Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
#59
।।৭।।



বাসায় ফিরে মনে হল মা কার সঙ্গে কথা বলছে।এত তাড়াতাড়ি তো বাবা ফেরেনা।ভিতরে ঢূকে দেখল হালিশহর থেকে হারু মামা এসেছে।মনোসিজ নীচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে জিজ্ঞেস করল,কখন এলে?

--এইতো তোর মার সঙ্গে তোর কথাই হচ্ছিল।আজ তো শনিবার এত দেরী করলি?

--তোমরা কথা বলো আমি চা করে নিয়ে আসি।

--তুই বোস তো।মনি এলে চা করিস। 

হিমানী দেবী খাটে উঠে বসে বললেন,এলে যখন গোবিন্দকে সঙ্গে নিয়ে আসতে পারতে।

হারাধনবাবু ভাগ্নের দিকে তাকিয়ে বললেন,বাইরে থেকে এলে হাত মুখ ধুয়ে পোশাক বদলাও।

মনোসিজ বুঝতে পারে মামা তার উপস্থিতি চাইছেন না।ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

ভাগ্নে চলে যেতে হারাধনবাবু নীচু স্বরে বলেন,ওর কথা বলিস না।ওকে নিয়েই আমার যত অশান্তি।

--ওতো অমন ছিল না।বৌদি বরাবর ওকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে।কি করেছে গোবিন্দ?

--তুই আমার ছোটো বোন শুধু না ওর পিসিও তোকে বলতে বাধা নেই।হারামজাদা এক মাগীর পাল্লায় পড়েছে।

--আজকাল হয়েছে এক রোগ প্রেম।হেসে বললেন হিমানীদেবী।

--ওসব প্রেম ট্রেম না।মালোপাড়ায় এক বেধবা মাগীর খপ্পরে পড়েছে।

--সেকি! তুমি কিছু বলোনি?

--বললে শুনছে কে?এ এক কঠিণ ব্যামো।

মনোসিজ ঢুকতে কথা বন্ধ হয়ে যায়।হারাধনবাবু জিজ্ঞেস করেন,পড়াশোনা কেমন চলছে?

--চলছে এক রকম।

--এক রকম বললে তো হবে না।তোমাকে নিয়ে মনির অনেক আশা।অভাবের সংসার মনি বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেনি।ম্যাট্রিকে লেটার পেয়ে পাস করেছিল।অত্যন্ত নম্র ভদ্র স্বভাবের ছেলে বলেই বোনের সঙ্গে সম্বন্ধ করেছিলাম।

কলিং বেল বাজতে হিমাণীদেবী দরজা খুলতে গেলেন,মনোসিজ নিজের ঘরে গিয়ে বই নিয়ে বসে। 

মনিময় ঢুকে শালককে এক নজর দেখে পোশাক বদলে বাথরুমে গেলেন।চোখে মুখে জল দিয়ে ফিরে এসে ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বললেন,কলকাতায় কোনো কাজে এসেছিলেন?

--বোনকে দেখতে আসা কোনো কাজ নয়?

হিমানীদেবী দু কাপ চা নিয়ে ঢুকলেন।

হারাধনবাবু চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করেন,আচ্ছা মনি তোমার সেই এ্যাডভোকেট বিজন চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ আছে?

--ভালো মানুষকে জিজ্ঞেস করেছো।ও কারো সঙ্গে মিশলে তো।এতকাল হল ফ্লাটে এসেছি ফ্লাটের কজনকে চেনে জিজ্ঞেস করো।

--আপনি চাকদার বিজনবাবুর কথা বলছেন?তেমন আলাপ নেই তবে ওর একটা মেয়ে ছিল মাঝে মাঝে হিমুর কাছে আসতো।কেন তাকে কি দরকার?

--একটা মামলার ব্যাপারে কথা বলতাম।

--আপনি হাইকোর্টে চলে যান।সবাইকে সেখানে পাবেন।

হারাধনবাবু বোনের দিকে তাকালেন।হিমানীদেবী মুখে আঙুল দিয়ে কিছু না বলতে ইশারা করলেন।তারপর একটা লুঙ্গি এগিয়ে দিয়ে বললেন,দাদা তুমি পোশাক বদলে নেও।

--আপনি তাহলে মামলার জন্য কলকাতায় এসেছেন?

মনির কথাবার্তাই এরকম ভগ্নীপতির কথায় কান না দিয়ে লুঙ্গি নিয়ে পাশের ঘরে ঢুকলেন।মনোসিজ পড়তে পড়তে দেখল হারুমামা পোশাক বদলাচ্ছেন।ধুতি বদলে লুঙ্গি পরতে গিয়ে একঝলক নজরে পড়ে মামার পুরুষাঙ্গটা ঘড়ির পেন্ডুলামের মত ঝুলছে,বেশ দীর্ঘ হাটু ছুই-ছুই।তার মনে হল সে তাহলে মাতৃকূল হতে পেয়েছে।পোশাক বদলে হারাধনবাবু রান্না ঘরে ঢুকে দেখলেন,হিমু পিছন ফিরে রান্না করছে।বাবা মারা যাবার পর এই বোনের দায়িত্ব তার ঘাড়ে পড়েছিল।গোবিন্দর মা ওকে সহ্য করতে পারতো না।', হয়েও এক বদ্যির ছেলের সঙ্গে তড়িঘড়ি বিয়ে দিয়ে দিলেন।ছেলেটির তিন কূলে কেউ ছিল না মেসে থেকে সরকারী চাকরি করে এই যা।হিমু তাকে যত খাতির যত্ন  করছে ততই মনে পড়ছে পুরানো দিনের কথা।খুবই অবিচার হয়েছে বোনের প্রতি।

পিছন ফিরে দাদাকে দেখে হিমানীদেবী বললেন,দাদা তুমি?

--তুই তো মাঝে মধ্যে হালিশহরে যেতে পারিস?

--যেতে তো ইচ্ছে হয়। ওকে ছেড়ে দু-দন্ড কোথাও আমার থাকার জো নেই।

বিয়ের পর বাড়ী ছেড়ে যাবার সময় কি কান্না।আজ সে বলে কিনা ওকে ছেড়ে থাকার জো নেই।হিমুটা অনেক বদলে গেছে।

--দেখি মনি কি করছে।

--হ্যা যাও।তোমরা কথা বলো। আমারও হয়ে গেছে।



রাতে হারুবাবুর ভাগ্নের সঙ্গে শোবার ব্যবস্থা হল।মনোসিজ বুঝতে পারে আজ আর রাত জেগে পড়া হবেনা।শুয়ে শুয়ে দুপুরের কথা ভাবে।এলিনা বৌদি কম্পিউটার শেখাতে রাজি হয়েছে আবার বলেছে এটা কোনো তাত্ত্বিক বিদ্যে নয়।শনিবার ছাড়া সময় হবে না।সপ্তায় একদিন কতটুকু শেখা সম্ভব।

--মনু পাস করে কি করবি কিছু ঠিক করেছিস?

মামার কথায় চিন্তায় ছেদ পড়ে বলে,না তেমন কিছু এখনো ভাবিনি।

--তা বললে কি হবে?কিছু করার আগে একটা লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হয়।

--একবার ভেবেছিলাম জয়েণ্টে বসব আবার ভাবছি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ব।মামী ভাল আছে?

--আছে একরকম।

--গোবেদা এখন কি করে?

--একদিন তো যেতে পারিস।

--ভাবছি পরীক্ষার পর একদিন যাব।

অনেকদিন পর শান্তিতে ঘুমোবে হারুবাবু।চারুবালা  এখন কি করছে কে জানে।না চোদালে ওর নাকি ঘুম আসেনা।এমন কথা শোনেন নি জীবনে।দেখি আজ কিভাবে ঘুমায়।পঞ্চাশের উপর বয়স হতে চলল বাতের ব্যথায় খুড়িয়ে চলে তবু চিতার আগুন জ্বলছে দাউ দাউ।ছেলেটাও হয়েছে মায়ের মত।হিমুকে দু-চক্ষে দেখতে পারতো না।দু-বেলা দুটো ডাল ভাত খেতো পড়ে থাকতো এক কোনে।কি ক্ষতি করেছিল তোর। বিয়ে না-হওয়া অবধি অশান্তি লেগে ছিল সংসারে। অশান্তির ভয়ে কলেজ ছাড়িয়ে বসিয়ে রাখতে হয়েছিল বাড়ীতে।পুরানো অতীতের কোনো ছাপ নেই হিমুর ব্যবহারে।হিমু কি সত্যিই সেসব দিনের কথা ভুলে গেছে। নাসিকা গর্জন শুনে বুঝতে পারে মনোসিজ মামা ঘুমিয়ে পড়েছে।

রবিবার ছুটির দিন।খাওয়া দাওয়ার পর মামার বেরোবার উদ্যোগ করছে।মা বলল,মনু দাদাকে একটা রিক্সায় তুলে দিয়ে আয়।
হারুবাবুকে রিক্সায় তুলে দিয়ে মনোসিজের নজরে পড়ল,প্রান্তিকের নীচে দাঁড়িয়ে আছে নীল রঙের এ্যাম্বাস্যাডোর গাড়ী।প্রতি রবিবার আসে সন্ধ্যের পর চলে যায়।এক আধবার গড়ীর মালিককে দেখেছে।ধোপ দুরস্থ পোশাক দাতে চেপে টোবাকো পাইপ, প্যাণ্টের উপর দিয়ে ভুড়ী ঈষৎ বেরিয়ে অফিসার-অফিসার চেহারা।এই নিয়ে রকে আলোচনা হয়,কোন ফ্লাটে আসে? 
 
[+] 11 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - by kumdev - 09-08-2021, 08:21 PM



Users browsing this thread: 24 Guest(s)