যেওনা কিছুক্ষন পরে যেও।
--স্যার বুড়িয়া ভাল আছে তো?
--হ্যা-হ্যা সন্ধ্যেবেলা বাড়ী নিয়ে যেও।
সুপার তাকিয়ে দেখলেন কয়েকটা চেয়ার ভেঙ্গেছে সময় মতো হস্তক্ষেপ না করলে কি যে হতো ভেবে চমকে ওঠেন।
দরজা খুলে হিমানীদেবী বললেন,তুই একটু শান্তি দিবি না?কোথায় গেছিলি?
--বাবা কি করছে?
--খেয়েদেয়ে এইমাত্র শুয়ে পড়ল।ওর শরীরটা ভাল নেই।
--তুমিও খেয়ে নিতে পারতে।
--বকিস নাতো?তাড়াতাড়ি স্নান করে খেতে আয়।
এলিনার যখন ডাক পড়ল দেখল পাশে তাতাই নেই।এইতো ছিল কোথায় গেল।এলিনা অপেক্ষা না করে একাই ঢুকে গেল।
ড সমর মুখার্জীর উলটো দিকে চেয়ারে বসল।
--বলুন কি সমস্যা?ড জিজ্ঞেস করলেন।
এলিনা মাসিক বন্ধের কথা বলল।ঘন ঘন বাথরুম পায়।খাওয়া-দাওয়া অরুচি।মুখে একটা ব্যাড স্মেল--।বলতে বলতে ডাক্তারের দিকে চোখ পড়তে দেখল ডাক্তারের মুখে রহস্যময় হাসি।
--ওই টেবিলে শুয়ে পড়ুন।
একজন এসে প্রেশার নিল।তারপর ডাক্তারবাবু তলপেটে হাত বুলিয়ে কি বোঝার চেষ্টা করেন।
--কতদিন এরকম হচ্ছে?
--সপ্তা দুয়েকের মত হবে।
--ঐ চেয়ারে গিয়ে বসুন।
এমিলা টেবিল থেকে নামতে পূর্ণেন্দু ঢুকল।ডাক্তার তাকাতে এলিনা বলল,আমার হাজব্যাণ্ড।
--ডাক্তারবাবু কি বুঝলেন?পূর্ণেন্দু জিজ্ঞেস করে।
--শী উইল প্রোবাবলি বিকাম মাদার।তবুও এই টেস্টগুলো করে আনবেন।কনফার্মড না হয়ে কিছু বলতে চাইনে।
এলিনা লাজুক চোখে তাতাইকে দেখে।
সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিম দিগন্তে।মনোসিজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচড়ায়।আজ একটা ভাল কাজ করেছে।ভাল কাজ করলে মনটাও ভাল থাকে।মাকে অবশ্য সেকথা বলেনি।রক্ত দিয়েছে শুনলে ঘাবড়ে যাবে।
মিসেস পাকড়াশী বিরক্ত ছেলেটার কোনো সময় জ্ঞান নেই।রাস্তার দিকে তাকিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে উশ্রী।স্যার কি আজ আসবে না? হঠাৎ কি দেখে ভ্রু কুচকে যায়।স্যারই তো একটু কাছে আসতে নিশ্চিত হয় স্যার।ঘরে ঢুকে বলল,মম হি ইজ কামিং।
দরজা খুলে মিসেস পাকড়াশী বললেন,আই লাইক পাংকচুয়ালিটি।
--না মানে একটা কাজে--।
--নো এক্সকিউজ।
মনোসিজ স্টাডি রুমে ঢুকে বসল।ম্যাম হয়তো বিরক্ত হয়েছেন।কিন্তু তার কিছু করার নেই।
--স্যার ডিড ইউ স্লিপিং?
চোখ লেগে গেছিল সোজা হয়ে বসে মনোসিজ বলল,গল্পটা পড়েছো?
--আর ইউ ফিলিং টায়ার্ড স্যার?
--আয় এ্যাম ওকে।মনোসিজ হেসে বলল,রাত জেগে পড়ার অভ্যেস তারপর সারাদিন বেশ ধকল গেছে--গল্পটা পড়েছো?
--দা ক্লাসিক্যাল স্টোরি--।
--স্পিক ইন বেঙ্গলি।
--স্যার গল্পটা পড়তে পড়তে বাংলার প্রতি তীব্র আকর্ষণ তৈরী হয়েছে।
--সারমর্মটা বলো।
--দা বয় গ্রো আপ ইন ন্যাচারাল এনভায়ারনমেণ্ট--।
--বাংলায় বল।
--স্যরি।ছেলেটা মানে কি বলব প্রাকৃতিক গ্রাম্য পরিবেশে বড় হয়েছে তাকে হঠাৎ ইট কাঠের শহুরে পরিবেশে মানে হি ইজ নট ফিলিং কম্ফোরট--।
--গল্পটা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের লেখা "ছুটি।" ফটিক গ্রাম্য খোলামেলা পরিবেশে বড় হয়েছে তার মা তাকে ভাইয়ের সঙ্গে আরো ভাল পরিবেশে পাঠালো।কিন্তু ফটিকের সেটা সহ্য হল না মা ভাই আত্মীয় বন্ধু বান্ধব ছেড়ে অকালে চলে যেতে হল।
--স্যার আই কাণ্ট কন্ট্রোল মাই টিয়ারস।হাউ পাথেটিক।
--প্রত্যেকের একটা নিজস্ব পরিবেশ থাকে যে পরিবেশে সে স্বচ্ছন্দ।
--স্যার আমাকে আরো বুক দেবেন আমার বাংলা পড়তে ভাল লাগে।স্যার একটা কথা বলব?
--হ্যা বলো।
--স্যার আপনি মমের কথা কিছু মাইণ্ড করবেন না।হার লাইফ ইজ ভেরি স্যাড।
--কেন উনি ভাল উপার্জন করেন তোমার মত সুন্দর সন্তান আছে--।
--উফস গড বিয়ে করেন নি আপনি বুঝবেন না।ইউ আর রিয়ালি ইমম্যাচিয়োর।জাস্ট এ্যা মিনিট--।
উশ্রী চলে গেল।সম্ভবত টয়লেটে গিয়ে থাকবে।মনোসিজেরও টয়লেটে যেতে হবে।চেপে রেখে ধোন ফুলে উঠেছে।ভেবেছিল পড়ানো শেষ করে বাইরে গিয়ে কাজটা শেষ করবে।
উশ্রী ফিরে আসতে মনোসিজ আবার শুরু করে।প্রত্যেককে নিজের মত করে মানুষ করতে হয়।অতিরিক্ত শাসনে দেখা গেছে বিপরীত ফল হয়।ব্যক্তির মধ্যের শক্তিকে বিকশিত করাতে হবে।যার মধ্যে যে গুণ আছে সেটাকে সমৃদ্ধ করতে হবে।একজনের মধ্যে সাহিত্যে অনুরাগ তাকে জোর করে বিজ্ঞানের দিকে ঠেলে দিলে সাহিত্য এবং বিজ্ঞান কোনোটারই লাভ হয়না।মনোসিজ এক সময় বলে ফেলে,উশ্রী তোমাদের টয়লেটে যেতে পারি?
--হোয়াই নট?বেরিয়ে বা-দিকে টয়লেট।
মনোসিজ দ্রুত উঠে টয়লেটের দিকে গেল।দরজা খুলে ভেজিয়ে রেখেই জিপার খুলে কমোডে শুরু করে দিল।অনেক্ষন চেপে রাখার জন্য বেশ একটা সুখানুভুতি হয়।
উশ্রী ভাবে স্যার এক্সিলেন্ত ইন্তারপ্রিতেশন এ্যাবস্লুটলি লাইক দা পিকচার।
উশতী পাকড়াশি সাড়াশব্দ না পেয়ে উঠে বসেন।টয়লেটের দিকে যেতে যেতে বলেন,হোয়াত আর ইউ ডুইং সো লং টাইম ইন টয়লেট।
মনোসিজের হয়ে গেছে অবশিষ্টটুকু ঝেড়ে ফেলার জন্য বাড়াটা করতলে নিয়ে ঝাকাতে থাকে।উশতী দরজায় ধাক্কা দিয়ে চমকে ওঠেন।ওয়াও! কি দেখছেন।দ্রুত স্যরি বলে নিজের ঘরে ফিরে গেলেন।
ঘরে ফিরেও মনের মধ্যে একটু আগে এক পলক দেখা দৃশ্যটা ভেসে থাকে।হাউ লার্জ ইট ইজ।একবার মনে হল তিনি ভুল দেখেন নি তো।
মনোসিজ ফিরে গিয়ে বসতে গীতা একরাশ খাবার দিয়ে গেল।মনোসিজ খেতে থাকে উশ্রী উঠে বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়।উশতী এক পলক দেখলেও মোটামুটি আন্দাজ করে নিয়েছেন মিনিমাম সেভেন অর এইট ইঞ্চেস হবে।দেখলে যে কোনো মেয়ে পাগল হয়ে উঠবে।