26-08-2021, 11:54 PM
সন্ধ্যা ৭ টার সময় পার্ক এসে দাড়াল। কুন্তি এল প্রায় ১ ঘণ্টা পর
.........কি ব্যাপার এতো দেরি? আবারও সেই চাহুনি
............এখন রক্ত চলছে, তবে একটু ভাল। ভিতরে যদি ইনফেকশন না হয় তাহলে ঠিক আছে,না হলে দুর্ভোগ, ২-৪ টে কথা বলার পর দ্যাখা শেষ। এই ভাবে ১০ দিন রোজ কুন্তি আর ফাগু, ওই পার্ক এ দ্যাখা করে খবর আদান প্রদান করে.১০ দিনের মাথায় বলল
.........যদি দেখতে চান, তাহলে আজ রাত ১০ টার সময় নার্সিং হোম এর পিছনে আসবেন। আমি না থাকলে ঢুকবেন না। কথামত তাই করলো ফাগু। কুন্তি বেরিয়ে এসে, আঙুল মুখে দিয়ে চুপ করে থাকতে বলে, ওকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে , মেয়েদের কাপড় ছাড়ার ঘরের ভিতর দিয়ে নিয়ে গেল। কুন্তি ৫ মিনিট এর বেশি সময় না নিতে বলে বাইরে দাঁড়িয়ে রইল। চোখ বুজে শুয়ে আছে ধনু। পাসে গিয়ে ফাগু
.........ধনু? ...... চোখ খুলেই ধনু উঠে বসার চেষ্টা করতেই ফাগু শুইয়ে দিল।
.........কেমন আছিস? শালা, মুখে একটু হাসি ...আকুল হয়ে ধনু ফাগুর দুই হাত জড়িয়ে ধরল
.........গুরু, তুই আমার প্রান বাঁচিয়েছিস, এর প্রতিদান আমি দেবো বন্ধু। আর এখানে আসিস না, কুন্তির সাথে দ্যাখা করে খবর নিস। মনে হচ্ছে, বেঁচে যাব, সুধু তোর জন্য। আর কাউকে বলবি না। ফাগু রোহিত এর কথা বলতে
.........বেঁচে ষাবি ফাগু, যদি এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারিস, পালা
৫ মিনিট পর ফাগু বেরিয়ে গেল। কুন্তি একটু পরে এসে, বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি হয়ে
............আর আসবেন না কেমন? ...এই প্রথম ফাগু একটু কোমল স্বর শুনল। ঘাড় নেড়ে সায় দিল
.........চল, তোমায় ষ্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দি
.........কোন দরকার নেই। আমি একাই যাতায়াত করি......ফাগু একটু হাসি ঝুলিয়ে ঠোঁটে মাথা নারিয়ে না বলল। আবার কুন্তির সেই কঠিন চাহুনি। এইবার ফাগু পাত্তা দিল না। কুন্তির একটু পিছনে পিছনে চলতে শুরু করলো। কঠিন দৃষ্টিতে ঘাড় ঘুড়িয়ে কুন্তি দেখে, ফাগুকে উপেখ্যা করেই বাস এ চাপল। ফাগুও চাপল। ফাগুই কনডাকটর আসলে ২ টো শিয়ালদহর টিকেট কাটল। কুন্তি ফাগুর অস্তিত্ব উপেখ্যা করে রাস্তার দিকে মুখ ঘুড়িয়ে বসে থাকল। ষ্টেশন এ এসে ট্রেন এ চাপল কুন্তি, ফাগুও বিনা টিকেট এ ট্রেন এ চেপে কুন্তির পাসে বসলো। আবারও সেই উপেখ্যা। ষ্টেশন আসতে দুজনেই নামল। কুন্তি নেমে সাইকেল, নিয়ে চাপল । ফাগু পাসে পাসে খুব জোরে জোরে হাঁটতে লাগল, একটু পর দৌড়াতে থাকল সাইকেল এর সাথে। দুজনে ষ্টেশন চত্তর ছাড়িয়ে খানিকটা এগিয়ে গেছে। নির্জন জায়গা। দু একটা সাইকেল যাচ্ছে, মাঝে মাঝে একটা সাইকেল রিক্স। কুন্তি সাইকেল থামিয়ে
.........কি করছেন আপনি, কেন আমার পিছনে লেগেছেন? প্লিস, চলে ষান......... ঝাঁঝিয়ে উঠল কুন্তি, উত্তর না দিয়ে ঠোঁট এ অল্প হাসি নিয়ে ফাগু চেয়ে রইল
............সারাদিন এই খাটুনির পর ৩ মাইল এর উপর পথ হাঁটতে ভাল লাগে? আমি একেবারেই একটি সাধারন মেয়ে, আমায় ছেড়ে দিন। ......ফাগুর মুখে কোন পরিবর্তন নেই
............ঠিক আছে, নিন আপনি চালান, আমি পিছনে বসছি। ...।।বিরক্তি নিয়ে কুন্তি সাইকেল এগিয়ে দিল। এই প্রথম যেন ফাগুর মনে হল, কুন্তির স্বর স্বাবাভিক। সাইকেল এ কুন্তিকে নিয়ে ফাগু অনেকদিন পর হাল্কা মনে চালাতে লাগল। বেশ কিছু সময় পর ,একটি বড় পুকুরের পাড়ে থামল। তারপর পুকুর আর একটা বাঁশ ঝাড় এর মাঝে ২ ফুট এর পায়ে হাটা রাস্তায় দুজনে হাঁটতে লাগল। মিনিট ৭-৮ পর গ্রাম এর শেষ প্রান্তে, একটি ঘর । অন্ধকার চেপে বসেছে, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ছাড়া নিশ্তব্দতা।অল্প চাঁদের আলো মেখে চলেছে দুজনে।ঘরের সামনে এসে কুন্তি ইশারা তে দাঁড়াতে বলে
.........বাবা, বাবা আমি এসেছি .........।ফাগু বিস্ফোরিত চোখে কুন্তির দিকে তাকাল। এতো সুমিষ্ট ডাক, ? কেন এই মেয়েটি নিজেকে এইরকম কঠিনতার চাদরে মুরে রাখে?
.........আসুন, ভিতরে আসুন .........ফাগু ভিতরে ঢুকে, বুজতে পারল কেন কুন্তি এতো ইতস্তত করছিল। এক ৬০ বছরের মতো বয়েসের কঙ্কালসার লোক, বিছানায়, উঠে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ হয়ে যাবে। সমস্ত ঘর জুরে অভাব এর ছাপ প্রকট ।টালির ছাদ, তাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভাঙ্গা। দেওয়াল যে কোন সময় ভেঙ্গে পরতে পারে। তার ভিতর দাঁড়িয়ে ফাগু একটু এগিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলো।বৃদ্দর মুখ, হ্যারিকেন এর স্বল্প আলয় উজ্জ্বল হয়ে উঠল। হাত তুলে আশীর্বাদ এর ভঙ্গিমায় ফাগুর মাথায় হাত দিলেন।
...........দেখছ তো বাবা, , কি ভাবে বেঁচে আছি, আর মেয়েটাকে শেষ করছি।
.........বাবা......অনুষোগ এর স্বর কুন্তির। ফাগু লক্ষ্য করলো,চাপা খুসি কুন্তিকে অপরুপা করে তুলেছে। বহু বছর পর ফাগুর মনে প্রশান্তি আসলো, এই ভাঙ্গা কুটির এ হত দরিদ্র পরিবারের বাবা আর কন্যার সান্নিধ্যে
ডাল ভাত আর আলু, সিদ্ধ আর কচু সিদ্ধ দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে, বারান্দায় একটা খাটিয়া পেতে ফাগুকে শুতে দিল কুন্তি।
.........কি ব্যাপার এতো দেরি? আবারও সেই চাহুনি
............এখন রক্ত চলছে, তবে একটু ভাল। ভিতরে যদি ইনফেকশন না হয় তাহলে ঠিক আছে,না হলে দুর্ভোগ, ২-৪ টে কথা বলার পর দ্যাখা শেষ। এই ভাবে ১০ দিন রোজ কুন্তি আর ফাগু, ওই পার্ক এ দ্যাখা করে খবর আদান প্রদান করে.১০ দিনের মাথায় বলল
.........যদি দেখতে চান, তাহলে আজ রাত ১০ টার সময় নার্সিং হোম এর পিছনে আসবেন। আমি না থাকলে ঢুকবেন না। কথামত তাই করলো ফাগু। কুন্তি বেরিয়ে এসে, আঙুল মুখে দিয়ে চুপ করে থাকতে বলে, ওকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে , মেয়েদের কাপড় ছাড়ার ঘরের ভিতর দিয়ে নিয়ে গেল। কুন্তি ৫ মিনিট এর বেশি সময় না নিতে বলে বাইরে দাঁড়িয়ে রইল। চোখ বুজে শুয়ে আছে ধনু। পাসে গিয়ে ফাগু
.........ধনু? ...... চোখ খুলেই ধনু উঠে বসার চেষ্টা করতেই ফাগু শুইয়ে দিল।
.........কেমন আছিস? শালা, মুখে একটু হাসি ...আকুল হয়ে ধনু ফাগুর দুই হাত জড়িয়ে ধরল
.........গুরু, তুই আমার প্রান বাঁচিয়েছিস, এর প্রতিদান আমি দেবো বন্ধু। আর এখানে আসিস না, কুন্তির সাথে দ্যাখা করে খবর নিস। মনে হচ্ছে, বেঁচে যাব, সুধু তোর জন্য। আর কাউকে বলবি না। ফাগু রোহিত এর কথা বলতে
.........বেঁচে ষাবি ফাগু, যদি এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারিস, পালা
৫ মিনিট পর ফাগু বেরিয়ে গেল। কুন্তি একটু পরে এসে, বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি হয়ে
............আর আসবেন না কেমন? ...এই প্রথম ফাগু একটু কোমল স্বর শুনল। ঘাড় নেড়ে সায় দিল
.........চল, তোমায় ষ্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দি
.........কোন দরকার নেই। আমি একাই যাতায়াত করি......ফাগু একটু হাসি ঝুলিয়ে ঠোঁটে মাথা নারিয়ে না বলল। আবার কুন্তির সেই কঠিন চাহুনি। এইবার ফাগু পাত্তা দিল না। কুন্তির একটু পিছনে পিছনে চলতে শুরু করলো। কঠিন দৃষ্টিতে ঘাড় ঘুড়িয়ে কুন্তি দেখে, ফাগুকে উপেখ্যা করেই বাস এ চাপল। ফাগুও চাপল। ফাগুই কনডাকটর আসলে ২ টো শিয়ালদহর টিকেট কাটল। কুন্তি ফাগুর অস্তিত্ব উপেখ্যা করে রাস্তার দিকে মুখ ঘুড়িয়ে বসে থাকল। ষ্টেশন এ এসে ট্রেন এ চাপল কুন্তি, ফাগুও বিনা টিকেট এ ট্রেন এ চেপে কুন্তির পাসে বসলো। আবারও সেই উপেখ্যা। ষ্টেশন আসতে দুজনেই নামল। কুন্তি নেমে সাইকেল, নিয়ে চাপল । ফাগু পাসে পাসে খুব জোরে জোরে হাঁটতে লাগল, একটু পর দৌড়াতে থাকল সাইকেল এর সাথে। দুজনে ষ্টেশন চত্তর ছাড়িয়ে খানিকটা এগিয়ে গেছে। নির্জন জায়গা। দু একটা সাইকেল যাচ্ছে, মাঝে মাঝে একটা সাইকেল রিক্স। কুন্তি সাইকেল থামিয়ে
.........কি করছেন আপনি, কেন আমার পিছনে লেগেছেন? প্লিস, চলে ষান......... ঝাঁঝিয়ে উঠল কুন্তি, উত্তর না দিয়ে ঠোঁট এ অল্প হাসি নিয়ে ফাগু চেয়ে রইল
............সারাদিন এই খাটুনির পর ৩ মাইল এর উপর পথ হাঁটতে ভাল লাগে? আমি একেবারেই একটি সাধারন মেয়ে, আমায় ছেড়ে দিন। ......ফাগুর মুখে কোন পরিবর্তন নেই
............ঠিক আছে, নিন আপনি চালান, আমি পিছনে বসছি। ...।।বিরক্তি নিয়ে কুন্তি সাইকেল এগিয়ে দিল। এই প্রথম যেন ফাগুর মনে হল, কুন্তির স্বর স্বাবাভিক। সাইকেল এ কুন্তিকে নিয়ে ফাগু অনেকদিন পর হাল্কা মনে চালাতে লাগল। বেশ কিছু সময় পর ,একটি বড় পুকুরের পাড়ে থামল। তারপর পুকুর আর একটা বাঁশ ঝাড় এর মাঝে ২ ফুট এর পায়ে হাটা রাস্তায় দুজনে হাঁটতে লাগল। মিনিট ৭-৮ পর গ্রাম এর শেষ প্রান্তে, একটি ঘর । অন্ধকার চেপে বসেছে, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ছাড়া নিশ্তব্দতা।অল্প চাঁদের আলো মেখে চলেছে দুজনে।ঘরের সামনে এসে কুন্তি ইশারা তে দাঁড়াতে বলে
.........বাবা, বাবা আমি এসেছি .........।ফাগু বিস্ফোরিত চোখে কুন্তির দিকে তাকাল। এতো সুমিষ্ট ডাক, ? কেন এই মেয়েটি নিজেকে এইরকম কঠিনতার চাদরে মুরে রাখে?
.........আসুন, ভিতরে আসুন .........ফাগু ভিতরে ঢুকে, বুজতে পারল কেন কুন্তি এতো ইতস্তত করছিল। এক ৬০ বছরের মতো বয়েসের কঙ্কালসার লোক, বিছানায়, উঠে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ হয়ে যাবে। সমস্ত ঘর জুরে অভাব এর ছাপ প্রকট ।টালির ছাদ, তাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভাঙ্গা। দেওয়াল যে কোন সময় ভেঙ্গে পরতে পারে। তার ভিতর দাঁড়িয়ে ফাগু একটু এগিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলো।বৃদ্দর মুখ, হ্যারিকেন এর স্বল্প আলয় উজ্জ্বল হয়ে উঠল। হাত তুলে আশীর্বাদ এর ভঙ্গিমায় ফাগুর মাথায় হাত দিলেন।
...........দেখছ তো বাবা, , কি ভাবে বেঁচে আছি, আর মেয়েটাকে শেষ করছি।
.........বাবা......অনুষোগ এর স্বর কুন্তির। ফাগু লক্ষ্য করলো,চাপা খুসি কুন্তিকে অপরুপা করে তুলেছে। বহু বছর পর ফাগুর মনে প্রশান্তি আসলো, এই ভাঙ্গা কুটির এ হত দরিদ্র পরিবারের বাবা আর কন্যার সান্নিধ্যে
ডাল ভাত আর আলু, সিদ্ধ আর কচু সিদ্ধ দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে, বারান্দায় একটা খাটিয়া পেতে ফাগুকে শুতে দিল কুন্তি।