25-06-2021, 08:03 AM
ফেলে আসা ১০ বছর
বিয়ারে চুমুক দিয়ে রেণু বলতে লাগল ফেলে আসা দশ বছরের কথা।
‘সেদিন তো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরে বাবার মুখটা থমথম করছিল। তবে মা প্রচন্ড মেরেছিল। জোরে কথা বলতে পারছিল না পাড়ার লোকে জেনে যাবে বলে, হিস হিস করে খারাপ গালাগালি দিচ্ছিল আর চুল ধরে পিঠে, পেটে চড়, কিল মারছিল। ভাই আমাকে মার খেতে দেখে কাঁদছিল আর মাকে সরানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমার কান্না পায় নি একটুও জানিস। মনে হচ্ছিল আমার নিজের মা কোনও কথা না শুনে এইভাবে আমাকে গালাগালি দিচ্ছে, মারছে। ভীষণ অপমানিত লাগছিল। শুধু তোর মুখটা মনে করে চুপ করে সহ্য করে যাচ্ছিলাম আমি সেদিন। নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাই আমার কান্না পাচ্ছিল না একটুও,’ বলছিল রেণু।
আমি ওর হাতে হাত রেখে শুনছিলাম চুপচাপ।
রেণুর বাবা পরের দিন সকালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ওর আর বাইরে বেরনো বন্ধ। সেদিনই চেষ্টা শুরু করেছিলেন দূরে কোথাও বদলি হয়ে যাওয়ার। দিন কয়েক পরে উনার অফিস বদলি করে দেয় এলাহাবাদে। কলেজ থেকে নাম কাটিয়ে ওরা চলে গিয়েছিল এলাহাবাদ। কলেজে আর ভর্তি করেন নি ওকে। বাড়ি থেকেই প্রাইভেটে বি এ পাশ করে। তারপরেই ওর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে ওর বাবা মা।
এরপর রেণু যা বলল, তা শুধু সিনেমাতেই দেখা যায়। কোনও পরিচিত মানুষের জীবনে এই ঘটনা ঘটেছে, কখনও শুনি নি।
ওর যার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সেই ছেলেটি দিল্লিতে চাকরী করত। তাই বিয়ের পরে রেণুও দিল্লি চলে আসবে। তবে বিয়ের কয়েকদিন আগে হবু স্বামী একদিন ফোন করে বলল যে সে দেখা করতে চায়। ওর বাবা-মাকেও রাজী করালো। ওরাও জানেন যে হবু জামাইয়ের সঙ্গে বেরচ্ছে, ভয়ের কী আছে।
একদিন বিকেলে হবু স্বামীর সঙ্গে বেরিয়েছিল রেণু। কোনও একটা রেস্টুরেন্টে বসেছিল ওরা। হঠাৎই সেখানে কয়েকজন গুন্ডা হাজির হয়। রীতিমতো সিনেমার কায়দায় ওই ছেলেটির গলায় ছুরি ঠেকায়। গালাগালি দিতে দিতে ওকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় অল্প কথায় রেণুকে যা বলেছিল ওই গুন্ডাগুলো, তা হল, এই ছেলেটি আগে একটি বিয়ে করেছিল। তাকে ধোঁকা দিয়ে নতুন করে বিয়ে করতে যাচ্ছিল রেণুকে। এই খবর পেয়েই ওরা পিছু নিয়েছিল ছেলেটির। সেদিন সুযোগ পেয়ে ওকে তুলে নিয়ে গেল।
রেণু তো হতভম্ভের মতো বসেছিল। রেস্টুরেন্টে অন্য যারা ছিল, তারা হতচকিত। কিছুক্ষণ পরে নাকি এক বয়স্ক দম্পতি রেণুর কাছে এসে ওকে অভয় দেন। তাঁরাই ওকে বাড়ি পৌঁছিয়ে দিয়ে যান।
এত কথার মধ্যে আমি আর রেণু দুজনেই বিয়ারের বোতলে অল্প অল্প চুমুক দিচ্ছিলাম।
সেদিন বাড়ি পৌঁছনর পরে তো আবার মায়ের চেঁচামেচি – গালাগালি। ওর কপালের দোষ – এসব বলে অভিশাপ দেওয়া।
রেণু নাকি রাতে খেতে বসে শুধু বলেছিল, ‘আমি পড়াশোনাটা শুরু করব আবার। আমার বিয়ে তোমাদের দিতে হবে না।‘
রেণুর মা আবারও ওকে গালাগালি দেন, আমার নাম তুলে।
রেণু সেসব গায়ে না মেখে পরের দিন থেকে খোঁজ খবর শুরু করে কীভাবে এম এ পড়া যেতে পারে। এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটিতে একটা সাবজেক্টে চান্স পেয়ে যায়, যেটা খুব বেশী কেউ পড়ে না। ওর বাবার বয়স হয়ে গিয়েছিল, আগের মতো তেজ আর ছিল না যে মেয়েকে বাধা দেন। তারপর এরকম একটা ঘটনা – বিয়ের আগে হবু স্বামী কিডন্যাপ।
রেণু পড়াশোনা শেষ করতে করতেই ওর বাবা রিটায়ার করেন। এলাহাবাদ থেকে তখনই রেণু দিল্লি চলে আসে চাকরীর খোঁজে। পেয়েও যায় একটা বেরকারী চাকরী। এটা পাঁচ বছর আগের কথা। তারপর কয়েকটা চাকরী পাল্টেছে – মাইনেও বেড়েছে। বাবা মা এলাহাবাদেই রয়ে গেছেন।
রেণু আমার কাঁধে মাথা রাখল – ঠিক সেই দশ বছর আগের সন্ধ্যেবেলার মতো।
বলল, ‘আমি এখনও তোর জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি উত্তম।‘
জড়িয়ে ধরলাম আমার প্রথম প্রেমকে – আমার ছোটবেলার সহপাঠিনীকে।
বিয়ারের বোতলগুলো মেঝেতে নামিয়ে রেখে আমি ওর মুখটা দু হাত দিয়ে ধরলাম। দুজনের মুখই এগিয়ে এল। আমরা ঠোঁটটা অল্প করে ফাঁক করলাম। কামড়ে ধরলাম দুজনে দুজনের ঠোঁট। ও আমার পিঠে নিজের দুই হাত নিয়ে গিয়ে চেপে ধরল নিজের শরীরের সঙ্গে।
বিয়ারে চুমুক দিয়ে রেণু বলতে লাগল ফেলে আসা দশ বছরের কথা।
‘সেদিন তো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরে বাবার মুখটা থমথম করছিল। তবে মা প্রচন্ড মেরেছিল। জোরে কথা বলতে পারছিল না পাড়ার লোকে জেনে যাবে বলে, হিস হিস করে খারাপ গালাগালি দিচ্ছিল আর চুল ধরে পিঠে, পেটে চড়, কিল মারছিল। ভাই আমাকে মার খেতে দেখে কাঁদছিল আর মাকে সরানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমার কান্না পায় নি একটুও জানিস। মনে হচ্ছিল আমার নিজের মা কোনও কথা না শুনে এইভাবে আমাকে গালাগালি দিচ্ছে, মারছে। ভীষণ অপমানিত লাগছিল। শুধু তোর মুখটা মনে করে চুপ করে সহ্য করে যাচ্ছিলাম আমি সেদিন। নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাই আমার কান্না পাচ্ছিল না একটুও,’ বলছিল রেণু।
আমি ওর হাতে হাত রেখে শুনছিলাম চুপচাপ।
রেণুর বাবা পরের দিন সকালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ওর আর বাইরে বেরনো বন্ধ। সেদিনই চেষ্টা শুরু করেছিলেন দূরে কোথাও বদলি হয়ে যাওয়ার। দিন কয়েক পরে উনার অফিস বদলি করে দেয় এলাহাবাদে। কলেজ থেকে নাম কাটিয়ে ওরা চলে গিয়েছিল এলাহাবাদ। কলেজে আর ভর্তি করেন নি ওকে। বাড়ি থেকেই প্রাইভেটে বি এ পাশ করে। তারপরেই ওর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে ওর বাবা মা।
এরপর রেণু যা বলল, তা শুধু সিনেমাতেই দেখা যায়। কোনও পরিচিত মানুষের জীবনে এই ঘটনা ঘটেছে, কখনও শুনি নি।
ওর যার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সেই ছেলেটি দিল্লিতে চাকরী করত। তাই বিয়ের পরে রেণুও দিল্লি চলে আসবে। তবে বিয়ের কয়েকদিন আগে হবু স্বামী একদিন ফোন করে বলল যে সে দেখা করতে চায়। ওর বাবা-মাকেও রাজী করালো। ওরাও জানেন যে হবু জামাইয়ের সঙ্গে বেরচ্ছে, ভয়ের কী আছে।
একদিন বিকেলে হবু স্বামীর সঙ্গে বেরিয়েছিল রেণু। কোনও একটা রেস্টুরেন্টে বসেছিল ওরা। হঠাৎই সেখানে কয়েকজন গুন্ডা হাজির হয়। রীতিমতো সিনেমার কায়দায় ওই ছেলেটির গলায় ছুরি ঠেকায়। গালাগালি দিতে দিতে ওকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় অল্প কথায় রেণুকে যা বলেছিল ওই গুন্ডাগুলো, তা হল, এই ছেলেটি আগে একটি বিয়ে করেছিল। তাকে ধোঁকা দিয়ে নতুন করে বিয়ে করতে যাচ্ছিল রেণুকে। এই খবর পেয়েই ওরা পিছু নিয়েছিল ছেলেটির। সেদিন সুযোগ পেয়ে ওকে তুলে নিয়ে গেল।
রেণু তো হতভম্ভের মতো বসেছিল। রেস্টুরেন্টে অন্য যারা ছিল, তারা হতচকিত। কিছুক্ষণ পরে নাকি এক বয়স্ক দম্পতি রেণুর কাছে এসে ওকে অভয় দেন। তাঁরাই ওকে বাড়ি পৌঁছিয়ে দিয়ে যান।
এত কথার মধ্যে আমি আর রেণু দুজনেই বিয়ারের বোতলে অল্প অল্প চুমুক দিচ্ছিলাম।
সেদিন বাড়ি পৌঁছনর পরে তো আবার মায়ের চেঁচামেচি – গালাগালি। ওর কপালের দোষ – এসব বলে অভিশাপ দেওয়া।
রেণু নাকি রাতে খেতে বসে শুধু বলেছিল, ‘আমি পড়াশোনাটা শুরু করব আবার। আমার বিয়ে তোমাদের দিতে হবে না।‘
রেণুর মা আবারও ওকে গালাগালি দেন, আমার নাম তুলে।
রেণু সেসব গায়ে না মেখে পরের দিন থেকে খোঁজ খবর শুরু করে কীভাবে এম এ পড়া যেতে পারে। এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটিতে একটা সাবজেক্টে চান্স পেয়ে যায়, যেটা খুব বেশী কেউ পড়ে না। ওর বাবার বয়স হয়ে গিয়েছিল, আগের মতো তেজ আর ছিল না যে মেয়েকে বাধা দেন। তারপর এরকম একটা ঘটনা – বিয়ের আগে হবু স্বামী কিডন্যাপ।
রেণু পড়াশোনা শেষ করতে করতেই ওর বাবা রিটায়ার করেন। এলাহাবাদ থেকে তখনই রেণু দিল্লি চলে আসে চাকরীর খোঁজে। পেয়েও যায় একটা বেরকারী চাকরী। এটা পাঁচ বছর আগের কথা। তারপর কয়েকটা চাকরী পাল্টেছে – মাইনেও বেড়েছে। বাবা মা এলাহাবাদেই রয়ে গেছেন।
রেণু আমার কাঁধে মাথা রাখল – ঠিক সেই দশ বছর আগের সন্ধ্যেবেলার মতো।
বলল, ‘আমি এখনও তোর জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি উত্তম।‘
জড়িয়ে ধরলাম আমার প্রথম প্রেমকে – আমার ছোটবেলার সহপাঠিনীকে।
বিয়ারের বোতলগুলো মেঝেতে নামিয়ে রেখে আমি ওর মুখটা দু হাত দিয়ে ধরলাম। দুজনের মুখই এগিয়ে এল। আমরা ঠোঁটটা অল্প করে ফাঁক করলাম। কামড়ে ধরলাম দুজনে দুজনের ঠোঁট। ও আমার পিঠে নিজের দুই হাত নিয়ে গিয়ে চেপে ধরল নিজের শরীরের সঙ্গে।