07-08-2021, 02:45 PM
(This post was last modified: 07-12-2021, 02:38 PM by kumdev. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
।।৫।।
শনি রবি এলিনার ছুটি।ওরা আসেনা অনেকদিন।ফোন করেছিল বলেছে আসবে।আসলে পাঁচ/সাত জন আসে।বাজারে গিয়ে ভেটকি মাছ এনেছে।ওরা এলে গল্প গুজবে সময় কাটে বেশ।
কলেজ যাবার পথে মনে পড়ল দিলীপকে কথা দিয়েছে পড়াবে।দিলীপের সঙ্গে আলাপ হলেও কোনোদিন ওর বাড়ী যায়নি।বিষয়টা গোপন রাখতে বলেছে,ভয় পাছে ফেল করে যায়।মনোসিজ মনে মনে বিষয়গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করে।খুব ভাল রেজাল্ট সম্ভব না হলেও কিছু কিছু বিষয় ভাল করে পড়লে পাস করা কঠিণ হবে না।টাকার দরকার হলেও ওর কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না।সেণ্ট্রাল এভেনিউয়ের পাশে কলেজ এখানে শুধু ছেলেরা পড়ে।ইচ্ছে করেই মনোসিজ এই কলেজ বেছে নিয়েছে।তার ক্লাসের কিছু ছেলে ক্লাস ফাকি দিয়ে কাছে মণীন্দ্র কলেজে ক্লাস করতে যায়।ওখানে ছেলে মেয়ে একসঙ্গে পড়ে।
দু-পিরিয়ড পর কলেজ ছুটি হয়ে গেল।কলেজ থেকে বেরিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মনে পড়ল।ওরা আজ দুপুরে এলিনা বৌদির বাসায় যাবে।তাকেও যেতে বলেছে।ভদ্র মহিলার অনেক গুণের কথা শুনেছে।সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশেন।কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক দিনের কৌতূহল।ভদ্রমহিলা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পাস করে বড় চাকরি করেন।তাতাইদার স্ত্রী,তাতাইদার সঙ্গে আলাপ হয়েছে।সুদর্শন সদালাপী ব্যাঙ্কে চাকরি করেন।ভাবতে ভাবতে পাড়ায় পৌছে নজরে পড়ে রকের কাছে জড় হয়েছে কয়েকজন।আশিসদা কোথায় যেন কাজ করে,আশিদাও এসেছে।বয়সে সবার চেয়ে বড় আশিসদার ইচ্ছে সবাই তার কথামত চলুক।
এলিনা বোউদির ফ্লাট মিনিট পায়ে হেটে মিনিট সাত/আট।বৌদি কি এখন ঘুমোচ্ছে?
--ঘুমোলে কি হয়েছে,বৌদিই তো যেতে বলেছে।নির্মল বলল।
--বৌদি দুপুরে ঘুমায় না।কম্পিউটার নিয়ে কাজ করে।আশিস বিজ্ঞের মত বলল।
দরজার কাছে পৌছে সবাইকে ঠেলে আশিস কলিং বেলে চাপ দিল।মনোসিজের আজ প্রথমদিন,সে সবার পিছনে দাড়িয়ে।কয়েক মুহূর্ত পর দরজা খুলতেই দেখল এক মহিলা চারের কোঠায় বয়স দরজা খুলে এক রাশ হেসে বলল,তোরা?আয় ভেতরে আয়।
মহিলা দরজার একপাশে সরে দাড়াতে সবাই একে একে ভিতরে ঢুকে একটা ঘরে গিয়ে বসল।মাথার উপর পাখা ঘুরছে সোফা দিয়ে সাজানো ছিম ছাম ঘর।
আশিস সোফায় হেলান দিয়ে বসে বলল,বঙ্কা দ্যাখতো পাখাটা ফুল স্পীডে আছে কিনা।
বঙ্কা কর্ণপাত না করে শুভর পাশে বসল।মনোসিজ অন্য একটা থ্রী সিটার সোফায় নির্মলের পাশে বসল।আশিসদার পাশে শৈবাল দিলীপ।একটু পরেই এলিনা বৌদি ঢূকে সবার উপর চোখ বুলিয়ে মনোসিজকে দেখে বলল,এই রাঙামূলোটা মনে হচ্ছে নতুন আমদানী।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।বঙ্কা বলল,বৌদি ওর রাঙামূলো দেখলে আপনি--।বঙ্কার হাত চেপে ধরে শুভ বলল,ওর নাম মনোসিজ শান্তনীড় ফ্লাটে মাস ছয়েক এসেছে।
--তোরা বোস চা নিয়ে আসছি।
এলিনা দরজা দিয়ে বেরোবার সময় কানে এল,বোকাচোদা তোর কবে বুদ্ধি হবে?
এলিনা দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে পড়ল।
--বৌদি বুঝতে পারেনি।বঙ্কা বলল।
--হ্যা সবাই তোর মত গাণ্ডু।
--কি ভাবল বলতো?
--বৌদি কিছু মনে করবে না।
কিচেনে ঢুকে এলিনা কাপ মেপে জল চাপায়।রাঙামূলো মানে ঐটার কথা বলতে চেয়েছে।মনে মনে হাসে বঙ্কাটা বড় সরল।কোথায় কি বলতে হয় জানে না।ছেলেটা দেখতে বেশ মেয়ে পটানো চেহারা, মনে হয় এদের মত নয় একটু সাই।অনেকদিন পর জমিয়ে গপ্প করা যাবে।
--শোন শুভ গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা যায়না।আশিসদা বলল।
বঙ্কিমের প্রতি বিরক্ত হলেও কথাটা মনোসিজেরও ভাল লাগেনা।বঙ্কা বলল,শুভ তোরা দ্যাখ পরে আমায় কিছু বলতে পারবি না।
--কি হল?চায়ের ট্রে নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল এলিনা।
সবাই চুপ মুখে হাসি লেপ্টে নিরীহ ভাব করে বসে।
সবাইকে চা দিয়ে নিজের কাপ নিয়ে মনোসিজের পাশে বসে নির্মলকে বলল,তারপর রীমার কি খবর?
--ওতো আসে আপনার কাছে--ও হ্যা বৌদি ও বলছিল কি যেন--?
--পেন ড্রাইভ?
--হ্যা-হ্যা আপনার বাসায় কি ফেলে গেছে?
ভদ্রমহিলার ভারী পাছা মনোসিজকে পিশে রেখেছে কিছু বলতে পারেনা।একটু নিমুর দিকে চেপে বসে।
--হ্যা তুলে রেখেছি।কিরে আশিস বেলার সঙ্গে মিটেছে?
--ছাড়ুন তো বৌদি চরাই করা মেয়ে।
--দ্যাখা আশিস মেয়েদের একটু সম্মান করতে শেখ।
--বৌদি আশিসদা বুঝবে না।শুভ বলল।
--অসম্মানের কি হল?আমি তো ওকে বিয়ে করতাম।
-- বিয়ে করলেই উদ্ধার হয়ে যাবে?কি যোগ্যতা আছে তোর বউকে কি খাওয়াবি?গ্রাজুয়েশনটাও করতে পারলি না।
--সেতো ওর জন্য।ওর পিছনে সময় দিতে গিয়েই আমার পড়াশুনায় ক্ষতি হয়েছে।
এলিনা আড়চোখে দেখল মনোসিজের মুখে ফুটে উঠেছে বিরক্তি।আশিসকে বলল,বেলার কথা বাদ দে তোর নিজের কথা ভেবে বিএটা পাস করা উচিত।
--হুম ভাবছি প্রাইভেটে আবার পরীক্ষা দেব।
চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে কাপ নামিয়ে রেখে মনোসিজকে বলল,মন তুমি কি আমার উপর রাগ করেছো?
--না না রাগ করব কেন?আপনি সবাইকে তুই বলছেন আমাকে অন্যরকম কেন?
--আমি যে তোমার প্রেমে পড়েছি।এলিনা খিল খিল হাসে।
--ঝাঃ কি যে বলেন আপনি গুরুজন--।
--প্রেম লঘু গুরু জাত পাত মানে না।
মনোসিজ দেখল সবাই তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।লজ্জায় কান লাল।বৌদির ঘেমো গন্ধ নাকে লাগছে।এলিনা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,তোরা একটু বোস আমি আসছি।এলিনা চলে যেতে নির্মল বলল,বৌদির কথায় কিছু মনে করিস না,বৌদি ঐরকম মজা করে।
--সত্যি বৌদি একেবারে আমাদের বন্ধুর মত।শুভ বলল।
মহিলা বেশ লম্বা তাতাইদার কাছাকাছি মেয়ে বলে বেশি লম্বা মনে হয়।মুখে কোনো রাখ ঢাক নেই।মনোসিজ মেয়েদের সঙ্গে এ ধরণের আলাপে অভ্যস্থ নয়।এলিনা বৌদিকে খুব খারপ লাগছে না আবার ওদের মত অত উচ্ছ্বসিতও নয়।বৌদি কি তাকে কম্পিউটার শেখাবে?
--আশিসদা আমিও তোমাকে বলছি তুমি বিএ পরীক্ষাটা দাও।নির্মল বলল।
--একটা ভাল চাকরি করতে হলে গ্রাজুয়েশন করা দরকার।আশিস বলল।
কিছুক্ষন পর কিচেন হতে এলিনার ডাক শোনা যায়,মন এদিকে একবার আসবে?
মনোসিজ সবার সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় করে কি করবে বুঝতে পারেনা।আশিস বলল,যা তোকে ডাকছে।অত ভয়ের কি আছে?
অগত্যা অনিচ্ছে সত্বেও মনোসিজ উঠে ধীরে কিচেনের দিকে এগিয়ে যায়।টেবলে প্লেটে সাজানো ফিশ ফ্রাই।বৌদি চাটুতে ফ্রাই ভাজছেন।একটা সশের বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল,সব প্লেটে অল্প করে ঢেলে প্লেট গুলো হাতে হাতে দিয়ে এসো।গরম গরম খেতে ভাল লাগবে।
কাজ করতে ভালবাসে মনোসিজের খারাপ লাগেনা।
প্লেট এগিয়ে দিতে বঙ্কা বলল,আমি ঠিক ধরেছি বৌদি উঠে যেতেই বুঝেছি কিছু হচ্ছে।সবাইকে প্লেট দিয়ে মনোসিজ কিচেনে ফিরে আসতে দেখল,দুটো প্লেটে বৌদি সশ ঢালছে।
পেটের মধ্যে অনেক্ষন গুড় গুড় করছিল কথাটা মনে হল এই সুযোগ মনোসিজ বলল,বৌদি একটা কথা বলব?
সশের বোতল সরিয়ে চোখ তুলে তাকায় এলিনা।
--আমি যদি কম্পিউটার শিখতে চাই আপনি শেখাবেন?
--প্রতি শনিবার আমি ফ্রি।রীমা আসে মাঝে মাঝে।তোমার ডেস্কটপ না ল্যাপ টপ?
মনোসিজ অবাক হয়ে তাকায়।এলিনা বলে,ল্যাপটপ হলে ক্যারি করা যায় এই সুবিধে--।
মনোসিজ মাথা নীচু করে মৃদুস্বরে বলল,আমার কম্পিউটার নেই।
এলিনা লজ্জা পায় বলে,তাতে কি হয়েছে আমার এখানে আছে।তুমি খুব বই পড় আমি জানি কিন্তু কম্পিউটার ব্যাপারটা হাতে কলমের ব্যাপার যখন শিখবে বুঝতে পারবে।সময় পেলে আসবে কেন শেখাবো না।নেও ধরো।একটা প্লেট এগিয়ে দিয়ে বলল,চলো না হলে ওরা ভাববে প্রেমালাপ করছি।
মনোসিজ হেসে প্লেট নিয়ে চলে গেল।তার কম্পিউটার নেই নিজের কম্পিউটারে শেখাবে।বৌদিকে তার ভাল লাগতে শুরু করে।ছেলে মেয়ে নেই তাই হয়তো মা-মা ভাবটা আসেনি ছেলে মানুষী রয়ে গেছে।
শনি রবি এলিনার ছুটি।ওরা আসেনা অনেকদিন।ফোন করেছিল বলেছে আসবে।আসলে পাঁচ/সাত জন আসে।বাজারে গিয়ে ভেটকি মাছ এনেছে।ওরা এলে গল্প গুজবে সময় কাটে বেশ।
কলেজ যাবার পথে মনে পড়ল দিলীপকে কথা দিয়েছে পড়াবে।দিলীপের সঙ্গে আলাপ হলেও কোনোদিন ওর বাড়ী যায়নি।বিষয়টা গোপন রাখতে বলেছে,ভয় পাছে ফেল করে যায়।মনোসিজ মনে মনে বিষয়গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করে।খুব ভাল রেজাল্ট সম্ভব না হলেও কিছু কিছু বিষয় ভাল করে পড়লে পাস করা কঠিণ হবে না।টাকার দরকার হলেও ওর কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না।সেণ্ট্রাল এভেনিউয়ের পাশে কলেজ এখানে শুধু ছেলেরা পড়ে।ইচ্ছে করেই মনোসিজ এই কলেজ বেছে নিয়েছে।তার ক্লাসের কিছু ছেলে ক্লাস ফাকি দিয়ে কাছে মণীন্দ্র কলেজে ক্লাস করতে যায়।ওখানে ছেলে মেয়ে একসঙ্গে পড়ে।
দু-পিরিয়ড পর কলেজ ছুটি হয়ে গেল।কলেজ থেকে বেরিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মনে পড়ল।ওরা আজ দুপুরে এলিনা বৌদির বাসায় যাবে।তাকেও যেতে বলেছে।ভদ্র মহিলার অনেক গুণের কথা শুনেছে।সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশেন।কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক দিনের কৌতূহল।ভদ্রমহিলা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পাস করে বড় চাকরি করেন।তাতাইদার স্ত্রী,তাতাইদার সঙ্গে আলাপ হয়েছে।সুদর্শন সদালাপী ব্যাঙ্কে চাকরি করেন।ভাবতে ভাবতে পাড়ায় পৌছে নজরে পড়ে রকের কাছে জড় হয়েছে কয়েকজন।আশিসদা কোথায় যেন কাজ করে,আশিদাও এসেছে।বয়সে সবার চেয়ে বড় আশিসদার ইচ্ছে সবাই তার কথামত চলুক।
এলিনা বোউদির ফ্লাট মিনিট পায়ে হেটে মিনিট সাত/আট।বৌদি কি এখন ঘুমোচ্ছে?
--ঘুমোলে কি হয়েছে,বৌদিই তো যেতে বলেছে।নির্মল বলল।
--বৌদি দুপুরে ঘুমায় না।কম্পিউটার নিয়ে কাজ করে।আশিস বিজ্ঞের মত বলল।
দরজার কাছে পৌছে সবাইকে ঠেলে আশিস কলিং বেলে চাপ দিল।মনোসিজের আজ প্রথমদিন,সে সবার পিছনে দাড়িয়ে।কয়েক মুহূর্ত পর দরজা খুলতেই দেখল এক মহিলা চারের কোঠায় বয়স দরজা খুলে এক রাশ হেসে বলল,তোরা?আয় ভেতরে আয়।
মহিলা দরজার একপাশে সরে দাড়াতে সবাই একে একে ভিতরে ঢুকে একটা ঘরে গিয়ে বসল।মাথার উপর পাখা ঘুরছে সোফা দিয়ে সাজানো ছিম ছাম ঘর।
আশিস সোফায় হেলান দিয়ে বসে বলল,বঙ্কা দ্যাখতো পাখাটা ফুল স্পীডে আছে কিনা।
বঙ্কা কর্ণপাত না করে শুভর পাশে বসল।মনোসিজ অন্য একটা থ্রী সিটার সোফায় নির্মলের পাশে বসল।আশিসদার পাশে শৈবাল দিলীপ।একটু পরেই এলিনা বৌদি ঢূকে সবার উপর চোখ বুলিয়ে মনোসিজকে দেখে বলল,এই রাঙামূলোটা মনে হচ্ছে নতুন আমদানী।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।বঙ্কা বলল,বৌদি ওর রাঙামূলো দেখলে আপনি--।বঙ্কার হাত চেপে ধরে শুভ বলল,ওর নাম মনোসিজ শান্তনীড় ফ্লাটে মাস ছয়েক এসেছে।
--তোরা বোস চা নিয়ে আসছি।
এলিনা দরজা দিয়ে বেরোবার সময় কানে এল,বোকাচোদা তোর কবে বুদ্ধি হবে?
এলিনা দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে পড়ল।
--বৌদি বুঝতে পারেনি।বঙ্কা বলল।
--হ্যা সবাই তোর মত গাণ্ডু।
--কি ভাবল বলতো?
--বৌদি কিছু মনে করবে না।
কিচেনে ঢুকে এলিনা কাপ মেপে জল চাপায়।রাঙামূলো মানে ঐটার কথা বলতে চেয়েছে।মনে মনে হাসে বঙ্কাটা বড় সরল।কোথায় কি বলতে হয় জানে না।ছেলেটা দেখতে বেশ মেয়ে পটানো চেহারা, মনে হয় এদের মত নয় একটু সাই।অনেকদিন পর জমিয়ে গপ্প করা যাবে।
--শোন শুভ গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা যায়না।আশিসদা বলল।
বঙ্কিমের প্রতি বিরক্ত হলেও কথাটা মনোসিজেরও ভাল লাগেনা।বঙ্কা বলল,শুভ তোরা দ্যাখ পরে আমায় কিছু বলতে পারবি না।
--কি হল?চায়ের ট্রে নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল এলিনা।
সবাই চুপ মুখে হাসি লেপ্টে নিরীহ ভাব করে বসে।
সবাইকে চা দিয়ে নিজের কাপ নিয়ে মনোসিজের পাশে বসে নির্মলকে বলল,তারপর রীমার কি খবর?
--ওতো আসে আপনার কাছে--ও হ্যা বৌদি ও বলছিল কি যেন--?
--পেন ড্রাইভ?
--হ্যা-হ্যা আপনার বাসায় কি ফেলে গেছে?
ভদ্রমহিলার ভারী পাছা মনোসিজকে পিশে রেখেছে কিছু বলতে পারেনা।একটু নিমুর দিকে চেপে বসে।
--হ্যা তুলে রেখেছি।কিরে আশিস বেলার সঙ্গে মিটেছে?
--ছাড়ুন তো বৌদি চরাই করা মেয়ে।
--দ্যাখা আশিস মেয়েদের একটু সম্মান করতে শেখ।
--বৌদি আশিসদা বুঝবে না।শুভ বলল।
--অসম্মানের কি হল?আমি তো ওকে বিয়ে করতাম।
-- বিয়ে করলেই উদ্ধার হয়ে যাবে?কি যোগ্যতা আছে তোর বউকে কি খাওয়াবি?গ্রাজুয়েশনটাও করতে পারলি না।
--সেতো ওর জন্য।ওর পিছনে সময় দিতে গিয়েই আমার পড়াশুনায় ক্ষতি হয়েছে।
এলিনা আড়চোখে দেখল মনোসিজের মুখে ফুটে উঠেছে বিরক্তি।আশিসকে বলল,বেলার কথা বাদ দে তোর নিজের কথা ভেবে বিএটা পাস করা উচিত।
--হুম ভাবছি প্রাইভেটে আবার পরীক্ষা দেব।
চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে কাপ নামিয়ে রেখে মনোসিজকে বলল,মন তুমি কি আমার উপর রাগ করেছো?
--না না রাগ করব কেন?আপনি সবাইকে তুই বলছেন আমাকে অন্যরকম কেন?
--আমি যে তোমার প্রেমে পড়েছি।এলিনা খিল খিল হাসে।
--ঝাঃ কি যে বলেন আপনি গুরুজন--।
--প্রেম লঘু গুরু জাত পাত মানে না।
মনোসিজ দেখল সবাই তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।লজ্জায় কান লাল।বৌদির ঘেমো গন্ধ নাকে লাগছে।এলিনা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,তোরা একটু বোস আমি আসছি।এলিনা চলে যেতে নির্মল বলল,বৌদির কথায় কিছু মনে করিস না,বৌদি ঐরকম মজা করে।
--সত্যি বৌদি একেবারে আমাদের বন্ধুর মত।শুভ বলল।
মহিলা বেশ লম্বা তাতাইদার কাছাকাছি মেয়ে বলে বেশি লম্বা মনে হয়।মুখে কোনো রাখ ঢাক নেই।মনোসিজ মেয়েদের সঙ্গে এ ধরণের আলাপে অভ্যস্থ নয়।এলিনা বৌদিকে খুব খারপ লাগছে না আবার ওদের মত অত উচ্ছ্বসিতও নয়।বৌদি কি তাকে কম্পিউটার শেখাবে?
--আশিসদা আমিও তোমাকে বলছি তুমি বিএ পরীক্ষাটা দাও।নির্মল বলল।
--একটা ভাল চাকরি করতে হলে গ্রাজুয়েশন করা দরকার।আশিস বলল।
কিছুক্ষন পর কিচেন হতে এলিনার ডাক শোনা যায়,মন এদিকে একবার আসবে?
মনোসিজ সবার সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় করে কি করবে বুঝতে পারেনা।আশিস বলল,যা তোকে ডাকছে।অত ভয়ের কি আছে?
অগত্যা অনিচ্ছে সত্বেও মনোসিজ উঠে ধীরে কিচেনের দিকে এগিয়ে যায়।টেবলে প্লেটে সাজানো ফিশ ফ্রাই।বৌদি চাটুতে ফ্রাই ভাজছেন।একটা সশের বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল,সব প্লেটে অল্প করে ঢেলে প্লেট গুলো হাতে হাতে দিয়ে এসো।গরম গরম খেতে ভাল লাগবে।
কাজ করতে ভালবাসে মনোসিজের খারাপ লাগেনা।
প্লেট এগিয়ে দিতে বঙ্কা বলল,আমি ঠিক ধরেছি বৌদি উঠে যেতেই বুঝেছি কিছু হচ্ছে।সবাইকে প্লেট দিয়ে মনোসিজ কিচেনে ফিরে আসতে দেখল,দুটো প্লেটে বৌদি সশ ঢালছে।
পেটের মধ্যে অনেক্ষন গুড় গুড় করছিল কথাটা মনে হল এই সুযোগ মনোসিজ বলল,বৌদি একটা কথা বলব?
সশের বোতল সরিয়ে চোখ তুলে তাকায় এলিনা।
--আমি যদি কম্পিউটার শিখতে চাই আপনি শেখাবেন?
--প্রতি শনিবার আমি ফ্রি।রীমা আসে মাঝে মাঝে।তোমার ডেস্কটপ না ল্যাপ টপ?
মনোসিজ অবাক হয়ে তাকায়।এলিনা বলে,ল্যাপটপ হলে ক্যারি করা যায় এই সুবিধে--।
মনোসিজ মাথা নীচু করে মৃদুস্বরে বলল,আমার কম্পিউটার নেই।
এলিনা লজ্জা পায় বলে,তাতে কি হয়েছে আমার এখানে আছে।তুমি খুব বই পড় আমি জানি কিন্তু কম্পিউটার ব্যাপারটা হাতে কলমের ব্যাপার যখন শিখবে বুঝতে পারবে।সময় পেলে আসবে কেন শেখাবো না।নেও ধরো।একটা প্লেট এগিয়ে দিয়ে বলল,চলো না হলে ওরা ভাববে প্রেমালাপ করছি।
মনোসিজ হেসে প্লেট নিয়ে চলে গেল।তার কম্পিউটার নেই নিজের কম্পিউটারে শেখাবে।বৌদিকে তার ভাল লাগতে শুরু করে।ছেলে মেয়ে নেই তাই হয়তো মা-মা ভাবটা আসেনি ছেলে মানুষী রয়ে গেছে।