08-12-2019, 11:15 PM
সারারাত ঘুম হয়নি, এপাশ ওপাশ করে সকালে উঠে পড়লাম। উঠে ফ্রেশ হয়ে ঘন্টা চারেক পড়ে ব্যাগটা নিয়ে পিসির খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম। পিসি উঠে পড়েছিল পরোটা বানাচ্ছিল। পিসিকে খেতে দিতে বললাম। পিসি খেতে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলো, আমি খাচ্ছিলাম আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। আমায় বললো "বাবা টুকুন বাড়ী যাচ্ছিস যা, কিন্তু ঝগড়া করিস না। তুই বংশের বড় ছেলে, আমার মাকে তো জানিস একটু লোভ আছে, তুই বুঝিয়ে বললে সব মেনে নেবে। আমি পিকুকে বলেছি থাকতে, হাজার হোক পিকু এখন সম্পর্কে তোর বাবা হয়। যা দরকার হয় আমাকে বলিস আমি তোকে সাহায্য করবো, তোর বাবা আর মেজোকাকা মারা যাবার পর, ছেলে বলতে তুই আর পিকু তোদেরও কাঁচা বয়েস। যা করবি ভেবে করিস।" সত্যি বলতে পিসি কোনোদিন আমাকে আর বাপ্পাকে আলাদা চোখে দেখেনি। পিসি লুকিয়ে আমায় ১০-২০ টাকা মাঝে মাঝেই দিতো, মাছের মুড়ো আমার পাতে দিতো, এটা সেটা খেতে দিতো। আমি পিসিকে বললাম "পিসি আমাকে কোনোদিন দেখেছো ঝগড়া করতে? তোমরা শুধু একটা দিক দেখছো, ওদিকে মেজো কাকী মানে ঝুমার দিকটা কেউ দেখছো না। মায়ের বিয়ে নিয়ে আদিখ্যেতায় সবচেয়ে বেশী অবহেলিত আমি আর ঝুমা। সব মেনে নিয়েছি কিন্তু এখন আমি আর মানতে পারছি না। তাই মুখোমুখি সব ঠিক করে নিতে চাই। আর কিছু নয়।"
ছয়
আমি খেয়ে পিসিকে প্রনাম করে বেড়িয়ে পড়লাম স্টেশনের উদ্যেশ্যে। ১২.০৫ এর ট্রেনটা ২০ মিনিট লেট ছিল ওটাতেই চেপে বসলাম। চন্দননগর পৌঁছাতে ২ টো ১০ বাজলো। ট্রেনে ঝুমা কি পড়ে আসবে ওকে কেমন লাগবে এই সব ভাবতে যাচ্ছিলাম, চন্দননগর পৌঁছানোর পনেরো মিনিট আগে ঝুমা ফোন করে বললো ও পৌঁছে গেছে। আমি স্টেশনের বাইরে মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়াতে বললাম। ট্রেন থেকে নেমে দৌড়ে মিষ্টির দোকানের সামনে গিয়ে দেখি ঝুমা দাঁড়িয়ে আছে। একটা লাইট কালারের গোলাপী শাড়ী পড়েছিল। বাড়ী যাবে বলে বোধহয় বেশী সাজেনি। আমাকে দেখে স্মিত হাসলো, আমিও হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, "দাঁড়াতে কষ্ট হয়েছে না? কি করবো বলো লোকালটা আজকেই লেট।"
"আরে না না এই তো এলাম।"
আলতো করে ঝুমার হাতে হাত ছুঁইয়ে দিলাম, ঝুমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো, উপরের দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা চেপে ধরেই ছেড়ে দিলো। আমি হাত না সরিয়েই বললাম, "বাড়ীতে তো নিশ্চই তোমার খাবারের জোগাড় করেনি, ওরা জানে আমি যাচ্ছি, তুমি যাচ্ছ জানে না। তাই চলো খেয়েনি কোনো হোটেলে।"
"না আমি খেয়ে এসেছি।"
"বেশী বোকো না, চলো, আমি বলছি।" আমার গলায় ভালোবাসার দাবী ছিল তাই ঝুমা মানা করতে পারলো না। স্টেশন থেকে একটু গিয়েই অলকা হোটেল, ওটার দোতলায় কেবিন আছে, ওই কেবিনে বসেই আমার কলেজের বন্ধুরা মাঝে মাঝে খেতে এসে সিগারেট খেত। না ডাকলে কেউ এ ডিস্টার্ব করে না। আমি সোজা দোতলায় উঠে গিয়ে ওয়েটারকে বললাম "কেবিন খালি আছে নাকি?" ওয়েটারটা ডানদিকের প্রথম কেবিনটা দেখিয়ে দিলো। কেবিন মানে একদিকে দেওয়াল আর বাকী তিনদিক পর্দা দিয়ে ঘেরা। ঝুমা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিল, বুঝতে পারছিল না আমি এত সব কি করে জানলাম। মুখোমুখি বসে আমি ওয়েটারকে বললাম "এক প্লেট চিকেন পাকোড়া, এক প্লেট চিকেন ভর্তা আর রুটি ৫টা।" ওয়েটার বেড়িয়ে যেতেই ঝুমা বললো "বাইরে বসলেই তো হতো, এখানে বেশী টাকা নেয়।"
"নিক, আমাদের নিরিবিলিতে কথা বলার দরকার আছে "
ঝুমা আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে নিজের মুক্তোর মতো দাঁত বের করে হাসলো। আমি নিজের হাত দুটো টেবিলের উপরে নিয়ে গিয়ে ঝুমার হাত ধরলাম। ঝুমা যেনো আকস্মিক শক খেলো, ওর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, আমি বললাম, "ঝুমু, সোনা আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস আছে আজ বুঝেছি। তুমি আমার কথা শুনে এখানে এসেছো। আমার বিশ্বাসের মর্যাদা দেবার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।"
ঝুমা একটু থেমে, সব কথা শুনে আস্তে আস্তে বললো, "টুকুন এখন আর আমার তোমার বলে আলাদা কিছু নেই। সব দুজনের তাই আগেও বলেছি তুমি বললে আমি গাছতলাতেও গিয়ে দাঁড়াবো।"
আমি সেই কলকাতা যাবার পর থেকে রোজ ঝুমাকে নতুন করে আবিষ্কার করি। আরো নতুন করে একটু একটু করে আরো কাছে পাই। ঝুমা তখনো হাতটা আমার হাত থেকে সরায়নি। হটাৎ বাইরে পায়ের আওয়াজ শুনে টেনে সরিয়ে নিলো হাতটা। ওয়েটার মে আই কামিং স্যার বলে ঢুকে পড়লো। খাবার রেখে আর কোনো অর্ডার আছে নাকি জিজ্ঞাসা করে চলে গেল। ঝুমা হটাৎ খেতে খেতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো "টুকুন যদি তোমার ঠাকুমা না মেনে নেয় আমাদের সম্পর্ক? আমি বাঁচবো না।" চোখের এক কোণে জল চিকচিক করে উঠলো ঝুমার। আমি শুনে আমার চেয়ার থেকে উঠে ঝুমার পাশে এসে বসলাম, একদম ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে আস্তে করে বললাম "কাঁদলে তোমায় একদম ভালো দেখায় না।" তারপর হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিলাম। ঝুমা যেন কারেন্ট খেলো। একটু দূরে সরে গেল, আমি ওর কোমরে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলাম, তারপর আমার কি হলো জানি না, আমি দু হাত দিয়ে ঝুমার মুখটা কাছে টেনে ঝুমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। ঝুমা প্রাথমিক ঝটকা সামলে একবার আবেশে চোখ বুজে পরক্ষনেই আমার ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে দিলো। আমি চোখের ইশারায় জিজ্ঞাসা করলাম কি হলো? আস্তে করে বললো "এখন নয়।" আমি বললাম না এখনই প্লিজ। বলেই আবার ঝুমার লাল ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম দুজনেই চোখ বুজলাম আবেশে, প্রায় মিনিট খানেক পর ঝুমা আমাকে সরিয়ে বললো "খুব দুস্টু হয়েছ, ডাকাত কোথাকার। আর নয়।" আমি তখনও ঘোরের মধ্যে ছিলাম, ভালোবাসার ঘোর। আর চাইছিলাম সারা জীবন এই ঘোরের মধ্যেই থাকতে।
ছয়
আমি খেয়ে পিসিকে প্রনাম করে বেড়িয়ে পড়লাম স্টেশনের উদ্যেশ্যে। ১২.০৫ এর ট্রেনটা ২০ মিনিট লেট ছিল ওটাতেই চেপে বসলাম। চন্দননগর পৌঁছাতে ২ টো ১০ বাজলো। ট্রেনে ঝুমা কি পড়ে আসবে ওকে কেমন লাগবে এই সব ভাবতে যাচ্ছিলাম, চন্দননগর পৌঁছানোর পনেরো মিনিট আগে ঝুমা ফোন করে বললো ও পৌঁছে গেছে। আমি স্টেশনের বাইরে মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়াতে বললাম। ট্রেন থেকে নেমে দৌড়ে মিষ্টির দোকানের সামনে গিয়ে দেখি ঝুমা দাঁড়িয়ে আছে। একটা লাইট কালারের গোলাপী শাড়ী পড়েছিল। বাড়ী যাবে বলে বোধহয় বেশী সাজেনি। আমাকে দেখে স্মিত হাসলো, আমিও হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, "দাঁড়াতে কষ্ট হয়েছে না? কি করবো বলো লোকালটা আজকেই লেট।"
"আরে না না এই তো এলাম।"
আলতো করে ঝুমার হাতে হাত ছুঁইয়ে দিলাম, ঝুমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো, উপরের দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা চেপে ধরেই ছেড়ে দিলো। আমি হাত না সরিয়েই বললাম, "বাড়ীতে তো নিশ্চই তোমার খাবারের জোগাড় করেনি, ওরা জানে আমি যাচ্ছি, তুমি যাচ্ছ জানে না। তাই চলো খেয়েনি কোনো হোটেলে।"
"না আমি খেয়ে এসেছি।"
"বেশী বোকো না, চলো, আমি বলছি।" আমার গলায় ভালোবাসার দাবী ছিল তাই ঝুমা মানা করতে পারলো না। স্টেশন থেকে একটু গিয়েই অলকা হোটেল, ওটার দোতলায় কেবিন আছে, ওই কেবিনে বসেই আমার কলেজের বন্ধুরা মাঝে মাঝে খেতে এসে সিগারেট খেত। না ডাকলে কেউ এ ডিস্টার্ব করে না। আমি সোজা দোতলায় উঠে গিয়ে ওয়েটারকে বললাম "কেবিন খালি আছে নাকি?" ওয়েটারটা ডানদিকের প্রথম কেবিনটা দেখিয়ে দিলো। কেবিন মানে একদিকে দেওয়াল আর বাকী তিনদিক পর্দা দিয়ে ঘেরা। ঝুমা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিল, বুঝতে পারছিল না আমি এত সব কি করে জানলাম। মুখোমুখি বসে আমি ওয়েটারকে বললাম "এক প্লেট চিকেন পাকোড়া, এক প্লেট চিকেন ভর্তা আর রুটি ৫টা।" ওয়েটার বেড়িয়ে যেতেই ঝুমা বললো "বাইরে বসলেই তো হতো, এখানে বেশী টাকা নেয়।"
"নিক, আমাদের নিরিবিলিতে কথা বলার দরকার আছে "
ঝুমা আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে নিজের মুক্তোর মতো দাঁত বের করে হাসলো। আমি নিজের হাত দুটো টেবিলের উপরে নিয়ে গিয়ে ঝুমার হাত ধরলাম। ঝুমা যেনো আকস্মিক শক খেলো, ওর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, আমি বললাম, "ঝুমু, সোনা আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস আছে আজ বুঝেছি। তুমি আমার কথা শুনে এখানে এসেছো। আমার বিশ্বাসের মর্যাদা দেবার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।"
ঝুমা একটু থেমে, সব কথা শুনে আস্তে আস্তে বললো, "টুকুন এখন আর আমার তোমার বলে আলাদা কিছু নেই। সব দুজনের তাই আগেও বলেছি তুমি বললে আমি গাছতলাতেও গিয়ে দাঁড়াবো।"
আমি সেই কলকাতা যাবার পর থেকে রোজ ঝুমাকে নতুন করে আবিষ্কার করি। আরো নতুন করে একটু একটু করে আরো কাছে পাই। ঝুমা তখনো হাতটা আমার হাত থেকে সরায়নি। হটাৎ বাইরে পায়ের আওয়াজ শুনে টেনে সরিয়ে নিলো হাতটা। ওয়েটার মে আই কামিং স্যার বলে ঢুকে পড়লো। খাবার রেখে আর কোনো অর্ডার আছে নাকি জিজ্ঞাসা করে চলে গেল। ঝুমা হটাৎ খেতে খেতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো "টুকুন যদি তোমার ঠাকুমা না মেনে নেয় আমাদের সম্পর্ক? আমি বাঁচবো না।" চোখের এক কোণে জল চিকচিক করে উঠলো ঝুমার। আমি শুনে আমার চেয়ার থেকে উঠে ঝুমার পাশে এসে বসলাম, একদম ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে আস্তে করে বললাম "কাঁদলে তোমায় একদম ভালো দেখায় না।" তারপর হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিলাম। ঝুমা যেন কারেন্ট খেলো। একটু দূরে সরে গেল, আমি ওর কোমরে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলাম, তারপর আমার কি হলো জানি না, আমি দু হাত দিয়ে ঝুমার মুখটা কাছে টেনে ঝুমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। ঝুমা প্রাথমিক ঝটকা সামলে একবার আবেশে চোখ বুজে পরক্ষনেই আমার ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে দিলো। আমি চোখের ইশারায় জিজ্ঞাসা করলাম কি হলো? আস্তে করে বললো "এখন নয়।" আমি বললাম না এখনই প্লিজ। বলেই আবার ঝুমার লাল ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম দুজনেই চোখ বুজলাম আবেশে, প্রায় মিনিট খানেক পর ঝুমা আমাকে সরিয়ে বললো "খুব দুস্টু হয়েছ, ডাকাত কোথাকার। আর নয়।" আমি তখনও ঘোরের মধ্যে ছিলাম, ভালোবাসার ঘোর। আর চাইছিলাম সারা জীবন এই ঘোরের মধ্যেই থাকতে।