Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
  


।।১৫।।


   পূর্ণেন্দু অফিস বেরিয়ে গেল।এলিনা দরজা বন্ধ করে একটা বড় তোয়ালে বুকে জড়িয়ে স্নানে যাবার উদ্যোগ করছে।এমন সময় দরজায় কলিং বেলের শব্দ।তাতাই কি কিছু ভুলে ফেলে গেছে?নিজের দিকে তাকালো কেবল একটা তোয়ালে জড়ানো।আবার পোশাক পরতে হবে বিরক্ত হয়।দরজার এ পাশ থেকে বলল,কে-এ-এ?
--বৌদি আমি।
মনোসিজের গলা না?এত সকালে কেন ভেবে দরজা খুলে ঈষৎ ফাক করে দেখল,ঠিকই শুনেছে।কেমন ক্লান্ত বিধ্বস্ত চেহারা।অবাক হয়ে দরজা খুলে বলল,কলেজ যাস নি?
হাটুর উপর অবধি তোয়ালে বুকে গিট দিয়ে বাধা।তোয়ালের ভিতর থেকে কলা গাছের মত বেরিয়ে উরু যুগল।মনোসিজ বলল,তুমি স্নানে যাচ্ছো, আমি পরে আসবো।
--রোদের মধ্যে কোথায় ঘুরবি?আয় ভিতরে আয়।
মনোসিজ ভিতরে ঢুকলো।সে খেয়াল করেছে বৌদি তাকে তুই-তোকারি করছে।ভিতরে ঢুকে সোফায় বসল।এলিনা দরজা বন্ধ করে এসে দেখল মন বসে বসে ঘামছে।সিলিং-র দিকে তাকিয়ে দেখল পাখা ঘুরছে না।এলিনা বলল,পাখা চালাস নি কেন?
পাখা চালিয়ে দিয়ে পাশে এসে বসে বলল,কলেজ যাস নি কেন?
এলিনার উন্মুক্ত পিঠ তোয়ালের ফাকে স্তনের বিভাজিকা মনোসিজ ভাল করে তাকাতে পারেনা বলল,আজ আমার মন খারাপ।
--মনের আবার কি হল?
--তুমি শুনেছো পূর্ণিমা কর্মকারের কথা?
--কাগজে দেখলাম।তোর মন খারাপ হল কেন?
--তুমি স্নানে যাও।
--আমাকে বলা যায়না।তুই প্রমিশ করেছিস আমাদের মধ্যে কোনো কথা গোপন থাকবে না। 
--বৌদি তুমি গুরুজন।
--এবার ঠাস করে একটা চড় লাগাবো।গুরুজন কি রে?
--বাহ রে তোমায় বৌদি বলিনা?
--ও এটাই সমস্যা?আমাকে বৌদি বলতে হবে না।
--তাহলে কি আণ্টি বলব?
--আমার নাম নেই?
--লীনা বলব?
--না লীনা আমার ভাল লাগেনা।
--তাতাইদা তো বলে।
--তাতাই কেন অনেকেই বলে।এক্টু ভেবে বলতো কি বলবি?তোর আলাদা কলার টিউন।
--এনা?
--এইতো বুদ্ধি খুলেছে।এলিনা দুহাতে মাথাটা বুকে চেপে ধরে বলল।বুকের মধ্যে মাথাটা ছটফট করে এলিনা ছেড়ে দিয়ে তোয়ালেটা  বুকে বাধতে বাধতে বিহবল গলায় বলে,তাতাইয়ের সঙ্গে দেখা হবার আগে তোর সঙ্গে দেখা হলে তোকেই বিয়ে করতাম।
--ধুস খালি ইয়ার্কি।আমি কাজ কর্ম কিছু করিনা বেকার--।
--তুই কি ভেবেছিস তাতাইয়ের পয়সায় আমি খাই?হ্যা মন খারাপ কেন বললি নাতো?
--জানো বৌদি--।
--আবার?
--আচ্ছা তুই একটু বোস পরে এসে শুনবো।
এলিনা ফ্রিজ হতে এক গেলাস কোল্ড ড্রিঙ্কস এনে দিয়ে বলল,নে ধর আমি এক্ষুনি আসছি।
এলিনা স্নানে গেল।কি সুন্দর দেখতে বৌদি। এনার কথাটা মনে মনে আন্দোলিত হতে থাকে।তোকেই বিয়ে করতাম।এনাকে তার বউ ভেবে মজা পায়।এখানে এসে বেশ হাল্কা বোধ হয়।এনা তাকে খুব ভালবাসে এলেই খুব যত্ন করে।তারও এনাকে খুব ভাললাগে।
সাবান দিয়ে শরীরটা ঘষতে ঘষতে এলিনা মনে কল্পনার আলপনা আকতে থাকে ।সেভার দিয়ে অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করে ফেলল।বয়স অনুযায়ী মনুটা ছেলে মানুষ।মিসেস কর্মকার আত্মহত্যা করতে গেছিল সেজন্য ওর মন খারাপ?ঠগ জোচ্চোরে ভরে গেছে দেশটা।চাকরি দেবার নাম করে মাসের পর মাস চুদেছে লোকটা।তাতাইয়ের কাছে শুনেছে গাড়ী করে আসতো সারাদিন থেকে সন্ধ্যে বেলা ফিরে যেতো।মিসেস কর্মকারের ভাগ্যটাই খারাপ অল্প বয়সে স্বামী মারা গেল।ওর স্বামী কিশোরবাবুকে চিনতো,দেখা হলেই ম্যাম ভাল আছেন বলত।সাবান মাখা শেষ হলে শাওয়ার খুলে পুসিটা উচিয়ে ধরে।জলের তোর পুসির উপর পড়তে বেশ ভাল লাগে। 
মাথায় তোয়ালে জড়িয়ে বাথরুম হতে বেরিয়ে বসার ঘরে উকি দিয়ে দেখল উদাস চোখে জানলা দিয়ে তাকিয়ে।নিরীহ বোকা-বোকা চেহারা।বোকা হলে এত ভাল রেজাল্ট করতে পারতো না।আসলে সরল মায়ায় ভরা চোখ।নিঃশব্দে এলিনা সরে গিয়ে টেবিলে খাবার সাজায়।বসার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করে,আমার সঙ্গে খাবি?
--তোমার হয়ে গেছে?আমি খেয়ে এসেছি।
--একা একা বসে কি করবি?আয় তোর সঙ্গে গল্প করতে করতে খাবো।
খাবার ঘরে ঢুকে অবাক মনোসিজ।এলিনার উল্টো দিকে বসে মনোসিজ দেখে একটা প্লেটে এক কাপ মত ভাত।সঙ্গে দুটো রুটি।পিয়াজ শশা টমাটো কুচি।এত বড় মানুষটা এইটুকু খায়?
--এনা তুমি এইটুকু খাও?
--এতেই আমার যা শক্তি তোর মত কয়েকটাকে পটকান দিতে পারি।
 এনার যা চেহারা পটকান দিতে পারে তবু কথায় কথায় মারামারি পটকান দেওয়া ভাল লাগে না।কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসে থাকে মনোসিজ।
--তোর মন খারাপ কেন বললি নাতো?
--মিসেস কর্মকারের অবস্থার কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে।
--মিসেস কর্মকার তোর কে?
--ঝা তুমি যা বলো না।আমার কেউ হলে তার দুঃখ থাকবে কেউ না হলে দুঃখ থাকবে না?
খাওয়া থেমে যায় এলিনা চোখ তুলে তাকায়।মনোসিজ আপন মনে বলে চলে,বহু যুগ ধরে মেয়েদের প্রতি জুলুম চলে আসছে।অথচ নারী বিনা পুরুষের কোনো তাৎপর্য নেই।চর্যাপদে আছে "আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।" হরিণের মাংস তাকে অন্যের ভক্ষ্য করে তুলেছে।মানুষের সম্পদ তার দুশ্চিন্তার কারণ কখন ক্ষোয়া যায় এই চিন্তায় সতত ত্রস্ত।নারীর ঐশ্বর্য তাকে অপরের আক্রমণের শিকার করে তুলেছে।
--বড় বড় মানুষরাই এসব করছে।
--বড় মানুষ কাদের বলছো?দুর্বলতার সুযোগ কোনো আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ নিতে পারে না।যার আত্মমর্যাদা নেই সে কিসের বড় মানুষ।
এলিনা লক্ষ্য করে এমনি লাজুক চুপচাপ থাকে কিন্তু কোনো বিষয়ে ঢূকলে হুশ থাকে না।জিজ্ঞেস করে, আমার জন্যও কি তুই এত ভাবিস?
--তোমার কি মনে হয় তোমার জন্য ভাবিনা?
--দ্যাখ মনু সেই সম্পদ যখন যথাযথভাবে ব্যবহার হবার উপায় থাকে না তখন নারীর কষ্ট হয়না?
মনোসিজ কি বুঝলো কে জানে বলল, সম্পদের সংরক্ষণ তার সদ্বব্যবহার করা অধিকারীর দায়িত্ব।না হলে চোরে লুটেপুটে খাবে। 
এলিনা মনে মনে হাসে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - by kumdev - 19-08-2021, 11:20 AM



Users browsing this thread: 39 Guest(s)