07-12-2019, 11:10 PM
অনেকদিন পর আজ ইকলেজে গেলাম, বঙ্কুর সঙ্গে দেখা হলো এডমিট নিয়ে বেরোবার সময়। আমাকে দেখেই বললো "দোস্ত চল মাঠে গিয়ে বসি, অনেক কথা আছে।" আমরা মাঠে গিয়ে বসলাম।
পাঁচ
ও ওর ব্যাগ থেকে একটা নতুন চার্জার বের করে দিলো, বললো "২৫০টাকা নিয়েছে, তুই আমাকে পরে দিস।" ও জানে আমি বাড়িতে থাকি না তাই হয়তো দাম এখনই নিতে চাইছিলো না। আমি হেসে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে ওর হাতে দিলাম। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করলো "কি রে নমিতা বৌদি টাকা পাঠিয়েছে নাকি?"
"আরে না রে ভাই, আমার কাছে ছিল।"
"বালটা আমাকেও লুকাতে শুরু করেছিস!"
"ঝুমা দিয়েছে।"
"আরে জিও গুরু আমার এখনো হ্যান্ডেল মেরে দিন কাটে আর তুমি শালা মাছ ছিপে গেঁথে ফেলেছো?"
একটু থেমে আবার বললো, "কবে দেখা করলি?"
"দুদিন আগে।"
"কোথায়?"
"কলকাতা"
"ওরে না, ওরে না, ভাই আমার ছোট খাটো স্টেশন ধরছে না। ওদিকে মা নিজের কচি নাগরের সামনে কাপড় তুলে সুখ নিচ্ছে আর এদিকে ছেলে ডবকা কাকীমাকে তুলে নিয়েছে। তা কবে? আর কি করে গেলি?"
"ঝুমাই প্ল্যান করলো, দুদিন আগে, রোববার। ওই ফোনটা দিয়েছে। ট্রেনেই গেছিলাম।"
"কি করলি? টিপতে ফিপতে পারলি?"
"ধুর কি যে বলিস, ফালতু কথা, এমনি দেখা করলাম।"
"চুমু ও খাসনি?"
"না, শুধু হাত ধরেছিলাম।"
"ধুর, ওদিকে কেস জন্ডিস।"
"কি হয়েছে?" আমি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
"ঝুমা বৌদির বাবা এসেছিল, তোর বিয়ের পাকা কথা বলতে, তোর মায়ের কোনো দাবী নেই কিন্তু তোর ঠাকুমা কাঠি করেছে।"
আমার মাথায় যেন বাজ পড়লো, "কি হয়েছে? আর তুই কি করে জানলি?"
"আরে দোস্ত কাল সকালে মা আর চম্পা মাসি গল্প করছিল বলছিলো বুড়ী মাগীটার খাঁই দেখো? বলে নাকি ঝুমা বৌদির নামে যা জমি আছে সব টুকুনের নামে লিখে দিতে হবে, তোর শ্বশুর রাজি হয়নি।"
আমি বুঝতে পারলাম কি ব্যাপার, এটাও বুঝতে পারলাম এবার আমায় বড় হতে হবে, আমার জীবনের পরের সিদ্ধান্তগুলো আমিই নেবো। চাইনা আমার জমি, ঝুমার জমি মানেই আমার, ঝুমা আমাকে কিছু না দিলেও চলবে শুধু মনটা আমাকে দিক। এদিক সেদিক কিছু কথা বলে একটা রায় মার্টিন টেস্ট পেপার কিনে পিসির বাড়ী যাবার জন্য।
পিসির বাড়ী ফিরে আমি পিসির থেকে মোবাইলটা চাইলাম। পিসির মোবাইল থেকে মা কে ফোন করলাম।
"হ্যালো মা, শুনতে পাচ্ছ।"
"ওমা কে ফোন করেছ দেখ, ভুল করে করে ফেলিসনি তো?"
"না একটু কথা আছে?"
"আগে বল কেমন আছিস?"
"ঠিক আছি, আমাকে পড়তে যেতে হবে তুমি আসল কথা শোনো।"
"তুমি প্রথমে আমাকে বিয়ের কথা বলেছিলে আমি মেনে নিয়েছি, এখন যেন কথা না পাল্টায়।" আমি গম্ভীর স্বরে বললাম।
"মানে," মা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
"কাল আমি কলেজে গেছিলাম, শুনলাম নাকি ঠাকুমা ঝুমার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করেছে। আমার কোনো জমি জমা চাইনা। দিলেও নেবো না। আমি পনের জন্য বিয়ে করবো না।"
আমার কথা শুনে মা পুরো বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেছিলো "ওরে টুকুন, তুই কি করে জানলি? আর তুই ঝুমাকে নাম ধরে দেখছিস!!!"
"হ্যাঁ, হবু বউকে লোকে নাম ধরেই ডাকে। তুমি তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়েছ, আমাকে এবার আমার টা নিতে দাও। শরীরের যত্ন নাও।"
মা বোধহয় বুঝতে পারলো ছেলের উপরেই এবার সব ছেড়ে দেওয়া উচিৎ, আস্তে করে বললো "হ্যাঁ তোর ছোটকা আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করতে দেয় না এখন, আগে শুধু মোক্ষদা ছিল এখান চম্পাকেও রেখেছে।"
"হুম এই সময় কেয়ার দরকার, এখন রাখছি।"
পিসির ফোন যথাস্থানে রেখে ঘরে ঢুকে ঘর বন্ধ করে মোবাইল চার্জে বসিয়ে পড়ায় ডুবে গেলাম।ঠিকমতো প্রশ্ন এলে আর আমি যা জানি লিখতে পারলে ষ্টার কেউ আটকাতে পারবে না আমার। অনেককিছু প্রমাণের আছে আমার, অনেক। বিকেলবেলার পিসি ডাকলো, "টুকুন ওঠ, একবার বেড়িয়ে আয় বাইরে দিয়ে সেই কখন থেকে পড়ছিস।"
আমি মোবাইলটা চার্জ থেকে খুলে ব্যাগে ঢুকিয়ে মাঠের দিকে গেলাম।
মাঠ থেকে ফিরে এসে ঘরে ঢুকেই দেখি পিসেমশাই বসে আছে, আজ বোধহয় তাড়াতাড়ি চলে এসেছে দোকান থেকে। আমায় দেখেই বলল "কি টুকুন বাবু ঠাকুমাকে কি বলেছো? তিনি তো রাগে অগ্নিশর্মা।"
আমি বললাম কিছু বলিনি আমি। বলে পড়তে বসলাম। পিসিমোসাইকে ওটা বললেও আমি জানি মা গিয়ে ঠাকুমাকে দুপুরের কথাগুলো বলেছে আর ঠাকুমা সেই শুনে রেগে গেছে। এখন একবার ঝুমার সঙ্গে দেখা করা খুব দরকার, কিন্তু পরীক্ষার আর মাত্র ৬ দিন বাকী। ভারী দোটানায় পড়লাম। ব্যাগ থেকে বই বের করতে গিয়ে দেখি মোবাইলটা অফ না থাকায় প্রায় ২০টা মিস কল, সাইলেন্ট ছিল বলে বুঝতে পারিনি। সব গুলোই ঝুমার কল। আমি চুপচাপ ফোন নিয়ে পিসির বাড়ীর পিছনের সিঁড়ি দিয়ে ছাদে চলে গেলাম। গিয়েই ফোন করলাম ঝুমাকে, বেশ খানিক্ষন রিং হবার পর ঝুমা তুললো। হ্যালো শোনার সঙ্গে সঙ্গে বুঝলাম ওদিকে বেশ ঝড় বয়ে গেছে। একটু থেমে আমি বললাম "কি হয়েছে আমাকে বলো ঝুমা। সব বলবে কিচ্ছু লুকোবে না।" আমার কথায় অধিকারবোধ ছিল, দায়িত্ব নেবার পূর্বাভাস ও ছিল। ঝুমা যা বললো সেটা হলো, আজ দুপুরে ঠাকুমা নাকি ফোন করে ঝুমার বাবাকে যা নয় তাই বলেছে, বলেছে ঝুমা নাকি আমার মাথা খাচ্ছে, আমায় বাড়ীর লোকের থেকে পর করে দিচ্ছে। এসব বরদাস্ত করা হবে না। আমি সব শুনে বললাম "ঝুমা কাল দুপুরে দুটো নাগাদ তুমি আমার জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করবে, আমি পৌঁছানোর পর একসঙ্গে দুজন বাড়ী যাবো। তোমার কোনো চিন্তা নেই, আমি কথা দিয়েছি তোমায় তোমার সারা ভার আমার, আমি কথা রাখার জন্য সব বাজি রাখতে রাজী।"
ঝুমা ডুকরে কেঁদে উঠলো, তারপর একটু থেমে আস্তে আস্তে বললো "আমার জন্য বড়দি আর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করার দরকার নেই।"
"আমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবো না, শুধু মতামত জানাবো, দরকারে তোমার বাবার সঙ্গেও কথা বলবো। আর সেটা কালই, কারণ আমার পরীক্ষা সামনে সময় নেই। তুমি যদি না আসো বুঝবো আমাদের মধ্যে ভালোবাসা বলে কিছু নেই, সম্পর্কের ইতি ওখানেই।"
ঝুমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বললো "আমি কাল মরে না গেলে তোমার সঙ্গে দেখা করবো, কিন্তু আমার দিব্যি তুমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবে না।"
"বেশ কথা দিলাম। এবার আমি নীচে যাচ্ছি, ছাদে লুকিয়ে বসে কথা বলছি, আমি তোমায় আবার রাত্রে খেয়ে ফোন করবো।"
ফোন রেখে ঘুরতেই দেখলাম বাপ্পা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আমার কথা শুনছিলো, আমি চমকে উঠলাম। বাপ্পা মুচকি হেসে বললো "মেজো মামীর সঙ্গে কথা বলছিলি? তা ফোন পেলি কোথায়?"
আমি বাপ্পাকে মিনতির সুরে বললাম "লক্ষী ভাই আমায় কাউকে বলিস না, তুই যা বলবি তোকে দেবো।" বাপ্পা বললো "আরে আমি কি বাচ্চা নাকি? বলবো না, মেজো মামী কদিন পরে তো আমার বড় বৌদি হবে। বৌদির সঙ্গে দাদা কথা বলবে না তো কে বলবে? তুই চাপ নিস না।"
আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে নীচে নেমে এলাম। দু ঘন্টা পড়ার পর পিসি খেতে ডাকলো, আমি খেতে বসে কোনো কথা বলিনি, পিসি বলে যাচ্ছিলো, ঝুমা খুব ঝগরুটে, টাকা চেনে, বিধবা মেয়ে কচি নাগর পাচ্ছে এই অনেক, কেন জমি লিখে দিচ্ছে না এইসব। আমি চুপচাপ খেয়ে ওঠার সময় বললাম "পিসি আমি কাল একবার বাড়ী যাবো ওই বারোটা নাগাদ বেড়িয়ে বিকেলে ফিরবো, আমি মুড়ি খেয়ে বেরোবো।" ইচ্ছে করেই সত্যিটা বললাম জানি একটু পরেই পিসি ফোন করে ঠাকুমাকে সব বলবে। থাকুক একটু চাপে।
আমি ঘরে ঢুকে খিল বন্ধ করে আবার পড়তে বসলাম, মনটা খুব হালকা লাগছিলো। একদম ফুরফুরে। অংক, ইতিহাস আর বাংলা রিভাইজ করে ওয়াটসএপে ভিডিও কল দিলাম ঝুমাকে, ঝুমা অপেক্ষাই করছিল বোধহয় ফোন তুললো, আজকে একটা নীল টি শার্ট পড়েছিল নীচে একটা পাজামা। চোখ দুটো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক্ষন কেঁদেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "খেয়েছো, সোনা?"
"না, খেতে ভালো লাগছে না।"
"এরকম করলে শরীর খারাপ হবে, খেয়ে নাও, তারপর ফোন করবো।"
"প্লীজ ফোন কাটো না, তোমার সঙ্গে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে।"
"বেশ, এক্ষুনি খাবার নিয়ে এসো, আমার সামনে খাও।"
"আরে আমি খেয়ে নেবো, তুমি টেনশন নিয়ো না।"
"একটা কথা কানে যায় না? বলছি খাবার নিয়ে এসো, বুঝতে পারছো না নাকি?" আমার গলায় প্রচন্ড কতৃত্ব আর দৃঢ়তা ছিল, যা শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেলাম। ওদিকে ঝুমা "উফ, যাচ্ছি নিয়ে আসছি তুমি কেটো না।" ঝুমা খাট থেকে নেমে যখন বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন পাছার দিকে নজর গেল, উফফ বঙ্কু ঠিকই বলে একদম নধর পাছা, আমার বাঁড়া মহারাজ ফণা তুলতে উদ্যত হলো। একটু পরেই ফিরে এলো ঝুমা, প্লেটে দুটো রুটি, একটু ডাল আর একটা সব্জী নিয়ে। খেতে খেতে কথা বলছিলো আর আমি ওকে দেখছিলাম, ঝুমা বললো "আমার খুব ভয় করছে, সোনাই, তোমার ঠাকুমা আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না।"
"তুমি আমাকে ভালোবাসো তো?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
"উম্ম, কতবার বলবো জানি না যাও" লাজুক স্বরে বললো ঝুমা।
"বলো ঝুমা বলো আমার জানা দরকার।"
"হ্যাঁ, নিজের থেকেও বেশী, আমি আর পিছতে পারবো না।"
"বিশ্বাস করো আমাকে?" আমি বললাম।
"হ্যাঁ, অনেক, সবার চেয়ে বেশী।"
"তাহলে জেনে রাখো তোমার সব বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখবো। ঠাকুমা কি বললো কিচ্ছু এসে যায় না। আর মা তো চায় আমাদের বিয়ে হোক, যদি মা কিছু বলে তাহলে সেটাও আমি দেখে নেবো। তুমি শুধু সাথে থেকো, তুমিই আমার জোরের জায়গা।" আমি আর মাধ্যমিক দিতে যাওয়া সদ্য গোঁফ দাড়ি গজানো টুকুন নেই সেটা নিজেই বুঝতে পারলাম।ঝুমার প্রেম আমাকে ধীরে ধীরে সাবালক আর পরিণত করছিল।
ঝুমা আদুরে গলায় বললো, "কত্ত পাকা পাকা কথা শিখেছে আমার বাবুটা।"
"ঝুমা তুমি আমার সাথে থাকলে আমার কোনো ভয় নেই, মা নিজের সুখের জন্য আমায় পর করেছে, এখন আমার আপন বলতে শুধু তুমি।"
ঝুমার চোখের কোন চিকচিক করে উঠলো কিছু বললো না।
আমি মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে গেল, বললাম "ঝুমা আমি একটা জিনিষ চাইবো দেবে?"
"আমার দেবার ক্ষমতা থাকলে নিশ্চই দেবো, চেয়েই দেখো।"
"আমাকে একটা হামি দাও।" শুনেই ঝুমা প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেল। তারপর একটু ধাতস্ত হয়ে বললো "এখন নয় সময় এলে দেবো।"
"তুমি কিন্তু কথা রাখছো না ঝুমা, ওদিকে আমার পড়ার দেরী হচ্ছে, আমি কিন্তু মনে রাখবো তোমার কথা খেলাপী।"
"উফফ, আমার লজ্জা লাগে।" লজ্জার চরম সীমায় পৌঁছে ঝুমা বললো।
"ঝুমু প্লিজ, আমি কিন্তু আমার প্রাপ্য চাইছি।"
"ধুৎ, তুমি আগে দাও।"
আমি শুনেই "মুউউউউউ আআআ" করে চুমু দিলাম। ওদিকে ঝুমা চোখ বুজে একটু সময় নিয়ে নিজের কমলালেবুর কোয়ার মতো লাল ঠোঁটদুটোকে জুড়ে "উমমউমউম, মুউউ আঃ" করে চুমু দিলো। আমি বললাম আরেকবার, ঝুমা আবার চুমু দিলো। তারপর আমি বললাম, "আই লাভ ইউ ঝুমু" আমার ঝুমু আস্তে করে মোবাইলটা মুখের কাছে ধরে বললো "আই লাভ ইউ সোনাই।" আমি জীবনের প্রথম পাওয়া চুমুর ঘোর তখনও কাটাতে পারিনি, হোক না দূর থেকে, তবু তো প্রেয়সীর থেকে পাওয়া। আজকের দিনটা জীবনে ভুলবো না। ফোনটা রাখতে রাখতে, কালকের যুদ্ধের জন্য মনে মনে তৈরী হতে লাগলাম।
পাঁচ
ও ওর ব্যাগ থেকে একটা নতুন চার্জার বের করে দিলো, বললো "২৫০টাকা নিয়েছে, তুই আমাকে পরে দিস।" ও জানে আমি বাড়িতে থাকি না তাই হয়তো দাম এখনই নিতে চাইছিলো না। আমি হেসে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে ওর হাতে দিলাম। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করলো "কি রে নমিতা বৌদি টাকা পাঠিয়েছে নাকি?"
"আরে না রে ভাই, আমার কাছে ছিল।"
"বালটা আমাকেও লুকাতে শুরু করেছিস!"
"ঝুমা দিয়েছে।"
"আরে জিও গুরু আমার এখনো হ্যান্ডেল মেরে দিন কাটে আর তুমি শালা মাছ ছিপে গেঁথে ফেলেছো?"
একটু থেমে আবার বললো, "কবে দেখা করলি?"
"দুদিন আগে।"
"কোথায়?"
"কলকাতা"
"ওরে না, ওরে না, ভাই আমার ছোট খাটো স্টেশন ধরছে না। ওদিকে মা নিজের কচি নাগরের সামনে কাপড় তুলে সুখ নিচ্ছে আর এদিকে ছেলে ডবকা কাকীমাকে তুলে নিয়েছে। তা কবে? আর কি করে গেলি?"
"ঝুমাই প্ল্যান করলো, দুদিন আগে, রোববার। ওই ফোনটা দিয়েছে। ট্রেনেই গেছিলাম।"
"কি করলি? টিপতে ফিপতে পারলি?"
"ধুর কি যে বলিস, ফালতু কথা, এমনি দেখা করলাম।"
"চুমু ও খাসনি?"
"না, শুধু হাত ধরেছিলাম।"
"ধুর, ওদিকে কেস জন্ডিস।"
"কি হয়েছে?" আমি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
"ঝুমা বৌদির বাবা এসেছিল, তোর বিয়ের পাকা কথা বলতে, তোর মায়ের কোনো দাবী নেই কিন্তু তোর ঠাকুমা কাঠি করেছে।"
আমার মাথায় যেন বাজ পড়লো, "কি হয়েছে? আর তুই কি করে জানলি?"
"আরে দোস্ত কাল সকালে মা আর চম্পা মাসি গল্প করছিল বলছিলো বুড়ী মাগীটার খাঁই দেখো? বলে নাকি ঝুমা বৌদির নামে যা জমি আছে সব টুকুনের নামে লিখে দিতে হবে, তোর শ্বশুর রাজি হয়নি।"
আমি বুঝতে পারলাম কি ব্যাপার, এটাও বুঝতে পারলাম এবার আমায় বড় হতে হবে, আমার জীবনের পরের সিদ্ধান্তগুলো আমিই নেবো। চাইনা আমার জমি, ঝুমার জমি মানেই আমার, ঝুমা আমাকে কিছু না দিলেও চলবে শুধু মনটা আমাকে দিক। এদিক সেদিক কিছু কথা বলে একটা রায় মার্টিন টেস্ট পেপার কিনে পিসির বাড়ী যাবার জন্য।
পিসির বাড়ী ফিরে আমি পিসির থেকে মোবাইলটা চাইলাম। পিসির মোবাইল থেকে মা কে ফোন করলাম।
"হ্যালো মা, শুনতে পাচ্ছ।"
"ওমা কে ফোন করেছ দেখ, ভুল করে করে ফেলিসনি তো?"
"না একটু কথা আছে?"
"আগে বল কেমন আছিস?"
"ঠিক আছি, আমাকে পড়তে যেতে হবে তুমি আসল কথা শোনো।"
"তুমি প্রথমে আমাকে বিয়ের কথা বলেছিলে আমি মেনে নিয়েছি, এখন যেন কথা না পাল্টায়।" আমি গম্ভীর স্বরে বললাম।
"মানে," মা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
"কাল আমি কলেজে গেছিলাম, শুনলাম নাকি ঠাকুমা ঝুমার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করেছে। আমার কোনো জমি জমা চাইনা। দিলেও নেবো না। আমি পনের জন্য বিয়ে করবো না।"
আমার কথা শুনে মা পুরো বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেছিলো "ওরে টুকুন, তুই কি করে জানলি? আর তুই ঝুমাকে নাম ধরে দেখছিস!!!"
"হ্যাঁ, হবু বউকে লোকে নাম ধরেই ডাকে। তুমি তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়েছ, আমাকে এবার আমার টা নিতে দাও। শরীরের যত্ন নাও।"
মা বোধহয় বুঝতে পারলো ছেলের উপরেই এবার সব ছেড়ে দেওয়া উচিৎ, আস্তে করে বললো "হ্যাঁ তোর ছোটকা আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করতে দেয় না এখন, আগে শুধু মোক্ষদা ছিল এখান চম্পাকেও রেখেছে।"
"হুম এই সময় কেয়ার দরকার, এখন রাখছি।"
পিসির ফোন যথাস্থানে রেখে ঘরে ঢুকে ঘর বন্ধ করে মোবাইল চার্জে বসিয়ে পড়ায় ডুবে গেলাম।ঠিকমতো প্রশ্ন এলে আর আমি যা জানি লিখতে পারলে ষ্টার কেউ আটকাতে পারবে না আমার। অনেককিছু প্রমাণের আছে আমার, অনেক। বিকেলবেলার পিসি ডাকলো, "টুকুন ওঠ, একবার বেড়িয়ে আয় বাইরে দিয়ে সেই কখন থেকে পড়ছিস।"
আমি মোবাইলটা চার্জ থেকে খুলে ব্যাগে ঢুকিয়ে মাঠের দিকে গেলাম।
মাঠ থেকে ফিরে এসে ঘরে ঢুকেই দেখি পিসেমশাই বসে আছে, আজ বোধহয় তাড়াতাড়ি চলে এসেছে দোকান থেকে। আমায় দেখেই বলল "কি টুকুন বাবু ঠাকুমাকে কি বলেছো? তিনি তো রাগে অগ্নিশর্মা।"
আমি বললাম কিছু বলিনি আমি। বলে পড়তে বসলাম। পিসিমোসাইকে ওটা বললেও আমি জানি মা গিয়ে ঠাকুমাকে দুপুরের কথাগুলো বলেছে আর ঠাকুমা সেই শুনে রেগে গেছে। এখন একবার ঝুমার সঙ্গে দেখা করা খুব দরকার, কিন্তু পরীক্ষার আর মাত্র ৬ দিন বাকী। ভারী দোটানায় পড়লাম। ব্যাগ থেকে বই বের করতে গিয়ে দেখি মোবাইলটা অফ না থাকায় প্রায় ২০টা মিস কল, সাইলেন্ট ছিল বলে বুঝতে পারিনি। সব গুলোই ঝুমার কল। আমি চুপচাপ ফোন নিয়ে পিসির বাড়ীর পিছনের সিঁড়ি দিয়ে ছাদে চলে গেলাম। গিয়েই ফোন করলাম ঝুমাকে, বেশ খানিক্ষন রিং হবার পর ঝুমা তুললো। হ্যালো শোনার সঙ্গে সঙ্গে বুঝলাম ওদিকে বেশ ঝড় বয়ে গেছে। একটু থেমে আমি বললাম "কি হয়েছে আমাকে বলো ঝুমা। সব বলবে কিচ্ছু লুকোবে না।" আমার কথায় অধিকারবোধ ছিল, দায়িত্ব নেবার পূর্বাভাস ও ছিল। ঝুমা যা বললো সেটা হলো, আজ দুপুরে ঠাকুমা নাকি ফোন করে ঝুমার বাবাকে যা নয় তাই বলেছে, বলেছে ঝুমা নাকি আমার মাথা খাচ্ছে, আমায় বাড়ীর লোকের থেকে পর করে দিচ্ছে। এসব বরদাস্ত করা হবে না। আমি সব শুনে বললাম "ঝুমা কাল দুপুরে দুটো নাগাদ তুমি আমার জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করবে, আমি পৌঁছানোর পর একসঙ্গে দুজন বাড়ী যাবো। তোমার কোনো চিন্তা নেই, আমি কথা দিয়েছি তোমায় তোমার সারা ভার আমার, আমি কথা রাখার জন্য সব বাজি রাখতে রাজী।"
ঝুমা ডুকরে কেঁদে উঠলো, তারপর একটু থেমে আস্তে আস্তে বললো "আমার জন্য বড়দি আর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করার দরকার নেই।"
"আমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবো না, শুধু মতামত জানাবো, দরকারে তোমার বাবার সঙ্গেও কথা বলবো। আর সেটা কালই, কারণ আমার পরীক্ষা সামনে সময় নেই। তুমি যদি না আসো বুঝবো আমাদের মধ্যে ভালোবাসা বলে কিছু নেই, সম্পর্কের ইতি ওখানেই।"
ঝুমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বললো "আমি কাল মরে না গেলে তোমার সঙ্গে দেখা করবো, কিন্তু আমার দিব্যি তুমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবে না।"
"বেশ কথা দিলাম। এবার আমি নীচে যাচ্ছি, ছাদে লুকিয়ে বসে কথা বলছি, আমি তোমায় আবার রাত্রে খেয়ে ফোন করবো।"
ফোন রেখে ঘুরতেই দেখলাম বাপ্পা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আমার কথা শুনছিলো, আমি চমকে উঠলাম। বাপ্পা মুচকি হেসে বললো "মেজো মামীর সঙ্গে কথা বলছিলি? তা ফোন পেলি কোথায়?"
আমি বাপ্পাকে মিনতির সুরে বললাম "লক্ষী ভাই আমায় কাউকে বলিস না, তুই যা বলবি তোকে দেবো।" বাপ্পা বললো "আরে আমি কি বাচ্চা নাকি? বলবো না, মেজো মামী কদিন পরে তো আমার বড় বৌদি হবে। বৌদির সঙ্গে দাদা কথা বলবে না তো কে বলবে? তুই চাপ নিস না।"
আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে নীচে নেমে এলাম। দু ঘন্টা পড়ার পর পিসি খেতে ডাকলো, আমি খেতে বসে কোনো কথা বলিনি, পিসি বলে যাচ্ছিলো, ঝুমা খুব ঝগরুটে, টাকা চেনে, বিধবা মেয়ে কচি নাগর পাচ্ছে এই অনেক, কেন জমি লিখে দিচ্ছে না এইসব। আমি চুপচাপ খেয়ে ওঠার সময় বললাম "পিসি আমি কাল একবার বাড়ী যাবো ওই বারোটা নাগাদ বেড়িয়ে বিকেলে ফিরবো, আমি মুড়ি খেয়ে বেরোবো।" ইচ্ছে করেই সত্যিটা বললাম জানি একটু পরেই পিসি ফোন করে ঠাকুমাকে সব বলবে। থাকুক একটু চাপে।
আমি ঘরে ঢুকে খিল বন্ধ করে আবার পড়তে বসলাম, মনটা খুব হালকা লাগছিলো। একদম ফুরফুরে। অংক, ইতিহাস আর বাংলা রিভাইজ করে ওয়াটসএপে ভিডিও কল দিলাম ঝুমাকে, ঝুমা অপেক্ষাই করছিল বোধহয় ফোন তুললো, আজকে একটা নীল টি শার্ট পড়েছিল নীচে একটা পাজামা। চোখ দুটো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক্ষন কেঁদেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "খেয়েছো, সোনা?"
"না, খেতে ভালো লাগছে না।"
"এরকম করলে শরীর খারাপ হবে, খেয়ে নাও, তারপর ফোন করবো।"
"প্লীজ ফোন কাটো না, তোমার সঙ্গে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে।"
"বেশ, এক্ষুনি খাবার নিয়ে এসো, আমার সামনে খাও।"
"আরে আমি খেয়ে নেবো, তুমি টেনশন নিয়ো না।"
"একটা কথা কানে যায় না? বলছি খাবার নিয়ে এসো, বুঝতে পারছো না নাকি?" আমার গলায় প্রচন্ড কতৃত্ব আর দৃঢ়তা ছিল, যা শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেলাম। ওদিকে ঝুমা "উফ, যাচ্ছি নিয়ে আসছি তুমি কেটো না।" ঝুমা খাট থেকে নেমে যখন বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন পাছার দিকে নজর গেল, উফফ বঙ্কু ঠিকই বলে একদম নধর পাছা, আমার বাঁড়া মহারাজ ফণা তুলতে উদ্যত হলো। একটু পরেই ফিরে এলো ঝুমা, প্লেটে দুটো রুটি, একটু ডাল আর একটা সব্জী নিয়ে। খেতে খেতে কথা বলছিলো আর আমি ওকে দেখছিলাম, ঝুমা বললো "আমার খুব ভয় করছে, সোনাই, তোমার ঠাকুমা আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না।"
"তুমি আমাকে ভালোবাসো তো?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
"উম্ম, কতবার বলবো জানি না যাও" লাজুক স্বরে বললো ঝুমা।
"বলো ঝুমা বলো আমার জানা দরকার।"
"হ্যাঁ, নিজের থেকেও বেশী, আমি আর পিছতে পারবো না।"
"বিশ্বাস করো আমাকে?" আমি বললাম।
"হ্যাঁ, অনেক, সবার চেয়ে বেশী।"
"তাহলে জেনে রাখো তোমার সব বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখবো। ঠাকুমা কি বললো কিচ্ছু এসে যায় না। আর মা তো চায় আমাদের বিয়ে হোক, যদি মা কিছু বলে তাহলে সেটাও আমি দেখে নেবো। তুমি শুধু সাথে থেকো, তুমিই আমার জোরের জায়গা।" আমি আর মাধ্যমিক দিতে যাওয়া সদ্য গোঁফ দাড়ি গজানো টুকুন নেই সেটা নিজেই বুঝতে পারলাম।ঝুমার প্রেম আমাকে ধীরে ধীরে সাবালক আর পরিণত করছিল।
ঝুমা আদুরে গলায় বললো, "কত্ত পাকা পাকা কথা শিখেছে আমার বাবুটা।"
"ঝুমা তুমি আমার সাথে থাকলে আমার কোনো ভয় নেই, মা নিজের সুখের জন্য আমায় পর করেছে, এখন আমার আপন বলতে শুধু তুমি।"
ঝুমার চোখের কোন চিকচিক করে উঠলো কিছু বললো না।
আমি মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে গেল, বললাম "ঝুমা আমি একটা জিনিষ চাইবো দেবে?"
"আমার দেবার ক্ষমতা থাকলে নিশ্চই দেবো, চেয়েই দেখো।"
"আমাকে একটা হামি দাও।" শুনেই ঝুমা প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেল। তারপর একটু ধাতস্ত হয়ে বললো "এখন নয় সময় এলে দেবো।"
"তুমি কিন্তু কথা রাখছো না ঝুমা, ওদিকে আমার পড়ার দেরী হচ্ছে, আমি কিন্তু মনে রাখবো তোমার কথা খেলাপী।"
"উফফ, আমার লজ্জা লাগে।" লজ্জার চরম সীমায় পৌঁছে ঝুমা বললো।
"ঝুমু প্লিজ, আমি কিন্তু আমার প্রাপ্য চাইছি।"
"ধুৎ, তুমি আগে দাও।"
আমি শুনেই "মুউউউউউ আআআ" করে চুমু দিলাম। ওদিকে ঝুমা চোখ বুজে একটু সময় নিয়ে নিজের কমলালেবুর কোয়ার মতো লাল ঠোঁটদুটোকে জুড়ে "উমমউমউম, মুউউ আঃ" করে চুমু দিলো। আমি বললাম আরেকবার, ঝুমা আবার চুমু দিলো। তারপর আমি বললাম, "আই লাভ ইউ ঝুমু" আমার ঝুমু আস্তে করে মোবাইলটা মুখের কাছে ধরে বললো "আই লাভ ইউ সোনাই।" আমি জীবনের প্রথম পাওয়া চুমুর ঘোর তখনও কাটাতে পারিনি, হোক না দূর থেকে, তবু তো প্রেয়সীর থেকে পাওয়া। আজকের দিনটা জীবনে ভুলবো না। ফোনটা রাখতে রাখতে, কালকের যুদ্ধের জন্য মনে মনে তৈরী হতে লাগলাম।