Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
 


।।১৯।।


রবিবার ছুটির দিন।তাড়া নেই কাল অনেক রাত অবধি পড়েছে।ঘুম ভাঙ্গলেও চোখ বুজে শুয়ে আছে মনোসিজ।এক সময় হিমানীদেবী এক গেলাস হরলিকস করে ছেলেকে ডেকে তুললেন।চোখ খুলে মায়ের মুখটা দেখতে মনটা আলোকে উদ্ভাসিত হয়।
--হরলিকস?চা দেবে না?
--চা খেতে হবে না।সারারাত জেগে পড়িস একটু হরলিকস খেয়ে বাইরে থেকে ঘুরে আয়,ভাল লাগবে।
অন্য দিকে তাকিয়ে চোখের জল আড়াল করে।মায়েরা কেন এমন হয়।
হিমানীদেবী চলে গেলেন অনেক কাজ পড়ে আছে।চোখের জল মুছে হরলিকসের গেলাসে চুমুক দিতে দিতে ভাবে,রকে নয় একটু হাটতে বেরোবে।
পাড়ার পূব দিকে রেল লাইন।তার নীচ দিয়ে এক ফালি রাস্তা স্টেশনের দিকে চলে গেছে।যান বাহন চলে না বললেই হয়।সেই পথ দিয়ে হাটতে হাটতে চলেছে মনোসিজ।কানে এল কে যেন তার নাম ধরে ডাকছে।পিছন ফিরে তাকাতে দেখল বঙ্কিম।
--শালা ডাকতে ডাকতে গলা চিরে গেল কি ভাবছিলি বলতো?কাছে এসে বঙ্কিম বলল।
-- কি ব্যাপার আড্ডা বসেনি?
--তোকে খুজছি একটা খবর আছে।
বঙ্কা আবার কি খবর আনল।পূর্ণিমা কর্মকারের ব্যাপারে কিছু নয়তো?খবর শোনার জন্য বঙ্কার দিকে তাকালো।
--একটা ট্যুইশনির ব্যবস্থা করেছি।
--কোন ক্লাস?
--মেয়েটা নাইনে পড়ে লরেটোতে।
--মেয়ে?
--অন্য রকম ট্যুইশনি।মিসেস পাকড়াসীর মেয়ে।
--অন্যরকম মানে?
--মেয়েটা বাংলা ভাল জানে না।বাংলা শেখাতে হবে।
মিসেস পাকড়াশীর নাম শুনেছে।বড় চাকুরে লোকে বলে দজ্জাল টাইপ,বেশ প্রভাবশালী।স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হয়নি।ভদ্রলোক নাকি আবার বিয়ে করে সংসার করছে।মনোসিজ কিছুটা হতাশ।
--তোর টাকা নিয়ে কথা,ছেলে না মেয়ে তাতে তোর কি?তুই আমার সাথে চল।আমি ম্যাডামকে কথা দিয়েছি।
বঙ্কিম সত্যিই তার হিতৈষী।মুখের উপর না বলতে পারে না। 
প্রান্তিক ছাড়িয়ে দোতলা বাড়ী।নীচে গ্যারাজ, কয়েক ঘর ভাড়াটে ঊপরে মেয়ে উশ্রীকে নিয়ে একা থাকেন উশতী পাকড়াশী।দোতলায় উঠে বঙ্কা কলিং বেলে চাপ দিতে ভিতর থেকে বাজখাই গলা শোনা গেল,কে-এ-এ?
--ম্যাম আমি বঙ্কা।
মনোসিজকে বলল,তুই আবার আণ্টী-ফাণ্টি বলতে যাবিনা উনি পছন্দ করেন না।
--গীতা দরজাটা খুলে দেও।
গীতা রান্নার লোক সারাদিন থাকে রাতে বাড়ী চলে যায়।তাছাড়া মেয়েকে কলেজ বাসে তুলে দেওয়া নিয়ে আসাও করতে হয়।নাইনে পড়লেও উশতীদেবী মেয়েকে একা ছাড়েন না।
দরজা খুলে ওদের ভিতরে নিয়ে একটা ঘরে বসালো।মাথার উপর পাখা ঘুরছে।মনোসিজ ভাবে বঙ্কার কথা এ কোথায় এল।কিছুক্ষন পর গীতা দু-কাপ চা দিয়ে গেল।সকালে চা খাওয়া হয়নি।মনোসিজ চায়ের কাপ নিয়ে বঙ্কার দিকে তাকাতে বঙ্কা চোখ টেপে।বলতে চাইছে চুপচাপ চা খেয়ে যা।রাত জেগে পড়ে মনোসিজের ঘুম-ঘুম ভাব,চায়ে চুমুক দিয়ে বেশ চাঙ্গা লাগছে।বেশ কিছুক্ষন পর খাটো ঝুলের পাঞ্জাবী নীচে ছিটের লুঙ্গি পরা উশতী পাকড়াশী প্রবেশ করলেন।ওরা উঠে দাড়াতে গেলে ম্যাম হাত নেড়ে বসতে বললেন।
স্থুলদেহী শ্যামলা গায়ের রঙ ঠোট জোড়া পুরু মনোসিজ লক্ষ্য করে।
উশতী এক পলক চোখ বুলিয়ে বললেন,টুউ ইয়াং।
--বয়স্ক কাউকে পেলাম না।বঙ্কা বলল।
--মেয়েদের এই এ্যাডোলেসেন্ট পিরিওড খুব খারাপ সময়।
মনে হয় নিজের মেয়ের কথা বলছেন মনোসিজ ভাবে।
--খালি ছুকছুকানি।হি-হি করে হাসলেন ম্যাম।বাট আয়াম ভেরি স্ট্রিক্ট।টয়লেটে তিনি মিনিটের বেশী হলেই নক করি।ম্যাম নিজের খেয়ালে বলতে থাকেন।
নজরে পড়ে লুঙ্গির ভিতর থেকে থামের মত একজোড়া পা। মনোসিজ ভাবে তাকে কোথায় নিয়ে এল বঙ্কা।
--হার্ড ইট অল ফ্রম বঙ্কা?
--ইয়েস ম্যাম।
--নো নীড ইফ আদার সাবজেক্টস নীড ক্যান ইউ?
--যা বলবেন সব করব।কিন্তু--। 
সব করবে কথাটায় উশতীর ঠোটে এক চিলতে হাসি খেলে যায়।চোখ তুলে বললেন, স্যালারি?হাণ্ড্রেড উইল বি লেস?
--থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম।
--উশ্রী মাই ডার্লিং।
--ইয়েস মম।
উশ্রী ঢুকলো মনেহল আশে পাশে অপেক্ষা করছিল।
উশতী বললেন দিস ইজ ইয়র টিচার।
--হেলো।উশ্রী বলল।
মনোসিজ এসব আদব কায়দায় অভ্যস্ত নয় বলল,বোসো।ম্যাম ওর জন্য একটা বই আনবো বেশি দাম নয়--।
--ওকে নো প্রবলেম।ইউ হ্যাভ টু কাম এভেরি সানডে।
ওরা চলে গেলে উশ্রী লাফিয়ে উঠে বলল,হি ইস ভেরি হ্যাণ্ডসাম সো মম?
--ডোন্ট বি সো এক্সাইটেড।লেট সি হাউ হি টিচ?
পাকড়াশীর সেখানেই ভয় অল্প বয়স এই বয়সে মন পাগলা ঘোড়ার মত।বলেছিলেন এজেড কারো কথা।  
মিসেস পাকড়াশির বাড়ী থেকে বেরিয়ে বঙ্কা বলল, চারদিনে একশো টাকা খারাপ কি?
--খারাপ নয় একটু বেশিই বলা যায়।ভদ্রমহিলা মেয়েকে খুব কড়া শাসনে রেখেছেন।একটা কথা আছে বজ্র আটুনি ফস্কা গেরো।
--ছাড়তো আমাদের ওসবে কি দরকার।তোমার পাঠা তুমি ঘাড়ে না লেজে কাটবি তোমার ব্যাপার।
--সব কিছু এভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায় না।শিক্ষকতা আর পাচটা মজুরের পেশা এক নয়।একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস হাতীর মত চেহারা অথচ মেয়েটা বেশ দেখতে।মায়ের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
--এসব তো একা হয়না।আমি ওর বাবাকে দেখিনি ভদ্রলোক হয়তো হ্যাণ্ডসাম ছিল।আজকের কাগজে দেখেছিস?কিশোরদার অফিসের এক সহকর্মী মাধুরী শর্মা ঐ শালা কুন্তলকে হেল্প করেছিল।মাগীটাকেও গ্রেপ্তার করেছে।
--খুব কষ্ট হয় ভাবতে একজন মহিলা কিভাবে আরেকজন মহিলার সব্বোনাশ করতে পারে।
--ক্রিমিন্যালের কোনো জাত ধর্ম মহিলা পুরুষ হয়না ক্রিমিন্যাল ইজ ক্রিমিন্যাল।
--দারুণ বলেছিস।মনোসিজ হাসলো।আচ্ছা বঙ্কা পাকড়াশী ম্যামকে কেমন মনে হল তোর?
--ম্যাম খুব খোলাম্যালা তবে এলিনা বৌদির চেয়ে আলাদা।বৌদি যেমন সবার সঙ্গে মিশে যায় পাকড়াশী ম্যাম একটু স্বাতন্ত্র বজায় রেখে চলেন।
এলিনা বৌদির কথা বলতে গা ছম ছম করে উঠল।এসব তো একা হয়না বঙ্কার কথার ইঙ্গিত বুঝতে পারে।আসার সময় সে ওষুধ কিনে দিয়ে এসেছে। বঙ্কাকে সবাই বোকা হাদা ভাবে।মনোসিজের কখনো তেমন মনে হয়নি।
এলিনা গাড়িতে বসে।ভাবে তাতাই কেন বলল,তোমাকে বেশ মুডি মনে হচ্ছে।তার আচরণে কি তেমন কিছু ধরা পড়েছে? চিন্তা হচ্ছে ফ্রাইডের কথা ভেবে।ঐদিন তার ডেট, হলে শনিবারটা মাটি।
মেয়েদের এই এক ঝামেলা,প্রতিমাসে অস্বস্তিকর অবস্থা।টয়লেট করতে গেলে ঝামেলা।ছেলেদের বেশ সুবিধে নল বের করে যেখানে ইচ্ছে দাঁড়িয়ে যাও।    
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - by kumdev - 24-08-2021, 12:21 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)