Thread Rating:
  • 101 Vote(s) - 3.32 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
#95
।।১১।।


ইচ্ছে ছিল সকালের দিকে কিন্তু ৩টে ১৫ তে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট পেয়েছে মীনাক্ষী।দিলীপ একটু গজ গজ করলেও শেষ পর্যন্ত সঙ্গে যেতে রাজি হয়েছে।পেশেণ্টের সঙ্গে একজন থাকতে হবে ওখানকার নিয়ম।বই পড়তে গেলে অনেক ঝুকে পড়তে হয়।হাসপাতালের কাউণ্টারে নাম বলতে ওরা একশো টাকা জমা নিয়ে বসতে বলল।সবুজ জ্যাকেট গায়ে লোকটাকে দেখে মনে হল দিলুর বন্ধু।ভাল করে দেখার আগেই লোকটা সরে গেল।
দিলীপ জিজ্ঞেস করল,কত নিল?
--একশো।মনে হল তোর বন্ধু আশিসকে দেখলাম।
--আশিসদা?
একটা দরজার কাছে সবুজ জ্যাকেট পরা একটি মেয়ে হাক পাড়ল,মীনাক্ষী ব্যানার্জি।
মীনাক্ষী উঠে এগিয়ে গেল।সঙ্গে দিলীপ যেতে জিজ্ঞেস করল,পেশেণ্ট কে?
--মীনাক্ষী ব্যানার্জি আমার দিদি।
--আপনি বসুন,পেশেণ্ট একা যাবেন।
দিলীপকে বাইরে রেখে মীনাক্ষী চেম্বারে ঢূকে গেল।
একটি মহিলা বসে সামনে টেবিল।মীনাক্ষীকে বসতে বলল।একটা বোর্ড এগিয়ে দিল বড় থেকে ছোট কয়েকটি শব্দ পর পর লেখা।তাকে পড়তে বলল।শেষ শব্দটা এত ছোট পড়তে পারল না।তারপর চোখে একটা ফ্রেম লাগিয়ে তাতে কাচ চাপিয়ে বললেন,পড়তে পারছেন?
--পারছি একটু ঝাপসা।
মহিলা কাচ বদলে দিয়ে বললেন,দেখুন এবার?
--হ্যা এবার পরিস্কার।
মহিলা একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন,এটা নিয়ে ৩ নম্বরে যান।
দিলীপ একটা চেয়ারে বসে লক্ষ্য সবুজ জ্যাকেট পরা কিছু ছেলে মেয়ে ফাইল নিয়ে এদিক ওদিক করছে।মিনুর চিনতে ভুল হবার কথা নয়।আশিসদা তাহলে এই চাকরি করে?হয়তো লজ্জায় লুকিয়ে পড়েছে।মীনাক্ষীকে বেরোতে দেখে দিলীপ এগিয়ে জিজ্ঞেস করে,হয়ে গেল?
--তিন নম্বরে যেতে বলল।
একটা ঘরের দরজার উপর তিন লেখা দেখে মীনাক্ষী সেই ঘরে ঢুকল।সেখানে এক ভদ্রলোক একটা মেশিন সামনে নিয়ে বসে।মীনাক্ষীকে বিপরীত দিকে বসতে বললেন।
--এখানে চিবুক রেখে ছিদ্র দিয়ে তাকান।
বার কয়েক পরীক্ষার পর বললেন,চশমা নিতে হবে।পাওয়ার লিখে দিলাম।
মীনাক্ষী ইতস্তত করে।ভদ্রলোক বললেন,অপ্টিক্যাল ডিপার্ট্মেণ্টে যোগাযোগ করতে পারেন বাইরে থেকেও নিতে পারেন।
মীনাক্ষী বের হতে দিলীপ শুনে বলল,এখানে যেতে হবে না, বাইরে ভাল চেনা আছে। 
হাসপাতাল হতে বেরিয়ে ঘড়ি দেখল পৌনে চারটে।শালা দিনটাই বরবাদ হয়ে গেল।
--তোর সঙ্গে আশিসের দেখা হয়েছে?
--না।তুই ঠিক দেখেছিস আশিসদা তো?
--বেলাকে নিয়ে ঘুরতো আমি চিনবো না?
আশিসদা আই হসপিটালে ক্লাস ফোর স্টাফ।সবাইকে বলে কেরানীর কাজ করে।দিলীপের খুব খারাপ লাগে।ভাল করে পড়াশোনা না করলে তার কপালেও ওরকম কিছু জুটবে।প্রথমদিকে মনোসিজের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিল ভেবে লজ্জা পায়।ছেলেটা লেখাপড়ায় ভাল ও চায় অন্যেও লেখাপড়া করুক।কাল রোববার আছে ভাবছে একটা সিনেমা দেখা যেতে পারে।
মীনাক্ষী হাটতে হাটতে ভাবে দিলু তাকে কোনোদিন দিদি বলে নি।কারো সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বলে,আমার দিদি।ভাইটাকে খুব ভালবাসে মীনাক্ষী।যাক এতদিনে পড়াশুনায় মতি হয়েছে।মনোসিজ ছেলেটা খুব লাজুক।মেয়েদের সঙ্গে চোখ তুলে কথা বলে না।শুনেছে ঐ নাকি আবার ভজুয়ার দিকে তেড়ে গেছিল।আলাপ করার চেষ্টা করেছে।এত ছোট ছোট উত্তর দেয়।আলাপ বেশিদূর গড়ায়নি।
মনোসিজের বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি।বৌদি চুমু দিতে শরীরের প্রতিটি কোষ চনমন করে উঠেছিল।ঠোটে ঠোট ছোয়ালে সারা শরীরে তার প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে এ যেন নতুন আবিষ্কার।বৌদি জিভ দিয়ে কিছু ঢুকিয়ে দেয়নি তো?বৌদিকে বেশ ভাল লাগে।কথা বলতে বলতে কিভাবে সময় কেটে যায় বুঝতেই পারেনি। কত বড় চাকরি করে অথচ কোনো অহঙ্কার নেই।তারমত সাধারণ ছেলেকে কত আপন করে নিয়েছে।আজকের কথা কাউকে বলা যাবে না।
রকে জমে উঠেছে আড্ডা।এক কোনে দিলীপও বসে আছে।তাকে দেখে বঙ্কা বলল,এইতো গুরু এসে গেছে।দিলীপ এসেই তোর খোজ করছিল।
দিলীপ উঠে এসে একটু দূরে নিয়ে বলল,এত দেরী করলি?আজ শালা এক কাণ্ড হয়েছে।
মনোসিজ অবাক আবার কি কাণ্ডের কথা বলবে।
--আশিসদাকে দেখলাম হাসপাতালে সবুজ জ্যাকেট পরে কাজ করছে।মিনুকে দেখে একেবারে সটকান।
--তোর সঙ্গে কথা বলেনি?
--আমি দেখিনি মিনু বলল দেখেছে।
--মেয়েদের চোখকে ফাকি দেওয়া যায় না।না দেখলে বলবে কেন?
--কথাটা কাউকে বলিনি।তোকেই শুধু বললাম।
--এটা আশিসদার নিজের উপর বিশ্বাসের অভাব।জামার নীচে দাদ লুকিয়ে রাখলে কি রোগ সেরে যায় বরং আরো বাড়ে।কাউকে বলার দরকার কি?
--কাল তোর কোনো কাজ আছে?
--না কেন?
--অনেকদিন সিনেমা দেখা হয়না।আমিই তোকে দেখাব।
--আর কেউ যাবে না?
--আর কাউকে বলিনি।ফালতু গ্যাঞ্জাম।   


   
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - by kumdev - 14-08-2021, 03:56 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)